আল্লাহর উপর ভরসা (পর্ব-০৯) || আবেগ নিয়ন্ত্রণ করুন || দুশ্চিন্তা পরিহার করুন || নবীর সঙ্গী-সাথীদের সৌভাগ্য ||







সুখ-শিল্পের মূলকথা 

আমাদের চিন্তাসমূহকে যথেচ্ছা ঘুরে বেড়াতে, বিপথে যেতে, মুক্ত হতে ও বন্য-হন্যে হতে না দিয়ে ওগুলোকে লাগাম পড়ানো ও নিয়ন্ত্রণে রাখা। কারণ, যদি আপনি আপনার চিন্তাগুলোকে যথেচ্ছা ঘুরে বেড়াতে ছেড়ে দেন তবে ওগুলো বন্য হয়ে গিয়ে আপনাকেই নিয়ন্ত্রণ করবে। ওগুলো আপনার অতীত দুঃখ-দুর্বিপাকের সুবিন্যস্ত তালিকা খুলে বসবে। আপনার মা আপনাকে যেদিন জন্ম দিয়েছিলেন সেদিন থেকে শুরু করে আপনার দুঃখ দুর্দশার ইতিহাস এগুলো আপনাকে স্মরণ করিয়ে দিবে।

যদি আপনার চিন্তা-ভাবনাসমূহকে পায়চারী করার বা উদ্দেশ্যহীনভাবে ঘুরে বেড়ানার জন্য ছেড়ে দেয়া হয় তবে এগুলো আপনার সামনে আপনার অতীত দুঃখ-কষ্টের চিত্র ও একটি ভয়ংকর ভবিষ্যতের চিত্র তুলে ধরবে। এসব চিন্তা-ভাবনা স্বয়ং আপনাকেই বিচলিত-শিহরিত করে তুলবে। আপনার অনুভূতিকে দাউ দাউ করে জ্বলে উঠতে বাধ্য করবে। অতএব, যে ধরনের গুরুত্বপূর্ণ চিন্তায় ফলপ্রদ ও উপকারী কাজ হয়, সে ধরনের কেন্দ্রীভূত চিন্তা-চর্চার দিকে অভিমুখী করে ওগুলোকে (আপনার চিন্তাসমূহকে) লাগাম পড়ান ও নিয়ন্ত্রণে রাখুন।

“এবং সে চিরঞ্জীবের উপর নির্ভর করুন, যিনি কখনো মৃত্যুবরণ করবেন না।” (২৫-সূরা আল ফুরকান: আয়াত-৫৮)

সুখ-শাস্ত্রের একটি মূলনীতি হলো পার্থিব জীবনকে এর সত্যিকার গুণ ও মূল্যানুযায়ী মূল্যায়ন করা। এ জীবন তুচ্ছ এবং এটা আপনার নিকট শুধু এতটুকু দাবি রাখে যে, আপনি এর থেকে পালিয়ে যান। এ জীবন দুর্বিপাক, দুর্দশা, দুর্ঘটনা, ব্যথা-বেদনা ও আঘাতে ভরা, এই যদি হয় এ জীবনের বিবরণ তাহলে মানুষ কিভাবে এর নগণ্য দুর্ঘটনা-দুর্বিপাকে অযৌক্তিকভাবে বিচলিত হয় এবং কী করে তার ঘটে যাওয়া এমন সব পার্থিব বিষয়ের উপর দুঃখ করতে পারে? জীবনের সর্বোত্তম মুহুর্তগুলো কলঙ্কিত, এর ভবিষ্যৎ অঙ্গীকারসমূহ শুধু মরীচিকা, এর সফল ব্যক্তিদেরকে হিংসা করা হয়, ধন্যরা সদা হুমকিপ্রাপ্ত, আর প্রেমিকরা কোনও অপ্রত্যাশিত দুর্ঘটনায় ধরাশায়ী হয়।

হাদীসে আছে “নিশ্চয়, জ্ঞান-চর্চার মাধ্যমেই কেবল জ্ঞান অর্জিত হয় এবং ধৈর্য-চর্চার মাধ্যমেই সহনশীলতা অর্জিত হয়।”

আলোচ্য বিষয়ের এ হাদীসের অর্থের উপর কেউ যদি আমল করতে চায় বা এর অর্থকে বাস্তবায়িত করার উদ্যোগ নেয় তবে তিনি আরেকটু অগ্রসর হয়ে বলতে পারেন যে, (সুখে থাকার) অনুমান করেই সুখ লাভ করা যায়। সদা হাসি-খুশি থেকে, যা আপনাকে সুখী করে তার সন্ধান করে এবং যতই অদ্ভুত মনে হোক না কেন, নিজের ভিতরে জোর করে সুখ-বোধ সঞ্চারিত করে সুখ অর্জন করা যায়। সুখ দ্বিতীয় প্রকৃতি বা স্বভাব না হওয়া পর্যন্ত সবাইকে এ কাজগুলো করে যেতে হবে। আসল ব্যাপার হলো দুঃখ-বেদনার সকল স্মৃতি আপনার থেকে আপনি দূর করে ফেলতে পারবেন না। এর কারণ হলো জীবনকে পরীক্ষার জন্য সৃষ্টি করা হয়েছে।

