বিষয় ভিত্তিক আয়াত || ঈমানদারদের জন্য পরীক্ষা || (২য় পর্ব)

ঈমানদারদেরকে দুনিয়ায় অবশ্যই পরীক্ষার মুখোমুখি হবে হবে

ক্বারী আব্দুল বাসিতের কুরআন তেলাওয়াত শুনতে  ক্লিক করুন

সূরাঃ ইউনুস | Yunus | سورة يونس

 সূরাঃ ইউনুস, আয়াত ৬২ 

৬২ اَلَاۤ اِنَّ اَوۡلِیَآءَ اللّٰهِ لَا خَوۡفٌ عَلَیۡهِمۡ وَ لَا هُمۡ یَحۡزَنُوۡنَ 

 সূরাঃ ইউনুস, আয়াত ৬২ এর অর্থ 

শুনে রাখ, নিশ্চয় আল্লাহর বন্ধুদের কোন ভয় নেই, আর তারা পেরেশানও হবে না।

Unquestionably, [for] the allies of Allah there will be no fear concerning them, nor will they grieve

 সূরাঃ ইউনুস, আয়াত ৬২ এর তাফসীর 

৬২. জেনে রাখা আল্লাহর বন্ধুদের কোন ভয় নেই এবং তারা চিন্তিতও হবে না।(১)

(১) আলোচ্য আয়াতসমূহে আল্লাহর অলীদের বিশেষ বৈশিষ্ট্য, তাদের প্রশংসা ও পরিচয় বর্ণনার সাথে সাথে তাদের প্রতি আখেরাতের সুসংবাদ দেয়া হয়েছে। বলা হয়েছে- যারা আল্লাহর অলী তাদের না থাকবে কোন অপছন্দনীয় বিষয়ের সম্মুখীন হওয়ার আশঙ্কা, আর না থাকবে কোন উদ্দেশ্যে ব্যর্থতার গ্লানি। এদের জন্য পার্থিব জীবনেও সংবাদ রয়েছে এবং আখেরাতেও। দুনিয়াতেও তারা দুঃখ-ভয় থেকে মুক্ত। আর আখেরাতে তাদের মনে কোন চিন্তা-ভাবনা না থাকার অর্থ জান্নাতে যাওয়া। এতে সমস্ত জান্নাতবাসীই অন্তর্ভুক্ত।

আখেরাতে আল্লাহর বন্ধুদের কোন ভয় নেই

আয়াতে উল্লেখিত ‘আওলিয়া’ শব্দটি অলী শব্দের বহুবচন। আরবী ভাষায় অলী অর্থ নিকটবর্তীও হয় এবং দোস্ত-বন্ধুও হয়। শরীআতের পরিভাষায় অলী বলতে বুঝায়ঃ যার মধ্যে দুটি গুণ আছেঃ ঈমান এবং তাকওয়া। মহান আল্লাহ বলেন, “জেনে রাখ! আল্লাহর অলী তথা বন্ধুদের কোন ভয় নেই এবং তারা চিন্তিতও হবেনা, যারা ঈমান আনে এবং তাকওয়া অবলম্বন করে।” [সূরা ইউনুসঃ ৬২–৬৩] যদি আল্লাহর অলী বলতে ঈমানদার ও মুত্তাকীদের বুঝায় তাহলে বান্দার ঈমান ও তাকওয়া অনুসারে আল্লাহর কাছে তার বেলায়াত তথা বন্ধুত্ব নির্ধারিত হবে। সুতরাং যার ঈমান ও তাকওয়া সবচেয়ে বেশী পূর্ণ, তার বেলায়াত তথা আল্লাহর বন্ধুত্ব সবচেয়ে বেশী হবে। ফলে মানুষের মধ্যে তাদের ঈমান ও তাকওয়ার ভিত্তিতে আল্লাহর বেলায়াতের মধ্যেও তারতম্য হবে।

আল্লাহর বন্ধুদের সম্পর্কে কতিপয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয়

১. আল্লাহর নবীরা তার সর্বশ্রেষ্ঠ অলী বা বন্ধু হিসাবে স্বীকৃত। নবীদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ হলেন তার রাসূলগণ। রাসূলদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ হলেনঃ দৃঢ়প্রতিজ্ঞ রাসূলগণ তথা নূহ, ইবরাহীম, মূসা, ঈসা এবং মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। আর সমস্ত দৃঢ় প্রতিজ্ঞ রাসূলদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ হলেনঃ মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম।

