ক্ষমতার মালিক আল্লাহ || সার্বভৌমত্বের মালিক আল্লাহ || আল্লাহ সর্বশক্তিমান || আল্লাহর কাছেই আমাদের প্রত্যাবর্তন ||


সর্বশক্তিমান আল্লাহর কাছেই আমাদেরকে ফিরতে হবে


পাঠ্যসূচি: সর্বশক্তিমান আল্লাহর কাছেই আমাদেরকে ফিরতে হবে


 সুরা আনআম, আয়াত নং-৬১ 


:৬১ وَ هُوَ الۡقَاهِرُ فَوۡقَ عِبَادِهٖ وَ یُرۡسِلُ عَلَیۡکُمۡ حَفَظَۃً ؕ حَتّٰۤی اِذَا جَآءَ اَحَدَکُمُ الۡمَوۡتُ تَوَفَّتۡهُ رُسُلُنَا وَ هُمۡ لَا یُفَرِّطُوۡنَ

আয়াতের অর্থঃ
আর তিনিই নিজ বান্দাদের উপর ক্ষমতাবান এবং তোমাদের উপর প্রেরণ করেন হিফাযতকারীদেরকে। অবশেষে যখন তোমাদের কারো কাছে মৃত্যু আসে, আমার প্রেরিত দূতগণ তার মৃত্যু ঘটায়। আর তারা কোন ত্রুটি করে না। আল-বায়ান

তিনি তাঁর বান্দাহ্দের উপর পূর্ণ কর্তৃত্বশীল, আর তিনি তোমাদের উপর রক্ষক নিযুক্ত করেন। অতঃপর তোমাদের কারো মৃত্যুর সময় উপস্থিত হলে আমার প্রেরিতগণ (ফেরেশতারা) তার মৃত্যু ঘটায়। নিজেদের কর্তব্য পালনে তারা বিন্দুমাত্র ত্রুটি করে না। তাইসিরুল

আর আল্লাহই স্বীয় বান্দাদের উপর প্রতাপশালী, তিনি তোমাদের উপর রক্ষণাবেক্ষণকারী নিযুক্ত করে পাঠিয়ে থাকেন, এমনকি যখন তোমাদের কারও মৃত্যু সময় সমুপস্থিত হয় তখন আমার প্রেরিত দূতগণ তার প্রাণ হরণ করে নেয়, এ ব্যাপারে তারা বিন্দুমাত্র ক্রটি করেনা। মুজিবুর রহমান

And He is the subjugator over His servants, and He sends over you guardian-angels until, when death comes to one of you, Our messengers take him, and they do not fail [in their duties]. Sahih International

আয়াতের তাফসীরঃ
৬১. আর তিনি তাঁর বান্দাদের উপর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণাধিকারী এবং তিনি তোমাদের উপর প্রেরণ করেন হেফাযতকারীদেরকে। অবশেষে তোমাদের কারও যখন মৃত্যু উপস্থিত হয় তখন আমাদের রাসূল (ফিরিশতা) গণ তার মৃত্যু ঘটায় এবং তারা কোন ক্রটি করে না।

তাফসীরে জাকারিয়া


সুরা আনআম, আয়াত নং-৬২ 

৬:৬২ ثُمَّ رُدُّوۡۤا اِلَی اللّٰهِ مَوۡلٰىهُمُ الۡحَقِّ ؕ اَلَا لَهُ الۡحُکۡمُ ۟ وَ هُوَ اَسۡرَعُ الۡحٰسِبِیۡنَ

আয়াতের অর্থঃ
তারপর তাদেরকে প্রত্যাবর্তিত করা হয় তাদের সত্য মাওলা আল্লাহর কাছে। সাবধান! হুকুম প্রাদানের ক্ষমতা তাঁরই। আর তিনি হচ্ছেন খুব দ্রুত হিসাবকারী। আল-বায়ান

অতঃপর তাদেরকে তাদের প্রকৃত প্রতিপালকের নিকট ফিরিয়ে নেয়া হবে। সাবধান! কর্তৃত্ব তাঁরই, আর তিনি হিসাব গ্রহণে সর্বাপেক্ষা ত্বরিতগতি। তাইসিরুল