لَقَدْ خَلَقْنَا الْإِنسَانَ فِي كَبَدٍ

“অবশ্যই, আমি মানুষকে কষ্ট-ক্লেশের মধ্যে (জীবন-যাপনকারী হিসেবে) সৃষ্টি করেছি।” (৯০-সূরা আল বালাদ: আয়াত-৪)

“যাতে তিনি পরীক্ষা করতে পারেন তোমাদের মধ্যে কে আমলে উত্তম।” (১১-সূরা হূদ: আয়াত-৭)

কিন্তু আমি আপনাদের নিকট যে সংবাদ পৌছে দিতে চাই, তা হলো আপনার উচিত আপনার দুঃখের পরিমাণ ও প্রাবল্য যথাসম্ভব কমিয়ে ফেলা। সম্পূর্ণরূপে দুঃখমুক্ত হওয়া তো পরকালে জান্নাতবাসীদের জন্য (নির্ধারিত)। এ কারণে জান্নাতবাসীরা বলবে-

“সকল প্রশংসা আল্লাহর জন্য, যিনি আমাদের থেকে সকল দুশ্চিন্তা দূর করে দিয়েছেন।” (৩৫-সূরা ফাতির: আয়াত-৩৪)

সুতরাং, যখন কেউ এ দুনিয়ার প্রকৃতি ও গুণাগুণ জানতে পারে, তখন সে বুঝতে পারে, এ দুনিয়া নিরস, প্রবঞ্চণাময় ও মূল্যহীন এবং সে পুরোপুরি বুঝতে পারে, ওটাই হলো দুনিয়ার প্রকৃতি ও পরিচয়।

আরবের একজন কবি বলেন-

“তুমি তো আমাদের অঙ্গীকার পূর্ণ না করার শপথ করেছ।”

আমি যেমনটি বর্ণনা করেছি দুনিয়ার পরিচয় যদি তেমনই হয়, তবে বুদ্ধিমান লোকদের উচিত নয় এর আক্রমণে সাহায্য করা এবং হতাশা ও দুশ্চিন্তার কাছে আত্মসমর্পণ করা। আমাদের যা করা উচিত তা হলো, আমাদের জীবনকে ধ্বংস করে দিতে পারে এমন সব আবেগ থেকে আমাদেরকে রক্ষা করা। (এভাবে আত্মরক্ষা করে) আমাদের সর্বশক্তি দ্বারা অবশ্যই আমাদেরকে এ যুদ্ধ চালিয়ে যেতে হবে।

“এবং তোমরা তাদের বিরুদ্ধে যথাসাধ্য শক্তি ও অশ্ববাহিনী প্রস্তুত রাখ। এ দিয়ে তোমরা আল্লাহর শক্রকে ও তোমাদের শক্রকে ভীত করবে।” (৮-সূরা আনফাল: আয়াত-৬০)

“আল্লাহর পথে তাদের যা ঘটেছিল, তাতে তারা নিরুৎসাহিত হয়নি, দুর্বল এবং নতও হয়নি।” (৩-সূরা আলে ইমরান: আয়াত-১৪৬)

সুখ-কলা : একটু ভাবুন 

দুঃখ করবেন না। আপনি যদি গরীব হয়ে থাকেন, তবে কেউ না কেউ ঋণে জর্জরিত হয়ে আছে (তার কথা ভেবে দেখুন)। আপনার যদি যাতায়াত ভাড়া না থাকে তবে অন্য কারো তো পা-ই নেই। রোগ-যন্ত্রণার অভিযোগ করার যুক্তি বা কারণ যদি আপনার থেকেও থাকে তবে অন্য কেউ তো বছরের পর বছর রোগ-শয্যায় পড়ে আছে। আপনি যদি একটি সন্তান হারিয়ে থাকেন তবে অন্য কেউ তো সামান্য গাড়ি দুর্ঘটনায় কয়েক সন্তান হারিয়েছে।

দুশ্চিন্তা করবেন না। আপনি তো এমন একজন মুসলমান, যিনি আল্লাহতে, তার নবী-রাসূলগণে, তার ফেরেশতাকুলে, আখেরাতে এবং তকদীরের ভালো-মন্দে বিশ্বাস করেন।

যখন নাকি আপনি সর্বোত্তম দৌলত ঈমানের বদৌলতে ধন্য, তখন অন্যরা আল্লাহতে অবিশ্বাস, নবী-রাসূলগণকে অস্বীকার, কিতাব সম্বন্ধে নিজেদের মাঝে মতভেদ ও আখেরাতকে অস্বীকার করেছে এবং ঐশী পূর্বনির্ধারণী বা এলাহী তকদীরকে ভুল বুঝেছে।

দুশ্চিন্তগ্রস্ত হবেন না, যদি হন, তবে আপনি আপনার মন-মানসিকতার ক্ষতি করবেন এবং আপনার ঘুম বিনষ্ট করবেন।

