সূরা আন-নাযিয়াত তেলাওয়াত || সূরা আন-নাযিয়াত উচ্চারণ || সূরা আন-নাযিয়াত অনুবাদ || সূরা আন-নাযিয়াত তাফসীর || কারী শেখ আব্দুল বাসিত ||

সূরা আন-নাযিয়াত তেলাওয়াত

সূরা আন-নাযিয়াত তেলাওয়াত  || 
সূরা আন-নাযিয়াত শানে নযূল  ||
সূরা আন-নাযিয়াত বাংলা উচ্চারণ || 
সূরা আন-নাযিয়াত বাংলা অনুবাদ || 
সূরা আন-নাযিয়াত তাফসীর ||
সূরা আন-নাযিয়াত কোরআন মাজিদের ৭৯ তম সূরা। 
এই সূরার মোট আয়াত সংখ্যা ৪৬ টি। 
সূরা আন-নাযিয়াত এর বাংলা অর্থ- প্রচেষ্টাকারি। 
সূরা আন-নাযিয়াত মক্কায় অবতীর্ণ হয়েছে। 

সূরা আন-নাযিয়াত আরবী

Surah An-Naziat in Arabic

১) وَٱلنَّٰزِعَٰتِ غَرْقًا
২) وَٱلنَّٰشِطَٰتِ نَشْطًا
৩) وَٱلسَّٰبِحَٰتِ سَبْحًا
৪) فَٱلسَّٰبِقَٰتِ سَبْقًا
৫) فَٱلْمُدَبِّرَٰتِ أَمْرًا
৬) يَوْمَ تَرْجُفُ ٱلرَّاجِفَةُ
৭) تَتْبَعُهَا ٱلرَّادِفَةُ
৮) قُلُوبٌ يَوْمَئِذٍ وَاجِفَةٌ
৯) أَبْصَٰرُهَا خَٰشِعَةٌ
১০) يَقُولُونَ أَءِنَّا لَمَرْدُودُونَ فِى ٱلْحَافِرَةِ
১১) أَءِذَا كُنَّا عِظَٰمًا نَّخِرَةً
১২) قَالُوا۟ تِلْكَ إِذًا كَرَّةٌ خَاسِرَةٌ
১৩) فَإِنَّمَا هِىَ زَجْرَةٌ وَٰحِدَةٌ
১৪) فَإِذَا هُم بِٱلسَّاهِرَةِ
১৫) هَلْ أَتَىٰكَ حَدِيثُ مُوسَىٰٓ
১৬) إِذْ نَادَىٰهُ رَبُّهُۥ بِٱلْوَادِ ٱلْمُقَدَّسِ طُوًى
১৭) ٱذْهَبْ إِلَىٰ فِرْعَوْنَ إِنَّهُۥ طَغَىٰ
১৮) فَقُلْ هَل لَّكَ إِلَىٰٓ أَن تَزَكَّىٰ
১৯) وَأَهْدِيَكَ إِلَىٰ رَبِّكَ فَتَخْشَىٰ
২০) فَأَرَىٰهُ ٱلْءَايَةَ ٱلْكُبْرَىٰ
২১) فَكَذَّبَ وَعَصَىٰ
২২) ثُمَّ أَدْبَرَ يَسْعَىٰ
২৩) فَحَشَرَ فَنَادَىٰ
২৪) فَقَالَ أَنَا۠ رَبُّكُمُ ٱلْأَعْلَىٰ
২৫) فَأَخَذَهُ ٱللَّهُ نَكَالَ ٱلْءَاخِرَةِ وَٱلْأُولَىٰٓ
২৬) إِنَّ فِى ذَٰلِكَ لَعِبْرَةً لِّمَن يَخْشَىٰٓ
২৭) ءَأَنتُمْ أَشَدُّ خَلْقًا أَمِ ٱلسَّمَآءُ بَنَىٰهَا
২৮) رَفَعَ سَمْكَهَا فَسَوَّىٰهَا
২৯) وَأَغْطَشَ لَيْلَهَا وَأَخْرَجَ ضُحَىٰهَا
৩০) وَٱلْأَرْضَ بَعْدَ ذَٰلِكَ دَحَىٰهَآ
৩১) أَخْرَجَ مِنْهَا مَآءَهَا وَمَرْعَىٰهَا
৩২) وَٱلْجِبَالَ أَرْسَىٰهَا
৩৩) مَتَٰعًا لَّكُمْ وَلِأَنْعَٰمِكُمْ
৩৪) فَإِذَا جَآءَتِ ٱلطَّآمَّةُ ٱلْكُبْرَىٰ
৩৫) يَوْمَ يَتَذَكَّرُ ٱلْإِنسَٰنُ مَا سَعَىٰ
৩৬) وَبُرِّزَتِ ٱلْجَحِيمُ لِمَن يَرَىٰ
৩৭) فَأَمَّا مَن طَغَىٰ
৩৮) وَءَاثَرَ ٱلْحَيَوٰةَ ٱلدُّنْيَا
৩৯) فَإِنَّ ٱلْجَحِيمَ هِىَ ٱلْمَأْوَىٰ
৪০) وَأَمَّا مَنْ خَافَ مَقَامَ رَبِّهِۦ وَنَهَى ٱلنَّفْسَ عَنِ ٱلْهَوَىٰ
৪১) فَإِنَّ ٱلْجَنَّةَ هِىَ ٱلْمَأْوَىٰ
৪২) يَسْـَٔلُونَكَ عَنِ ٱلسَّاعَةِ أَيَّانَ مُرْسَىٰهَا
৪৩) فِيمَ أَنتَ مِن ذِكْرَىٰهَآ
৪৪) إِلَىٰ رَبِّكَ مُنتَهَىٰهَآ
৪৫) إِنَّمَآ أَنتَ مُنذِرُ مَن يَخْشَىٰهَا
৪৬) كَأَنَّهُمْ يَوْمَ يَرَوْنَهَا لَمْ يَلْبَثُوٓا۟ إِلَّا عَشِيَّةً أَوْ ضُحَىٰهَا

