ফরজের পরে আল্লাহর কাছে সবচেয়ে প্রিয় ইবাদত তাহাজ্জুদ





তাহাজ্জুদ নামাজের ফজিলত


ফরজ নামাজের পর রাতের নামাজ বা তাহাজ্জুদ নামাজ মহান আল্লাহ পাকের কাছে সবচেয়ে প্রিয় ইবাদত। মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন প্রিয় নবীজি (সা.)-এর উদ্দেশ্যে কুরআন কারিমে বলেন, ‘এবং রাত্রির কিছু অংশ তাহাজ্জুদ কায়েম কর, ইহা তোমার এক অতিরিক্ত কর্তব্য। আশা করা যায় তোমার প্রতিপালক তোমাকে প্রতিষ্ঠিত করবেন প্রশংসিত স্থানে—মাকামে মাহমুদে।’ (সুরা-১৭ ইসরা, আয়াত: ৭৯)।

রহমতের শ্রেষ্ঠ সময় তাহাজ্জুদের সময়। বছরের বিশেষ রাতসমূহে সূর্যাস্তের পর আল্লাহ তাআলা দুনিয়ার নিকটতম আসমানে অবতরণ করেন। কিন্তু তাহাজ্জুদের সময়ে প্রতিটি রাতেই আল্লাহ তাআলা প্রথম আসমানে এসে বান্দাদের আরজি ও আবেদন-নিবেদন শোনেন।

রাতের ইবাদত প্রসঙ্গে কুরআন মাজিদে আরও রয়েছে, ‘হে কম্বলাবৃত! রাতে দণ্ডায়মান হও কিছু অংশ বাদ দিয়ে; অর্ধরাত্রি অথবা তার চেয়ে কিছু কম অথবা তার চেয়ে বেশি এবং কোরআন তিলাওয়াত করো সুবিন্যস্তভাবে ও স্পষ্টভাবে। আমি তোমার প্রতি অবতীর্ণ করেছি গুরুত্বপূর্ণ বাণী। নিশ্চয়ই ইবাদতের জন্য রাত্রিতে ওঠা প্রবৃত্তি দমনে সহায়ক এবং স্পষ্ট উচ্চারণের অনুকূল। নিশ্চয়ই দিবাভাগে রয়েছে তোমার দীর্ঘ কর্মব্যস্ততা। তুমি নিজ পালনকর্তার নাম স্মরণ করো এবং একাগ্রচিত্তে তাতে নিমগ্ন হও।’ (সুরা-৭৩ মুজ্জাম্মিল, আয়াত: ১-৮)। আল্লাহ তাআলা আরও বলেন, ‘হে বস্ত্রাবৃত! ওঠো, সতর্ক করো, আপন পালনকর্তার মাহাত্ম্য ঘোষণা করো, স্বীয় পোশাক পবিত্র করো এবং অপবিত্রতা থেকে দূরে থাকো। অন্যকে কিছু দান করে অধিক প্রতিদান আশা করবে না। আর তোমার পালনকর্তার উদ্দেশে ধৈর্য ধারণ করো।’ (সুরা-৭৪ মুদ্দাচ্ছির, আয়াত: ১-৭)।

তাহাজ্জুদ নামাজের সময় রাতের দুই-তৃতীয়াংশ অতিবাহিত হওয়ার পর থেকে তথা রাত দুইটার পর থেকে ফজরের ওয়াক্ত আরম্ভ হওয়ার আগপর্যন্ত। সাহ্‌রির সময় শেষ হলে তথা ফজরের ওয়াক্ত শুরু হলে তাহাজ্জুদের ওয়াক্ত শেষ হয়। তাহাজ্জুদ শব্দের অর্থ কষ্ট-ক্লেশ, শ্রম-পরিশ্রম। সন্ধ্যারাতে ঘুমিয়ে মধ্যরাতের পর শয্যা ত্যাগ করাকে তাহাজ্জুদ বলা হয়। তাই তাহাজ্জুদের আগে ঘুমানো এবং ঘুম থেকে উঠে তাহাজ্জত পড়া উত্তম।

রাসুলুল্লাহ (সা.) প্রতি রাতেই তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় করতেন। তাই এটি সুন্নাত, অতিরিক্ত হিসেবে নফল। নবীজি (সা.)-এর জন্য এটি অতিরিক্ত দায়িত্ব ছিল। পাঁচ ওয়াক্ত নির্ধারিত নফলের মধ্যে তাহাজ্জত সর্বোৎকৃষ্ট আমল। হজরত আলী (রা.) বলেছেন, ‘যাঁরা রাত জেগে তাহাজ্জুদ পড়েছেন, তাঁরাই আধ্যাত্মিক জগতে আল্লাহর নৈকট্য লাভে ঊর্ধ্বারোহণ করেছেন।’ (দিওয়ানে আলী, নাহজুল বালাগা)। তাহাজ্জুদ হলো মোক্ষ লাভের মোক্ষম মাধ্যম। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘ফরজ নামাজসমূহের পর উত্তম নামাজ হলো তাহাজ্জুদ।’ (মুসলিম, আলফিয়্যাহ, পৃষ্ঠা ৯৭, হাদিস: ৪০৫)। তাহাজ্জত সংকট উত্তরণে শ্রেষ্ঠ অবলম্বন।

মানুষের মধ্যে এ বিষয়ে নানা কুসংস্কার বিদ্যমান আছে। যেমন ‘তাহাজ্জুদ অন্ধকারে পড়তে হয়’ বা ‘তাহাজ্জত গোপনে পড়তে হয়’ ও ‘তাহাজ্জুদ পড়লে জিন আসে’ এবং ‘তাহাজ্জুদ শুরু করলে নিয়মিত আদায় করতে হয়’। এসব ভয়ে ও বিভ্রমে অনেকে তাহাজ্জুদ পড়েন না। প্রকৃতপক্ষে এসব ভুল ধারণা। তবে কারও ঘুমের ব্যাঘাত যেন না হয় এবং প্রচার মানসিকতা যেন না থাকে, এ বিষয়ে যত্নশীল ও সতর্ক থাকতে হবে। তাহাজ্জুদ নিয়মিত আদায় করতে পারলে তা অতি উত্তম।

নিজে ইবাদত করার পাশাপাশি আপনজন ও নিকট স্বজনদের ভালোবাসা ও আন্তরিকতার মাধ্যমে ইবাদতে শামিল করার চেষ্টা করা উচিত। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘আল্লাহ তাআলা সেই স্বামীর প্রতি রহম করেছেন, যে নিজে রাতে উঠে তাহাজ্জুদ পড়ে এবং তার স্ত্রীকে জাগায়। যদি সে উঠতে অস্বীকার করে, তবে তার মুখমণ্ডলে পানির ছিটা দেয়। আল্লাহ তা’আলা সেই স্ত্রীর প্রতি রহম করেছেন, যে নিজে রাতে উঠে তাহাজ্জুদ পড়ে এবং তার স্বামীকে জাগায়। যদি সে উঠতে অস্বীকার করে, তবে তার মুখমণ্ডলে পানির ছিটা দেয়।’ (আবু দাউদ ও নাসায়ি, আলফিয়্যাহ, পৃষ্ঠা ৯৭, হাদিস: ৪০৭)। এ ছাড়া যদি কেউ তাহাজ্জুদের জন্য ডাকার নির্দেশ বা অনুমতি দেন, তাঁকে তাহাজ্জুদের জন্য ডেকে তোলা যাবে, অন্যথা নয়।

নফল নামাজে রুকু, সিজদাসহ প্রতিটি রুকন বা পর্ব দীর্ঘ করা সুন্নাত ও মুস্তাহাব। এ জন্য রুকু ও সিজদায় তাসবিহ অনেকবার পড়া যায় এবং অন্যান্য পর্বেও বেশি পরিমাণে বিভিন্ন দোয়া মাসুরা, যা কোরআন-হাদিসে আছে, পাঠ করা যায়। একই রাকাতের একই সুরা বারবার এবং বিভিন্ন সুরা ও বিভিন্ন আয়াত পড়া যায়। সুন্নাত ও নফল নামাজে কিরাতে তিলাওয়াতের তারতিব বা ধারাবাহিকতা বজায় রাখা জরুরি নয়।

রমজান মাসে যেহেতু ফরজ রোজা পালনের জন্য সহায়ক হিসেবে সাহ্‌রি খাওয়ার সুন্নাত আদায়ের জন্য আমরা সবাই উঠি এবং সাহ্‌রির সময়ই হলো তাহাজ্জুদের সময়; সুতরাং রমজানে তাহাজ্জুদ আদায় করা খুবই সহজ। তাহাজ্জুদ ২ রাকাত করে ৮ রাকাত, ১২ রাকাত বা আরও কম বা বেশিও পড়া যায়। রমজানের নফলের সওয়াব ফরজের সমান, ফরজের সওয়াব ৭০ গুণ।


তাহাজ্জুদ বিষয়ক ২৪টি হাদিস

তাহাজ্জুদ বিষয়ক হাদিস   ০১ 

রাত জেগে ইবাদত করার ফযীলত

সহীহ বুখারী (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
ইসলামিক ফাউন্ডেশন নাম্বারঃ ১০৫৫, আন্তর্জাতিক নাম্বারঃ ১১২১

