হাদিসে কুদসী সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য হাদিস, পর্ব- ৪




আল কুরআনের পরে সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য দলিল হাদিসে কুদসী


যে হাদীসের মূল কথাগুলো সরাসরি আল্লাহ তাআ’লার পক্ষ থেকে এসেছে, সেই হাদীসকেই হাদীসে কুদসী বলা হয়।  অর্থাৎ আল্লাহ তাআ’লার যেই কথাগুলো কুরআনুল কারীমের ‘আয়াত’ হিসেবে নাযিল করা হয়নি বরং, আল্লাহ তাআ’লা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লামকে স্বপ্নের মাধ্যমে অথবা তাঁর অন্তরে ‘ইলহাম’ করে পাঠিয়েছেন, আর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম সেই কথাগুলোই আল্লাহর পক্ষ থেকে নিজ ভাষায় তাঁর উম্মতকে জানিয়ে দিয়েছেন, সেইগুলোকে হাদীসে কুদসী বলা হয়। 

আল কুরআনের পরে সবচেয়ে সহীহ এবং নির্ভরযোগ্য দলিল হচ্ছে হাদিসে কুদসী। আমরা এখানে ধারাবাহিকভাবে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে বর্ণিত হাদিসে কুদসীগুলো প্রকাশ করবো। আশাকরি আমাদের এই আয়োজন আপনাদের সকলের কাছে ভাল লাগবে এবং আপনাদের জীবনে কাজে লাগবে। আর হ্যাঁ, ভাল লাগলে অবশ্যই আপনার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করবেন। আল্লাহ আপনাদেরকে উত্তম প্রতিদান দান করুন। আমিন।।

 হাদিসে কুদসী নং   ২২ 

আল্লাহর ভয়ের ফযিলত


আবূ সায়িদ রাদিয়াল্লাহু আনহু নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন: “তিনি পূর্বের জনৈক ব্যক্তির উল্লেখ করলেন- অথবা তোমাদের পূর্বের- তিনি একটি বাক্য বললেন অর্থাৎ আল্লাহ তাকে সম্পদ ও সন্তান দান করেছেন, যখন তার মৃত্যু উপস্থিত হল সে তার সন্তানদের বলল: আমি তোমাদের কেমন পিতা ছিলাম? তারা বলল: উত্তম পিতা। সে বলল: সে তো আল্লাহর নিকট কোন কল্যাণ জমা করেনি, আল্লাহ যদি তাকে পান[১] অবশ্যই শাস্তি দিবেন। তোমরা এক কাজ কর, আমি যখন মারা যাব আমাকে জ্বালাও, যখন আমি কয়লায় পরিণত হব আমাকে পিষ অথবা বলেছেন চূর্ণ-বিচূর্ণ করে ফেল, অতঃপর যখন প্রচণ্ড ঝড়ের দিন হবে আমাকে তাতে ছিটিয়ে দাও”।

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন: সে এ জন্য তাদের থেকে ওয়াদা নিলো, আমার রবের কসম, তারা তাই করল, অতঃপর প্রচণ্ড ঝড়ের দিন ছিটিয়ে দিল। অতঃপর আল্লাহ তা‘আলা বললেন: ‘কুন’ (হও), ফলে সে দণ্ডায়মান ব্যক্তিতে পরিণত হল। আল্লাহ বললেন: হে আমার বান্দা কিসে তোমাকে উদ্বুদ্ধ করেছে, যে তুমি করেছ যা করার? সে বলল: তোমার ভয়- অথবা তোমার থেকে পলায়নের জন্য- তিনি বললেন: আল্লাহর দয়া ব্যতীত তার অন্য কিছু তাকে উদ্ধার করে নি। আরেকবার বলেন: রহম ব্যতীত অন্য কিছু তার নসিব হয়নি”। [বুখারি ও মুসলিম] হাদিসটি সহিহ।

[১] আল্লাহ তাকে পাবে না, এটা তার বিশ্বাস থাকলে তার ঈমান থাকার কথা নয়, আর ঈমান না থাকলে জান্নাত পাওয়া যাবে না। সুতরাং এখানে এটাই মানতে হবে যে, লোকটি তার অজ্ঞতাবশত: আল্লাহ সম্পর্কে এ ধারণা করে থাকতে পারে। তাই তার অজ্ঞতার কারণে আল্লাহ তাকে এর জন্য পাকড়াও না করে আল্লাহকে ভয় করার কারণে তাকে ক্ষমা করে দেন।