তারপর সকলকে তাদের সত্যিকার অভিভাবক আল্লাহর কাছে প্রত্যাবর্তিত করানো হয়। তোমরা জেনে রেখ যে, ঐ দিন একমাত্র আল্লাহই রায় প্রদানকারী হবেন, আর তিনি খুবই ত্বরিৎ হিসাব গ্রহণকারী। মুজিবুর রহমান

Then they His servants are returned to Allah, their true Lord. Unquestionably, His is the judgement, and He is the swiftest of accountants. Sahih International

আয়াতের তাফসীরঃ
৬২. তারপর তাদেরকে প্রকৃত রব আল্লাহর দিকে প্রত্যাবর্তিত করা হবে। জেনে রাখুন, হুকুম তো তারই এবং তিনি সবচেয়ে দ্রুত হিসেব গ্রহণকারী।

তাফসীরে জাকারিয়া


সুরা আল আনআম, আয়াত নং-৭১ 


৬:৭১ قُلۡ اَنَدۡعُوۡا مِنۡ دُوۡنِ اللّٰهِ مَا لَا یَنۡفَعُنَا وَ لَا یَضُرُّنَا وَ نُرَدُّ عَلٰۤی اَعۡقَابِنَا بَعۡدَ اِذۡ هَدٰىنَا اللّٰهُ کَالَّذِی اسۡتَهۡوَتۡهُ الشَّیٰطِیۡنُ فِی الۡاَرۡضِ حَیۡرَانَ ۪ لَهٗۤ اَصۡحٰبٌ یَّدۡعُوۡنَهٗۤ اِلَی الۡهُدَی ائۡتِنَا ؕ قُلۡ اِنَّ هُدَی اللّٰهِ هُوَ الۡهُدٰی ؕ وَ اُمِرۡنَا لِنُسۡلِمَ لِرَبِّ الۡعٰلَمِیۡنَ

আয়াতের অর্থঃ

বল, ‘আমরা কি ডাকব আল্লাহ ছাড়া এমন কিছুকে, যা আমাদেরকে কোন উপকার করে না এবং ক্ষতি করে না? আর আল্লাহ আমাদেরকে পথ দেখানোর পর আমাদেরকে কি ফিরানো হবে আমাদের পশ্চাতে সেই ব্যক্তির ন্যায় যাকে শয়তান যমীনে এমন শক্তভাবে পেয়ে বসেছে যে, সে দিশেহারা? তার রয়েছে সহচরবৃন্দ, তারা তাকে সঠিক পথের দিকে ডাকে, ‘আমাদের কাছে আস।’ বল, ‘আল্লাহর পথই সঠিক পথ। আর আমরা রাববুল আলামীনের আনুগত্য করতে আদিষ্ট হয়েছি’ । আল-বায়ান

বল, আল্লাহকে বাদ দিয়ে আমরা কি এমন কিছুকে ডাকব যা আমাদের উপকারও করে না, অপকারও করে না? আল্লাহ আমাদেরকে হিদায়াত দানের পর আমরা কি পিছনে ফিরে যাব তার মত শয়ত্বান যাকে বিভ্রান্ত করে দিয়েছে আর দুনিয়ায় সে ঘুরে মরছে। অথচ তার সঙ্গী সাথীরা তাকে সঠিক পথের দিকে ডাক দিয়ে বলছে, এদিকে এসো। বল, আল্লাহর হিদায়াতই হচ্ছে সত্যিকারের হিদায়াত, বিশ্বজগতের প্রতিপালকের কাছে আত্মসমর্পণ করার জন্যই আমাদেরকে আদেশ দেয়া হয়েছে। তাইসিরুল

তুমি বলে দাওঃ আমরা কি আল্লাহ ছাড়া এমন কিছুর ইবাদাত করব, যারা আমাদের কোন উপকার করতে পারবেনা এবং আমাদের কোন ক্ষতিও করতে পারবেনা? অধিকন্তু আমাদেরকে সুপথ প্রদর্শনের পর আমরা কি উল্টা পথে ফিরে যাব? আমরা কি ঐ ব্যক্তির ন্যায় হব যাকে শাইতান মরুভূমির মধ্যে বিভ্রান্ত করে ফেলেছে এবং যে দিশেহারা-লক্ষ্যহারা হয়ে ঘুরে মরছে? তার সহচরেরা তাকে হিদায়াতের দিকে ডেকে বলছে - তুমি আমাদের সঙ্গে এসো। তুমি বলঃ আল্লাহর হিদায়াতই হচ্ছে সত্যিকারের সঠিক হিদায়াত, আর আমাকে সারা জাহানের রবের সামনে মাথা নত করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। মুজিবুর রহমান