সূরা আন-নাযিয়াত বাংলা উচ্চারণ

Surah An-Naziat Bangla Uchcharon

১) ওয়ান্না-ঝি‘আ-তি গারকা-।
২) ওয়ান্না-শিতা-তি নাশতা-।
৩) ওয়াছছা-বিহা-তি ছাবহা-।
৪) ফাছছা-বিকা-তি ছাবকা-।
৫) ফাল মুদাব্বিরা-তি আমরা-।
৬) ইয়াওমা তারজুফুররা-জিফাহ।
৭) তাতবা‘উহার রা-দিফাহ।
৮) কূলূবুইঁ ইয়াওমাইযিওঁ ওয়া-জিফাহ।
৯) আবসা-রুহা-খা-শি‘আহ।
১০) ইয়াকূ লূনা আ ইন্না-লামারদূদূনা ফিল হা-ফিরাহ।
১১) আইযা-কুন্না-‘ইজা-মান নাখিরাহ।
১২) কা-লূতিলকা ইযান কাররাতুন খা-ছিরাহ।
১৩) ফাইন্নামা-হিয়া ঝাজরাতুওঁ ওয়া-হিদাহ ।
১৪) ফাইযা-হুম বিছছা-হিরাহ।
১৫) হাল আতা-কা হাদীছুমূছা-।
১৬) ইযনা-দা-হু রাব্বুহূবিলওয়া-দিল মুকাদ্দাছি তুওয়া-।
১৭) ইযহাব ইলা-ফির‘আওনা ইন্নাহূতাগা-।
১৮) ফাকুল হাল্লাকা ইলাআন তাঝাক্কা-।
১৯) ওয়া আহদিয়াকা ইলা-রাব্বিকা ফাতাখশা-।
২০) ফাআরা-হুল আ-য়াতাল কুবরা-।
২১) ফাকাযযাবা ওয়া‘আসা-।
২২) ছু ম্মা আদবারা ইয়াছ‘আ-।
২৩) ফাহাশারা ফানা-দা-।
২৪) ফাকা-লা আনা রাব্বুকুমুল আ‘লা-।
২৫) ফাআখাযাহুল্লা-হু নাকা-লাল আ-খিরাতি ওয়াল ঊলা-।
২৬) ইন্না ফী যা-লিকা লা‘ইবরাতাল লিমাইঁ ইয়াখশা-।
২৭) আ আনতুম আশাদ্দুখালকান আমিছ ছামাউ বানা-হা-।
২৮) রাফা‘আ ছামকাহা-ফাছাওয়া-হা-।
২৯) ওয়া আগতাশা লাইলাহা-ওয়া আখরাজা দুহা-হা-।
৩০) ওয়াল আর দা বা‘দা যা-লিকা দাহা-হা-।
৩১) আখরাজা মিনহা-মাআহা-ওয়া মার‘আ-হা-।
৩২) ওয়াল জিবা-লা আরছা-হা।
৩৩) মাতা-‘আল্লাকুম ওয়ালি আন‘আ-মিকুম।
৩৪) ফাইযা-জাআত্তিত্তাম্মাতুল কুবরা-।
৩৫) ইয়াওমা ইয়াতাযাক্কারুল ইনছা-নুমা-ছা‘আ-।
৩৬) ওয়া বুররিঝাতিল জাহীমুলিমাইঁ ইয়ারা-।
৩৭) ফাআম্মা-মান তাগা-।
৩৮) ওয়া আ-ছারাল হায়া-তাদ্দুনইয়া-।
৩৯) ফাইন্নাল জাহীমা হিয়াল মা’ওয়া-।
৪০) ওয়া আম্মা-মান খা-ফা মাকা-মা রাব্বিহী ওয়া নাহান্নাফছা ‘আনিল হাওয়া-।
৪১) ফাইন্নাল জান্নাতা হিয়াল মা’ওয়া।
৪২) ইয়াছা‘আলূনাকা ‘আনিছ ছা-‘আতি আইইয়া-না মুরছা-হা-।
৪৩) ফীমা আনতা মিন যিকরা-হা-।
৪৪) ইলা-রাব্বিকা মুনতাহা-হা-।
৪৫) ইন্নামাআনতা মুনযিরু মাইঁ ইয়াখশা-হা-।
৪৬) কাআন্নাহুম ইয়াওমা ইয়ারাওনাহা-লাম ইয়ালবাছূইল্লা-‘আশিইইয়াতান আও দুহা- হা।

