আল্লাহর উপর ভরসা (পর্ব-১৫) || সুখের মুলনীতি দুঃখিত হবেন না || বই আপনার উত্তম সঙ্গী || বইয়ের মাহাত্ম্য নিয়ে কিছু কথা ||





কুরআন হাদিসের আলোকে সুখে থাকার ছয়টি মূলনীতি সম্পর্কে জানুন


এই পর্বের আলোচ্য বিষয়সমূহঃ

সুখের মুলনীতি দুঃখিত হবেন না

১. জেনে রাখুন আপনি যদি আজকের সীমার মধ্যে বসবাস না করেন, তবে আপনার চিন্তা-ভাবনা বিক্ষিপ্ত হয়ে যাবে, আপনার কাজ কর্ম তালগোল পাকিয়ে ফেলবে এবং আপনার দুশ্চিন্তা বেড়ে যাবে। একথাটি নিম্নোক্ত হাদীসটিকে ব্যাখ্যা করে-

“সকাল বেলা সন্ধ্যাকে দেখার আশা করিও না এবং সন্ধ্যাকালে সকালকে দেখার আশা করিও না।”

২. অতীত ও অতীতের সব ঘটনাকে ভুলে যান। গত জিনিসের চিন্তায় বিভোর হওয়া হলো নেহায়েত পাগলামি।

৩ । ভবিষ্যৎ নিয়ে আগাম দুশ্চিন্তায় ভুগবেন না। কেননা, ভবিষ্যৎতো অজ্ঞাত ও অদৃশ্য জগতে আছে; এটা আগমন করার আগেই যেন এটা আপনাকে কষ্ট না দেয়।

৪. নিন্দা ও সমালোচনায় বিচলিত হবেন না; বরং শক্ত হোন আর জেনে রাখুন যে, আপনার যোগ্যতার মানানুসারেই সমালোচনার ঝড় উঠে।

৫. আল্লাহর প্রতি ঈমান এবং আমলে সালেহ এ দু'টিই জীবনকে উত্তম ও সুখী করার মূল উপাদান।

৬. যে ব্যক্তিই শান্তি, প্রশান্তি ও সুখ চায় সে ব্যক্তিই এসব কিছু আল্লাহর জিকিরের মাঝে খুঁজে পেতে পারে।

৭. আপনার নিশ্চিতরূপে একথা জানা উচিত যে, যা কিছু ঘটে তা এক স্বর্গীয় বিধি অর্থাৎ তকদীর অনুসারেই ঘটে।

৮. অন্যের থেকে কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ পাওয়ার আশা করবেন না।

৯. সর্বাপেক্ষা শোচনীয় ঘটনার জন্য প্রস্তুত হতে নিজেকে তালিম, প্রশিক্ষণ বা ট্রেনিং দিন।

১০. যা ঘটেছে সম্ভবত তা আপনার জন্য সর্বাপেক্ষা উপকারী (যদিও আপনি বুঝতে পারে না যে, তা কীভাবে হলো)।

১১. মুসলমানের তকদীরে যা আছে তা তার জন্য কল্যাণকর।

১২. আল্লাহর অনুগ্রহ, করুণা, দয়া ও নেয়ামতসমূহকে গণনা করার চেষ্টা করুন এবং সেগুলোর জন্য শুকরিয়া আদায় করুন।

