//]]>

Win a Prize

Mohammadia Foundation https://www.mohammadiafoundationbd.com/2021/12/Akash-prithibi-sristi6.html

বিষয় ভিত্তিক আয়াত (পর্ব -১৪) || আল কুরআনে আকাশ ও পৃথিবী সৃষ্টির রহস্য ||






এই বিশাল পৃথিবী, আকাশমন্ডলী, গ্রহ নক্ষত্র, ইহকাল-পরকাল ও মানব জীবনের সকল রহস্যই মহাগ্রন্থ পবিত্র আল কুরআনে লিপিবদ্ধ করে রেখেছেন। কোনটা সুস্পষ্টভাবে কোন অস্পষ্টভাবে। যারা অবিশ্বাসী তারা অস্পষ্ট বর্ণনা থেকে আল্লাহ পাকের বিধানকে বিতর্কিত করার প্রয়াস চালায়। আর জ্ঞানীরা এসব বর্ণনা থেকে আল্লাহর নির্দশাবলী তালাশ করেন। আল্লাহ পাক মহাগ্রন্থ পবিত্র কুরআনে মহাকাশ ও পৃথিবী সৃষ্টির রহস্য বর্ণনা করেছেন অনেক জায়গায়। আমরা সেসব নিয়ে এখানে ধারাবাহিক আলোচনা করছি। কুরআন পাকের এই আলোচনা প্রকৃত জ্ঞানীদের মনে প্রভাব বিস্তার করবে ইন শা আল্লাহ।

আকাশ ও পৃথিবী সৃষ্টির রহস্য

সূরা কাফ, আয়াতঃ ৬-১০

৫০:৬ اَفَلَمۡ یَنۡظُرُوۡۤا اِلَی السَّمَآءِ فَوۡقَهُمۡ کَیۡفَ بَنَیۡنٰهَا وَ زَیَّنّٰهَا وَ مَا لَهَا مِنۡ فُرُوۡجٍ
৫০:৭ وَ الۡاَرۡضَ مَدَدۡنٰهَا وَ اَلۡقَیۡنَا فِیۡهَا رَوَاسِیَ وَ اَنۡۢبَتۡنَا فِیۡهَا مِنۡ کُلِّ زَوۡجٍۭ بَهِیۡجٍ ۙ
৫০:৮ تَبۡصِرَۃً وَّ ذِکۡرٰی لِکُلِّ عَبۡدٍ مُّنِیۡبٍ
৫০:৯ وَ نَزَّلۡنَا مِنَ السَّمَآءِ مَآءً مُّبٰرَکًا فَاَنۡۢبَتۡنَا بِهٖ جَنّٰتٍ وَّ حَبَّ الۡحَصِیۡدِ
৫০:১০ وَ النَّخۡلَ بٰسِقٰتٍ لَّهَا طَلۡعٌ نَّضِیۡدٌ


তারা কি তাদের উপরে আসমানের দিকে তাকায় না, কিভাবে আমি তা বানিয়েছি এবং তা সুশোভিত করেছি? আর তাতে কোন ফাটল নেই। ০ আর আমি যমীনকে বিস্তৃত করেছি, তাতে পর্বতমালা স্থাপন করেছি এবং তাতে প্রত্যেক প্রকারের সুদৃশ্য উদ্ভিদ উদগত করেছি।   আল্লাহ অভিমুখী প্রতিটি বান্দার জন্য জ্ঞান ও উপদেশ হিসেবে।   আর আমি আসমান থেকে বরকতময় পানি নাযিল করেছি। অতঃপর তা দ্বারা আমি উৎপন্ন করি বাগ-বাগিচা ও কর্তনযোগ্য শস্যদানা।   আর সমুন্নত খেজুরগাছ, যাতে আছে গুচ্ছ গুচ্ছ খেজুর ছড়া,   
আল-বায়ান

Have they not looked at the heaven above them - how We structured it and adorned it and [how] it has no rifts?  And the earth - We spread it out and cast therein firmly set mountains and made grow therein [something] of every beautiful kind,   Giving insight and a reminder for every servant who turns [to Allah].   And We have sent down blessed rain from the sky and made grow thereby gardens and grain from the harvest   And lofty palm trees having fruit arranged in layers 
 Sahih International


(৬) তারা কি তাদের উপরিস্থিত আকাশের দিকে তাকিয়ে দেখে না যে, আমি কিভাবে ওটা নির্মাণ করেছি[1] ও তাকে সুশোভিত করেছি[2] এবং ওতে কোন ফাটলও নেই? [3]