22- عَنْ أَبِي سَعِيدٍ -رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ- عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم : « أَنَّهُ ذَكَرَ رَجُلاً فِيمَنْ سَلَفَ -أَوْ فِيمَنْ كَانَ قَبْلَكُمْ- قَالَ كَلِمَةً يَعْنِي أَعْطَاهُ اللَّهُ مَالاً وَوَلَدًا فَلَمَّا حَضَرَتْ الْوَفَاةُ قَالَ لِبَنِيهِ: أَيَّ أَبٍ كُنْتُ لَكُمْ؟ قَالُوا: خَيْرَ أَبٍ. قَالَ: فَإِنَّهُ لَمْ يَبْتَئِرْ -أَوْ لَمْ يَبْتَئِزْ- عِنْدَ اللَّهِ خَيْرًا، وَإِنْ يَقْدِرْ اللَّهُ عَلَيْهِ يُعَذِّبْهُ، فَانْظُرُوا إِذَا مُتُّ فَأَحْرِقُونِي حَتَّى إِذَا صِرْتُ فَحْمًا فَاسْحَقُونِي -أَوْ قَالَ:فاسهكوني- فَإِذَا كَانَ يَوْمُ رِيحٍ عَاصِفٍ فَأَذْرُونِي فِيهَا» فَقَالَ نَبِيُّ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم : « فَأَخَذَ مَوَاثِيقَهُمْ عَلَى ذَلِكَ وَرَبِّي فَفَعَلُوا ثُمَّ أَذْرَوْهُ فِي يَوْمٍ عَاصِفٍ فَقَالَ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ: كُنْ. فَإِذَا هُوَ رَجُلٌ قَائِمٌ. قَالَ اللَّهُ: أَيْ عَبْدِي مَا حَمَلَكَ عَلَى أَنْ فَعَلْتَ مَا فَعَلْتَ؟ قَالَ: مَخَافَتُكَ -أَوْ فَرَقٌ مِنْكَ- قَالَ: فَمَا تَلَافَاهُ أَنْ رَحِمَهُ عِنْدَهَا » وَقَالَ مَرَّةً أُخْرَى: « فَمَا تَلَافَاهُ غَيْرُهَا » .( خ, م ) صحيح


 হাদিসে কুদসী নং   ২৩ 

আল্লাহর ভয়


আবূ হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: “জনৈক ব্যক্তি যে কখনো ভাল কাজ করেনি বলেছে: যখন সে মারা যায়, তাকে জ্বালাও, অতঃপর তার অর্ধেক স্থলে ও অর্ধেক সমুদ্রে ছিটিয়ে দাও, আল্লাহর কসম, যদি আল্লাহ তার নাগাল পান তাহলে তিনি এমন শাস্তি দিবেন, যা জগতের কাউকে দিবেন না। অতঃপর আল্লাহ সমুদ্রকে নির্দেশ করলেন, ফলে সে তার মধ্যে যা ছিল জমা করল, এবং স্থলকে নির্দেশ করলেন ফলে সে তার মধ্যে যা ছিল জমা করল। অতঃপর বললেন: তুমি কেন করেছ? সে বলল: তোমার ভয়ে, তুমিই ভাল জান। ফলে আল্লাহ তাকে ক্ষমা করে দিলেন”। [বুখারি, মুসলিম ও নাসায়ি] হাদিসটি সহিহ।

23- عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ -رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ- أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ: « قَالَ رَجُلٌ لَمْ يَعْمَلْ خَيْرًا قَطُّ: فَإِذَا مَاتَ فَحَرِّقُوهُ وَاذْرُوا نِصْفَهُ فِي الْبَرِّ وَنِصْفَهُ فِي الْبَحْرِ، فَوَاللَّهِ لَئِنْ قَدَرَ اللَّهُ عَلَيْهِ لَيُعَذِّبَنَّهُ عَذَابًا لَا يُعَذِّبُهُ أَحَدًا مِنْ الْعَالَمِينَ، فَأَمَرَ اللَّهُ الْبَحْرَ فَجَمَعَ مَا فِيهِ وَأَمَرَ الْبَرَّ فَجَمَعَ مَا فِيهِ، ثُمَّ قَال:َ لِمَ فَعَلْتَ؟ قَالَ: مِنْ خَشْيَتِكَ وَأَنْتَ أَعْلَمُ، فَغَفَرَ لَهُ » . ( خ, م, ن ) صحيح