একজন আরব কবি বলেছেন-

ولرُبٌّ نازلةٍ يضيق بها الفتى * ذرعاً وعند الله منها المخرجُ
ضاقت فلما استحكمت حلقاتها * فُرجت وكان يظنها لا تُفرجُ

“যুবকরা কতইনা মসিবতে পড়ে নাজেহাল হয়, অথচ আল্লাহর নিকট এর পরিত্রাণের উপায় আছে।”

“অবস্থা অসহ্যকর হয়ে যায় তারপর যখন রশি শক্তভাবে কষে তখন রশি ছিড়ে যায়, অথচ তারা ভাবতো যে রশি ছিড়বে না।”

আবেগ নিয়ন্ত্রণ করুন 

মনের আগুন জ্বলে উঠে দু'কারণে- হয়তো আনন্দে নয়তো অন্তর্যাতনায়। নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক হাদীসে বলেন-

“অবশ্য আমাকে দুটি (তার একটি) বোকামীপ্রসূত (হায়! শব্দ) ও (অপরটি) পাপব্যঞ্জক (হুররে!) শব্দ উচ্চারণ করতে নিষেধ করা হয়েছে। তার একটি (পাপব্যঞ্জক-হুররে) শব্দ বলা হয় নেয়ামত পেলে আর অপরটি (বোকামীপ্রসূত হয়! শব্দ) উচ্চারণ করা বিপদের সময়।”

মহান আল্লাহ বলেন,

لِّكَيْلَا تَأْسَوْا عَلَىٰ مَا فَاتَكُمْ وَلَا تَفْرَحُوا بِمَا آتَاكُمْ

“যা আপনি পাননি, তার জন্য দুঃখ করবেন না। আর যা আপনাকে দেয়া হয়েছে তার জন্য ফুর্তি করবেন না।” (সূরা-৫৭ আল হাদীদ: আয়াত-২৩)

এ কারণেই নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন “অবশ্যই প্রথম আঘাতের সময়ই ধৈর্যের পরিচয় পাওয়া যায়।”

সুতরাং, আনন্দময় ও বিপদমুক্ত উভয় ঘটনার সময়ই যে লোক তার আবেগকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে তারই শান্তি, প্রশান্তি, সুখ, আরাম ও নিজের উপর বিজয়ের স্বাদ অর্জন করার কথা। আল্লাহ তায়ালা মানুষের পরিচয় দিয়েছেন যে, তারা বিজয়োল্লাসিত, দাম্ভিক, খিটখিটে, ক্ষতিগ্রস্ত হলে বা তাদের খারাপ কিছু হলে অসন্তুষ্ট এবং তাদের কোন কল্যাণ হলে তারা কৃপণোচিত হয়। মহান আল্লাহ আমাদেরকে জানিয়েছেন, ব্যতিক্রম হলো সময়েই মধ্যপন্থী। তারা সচ্ছলতার সময় কৃতজ্ঞ এবং অসচ্ছলতার সময় ধৈর্যশীল।

লাগামহীন আবেগ মর্মবেদনা ও অনিদ্রা সৃষ্টি করে মানুষকে শেষ করে দিতে পারে। কেউ যখন ক্রুব্ধ হয় তখন সে রাগে আগুন হয়ে যায়, আত্মনিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে এবং ধৈর্যহারা ও ভারসাম্যহীন হয়ে পড়ে। অপরপক্ষে,

যদি সে সুখী হয়, তবে সে পরোল্লসিত ও বন্য হয়ে যায়। আনন্দের ঘোরে সে আত্মভোলা হয়ে শালীনতার সীমা লঙ্ঘন করে। সে যখন অন্যদের সঙ্গ ত্যাগ করে তখন সে তাদেরকে অবজ্ঞা করে, তাদের গুণাবলিকে ভুলে গিয়ে তাদের সৎগুণাবলিকে পদদলিত করে। অপরপক্ষে, সে অন্যদেরকে যখন ভালোবাসে তখন সে তাদেরকে পরম নিষ্কলঙ্ক কল্পনা করে। তাদেরকে সর্বপ্রকার সম্মান করতে কোনরূপ ক্রটি করে না।

নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন-

“যাকে তুমি ভালোবাস তাকে তুমি সংযত পরিমাণে ভালোবাস। কারণ, এমন দিন আসতে পারে যখন তুমি তাকে ঘৃণা করবে। আর যাকে তুমি ঘৃণা কর তাকে সংযত পরিমাণে ঘৃণা কর। কেননা, এমন দিন আসতে পারে তখন তুমি তাকে ভালোবাসবে।”

অন্য হাদীসে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন-

“(হে আল্লাহ!) আমি আপনার নিকট ক্রুদ্ধ ও সন্তুষ্ট উভয়ই অবস্থায়ই মধ্যপন্থা কামনা করি।”

কেউ যখন তার আবেগের মুখে লাগাম পরিয়ে দেয়, তখন সে তার মনকে দমন করতে পারে এবং যখন সে প্রতিটি বিষয়কে এর গুরুত্বানুসারে মেনে নেয় তখন সে প্রজ্ঞা ও সঠিক বুঝের দিকে এক ধাপ এগিয়ে গেল।