২. এখানে এটা জানা আবশ্যক যে, আল্লাহর অলী বা বন্ধুগণ দু,শ্রেণীতে বিভক্তঃ প্রথম শ্রেণীঃ যারা অগ্রবর্তী ও নৈকট্যপ্রাপ্ত। দ্বিতীয় শ্রেণীঃ যারা ডান ও মধ্যম পন্থী। আল্লাহ তা'আলা পবিত্র কুরআনের বিভিন্ন স্থানে তাদের উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেনঃ “যখন যা ঘটা অবশ্যম্ভাবী (কিয়ামত) তা ঘটবে, তখন তার সংঘটনকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করার কেউ থাকবে না। তা কাউকে নীচ করবে, কাউকে সমুন্নত করবে। যখন প্রবল কম্পনে প্রকম্পিত হবে যমীন। পর্বতমালা চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে পড়বে। ফলে তা উৎক্ষিপ্ত ধূলিকণায় পর্যবসিত হবে। এবং তোমরা বিভক্ত হয়ে পড়বে তিন শ্রেনীতে- ডান দিকের দল; ডান দিকের দলের কি মর্যাদা! আর বাম দিকের দল; বাম দিকের দলের কি অসম্মান। আর অগ্রবর্তীগণই তো অগ্রবর্তী। তারাই নৈকট্যপ্রাপ্ত- নেয়ামত পূর্ণ জান্নাতে। [সূরা আল-ওয়াকি'আহঃ ১–১২]

এখানে তিন শ্রেণীর লোকের উল্লেখ করা হয়েছেঃ যাদের একদল জাহান্নামের, তাদেরকে বামদিকের দল বলা হয়েছে। আর বাকী দু’দল জান্নাতের, তারা হলেনঃ ডানদিকের দল এবং অগ্রবর্তী ও নৈকট্যপ্রাপ্তগণ। তাদেরকে আবার এ সূরা আলওয়াকি'আরই শেষে আল্লাহ তা'আলা উল্লেখ করে বলেছেন, “তারপর যদি সে নৈকট্যপ্রাপ্তদের একজন হয় তবে তার জন্য রয়েছে আরাম, উত্তম জীবনোপকরণ ও নেয়ামত পূর্ণ জান্নাত। আর যদি সে ডান দিকের একজন হয় তবে তোমার জন্য সালাম ও শান্তি; কারণ সে ডানপন্থীদের মধ্যে”। [সূরা আল-ওয়াকি'আহঃ ৮৮–৯১]

অনুরূপভাবে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামও অলীদের সাথে সংশ্লিষ্ট বিখ্যাত হাদীসে বলেনঃ “মহান আল্লাহ বলেনঃ যে ব্যক্তি আমার কোন অলীর সাথে শক্রতা পোষণ করে আমি তার সাথে যুদ্ধের ঘোষণা দিলাম। আমার বান্দার উপর যা আমি ফরয করেছি তা ছাড়া আমার কাছে অন্য কোন প্রিয় বস্তু নেই যার মাধ্যমে সে আমার নৈকট্য লাভ করতে পারে। আমার বান্দা আমার কাছে নফল কাজসমূহ দ্বারা নৈকট্য অর্জন করতেই থাকে, শেষ পর্যন্ত আমি তাকে ভালবাসি। তারপর যখন আমি তাকে ভালবাসি তখন আমি তার শ্রবণশক্তি হয়ে যাই যার দ্বারা সে শুনে, তার দৃষ্টি শক্তি হয়ে যাই যার দ্বারা সে দেখে, তার হাত হয়ে যাই যার দ্বারা সে ধারণ করে আর তার পা হয়ে যাই যার দ্বারা সে চলে। তখন আমার কাছে কিছু চাইলে আমি তাকে তা অবশ্যই দেব, আমার কাছে আশ্রয় চাইলে আমি তাকে অবশ্যই উদ্ধার করব।” [বুখারী: ৬৫০২]

এর মর্ম হলো এই যে, তার কোন গতি-স্থিতি ও অন্য যে কোন কাজ আমার ইচ্ছার বিরুদ্ধে হয় না। বস্তুতঃ এই বিশেষ ওলীত্ব বা নৈকট্যের স্তর অগণিত ও অশেষ। এর সর্বোচ্চ স্তর নবী-রাসূলগণের প্রাপ্য। কারণ, প্রত্যেক নবীরই ওলী হওয়া অপরিহার্য। আর এর সর্বোচ্চ স্তর হলো সাইয়্যেদুল আম্বীয়া রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর। এর পর প্রত্যেক ঈমানদার তার ঈমানের শক্তি ও স্তরের বৃদ্ধি-ঘাটতি অনুসারে বেলায়েতের অধিকারী হবে। সুতরাং নেককার লোকেরা হলোঃ ডান দিকের দল, যারা আল্লাহর কাছে ফরয আদায়ের মাধ্যমে নৈকট্য লাভ করে। তারা আল্লাহ তাদের উপর যা ফরয করেছেন তা আদায় করে, আর যা হারাম করেছেন তা পরিত্যাগ করে। তারা নফল কাজে রত হয় না। কিন্তু যারা অগ্রবর্তী নৈকট্যপ্রাপ্ত দল তারা আল্লাহর কাছে ফরয আদায়ের পর নফলের মাধ্যমে নৈকট্য লাভে রত হয়।