 হাদিসে কুদসী নং   ২৪ 

আল্লাহর নৈকট্য অর্জন


আবূ হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: “আল্লাহ তা‘আলা বলেন: আমার সম্পর্কে আমার বান্দার ধারণা মোতাবেক আমি।[১] আমি তার সাথে থাকি[২] যখন সে আমাকে স্মরণ করে। যদি সে আমাকে তার অন্তরে স্মরণ করে আমি তাকে আমার অন্তরে স্মরণ করি। যদি সে আমাকে মজলিসে স্মরণ করে আমি তাকে তাদের চেয়ে উত্তম মজলিসে স্মরণ করি। যদি সে আমার নিকট এক বিঘত অগ্রসর হয় আমি তার নিকট একহাত অগ্রসর হই, যদি সে আমার নিকট একহাত অগ্রসর হয় আমি তার নিকট একবাহু অগ্রসর হই। যদি সে আমার নিকট আসে হেঁটে আমি তার নিকট যাই দ্রুত”। [বুখারি, মুসলিম, তিরমিযি ও ইবনু মাজাহ] হাদিসটি সহিহ।

[১] ইমাম আহমদের এক বর্ণনায় রয়েছে: “যদি সে আমার সম্পর্কে ভাল ধারণা করে তার জন্যই ভাল, যদি সে আমার সম্পর্কে খারাপ ধারণা করে তার জন্যই খারাপ।

[২] সাথে থাকার অর্থ, তার অবস্থা জানা ও তাকে সাহায্য-সহযোগিতা করা। [সম্পাদক]
24- عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ -رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ- قَالَ: قَال رسول الله صلى الله عليه وسلم : « يَقُولُ اللَّهُ تَعَالَى: أَنَا عِنْدَ ظَنِّ عَبْدِي بِي وَأَنَا مَعَهُ إِذَا ذَكَرَنِي فَإِنْ ذَكَرَنِي فِي نَفْسِهِ ذَكَرْتُهُ فِي نَفْسِي، وَإِنْ ذَكَرَنِي فِي مَلَإٍ ذَكَرْتُهُ فِي مَلَإٍ خَيْرٍ مِنْهُمْ، وَإِنْ تَقَرَّبَ إِلَيَّ بِشِبْرٍ تَقَرَّبْتُ إِلَيْهِ ذِرَاعًا، وَإِنْ تَقَرَّبَ إِلَيَّ ذِرَاعًا تَقَرَّبْتُ إِلَيْهِ بَاعًا، وَإِنْ أَتَانِي يَمْشِي أَتَيْتُهُ هَرْوَلَةً » . (خ, م, ت, جه ) صحيح


 হাদিসে কুদসী নং   ২৫ 

নেক আমল দ্বারা আল্লাহর নৈকট্য লাভ


আবূ হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন: “আল্লাহ বলেছেন: আমার বান্দা যখন এক বিঘত এগিয়ে আমার সাথে সাক্ষাত করে আমি তার সাথে সাক্ষাত করি একহাত এগিয়ে। যখন সে একহাত এগিয়ে আমার সাথে সাক্ষাত করে আমি একবাহু এগিয়ে তার সাথে সাক্ষাত করি। যখন সে আমার সাথে সাক্ষাত করে একবাহু এগিয়ে আমি তার নিকট আসি আরও দ্রুত পদক্ষেপে”। [মুসলিম] হাদিসটি সহিহ।

25- عَنْ أبي هُرَيْرَةَ -رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ- قال: قال رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم : «إِنَّ اللَّهَ قَالَ: إِذَا تَلَقَّانِي عَبْدِي بِشِبْرٍ تَلَقَّيْتُهُ بِذِرَاعٍ، وَإِذَا تَلَقَّانِي بِذِرَاعٍ تَلَقَّيْتُهُ بِبَاعٍ، وَإِذَا تَلَقَّانِي بِبَاعٍ أَتَيْتُهُ بِأَسْرَعَ» . (م) صحيح


 হাদিসে কুদসী নং   ২৬ 

আল্লাহর দিকে ফিরে যাওয়া


শুরাইহ্ রাহিমাহুল্লাহ থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাহাবিদের এক ব্যক্তিকে বলতে শুনেছি: নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: “আল্লাহ তা‘আলা বলেন: হে বনি আদম, তুমি আমার দিকে দাঁড়াও আমি তোমার দিকে চলব, তুমি আমার দিকে চল আমি তোমার দিকে দ্রুত পদক্ষেপে যাব”। [আহমদ] হাদিসটি সহিহ।

26- عَنْ شُرَيْحٍ قَال: سَمِعْتُ رَجُلاً مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم يَقُولُ: قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم : «قَالَ اللَّهُ تَعَالَى: يَا ابْنَ آدَمَ قُمْ إِلَيَّ أَمْشِ إِلَيْكَ وَامْشِ إِلَيَّ أُهَرْوِلْ إِلَيْكَ» . (حم) صحيح