[1] অর্থাৎ, বিনা স্তম্ভে; যার সাহায্যে তা প্রতিষ্ঠিত আছে।

[2] অর্থাৎ, তারকারাজি দ্বারা তাকে সুশোভিত করা হয়েছে।

[3] অনুরূপ তাতে কোন অসামঞ্জস্য ও খুঁত নেই। যেমন, অন্যত্র বলেছেন, ‘‘তিনি সৃষ্টি করেছেন স্তরে স্তরে সপ্তাকাশ। দয়াময় আল্লাহর সৃষ্টিতে তুমি কোন খুঁত দেখতে পাবে না; আবার তাকিয়ে দেখ, কোন ত্রুটি দেখতে পাচ্ছ কি? অতঃপর তুমি বারবার দৃষ্টি ফিরাও, সেই দৃষ্টি ব্যর্থ ও ক্লান্ত হয়ে তোমার দিকে ফিরে আসবে।’’ (সূরা মুলক ৩-৪ আয়াত)


(৭) আমি পৃথিবীকে বিস্তৃত করেছি এবং তাতে পর্বতমালা স্থাপন করেছি এবং ওতে উদগত করেছি চোখ-জুড়ানো নানা প্রকার উদ্ভিদ। [1]

[1] কেউ কেউ زوج এর অর্থ করেছেন, জোড়া। অর্থাৎ, সকল প্রকারের উদ্ভিদ ও অন্যান্য জিনিসকে আমি জোড়া জোড়া (নর-নারী) সৃষ্টি করেছি। بَهِيْجٌ এর অর্থ, সুদর্শন, শ্যামল এবং সুন্দর।

(৮) (আল্লাহ) অভিমুখী প্রত্যেক ব্যক্তির জন্য জ্ঞান ও উপদেশ স্বরূপ। [1]

[1] অর্থাৎ, আকাশ ও পৃথিবীর সৃষ্টি এবং অন্যান্য বস্তুর দর্শন ও সেগুলোর (প্রকৃতত্ব) সম্পর্কে জানা হল এমন লোকদের জন্য জ্ঞান, উপদেশ এবং শিক্ষার উপকরণ স্বরূপ, যারা আল্লাহ-অভিমুখী।

(৯) আকাশ হতে আমি বর্ষণ করি কল্যাণকর বৃষ্টি এবং তার দ্বারা আমি সৃষ্টি করি বহু বাগান ও পরিপক্ব শস্যরাজি, [1]

[1] পরিপক্ব শস্যরাজি বা কাটা শস্য বলতে সেই ক্ষেতগুলো, যেগুলো থেকে গম, ভুট্টা, জোয়ার, বাজরা, ডাল ও ধান ইত্যাদি ফসল হয় এবং তা সুরক্ষিত করে রাখা হয়।

(১০) আর উঁচু উঁচু খেজুর বৃক্ষ; যাতে আছে কাঁদি কাঁদি খেজুর --[1]

[1] بَاسِقَاتٌ এর অর্থ طِوَالًا شَاهِقَاتٍ সুউচ্চ। طَلْعٌ বলে সেই জালি খেজুরকে যা প্রাথমিক অবস্থায় (মোচার ভিতরে) থাকে। نَضِيْدٌ এর অর্থ স্তরে স্তরে (বা থোকায় থোকায়) বিন্যস্ত। ‘বহু বাগান’-এর আওতায় খেজুরের গাছও এসে যায়। তবুও তাকে পৃথকভাবে বিশেষ করে উল্লেখ করেছেন। এ থেকে খেজুরের সেই গুরুত্ব স্পষ্ট হয়ে যায়, যা আরববাসীদের কাছে রয়েছে।
তাফসীরে আহসানুল বায়ান


সূরা আত তূর, আয়াতঃ ৩৫-৩৭

৫২:৩৫ اَمۡ خُلِقُوۡا مِنۡ غَیۡرِ شَیۡءٍ اَمۡ هُمُ الۡخٰلِقُوۡنَ
৫২:৩৬ اَمۡ خَلَقُوا السَّمٰوٰتِ وَ الۡاَرۡضَ ۚ بَلۡ لَّا یُوۡقِنُوۡنَ 
৫২:৩৭ اَمۡ عِنۡدَهُمۡ خَزَآئِنُ رَبِّکَ اَمۡ هُمُ الۡمُصَۜیۡطِرُوۡنَ 