৩. এখানে আরও একটি বিষয় জানা আবশ্যক যে, আল্লাহর অলীগণ অন্যান্য মানুষদের থেকে প্রকাশ্যে কোন পোষাক বা বেশ-ভূষা দ্বারা বিশেষভাবে পরিচিত হন না। বরং মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের উম্মাতের মধ্যে প্রকাশ্য বিদ'আতকারী ও অন্যায়কারী ছাড়া সর্বস্তরে আল্লাহর অলীগণের অস্তিত্ব বিদ্যমান। তাদের অস্তিত্ব রয়েছে কুরআনের ধারক-বাহকদের মাঝে, জ্ঞানী-আলেমদের মাঝে, জিহাদকারী ও তরবারী-ধারকদের মাঝে, ব্যবসায়ী, কারিগর ও কৃষকের মাঝে।

৪. আল্লাহর অলীগণের মধ্যে নবী-রাসূলগণ ছাড়া আর কেউ নিষ্পাপ নন, তাছাড়া কোন অলীই গায়েব জানেনা, সৃষ্টি বা রিযক প্রদানে তাদের কোন প্রভাবও নেই। তারা নিজেদেরকে সম্মান করতে অথবা কোন ধন-সম্পদ তাদের উদ্দেশ্যে ব্যয় করতে মানুষদেরকে আহবান করেন না। যদি কেউ এমন কিছু করে তাহলে সে আল্লাহর অলী হতে পারে না, বরং মিথ্যাবাদী, অপবাদ আরোপকারী, শয়তানের আলী হিসাবে বিবেচিত হবে।

৫. আল্লাহর অলী বা বন্ধু হওয়ার জন্য একটিই উপায় রয়েছে, আর তা হচ্ছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর রঙে রঞ্জিত হওয়া, তার সুন্নাতের হুবহু অনুসরণ করা। যারা এ ধরনের অনুসরণ করতে পেরেছেন তাদের মর্যাদাই আলাদা। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ “আল্লাহর এমন কিছু বান্দা রয়েছে যাদেরকে শহীদরাও ঈর্ষা করবে। বলা হলোঃ হে আল্লাহর রাসূল! তারা কারা? হয়ত তাদের আমরা ভালবাসবো। রাসূল বললেনঃ “তারা কোন সম্পদ বা আত্মীয়তার সম্পর্ক ব্যতীতই একে অপরকে একমাত্র আল্লাহর উদ্দেশ্যে ভালবেসেছে। নূরের মিম্বরের উপর তাদের চেহারা হবে নূরের। মানুষ যখন ভীত হয় তখন তারা ভীত হয় না। মানুষ যখন পেরেশান ও অস্থির হয় তখন তারা অস্থির হয় না।” তারপর তিনি এ আয়াত পাঠ করলেন। [ইবনে হিব্বানঃ ৫৭৩, আবু দাউদঃ ৩৫২৭]

অন্য বর্ণনায় রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ “বিভিন্ন দিক থেকে মানুষ আসবে এবং বিভিন্ন গোত্র থেকে মানুষ এসে জড়ো হবে, যাদের মাঝে কোন আতীয়তার সম্পর্ক থাকবে না। তারা আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে একে অপরকে ভালবেসেছে, আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে যুদ্ধে স্থাপন করবেন, তারপর তাদেরকে সেগুলোতে বসাবেন। তাদের বৈশিষ্ট হলো মানুষ যখন ভীত হয় তখন তারা ভীত হয় না, মানুষ যখন পেরেশান হয় তখন তারা পেরেশান হয় না। তারা আল্লাহর অলী, তাদের কোন ভয় ও পেরেশানী কিছুই থাকবে না। [মুসনাদে আহমাদ ৫/৩৪৩]। [উসুলুল ঈমান ফী দাওয়িল কিতাবি ওয়াস সুন্নাহ, বাদশাহ ফাহাদ কুরআন প্রিন্টিং প্রেস থেকে মুদ্রিত, পৃ. ২৮২–২৮৬ (বাংলা সংস্করণ)]

তাফসীরে জাকারিয়া

 সূরাঃ ইউনুস, আয়াত ৬৩ 

৬৩ الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا وَ کَانُوۡا یَتَّقُوۡنَ