মহান আল্লাহ বলেন-

“অবশ্যই আমি আমার নবী-রাসূলগণকে সুস্পষ্ট প্রমাণসহ প্রেরণ করেছি এবং তাদের সাথে কিতাব ও মীজান (ন্যায়নীতি) অবতীর্ণ করেছি যাতে মানুষেরা ন্যায়নীতি প্রতিষ্ঠা করতে পারে।” (সূরা-৫৭ আল হাদীদ: আয়াত-২৫)

বাস্তবিক, ইসলাম নীতি ও আচার-আচরণে এতটাই ভারসাম্যতা এনেছে, যতটা সে এনেছে জীবনের সরল, পবিত্র ও সত্য পথে।

আল্লাহ তায়ালা বলেন-

وَكَذَٰلِكَ جَعَلْنَاكُمْ أُمَّةً وَسَطًا

“এভাবে আমি তোমাদেরকে মধ্যপন্থী জাতি বানিয়েছি। (সূরা-২ বাকারা: আয়াত-১৪৩)

আমাদের আচার-আচরণ ও বিচার-আচার উভয় ক্ষেত্রেই ন্যায়পরায়ণ হওয়া কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য। প্রকৃতপক্ষে, ইসলাম সকল বিষয়ে সত্য ও ন্যায়নীতির উপর প্রতিষ্ঠিত। এ ন্যায়নীতি বিচারকার্যে, কথা-বার্তায়, কাজ-কর্মে ও আচার-আচরণে, যা আমরা অবতীর্ণ কিতাব (কুরআন) থেকে শিখতে পারি।

মহান আল্লাহ বলেন-

وَتَمَّتْ كَلِمَتُ رَبِّكَ صِدْقًا وَعَدْلًا

“এবং তোমার প্রতিপালকের কথা সত্য ও ন্যায়নীতিতে ভরপুর।” (সূরা-৬ আল আন’আম: আয়াত-১১৫)

নবীর সঙ্গী-সাথীদের সৌভাগ্য

আমাদের নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সকল মানুষের নিকট জান্নাতী পয়গাম নিয়ে আগমন করেছেন। তিনি পার্থিব আকাঙ্ক্ষা দ্বারা পরিচালিত হতেন না। ব্যয় করার জন্য তার কোন ধন-ভাণ্ডার ছিল না। খাবার জন্য চমৎকার কোন (খেজুর) বাগান ছিল না; আর বসবাস করার জন্য কোন সুন্দর প্রাসাদ ও ছিল না। এতসব সত্ত্বেও তার প্রিয় অনুসারীরা তার প্রতি আনুগত্যের অঙ্গীকার দিয়েছেন, অবিচল থেকেছেন। সমস্যা-সঙ্কুল এক কঠিন জীবন সহ্য করেছেন। তারা ছিলেন গুটি কয়েকজন ও দুর্বল, তাদের প্রতিবেশীদের দ্বারা সমূলে বিনাশ হয়ে যাবার ভয়ে ভীত, তবুও তারা নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে পুরোপুরি ভালোবাসতেন।

তাদেরকে গিরিপথে বন্দি করা হয়েছিল। আর সে সময়ে তাদের নিকট অল্প খাদ্য ছিল বা কোন খাদ্য ছিল না। তাদের সুখ্যাতি আক্রান্ত হয়েছিল; তাদের নিজেদের আত্মীয়রাই তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালিয়েছিল, তবুও নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর প্রতি তাদের ভালোবাসা ছিল নিষ্কলুষ।

তাদের কাউকে মরুভূমির তপ্ত বালুর উপর ফেলে হেঁচড়ানো হয়েছিল, কিছু লোককে বন্দী করা হয়েছিল আর অন্যরা নতুন নতুন ও অদ্ভুত অদ্ভুত শাস্তির শিকারে পরিণত হয়েছিলেন। এসব শাস্তিই তাদেরকে কাফেররা দিয়েছিল। তারা ঐসব শাস্তি সহ্য করতে বাধ্য হয়েও তাকে সর্বান্তঃকরণে মন খুলে ভালোবেসেছিলেন। তারা ঘর-বাড়ি, স্বদেশ, পরিবার ও সম্পদ থেকে বঞ্চিত হয়েছিলেন। তারা তাদের বাল্যকালের খেলার মাঠ ও বসত বাড়ি থেকে বিতাড়িত হয়েছিলেন। এসব ভোগান্তি সত্ত্বেও তাকে দ্ব্যর্থহীনভাবে ভালোবেসেছেন তারা।

তার (নবুয়তের) সংবাদের কারণেই ঈমানদারগণ অগ্নিপরীক্ষার শিকার হয়েছিলেন। তাদের পদতলের ভূমি প্রচণ্ডভাবে কেঁপে উঠেছিল। তবুও তার প্রতি তাদের ভালোবাসা অনবরত বাড়ছিলই।