Say, "Shall we invoke instead of Allah that which neither benefits us nor harms us and be turned back on our heels after Allah has guided us? [We would then be] like one whom the devils enticed [to wander] upon the earth confused, [while] he has companions inviting him to guidance, [calling], 'Come to us.' " Say, "Indeed, the guidance of Allah is the [only] guidance; and we have been commanded to submit to the Lord of the worlds. Sahih International


আয়াতের তাফসীরঃ
৭১. বলুন, আল্লাহ্ ছাড়া আমরা কি এমন কিছুকে ডাকব, যা আমাদের কোন উপকার কিংবা অপকার করতে পারে না? আর আল্লাহ্ আমাদেরকে হিদায়াত দেবার পর আমাদেরকে কি আগের অবস্থায় ফিরানো হবে(১) সে ব্যক্তির মত, যাকে শয়তান যমীনে এমন শক্তভাবে পেয়ে বসেছে যে সে দিশেহারা? তার রয়েছে কিছু (ঈমানদার) সহচর, তারা তাকে হিদায়াতের প্রতি আহ্বান করে বলে, আমাদের কাছে আস?(২) বলুন, আল্লাহ্র হিদায়াতই সঠিক হিদায়াত এবং আমরা আদিষ্ট হয়েছি সৃষ্টিকুলের রব-এর কাছে আত্মসমর্পণ করতে।(৩)

(১) অর্থাৎ ঈমানদার হওয়ার পরে কি আমরা কুফরীতে ফিরে যাব? [আইসারুত তাফসীর]

(২) কিন্তু সে ঈমানদার বন্ধুদের এ আহবানে সাড়া দেয় না। [মুয়াস্সার]

(৩) এ আয়াত দ্বারা আরো জানা গেল যে, যারা আখেরাতের প্রতি অমনোযোগী হয়ে শুধু পার্থিব জীবন নিয়ে মগ্ন, তাদের সংসৰ্গও অপরের জন্য মারাত্মক। তাদের সংসর্গে উঠা-বসাকারীরাও পরিণামে তাদের অনুরূপ আযাবে পতিত হবে। পূর্ববর্তী তিনটি আয়াতের সারমর্ম মুসলিমদেরকে অশুভ পরিবেশ ও খারাপ সংসর্গ থেকে বাঁচিয়ে রাখা। এটি যে কোন মানুষের জন্যই বিষতুল্য। কুরআন ও হাদীসের অসংখ্য উক্তি ছাড়াও চাক্ষুষ অভিজ্ঞতা সাক্ষ্য দেয় যে, অসৎ সমাজ ও মন্দ পরিবেশই মানুষকে কুকর্ম ও অপরাধে লিপ্ত করে।

এ পরিবেশে জড়িয়ে পড়ার পর মানুষ প্রথমতঃ বিবেক ও মনের বিরুদ্ধে কুকর্মে লিপ্ত হয়। এরপর আস্তে আস্তে কুকর্ম যখন অভ্যাসে পরিণত হয়, তখন মন্দের অনুভূতিও লোপ পায়, বরং মন্দকে ভাল এবং ভালকে মন্দ মনে করতে থাকে। যেমন এক হাদীসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ যখন কোন ব্যক্তি প্রথমবার গোনাহ করে, তখন তার কলবে একটি কাল দাগ পড়ে। তারপর যখন তাওবা করে গোনাহের কাজ থেকে বিরত হয় এবং ক্ষমা প্রার্থনা করে, তখন তার কলব আবার পরিষ্কার হয়ে যায়।