১০৫৫। আবদুল্লাহ ইবনু মুহাম্মদ ও মাহমুদ (রহঃ) ... আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর জীবিতকালে কোন ব্যাক্তি স্বপ্ন দেখলে তা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর খিদমতে বর্ণনা করত। এতে আমার মনে আকাঙ্খা জাগলো যে, আমি কোন স্বপ্ন দেখলে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট বর্ণনা করব। তখন আমি যুবক ছিলাম। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সময়ে মসজিদে ঘুমাতাম। আমি স্বপ্নে দেখলাম, যেন দু’জন ফিরিশতা আমাকে জাহান্নামের দিকে নিয়ে চলেছেন। তা যেন কুপের পাড় বাঁধানোর ন্যায় পাড় বাঁধানে। তাতে দু’টি খুঁটি রয়েছে এবং এর মধ্যে রয়েছে এমন কতক লোক, যাদের আমি চিনতে পারলাম। তখন আমি বলতে লাগলাম, আমি জাহান্নাম থেকে আল্লাহর নিকট পানাহ চাই। তিনি বলেন, তখন অন্য একজন ফিরিশতা আমাদের সঙ্গে মিলিত হলেন। তিনি আমাকে বললেন, ভয় পেয় না। আমি এ স্বপ্ন (আমার বোন উম্মুল মু’মিনীন) হাফসা (রাঃ) এর কাছে বর্ণনা করলাম। এরপর হাফসা (রাঃ) তা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট বর্ণনা করলেন। তখন তিনি বললেনঃ আবদুল্লাহ কতই না ভাল লোক! যদি রাত জেগে সে সালাত (নামায/নামাজ) (তাহাজ্জুদ) আদায় করত! এরপর থেকে আবদুল্লাহ (রাঃ) খুব অল্প সময়ই ঘুমাতেন।

باب فَضْلِ قِيَامِ اللَّيْلِ
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مُحَمَّدٍ، قَالَ حَدَّثَنَا هِشَامٌ، قَالَ أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ،‏.‏ وَحَدَّثَنِي مَحْمُودٌ، قَالَ حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، قَالَ أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ سَالِمٍ، عَنْ أَبِيهِ ـ رضى الله عنه ـ قَالَ كَانَ الرَّجُلُ فِي حَيَاةِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم إِذَا رَأَى رُؤْيَا قَصَّهَا عَلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَتَمَنَّيْتُ أَنْ أَرَى رُؤْيَا فَأَقُصَّهَا عَلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَكُنْتُ غُلاَمًا شَابًّا، وَكُنْتُ أَنَامُ فِي الْمَسْجِدِ عَلَى عَهْدِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَرَأَيْتُ فِي النَّوْمِ كَأَنَّ مَلَكَيْنِ أَخَذَانِي فَذَهَبَا بِي إِلَى النَّارِ فَإِذَا هِيَ مَطْوِيَّةٌ كَطَىِّ الْبِئْرِ، وَإِذَا لَهَا قَرْنَانِ، وَإِذَا فِيهَا أُنَاسٌ قَدْ عَرَفْتُهُمْ فَجَعَلْتُ أَقُولُ أَعُوذُ بِاللَّهِ مِنَ النَّارِ ـ قَالَ ـ فَلَقِيَنَا مَلَكٌ آخَرُ فَقَالَ لِي لَمْ تُرَعْ‏.‏
فَقَصَصْتُهَا عَلَى حَفْصَةَ فَقَصَّتْهَا حَفْصَةُ عَلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ ‏ "‏ نِعْمَ الرَّجُلُ عَبْدُ اللَّهِ، لَوْ كَانَ يُصَلِّي مِنَ اللَّيْلِ ‏"‏‏.‏ فَكَانَ بَعْدُ لاَ يَنَامُ مِنَ اللَّيْلِ إِلاَّ قَلِيلاً‏.‏


তাহাজ্জুদ বিষয়ক হাদিস   ০২ 

রাতের সালাতে সিজ্দা দীর্ঘ করা

সহীহ বুখারী (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
ইসলামিক ফাউন্ডেশন নাম্বারঃ ১০৫৬, আন্তর্জাতিক নাম্বারঃ ১১২২

১০৫৬। আবূল ইয়ামান (রহঃ) ... আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (তাহাজ্জুদের) এগার রাকা’আত সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করতেন এবং তা ছিল তাঁর (স্বাভাবিক) সালাত। সে সালাতে তিনি এক একটি সিজ্‌দা এত পরিমাণ (দীর্ঘায়িত) করতেন যে, তোমাদের কেউ (সিজ‌্দা থেকে) তাঁর মাথা তোলার আগে পঞ্চাশ আয়াত তিলাওয়াত করতে পারত। আর ফজরের (ফরয) সালাতের আগে তিনি দু’ রাকা’আত সালাত আদায় করতেন। তারপর তিনি ডান কাঁতে শুইতেন যতক্ষণ না সালাতের জন্য তাঁর কাছে মুয়ায্‌যিন আসতো।

باب طُولِ السُّجُودِ فِي قِيَامِ اللَّيْلِ
حَدَّثَنَا أَبُو الْيَمَانِ، قَالَ أَخْبَرَنَا شُعَيْبٌ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، قَالَ أَخْبَرَنِي عُرْوَةُ، أَنَّ عَائِشَةَ ـ رضى الله عنها ـ أَخْبَرَتْهُ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم كَانَ يُصَلِّي إِحْدَى عَشْرَةَ رَكْعَةً، كَانَتْ تِلْكَ صَلاَتَهُ، يَسْجُدُ السَّجْدَةَ مِنْ ذَلِكَ قَدْرَ مَا يَقْرَأُ أَحَدُكُمْ خَمْسِينَ آيَةً قَبْلَ أَنْ يَرْفَعَ رَأْسَهُ، وَيَرْكَعُ رَكْعَتَيْنِ قَبْلَ صَلاَةِ الْفَجْرِ، ثُمَّ يَضْطَجِعُ عَلَى شِقِّهِ الأَيْمَنِ حَتَّى يَأْتِيَهُ الْمُنَادِي لِلصَّلاَةِ‏.‏


তাহাজ্জুদ বিষয়ক হাদিস   ০৩ 

তাহজ্জুদ ও নফল ইবাদতের প্রতি নবী (ﷺ) এর উৎসাহ প্রদান

সহীহ বুখারী (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
ইসলামিক ফাউন্ডেশন নাম্বারঃ ১০৬০, আন্তর্জাতিক নাম্বারঃ ১১২৭

১০৬০। আবূল ইয়ামান (রহঃ) ... আলী ইবনু আবূ তালিব (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক রাতে তাঁর কন্যা ফাতিমা (রাঃ) এর কাছে এসে বললেনঃ তোমরা কি সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করছ না? আমি বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমাদের আত্মাগুলো তো আল্লাহ্ পাকের হাতে রয়েছে। তিনি যখন আমাদের জাগাতে মর্জি করবেন, জাগিয়ে দিবেন। আমরা যখন একথা বললাম, তখন তিনি চলে গেলেন। আমার কথার কোন প্রত্যুত্তর করলেন না। পরে আমি শুনতে পেলাম যে, তিনি ফিরে যেতে যেতে আপন উরুতে করাঘাত করছিলেন এবং কুরআনের এ আয়াত তিলাওয়াত করছিলেন অর্থাৎঃ ‏وَكَانَ الإِنْسَانُ أَكْثَرَ شَىْءٍ جَدَلاً‏ মানুষ অধিকাংশ ব্যাপারেই বিতর্ক প্রিয়।

باب تَحْرِيضِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم عَلَى صَلاَةِ اللَّيْلِ وَالنَّوَافِلِ مِنْ غَيْرِ إِيجَابٍ
حَدَّثَنَا أَبُو الْيَمَانِ، قَالَ أَخْبَرَنَا شُعَيْبٌ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، قَالَ أَخْبَرَنِي عَلِيُّ بْنُ حُسَيْنٍ، أَنَّ حُسَيْنَ بْنَ عَلِيٍّ، أَخْبَرَهُ أَنَّ عَلِيَّ بْنَ أَبِي طَالِبٍ أَخْبَرَهُ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم طَرَقَهُ وَفَاطِمَةَ بِنْتَ النَّبِيِّ ـ عَلَيْهِ السَّلاَمُ ـ لَيْلَةً فَقَالَ ‏"‏ أَلاَ تُصَلِّيَانِ ‏"‏‏.‏ فَقُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ، أَنْفُسُنَا بِيَدِ اللَّهِ، فَإِذَا شَاءَ أَنْ يَبْعَثَنَا بَعَثَنَا‏.‏ فَانْصَرَفَ حِينَ قُلْنَا ذَلِكَ وَلَمْ يَرْجِعْ إِلَىَّ شَيْئًا‏.‏ ثُمَّ سَمِعْتُهُ وَهْوَ مُوَلٍّ يَضْرِبُ فَخِذَهُ وَهْوَ يَقُولُ ‏"‏وَكَانَ الإِنْسَانُ أَكْثَرَ شَىْءٍ جَدَلاً‏)‏‏"‏‏.‏


তাহাজ্জুদ বিষয়ক হাদিস   ০৪ 

তাহজ্জুদ ও নফল ইবাদতের প্রতি উৎসাহ প্রদান

সহীহ বুখারী (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
ইসলামিক ফাউন্ডেশন নাম্বারঃ ১০৬২, আন্তর্জাতিক নাম্বারঃ ১১২৯