 হাদিসে কুদসী নং   ২৭ 

আল্লাহর ইবাদতের ফজিলত


মা‘কাল ইবনু ইয়াসার থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: “তোমাদের রব বলেন: হে বনি আদম, তুমি আমার ইবাদতের জন্য মনোনিবেশ করো, আমি তোমার অন্তরকে সচ্ছলতায় ভরে দেব, তোমার হাত রিজিক দ্বারা পূর্ণ করে দেব। হে বনি আদম, তুমি আমার থেকে দূরে যেয়ো না, ফলে আমি তোমার অন্তর অভাবে পূর্ণ করে দেব এবং তোমার দু’ হাতকে কর্মব্যস্ত করে দেব”। [হাকেম] হাদিসটি সহিহ লি গায়রিহি।

27- عن معقل بن يسار -رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ- قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم : "يقولُ ربُّكم تبارك وتعالى: يا ابنَ آدم تَفَرَّغْ لعبادتي أملأ قلبَك غنًى، وأملأ يديك رزقًا، يا ابن آدم لا تباعد مني فأمْلأ قَلبَك فقرًا، وأملأ يديك شُغْلاً». (ك) صحيح لغيره


 হাদিসে কুদসী নং   ২৮ 

যিকির ও নেককারদের সঙ্গ লাভের ফযিলত


২৮. আবূ হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: “আল্লাহর কতক ফেরেশতা রয়েছে তারা যিকিরকারীদের তালাশে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে। যখন কোন কওমকে আল্লাহর যিকিরে মশগুল দেখে তারা একে অপরকে আহ্বান করে: তোমাদের লক্ষ্যের দিকে আস”। তিনি বলেন: “অতঃপর তাদেরকে তারা নিজেদের ডানা দ্বারা দুনিয়ার আসমান পর্যন্ত ঢেকে নেয়। তিনি বলেন: অতঃপর তাদের রব তাদেরকে জিজ্ঞাসা করেন, -অথচ তিনি তাদের চেয়ে অধিক জানেন- আমার বান্দাগণ কি বলে? ফেরেশতারা বলে: তারা আপনার পবিত্রতা বর্ণনা করছে, আপনার বড়ত্ব ঘোষণা করছে, আপনার প্রশংসা করছে ও আপনার মর্যাদা ঘোষণা করছে। তিনি বলেন: অতঃপর আল্লাহ বলেন: তারা কি আমাকে দেখেছে? তিনি বলেন: ফেরেশতারা বলে: না, আল্লাহর কসম, তারা আপনাকে দেখেনি। তিনি বলেন: অতঃপর আল্লাহ বলেন: যদি তারা আমাকে দেখত কেমন হত? তিনি বলেন: ফেরেশতারা বলে: যদি তারা আপনাকে দেখত তাহলে আরও কঠিন ইবাদত করত, অধিক মর্যাদা ও প্রশংসার ঘোষণা করত, অধিক তসবিহ পাঠ করত। তিনি বলেন: আল্লাহ বলেন: তারা আমার নিকট কি চায়? তিনি বলেন: ফেরেশতারা বলে: তারা আপনার নিকট জান্নাত চায়? তিনি বলেন: আল্লাহ বলেন: তারা কি জান্নাত দেখেছে? তিনি বলেন: ফেরেশতারা বলে: না, হে রব, তারা জান্নাত দেখে নি। তিনি বলেন: আল্লাহ বলেন: যদি তারা জান্নাত দেখত কেমন হত? তিনি বলেন: ফেরেশতারা বলে: যদি তারা জান্নাত দেখত তাহলে তার জন্য তারা আরো অধিক আগ্রহী হত, অধিক তলবকারী হত ও তার অধিক আশা পোষণ করত। তিনি বলেন: তারা কার থেকে পানাহ চায়? তিনি বলেন: ফেরেশতারা বলে: জাহান্নাম থেকে। তিনি বলেন: আল্লাহ বলেন: তারা কি জাহান্নাম দেখেছে? তিনি বলেন: ফেরেশতারা বলে: না, আল্লাহর কসম, হে রব তারা জাহান্নাম দেখেনি। তিনি বলেন: আল্লাহ বলেন: যদি তারা জাহান্নাম দেখত কেমন হত? তিনি বলেন: ফেরেশতারা বলে: যদি তারা জাহান্নাম দেখত তাহলে তার থেকে অধিক পলায়ন করত, তাকে অধিক ভয় করত। তিনি বলেন: আল্লাহ বলেন: তোমাদের সাক্ষী রাখছি আমি তাদেরকে ক্ষমা করে দিলাম। তিনি বলেন: তাদের এক ফেরেশতা বলে: তাদের মধ্যে অমুক রয়েছে যে তাদের দলের নয়, সে অন্য কাজে এসেছে। তিনি বলেন: তারা এমন জমাত যাদের কারণে তাদের সাথীরা মাহরুম হয় না”। [বুখারি] হাদিসটি সহিহ।

28- عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ -رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ- قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم : « إِنَّ لِلَّهِ مَلَائِكَةً يَطُوفُونَ فِي الطُّرُقِ يَلْتَمِسُونَ أَهْلَ الذِّكْرِ، فَإِذَا وَجَدُوا قَوْمًا يَذْكُرُونَ اللَّهَ تَنَادَوْا: هَلُمُّوا إِلَى حَاجَتِكُمْ » قَالَ: « فَيَحُفُّونَهُمْ بِأَجْنِحَتِهِمْ إِلَى السَّمَاءِ الدُّنْيَا قَالَ: فَيَسْأَلُهُمْ رَبُّهُمْ عز وجل -وَهُوَ أَعْلَمُ مِنْهُمْ- مَا يَقُولُ عِبَادِي؟ قَالُوا: يَقُولُونَ: يُسَبِّحُونَكَ وَيُكَبِّرُونَكَ وَيَحْمَدُونَكَ وَيُمَجِّدُونَكَ قَالَ: فَيَقُولُ: هَلْ رَأَوْنِي؟ قَالَ: فَيَقُولُونَ: لَا وَاللَّهِ مَا رَأَوْكَ قَالَ: فَيَقُولُ: وَكَيْفَ لَوْ رَأَوْنِي؟ قَالَ: يَقُولُونَ: لَوْ رَأَوْكَ كَانُوا أَشَدَّ لَكَ عِبَادَةً، وَأَشَدَّ لَكَ تَمْجِيدًا، وَتَحْمِيدًا وَأَكْثَرَ لَكَ تَسْبِيحًا، قَالَ: يَقُولُ: فَمَا يَسْأَلُونِي؟ قَالَ يَسْأَلُونَكَ الْجَنَّةَ، قَالَ: يَقُولُ: وَهَلْ رَأَوْهَا؟ قَالَ: يَقُولُونَ: لَا وَاللَّهِ يَا رَبِّ مَا رَأَوْهَا، قَالَ: يَقُولُ: فَكَيْفَ لَوْ أَنَّهُمْ رَأَوْهَا؟ قَالَ: يَقُولُونَ: لَوْ أَنَّهُمْ رَأَوْهَا كَانُوا أَشَدَّ عَلَيْهَا حِرْصًا، وَأَشَدَّ لَهَا طَلَبًا، وَأَعْظَمَ فِيهَا رَغْبَةً، قَالَ: فَمِمَّ يَتَعَوَّذُونَ؟ قَالَ: يَقُولُونَ: مِنْ النَّارِ، قَالَ: يَقُولُ: وَهَلْ رَأَوْهَا؟ قَالَ: يَقُولُونَ: لَا وَاللَّهِ يَا رَبِّ مَا رَأَوْهَا، قَالَ: يَقُولُ: فَكَيْفَ لَوْ رَأَوْهَا، قَالَ: يَقُولُونَ: لَوْ رَأَوْهَا، كَانُوا أَشَدَّ مِنْهَا فِرَارًا وَأَشَدَّ لَهَا مَخَافَةً، قَالَ: فَيَقُولُ: فَأُشْهِدُكُمْ أَنِّي قَدْ غَفَرْتُ لَهُمْ، قَالَ: يَقُولُ مَلَكٌ مِنْ الْمَلَائِكَةِ: فِيهِمْ فُلَانٌ لَيْسَ مِنْهُمْ إِنَّمَا جَاءَ لِحَاجَةٍ، قَالَ: هُمْ الْجُلَسَاءُ لَا يَشْقَى بِهِمْ جَلِيسُهُمْ ». (خ) صحيح




*************************
সাইটটি ভিজিট করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। আর্টিকেলটি ভাল লাগলে সত্য ও ন্যয়ের পথে অন্য ভাইনদেরকে দাওয়াতের নিয়তে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করুন। মোহাম্মদীয়া ফাউন্ডেশনের কার্যক্রম, লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য সম্পর্কে জানতে এবং দীন ও মানবতার সেবায় অংশ নিতে OUR ACTION PLAN বাটনে ক্লিক করুন।



এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

মোহাম্মদীয়া ফাউন্ডেশনের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url