১৩. অন্য অনেকের চেয়েও আপনি ভালো আছেন।

১৪. প্রতি মুহুর্তেই (আল্লাহর) সাহায্য আসে।

১৫. সুখে-দুঃখে সর্বাবস্থায়ই দোয়া করা ও সালাত পড়া উচিত।

১৬. দুর্বিপাক আপনার মনকে শক্ত করবেই এবং আপনার দৃষ্টিভঙ্গীকে পাল্টিয়ে দিবে।

১৭. অবশ্যই প্রতিটি দুঃখের পরেই সুখ আছে।

১৮. তুচ্ছ বিষয় যেন আপনার ধ্বংসের কারণ না হয়।

১৯. নিশ্চয় আপনার প্রভু মহা ক্ষমাশীল।

২০. ক্রদ্ধ হবেন না, রাগান্বিত হবেন না, রাগ করবেন না।

২১. জীবনে খাদ্য, পানি ও ছায়া (অর্থাৎ গৃহ) থাকলেই যথেষ্ট; সুতরাং অন্য কোন কিছুর অভাবে (অত্যন্ত) অস্থির ও উদ্বিগ্ন হবেন না।

২২. যে সব ক্ষতির আশঙ্কা করা হয় তার অধিকাংশই ঘটে না।

২৩. যারা দুর্দশাগ্রস্ত তাদের দিকে তাকিয়ে কৃতজ্ঞ হউন।

২৪. আল্লাহ যখন কোন জাতিকে ভালোবাসেন তখন তাদেরকে পরীক্ষা করেন।

২৫. আপনার বারবার সেসব দোয়া করা উচিত যেসব দোয়া নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে শিক্ষা দিয়েছেন।

২৬. উৎপাদনশীল কোন কাজে কঠোর পরিশ্রম করুন এবং আলস্যকে বা অলসতাকে দূরে নিক্ষেপ করুন।

২৭. গুজব ছড়াবেন না এবং গুজবে কান দিবেন না। অনিচ্ছা সত্ত্বেও কোন গুজব শুনে ফেললে তা বিশ্বাস করবেন না।

২৮. আপনার বিদ্বেষ ও প্রতিশোধ গ্রহণের চেষ্টা আপনার শক্রর চেয়ে আপনার স্বাস্থ্যের অনেক বেশি ক্ষতিকর।

২৯. আপনার যে সঙ্কট, বালা মুসিবত, দুঃখ-কষ্ট ও অভাব-অনটন হয় তাতে আপনার পাপের প্রায়শ্চিত্ত হয় বা পাপ মার্জনা হয়।

ছয়টি মূলকথা যখন আপনার হৃদয়ে গেঁথে যাবে তখন আপনি খুশি থাকুন

“দুখের পরে সুখ” পুস্তকের গ্রন্থকার একজন বিজ্ঞলোকের ঘটনা উল্লেখ করেছেন যিনি দুর্দশাগ্রস্ত হয়েছিলেন। তাঁর ভাইয়েরা তাঁর কাছে গিয়ে তাঁর ক্ষতির জন্য তাকে সান্ত্বনা দিতে চেষ্টা করলেন। তিনি উত্তর দিলেন। ছয়টি উপাদানে আমি একটি ঔষধ বানিয়েছি। সে উপাদান ছয়টি কী তারা তাকে তা জিজ্ঞেস করলে তিনি উত্তর দিলেন-

১. সর্বশক্তিমান আল্লাহর উপর দৃঢ় ঈমান রাখা।

২. তকদীরে যা আছে তা অলঙ্ঘনীয়ভাবে ঘটবে এই অলঙ্ঘনীয় সত্য কথাকে মেনে নেয়া।

৩. দুর্দশাগ্রস্ত ব্যক্তি ধৈর্যের সুফল পাবে, এর কোন বিকল্প নেই।

৪. ধৈর্য না ধরে আমি কী করতে পারি? একথার নিহিতার্থে অবিচল আস্থা রাখা।

৫. নিজেকে নিজে এ প্রশ্ন করা, “আমার নিজের ধ্বংস করার জন্য আমি কেন এক জন ইচ্ছুক ব্যক্তি হব?”