কিন্তু যদি গোনাহ বাড়িয়ে দেয়, তখন একের পর এক কালো দাগ বাড়াতে থাকে। [কুরআনুল কারীমে (رَانَ) শব্দ দ্বারা এ অবস্থাকেই ব্যক্ত করা হয়েছে। বলা হয়েছে, “কুকর্মের কারণে তাদের অন্তরে মরিচা পড়ে গেছে।” [সূরা আল-মুতাফ্ফিফীন: ১৪] [ইবনে মাজাহঃ ৪২৪৪, তিরমিযীঃ ৩৩৩৪, ইমাম আহমাদ, মুসনাদঃ ২/২৯৭] অর্থাৎ ভাল-মন্দ পার্থক্য করার যোগ্যতাই লোপ পেয়ে বসে। চিন্তা করলে বুঝা যায়, অধিকাংশ ভ্রান্ত পরিবেশ ও অসৎ সঙ্গই মানুষকে এ অবস্থায় পৌছায়। এ কারণেই অভিভাবকদের কর্তব্য ছেলে-সন্তানদেরকে এ ধরণের পরিবেশ থেকে বাচিয়ে রাখতে আপ্রাণ চেষ্টা করা।

তাফসীরে জাকারিয়া


সুরা আল আনআম, আয়াত নং-৭২ 


৬:৭২ وَ اَنۡ اَقِیۡمُوا الصَّلٰوۃَ وَ اتَّقُوۡهُ ؕ وَ هُوَ الَّذِیۡۤ اِلَیۡهِ تُحۡشَرُوۡنَ

আয়াতের অর্থঃ

আর (আদিষ্ট হয়েছি যে,) তোমরা সালাত কায়েম কর এবং তাঁর তাকওয়া অবলম্বন কর। আর তিনিই, যার কাছে তোমাদেরকে সমবেত করা হবে। আল-বায়ান

আরও (আদিষ্ট হয়েছি) নামায কায়িম করতে আর তাঁকে ভয় করতে আর তিনি হলেন (সেই সত্ত্বা) যাঁর কাছে তোমাদেরকে সমবেত করা হবে। তাইসিরুল

আর তুমি নিয়মিতভাবে সালাত কায়েম কর এবং সেই রাব্বকে ভয় করে চল যাঁর নিকট তোমাদের সকলকে সমবেত করা হবে। মুজিবুর রহমান

And to establish prayer and fear Him." And it is He to whom you will be gathered. Sahih International

আয়াতের তাফসীরঃ
৭২. এবং সালাত কায়েম করতে ও তার তাকওয়া অবলম্বন করতে। আর তিনিই, যাঁর কাছে তোমাদেরকে সমবেত করা হবে।

তাফসীরে জাকারিয়া



 সুরা আল কাসাস, আয়াত নং-৮৮ 


২৮:৮৮ وَ لَا تَدۡعُ مَعَ اللّٰهِ اِلٰـهًا اٰخَرَ ۘ لَاۤ اِلٰهَ اِلَّا هُوَ ۟ کُلُّ شَیۡءٍ هَالِکٌ اِلَّا وَجۡهَهٗ ؕ لَهُ الۡحُکۡمُ وَ اِلَیۡهِ تُرۡجَعُوۡنَ 

আয়াতের অর্থঃ

আল্লাহর সাথে অন্য কোন ইলাহকে ডেকো না, তিনি ছাড়া কোন (সত্য) ইলাহ নেই। তাঁর চেহারা (সত্ত্বা)* ছাড়া সব কিছুই ধ্বংসশীল, সিদ্ধান্ত তাঁরই এবং তাঁর কাছেই তোমাদেরকে ফিরিয়ে নেয়া হবে। আল-বায়ান

আল্লাহর সঙ্গে অন্য কোন ইলাহকে ডেকো না, তিনি ছাড়া সত্যিকারের কোন ইলাহ নেই, তাঁর (সত্তা) ছাড়া সকল কিছুই ধ্বংসশীল। বিধান তাঁরই, আর তাঁর কাছেই তোমাদেরকে ফিরিয়ে আনা হবে। তাইসিরুল

তুমি আল্লাহর সাথে অন্য ইলাহকে ডেকনা, তিনি ছাড়া অন্য কোন ইলাহ নেই। আল্লাহর সত্তা ব্যতীত সব কিছু ধ্বংসশীল। বিধান তাঁরই এবং তাঁরই নিকট তোমরা প্রত্যাবর্তিত হবে। মুজিবুর রহমান

And do not invoke with Allah another deity. There is no deity except Him. Everything will be destroyed except His Face. His is the judgement, and to Him you will be returned. Sahih International