তারা কি স্রষ্টা ছাড়া সৃষ্টি হয়েছে, না তারাই স্রষ্টা?  তারা কি আসমান ও যমীন সৃষ্টি করেছে? বরং তারা দৃঢ় বিশ্বাস করে না।  তোমার রবের গুপ্তভান্ডার কি তাদের কাছে আছে, না তারা সব কিছু নিয়ন্ত্রণকারী? 
আল-বায়ান

Or were they created by nothing, or were they the creators [of themselves]?  Or did they create the heavens and the earth? Rather, they are not certain.  Or have they the depositories [containing the provision] of your Lord? Or are they the controllers [of them]? 
Sahih International


৩৫. তারা কি স্রষ্টা ছাড়া সৃষ্টি হয়েছে, না তারা নিজেরাই স্রষ্টা?(১)

(১) এ আয়াতে তাদের সামনে প্রশ্ন রাখা হয়েছে যে, তোমরা কি নিজে নিজেই সৃষ্টি হয়েছো, কোন স্রষ্টা তোমাদের সৃষ্টি করেননি? নাকি তোমরা নিজেরাই নিজেদের স্রষ্টা? কিংবা এ বিশাল মহাবিশ্ব তোমাদের তৈরী? এসব কথার কোনটিই যদি সত্য না হয়, আর তোমরা নিজেরাই স্বীকার করো যে তোমাদের স্রষ্টা আল্লাহ আর এই বিশ্বজাহানের স্রষ্টাও তিনিই, তাহলে যে ব্যক্তি তোমাদের বলে, সেই আল্লাহই তোমাদের বন্দেগী ও উপাসনা পাওয়ার অধিকারী সেই ব্যক্তির প্রতি তোমরা এত ক্রোধাম্বিত কেন? [দেখুন: কুরতুবী]

এটা ছিল এমন একটি তীক্ষ্ণ প্রশ্ন যা মুশরিকদের আকীদা বিশ্বাসের ভিত্তিমূলকেই কাঁপিয়ে দিয়েছে। হাদীসে আছে, বদর যুদ্ধের পর বন্দী কুরাইশদের মুক্ত করার বিষয়ে আলোচনা করার জন্য মক্কার কাফেরদের পক্ষ থেকে জুবাইর ইবন মুতয়িম মদীনায় আসে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তখন মাগরিবের সালাতে সূরা তূর পাঠ করছিলেন। মসজিদের বাইরে থেকে আওয়ায শোনা যাচ্ছিল, তিনি যখন (أَمْ خُلِقُوا مِنْ غَيْرِ شَيْءٍ أَمْ هُمُ الْخَالِقُونَ) পাঠ করলেন, তখন হঠাৎ আমার মনে হল যেন অন্তর ভয়ে বিদীর্ণ হয়ে যাবে। আমি তৎক্ষণাৎ ইসলাম গ্ৰহণ করলাম, তখন আমার মনে হচ্ছিল যেন এই স্থান ত্যাগ করার পূর্বেই আমি আযাবে গ্রেফতার হয়ে যাব ৷ [বুখারী: ৪৮৫৪]

৩৬. নাকি তারা আসমানসমূহ ও যমীন সৃষ্টি করেছে? বরং তারা দৃঢ় বিশ্বাস করে না।

৩৭. আপনার রবের গুপ্তভাণ্ডার কি তাদের কাছে রয়েছে, নাকি তারা এ সবকিছুর নিয়ন্তা?
তাফসীরে জাকারিয়া


সূরা মূলক, আয়াতঃ ৩-৫


৬৭:৩ الَّذِیۡ خَلَقَ سَبۡعَ سَمٰوٰتٍ طِبَاقًا ؕ مَا تَرٰی فِیۡ خَلۡقِ الرَّحۡمٰنِ مِنۡ تَفٰوُتٍ ؕ فَارۡجِعِ الۡبَصَرَ ۙ هَلۡ تَرٰی مِنۡ فُطُوۡرٍ
৬৭:৪ ثُمَّ ارۡجِعِ الۡبَصَرَ کَرَّتَیۡنِ یَنۡقَلِبۡ اِلَیۡکَ الۡبَصَرُ خَاسِئًا وَّ هُوَ حَسِیۡرٌ
৬৭:৫ وَ لَقَدۡ زَیَّنَّا السَّمَآءَ الدُّنۡیَا بِمَصَابِیۡحَ وَ جَعَلۡنٰهَا رُجُوۡمًا لِّلشَّیٰطِیۡنِ وَ اَعۡتَدۡنَا لَهُمۡ عَذَابَ السَّعِیۡرِ