তাদের যৌবনের বসন্ত ঋতুর শিরোপরি সদা বিপজ্জনকভাবে তরবারি ঝুলন্ত ছিল। তারা শুধুমাত্র তাকে নিঃশর্তভাবে ভালোবাসত বলেই এমন মৃদুভাবে যুদ্ধক্ষেত্রে (যুদ্ধের ময়দানে) মৃত্যুর দিকে এগিয়ে গেছেন, যেন তারা প্রমোদ ভ্রমণে বা অবসর যাপনে ছিলেন।

একজন সাহাবীকে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নবুওয়াতের সংবাদ বিদেশে এক রাজার নিকট নিয়ে যাওয়ার দায়িত্ব দেয়া হলো। অথচ তিনি জানতেন যে, এটা এমন এক কাজ যা থেকে তিনি ফিরে আসবেন না। আরেকজন সাহাবীকে এক কাজে পাঠানো হলো। তিনি জানতেন যে, এটা তার মৃত্যুর কারণ হবে, তবুও তিনি সন্তুষ্টচিত্তে সে কাজে গেলেন। কারণ, তিনি নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে নিরঙ্কুশ ভালোবাসতেন। কিন্তু কেন তারা তাকে ভালবাসতেন এবং কেন তারা তার নবুওয়তে এত সন্তুষ্ট ও তার আদর্শে এত পরিতুষ্ট ছিলেন? কেন তারা তাকে অনুসরণ করাতে যে দুঃখ-কষ্ট ও ভোগান্তি হয়েছে তা ভুলে গিয়েছেন? এক কথায় বা সহজভাবে এর কারণ বলতে হয় যে, তিনি বদান্যতার ও ধার্মিকতার সর্বোচ্চ শিখর অধিকার করেছিলেন। তারা তার মাঝে সত্য ও বিশুদ্ধতার সব লক্ষণ দেখতে পেয়েছিলেন। যারা মহত্তর জিনিসের সন্ধান মানুষের মনের হিংসা-বিদ্বেষ, ঘৃণা ও তিক্ততা শীতল করে দিয়েছিলেন। সত্য বাণী দিয়ে তিনি তাদের অন্তরকে শান্ত করে দিয়েছিলেন ও তার রিসালাত দ্বারা তিনি তাদের অন্তরসমূহকে শান্তিতে ভরে নিয়েছিলেন।

তিনি তাদের অন্তরে এত শান্তি ঢেলে দিয়েছিলেন যে, তারা তার পাশে থাকার কারণে যে যাতনা ভোগ করেছিলেন, তা তারা তুচ্ছ মনে করেছিলেন। তিনি তাদের অন্তরে এমন ঈমান বা বিশ্বাস সঞ্চার করেছিলেন যে, তারা যে আঘাত ও প্রতিকূল অবস্থা সহ্য করতে বাধ্য হয়েছিলেন, তা তারা ভুলে গিয়েছিল। তিনি তাদের ভিতরকে হিদায়াতের আলো দ্বারা ঘষেমেঝে চকচকে করে দিয়েছিলেন ও তাদের চক্ষুসমূহকে তার নূরে নূরান্বিত বা তার আলোতে আলোকিত করে দিয়েছিলেন। তিনি তাদের থেকে মূর্খতার বোঝা, মূর্তিপূজার বিকৃত রুচি এবং বহু-ঈশ্বরবাদের কুফল দূর করে দিয়েছিলেন। তিনি তাদের অন্তর থেকে হিংসা-বিদ্বেষের আগুন নিভিয়ে দিয়েছেন এবং তাদের অন্তরে ঈমানের পানি ঢেলে দিয়েছেন। এভাবে তাদের দেহমন প্রশান্ত হয়েছিল ও তাদের আত্মা শান্তি পেয়েছিল।

তারা নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাথে থেকে জীবনের স্বাদ উপলব্ধি করেছেন এবং তারা তার সাহচার্যে পুলক বোধ করেছিলেন বা আনন্দ পেয়েছিলেন।

তারা তার পাশে থেকে সুখ এবং তার অনুসরণে নিরাপত্তা, মুক্তি ও আত্মসমৃদ্ধি পেয়েছিলেন। মহান আল্লাহ বলেন-

“এবং আমি আপনাকে (হে মুহাম্মদ!) সারা বিশ্বের জন্য রহমত বা করুণাস্বরূপ প্রেরণ করেছি।” (২১-সূরা আল আম্বিয়া: আয়াত-১০৭)

“এবং অবশ্যই তুমি (মানবজাতিকে) সরল পথ দেখাচ্ছে।” (৪২-সূরা আশ শুরা: আয়াত-৫২)

“এবং তিনি (গ্রন্থকার তিনি বলতে মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বুঝিয়েছেন; কিন্তু কুরআনের ঐ আয়াত দ্বারা তিনি বলতে স্পষ্টরূপে আল্লাহকেই বুঝা যায়। -অনুবাদক।) স্বেচ্ছায় তাদেরকে অন্ধকার থেকে বের করে আলোর দিকে (নিয়ে যান)।” (৫-সূরা মায়িদা: আয়াত-১৬)