৬. একথা জানা যে, মুহুর্তেই অবস্থার পরিবর্তন ঘটে মসিবত দূর হয়ে যায় বা যেতে পারে।

অন্যেরা যদি আপনার ক্ষতি করে বা আপনাকে যাতনা দেয় বা আপনি অত্যাচারিত হন অথবা অন্যের হিংসার শিকার হন তবে দুঃখ করবেন না।

শায়খুল ইসলাম আল্লামা ইবনে তাইমিয়াহ (রহঃ) বলেছেন-
“মু’মিন ব্যক্তি ঝগড়াও করে না প্রতিশোধও নেয় না এবং অন্যের ছিদ্রান্বেষণও করে না অর্থাৎ অন্যের দোষও তালাশ করে না।” বাধা-বিপত্তি বা সমস্যার সম্মুখীন হলে হতাশ না হয়ে বরং সহ্য করুন ও ধৈর্য ধরুন।

একজন বিজ্ঞ লোক বলেছেন-
“হে সময়! তোমার নিকট যদি অবশিষ্ট কিছু (সময়) থাকে যা দিয়ে তুমি যোগ্য ও মর্যাদাবানদেরকে অপদস্ত কর। তবে তা তুমি আমাকে দাও।” অর্থাৎ হে সময়! তুমি যতই দীর্ঘ হও না কেন তোমার দীর্ঘতার চেয়ে আমার ধৈর্য অনেক বেশি। সুতরাং, তুমি আমার যোগ্যতার ও মর্যাদার হানি করতে পারবে না।

ধৈর্য হলো উদ্বিগ্নতার বিপরীত, ধৈর্য শান্তির ফল বহন করে। যে ব্যক্তি স্বেচ্ছায় ধৈর্য ধরে না, পরিস্থিতির কারণে সে ধৈর্য ধরতে বাধ্য হয়।

আল মুতানাব্বি বলেছেন-
“সময় আমার উপর এতটাই সমস্যার (তীর) নিক্ষেপ করেছে যে, তীরে তীরে আমার হৃদয়ে আবরণ পড়ে গেছে এখন যখন আমি কোন তীর দ্বারা আক্রান্ত হই তখন আমি সমস্যার প্রতি ভ্রুক্ষেপ ছাড়াই বেঁচে আছি; কেননা, উদ্বিগ্ন হয়ে আমি লাভবান হয়নি।”

কেউ যদি আপনার কোন উপকার করতে অস্বীকৃতি জানায় অথবা আপনাকে যদি ভ্রুকুটি করা হয় অথবা কোন কৃপণ ব্যক্তি যদি আপনাকে ফিরিয়ে দেয় তবে ব্যাথাতুর হবেন না। যদি আপনি অন্যের কাছে কিছু চাওয়া থেকে বিরত থেকে নাকে খত দেয়ার অপমানের ঘাম বা লাঞ্ছনা থেকে বাঁচতে পারেন তবে বিশাল বাড়ি ও সুন্দর বাগানের চেয়ে কুঁড়ে ঘর বা তাবুই আপনার জন্য শ্রেয় এবং সেসব পার্থিব জিনিসের চেয়ে ভালো যা আপনাকে শুধু দুশ্চিন্তা ও অশান্তিই বয়ে এনে দেয়।

তীব্র মানসিক যাতনা রোগের মতোই, এটা শেষ হওয়ার আগ পর্যন্ত এর পূর্ণ মেয়াদকাল ধরে চলবে। আর যে নাকি এটাকে তাড়াতাড়ি দূর করে দিতে চায় সে প্রায়ই এটাকে বৃদ্ধি করে। দুর্দশাগ্রস্ত লোকের ধৈর্য ধরা বাধ্যতামূলক। তাকে অবশ্যই শান্তির আশায় থাকতে হবে। তাকে সালাত, প্রার্থনা ও ইবাদতে নাছোড়বান্দা হয়ে লেগে থাকতে হবে।