১০৬২। আবদুল্লাহ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) ... উম্মুল মু’মিনীন আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক রাতে মসজিদে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করছিলেন, কিছু লোক তাঁর সঙ্গে সালাত আদায় করলো। পরবর্তী রাতেও তিনি সালাত আদায় করলেন এবং লোক আরো বেড়ে গেল। এরপর তৃতীয় কিংবা চতুর্থ রাতে লোকজন সমবেত হলেন, কিন্তু রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বের হলেন না। সকাল হলে তিনি বললেনঃ তোমাদের কার্যকলাপ আমি লক্ষ্য করেছি। তোমাদের কাছে বেরিয়ে আসার ব্যাপারে শুধু এ আশংকাই আমাকে বাধা দিয়েছে যে, তোমাদের উপর তা ফরয হয়ে যাবে। আর ঘটনাটি ছিল রামাযান মাসের (তারাবীহ্‌র সালাতের)।

باب تَحْرِيضِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم عَلَى صَلاَةِ اللَّيْلِ وَالنَّوَافِلِ مِنْ غَيْرِ إِيجَابٍ
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ يُوسُفَ، قَالَ أَخْبَرَنَا مَالِكٌ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ عُرْوَةَ بْنِ الزُّبَيْرِ، عَنْ عَائِشَةَ أُمِّ الْمُؤْمِنِينَ ـ رضى الله عنها أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم صَلَّى ذَاتَ لَيْلَةٍ فِي الْمَسْجِدِ فَصَلَّى بِصَلاَتِهِ نَاسٌ، ثُمَّ صَلَّى مِنَ الْقَابِلَةِ فَكَثُرَ النَّاسُ، ثُمَّ اجْتَمَعُوا مِنَ اللَّيْلَةِ الثَّالِثَةِ أَوِ الرَّابِعَةِ، فَلَمْ يَخْرُجْ إِلَيْهِمْ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم، فَلَمَّا أَصْبَحَ قَالَ ‏ "‏ قَدْ رَأَيْتُ الَّذِي صَنَعْتُمْ وَلَمْ يَمْنَعْنِي مِنَ الْخُرُوجِ إِلَيْكُمْ إِلاَّ أَنِّي خَشِيتُ أَنْ تُفْرَضَ عَلَيْكُمْ ‏"‏، وَذَلِكَ فِي رَمَضَانَ‏.‏


তাহাজ্জুদ বিষয়ক হাদিস   ০৫ 

নবী (ﷺ) তাহজ্জুদে দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকতেন

সহীহ বুখারী (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
ইসলামিক ফাউন্ডেশন নাম্বারঃ ১০৬৩, আন্তর্জাতিক নাম্বারঃ ১১৩০

وَقَالَتْ عَائِشَةُ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا حَتَّى تَفَطَّرَ قَدَمَاهُ. وَالْفُطُورُ الشُّقُوقُ، (انْفَطَرَتْ) انْشَقَّتْ

আয়িশা (রাঃ) বলেছেন, এমনকি তাঁর পদযুগল ফেটে যেতো। কুরআনের শব্দ الْفُطُورُ অর্থ ’ফেটে যাওয়া’ انْفَطَرَتْ ’ফেটে গেল’।

১০৬৩। আবূ নু’আইম (রহঃ) ... মুগীরা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রাত্রি জাগরণ করতেন অথবা রাবী বলেছেন, সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করতেন; এমনকি তাঁর পদযুগল অথবা তাঁর দু’ পায়ের গোছা ফুলে যেত। তখন এ ব্যাপারে তাঁকে বলা হল, এত কষ্ট কেন করছেন? তিনি বলতেন, তাই বলে আমি কি একজন শুকরগুযার বান্দা হব না?

باب قِيَامِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم حَتَّى تَرِمَ قَدَمَاهُ
حَدَّثَنَا أَبُو نُعَيْمٍ، قَالَ حَدَّثَنَا مِسْعَرٌ، عَنْ زِيَادٍ، قَالَ سَمِعْتُ الْمُغِيرَةَ ـ رضى الله عنه ـ يَقُولُ إِنْ كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم لَيَقُومُ لِيُصَلِّيَ حَتَّى تَرِمُ قَدَمَاهُ أَوْ سَاقَاهُ، فَيُقَالُ لَهُ فَيَقُولُ ‏ "‏ أَفَلاَ أَكُونُ عَبْدًا شَكُورًا ‏"‏‏.‏


তাহাজ্জুদ বিষয়ক হাদিস   ০৬ 

তাহজ্জুদের সালাত দীর্ঘায়িত করা

সহীহ বুখারী (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
ইসলামিক ফাউন্ডেশন নাম্বারঃ ১০৬৯, আন্তর্জাতিক নাম্বারঃ ১১৩৫

১০৬৯। সুলাইমান ইবনু হারব (রহঃ) ... আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাতে আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করলাম। তিনি এত দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে থাকলেন যে, আমি একটি মন্দ কাজের ইচ্ছা করে ফেলেছিলাম। (আবূ ওয়াইল (রহঃ) বলেন) আমরা জিজ্ঞাসা করলাম, আপনি কি ইচ্ছা করেছিলেন? তিনি বললেন, ইচ্ছা করেছিলাম, বসে পড়ি এবং নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর ইকতিদা ছেড়ে দেই।

باب طُولِ الْقِيَامِ فِي صَلاَةِ اللَّيْلِ
حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ بْنُ حَرْبٍ، قَالَ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ أَبِي وَائِلٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ ـ رضى الله عنه ـ قَالَ صَلَّيْتُ مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم لَيْلَةً، فَلَمْ يَزَلْ قَائِمًا حَتَّى هَمَمْتُ بِأَمْرِ سَوْءٍ‏.‏ قُلْنَا وَمَا هَمَمْتَ قَالَ هَمَمْتَ أَنْ أَقْعُدَ وَأَذَرَ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم‏.‏


তাহাজ্জুদ বিষয়ক হাদিস   ০৭ 

নবী (ﷺ) এর রাতের সালাত কিরূপ ছিল

সহীহ বুখারী (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
ইসলামিক ফাউন্ডেশন নাম্বারঃ ১০৭১, আন্তর্জাতিক নাম্বারঃ ১১৩৭

১০৭১। আবূল ইয়ামন (রহঃ) ... আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) বলেন, একজন জিজ্ঞাসা করলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! রাতের সালাত (নামায/নামাজ)-এর (আদায়ের) পদ্ধতি কি? তিনি বললেনঃ দু’ রাকা’আত করে। আর ফজর হয়ে যাওয়ার আশংকা করলে এক রাকা’আত মিলিয়ে বিতর আদায় করে নিবে।

باب كَيْفَ كَانَ صَلاَةُ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَكَمْ كَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُصَلِّي مِنَ اللَّيْلِ
حَدَّثَنَا أَبُو الْيَمَانِ، قَالَ أَخْبَرَنَا شُعَيْبٌ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، قَالَ أَخْبَرَنِي سَالِمُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، أَنَّ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ عُمَرَ ـ رضى الله عنهما ـ قَالَ إِنَّ رَجُلاً قَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ، كَيْفَ صَلاَةُ اللَّيْلِ قَالَ ‏ "‏ مَثْنَى مَثْنَى، فَإِذَا خِفْتَ الصُّبْحَ فَأَوْتِرْ بِوَاحِدَةٍ ‏"‏‏.‏


তাহাজ্জুদ বিষয়ক হাদিস   ০৮ 

তাহাজ্জুদ আদায় না করলে শয়তানের গ্রন্থী বেধে দেওয়া

সহীহ বুখারী (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
ইসলামিক ফাউন্ডেশন নাম্বারঃ ১০৭৬, আন্তর্জাতিক নাম্বারঃ ১১৪২

১০৭৬। আবদুল্লাহ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমাদের কেউ যখন ঘুমিয়ে পড়ে তখন শয়তান তার গ্রীবাদেশে তিনটি গিট দেয়। প্রতি গিটে সে এ বলে চাপড়ায়, তোমার সামনে রয়েছে দীর্ঘ রাত। তারপর সে যদি জাগ্রত হয়ে আল্লাহকে স্মরণ করে একটি গিঠ খুলে যায়, পরে উযূ (ওজু/অজু/অযু) করলে আর একটি গিঠ খুলে যায়, তারপর সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করলে আর একটি গিঠ খুলে যায়। তখন তার প্রভাত হয়, প্রফুল্ল মনে ও নির্মল চিত্তে। অন্যথায় সে সকালে উঠে কলুষিত মনে ও অলসতা নিয়ে।

باب عَقْدِ الشَّيْطَانِ عَلَى قَافِيَةِ الرَّأْسِ إِذَا لَمْ يُصَلِّ بِاللَّيْلِ
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ يُوسُفَ، قَالَ أَخْبَرَنَا مَالِكٌ، عَنْ أَبِي الزِّنَادِ، عَنِ الأَعْرَجِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ـ رضى الله عنه ـ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏ "‏ يَعْقِدُ الشَّيْطَانُ عَلَى قَافِيَةِ رَأْسِ أَحَدِكُمْ إِذَا هُوَ نَامَ ثَلاَثَ عُقَدٍ، يَضْرِبُ كُلَّ عُقْدَةٍ عَلَيْكَ لَيْلٌ طَوِيلٌ فَارْقُدْ، فَإِنِ اسْتَيْقَظَ فَذَكَرَ اللَّهَ انْحَلَّتْ عُقْدَةٌ، فَإِنْ تَوَضَّأَ انْحَلَّتْ عُقْدَةٌ، فَإِنْ صَلَّى انْحَلَّتْ عُقْدَةٌ فَأَصْبَحَ نَشِيطًا طَيِّبَ النَّفْسِ، وَإِلاَّ أَصْبَحَ خَبِيثَ النَّفْسِ كَسْلاَنَ ‏"‏‏.‏


