বিষয় ভিত্তিক আয়াত || ঈমানদার ও নেক আমলকারী বিষয়ক আয়াত || ঈমানদার ও নেক আমলকারীর প্রতিদান (পর্ব-৩)

সূরাঃ আল-আনকাবূত | Al-Ankabut | سورة العنكبوت

 সূরাঃ আল-আনকাবূত, আয়াত ৭ 

৭ وَ الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا وَ عَمِلُوا الصّٰلِحٰتِ لَنُکَفِّرَنَّ عَنۡهُمۡ سَیِّاٰتِهِمۡ وَ لَنَجۡزِیَنَّهُمۡ اَحۡسَنَ الَّذِیۡ کَانُوۡا یَعۡمَلُوۡنَ 

 সূরাঃ আল-আনকাবূত, আয়াত ৭ এর অর্থ 

আর যারা ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে, অবশ্যই আমি তাদের থেকে তাদের পাপসমূহ দূর করে দেব এবং আমি অবশ্যই তাদের সেই উত্তম আমলের প্রতিদান দেব, যা তারা করত।

And those who believe and do righteous deeds - We will surely remove from them their misdeeds and will surely reward them according to the best of what they used to do. 

 সূরাঃ আল-আনকাবূত, আয়াত ৭ এর তাফসীর 

৭. আর যারা ঈমান এনেছে এবং সৎকাজ করেছে আমরা অবশ্যই তাদের থেকে তাদের মন্দকাজগুলো মিটিয়ে দেব এবং আমরা অবশ্যই তাদেরকে তারা যে উত্তম কাজ করত, তার প্রতিদান দেব।(১)

ঈমান ও সৎকাজের প্রতিদান

(১) আয়াতে ঈমান ও সৎকাজের দু'টি ফল। বৰ্ণনা করা হয়েছে, এক: মানুষের দুস্কৃতি ও পাপগুলো তার থেকে দূর করে দেয়া হবে। দুই: তার সর্বোত্তম কাজসমূহের সর্বোত্তম পুরষ্কার তাকে দেয়া হবে। পাপ ও দুস্কৃতি দূর করে দেয়ার অর্থ সৎকাজের কারণে গোনাহ ক্ষমা পেয়ে যাওয়া। কারণ সৎ কাজ সাধারণ গোনাহ মিটিয়ে দেয়। [জালালাইন; সা’দী] যেমন হাদীসে এসেছে, ঈমান আনার আগে মানুষ যতই পাপ করে থাকুক না কেন ঈমান আনার সাথে সাথেই তা সব মাফ হয়ে যাবে। [দেখুন: মুসলিম: ১২১] আর সর্বোত্তম কাজসমূহের সর্বোত্তম পুরস্কার দেয়ারও দু'টি অর্থ হয়। এক. মানুষের সৎকাজগুলোর মধ্যে যেটি হবে সবচেয়ে ভালো সৎকাজ, তাকে সামনে রেখে তার জন্য প্রতিদান ও পুরষ্কার নির্ধারণ করা হবে। যেমন মানুষের সৎকাজের মধ্যে রয়েছে ওয়াজিব-ফরয ও মুস্তাহাব কাজ। এ দু'টি অনুসারে তাকে প্রতিদান দেয়া হবে। কারণ, তার আমলের কিছু আমল আছে মুবাহ বা জয়েয আমল, সেটা অনুসারে নয়। [সা’দী] দুই. মানুষ তার কার্যাবলীর দৃষ্টিতে যতটা পুরষ্কারের অধিকারী হবে তার চেয়ে বেশী ভালো পুরষ্কার তাকে দেয়া হবে। [ফাতহুল কাদীর] একথাটি কুরআনের অন্যান্য স্থানেও বলা হয়েছে। বলা হয়েছেঃ “যে ব্যক্তি সৎকাজ নিয়ে আসবে তাকে তার থেকে দশগুণ বেশী দেয়া হবে।” [সূরা আল-আন’আম: ১৬০] আরো বলা হয়েছে: “যে ব্যক্তি সৎকাজ নিয়ে আসবে তাকে তার চেয়ে উত্তম প্রতিদান দেয়া হবে।” [সূরা আল কাসাস: ৮৪] অন্যত্র বলা হয়েছে, “আল্লাহ তো কণামাত্রও জুলুম করেন না এবং সৎকাজ হলে তাকে কয়েকগুণ বাড়িয়ে দেন।” [সূরা আন-নিসা: ৪০]