“তিনিই নিরক্ষরদের মাঝ থেকে তাদের মাঝে একজন রাসূল প্রেরণ (কুফুরি ও শিরক থেকে) পবিত্র করেন এবং তাদেরকে কিতাব ও হিকমত শিক্ষা দেন এবং নিশ্চয় তারা পূর্বে স্পষ্ট ভ্রান্তিতে লিপ্ত ছিল। (৬২-সূরা আল জুমুআ: আয়াত-২)

“তাদের উপরে যে বোঝা ও শৃঙ্খল ছিল, তিনি তাদের থেকে তা সরিয়ে দেন।” (৭-সূরা আল আ'রাফ: আয়াত-১৫৭)

“যখন তিনি তোমাদেরকে এমন বিষয়ের দিকে আহবান করেন যা তোমাদের প্রাণ সঞ্চার করে তখন তোমরা আল্লাহ ও রাসূলের আহবান সাড়া দিও।” (৮-সূরা আনফাল: আয়াত-২৪)

তারা তাদের নেতার সাথে থেকে সত্যিই সুখী ছিলেন এবং তারা যথার্থই সুখী হওয়ার যোগ্য ছিলেন।

হে আল্লাহ! বিপথ গমনের শৃঙ্খল হতে আত্মার মুক্তিদাতা ও মিথ্যার অভিশাপ থেকে আত্মার উদ্ধারকারী মুহাম্মাদের উপর করুণা ও শান্তি বর্ষণ করুন এবং তার মহান সাহাবীদের সংগ্রাম ও প্রচেষ্টার প্রতিদানস্বরূপ তাদের উপর সন্তুষ্ট হয়ে যান।

আপনার জীবন থেকে ক্লান্তি ও বিরক্তি দূর করুন 

একই কাজ বারবার করতে হয় এমন নিয়ম মাফিক বা রুটিন অনুসারে যারা জীবনযাপন করেন, তারা প্রায় অলঙ্ঘনীয়ভাবে বিরক্তি ও ক্লান্তির শিকার হয়ে পড়বেন। বিশেষ করে এ কারণে যে, পরিবর্তনের অভাবে স্বভাবতই ক্লান্ত হয়ে পড়ে। এ কারণেই সর্বশক্তিমান মহান আল্লাহ আমাদেরকে বিভিন্ন সাদা-কালো, ঠাণ্ডা-গরম, আলো-ছায়া ও টক-মিষ্টি দান করেছেন। আল্লাহ তার কিতাবে এই বৈচিত্র্যের কথা উল্লেখ করেন-

“তাদের (মৌমাছিদের) পেট থেকে বিভিন্ন রঙের (মধুর) পানীয় বেরোয়।” (১৬-সূরা আন নাহল: আয়াত-৬৯)

“তারা একই মূলে একাধিক বা এক মাথাওয়ালা খেজুর গাছ।” (১৩-সূরা রাআদ: আয়াত-৪)

“আর বিভিন্ন স্বাদের শস্য, যয়তুন ও ডালিম (বর্ণে, আকারে ও স্বাদে) সদৃশ ও বিসদৃশ।” (৬-সূরা আল আন’আম: আয়াত-১৪১)

“আর পাহাড়ের মাঝে আছে সাদা-লাল বিচিত্র বর্ণের পথ।" (৩৫-সূরা ফাতির: আয়াত-২৭)

“আর আমি মানুষের মাঝে এদিনগুলোকে পর্যায়ক্রমে আবর্তন করি।” (৩-সূরা আলে ইমরান: আয়াত-১৪০)

বনী ইসরাঈলদেরকে যে খাদ্য দেয়া হয়েছিল তা সর্বোত্তম খাদ্য হওয়া সত্ত্বেও শুধু একমাত্র খাদ্য হওয়ার কারণেই তাদের তা খেতে ভালো লাগছিল না। (এবং তারা বলেছিল:)

“আমরা একই রকম খাদ্য সহ্য করতে পারব না।” (২-সূরা বাকারা: আয়াত-৬১)

আল-মামুন একবার দাঁড়িয়ে, একবার বসে ও একবার হাটতে হাটতে (আরবী ২২তম সংস্করণের মূল পুস্তক থেকে এ অংশটুকুর অনুবাদ করা হল।-অনুবাদক) এভাবে পালাবদল করে করে পাঠ করতেন এবং বলতেন: ‘আত্মা সদাই ক্লান্তিকর।’

“যারা (সর্বদা এবং সালাতে) দাঁড়িয়ে, বসে ও শুয়ে শুয়ে আল্লাহর জিকির করে...” (৩-সূরা আলে ইমরান: আয়াত-১৯১)

ইসলামে যে সব ইবাদতের বিধান জারি বা প্রণয়ন করা হয়েছে তা নিয়ে আপনার গভীরভাবে ভেবে দেখা উচিত। কলবের আমল, জিহ্বার আমল, ঠোটের আমল ও সৎ কাজে সম্পদ ব্যয় করার আমল বা সম্পদের আমল। সালাত, রোজা, হজ্জ, যাকাত ও জিহাদ কী সাবীলিল্লাহ বা আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ হলো ইবাদতের কয়েকটি উদাহরণ। সালাতে দাঁড়ানো, রুকু, সিজদা ও বসা (ইত্যাদি অবস্থা) আছে। আপনি যদি বিশ্রাম, সজীবতা ও বিরামহীন উপাদানের আশা করেন তবে আপনার কাজের ধরন, পড়ার ধরন ও জীবন-যাপন প্রণালীতে পরিবর্তন আনুন।