সুখের মূলনীতি- যেসব আয়াত নিয়ে ভাবতে হবে

قُلْ يَا عِبَادِيَ الَّذِينَ أَسْرَفُوا عَلَىٰ أَنفُسِهِمْ لَا تَقْنَطُوا مِن رَّحْمَةِ اللَّهِ إِنَّ اللَّهَ يَغْفِرُ الذُّنُوبَ جَمِيعًا إِنَّهُ هُوَ الْغَفُورُ الرَّحِيمُ

বল, 'হে আমার বান্দাগণ! তোমরা যারা নিজেদের প্রতি অবিচার করেছ, আল্লাহর অনুগ্রহ হতে নিরাশ হয়োনা; নিশ্চয় আল্লাহ সমুদয় পাপ ক্ষমা করে দিবেন। তিনি তো ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। (৩৯-সূরা যুমার: আয়াত-৫৩)

“এবং তোমরা আল্লাহর রহমত হতে নিরাশ হয়ো না, কেননা, কাফের সম্প্রদায় ছাড়া অন্য কেউ আল্লাহর রহমত হতে নিরাশ হয় না।” (১২-সূরা ইউসুফ: আয়াত-৮৭)

“পথভ্রষ্টরা ছাড়া আর কে তার প্রভুর দয়া হতে নিরাশ হয়।” (১৫-সূরা হিজর: আয়াত-৫৬)

“অবশ্যই আল্লাহর রহমত সৎকর্মশীলদের নিকটবর্তী।” (৭-সূরা আল আরাফ: আয়াত-৫৬)

“তুমি জাননা, আল্লাহ হয়তো নতুন কোন উপায় করবেন।” (৬৫-সূরা আত তালাক: আয়াত-১)

“হয়তো তোমরা যা পছন্দ কর না তা তোমাদের জন্য ভালো এবং তোমরা যা পছন্দ করো তা তোমাদের জন্য ক্ষতিকর। আল্লাহ জানেন আর তোমরা জান না।” (২-সূরা বাকারা: আয়াত-২১৬)

“আল্লাহ তার বান্দাদের প্রতি বড়ই মেহেরবান।” (৪২-সূরা আশ শূরা: আয়াত-১৯)

“এবং আমার করুণা সব কিছুকে ঘিরে আছে।” (৭-সূরা আল আ'রাফ: আয়াত-১৫৬)

“ভয় করিও না (বা কোন ভয় নেই), নিশ্চয় আল্লাহ আমাদের সাথে আছে।” (৯-সূরা তাওবা: আয়াত-৪০)

“(তখনকার কথা স্মরণ কর) যখন তোমরা তোমাদের প্রভুর নিকট সাহায্য প্রার্থনা করেছিলে তাই তখন তিনি তোমাদের ডাকে সাড়া দিয়েছিলেন।” (৮-সূরা আনফাল: আয়াত-৯)

“এবং তারা হতাশ হয়ে যাবার পর তিনিই বৃষ্টি বর্ষণ করেন এবং তার রহমত, করুণা ও দয়াকে চতুর্দিকে বিস্তৃত করে দেন।” (৪২-সূরা আশ শুরা: আয়াত-২৮)

“এবং তারা আমাকে আশা নিয়ে ও ভয়ের সাথে ডাকত এবং তারা আমার নিকট বিনীত ছিল.” (২১-সূরা আল আম্বিয়া: আয়াত-৯০)

বই আপনার উত্তম সঙ্গী

যে কাজ আনন্দ বয়ে আনে তা হলো বই পড়ে জ্ঞানার্জন করে মনকে উন্নত করা।

আল জাহিয নামে এজন আরব লেখক কয়েক শতাব্দী পূর্বে বই পড়ে উদ্বিগ্নতা দূর করার (জন্য নিম্নরূপ) উপদেশ দিয়েছেন-