তাফসীরে জাকারিয়া

সূরাঃ আল-মা'আরিজ | Al-Ma'arij | سورة المعارج

 সূরাঃ আল-মা'আরিজ, আয়াত ৩২ 

৩২ وَ الَّذِیۡنَ هُمۡ لِاَمٰنٰتِهِمۡ وَ عَهۡدِهِمۡ رٰعُوۡنَ 

 সূরাঃ আল-মা'আরিজ, আয়াত ৩২ এর অর্থ 

আর যারা নিজদের আমানত ও ওয়াদা রক্ষাকারী, 

And those who are to their trusts and promises attentive

 সূরাঃ আল-মা'আরিজ, আয়াত ৩২ এর তাফসীর 

৩২. আর যারা তাদের আমানত ও প্রতিশ্রুতি রক্ষাকারী(১),

আমানত ও প্রতিশ্রুতি রক্ষাকারীর প্রতিদান

(১) আমানত কেবল সে অর্থকেই বলে না যা কেউ কারো হাতে সোপর্দ করে, বরং যেসব ওয়াজিব হক আদায় করা দায়িত্ব ফরয, সেগুলো সবই আমানত; এগুলোতে ত্রুটি করা খিয়ানত। এতে সালাত, সাওম, হজ্জ, যাকাত ইত্যাদি আল্লাহ তা'আলার হকও দাখিল আছে এবং আল্লাহ তা’আলার পক্ষ থেকে বান্দার যেসব হক ওয়াজিব করা হয়েছে অথবা কোন লেনদেন ও চুক্তির মাধ্যমে যেসব হক নিজের উপর কেউ ওয়াজিব করে নিয়েছে সেগুলোও শামিল রয়েছে। এগুলো আদায় করা ফরয এবং এতে ক্ৰটি করা খিয়ানতের অন্তর্ভুক্ত। অনুরূপভাবে عهدهم বা চুক্তি ও প্রতিশ্রুতি মানে বান্দা আল্লাহর সাথে যে চুক্তি বা প্রতিশ্রুতিতে আবদ্ধ হয় এবং মানুষ পরস্পরের সাথে যেসব চুক্তি ও প্রতিশ্রুতিতে আবদ্ধ হয় এ উভয় প্রকার চুক্তি ও প্রতিশ্রুতি। এ উভয় প্রকার আমানত এবং উভয় প্রকার চুক্তি ও প্রতিশ্রুতি রক্ষা করা একজন মুমিনের চরিত্রের অপরিহার্য বৈশিষ্ট্য। [দেখুন: তাবারী]

তাফসীরে জাকারিয়া

 সূরাঃ আল-মা'আরিজ, আয়াত ৩৩ 

৩৩ وَ الَّذِیۡنَ هُمۡ بِشَهٰدٰتِهِمۡ قَآئِمُوۡنَ 

 সূরাঃ আল-মা'আরিজ, আয়াত ৩৩ এর অর্থ 

আর যারা তাদের সাক্ষ্যদানে অটল,

And those who are in their testimonies upright

 সূরাঃ আল-মা'আরিজ, আয়াত ৩৩ এর তাফসীর 

৩৩. আর যারা তাদের সাক্ষ্যসমূহে অটল(১),

(১) অর্থাৎ, তারা যা জানে তাই সাক্ষ্য দেয়, কোন প্রকার পরিবর্ধন-পরিমার্জন বা পরিবর্তন ব্যতীত সাক্ষ্য দেয়; আর এ সাক্ষ্য দানের মাধ্যমে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন থাকে তার লক্ষ্য। [সা’দী]

তাফসীরে জাকারিয়া

 সূরাঃ আল-মা'আরিজ, আয়াত ৩৪ 

৩৪ وَ الَّذِیۡنَ هُمۡ عَلٰی صَلَاتِهِمۡ یُحَافِظُوۡنَ 

 সূরাঃ আল-মা'আরিজ, আয়াত ৩৪ এর অর্থ 

আর যারা নিজদের সালাতের হিফাযত করে,

And those who [carefully] maintain their prayer: 

 সূরাঃ আল-মা'আরিজ, আয়াত ৩৪ এর তাফসীর 

৩৪. আর যারা তাদের সালাতের হিফাযত করে—(১)

ঈমানদারের গুণ সালাতের হিফাযত করা 

(১) এ থেকে সালাতের গুরুত্ব বুঝা যায়। যে ধরনের উন্নত চরিত্র ও মহৎ কৰ্মশীল লোক জান্নাতের উপযুক্ত তাদের গুণাবলী উল্লেখ করতে গিয়ে সালাত দিয়ে শুরু করা হয়েছে এবং সালাত দিয়েই শেষ করা হয়েছে। [ইবন কাসীর] তাদের প্রথম গুণ হলো, তারা হবে সালাত আদায়কারী। দ্বিতীয় গুণ হলো তারা হবে সালাতের প্রতি নিষ্ঠাবান এবং সর্বশেষ গুণ হলো, তারা সালাতের হিফাযত করবে। সালাতের হিফাযতের অর্থ অনেক কিছু। যথা সময়ে সালাত পড়া, দেহ ও পোশাক-পরিচ্ছন্দ পাক-পবিত্ৰ আছে কিনা সালাতের পূর্বেই সে ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়া, অযু থাকা এবং অযু করার সময় অঙ্গ-প্রত্যঙ্গগুলো ভালভাবে ধোয়া, সালাতের ফরয, ওয়াজিব ও মুস্তাহাবগুলো ঠিকমত সালাতকে ধ্বংস না করা, এসব বিষয়ও সালাতের হিফাযতের অন্তর্ভুক্ত। [কুরতুবী]

তাফসীরে জাকারিয়া

 সূরাঃ আল-মা'আরিজ, আয়াত ৩৫ 

৩৫ اُولٰٓئِکَ فِیۡ جَنّٰتٍ مُّکۡرَمُوۡنَ

 সূরাঃ আল-মা'আরিজ, আয়াত ৩৫ এর অর্থ 

তারাই জান্নাতসমূহে সম্মানিত হবে। 

They will be in gardens, honored.

 সূরাঃ আল-মা'আরিজ, আয়াত ৩৪ এর তাফসীর 

৩৫. তারাই সম্মানিত হবে জান্নাতসমূহে।

তাফসীরে জাকারিয়া


সাইটটি ভিজিট করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। আর্টিকেলটি ভাল লাগলে সত্য ও ন্যয়ের পথে অন্য ভাইনদেরকে দাওয়াতের নিয়তে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করুন। মোহাম্মদীয়া ফাউন্ডেশনের কার্যক্রম, লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য সম্পর্কে জানতে এবং দীন ও মানবতার সেবায় অংশ নিতে OUR ACTION PLAN বাটনে ক্লিক করুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

মোহাম্মদীয়া ফাউন্ডেশনের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url