 সূরাঃ ইউনুস, আয়াত ৬৩ এর অর্থ 

যারা ঈমান এনেছে এবং তাকওয়া অবলম্বন করত।

Those who believed and were fearing Allah 

 সূরাঃ ইউনুস, আয়াত ৬৩ এর তাফসীর 

৬৩. যারা ঈমান এনেছে এবং তাকওয়া অবলম্বন করত।

তাফসীরে জাকারিয়া

 সূরাঃ ইউনুস, আয়াত ৬৪ 

৬৪ لَهُمُ الۡبُشۡرٰی فِی الۡحَیٰوۃِ الدُّنۡیَا وَ فِی الۡاٰخِرَۃِ ؕ لَا تَبۡدِیۡلَ لِکَلِمٰتِ اللّٰهِ ؕ ذٰلِکَ هُوَ الۡفَوۡزُ الۡعَظِیۡمُ 

 সূরাঃ ইউনুস, আয়াত ৬৪ এর অর্থ 

তাদের জন্যই সুসংবাদ দুনিয়াবী জীবনে এবং আখিরাতে। আল্লাহর বাণীসমূহের কোন পরিবর্তন নেই। এটিই মহাসফলতা।

For them are good tidings in the worldly life and in the Hereafter. No change is there in the words of Allah. That is what is the great attainment. 

 সূরাঃ ইউনুস, আয়াত ৬৪ এর তাফসীর

৬৪. তাদের জন্যই আছে সুসংবাদ দুনিয়ার জীবনে ও আখিরাতে(১), আল্লাহর বাণীর কোন পরিবর্তন নেই(২); সেটাই মহাসাফল্য।

ঈমানদার ও তাকওয়া অবলম্বনকারীদের জন্য সুসংবাদ

(১) এখানে আল্লাহর অলীদের জন্য দুনিয়ার সুসংবাদ বলতে যা বুঝানো হয়েছে তা সম্পর্কে বিভিন্ন হাদীসে এসেছে যে, তা হলো “কোন মুসলিম তার জন্য কোন ভাল স্বপ্ন দেখা বা তার জন্য অন্য কেউ কোন ভাল স্বপ্ন দেখা।” [মুসলিমঃ ২৬৪২, মুসনাদে আহমাদ ৫/৩১৫, ৬/৪৪৫, তিরমিযীঃ ২২৭৩, ২২৭৫, ইবনে মাজাহঃ ৩৮৯৮] কোন কোন হাদীসে এসেছে যে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ “যখন সময় (কিয়ামত) নিকটবর্তী হবে তখন মুসলিম ব্যক্তির স্বপ্ন প্রায় সত্য হবে। তোমাদের মধ্যে যে বেশী সত্যবাদি তার স্বপ্নও বেশী সত্য। মুসলিম ব্যক্তির স্বপ্ন নবুওয়াতের পয়তাল্লিশ ভাগের একভাগ। স্বপ্ন তিন প্রকারঃ সৎ স্বপ্ন আল্লাহর পক্ষ থেকে সুসংবাদ। আরেক প্রকার স্বপ্ন হচ্ছে শয়তানের পুঞ্জিভূত করা বিষয়াদি। অন্য আরেক প্রকার স্বপ্ন আছে যা কোন ব্যক্তির নিজের সাথে কৃত কথাবার্তা। সুতরাং তোমাদের মধ্যে যদি কেউ অপছন্দনীয় কিছু দেখে সে যেন উঠে সালাত আদায় করে এবং কাউকে না বলে।” [বুখারীঃ ৭০১৭, মুসলিমঃ ২২৬৩] অন্য বর্ণনায় এসেছে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন যে, মুবাশশিরাত ব্যতীত নবুওয়তের আর কিছু বাকী নেই। সাহাবায়ে কেরাম জিজ্ঞেস করলেনঃ মুবাশশিরাত কি? তিনি বললেনঃ সৎস্বপ্ন।” [মুসলিমঃ ৪৭৯]

অবশ্য কোন কোন মুফাসসিরের মতে এখানে দুনিয়ার সুসংবাদ বলতে মুমিন বান্দাদের মৃত্যুর সময় তারা যে জান্নাত ও রহমতের ফেরেশতাদের পক্ষ থেকে উত্তম আচরণ পেয়ে থাকেন তাই বুঝানো হয়েছে। [তাবারী] যেমন সুরা ফুসসিলাতের ৩০–৩২ নং আয়াতে বিস্তারিত বর্ণনা করা হয়েছে। অনুরূপভাবে বারা ইবনে আযেব রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণিত এক বড় হাদীসে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মৃত্যুকালীন সময়ে মৃত্যু পথযাত্রী ব্যক্তি কি কি দেখতে পায় এবং তার কি অবস্থা হয় তা বিস্তারিত বর্ণনা করা হয়েছে। [দেখুনঃ মুসনাদে আহমাদঃ ৪/২৮৭–২৮৮, আবু দাউদঃ ৪৭৫৩] মূলতঃ উভয় তাফসীরই বিশুদ্ধ। এতে কোন স্ববিরোধিতা নেই।