সূরা আন-নাযিয়াত বাংলা অনুবাদ

Surah An-Naziat Bangla Onubad

১) শপথ সেই ফেরেশতাগণের, যারা ডুব দিয়ে আত্মা উৎপাটন করে,
২) শপথ তাদের, যারা আত্মার বাঁধন খুলে দেয় মৃদুভাবে;
৩) শপথ তাদের, যারা সন্তরণ করে দ্রুতগতিতে,
৪) শপথ তাদের, যারা দ্রুতগতিতে অগ্রসর হয় এবং
৫) শপথ তাদের, যারা সকল কর্মনির্বাহ করে, কেয়ামত অবশ্যই হবে।
৬) যেদিন প্রকম্পিত করবে প্রকম্পিতকারী,
৭) অতঃপর পশ্চাতে আসবে পশ্চাদগামী;
৮) সেদিন অনেক হৃদয় ভীত-বিহবল হবে।
৯) তাদের দৃষ্টি নত হবে।
১০) তারা বলেঃ আমরা কি উলটো পায়ে প্রত্যাবর্তিত হবই-
১১) গলিত অস্থি হয়ে যাওয়ার পরও?
১২) তবে তো এ প্রত্যাবর্তন সর্বনাশা হবে!
১৩) অতএব, এটা তো কেবল এক মহা-নাদ,
১৪) তখনই তারা ময়দানে আবির্ভূত হবে।
১৫) মূসার বৃত্তান্ত আপনার কাছে পৌছেছে কি?
১৬) যখন তার পালনকর্তা তাকে পবিত্র তুয়া উপ্যকায় আহবান করেছিলেন,
১৭) ফেরাউনের কাছে যাও, নিশ্চয় সে সীমালংঘন করেছে।
১৮) অতঃপর বলঃ তোমার পবিত্র হওয়ার আগ্রহ আছে কি?
১৯) আমি তোমাকে তোমার পালনকর্তার দিকে পথ দেখাব, যাতে তুমি তাকে ভয় কর।
২০) অতঃপর সে তাকে মহা-নিদর্শন দেখাল।
২১) কিন্তু সে মিথ্যারোপ করল এবং অমান্য করল।
২২) অতঃপর সে প্রতিকার চেষ্টায় প্রস্থান করল।
২৩) সে সকলকে সমবেত করল এবং সজোরে আহবান করল,
২৪) এবং বললঃ আমিই তোমাদের সেরা পালনকর্তা।
২৫) অতঃপর আল্লাহ তাকে পরকালের ও ইহকালের শাস্তি দিলেন।
২৬) যে ভয় করে তার জন্যে অবশ্যই এতে শিক্ষা রয়েছে।
২৭) তোমাদের সৃষ্টি অধিক কঠিন না আকাশের, যা তিনি নির্মাণ করেছেন?
২৮) তিনি একে উচ্চ করেছেন ও সুবিন্যস্ত করেছেন।
২৯) তিনি এর রাত্রিকে করেছেন অন্ধকারাচ্ছন্ন এবং এর সূর্যোলোক প্রকাশ করেছেন।
৩০) পৃথিবীকে এর পরে বিস্তৃত করেছেন।
৩১) তিনি এর মধ্য থেকে এর পানি ও ঘাম নির্গত করেছেন,
৩২) পর্বতকে তিনি দৃঢ়ভাবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন,
৩৩) তোমাদের ও তোমাদের চতুস্পদ জন্তুদের উপকারার্থে।
৩৪) অতঃপর যখন মহাসংকট এসে যাবে।
৩৫) অর্থাৎ যেদিন মানুষ তার কৃতকর্ম স্মরণ করবে
৩৬) এবং দর্শকদের জন্যে জাহান্নাম প্রকাশ করা হবে,
৩৭) তখন যে ব্যক্তি সীমালংঘন করেছে;
৩৮) এবং পার্থিব জীবনকে অগ্রাধিকার দিয়েছে,
৩৯) তার ঠিকানা হবে জাহান্নাম।
৪০) পক্ষান্তরে যে ব্যক্তি তার পালনকর্তার সামনে দন্ডায়মান হওয়াকে ভয় করেছে এবং খেয়াল-খুশী থেকে নিজেকে নিবৃত্ত রেখেছে,
৪১) তার ঠিকানা হবে জান্নাত।
৪২) তারা আপনাকে জিজ্ঞাসা করে, কেয়ামত কখন হবে?
৪৩) এর বর্ণনার সাথে আপনার কি সম্পর্ক ?
৪৪) এর চরম জ্ঞান আপনার পালনকর্তার কাছে।
৪৫) যে একে ভয় করে, আপনি তো কেবল তাকেই সতর্ক করবেন।
৪৬) যেদিন তারা একে দেখবে, সেদিন মনে হবে যেন তারা দুনিয়াতে মাত্র এক সন্ধ্যা অথবা এক সকাল অবস্থান করেছে।