তাহাজ্জুদ বিষয়ক হাদিস   ০৯ 

তাহাজ্জুদ না পড়লে শয়তান তার কানে পেশাব করে

সহীহ বুখারী (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
ইসলামিক ফাউন্ডেশন নাম্বারঃ ১০৭৮, আন্তর্জাতিক নাম্বারঃ ১১৪৪

১০৭৮। মুসাদ্দাদ (রহঃ) ... আবদুল্লাহ (ইবনু মাসউদ) (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সামনে এক ব্যাক্তির সম্পর্কে আলোচনা করা হল- সকাল বেল পর্যন্ত সে ঘুমিয়েই কাটিয়েছে, সালাত (নামায/নামাজ)-এর জন্য (যথা সময়ে) জাগ্রত হয়নি, তখন (নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ইরশাদ করলেনঃ শয়তান তার কানে পেশাব করে দিয়েছে।

باب إِذَا نَامَ وَلَمْ يُصَلِّ بَالَ الشَّيْطَانُ فِي أُذُنِهِ
حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، قَالَ حَدَّثَنَا أَبُو الأَحْوَصِ، قَالَ حَدَّثَنَا مَنْصُورٌ، عَنْ أَبِي وَائِلٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ ـ رضى الله عنه ـ قَالَ ذُكِرَ عِنْدَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم رَجُلٌ فَقِيلَ مَا زَالَ نَائِمًا حَتَّى أَصْبَحَ مَا قَامَ إِلَى الصَّلاَةِ‏.‏ فَقَالَ ‏ "‏ بَالَ الشَّيْطَانُ فِي أُذُنِهِ ‏"‏‏.‏


তাহাজ্জুদ বিষয়ক হাদিস   ১০ 

রাতের শেষভাগে দু’আ করা

সহীহ বুখারী (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
ইসলামিক ফাউন্ডেশন নাম্বারঃ ১০৭৯, আন্তর্জাতিক নাম্বারঃ ১১৪৫

আল্লাহ্পাক ইরশাদ করেছেনঃ রাতের সামান্য পরিমাণ (সময়) তাঁরা নিদ্রারত থাকেন, শেষ রাতে তাঁরা ইসতিগ্ফর করেন। (সূরা আয্-যারিয়াতঃ ১৮)।

১০৭৯। আবদুল্লাহ ইবনু মাসলামা (রহঃ) ... আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ মহামহিম আল্লাহ্ তা’আলা প্রতি রাতে রাতের শেষ তৃতীয়াংশ অবশিষ্ট থাকাকালে নিকটবর্তী আসমানে অবতরণ করে ঘোষণা করতে থাকেনঃ কে আছে এমন, যে আমাকে ডাকবে? আমি তার ডাকে সাড়া দিব। কে আছ এমন যে, আমার কাছে চাইবে? আমি তাকে তা দিব। কে আছ এমনে, আমার কাছে ক্ষমা চাইবে? আমি তাকে ক্ষমা করব।

باب الدُّعَاءِ وَالصَّلاَةِ مِنْ آخِرِ اللَّيْلِ وَقَالَ: {كَانُوا قَلِيلاً مِنَ اللَّيْلِ مَا يَهْجَعُونَ} أَيْ مَا يَنَامُونَ {وَبِالأَسْحَارِ هُمْ يَسْتَغْفِرُونَ}
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مَسْلَمَةَ، عَنْ مَالِكٍ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ، وَأَبِي عَبْدِ اللَّهِ الأَغَرِّ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ـ رضى الله عنه ـ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏ "‏ يَنْزِلُ رَبُّنَا تَبَارَكَ وَتَعَالَى كُلَّ لَيْلَةٍ إِلَى السَّمَاءِ الدُّنْيَا حِينَ يَبْقَى ثُلُثُ اللَّيْلِ الآخِرُ يَقُولُ مَنْ يَدْعُونِي فَأَسْتَجِيبَ لَهُ مَنْ يَسْأَلُنِي فَأُعْطِيَهُ مَنْ يَسْتَغْفِرُنِي فَأَغْفِرَ لَهُ ‏"‏‏.‏


তাহাজ্জুদ বিষয়ক হাদিস   ১১ 

তাহাজ্জুদের ফজিলত

সহীহ মুসলিম (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)

৬১৪৬। ইসহাক ইবনু ইবরাহীম ও আবদ ইবনু হুমায়দ (রহঃ) ... ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর জীবদ্দশায় কোন ব্যক্তি স্বপ্ন দেখলে তা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে বর্ণনা করতেন। আমি আশা করেছিলাম যে, আমি কোন স্বপ্ন দেখে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট তা বর্ণনা করি। রাবী বলেন, সে সময় আমি নওজোয়ান অবিবাহিত যুবক ছিলাম এবং রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর জীবদ্দশায় আমি মসজিদে নিদ্রা যেতাম। তখন আমি স্বপ্ন দেখলাম যেন দুজন ফিরিশতা আমাকে পাকড়াও করলেন এবং তাঁরা আমাকে জাহান্নামের নিকট নিয়ে গেলেন। তখন দেখলাম যে, সেটি একটি গভীর গর্ত, একটি কুপের গর্তের মত তাতে দুইটি কাষ্ঠখন্ড দেখলাম যা কুপের উপরে স্বাভাবিকভাবে থাকে। সেখানে কিছু লোক ছিল যাদের আমি চিনলাম।

আমি তখন বলতে শুরু করলাম أَعُوذُ بِاللَّهِ مِنَ النَّارِ আমি জাহান্নাম থেকে আল্লাহর পানাহ চাই, আমি জাহান্নাম থেকে আল্লাহর পানাহ চাই, আমি জাহান্নাম থেকে আল্লাহর পানাহ চাই”। রাবী বলেন, সে দুই ফিরিশতার সঙ্গে আরও একজন ফিরিশতা মিলিত হলেন। তিনি আমাকে বললেন, তোমার কোন ভয় নেই। তারপর আমি এই স্বপ্নের কথা হাফসা (রাঃ) এর কাছে বর্ণনা করলাম। হাফসা (রাঃ) তা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে ব্যক্ত করলেন। তখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আবদুল্লাহ কতই না ভাল লোক! যদি সে রাতে (তাহাজ্জুদ) সালাত আদায় করত। সালিম (রাঃ) বলেন, এরপর আবদুল্লাহ (রাঃ) রাত্রে খুব কম সময়ই নিদ্রা যেতেন।

باب مِنْ فَضَائِلِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ رضى الله عنهما ‏‏
حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، وَعَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، - وَاللَّفْظُ لِعَبْدٍ - قَالاَ أَخْبَرَنَا عَبْدُ، الرَّزَّاقِ أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ سَالِمٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، قَالَ كَانَ الرَّجُلُ فِي حَيَاةِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم إِذَا رَأَى رُؤْيَا قَصَّهَا عَلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَتَمَنَّيْتُ أَنْ أَرَى رُؤْيَا أَقُصُّهَا عَلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ وَكُنْتُ غُلاَمًا شَابًّا عَزَبًا وَكُنْتُ أَنَامُ فِي الْمَسْجِدِ عَلَى عَهْدِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَرَأَيْتُ فِي النَّوْمِ كَأَنَّ مَلَكَيْنِ أَخَذَانِي فَذَهَبَا بِي إِلَى النَّارِ فَإِذَا هِيَ مَطْوِيَّةٌ كَطَىِّ الْبِئْرِ وَإِذَا لَهَا قَرْنَانِ كَقَرْنَىِ الْبِئْرِ وَإِذَا فِيهَا نَاسٌ قَدْ عَرَفْتُهُمْ فَجَعَلْتُ أَقُولُ أَعُوذُ بِاللَّهِ مِنَ النَّارِ أَعُوذُ بِاللَّهِ مِنَ النَّارِ أَعُوذُ بِاللَّهِ مِنَ النَّارِ - قَالَ - فَلَقِيَهُمَا مَلَكٌ فَقَالَ لِي لَمْ تُرَعْ ‏.‏ فَقَصَصْتُهَا عَلَى حَفْصَةَ فَقَصَّتْهَا حَفْصَةُ عَلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم ‏ "‏ نِعْمَ الرَّجُلُ عَبْدُ اللَّهِ لَوْ كَانَ يُصَلِّي مِنَ اللَّيْلِ ‏"‏ ‏.‏ قَالَ سَالِمٌ فَكَانَ عَبْدُ اللَّهِ بَعْدَ ذَلِكَ لاَ يَنَامُ مِنَ اللَّيْلِ إِلاَّ قَلِيلاً ‏.‏