আর আখেরাতে সুসংবাদ হচ্ছে জান্নাত ও উত্তম ব্যবহার। যা কুরআনের বিভিন্ন আয়াত ও রাসূলের বিভিন্ন হাদীসে বিস্তারিত এসেছে। যেমন আল্লাহ্ তাআলা বলেনঃ “তাদেরকে (হাশরের মাঠের) কঠিন ভীতিকর অবস্থা পেরেশান করবে না, আর ফেরেশতাগণ তাদের সাক্ষাৎ করে বলবে, এটা তো ঐ দিন যার ওয়াদা তোমাদের করা হতো।” [সূরা আল-আম্বিয়াঃ ১০৩] অন্য আয়াতে আল্লাহ্ তাআলা বলেনঃ “সেদিন আপনি দেখবেন মুমিন নর-নারীদের সামনে ও ডানে তাদের জ্যোতি ছুটতে থাকবে। বলা হবে, আজ তোমাদের জন্য সুসংবাদ জান্নাতের, যার পাদদেশে নদী প্রবাহিত, সেখানে তোমরা স্থায়ী হবে, এটাই মহাসাফল্য। [সূরা আল-হাদীদঃ ১২]

(২) অর্থাৎ উপরে আল্লাহ্ তা'আলা মুমিন মুত্তাকীদের সাথে যে ওয়াদা করেছেন তা কখনো পরিবর্তনশীল নয়। এটা স্থায়ী অঙ্গীকার। [কুরতুবী]

তাফসীরে জাকারিয়া

 সূরাঃ আল-আনকাবূত | Al-Ankabut | سورة العنكبوت 

 সূরাঃ আল-আনকাবূত, আয়াত ২ 

২ اَحَسِبَ النَّاسُ اَنۡ یُّتۡرَکُوۡۤا اَنۡ یَّقُوۡلُوۡۤا اٰمَنَّا وَ هُمۡ لَا یُفۡتَنُوۡنَ

 সূরাঃ আল-আনকাবূত, আয়াত ২ এর অর্থ 

মানুষ কি মনে করে যে, ‘আমরা ঈমান এনেছি’ বললেই তাদের ছেড়ে দেয়া হবে, আর তাদের পরীক্ষা করা হবে না?

Do the people think that they will be left to say, "We believe" and they will not be tried? 

 সূরাঃ আল-আনকাবূত, আয়াত ২ এর তাফসীর 

২. মানুষ কি মনে করেছে যে, আমরা ঈমান এনেছি এ কথা বললেই তাদেরকে পরীক্ষা(১) না করে অব্যাহতি দেয়া হবে(২)?

ঈমানদারদেরকে অবশ্যই পরীক্ষা নেয়া হবে 

(১) يُفْتَنُون শব্দটি فتنة থেকে উদ্ভূত। এর অর্থ পরীক্ষা। [ফাতহুল কাদীর] ঈমানদার বিশেষত: নবীগণকে এ জগতে বিভিন্ন প্রকার পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হয়েছে। পরিশেষে বিজয় ও সাফল্য তাদেরই হাতে এসেছে। এসব পরীক্ষা জান ও মালের উপর ছিল। [ফাতহুল কাদীর] এর মাধ্যমে তাদের ঈমানের দৃঢ়তার পরীক্ষা হয়ে যেত। কোন সময় কাফের ও পাপাচারীদের শক্ৰতা এবং তাদের নির্যাতনের মাধ্যমে হয়েছে, যেমন অধিকাংশ নবীগণ, শেষনবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও তার সাহাবীগণ প্রায়ই এ ধরনের পরীক্ষার সম্মুখীন হয়েছেন। সীরাত ও ইতিহাসের গ্রন্থাবলী এ ধরনের ঘটনাবলী দ্বারা পরিপূর্ণ। কোন সময় এই পরীক্ষা রোগ-ব্যাধি ও অন্যান্য কষ্টের মাধ্যমে হয়েছে। যেমন আইয়ুব আলাইহিস সালাম-এর হয়েছিল। কারও কারও বেলায় সর্বপ্রকার পরীক্ষার সমাবেশও করে দেয়া হয়েছে।