“(ভালো) বই এমন এক সঙ্গী যা অমঙ্গল, অকল্যাণ ও ক্ষতির দিকে আপনাকে প্রলোভন দেখায় না। এটা এমন বন্ধু যা আপনাকে বিরক্ত করে না। এটা এমন প্রতিবেশী যা আপনার কোন ক্ষতি করে না। এটা এমন একজন পরিচিত ব্যক্তি যিনি তোষামোদ করে আপনার থেকে কোন সুবিধা বাগিয়ে নিতে চায় না। এটা ছলনা ও মিথ্যার মাধ্যমে আপনাকে প্রতারণা করে না। বইয়ের পাতাগুলো পাঠকালে আপনার অনুভূতি শক্তিশালী ও মেধা তীক্ষ্ণ হয়। জীবনী পড়ে মানুষকে মূল্যায়ন করতে পারবেন।

এমনও বলা হয় যে, মাঝে মাঝে একমাসে বইয়ের যে ক’পাতা পড়ে যা শিখা যায় তা (সাধারণ) জনগণের মুখ থেকে একশত বছরেও শিখা যায় না। এসব কিছুই উপকার করে অথচ এতে সম্পদের ক্ষতি হয় না এবং বেতনের জন্য অপেক্ষাকারী শিক্ষকের দরজায় ধর্ণা ধরতে হয় না অথবা এমন কারো কাছ থেকে শিখতে হয়না যে আচার-আচরণে আপনার চেয়ে নিম্ন মানের। বই দিনে ও রাত্রে, ঘরে ও বাইরে (ভ্রমণকালে) আপনার আনুগত্য করে। বই (শিক্ষকের মতো) তন্দ্রা আসাতে এমনকি গভীর রাতেও (ঘুমে) ক্লান্ত হয়ে পড়ে না।

এটা এমনই শিক্ষক, যখনই আপনার দরকার তখনই এটা আপনার সেবায় নিয়োজিত। এটা এমন শিক্ষক যাকে আপনি বেতন না দিলেও এটা আপনাকে সেবা (তথা জ্ঞান) দিতে নারাজ হয় না। আপনি এটাকে পরিত্যাগ করলেও এটা আপনার আনুগত্য কমিয়ে দেয় না। সবাই যখন আপনার বিরোধী হয়ে শক্রতা দেখায় তখন এটা আপনার পাশে থাকে (ও আপনাকে সাহায্য করে)। যতক্ষণ পর্যন্ত আপনি বইয়ের সাথে সম্পর্ক রাখবেন ততক্ষণ পর্যন্ত অলসদের সঙ্গ আপনার দরকার নেই।

দরজায় দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে পথচারীদেরকে দেখা থেকে এটা আপনাকে বিরত রাখবে। হ্যাংলা, হাল্কা বা চপল স্বভাব, অশ্লীল ভাষাভাষী ও গণ্ডমূর্খদের সাথে মিলামিশা করা থেকে বই আপনাকে রক্ষা করবে। বইয়ের শুধুমাত্র যদি এ একটাই উপকারিতা থাকত যে, এটা আপনাকে বোকার মতো দিবাস্বপ্ন দেখা থেকে ও হ্যাংলাপনা করা থেকে বিরত রাখে, তবুও এটাকে অবশ্যই আপনার এমন একজন সত্যিকার ও প্রকৃত বন্ধু হিসেবে গণ্য করতে হবে যিনি নাকি আপনাকে মহা অনুগ্রহ দান করেছেন।”

বইয়ের মাহাত্ম্য নিয়ে কিছু কথা

আবু উবাইদা বলেছেন- “মুহাল্লাব তার পুত্রকে নিম্নোক্ত উপদেশ দিয়েছেন, ‘হে বৎস! বৰ্ম বিক্রেতা বা পুস্তক বিক্রেতার সাক্ষাৎ ছাড়া বাজারে সময় নষ্ট করবে না।”

হাসান লু’লুয়ী বলেছেন- “চল্লিশ বছর যাবৎ দিনে-রাতে যখনই ঘুমতে যাই না কেন একটা পুস্তক আমার বুকের উপর থাকেই।”