যিনি সাত আসমান স্তরে স্তরে সৃষ্টি করেছেন। পরম করুণাময়ের সৃষ্টিতে তুমি কোন অসামঞ্জস্য দেখতে পাবে না। তুমি আবার দৃষ্টি ফিরাও, কোন ত্রুটি দেখতে পাও কি?  অতঃপর তুমি দৃষ্টি ফিরাও একের পর এক, সেই দৃষ্টি অবনমিত ও ক্লান্ত হয়ে তোমার দিকে ফিরে আসবে।  আমি নিকটবর্তী আসমানকে প্রদীপপুঞ্জ দ্বারা সুশোভিত করেছি এবং সেগুলোকে শয়তানদের প্রতি নিক্ষেপের বস্তু বানিয়েছি। আর তাদের জন্য প্রস্তুত করে রেখেছি জ্বলন্ত আগুনের আযাব।
আল-বায়ান

[And] who created seven heavens in layers. You do not see in the creation of the Most Merciful any inconsistency. So return [your] vision [to the sky]; do you see any breaks? 
 Then return [your] vision twice again. [Your] vision will return to you humbled while it is fatigued.  And We have certainly beautified the nearest heaven with stars and have made [from] them what is thrown at the devils and have prepared for them the punishment of the Blaze.  
Sahih International


(৩) তিনি সৃষ্টি করেছেন স্তরে স্তরে সাত আকাশ। দয়াময় আল্লাহর সৃষ্টিতে তুমি কোন খুঁত দেখতে পাবে না;[1] আবার তাকিয়ে দেখ, কোন ত্রুটি দেখতে পাচ্ছ কি?[2]

[1] অর্থাৎ, তাতে কোন অসামঞ্জস্য, কোন বক্রতা এবং কোন ত্রুটি ও খুঁত নেই। বরং তাকে একেবারে সোজা ও সমতল বানানো হয়েছে; যা এ কথা প্রমাণ করে যে, এ সবের সৃষ্টিকর্তা হলেন কেবল একজন, একাধিক নয়।

[2] কখনো কখনো এমন হয় যে, দ্বিতীয়বার ভালভাবে লক্ষ্য করলে কোন ঘাটতি বা দোষ-ত্রুটি পরিলক্ষিত হয়। তাই মহান আল্লাহ আহবান করছেন যে, তোমরা বারবার দৃষ্টিপাত করে দেখ, তাতে কোন ছিদ্র বা ফাটল পাও কি না?

(৪) অতঃপর তুমি বারবার দৃষ্টি ফিরাও, সেই দৃষ্টি ব্যর্থ ও ক্লান্ত হয়ে তোমার দিকে ফিরে আসবে। [1]

[1] এখানে আবার তাকীদ করার উদ্দেশ্য হল, নিজের মহাশক্তি এবং একত্বকে আরো বেশী স্পষ্ট করা।

(৫) আমি নিকটবর্তী আকাশকে প্রদীপমালা দ্বারা সুশোভিত করেছি এবং ওগুলোকে করেছি শয়তানদের প্রতি ক্ষেপণাস্ত্র স্বরূপ[1] এবং তাদের জন্য প্রস্তুত রেখেছি জ্বলন্ত অগ্নির শাস্তি।

[1] এখানে নক্ষত্র সৃষ্টির দু’টি উদ্দেশ্য বর্ণনা করা হয়েছে। প্রথমতঃ আসমানের সৌন্দর্যবর্ধন। কেননা, তা প্রদীপের মত দীপ্তিমান সুন্দর দেখা যায়। দ্বিতীয়তঃ শয়তানদল যখন আসমানের দিকে যাওয়ার চেষ্টা করে, তখন একে উল্কারূপে তাদের উপর নিক্ষেপ করা হয়। এর তৃতীয় উদ্দেশ্য যেটাকে অন্যত্র বর্ণনা করা হয়েছে তা হল, তার দ্বারা সমুদ্রে ও স্থলে পথ ও দিক নির্ণয় করা হয়।
তাফসীরে আহসানুল বায়ান




******************************************
Thank you for visiting the site. If you like the article, share it on social media to invite other Vines to the path of truth and justice. Click on OUR ACTION PLAN button to know about activities, goals and objectives of Mohammadia Foundation and to participate in the service of religion and humanity.
Almost all articles on this website are written in Bengali. But you can also read it in your language if you want. Click the “ভাষা বেছে নিন” button at the bottom of the website to read in your own language.




অন্যদের সাথে শেয়ার করুন

0 Comments

দয়া করে নীতিমালা মেনে মন্তব্য করুন ??

CLICK n WIN

নটিফিকেশন ও নোটিশ এরিয়া