বর্ণনাদৃষ্টে বোঝা যায়, আলোচ্য আয়াত সেসব সাহাবীদের ব্যাপারে নাযিল হয়েছিল, যারা মদীনায় হিজরতের প্রাক্কালে কাফেরদের হাতে নির্যাতিত হয়েছিলেন। কিন্তু উদ্দেশ্য ব্যাপক। সর্বকালের আলেম, সৎকর্মপরায়ণ ব্যক্তিগণ বিভিন্ন প্রকার পরীক্ষার সম্মুখীন হয়েছেন এবং হতে থাকবেন। হাদীসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সৎকর্মপরায়ন বান্দাদেরকে, তারপর তাদের অনুরূপ, তারপর তাদের অনুরূপদেরকে। প্রত্যেক মানুষকে তার দ্বীনদারী অনুসারে পরীক্ষা করা হয়। যদি দ্বীনদারী বেশী হয় তাকে বেশী পরীক্ষা করা হয়। [তিরমিযী ২৩৯৮, ইবনে মাজাহ ৪০২৩] কুরআনের অন্যত্রও এ পরীক্ষার কথা বলা হয়েছে, যেমন: “তোমরা কি মনে করেছ তোমাদেরকে ছেড়ে দেয়া হবে অথচ, আল্লাহ এখনো তোমাদের মধ্যে কারা জিহাদ করেছে তাদের জেনে নেননি।” [সূরা আত-তাওবাহ: ১৬]

(২) যে অবস্থায় একথা বলা হয় তা ছিল এই যে, মক্কা মুআযযিামায় কেউ ইসলাম গ্ৰহণ করলেই তার ওপর বিপদ আপদ ও জুলুম-নিপীড়নের পাহাড় ভেঙ্গে পড়তো। এ পরিস্থিতি যদিও দৃঢ় ঈমানের অধিকারী সাহাবীগণের অবিচল নিষ্ঠার মধ্যে কোন প্রকার দোদুল্যমানতা সৃষ্টি করে নি তবুও মানবিক প্রকৃতির তাগিদে অধিকাংশ সময় তাদের মধ্যেও চিত্তচাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়ে যেতো। এ ধরনের অবস্থার একটা চিত্র পেশ করে খাব্বাব ইবনে আরত বর্ণিত একটি হাদীস। তিনি বলেন, ‘যে সময় মুশরিকদের কঠোর নির্যাতনে আমরা ভীষণ দুরবস্থার সম্মুখীন হয়ে পড়েছিলাম সে সময় একদিন আমি দেখলাম নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কাবাঘরের দেয়ালের ছায়ায় বসে রয়েছেন।

আমি সেখানে উপস্থিত হয়ে নিবেদন করলাম, হে আল্লাহর রসূল! আপনি কি আমাদের জন্য দোআ করেন না? একথা শুনে তাঁর চেহারা আবেগে-উত্তেজনায় রক্তিমবর্ণ ধারণ করলো এবং তিনি বললেন, “তোমাদের পূর্বে যেসব মুমিনদল অতিক্রান্ত হয়েছে তারা এর চাইতেও বেশী নিগৃহীত হয়েছে। তাদের কাউকে মাটিতে গর্ত করে তার মধ্যে বসিয়ে দেয়া হতো এবং তারপর তার মাথার ওপর করাত চালিয়ে দুটুকরা করে দেয়া হতো। কারো অংগ-প্রত্যংগের সন্ধিস্থলে কসম, এ কাজ সম্পন্ন হবেই, এমন কি এক ব্যক্তি সান’আ থেকে হাদ্বারামাউত পর্যন্ত নিঃশংক চিত্তে সফর করবে এবং আল্লাহ ছাড়া আর কারো ভয় তার মনে থাকবে না।” [বুখারী ৩৬১২, মুসনাদে আহমাদ ৫/১০৯]

এ চিত্তচাঞ্চল্যকে অবিচল ধৈর্য ও সহিষ্ণুতায় রূপান্তরিত করার জন্য মহান আল্লাহ মুমিনদেরকে বুঝান, দুনিয়া ও আখেরাতের সাফল্য অর্জনের জন্য আমার যে সমস্ত প্ৰতিশ্রুতি রয়েছে কোন ব্যক্তি নিছক মৌখিক ঈমানের দাবীর মাধ্যমে তার অধিকারী হতে পারে না। বরং প্রত্যেক দাবীদারকে অনিবাৰ্যভাবে পরীক্ষা অতিক্রম করতে হবেই। অন্যত্র আল্লাহ বলেনঃ “তোমরা কি মনে করেছে তোমরা জান্নাতে প্রবেশ করে যাবে, অথচ এখনো তোমরা সে অবস্থার সম্মুখীন হওনি, যে অবস্থার সম্মুখীন হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তী ঈমানদারগণ? তারা সম্মুখীন হয়েছিল নির্মমতা ও দুঃখ-ক্লেশের এবং তাদেরকে অস্থির করে তোলা হয়েছিল। এমনকি রাসূল ও তাঁর সাথে যারা ঈমান এনেছিল তারা চিৎকার করে বলে উঠেছিল আল্লাহর সাহায্য কবে আসবে? (তখনই তাদেরকে সুখবর দেয়া হয়েছিল। এই মর্মে যে) জেনে রাখো, আল্লাহর সাহায্য নিকটেই।” [সূরা আল-বাকারাহ: ২১৪]