حدثنا إسحاق بن إبراهيم، وعبد بن حميد، - واللفظ لعبد - قالا أخبرنا عبد، الرزاق أخبرنا معمر، عن الزهري، عن سالم، عن ابن عمر، قال كان الرجل في حياة رسول الله صلى الله عليه وسلم إذا رأى رؤيا قصها على رسول الله صلى الله عليه وسلم فتمنيت أن أرى رؤيا أقصها على النبي صلى الله عليه وسلم قال وكنت غلاما شابا عزبا وكنت أنام في المسجد على عهد رسول الله صلى الله عليه وسلم فرأيت في النوم كأن ملكين أخذاني فذهبا بي إلى النار فإذا هي مطوية كطى البئر وإذا لها قرنان كقرنى البئر وإذا فيها ناس قد عرفتهم فجعلت أقول أعوذ بالله من النار أعوذ بالله من النار أعوذ بالله من النار - قال - فلقيهما ملك فقال لي لم ترع ‏.‏ فقصصتها على حفصة فقصتها حفصة على رسول الله صلى الله عليه وسلم فقال النبي صلى الله عليه وسلم ‏ "‏ نعم الرجل عبد الله لو كان يصلي من الليل ‏"‏ ‏.‏ قال سالم فكان عبد الله بعد ذلك لا ينام من الليل إلا قليلا ‏.‏


তাহাজ্জুদ বিষয়ক হাদিস   ১২ 

রাতের নামাজের আগে দোয়া পড়া

সূনান আবু দাউদ (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)

৭৬৭. ইবনুল মুছান্না ..... আব্দুর রহমান ইবনু আওফ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি আয়িশা (রাঃ)-কে জিজ্ঞেস করি যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম রাতে নামায আদায় করাকালে কোন দু’আটি পড়তেন? তিনি বলেন, যখন তিনি রাতে তাহাজ্জুদ নামায আদায়ের জন্য উঠতেন, তখন এই দু’আ পাঠ করতেনঃ “আল্লাহুম্মা রব্বা জিবরীল ওয়া মীকাঈল ওয়া ইসরাফীল ফাতিরাস সামাওয়াতি ওয়াল আরদা, আলিমুল গায়বি ওয়াশ শাহাদাতে, আনতা তাহকুমু বাইনা ইবাদিকা ফীমা কানূ ফীহে ইয়াখতালিফুন। ইহ্‌দিনী লিমাখতুলিফা ফীহে মিনাল হাক্‌কি বি-ইয্‌নিকা, ইন্নাকা আনতা তাহদী মান তাশাউ ইলা সিরাতিম মুসতাকীম। (মুসলিম, তিরমিযী, ইবনু মাজাহ, নাসাঈ)।

باب مَا يُسْتَفْتَحُ بِهِ الصَّلاَةُ مِنَ الدُّعَاءِ
حَدَّثَنَا ابْنُ الْمُثَنَّى، حَدَّثَنَا عُمَرُ بْنُ يُونُسَ، حَدَّثَنَا عِكْرِمَةُ، حَدَّثَنِي يَحْيَى بْنُ أَبِي كَثِيرٍ، حَدَّثَنِي أَبُو سَلَمَةَ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ عَوْفٍ، سَأَلْتُ عَائِشَةَ بِأَىِّ شَىْءٍ كَانَ نَبِيُّ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَفْتَتِحُ صَلاَتَهُ إِذَا قَامَ مِنَ اللَّيْلِ قَالَتْ كَانَ إِذَا قَامَ مِنَ اللَّيْلِ يَفْتَتِحُ صَلاَتَهُ ‏ "‏ اللَّهُمَّ رَبَّ جِبْرِيلَ وَمِيكَائِيلَ وَإِسْرَافِيلَ فَاطِرَ السَّمَوَاتِ وَالأَرْضِ عَالِمَ الْغَيْبِ وَالشَّهَادَةِ أَنْتَ تَحْكُمُ بَيْنَ عِبَادِكَ فِيمَا كَانُوا فِيهِ يَخْتَلِفُونَ اهْدِنِي لِمَا اخْتُلِفَ فِيهِ مِنَ الْحَقِّ بِإِذْنِكَ إِنَّكَ أَنْتَ تَهْدِي مَنْ تَشَاءُ إِلَى صِرَاطٍ مُسْتَقِيمٍ ‏"‏ ‏.‏


তাহাজ্জুদ বিষয়ক হাদিস   ১৩ 

তাহজ্জুদের নামাযে দাঁড়িয়ে রাত জাগা

সূনান আবু দাউদ (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)

১৩০৭. মুহাম্মাদ ইবন বাশশার (রহঃ) ..... আয়েশা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ তোমরা তাহাজ্জুদের নামায পরিত্যাগ কর না। কেননা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম একে কোন সময় পরিত্যাগ করতেন না। যখন তিনি অসুস্থ হতেন অথবা আলস্য বোধ করতেন তখন তিনি তা বসে আদায় করতেন।

باب قِيَامِ اللَّيْلِ
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، قَالَ حَدَّثَنَا أَبُو دَاوُدَ، قَالَ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ يَزِيدَ بْنِ خُمَيْرٍ، قَالَ سَمِعْتُ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ أَبِي قَيْسٍ، يَقُولُ قَالَتْ عَائِشَةُ رضى الله عنها لاَ تَدَعْ قِيَامَ اللَّيْلِ فَإِنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم كَانَ لاَ يَدَعُهُ وَكَانَ إِذَا مَرِضَ أَوْ كَسِلَ صَلَّى قَاعِدًا ‏.‏


তাহাজ্জুদ বিষয়ক হাদিস   ১৪ 

রাতের তাহজ্জুদ নামায

সূনান আবু দাউদ (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)

১৩৪০. মূসা ইবন ইসমাঈল (রহঃ) ...... আয়েশা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রাতের বেলায় তের রাকাত নামায আদায় করতেন এবং তাঁর আট রাকাত হত তাহাজ্জুদ বা নফল। অতঃপর তিনি বিতিরের নামায আদায় করতেন। পরে তিনি ফজরের দুই রাকাত সুন্নাত আদায় করতেন।

ইমাম মুসলিম (রহঃ) বলেনঃ তিনি বিতিরের পরে দুই রাকাত নামায বসে আদায় করতেন। অতঃপর ফজরের আযান ও ইকামাতের মাঝখানে দুই রাকাত ফজরের সুন্নাত নামায আদায় করতেন। (মুসলিম, নাসাঈ)।

باب فِي صَلاَةِ اللَّيْلِ
حَدَّثَنَا مُوسَى بْنُ إِسْمَاعِيلَ، وَمُسْلِمُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، قَالاَ حَدَّثَنَا أَبَانُ، عَنْ يَحْيَى، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ، عَنْ عَائِشَةَ، ‏:‏ أَنَّ نَبِيَّ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم كَانَ يُصَلِّي مِنَ اللَّيْلِ ثَلاَثَ عَشْرَةَ رَكْعَةً، وَكَانَ يُصَلِّي ثَمَانِيَ رَكَعَاتٍ، وَيُوتِرُ بِرَكْعَةٍ، ثُمَّ يُصَلِّي - قَالَ مُسْلِمٌ ‏:‏ بَعْدَ الْوِتْرِ، ثُمَّ اتَّفَقَا - رَكْعَتَيْنِ وَهُوَ قَاعِدٌ، فَإِذَا أَرَادَ أَنْ يَرْكَعَ قَامَ فَرَكَعَ، وَيُصَلِّي بَيْنَ أَذَانِ الْفَجْرِ وَالإِقَامَةِ رَكْعَتَيْنِ ‏.‏


তাহাজ্জুদ বিষয়ক হাদিস   ১৫ 

ভাল কথা বলার ফজিলত

সূনান তিরমিজী (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)

১৯৯০। আলী ইবন হুজর (রহঃ) ... আলী রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত যে, তিনি বলেছেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, জান্নাতে একটি প্রাসাদ রয়েছে যার ভিতর থেকে বাহির এবং বাহির থেকে ভিতর পরিদৃষ্ট হবে। তখন জনৈক বেদুঈন উঠে দাঁড়ালেন, বললেনঃ ইয়া রাসূলাল্লাহ এটি কার হবে? তিনি বললেন, এটি হবে তার যে ভাল কথা বলে, অন্যকে আহার করায়, সর্বদা রোযা রাখে এবং যখন রাতে সব মানুষ ঘুমিয়ে থাকে তখন সে উঠে সালাত (তাহাজ্জুদ) আদায় করে।

হাসান, মিশকাত ২৩৩৫, তা’লীকুর রাগীব ২/৪৬, তিরমিজী হাদিস নম্বরঃ ১৯৮৪ [আল মাদানী প্রকাশনী]

হাদীসটি গারীব। আবদুর রহমান ইবন ইসহাক (রহঃ)-এর সূত্র ছাড়া এটি সম্পর্কে আমাদের কিছু জানা নেই।

باب مَا جَاءَ فِي قَوْلِ الْمَعْرُوفِ
حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ حُجْرٍ، حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ مُسْهِرٍ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ إِسْحَاقَ، عَنِ النُّعْمَانِ بْنِ سَعْدٍ، عَنْ عَلِيٍّ، قَالَ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم ‏"‏ إِنَّ فِي الْجَنَّةِ غُرَفًا تُرَى ظُهُورُهَا مِنْ بُطُونِهَا وَبُطُونُهَا مِنْ ظُهُورِهَا ‏"‏ ‏.‏ فَقَامَ أَعْرَابِيٌّ فَقَالَ لِمَنْ هِيَ يَا رَسُولَ اللَّهِ قَالَ ‏"‏ لِمَنْ أَطَابَ الْكَلاَمَ وَأَطْعَمَ الطَّعَامَ وَأَدَامَ الصِّيَامَ وَصَلَّى لِلَّهِ بِاللَّيْلِ وَالنَّاسُ نِيَامٌ ‏"‏ ‏.‏ قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ لاَ نَعْرِفُهُ إِلاَّ مِنْ حَدِيثِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ إِسْحَاقَ ‏.‏ وَقَدْ تَكَلَّمَ بَعْضُ أَهْلِ الْحَدِيثِ فِي عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ إِسْحَاقَ هَذَا مِنْ قِبَلِ حِفْظِهِ وَهُوَ كُوفِيٌّ وَعَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ إِسْحَاقَ الْقُرَشِيُّ مَدَنِيٌّ وَهُوَ أَثْبَتُ مِنْ هَذَا وَكِلاَهُمَا كَانَا فِي عَصْرٍ وَاحِدٍ ‏.‏