উদাহরণস্বরূপ পড়ার ব্যাপারে বলছি- যখন পড়বেন তখন বিষয় পরিবর্তন করে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে পড়াশুনা করুন-যেমন একবার নবী (আঃ) এদের জীবনী, একবার সাহাবীদের জীবনী, একবার হাদীস, একবার ফিকহ, আরেকবার ইতিহাস, ক্ষণিক পরে সাহিত্য, তারপরে সাধারণ জ্ঞানের বই ও এভাবে পালাক্রমে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে পড়ুন। এর সর্বোত্তম উদাহরণ ও ব্যাখ্যা হলো কুরআন মাজিদ। (কারণ, কুরআনে এভাবে এসব বিষয় বর্ণনা করা হয়েছে-বঙ্গানুবাদক) আপনার সময়কে ইবাদত, বৈধ আমোদ-আহ্লাদ, বন্ধুদের দেখতে যাওয়া অতিথি আপ্যায়ন, খেলা-ধুলা বা প্রমোদ ভ্রমণের মাঝে ভাগ করে নিন; তবেই আপনি নিজেকে প্রাণবন্ত, সজীব ও উজ্জ্বল ব্যক্তিরূপে পাবেন; কেননা, আত্মা বিভিন্নতা ও নতুন নতুন জিনিসে আনন্দ পায়।

দুশ্চিন্তা পরিহার করুন 

দুঃখিত হবেন না, কেননা আপনার প্রতিপালক বলেন-

أَلَمْ نَشْرَحْ لَكَ صَدْرَكَ

“(হে মুহাম্মদ!), আমি কি আপনার বক্ষ আপনার কল্যাণে প্রশস্ত করে দেইনি?” (৯৪-সূরা আল ইনশিরাহ: আয়াত-১)

এ আয়াতের সংবাদ যারা হকপন্থী, যারা নূরের পথে চলে এবং যারা হিদায়াতের পথে চলে তাদের সবার জন্য প্রযোজ্য।

“যার অন্তর আল্লাহ ইসলামের জন্য প্রশস্ত করে দিয়েছেন, ফলে সে তার প্রভুর নূরের পথে চলে তবে কি সে ব্যক্তি (কাফেরের মতো)? অতএব, সে সব কঠোর আত্মার লোকেরা অভিশপ্ত-যারা আল্লাহর জিকিরে বিমুখ।” (৩৯-সূরা আয যুমার: আয়াত-২২)

সুতরাং, এমন সত্য বিষয় আছে, যা অন্তরকে প্রশস্ত করে এবং এমন অসত্য বিষয় আছে, যা অন্তরকে কঠোর করে।

“আর আল্লাহ্‌ যাকে হিদায়াত করতে চান, তার অন্তরকে তিনি ইসলামের জন্য প্রশস্ত করে দেন।” (৬-সূরা আল আন’আম: আয়াত-১২৫)

অতএব, এ ধর্ম গ্রহণ করা ও এর উপর প্রতিষ্ঠিত থাকা এক কাজিত ও বাঞ্ছিত বিষয়, যা অনুগ্রহপ্রাপ্ত ও ধন্য লোক ছাড়া অন্য কেউ লাভ করতে পারে না।

“দুশ্চিন্তা, দুর্ভাবনা ও ভয় করো না, নিশ্চয় আল্লাহ আমাদের সাথে আছেন।” (৯-সূরা তাওবা: আয়াত-৪০)

“যে সব (ঈমানদার) লোকদেরকে (কাফের) লোকেরা বলেছিল, অবশ্যই (কাফের) লোকেরা তোমাদের (বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার) জন্য জমায়েত হয়েছে, অতএব, (তোমরা মু’মিনগণ) সেই (কাফের) লোকদেরকে ভয় কর। এতে তাদের ঈমান আরো বৃদ্ধি পেল এবং তারা বলল, আমাদের জন্য আল্লাহই যথেষ্ট এবং তিনি কতইনা উত্তম কর্মবিধায়ক!” (৩-সূরা আলে ইমরান: আয়াত-১৭৩)

আল্লাহর রক্ষণাবেক্ষণ, অভিভাবকত্ব ও করুণাতে যাদের ঈমান বা বিশ্বাস আছে তারা (উপরোক্ত) এই আয়াতের এই কথা (আমাদের জন্য আল্লাহই যথেষ্ট এবং তিনি কতইনা উত্তম কর্মবিধায়ক!) বলে।

আমাদের পক্ষে তার যথেষ্ট হওয়া আমাদেরকে অন্যদের উপর নির্ভর করা থেকে মুক্তি দেয় এবং তার অভিভাবকত্ব আমাদেরকে রক্ষা করে।