* আয়াতে উল্লিখিত وجه শব্দের অর্থ চেহারা। আল্লাহর চেহারা আছে। আর তাঁর চেহারা যেমন ধ্বংসশীল নয় তেমনি তাঁর সত্ত্বাও ধ্বংসশীল নয়।

আয়াতের তাফসীরঃ
৮৮. আর আপনি আল্লাহর সাথে অন্য ইলাহকে ডাকবেন না, তিনি ছাড়া অন্য কোন সত্য ইলাহ নেই। আল্লাহর সত্তা ছাড়া সমস্ত কিছুই ধ্বংসশীল।(১) বিধান তারই এবং তারই কাছে তোমরা প্রত্যাবর্তিত হবে।

(১) এখানে وجهه বলে আল্লাহ তা'আলার পুরো সত্তাকে বোঝানো হলেও অন্য দিক থেকে এটা সাব্যস্ত হচ্ছে যে, আল্লাহ তা'আলার চেহারা’ রয়েছে। কারণ; যার চেহারা নেই তার সম্পর্কে এ শব্দ ব্যবহার করা যায় না। মূল উদ্দেশ্য এই যে, আল্লাহর সত্তা ব্যতীত সবকিছু ধ্বংসশীল। কোন কোন তাফসীরকার বলেন, وجهه বলে এমন আমল বোঝানো হয়েছে, যা একান্তভাবে আল্লাহর জন্য করা হয়। তখন আয়াতের উদ্দেশ্য হবে এই যে, যে আমল আল্লাহর জন্য খাঁটিভাবে করা হয়, তাই অবশিষ্ট থাকবে এছাড়া সব ধ্বংসশীল। উভয় তাফসীরই বিশুদ্ধ। [ইবন কাসীর]

তাফসীরে জাকারিয়া


 সুরা আনকাবুত, আয়াত নং-১৯ 


২৯:১৯ اَوَ لَمۡ یَرَوۡا کَیۡفَ یُبۡدِئُ اللّٰهُ الۡخَلۡقَ ثُمَّ یُعِیۡدُهٗ ؕ اِنَّ ذٰلِکَ عَلَی اللّٰهِ یَسِیۡرٌ

আয়াতের অর্থঃ

তারা কি দেখে না, আল্লাহ কিভাবে সৃষ্টির সূচনা করেন? তারপর তিনি তার পুনরাবৃত্তি করবেন। নিশ্চয় এটি আল্লাহর জন্য সহজ। আল-বায়ান

তারা কি লক্ষ্য করে না যে, আল্লাহ কীভাবে সৃষ্টির সূচনা করেন অতঃপর তার পুনরাবর্তন ঘটান, নিশ্চয় এটা আল্লাহর জন্য সহজ। তাইসিরুল

তারা কি লক্ষ্য করেনা যে, কিভাবে আল্লাহ সৃষ্টিকে অস্তিত্ব দান করেন? অতঃপর পুনরায় সৃষ্টি করবেন। এটাতো আল্লাহর জন্য সহজ। মুজিবুর রহমান

Have they not considered how Allah begins creation and then repeats it? Indeed that, for Allah, is easy. Sahih International

আয়াতের তাফসীরঃ
১৯. তারা কি লক্ষ্য করে না(১), কিভাবে আল্লাহ্ সৃষ্টিকে অস্তিত্ব দান করেন? তারপর তিনি তা আবার সৃষ্টি করবেন। নিশ্চয় এটা আল্লাহর জন্য সহজ।

(১) ১৯–২৩ নং পর্যন্ত আয়াতগুলো কি ইবরাহীম আলাইহিস সালামের বাকী কথা নাকি আল্লাহর পক্ষ থেকে স্বতন্ত্ৰ প্ৰসংগ, এ নিয়ে দুটি মত রয়েছে। ইবন কাসীর বলেন, এটি ইবরাহীম আলাইহিস সালামের কথার বাকী অংশ। তবে ইবন জারীর তাবারী বলেন, এটি মূল আলোচনার মাঝখানে স্বতন্ত্র প্রাসংগিক বিষয় হিসেবে আনা হয়েছে। সে হিসেবে ইবরাহীমের কাহিনীর ধারা বর্ণনা ছিন্ন করে আল্লাহ মক্কার কাফেরদেরকে সম্বোধন করে একথাগুলো বলেছেন। অর্থাৎ হে কুরাইশরা তোমরা তাদের মতই মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উপর মিথ্যারোপ করেছ। যেমন তোমাদের পূর্ববর্তীরা ইবরাহীম আলাইহিস সালামের উপর মিথ্যারোপ করেছে। [তাবারী]