অনুরূপভাবে ওহুদ যুদ্ধের পর যখন মুসলিমদের ওপর আবার বিপদ-মুসীবতের একটি দুযোগপূর্ণ যুগের অবতারণা হয় তখন বলা হয়ঃ “তোমরা কি মনে করে নিয়েছে, তোমরা জান্নাতে প্ৰবেশ করে যাবে, অথচ এখনো আল্লাহ দেখেনইনি যে, তোমাদের মধ্য থেকে কে জিহাদে প্ৰাণ উৎসর্গকারী এবং কে সবরকারী?” [সূরা আলে ইমরান: ১৪২] প্ৰায় একই বক্তব্য সূরা আলে ইমরানের ১৭৯, সূরা তাওবার ১৬ এবং সূরা মুহাম্মাদের ৩১ আয়াতে বলা হয়েছে। এসব বক্তব্যের মাধ্যমে মহান আল্লাহ মুসলিমদের মনে এ সত্যটি গেথে দিয়েছেন যে, পরীক্ষাই হচ্ছে এমন একটি মানদণ্ড যার মাধ্যমে ভেজাল ও নির্ভেজাল যাচাই করা যায়।

তাফসীরে জাকারিয়া

 সূরাঃ আল-আনকাবূত, আয়াত ৩ 

৩ وَ لَقَدۡ فَتَنَّا الَّذِیۡنَ مِنۡ قَبۡلِهِمۡ فَلَیَعۡلَمَنَّ اللّٰهُ الَّذِیۡنَ صَدَقُوۡا وَ لَیَعۡلَمَنَّ الۡکٰذِبِیۡنَ 

 সূরাঃ আল-আনকাবূত, আয়াত ৩ এর অর্থ 

আর আমি তো তাদের পূর্ববর্তীদের পরীক্ষা করেছি। ফলে আল্লাহ অবশ্যই জেনে নেবেন, কারা সত্য বলে এবং অবশ্যই তিনি জেনে নেবেন, কারা মিথ্যাবাদী।

But We have certainly tried those before them, and Allah will surely make evident those who are truthful, and He will surely make evident the liars.

 সূরাঃ আল-আনকাবূত, আয়াত ৩ এর তাফসীর 

৩. আর অবশ্যই আমরা এদের পূৰ্ববতীদেরকেও পরীক্ষা করেছিলাম(১); অতঃপর আল্লাহ অবশ্যই প্রকাশ করে দেবেন কারা সত্যবাদী এবং তিনি অবশ্যই প্রকাশ করে দেবেন কারা মিথ্যাবাদী।(২)

পরীক্ষার মাধ্যমে বের করা হবে কে সত্যবাদী আর কে মিথ্যাবাদী

(১) অর্থাৎ তোমাদের সাথে যা কিছু হচ্ছে, তা কোন নতুন ব্যাপার নয়। ইতিহাসে হরহামেশা এমনটিই হয়ে এসেছে। যে ব্যক্তিই ঈমানের দাবী করেছে তাকে অবশ্যই পরীক্ষার অগ্নিকুণ্ডে নিক্ষেপ করে দগ্ধ করা হয়েছে। আর অন্যদেরকেও যখন পরীক্ষা না করে কিছু দেয়া হয়নি তখন তোমাদের এমন কি বিশেষত্ব আছে যে, কেবলমাত্র মৌখিক দাবীর ভিত্তিতেই তোমাদেরকে দেয়া হবে? [দেখুন: সা’দী]

(২) মূল শব্দ হচ্ছে لَيَعْلَمَنَّ এর শাব্দিক অনুবাদ হবে, “আল্লাহ অবশ্যই জেনে নেবেন”। অর্থাৎ এসব পরীক্ষা ও বিপদাপদের মাধ্যমে আল্লাহ তা'আলা খাঁটি-অখাঁটি এবং সৎ ও অসাধুর মধ্যে অবশ্যই পার্থক্য ফুটিয়ে তুলবেন। কেননা, খাঁটিদের সাথে কপট বিশ্বাসীদের মিশ্রণের ফলে মাঝে মাঝে বিরাট ক্ষতিসাধিত হয়ে যায়। [মুয়াসসার] আলোচ্য আয়াতের উদ্দেশ্য সৎ, অসৎ এবং খাঁটি-অখাঁটি পার্থক্য ফুটিয়ে তোলা। একে এভাবে ব্যক্ত করা হয়েছে যে, আল্লাহ্ তা'আলা জেনে নেবেন কারা সত্যবাদী এবং কারা মিথ্যাবাদী। প্রত্যেক মানুষের সত্যবাদিতা ও মিথ্যাবাদিতা তার জন্মের পূর্বেই আল্লাহ্ তা'আলার জানা রয়েছে। তবুও পরীক্ষার মাধ্যমে জানার অর্থ এই যে, এই পার্থক্যকে অপরাপর লোকদের কাছেও প্রকাশ করে দেবেন।