তাহাজ্জুদ বিষয়ক হাদিস   ১৬ 

শান্তি ও নিরাপদে জান্নাতে দাখেল

সূনান তিরমিজী (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)

২৪৮৭. মুহাম্মদ ইবন বাশশার (রহঃ) .... আবদুল্লাহ ইবন সালাম রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন মদীনায় এলেন তখন লোকেরা দ্রুত তাঁর দিকে ছুটে গেল। বলাবলি হতে লাগল যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এসেছেন। লোকদের মধ্যে আমিও তাঁকে দেখতে গেলাম। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর চেহারা যখন আমার সামনে প্রতিভাত হল আমি চিনে ফেললাম যে, এ চেহারা কোন মিথ্যাবাদীর চেহারা নয়। তিনি প্রথম যে কথা উচ্চারণ করলেন তা হলঃ হে লোক সকল, তোমরা সালামের প্রসার ঘটাবে, লোকদের খাদ্য দিবে, মানুষ যখন ঘুমিয়ে থাকবে (শেষ রাতে) তখন তাহাজ্জুদের) সালাত (নামায) আদায় করবে। তাহেল তোমরা শান্তি ও নিরাপদে জান্নাতে দাখেল হতে পারবে। সহীহ, ইবনু মাজাহ ১৩৩৪,৩২৫১, তিরমিজী হাদিস নম্বরঃ ২৪৮৫ [আল মাদানী প্রকাশনী]

(আবু ঈসা বলেন) এ হাদীসটি সহীহ।

بَابٌ
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَهَّابِ الثَّقَفِيُّ، وَمُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ، وَابْنُ أَبِي عَدِيٍّ، وَيَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ، عَنْ عَوْفِ بْنِ أَبِي جَمِيلَةَ الأَعْرَابِيِّ، عَنْ زُرَارَةَ بْنِ أَوْفَى، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ سَلاَمٍ، قَالَ لَمَّا قَدِمَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم الْمَدِينَةَ انْجَفَلَ النَّاسُ إِلَيْهِ وَقِيلَ قَدِمَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَدِمَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَدِمَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَجِئْتُ فِي النَّاسِ لأَنْظُرَ إِلَيْهِ فَلَمَّا اسْتَبَنْتُ وَجْهَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عَرَفْتُ أَنَّ وَجْهَهُ لَيْسَ بِوَجْهِ كَذَّابٍ وَكَانَ أَوَّلَ شَيْءٍ تَكَلَّمَ بِهِ أَنْ قَالَ ‏ "‏ أَيُّهَا النَّاسُ أَفْشُوا السَّلاَمَ وَأَطْعِمُوا الطَّعَامَ وَصَلُّوا وَالنَّاسُ نِيَامٌ تَدْخُلُونَ الْجَنَّةَ بِسَلاَمٍ ‏"‏ ‏.‏ قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ صَحِيحٌ ‏.‏


তাহাজ্জুদ বিষয়ক হাদিস   ১৭ 

মালা-এ-আ’লায় তাহাজ্জুদ নিয়ে আলোচনা

সূনান তিরমিজী (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)

৩২৩৩. সালামা ইবন শাবীব্ ও আবদ ইবন হুমায়দ (রহঃ) ...... ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ একদা রাতে সুমহান ও বরকতময় আমার রব আমার কাছে সুন্দরতম রূপে এসেছিলেন। (রাবী বলেন, যতদূর মনে পড়ে নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ’স্বপ্নে’ কথাটি বলেছিলেন।) তিনি বললেনঃ হে মুহাম্মাদ! আপনি কি জানেন, কি নিয়ে মালা-এ-আলা (সর্বোচ্চ ফেরেশতা পরিষদ)-এ বিতর্ক হচ্ছে? আমি বললামঃ না।

নবীজী বলেনঃ তখন তিনি আমার কাঁধের মাঝে তার হাত রাখলেন। এমনকি এর স্নিগ্ধতা আমি আমার বুকেও অনুভব করলাম। এতে আসমান ও যমীনের যা কিছু আছে সব আমি জানতে পারলাম।

তিনি বললঃ হে মুহাম্মাদ! আপনি কি জানেন, কি নিয়ে মালা-এ আলায় আলোচনা হচ্ছে?

আমি বললামঃ হ্যাঁ, গুনাহের কাফফারা বিষয়ে আলোচনা হচ্ছে। সালাতের পর মসজিদে অবস্থান করাও কাফফারা, জামাআতে পায়ে হেঁটে যাওয়া, কষ্টের সময় পরিপূর্ণভাবে উযূ করাও কাফফারা। যে ব্যক্তি এই কাজ করবে তার জীবন হবে কল্যাণময়, আর মৃত্যুও হবে কল্যাণময়। যেই দিন তাঁর মা তাকে ভূমিষ্ঠ করলেন গুনাহর ক্ষেত্রে তাঁর অবস্থা হবে সেই দিনের মত। আমার রব বললেনঃ হে মুহাম্মাদ! সালাত (নামায) শেষে বলবেনঃ

اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ فِعْلَ الْخَيْرَاتِ وَتَرْكَ الْمُنْكَرَاتِ وَحُبَّ الْمَسَاكِينِ وَإِذَا أَرَدْتَ بِعِبَادِكَ فِتْنَةً فَاقْبِضْنِي إِلَيْكَ غَيْرَ مَفْتُونٍ

হে আল্লাহ্! আপনার কাছে আমি যাঞ্ছা করি ভাল কাজ করা এবং মন্দ কাজ পরিত্যাগের, দরিদ্রদের প্রতি ভালবাসা পোষণের তওফীক। আপনি যখন বান্দাদের বিষয়ে ফেতনা মুসীবতের ইরাদা করবেন তখন আমাকে যেন ফেতনা মুক্ত অবস্থায় উঠায়ে নেন।

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ (মালা-এ-আ’লায় আরো আলোচনা হচ্ছে) উচ্চ মর্যদা লাভের বিষয়ে। তা হল, সালামের প্রসার সাধন, আহার প্রদান এবং লোকেরা যখন নিদ্রাভিভূত তখন রাতের নফল সালাতে (তাহাজ্জুদে) নিমগ্ন হওয়া।

সহীহ, আয-যিলাল ৩৮৮, তা’লীকুর রাগীব ১/৯৮, ১২৬/১, 
তিরমিজী হাদিস নম্বরঃ ৩২৩৩ [আল মাদানী প্রকাশনী]

রাবীগণ এই হাদীসটির সনদে আবূ কিলাবা ও ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু-এর মাঝে আরেক ব্যক্তির উল্লেখ করেছেন। কাতাদা (রহঃ) এটিকে আবূ কিলাবা-খালিদ ইবন লাজলাজ-ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু সনদে রিওয়ায়ত করেছেন।

بَابٌ: وَمِنْ سُورَةِ ص
حَدَّثَنَا سَلَمَةُ بْنُ شَبِيبٍ، وَعَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، قَالاَ حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، عَنْ مَعْمَرٍ، عَنْ أَيُّوبَ، عَنْ أَبِي قِلاَبَةَ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ "‏ أَتَانِي اللَّيْلَةَ رَبِّي تَبَارَكَ وَتَعَالَى فِي أَحْسَنِ صُورَةٍ قَالَ أَحْسَبُهُ قَالَ فِي الْمَنَامِ فَقَالَ يَا مُحَمَّدُ هَلْ تَدْرِي فِيمَ يَخْتَصِمُ الْمَلأُ الأَعْلَى قَالَ قُلْتُ لاَ ‏.‏ قَالَ فَوَضَعَ يَدَهُ بَيْنَ كَتِفَىَّ حَتَّى وَجَدْتُ بَرْدَهَا بَيْنَ ثَدْيَىَّ أَوْ قَالَ فِي نَحْرِي فَعَلِمْتُ مَا فِي السَّمَوَاتِ وَمَا فِي الأَرْضِ قَالَ يَا مُحَمَّدُ هَلْ تَدْرِي فِيمَ يَخْتَصِمُ الْمَلأُ الأَعْلَى قُلْتُ نَعَمْ ‏.‏ قَالَ فِي الْكَفَّارَاتِ ‏.‏ وَالْكَفَّارَاتُ الْمُكْثُ فِي الْمَسَاجِدِ بَعْدَ الصَّلَوَاتِ وَالْمَشْىُ عَلَى الأَقْدَامِ إِلَى الْجَمَاعَاتِ وَإِسْبَاغُ الْوُضُوءِ فِي الْمَكَارِهِ وَمَنْ فَعَلَ ذَلِكَ عَاشَ بِخَيْرٍ وَمَاتَ بِخَيْرٍ وَكَانَ مِنْ خَطِيئَتِهِ كَيَوْمَ وَلَدَتْهُ أُمُّهُ وَقَالَ يَا مُحَمَّدُ إِذَا صَلَّيْتَ فَقُلِ اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ فِعْلَ الْخَيْرَاتِ وَتَرْكَ الْمُنْكَرَاتِ وَحُبَّ الْمَسَاكِينِ وَإِذَا أَرَدْتَ بِعِبَادِكَ فِتْنَةً فَاقْبِضْنِي إِلَيْكَ غَيْرَ مَفْتُونٍ قَالَ وَالدَّرَجَاتُ إِفْشَاءُ السَّلاَمِ وَإِطْعَامُ الطَّعَامِ وَالصَّلاَةُ بِاللَّيْلِ وَالنَّاسُ نِيَامٌ ‏"‏ ‏.‏