তাফসীরে জাকারিয়া


সুরা আনকাবুত, আয়াত নং-২০ 

২৯:২০  قُ لۡ سِیۡرُوۡا فِی الۡاَرۡضِ فَانۡظُرُوۡا کَیۡفَ بَدَاَ الۡخَلۡقَ ثُمَّ اللّٰهُ یُنۡشِیٴُ النَّشۡاَۃَ الۡاٰخِرَۃَ ؕ اِنَّ اللّٰ هَ عَلٰی کُلِّ شَیۡءٍ قَدِیۡرٌ


আয়াতের অর্থঃ
বল, ‘তোমরা যমীনে ভ্রমণ কর, অতঃপর দেখ’ কীভাবে তিনি সৃষ্টির সূচনা করেছিলেন, তারপর আল্লাহই আরেকবার সৃষ্টি করবেন। নিশ্চয় আল্লাহ সব কিছুর উপর ক্ষমতাবান। আল-বায়ান

বল- ‘তোমরা পৃথিবীতে ভ্রমণ কর, অতঃপর লক্ষ্য কর কীভাবে আল্লাহ সৃষ্টির সূচনা করেছেন, অতঃপর আল্লাহ সৃষ্টি করবেন পরবর্তী সৃষ্টি, আল্লাহ সকল বিষয়ের উপর ক্ষমতাবান। তাইসিরুল

বলঃ পৃথিবীতে পরিভ্রমণ কর এবং অনুধাবন কর কিভাবে তিনি সৃষ্টি শুরু করেছেন? অতঃপর আল্লাহ পুনর্বার সৃষ্টি করবেন পরবর্তী সৃষ্টি। আল্লাহতো সর্ব বিষয়ে সর্বশক্তিমান। মুজিবুর রহমান

Say, [O Muhammad], "Travel through the land and observe how He began creation. Then Allah will produce the final creation. Indeed Allah, over all things, is competent." Sahih International

আয়াতের তাফসীরঃ
২০. বলুন, তোমরা যমীনে ভ্রমণ করে অতঃপর প্রত্যক্ষ কর, কিভাবে তিনি সৃষ্টি আরম্ভ করেছেন? তারপর আল্লাহ সৃষ্টি করবেন পরবর্তী সৃষ্টি। নিশ্চয় আল্লাহ সব কিছুর উপর ক্ষমতাবান।

তাফসীরে জাকারিয়া


সুরা আনকাবুত, আয়াত নং-২১ 


২৯:২১   یُعَذِّبُ مَنۡ یَّشَآءُ وَ یَرۡحَمُ مَنۡ یَّشَآءُ ۚ وَ اِلَیۡهِ تُقۡلَبُوۡنَ


আয়াতের অর্থঃ
তিনি যাকে ইচ্ছা আযাব দেবেন এবং যাকে ইচ্ছা দয়া করবেন, আর তাঁর কাছেই তোমাদেরকে ফিরিয়ে নেয়া হবে। আল-বায়ান

যাকে ইচ্ছে তিনি শাস্তি দেন আর যার প্রতি ইচ্ছে তিনি রহমত বর্ষণ করেন আর তাঁর কাছেই তোমাদেরকে ফিরিয়ে নেয়া হবে। তাইসিরুল

তিনি যাকে ইচ্ছা শাস্তি দেন, যার প্রতি ইচ্ছা অনুগ্রহ করেন। তোমরা তাঁরই নিকট প্রত্যাবর্তিত হবে। মুজিবুর রহমান

He punishes whom He wills and has mercy upon whom He wills, and to Him you will be returned. Sahih International

আয়াতের তাফসীরঃ
২১. তিনি যাকে ইচ্ছে শাস্তি দেন এবং যার প্রতি ইচ্ছে অনুগ্রহ করেন। আর তোমরা তারই কাছে প্রত্যাবর্তিত হবে।