বস্তুত: মানুষকে আল্লাহ্ তা'আলা বিভিন্ন ভাবে পরীক্ষা করে থাকেন। ভাল-মন্দ, ধনী-গরিব, দুঃখকষ্ট, সার্বিক অবস্থায় ফেলে তিনি তাদের পরীক্ষা সম্পন্ন করেন। এসমস্ত অবস্থায় বিশ্বাসে সন্দেহ হলে যদি সে তা তাড়িয়ে দিয়ে ঈমানের উপর স্থির থাকতে পারে তবেই সে সফলকাম। অনুরূপভাবে তার প্রবৃত্তির পাগলা ঘোড়া তাকে যা ইচ্ছে তা করতে বললে সে যদি তা থেকে নিজেকে নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারে তবেই সে এ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ ও পাশ করেছে বলে বিবেচিত হবে। [দেখুন: সা'দী]

তাফসীরে জাকারিয়া

 সূরাঃ আল-আনকাবূত, আয়াত ৪ 

৪ اَمۡ حَسِبَ الَّذِیۡنَ یَعۡمَلُوۡنَ السَّیِّاٰتِ اَنۡ یَّسۡبِقُوۡنَا ؕ سَآءَ مَا یَحۡکُمُوۡنَ 

 সূরাঃ আল-আনকাবূত, আয়াত ৪ এর অর্থ 

নাকি যারা পাপ কাজ করে তারা মনে করে যে, তারা আমাকে রেখে সামনে চলে যাবে? কতইনা নিকৃষ্ট, যা তারা ফয়সালা করে!

Or do those who do evil deeds think they can outrun Us? Evil is what they judge.

 সূরাঃ আল-আনকাবূত, আয়াত ৪ এর তাফসীর 

৪. তবে কি যারা মন্দকাজ করে তারা মনে করে যে, তারা আমাদের আয়ত্তের বাইরে চলে যাবে?(১) তাদের সিদ্ধান্ত কত মন্দ!

(১) মূল শব্দ হচ্ছে سابق অর্থাৎ আমার থেকে এগিয়ে যাবে। আয়াতের এ অর্থও হতে পারে, “আমার পাকড়াও এড়িয়ে অন্য কোথাও পালিয়ে যেতে পারবে।” [সা'দী] অপর অর্থ হচ্ছে, তারা কি মনে করে যে, তাদের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড ও গোনাহসমূহ এমনিতেই ছেড়ে দেয়া হবে? তারা কি মনে করে যে, আল্লাহ এগুলো থেকে উদাসীন হয়ে যাবেন? আর এজন্যই কি তারা অপরাধগুলো করে যাচ্ছে? [সা’দী]

কারও কারও মতে, এখানে এর অর্থ হচ্ছে, যা কিছু আমি করতে চাই তা করতে আমার সফল না হওয়া এবং যা কিছু তারা করতে চায় তা করতে তাদের সফল হওয়া। [দেখুন, আত-তাফসীরুস সহীহ] আয়াতের আরেকটি অর্থ হচ্ছে, যারা অপরাধী তারা যেন এটা মনে না করে যে, তারা পরীক্ষা থেকে বাদ পড়ে যাবে। তাদেরকে পরীক্ষা করা হবে না। এ ধারণা কখনো ঠিক নয়। তারা যদি এ দুনিয়াতে পারও পেয়ে যায়, তাদের সামনে এমন শাস্তি ও আযাব রয়েছে তা তাদের জন্য যথেষ্ট। [ইবন কাসীর]

তাফসীরে জাকারিয়া


**********************
সাইটটি ভিজিট করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। আর্টিকেলটি ভাল লাগলে সত্য ও ন্যয়ের পথে অন্য ভাইনদেরকে দাওয়াতের নিয়তে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করুন। মোহাম্মদীয়া ফাউন্ডেশনের কার্যক্রম, লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য সম্পর্কে জানতে এবং দীন ও মানবতার সেবায় অংশ নিতে OUR ACTION PLAN বাটনে ক্লিক করুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

মোহাম্মদীয়া ফাউন্ডেশনের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url