সূরা আন-নাযিয়াত তাফসীর

Surah An-Naziat Tafseer

১. শপথ(১) নির্মমভাবে উৎপাটনকারীদের(২),
(১) এ সূরার শুরুতে কতিপয় গুণ ও অবস্থা বর্ণনা করে তাদের শপথ করা হয়েছে। এ পাঁচটি গুণাবলী কোন কোন সত্তার সাথে জড়িত, একথাও এখানে পরিস্কার করে বলা হয়নি। কিন্তু বিপুল সংখ্যক সাহাবী ও তাবেঈন এবং অধিকাংশ মুফাসসিরের মতে এখানে ফেরেশতাদের কথা বলা হয়েছে। তাছাড়া শপথের জওয়াবও উহ্য রাখা হয়েছে। মূলত কেয়ামত ও হাশর-নশর অবশ্যই হবে এবং সেগুলো নিঃসন্দেহে সত্য, একথার ওপরই এখানে কসম খাওয়া হয়েছে। [কুরতুবী] অথবা কসম ও কসমের কারণ এক হতে পারে, কেননা ফেরেশতাদের প্রতি ঈমান আনা ঈমানের স্তম্ভসমূহের মধ্যে অন্যতম। [সা'দী]

(২) বলা হয়েছে, যারা নির্মমভাবে টেনে আত্মা উৎপাটন করে। এটা যাদের শপথ করা হয়েছে সে ফেরেশতাগণের প্রথম বিশেষণ। অধিকাংশ সাহাবী ও তাবেয়ী বলেন, ডুব দিয়ে টানা এবং আস্তে আস্তে বের করে আনা এমন সব ফেরেশতার কাজ যারা মৃত্যুকালে মানুষের শরীরে গভীর অভ্যন্তরে প্রবেশ করে তার প্রতিটি শিরা উপশিরা থেকে তার প্রাণ বায়ু টেনে বের করে আনে। এখানে আযাবের, সেসব ফেরেশতা বোঝানো হয়েছে, যারা কাফেরের আত্মা নির্মমভাবে বের করে। [ফাতহুল কাদীর]

২. আর মৃদুভাবে বন্ধনমুক্তকারীদের(১)
(১) এটা যাদের শপথ করা হয়েছে সে ফেরেশতাগণের দ্বিতীয় বিশেষণ। বলা হয়েছে যে, যে ফেরেশতা মুমিনের রূহ কবজ করার কাজে নিয়োজিত আছে, সে আনায়াসে রূহ কবজ করে- কঠোরতা করে না। প্রকৃত কারণ এই যে কাফেরের আত্মা বের করার সময় থেকেই বরযাখের আযাব সামনে এসে যায়। এতে তার আত্মা অস্থির হয়ে দেহে আত্মগোপন করতে চায়। ফেরেশতা জোরে-জবরে টানা-হেঁচড়া করে তাকে বের করে। পক্ষান্তরে মুমিনের রূহের সামনে বরযখের সওয়াব নেয়ামত ও সুসংবাদ ভেসে উঠে। ফলে সে দ্রুতবেগে সেদিকে যেতে চায়। [কুরতুবী]