তাফসীরে জাকারিয়া


সুরা আনকাবুত, আয়াত নং-২২ 


২৯:২২ وَ مَاۤ اَنۡتُمۡ بِمُعۡجِزِیۡنَ فِی الۡاَرۡضِ وَ لَا فِی السَّمَآءِ ۫ وَ مَا لَکُمۡ مِّنۡ دُوۡنِ اللّٰهِ مِنۡ وَّلِیٍّ وَّ لَا نَصِیۡرٍ 

আয়াতের অর্থঃ
তোমরা (আল্লাহকে) ব্যর্থ করতে পারবেনা পৃথিবীতে অথবা আকাশে এবং আল্লাহ ব্যতীত তোমাদের কোন অভিভাবক নেই, সাহায্যকারীও নেই। আল-বায়ান

তোমরা (আল্লাহকে) না পৃথিবীতে ব্যর্থ করতে পারবে আর না আকাশে, আল্লাহ ছাড়া তোমাদের জন্য নেই কোন অভিভাবক, নেই কোন সাহায্যকারী। তাইসিরুল

আর তোমরা (তাঁকে) অক্ষমকারী নও যমীনে এবং না আসমানে। আর আল্লাহ ছাড়া তোমাদের কোন অভিভাবক ও সাহায্যকারী নেই। মুজিবুর রহমান

And you will not cause failure [to Allah] upon the earth or in the heaven. And you have not other than Allah any protector or any helper. Sahih International

আয়াতের তাফসীরঃ
২২. আর তোমরা আল্লাহকে ব্যর্থ করতে পারবে না যমীনে(১), আর না আসমানে এবং আল্লাহ ছাড়া তোমাদের কোন অভিভাবক নেই, সাহায্যকারীও নেই।(২)

(১) অর্থাৎ আসমান ও যমীনের কেউ আল্লাহকে অপারগ করতে পারবে না। [তাবারী।] অথবা, তোমরা পালিয়ে এমন কোন জায়গায় চলে যেতে পারো না যেখানে গিয়ে আল্লাহর পাকড়াও থেকে বাঁচতে পারো। [দেখুন: সা’দী, মুয়াস্সার] সূরা আর রাহমানে এ কথাটিই জিন ও মানুষকে সম্বোধন করে চ্যালেঞ্জের সুরে এভাবে বলা হয়েছে যে, যদি তোমরা আল্লাহর সার্বভৌম কর্তৃত্ব ও শাসন থেকে বের হয়ে যেতে পারো তাহলে একটু বের হয়ে দেখিয়ে দাও। তা থেকে বের হবার জন্য শক্তির প্রয়োজন এবং সে শক্তি তোমাদের নেই। কাজেই তোমরা কোনক্রমেই বের হতে পারো না। [সূরা আর-রাহমান: ২৩]

(২) অর্থাৎ আল্লাহর পাকড়াও থেকে নিজেদের শক্তির জোরে রক্ষা পাওয়ার ক্ষমতা তোমাদের নেই এবং তোমাদের এমন কোন অভিভাবক, পৃষ্ঠপোষক বা সাহায্যকারীও নেই যে আল্লাহর মোকাবিলায় তোমাদের আশ্রয় দিতে পারে এবং তাঁর কাছে জবাবদিহি থেকে বাঁচতে পারে। [দেখুন: তাবারী] যারা শির্ক ও কুফরী করেছে, আল্লাহ্র নাফরমানী করেছে, সমগ্র বিশ্ব জাহানে তাদের সাহায্য ও সহায়তা দানকারী হিসেবে দাঁড়িয়ে যাবার এবং আল্লাহর আযাবকে তাদের ওপর কার্যকর হওয়া থেকে ঠেকিয়ে রাখার ক্ষমতা কারো নেই।

তাফসীরে জাকারিয়া

***********************


সাইটটি ভিজিট করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। মোহাম্মদীয়া ফাউন্ডেশনের কার্যক্রম, লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য সম্পর্কে জানতে এবং দীন ও মানবতার সেবায় অংশ নিতে OUR ACTION PLAN বাটনে ক্লিক করুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

মোহাম্মদীয়া ফাউন্ডেশনের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url