তাহাজ্জুদ বিষয়ক হাদিস   ১৮ 

তাহজ্জুদের প্রতি উদ্বুদ্ধ করা

সুনান আন-নাসায়ী (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)

১৬১৩। ইয়াকুব ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন। আল্লাহ তা’আলা ঐ ব্যক্তির উপর রহম করুন, যে রাত্রের কিছু অংশ জেগে তাহাজ্জ্বুদের সালাত আদায় করে, অতঃপর তার স্ত্রীকেও জাগিয়ে দেয়, সেও তাহাজ্জ্বুদের সালাত আদায় করে। যদি তার স্ত্রী জাগ্রাত হতে না চায় তবে তার মুখমণ্ডলে পানির ছিটা দেয়। ওই মহিলার উপরও আল্লাহ তা’আলা রহম বর্ষন করুন, যে রাত্রের কিছু অংশ জেগে তাহাজ্জ্বুদের সালাত আদায় করে। অতঃপর তার স্বামীকেও জাগিয়ে দেয়, সেও তাহাজ্জ্বুদের সালাত আদায় করে। সে যদি জাগ্রত হতে না চায় তবে তার মুখে পানির ছিটা দেয়া।
[হাসান সহীহ। ইবন মাজাহ ১৩৩৬]

باب التَّرْغِيبِ فِي قِيَامِ اللَّيْلِ
أَخْبَرَنَا يَعْقُوبُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، قَالَ حَدَّثَنَا يَحْيَى، عَنِ ابْنِ عَجْلاَنَ، قَالَ حَدَّثَنِي الْقَعْقَاعُ، عَنْ أَبِي صَالِحٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ "‏ رَحِمَ اللَّهُ رَجُلاً قَامَ مِنَ اللَّيْلِ فَصَلَّى ثُمَّ أَيْقَظَ امْرَأَتَهُ فَصَلَّتْ فَإِنْ أَبَتْ نَضَحَ فِي وَجْهِهَا الْمَاءَ وَرَحِمَ اللَّهُ امْرَأَةً قَامَتْ مِنَ اللَّيْلِ فَصَلَّتْ ثُمَّ أَيْقَظَتْ زَوْجَهَا فَصَلَّى فَإِنْ أَبَى نَضَحَتْ فِي وَجْهِهِ الْمَاءَ ‏"‏ ‏.‏

তাহাজ্জুদ বিষয়ক হাদিস   ১৯ 

তাহজ্জুদের প্রতি উদ্বুদ্ধ করা
সুনান আন-নাসায়ী (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)

১৬১৫। উবায়াদুল্লাহ ইবনু সা’দ (রহঃ) ... আলী ইবনু হুসায়ন এর দাদা আলী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক রাত্রে আমার এবং ফাতিমা (রাঃ) এর কাছে এসে আমাদের তাহাজ্জুদের সালাত আদায় করার জন্য জাগিয়ে দিলেন। অতঃপর নিজের ঘরে গিয়ে দীর্ঘ রাত্র তাহাজ্জুদের সালাত আদায় করেন এবং আমাদের কোন সাড়া শব্দ না পেয়ে পুনরায় এসে আমাদের জাগিয়ে দিয়ে গেলেন। তিনি বললেন তোমরা উভয়ে জাগ্রত হয়ে যাও এবং (তাহাজ্জুদের) সালাত আদায় কর। আলী (রাঃ) বলেন, আমি উভয়ে চক্ষু রগড়াতে রগড়াতে বসে পড়ে বললাম, আল্লাহর শপথ! আমরা তো আল্লাহ তা’আলা যা আমাদের উপর ফরয করেছেন তাছাড়া অন্য কোন সালাত আদায় করি না। আমাদের প্রাণ তো আল্লাহ তা’আলার হাতে, যখন তিনি তা আমাদের কাছে পাঠিয়ে দিতে চান পাঠিয়ে দেন। আলী (রাঃ) বলেন, তিনি উরুতে হাত মেরে মেরে এই বলতে বলতে চলে গেলেন যে, "আল্লাহ তা’আলা আমাদের উপর যা ফরয করেছেন, তাছাড়া অন্য কোন সালাত আদায় করি না" আর "মানুষ অত্যধিক তর্ক প্রবণ"।

[সহীহ। আদাবুল মুফরাদ ৭৪৯, তা'লীক আলা ইবন খুযাইমাহ ১১৩৯-১১৪০]
باب التَّرْغِيبِ فِي قِيَامِ اللَّيْلِ
أَخْبَرَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ سَعْدِ بْنِ إِبْرَاهِيمَ بْنِ سَعْدٍ، قَالَ حَدَّثَنَا عَمِّي، قَالَ حَدَّثَنَا أَبِي، عَنِ ابْنِ إِسْحَاقَ، قَالَ حَدَّثَنِي حَكِيمُ بْنُ حَكِيمِ بْنِ عَبَّادِ بْنِ حُنَيْفٍ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ مُسْلِمِ بْنِ شِهَابٍ، عَنْ عَلِيِّ بْنِ حُسَيْنٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ جَدِّهِ، عَلِيِّ بْنِ أَبِي طَالِبٍ قَالَ دَخَلَ عَلَىَّ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَعَلَى فَاطِمَةَ مِنَ اللَّيْلِ فَأَيْقَظَنَا لِلصَّلاَةِ ثُمَّ رَجَعَ إِلَى بَيْتِهِ فَصَلَّى هَوِيًّا مِنَ اللَّيْلِ فَلَمْ يَسْمَعْ لَنَا حِسًّا فَرَجَعَ إِلَيْنَا فَأَيْقَظَنَا فَقَالَ ‏"‏ قُومَا فَصَلِّيَا ‏"‏ ‏.‏ قَالَ فَجَلَسْتُ وَأَنَا أَعْرُكُ عَيْنِي وَأَقُولُ إِنَّا وَاللَّهِ مَا نُصَلِّي إِلاَّ مَا كَتَبَ اللَّهُ لَنَا إِنَّمَا أَنْفُسُنَا بِيَدِ اللَّهِ ‏.‏ فَإِنْ شَاءَ أَنْ يَبْعَثَنَا بَعَثَنَا - قَالَ - فَوَلَّى رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَهُوَ يَقُولُ وَيَضْرِبُ بِيَدِهِ عَلَى فَخِذِهِ ‏"‏ مَا نُصَلِّي إِلاَّ مَا كَتَبَ اللَّهُ لَنَا ‏(‏ وَكَانَ الإِنْسَانُ أَكْثَرَ شَىْءٍ جَدَلاً ‏)‏ ‏"‏ ‏.‏


তাহাজ্জুদ বিষয়ক হাদিস   ২০ 

রাত্রের সালাতের ফযীলত

সুনান আন-নাসায়ী (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)

১৬১৬। কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, রমযান মাসের পর সর্বোত্তম সাওম হল মুহাররাম মাসের সাওম (আশূরা (আশুরা/আসুরা/আসূরা)-র সাওম) এবং ফরয সালাতের পর সর্বোত্তম সালাত হল রাত্রের সালাত।
[সহীহ। ইবন মাজাহ ১৭৪২]

باب فَضْلِ صَلاَةِ اللَّيْلِ
أَخْبَرَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ، قَالَ حَدَّثَنَا أَبُو عَوَانَةَ، عَنْ أَبِي بِشْرٍ، عَنْ حُمَيْدِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، - هُوَ ابْنُ عَوْفٍ - عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ "‏ أَفْضَلُ الصِّيَامِ بَعْدَ شَهْرِ رَمَضَانَ شَهْرُ اللَّهِ الْمُحَرَّمُ وَأَفْضَلُ الصَّلاَةِ بَعْدَ الْفَرِيضَةِ صَلاَةُ اللَّيْلِ ‏"‏ ‏.‏


তাহাজ্জুদ বিষয়ক হাদিস   ২১ 

রাত্রের সালাতের ফযীলত

সুনান আন-নাসায়ী (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)

১৬১৭। সুওয়াইদ ইবনু নাসর (রহঃ) ... আবূ বিশর জাফর ইবনু আবূ ওয়াহশিয়্যাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি হুমায়দ ইবনু আব্দুর রহমান (রাঃ) কে বলতে শুনেছেন যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন ফরয সালাতের পর সর্বোত্তম সালাত হল তাহাজ্জুদের সালাত। আর রমযানের সাওমের পর সর্বোত্তম সাওম হল মুহাররম মাসের সাওম (আশূরার সাওম)।

শুবা ইবনু হাজ্জাজ (রহঃ) উক্ত হাদিসকে সাহাবীর নাম উল্লেখ না করে বর্ণনা করেছেন।
[পূর্বের হাদিসের সহায়তায় সহীহ]