"হে নবী (মুহাম্মদ), আপনার জন্য এবং যেসব মু’মিন আপনাকে অনুসরণ-অনুকরণ করে ও আপনাদের আনুগত্য করে তাদের জন্য আল্লাহই যথেষ্ট।” (৮-সূরা আনফাল : আয়াত-৬৪)

“এবং সেই চিরঞ্জীবের উপর নির্ভর (তাওাক্কুল) কর, যিনি মৃত্যুবরণ করবেন না।” (২৫-সূরা আল ফুরকান: আয়াত-৫৮)

“এবং (হে মুহাম্মদ!) ধৈর্য ধরুন, আর আল্লাহর সাহায্য ছাড়া আপনার ধৈর্য ধরা সম্ভব নয় এবং তাদের নিয়ে দুঃখ করবেন না। আর তারা যে চক্রান্ত করে তাতে কষ্ট পাবেন না। অবশ্যই আল্লাহ মুত্তাকী এবং সৎকর্মপরায়ণদের সাথে আছেন।” (১৬-সূরা আন নাহল: আয়াত-১২৭-১২৮)

এ আয়াতে আল্লাহ তাদের সাথে আছেন এ কথা দ্বারা তার অনুগত বান্দাদের রক্ষণাবেক্ষণ, যত্ন, সমর্থন ও অভিভাবকত্বের এক বিশেষ রহমতের কথা বুঝানো হয়েছে। আর তাদের ঈমান, আমল ও চেষ্টার পরিমাণ মাফিকই তারা এই কল্যাণ লাভ করবে।

“অতএব, তোমরা (শক্রদের বিরুদ্ধে) দুর্বল হয়ো না এবং দুশ্চিন্তগ্রস্তও হয়ো না। আর তোমরাই (বিজয়ী হয়ে) শ্রেষ্ঠ হবে- যদি তোমরা (সত্যিকার) মু’মিন হয়ে থাক।” (৩-সূরা আলে ইমরান: আয়াত-১৩৯)

“সামান্য কষ্ট দেয়া ছাড়া তারা তোমাদের কোন ক্ষতি করতে পারবে না। আর যদি তারা তোমাদের সাথে যুদ্ধ করে তবে তারা তোমাদেরকে পৃষ্ঠ প্রদর্শন করবে। অতঃপর তাদেরকে কোনও সাহায্য করা হবে না।” (৩-সূরা আলে ইমরান: আয়াত-১১১)

“আল্লাহ সিদ্ধান্ত করেছেন যে, অবশ্যই আমি এবং আমার রাসূলগণই বিজয়ী হবে। নিশ্চয় আল্লাহ সর্বশক্তিমান ও মহাপরাক্রমশীল।” (৫৮-সূরা আল মুজাদালা: আয়াত-২১)

“নিশ্চয় আমি আমার রাসূলদেরকে আর মু’মিনদেরকে পার্থিব জীবনে এবং যে দিন সাক্ষীরা দণ্ডায়মান হবে সেদিন সাহায্য করব।” (৪০-সূরা আল মু’মিন: আয়াত-৫১)

“আর আমি আমার বিষয় আল্লাহর নিকট সমর্পণ করছি। নিশ্চয় আল্লাহ তার বান্দাদের প্রতি দৃষ্টি রাখেন। তাই আল্লাহ্ তাকে তাদের ষড়যন্ত্র থেকে রক্ষা করলেন।” (৪০-সূরা আল মু'মিন: আয়াত-৪৪-৪৫)

“এবং আল্লাহর উপরই যেন মু’মিনগণ নির্ভর করেন।” (৩-সূরা আলে ইমরান: আয়াত-১২২)


“আল্লাহর উপর ভরসা” শিরোনামের আকর্ষনীয় এই টপিকসের সকল পর্ব এখান থেকে পড়ুন-
১ম পর্ব    ২য় পর্ব    ৩য় পর্ব    ৪র্থ পর্ব    ৫ম পর্ব    ৬ষ্ট পর্ব    ৭ম পর্ব    ৮ম পর্ব    ৯ম পর্ব    ১০ম পর্ব    ১১-তম পর্ব    ১২-তম পর্ব    ১৩-তম পর্ব    ১৪-তম পর্ব    ১৫-তম পর্ব    ১৬-তম পর্ব    ১৭-তম পর্ব    ১৮-তম পর্ব    ১৯-তম পর্ব    ২০-তম পর্ব    ২১-তম পর্ব    ২২-তম পর্ব    ২৩-তম পর্ব    ২৪-তম পর্ব    ২৫-তম পর্ব    ২৬-তম পর্ব    ২৭-তম পর্ব    ২৮-তম পর্ব    ২৯-তম পর্ব    ৩০-তম পর্ব    ৩১-তম পর্ব    ৩২-তম পর্ব    ৩৩-তম পর্ব    ৩৪-তম পর্ব    ৩৫-তম পর্ব    ৩৬-তম পর্ব    ৩৭-তম পর্ব    ৩৮-তম পর্ব 




****************************************
>>> Welcome, You are now on Mohammadia Foundation's Website. Please stay & Tune with us>>>


এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

মোহাম্মদীয়া ফাউন্ডেশনের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url