৩. আর তীব্ৰ গতিতে সন্তরণকারীদের(১),
(১) এটা তাদের তৃতীয় বিশেষণ। سابحات এর আভিধানিক অর্থ সাঁতার কাটা। এই সাঁতারু বিশেষণটিও মৃত্যুর ফেরেশতাগণের সাথে সম্পর্কযুক্ত। মানুষের রূহ কবজ করার পর তারা দ্রুতগতিতে আকাশের দিকে নিয়ে যায়। [কুরতুবী]
৪. আর দ্রুতবেগে অগ্রসরমানদের(১),
(১) এটা তাদের চতুৰ্থ বিশেষণ। উদ্দেশ্য এই যে, যে আত্মা ফেরেশতাগণের হস্তগত হয় তাকে ভাল অথবা মন্দ ঠিকানায় পৌছানোর কাজে তারা দ্রুততায় একে অপরকে ডিঙ্গিয়ে যায়। তারা মুমিনের আত্মাকে জান্নাতের আবহাওয়ায় ও নেয়ামতের জায়গায় এবং কাফেরের আত্মাকে জাহান্নামের আবহাওয়ায় ও আযাবের জায়গায় পৌছিয়ে দেয়। [ফাতহুল কাদীর]

৫. অতঃপর সব কাজ নির্বাহকারীদের।(১)
(১) পঞ্চম বিশেষণ। অর্থাৎ মৃত্যুর ফেরেশতাদের সর্বশেষ কাজ এই যে, তারা আল্লাহ তা'আলার নির্দেশে দুনিয়ার বিভিন্ন কাজ নির্বাহের ব্যবস্থা করে। [সা'দী]

৬. সেদিন প্ৰকম্পিতকারী প্ৰকম্পিত করবে,
৭. তাকে অনুসরণ করবে পরবর্তী কম্পনকারী(১),
(১) প্রথম প্রকম্পনকারী বলতে এমন প্রকম্পন বুঝানো হয়েছে, যা পৃথিবী ও তার মধ্যকার সমস্ত জিনিস ধ্বংস করে দেবে। আর দ্বিতীয় প্রকম্পন বলতে যে কম্পনে সমস্ত মৃতরা জীবিত হয়ে যমীনের মধ্য থেকে বের হয়ে আসবে তাকে বুঝানো হয়েছে। [মুয়াস্‌সার] অন্যত্র এ অবস্থাটি নিম্নোক্তভাবে বর্ণিত হয়েছেঃ “আর শিংগায় ফুঁক দেয়া হবে। তখন পৃথিবী ও আকাশসমূহে যা কিছু আছে সব মরে পড়ে যাবে, তবে কেবলমাত্র তারাই জীবিত থাকবে যাদের আল্লাহ (জীবিত রাখতে) চাইবেন। তারপর দ্বিতীয়বার ফুঁক দেয়া হবে। তখন তারা সবাই আবার হঠাৎ উঠে দেখতে থাকবে।” [সূরা আয-যুমার: ৬৮] এক হাদীসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম রাত্রির দুই তৃতীয়াংশ অতিবাহিত হলে দাঁড়িয়ে বলতেন, হে মানুষ! তোমরা আল্লাহর যিকর কর, তোমরা আল্লাহর যিকর কর। ‘রাজেফাহ’ (প্রকম্পণকারী) তো এসেই গেল (প্রায়), তার পিছনে আসবে ‘রাদেফাহ’ (পশ্চাতে আগমনকারী), মৃত্যু তার কাছে যা আছে তা নিয়ে হাজির, মৃত্যু তার কাছে যা আছে তা নিয়ে হাজির।

সাহাবী উবাই ইবনে কা'ব বলেন, আমি বললাম হে আল্লাহর রাসূল! আমি আপনার উপর বেশী বেশী সালাত (দরুদ) পাঠ করি। এ সালাত পাঠের পরিমান কেমন হওয়া উচিত? তিনি বললেন, তোমার যা ইচ্ছা। আমি বললাম, (আমার যাবতীয় দোআর) এক চতুর্থাংশ? তিনি বললেন, যা তোমার ইচ্ছা। তবে যদি এর থেকেও বেশী কর তবে সেটা তোমার জন্য কল্যাণকর হবে। আমি বললাম, অর্ধেকাংশ? তিনি বললেন, যা তোমার ইচ্ছা। তবে যদি এর থেকেও বেশী কর তবে সেটা তোমার জন্য কল্যাণকর হবে। আমি বললাম, দুই তৃতীয়াংশ? তিনি বললেন, যা তোমার ইচ্ছা। তবে যদি এর থেকেও বেশী কর তবে সেটা তোমার জন্য কল্যাণকর হবে। আমি বললাম, তাহলে আমি আপনার জন্য আমার সালাতের সবটুকুই নির্ধারণ করব, (অর্থাৎ আমার যাবতীয় দোআ হবে আপনার উপর সালাত বা দরুদ প্রেরণ) তখন রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, তাহলে তা তোমার যাবতীয় চিন্তা দূর করে দিবে এবং তোমার গোনাহ ক্ষমা করে দিবে।” [তিরমিযী: ২৪৫৭, মুস্তাদরাকে হাকিম: ২/৫১৩, দ্বিয়া: আল-মুখতারাহ: ৩/৩৮৮, ৩৯০]
৮. অনেক হৃদয় সেদিন সন্ত্রস্ত হবে(১),
(১) “কতক হৃদয়” বলতে কাফের ও নাফরমানদের বোঝানো হয়েছে। কিয়ামতের দিন তারা ভীত ও আতঙ্কিত হবে। [মুয়াস্‌সার] সৎ মুমিন বান্দাদের ওপর এ ভীতি প্রভাব বিস্তার করবে না। অন্যত্র তাদের সম্পর্কে বলা হয়েছেঃ “সেই চরম ভীতি ও আতংকের দিনে তারা একটুও পেরেশান হবে না এবং ফেরেশতারা এগিয়ে এসে তাদেরকে অভ্যর্থনা জানাবে। তারা বলতে থাকবে, তোমাদের সাথে এ দিনটিরই ওয়াদা করা হয়েছিল।” [সূরা আল-আম্বিয়া: ১০৩]