باب فَضْلِ صَلاَةِ اللَّيْلِ
أَخْبَرَنَا سُوَيْدُ بْنُ نَصْرٍ، قَالَ أَنْبَأَنَا عَبْدُ اللَّهِ، قَالَ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ أَبِي بِشْرٍ، جَعْفَرِ بْنِ أَبِي وَحْشِيَّةَ أَنَّهُ سَمِعَ حُمَيْدَ بْنَ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، يَقُولُ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ "‏ أَفْضَلُ الصَّلاَةِ بَعْدَ الْفَرِيضَةِ قِيَامُ اللَّيْلِ وَأَفْضَلُ الصِّيَامِ بَعْدَ رَمَضَانَ الْمُحَرَّمُ ‏"‏ ‏.‏ أَرْسَلَهُ شُعْبَةُ بْنُ الْحَجَّاجِ ‏.‏


তাহাজ্জুদ বিষয়ক হাদিস   ২২ 

তাহজ্জুদের প্রতি উদ্বুদ্ধ করা

সুনান আন-নাসায়ী (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)

১৬১০। মুহাম্মদ ইবনু আবরাহ (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যখন তোমাদের কেউ নিদ্রা যায় শয়তান তার মাথায় তিনটা গিট লাগিয়ে দেয়। প্রত্যেক গিট লাগানোর সময় সে বলে, “এখনো অনেক রাত্র বাকী আছে” অর্থাৎ তুমি শুয়ে থাক। যদি সে জেগে উঠে আল্লাহর যিকর করে তাহলে একটি গিঁট খুলে যায়। তারপর যদি উযু করে তাহলে আরো একটি গিট খুলে যায়, যদি সালাত আদায় করে তাহলে সমুদয় গিট খুলে যায় এবং তার সকাল হয় আনন্দ ও উদ্দীপনায়। অন্যথায় তার সকাল হয় অবসাদ ও বিষাদময়।
[সহীহ। ইবন মাজাহ ১৩২৯, বুখারী ১১৪২, মুসলিম (ইসলামিক সেন্টার) হাঃ ১৬৯৬]

باب التَّرْغِيبِ فِي قِيَامِ اللَّيْلِ
أَخْبَرَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ يَزِيدَ، قَالَ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ أَبِي الزِّنَادِ، عَنِ الأَعْرَجِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ "‏ إِذَا نَامَ أَحَدُكُمْ عَقَدَ الشَّيْطَانُ عَلَى رَأْسِهِ ثَلاَثَ عُقَدٍ يَضْرِبُ عَلَى كُلِّ عُقْدَةٍ لَيْلاً طَوِيلاً أَىِ ارْقُدْ فَإِنِ اسْتَيْقَظَ فَذَكَرَ اللَّهَ انْحَلَّتْ عُقْدَةٌ فَإِنْ تَوَضَّأَ انْحَلَّتْ عُقْدَةٌ أُخْرَى فَإِنْ صَلَّى انْحَلَّتِ الْعُقَدُ كُلُّهَا فَيُصْبِحُ طَيِّبَ النَّفْسِ نَشِيطًا وَإِلاَّ أَصْبَحَ خَبِيثَ النَّفْسِ كَسْلاَنَ ‏"‏ ‏.‏


তাহাজ্জুদ বিষয়ক হাদিস   ২৩ 

তাহজ্জুদ সালাত আদায় করতে উঠে দু‘আ

সুনান ইবনু মাজাহ

৩/১৩৫৭। আবূ সালাম ইবনু আবদুর রহমান (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি আয়িশাহ (রাঃ) কে জিজ্ঞেস করলাম, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রাতে জাগ্রত হয়ে তাঁর (তাহাজ্জুদ) সালাতের শুরুতে কী বলতেন? আয়িশাহ(রাঃ) বলেন, তিনি বলতেনঃ হে আল্লাহ জিবরাঈল, মীকাঈল ও ইসরাফীল (আলাইহিমুস সালাম)-এর প্রভু, আসমান ও যমীনের সৃষ্টিকর্তা, অদৃশ্য ও দৃশ্যের পরিজ্ঞাতা! আপনার বান্দারা যে বিষয় নিয়ে মতভেদ করে, আপনি তার মীমাংসাকারী। যে বিষয়ে মতভেদ করা হয়ে থাকে, আপনি মেহেরবাণী করে সে বিষয়ে আমাকে সঠিক পথ প্রদর্শন করুন। আপনই সরল সঠিক পথে হিদায়াত দান করেন। আবদুর রহমান বিন উমার (রহঃ) বলেন, তোমরা জিবরাঈল শব্দটি হামযা অক্ষরযোগে পাঠ করো। কেননা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে এরূপই বর্ণিত আছে।
তাখরীজ কুতুবুত সিত্তাহ: মুসলিম ৭৭০, তিরমিযী ৩৪৩০, নাসায়ী ১৬২৫, আবূ দাঊদ ৭৬৭, আহমাদ ২৪৬৯৯।

তাহক্বীক্ব আলবানী: হাসান।

بَاب مَا جَاءَ فِي الدُّعَاءِ إِذَا قَامَ الرَّجُلُ مِنْ اللَّيْلِ
حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ عُمَرَ، حَدَّثَنَا عُمَرُ بْنُ يُونُسَ الْيَمَامِيُّ، حَدَّثَنَا عِكْرِمَةُ بْنُ عَمَّارٍ، حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ أَبِي كَثِيرٍ، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، قَالَ سَأَلْتُ عَائِشَةَ بِمَا كَانَ يَسْتَفْتِحُ النَّبِيُّ ـ صلى الله عليه وسلم ـ صَلاَتَهُ إِذَا قَامَ مِنَ اللَّيْلِ قَالَتْ كَانَ يَقُولُ ‏ "‏ اللَّهُمَّ رَبَّ جِبْرَئِيلَ وَمِيكَائِيلَ وَإِسْرَافِيلَ فَاطِرَ السَّمَوَاتِ وَالأَرْضِ عَالِمَ الْغَيْبِ وَالشَّهَادَةِ أَنْتَ تَحْكُمُ بَيْنَ عِبَادِكَ فِيمَا كَانُوا فِيهِ يَخْتَلِفُونَ اهْدِنِي لِمَا اخْتُلِفَ فِيهِ مِنَ الْحَقِّ بِإِذْنِكَ إِنَّكَ لَتَهْدِي إِلَى صِرَاطٍ مُسْتَقِيمٍ ‏"‏ ‏.‏ قَالَ عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ عُمَرَ احْفَظُوهُ جِبْرَئِيلُ مَهْمُوزَةً فَإِنَّهُ كَذَا عَنِ النَّبِيِّ ـ صلى الله عليه وسلم ـ ‏.‏


তাহাজ্জুদ বিষয়ক হাদিস   ২৪ 

রাসূলুল্লাহ (সা:) এর রাতের সালাত

সহীহ শামায়েলে তিরমিযী

১৯৬. আসওয়াদ ইবনে ইয়াযীদ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি আয়েশা (রাঃ) এর কাছে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর তাহাজ্জুদ সালাত (রাতের সালাত) সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলাম। তিনি বললেন, তিনি রাতের প্রথমাংশে ঘুমাতেন। তারপর সালাতে দাঁড়াতেন এবং সাহরীর পূর্বক্ষণে বিতর আদায় করতেন। এরপর প্রয়োজন মনে করলে বিছানায় আসতেন। তারপর আযানের শব্দ শুনে জেগে উঠতেন এবং অপবিত্র হলে সর্বাগ্রে পানি বইয়ে গোসল করে নিতেন নতুবা ওযু করতেন। তারপর সালাত আদায় করতেন।[১]

[১] সুনানে নাসাঈ, হা/১৬৮০; মুসনাদে আহমাদ, হা/২৫৪৭৪; সহীহ ইবনে হিব্বান, হা/২৫৯৩।
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এশার নামাযের পর রাতের প্রথমভাগে ঘুমাতেন। এরপর ঘুম থেকে উঠে তাহাজ্জুদ ও বিতর আদায় করতেন। এটাই তাহাজ্জুদ এবং বিতরের উত্তম সময়। এরপর আগ্রহ হলে স্ত্রী গমন করতেন।

حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ ، قَالَ : حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ ، قَالَ : حَدَّثَنَا شُعْبَةُ ، عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ ، عَنِ الأَسْوَدِ بْنِ يَزِيدَ ، قَالَ : سَأَلْتُ عَائِشَةَ ، عَنْ صَلاةِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِاللَّيْلِ ؟ فَقَالَتْ : " كَانَ يَنَامُ أَوَّلَ اللَّيْلِ ثُمَّ يَقُومُ ، فَإِذَا كَانَ مِنَ السَّحَرِ أَوْتَرَ ، ثُمَّ أَتَى فِرَاشَهُ ، فَإِذَا كَانَ لَهُ حَاجَةٌ أَلَمَّ بِأَهْلِهِ ، فَإِذَا سَمِعَ الأَذَانَ وَثَبَ ، فَإِنْ كَانَ جُنُبًا أَفَاضَ عَلَيْهِ مِنَ الْمَاءِ ، وَإِلا تَوَضَّأَ وَخَرَجَ إِلَى الصَّلاةِ " .


****************************************
>>> Welcome, You are now on Mohammadia Foundation's Website. Please stay & Tune with us>>>


এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

মোহাম্মদীয়া ফাউন্ডেশনের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url