ইবনে যাহম বলেছেন-
“প্রয়োজনের অতিরিক্ত ঘুমানো ক্ষতিকর; ঘুমের সময় আমার যখন তন্দ্রা আসে তখন আমি একটি জ্ঞানগর্ভ ও প্রজ্ঞাপূর্ণ বই হাতে তুলে নেই এবং কোন (প্রজ্ঞার) মুক্তার সাক্ষাৎ বা সন্ধান পেলে আমি কল্যাণ লাভ করি। যখন মনের সুখে বই পড়ায় ডুবে থাকি ও (জ্ঞনগর্ভ কথা) শুনতে থাকি তখন গাধার তীর্যক ডাক ও কোন কিছু ভাঙ্গার তীক্ষ্ণ শব্দ শুনে যতটা সর্তক হই তার চেয়েও বেশি সতর্ক থাকি।”

তিনি আরও বলেছেন-
“যদি আমি কোন বইকে মনোরম ও উপভোগ্য পাই এবং আমি এটাকে উপকারী মনে করি তবে তুমি আমাকে দেখবে যে, আমি ঘণ্টার পর ঘণ্টা ধরে খুঁজছি যে কত পৃষ্ঠা বাকি আছে এ ভয়ে যে (এ মজাদার বইটি পড়া) শেষ হয়ে যাচ্ছে কিনা। যদি এটা বহু পৃষ্ঠা সম্বলিত অনেক খণ্ডের পুস্তক হয় তবে আমার জীবনকে (ধন্য) ও সুখকে পরিপূর্ণ পাই।”

كِتَابٌ أُنزِلَ إِلَيْكَ فَلَا يَكُن فِي صَدْرِكَ حَرَجٌ مِّنْهُ لِتُنذِرَ بِهِ وَذِكْرَىٰ لِلْمُؤْمِنِينَ

(হে মুহাম্মদ!) এ কিতাব যা আপনার প্রতি অবতীর্ণ করা হয়েছে, অতএব এ কিতাব দিয়ে (মানুষকে) সর্তক করতে এর সম্বন্ধে আপনার মনে যেন কোন সঙ্কোচ না থাকে এবং (এ কিতাব) মু’মিনদের জন্য উপদেশ।” (৭-সূরা আল আরাফ: আয়াত-২)


“আল্লাহর উপর ভরসা” শিরোনামের আকর্ষনীয় এই টপিকসের সকল পর্ব এখান থেকে পড়ুন-
১ম পর্ব    ২য় পর্ব    ৩য় পর্ব    ৪র্থ পর্ব    ৫ম পর্ব    ৬ষ্ট পর্ব    ৭ম পর্ব    ৮ম পর্ব    ৯ম পর্ব    ১০ম পর্ব    ১১-তম পর্ব    ১২-তম পর্ব    ১৩-তম পর্ব    ১৪-তম পর্ব    ১৫-তম পর্ব    ১৬-তম পর্ব    ১৭-তম পর্ব    ১৮-তম পর্ব    ১৯-তম পর্ব    ২০-তম পর্ব    ২১-তম পর্ব    ২২-তম পর্ব    ২৩-তম পর্ব    ২৪-তম পর্ব    ২৫-তম পর্ব    ২৬-তম পর্ব    ২৭-তম পর্ব    ২৮-তম পর্ব    ২৯-তম পর্ব    ৩০-তম পর্ব    ৩১-তম পর্ব    ৩২-তম পর্ব    ৩৩-তম পর্ব    ৩৪-তম পর্ব    ৩৫-তম পর্ব    ৩৬-তম পর্ব    ৩৭-তম পর্ব    ৩৮-তম পর্ব 


****************************************
>>> Welcome, You are now on Mohammadia Foundation's Website. Please stay & Tune with us>>>



এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

মোহাম্মদীয়া ফাউন্ডেশনের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url