৯. তাদের দৃষ্টিসমূহ ভীতি-বিহ্বলতায় নত হবে।
১০. তারা বলে, আমরা কি আগের অবস্থায় ফিরে যাবই—
১১. চূৰ্ণবিচূর্ণ অস্থিতে পরিণত হওয়ার পরও?
১২. তারা বলে, তাই যদি হয় তবে তো এটা এক সর্বনাশা প্ৰত্যাবর্তন।
১৩. এ তো শুধু এক বিকট আওয়াজ(১),
(১) অর্থাৎ আল্লাহর জন্য এটা কোন কঠিন কাজ নয়। এ কাজটি করতে তাকে কোন বড় রকমের প্রস্তুতি নিতে হবে না। এর জন্য শুধুমাত্র একটি ধমক বা আওয়াজই যথেষ্ট। এরপরই তোমরা সমতল ময়দানে আবির্ভূত হবে। [ইবন কাসীর]

১৪. তখনই ময়দানে(১) তাদের আবির্ভাব হবে।
(১) আয়াতে বর্ণিত ساهرة শব্দের অর্থ সমতল ময়দান। কেয়ামতে পূনরায় যে ভূপৃষ্ঠ সৃষ্টি করা হবে, তা সমতল হবে। একেই আয়াতে ساهرة বলে ব্যক্ত করা হয়েছে। এর অর্থ জমিনের উপরিভাগও হতে পারে। [ইবন কাসীর]

১৫. আপনার কাছে মূসার বৃত্তান্ত পৌঁছেছে কি?(১)
(১) কাফেরদের অবিশ্বাস, হটকারিতা ও শক্রতার ফলে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যে মর্মপীড়া অনুভব করতেন, তা দূর করার উদ্দেশ্যে মূসা আলাইহিস সালাম ও ফিরআউনের ঘটনা উল্লেখ করা হয়েছে। এতে ইঙ্গিত করা হয়েছে যে, শত্রুরা কেবল আপনাকেই কষ্ট দেয়নি, পূর্ববর্তী সকল রাসূলকেও কষ্ট দিয়েছে, কিন্তু তাদের পরিণতি হয়েছে ভয়াবহ। সুতরাং আপনিও সবর করুন। [দেখুন, কুরতুবী]

১৬. যখন তাঁর রব পবিত্র উপত্যকা ‘তুওয়া’য় তাকে ডেকে বলেছিলেন,
১৭. ফির’আউনের কাছে যান, সে তো সীমালঙ্ঘন করেছে,
১৮. অতঃপর বলুন, তোমার কি আগ্রহ আছে যে, তুমি পবিত্র হও—
১৯. আর আমি তোমাকে তোমার রবের দিকে পথপ্রদর্শন করি, যাতে তুমি তাঁকে ভয় কর?
২০. অতঃপর তিনি তাকে মহানিদর্শন দেখালেন।(১)
(১) বড় নিদর্শন বলতে সবগুলো মুজিযা উদ্দেশ্য হতে পারে। আবার লাঠির অজগর হয়ে যাওয়া এবং হাত শুভ্র হওয়ার কথাও বুঝানো হতে পারে। [কুরতুবী, মুয়াস্‌সার]
২১. কিন্তু সে মিথ্যারোপ করল এবং অবাধ্য হল।
২২. তারপর সে পিছনে ফিরে প্রতিবিধানে সচেষ্ট হল।(১)
(১) অর্থাৎ হককে বাতিল দ্বারা প্ৰতিহত করতে চেষ্টা করতে লাগল। [ইবন কাসীর]

২৩. অতঃপর সে সকলকে সমবেত করে ঘোষণা দিল,
২৪. অতঃপর বলল, আমিই তোমাদের সর্বোচ্চ রব।
২৫. অতঃপর আল্লাহ তাকে আখেরাতে ও দুনিয়ায় কঠিন শাস্তিতে পাকড়াও করলেন।(১)
(১) نكال শব্দের অর্থ দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি, যা দেখে অন্যরাও আতঙ্কিত হয়ে যায় এবং শিক্ষা পায়। [কুরতুবী]

২৬. নিশ্চয় যে ভয় করে তার জন্য তো এতে শিক্ষা রয়েছে।
২৭. তোমাদেরকে(১) সৃষ্টি করা কঠিন, না আসমান সৃষ্টি? তিনিই তা নির্মাণ করেছেন(২);
(১) কিয়ামত ও মৃত্যুর পরের জীবন যে সম্ভব এবং তা যে সৃষ্টি জগতের পরিবেশ পরিস্থিতির যুক্তিসংগত দাবী একথার যৌক্তিকতা এখানে পেশ করা হয়েছে। [ইবন কাসীর]

(২) এখানে মরে মাটিতে পরিণত হওয়ার পর পুনরুজ্জীবন কিরূপে হবে, কাফেরদের এই বিস্ময়ের জওয়াব দেওয়া হয়েছে। এখানে সৃষ্টি করা মানে দ্বিতীয়বার মানুষ সৃষ্টি করা। মৃত্যুর পরের জীবন সম্পর্কে এই যুক্তিটিই কুরআনের বিভিন্ন স্থানে পেশ করা হয়েছে। যেমন অন্যত্র বলা হয়েছেঃ “আর যিনি আকাশ ও পৃথিবী তৈরি করেছেন, তিনি কি এই ধরনের জিনিসগুলোকে (পুনর্বার) সৃষ্টি করার ক্ষমতা রাখেন না? কেন নয়? তিনি তো মহাপরাক্রমশালী স্রষ্টা। সৃষ্টি করার কাজ তিনি খুব ভালো করেই জানেন।” [সূরা ইয়াসীন: ৮১] অন্যত্র আরও বলা হয়েছেঃ “অবশ্যি আকাশসমূহ ও পৃথিবী সৃষ্টি করা মানুষ সৃষ্টির চাইতে অনেক বেশী বড় কাজ। কিন্তু অধিকাংশ লোক জানে না। [সূরা গাফির: ৫৭ আয়াত] [ইবন কাসীর]
২৮. তিনি এর ছাদকে সুউচ্চ করেছেন ও সুবিন্যস্ত করেছেন।
২৯. আর তিনি এর রাতকে করেছেন অন্ধকারাচ্ছন্ন এবং প্রকাশ করেছেন এর সূর্যালোক;
৩০. আর যমীনকে এর পর বিস্তৃত করেছেন।(১)
(১) “এরপর তিনি যমীনকে বিছিয়েছেন”-এর অর্থ এ নয় যে, আকাশ সৃষ্টি করার পরই আল্লাহ পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন। কেননা, কুরআনে কোথাও পৃথিবী সৃষ্টির ব্যাপারটি আগে এবং আকাশ সৃষ্টির ব্যাপারটি পরে উল্লেখ করা হয়েছে। যেমন সূরা আল বাকারার ২৯ নং আয়াতে। কিন্তু এ আয়াতে আকাশ সৃষ্টির ব্যাপারটি আগে এবং পৃথিবী সৃষ্টির ব্যাপারটি পরে উল্লেখ করা হয়েছে। এটি আসলে কোন বিপরীতধর্মী বক্তব্য নয়। কেননা, পৃথিবী সৃষ্টি আকাশ সৃষ্টির পূর্বে হলেও পৃথিবী বিস্তৃতকরণ, পানি ও তৃণ বের করা, পাহাড় স্থাপন ইত্যাদি করা হয়েছে আকাশ সৃষ্টির পর। [ইবন কাসীর]

৩১. তিনি তা থেকে বের করেছেন তার পানি ও তৃণভূমি,
৩২. আর পর্বতকে তিনি দৃঢ়ভাবে প্রোথিত করেছেন;
৩৩. এসব তোমাদের ও তোমাদের চতুষ্পদ জন্তুগুলোর ভোগের জন্য।
৩৪. অতঃপর যখন মহাসংকট উপস্থিত হবে(১)
(১) এই মহাসংকট ও বিপর্যয় হচ্ছে কিয়ামত। এ-জন্য এখানে “আত-তাম্মাতুল কুবরা” শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে। “তাম্মাহ” বলতে এমন ধরনের মহাবিপদ, বিপর্যয় ও সংকট বুঝায় যা সবকিছুর উপর ছেয়ে যায়। এরপর আবার তার সাথে “কুবরা” (মহা) শব্দ ব্যবহার করে একথা প্ৰকাশ করা হয়েছে যে সেই বিপদ, সংকট ও বিপর্যয় হবে অতি ভয়াবহ ও ব্যাপক। [দেখুন, কুরতুবী]

৩৫. মানুষ যা করেছে তা সে সেদিন স্মরণ করবে,
৩৬. আর প্রকাশ করা হবে জাহান্নাম দর্শকদের জন্য,
৩৭. সুতরাং যে সীমালঙ্ঘন করে,
৩৮. এবং দুনিয়ার জীবনকে অগ্রাধিকার দেয়।
৩৯. জাহান্নামই হবে তার আবাস।(১)
(১) এ আয়াতে জাহান্নামীদের কথা বর্ণনা করা হয়েছে: যে ব্যক্তি আল্লাহ্ তা'আলা ও তাঁর রাসূলের অবাধ্যতা করবে, আর পার্থিব জীবনকে আখেরাতের উপর অগ্ৰাধিকার দেবে অর্থাৎ আখেরাতের কাজ ভুলে গিয়ে দুনিয়ার সুখ ও আনন্দকেই অগ্ৰাধিকার দিবে; তার সম্পর্কে বলা হয়েছে, জাহান্নামই তার আবাস বা ঠিকানা। [সা’দী]
৪০. আর যে তার রবের অবস্থানকে(১) ভয় করে এবং কুপ্রবৃত্তি হতে নিজকে বিরত রাখে,
(১) রবের অবস্থানের দু'টি অর্থ হতে পারে, এক. রবের সামনে হাজির হয়ে হিসাব নিকাশের সম্মুখীন হতে হবে- এ বিশ্বাস করে প্রবৃত্তির অনুসরণ হতে যে নিজেকে হেফাযত করেছে তার জন্য রয়েছে জান্নাত। দুই. রবের যে সুমহান মর্যাদা তাঁর এ উচ্চ মর্তবার কথা স্মরণ করে অন্যায় অশ্লিল কাজ এবং প্রবৃত্তির অনুসরণ থেকে বিরত থেকেছে সে জান্নাতে যাবে। উভয় অর্থই এখানে সঠিক। [বাদা’ই'উত তাফসীর]

৪১. জান্নাতই হবে তার আবাস।
৪২. তারা আপনাকে জিজ্ঞেস করে, কিয়ামত সম্পর্কে, তা কখন ঘটবে?
৪৩. তা আলোচনার কি জ্ঞান আপনার আছে?
৪৪. এর পরম জ্ঞান আপনার রবেরই কাছে(১);
(১) এ সম্পর্কে অন্য আয়াতে বলা হয়েছে, “তারা আপনাকে জিজ্ঞাসা করে কিয়ামত কখন ঘটবে। বলুন, “এ বিষয়ের জ্ঞান শুধু আমার প্রতিপালকেরই আছে। শুধু তিনিই যথাসময়ে উহার প্রকাশ ঘটাবেন; ওটা আকাশমন্ডলী ও যমীনে একটি ভয়ংকর ঘটনা হবে। হঠাৎ করেই উহা তোমাদের উপর আসবে।’ আপনি এ বিষয়ে সবিশেষ জ্ঞাত মনে করে তারা আপনাকে প্রশ্ন করে। বলুন, “এ বিষয়ের জ্ঞান শুধু আল্লাহরই আছে, কিন্তু অধিকাংশ লোক জানে না। [সূরা আল-আরাফ: ১৮৭] এখানে ঠিক এটাকে বলা হয়েছে যে, এর পরম জ্ঞান রয়েছে আপনার রবের কাছেই। হাদীসে জিবরীল নামক প্রসিদ্ধ হাদীসেও জিবরাঈলের প্রশ্নের উত্তরে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম একই উত্তর দিয়ে বলেছিলেন, “যাকে প্রশ্ন করা হয়েছে সে প্রশ্নকারীর চেয়ে বেশী জানে না”। [বুখারী: ৫০]

৪৫. যে এটার ভয় রাখে আপনি শুধু তার সতর্ককারী।
৪৬. যেদিন তারা তা দেখতে পাবে সেদিন তাদের মনে হবে যেন তারা দুনিয়ায় মাত্র এক সন্ধ্যা অথবা এক প্ৰভাত অবস্থান করেছে!(১)
(১) দুনিয়ার জীবনের স্বল্পতার বিষয়বস্তুটি পবিত্র কুরআনের অন্যান্য স্থানেও বর্ণিত হয়েছে। যেমন, সূরা ইউনুস, আল-ইসরা, ত্বা-হা, আল-মুমিনুন, আর-রূম, ইয়াসীন ও আহকাফে এ দিকে ইঙ্গিত করা হয়েছে।
তাফসীরে জাকারিয়া


***********************
সাইটটি ভিজিট করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। মোহাম্মদীয়া ফাউন্ডেশনের কার্যক্রম, লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য সম্পর্কে জানতে এবং দীন ও মানবতার সেবায় অংশ নিতে OUR ACTION PLAN বাটনে ক্লিক করুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

মোহাম্মদীয়া ফাউন্ডেশনের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url