যে কাজগুলো আপনার জন্য নিষিদ্ধ (১৪) || দাড়ি না আঁচড়ানো || বিদায়ী তাওয়াফ না করে বিদায় হওয়া || ক্রয়-বিক্রয়ে দালালি করা ||
- ক্রয়-বিক্রয়ে দালালি করা
- কোন যুদ্ধলব্ধ সামগ্রী বন্টনের পূর্বেই ক্রয় করা
- বিচার চলাকালীন বিচারকের রাগান্বিত হওয়া
- মালিকের অনুমতি ছাড়া দুধ দোহন করা
- অনুমতি ছাড়াই মেহমানের বসা
- কাফির আত্মীয়ের ওয়ারিসি সম্পত্তি দেয়া বা নেয়া
- ক্রেতা কিংবা বিক্রেতার অসন্তুষ্টি
- বিদায়ী তাওয়াফ না করে বিদায় হওয়া
- দাড়ি না আঁচড়ানো
- শরীয়ত বাস্তবায়নে কঠোরতা অবলম্বন করা
ক্রয়-বিক্রয়ে দালালি করা
কোন শহুরে ব্যক্তির অন্য কোন গ্রাম্য ব্যক্তির ক্রয়-বিক্রয়ে দালালি করা
জাবির (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: রাসূল (সা.) ইরশাদ করেন:
لاَ يَبِعْ حَاضِرٌ لِبَادٍ ، دَعُوْا النَّاسَ يَرْزُقِ اللهُ بَعْضَهُمْ مِنْ بَعْضٍ
‘‘কোন শহুরে ব্যক্তি যেন কোন গ্রাম্য ব্যক্তির ক্রয়ে-বিক্রয়ে দালালি না করে। আল্লাহ্ তা’আলা মানুষের কাউকে অন্য কারোর মাধ্যমে রিযিক দিয়ে থাকেন। সুতরাং তোমরা এ ব্যাপারে কেউ কারোর উপর হস্তক্ষেপ করো না’’।[1]
আনাস্ (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: রাসূল (সা.) ইরশাদ করেন:
لاَ يَبِيْعُ حَاضِرٌ لِبَادٍ ، وَإِنْ كَانَ أَخَاهُ أَوْ أَبَاهُ
‘‘কোন শহুরে ব্যক্তি যেন কোন গ্রাম্য ব্যক্তির ক্রয়ে-বিক্রয়ে দালালি না করে। যদিও সে তার ভাই বা পিতা হোক’’।[2]
[1] (মুসলিম, হাদীস ১৫২২ আবু দাউদ, হাদীস ৩৪৪২ তিরমিযী, হাদীস ১২২৩ ইবনু মাজাহ্, হাদীস ২২০৬)
[2] (মুসলিম, হাদীস ১৫২৩ আবু দাউদ, হাদীস ৩৪৪০)
কোন যুদ্ধলব্ধ সামগ্রী বন্টনের পূর্বেই ক্রয় করা
কোন যুদ্ধলব্ধ সামগ্রী যোদ্ধাদের মাঝে বন্টন করার পূর্বেই তা কারোর কাছ থেকে ক্রয় করা
আবু সা’ঈদ্ খুদরী (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন:
نَهَى رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَنْ شِرَاءِ الْـمَغَانِمِ حَتَّى تُقْسَمَ
‘‘রাসূল (সা.) কোন যুদ্ধলব্ধ সামগ্রী যোদ্ধাদের মাঝে বন্টন করার পূর্বেই তা কারোর কাছ থেকে ক্রয় করতে নিষেধ করেছেন’’।[1]
[1] (তিরমিযী, হাদীস ১৫৬৩)
বিচার চলাকালীন বিচারকের রাগান্বিত হওয়া
কোন বিচারকের বিচার চলাকালীন অবস্থায় কারোর উপর কোন ব্যাপারে রাগান্বিত হওয়া
আবু বাকরাহ্ (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: রাসূল (সা.) ইরশাদ করেন:
لاَ يَحْكُمُ الْحَاكِمُ بَيْنَ اثْنَيْنِ وَهُوَ غَضْبَانُ
‘‘কোন বিচারক যেন রাগান্বিত অবস্থায় দু’ পক্ষের মাঝে বিচার না করে’’।[1]
[1] (তিরমিযী, হাদীস ১৩৩৪ আবু দাউদ, হাদীস ৩৫৮৯ ইবনু মাজাহ্, হাদীস ২৩৪৫)
মালিকের অনুমতি ছাড়া দুধ দোহন করা
কোন দুধেল পশুর দুধ তার মালিকের অনুমতি ছাড়া দোহন করা
আব্দুল্লাহ্ বিন্ ’উমর (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: রাসূল (সা.) ইরশাদ করেন:
لاَ يَحْلُبَنَّ أَحَدٌ مَاشِيَةَ أَحَدٍ إِلاَّ بِإِذْنِهِ ، أَيُحِبُّ أَحَدُكُمْ أَنْ تُؤْتَى مَشْرَبَتُهُ فَتُكْسَرَ خِزَانَتُهُ فَيُنْتَثَلَ أَوْ يُنْتَقَلَ طَعَامُهُ ، فَإِنَّمَا تَخْزُنُ لَهُمْ ضُرُوْعُ مَوَاشِيْهِمْ أَطْعِمَتَهُمْ ، فَلاَ يَحْلُبَنَّ أَحَدٌ مَاشِيَةَ أَحَدٍ إِلاَّ بِإِذْنِهِ
‘‘তোমাদের কেউ যেন অন্য কারোর দুধেল পশুর দুধ তার অনুমতি ছাড়া দোহন না করে। তোমাদের কেউ কি তার নিজের ব্যাপারে এমন ঘটুক চায় যে, তার দুধেল পশুর ঘরে কেউ ঢুকে তার দুগ্ধভান্ডার ভেঙ্গে তার খাদ্য নিয়ে যাবে। কারণ, মানুষের দুধেল পশুর স্তনই তো তাদের খাদ্য সংরক্ষণ করে। অতএব তোমাদের কেউ যেন অন্য কারোর দুধেল পশুর দুধ তার অনুমতি ছাড়া দোহন না করে’’।[1]
[1] (বুখারী, হাদীস ২৪৩৫ মুসলিম, হাদীস ১৭২৬ আবু দাউদ, হাদীস ২৬২৩ ইবনু মাজাহ্, হাদীস ২৩৩২)
অনুমতি ছাড়াই মেহমানের বসা
কারোর নিকট মেহমান হলে তার অনুমতি ছাড়াই তার সম্মানজনক সুনির্দিষ্ট কোন বসার জায়গায় বসা
আবু মাস্’ঊদ্ বদরী (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: রাসূল (সা.) ইরশাদ করেন:
وَلاَ تَؤُمَّنَّ الرَّجُلَ فِيْ أَهْلِهِ وَلاَ فِيْ سُلْطَانِهِ ، وَلاَ تَجْلِسْ عَلَى تَكْرِمَتِهِ فِيْ بَيْتِهِ إِلاَّ بِإِذْنِهِ
‘‘তুমি কারোর ঘরে কিংবা তার অধীনস্থ জায়গায় তার অনুমতি ছাড়া কোন নামাযের ইমামতি করবে না। তেমনিভাবে তুমি কারোর ঘরে তার সম্মানজনক সুনির্দিষ্ট বসার জায়গায় তার অনুমতি ছাড়া বসবে না’’।[1]
[1] (মুসলিম, হাদীস ৬৭৩ আবু দাউদ, হাদীস ৫৮২)
কাফির আত্মীয়ের ওয়ারিসি সম্পত্তি দেয়া বা নেয়া
কোন কাফিরকে তার কোন নিকট আত্মীয় মুসলমানের ওয়ারিসি সম্পত্তি দেয়া কিংবা কোন মুসলমানের তার কোন নিকট আত্মীয় কাফিরের ওয়ারিসি সম্পত্তি নেয়া
উসামাহ্ বিন্ যায়েদ্ (রাযিয়াল্লাহু ’আনহুমা) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: রাসূল (সা.) ইরশাদ করেন:
لاَ يَرِثُ الْـمُسْلِمُ الْكَافِرَ ، وَلاَ الْكَافِرُ الْـمُسْلِمَ
‘‘কোন মুসলমান কোন কাফিরের ওয়ারিসি সম্পত্তি পাবে না। তেমনিভাবে কোন কাফিরও কোন মুসলমানের ওয়ারিসি সম্পত্তি পাবে না’’।[1]
আব্দুল্লাহ্ বিন্ ’আমর (রাযিয়াল্লাহু ’আনহুমা) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: রাসূল (সা.) ইরশাদ করেন:
لاَ يَتَوَارَثُ أَهْلُ مِلَّتَيْنِ شَتَّى
‘‘দু’ ভিন্ন ধর্মীয় মতাবলম্বী লোক একে অপরের মিরাস পাবে না’’।[2]
[1] (বুখারী, হাদীস ৬৭৬৪ মুসলিম, হাদীস ১৬১৪ আবু দাউদ, হাদীস ২৯০৯)
[2] (আবু দাউদ, হাদীস ২৯১১)
ক্রেতা কিংবা বিক্রেতার অসন্তুষ্টি
ক্রেতা কিংবা বিক্রেতার একে অপর থেকে অসন্তুষ্ট অবস্থায় বিদায় নেয়া
আবু হুরাইরাহ্ (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: রাসূল (সা.) ইরশাদ করেন:
لاَ يَفْتَرِقَنَّ اثْنَانِ إِلاَّ عَنْ تَرَاضٍ
‘‘ক্রেতা ও বিক্রেতা যেন একে অন্য থেকে কারোর উপর কেউ অসন্তুষ্ট থাকাবস্থায় বিদায় না নেয়’’।[1]
[1] (আবু দাউদ, হাদীস ৩৪৫৮)
বিদায়ী তাওয়াফ না করে বিদায় হওয়া
হজ্জের পর আল্লাহ্ তা’আলার সম্মানিত ঘরের বিদায়ী তাওয়াফ না করে নিজ এলাকার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হওয়া
আব্দুল্লাহ্ বিন্ ’আব্বাস্ (রাযিয়াল্লাহু ’আনহুমা) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: রাসূল (সা.) ইরশাদ করেন:
لاَ يَنْفِرَنَّ أَحَدٌ حَتَّى يَكُوْنَ آخِرَ عَهْدِهِ الطَّوَافُ بِالْبَيْتِ
‘‘কোন ব্যক্তি নিজ এলাকার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হবে না যতক্ষণ না তার শেষ সাক্ষাৎ আল্লাহ্ তা’আলার ঘরের সাথে তথা তওয়াফ করে হয়’’।[1]
[1] (মুসলিম, হাদীস ১৩২৭ আবু দাউদ, হাদীস ২০০২ ইবনু মাজাহ্’ হাদীস ৩১২৬)
দাড়ি না আঁচড়ানো
দাড়ি না আঁচড়িয়ে তাতে গিরা ফেলে দেয়া কিংবা গলায় ধনুকের সুতা ঝুলানো
রুওয়াইফি’ (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: রাসূল (সা.) একদা আমাকে বললেন:
يَا رُوَيْفِعُ ! لَعَـلَّ الْحَيَاةَ سَتَطُوْلُ بِكَ بَعْـدِيْ ، فَأَخْبِرِ النَّاسَ أَنَّهُ مَنْ عَقَدَ لِحْيَتَهُ أَوْ تَقَلَّدَ وَتَرًا ، أَوِ اسْتَنْجَى بِرَجِيْعِ دَابَّةٍ أَوْ عَظْمٍ ؛ فَإِنَّ مُحَمَّدًا مِنْهُ بَرِيْءٌ
‘‘হে রুওয়াইফি’! হয়তো বা তুমি আমার মৃত্যুর পর বেশ কিছু দিন বেঁচে থাকবে। সুতরাং তুমি মানুষের নিকট এ সংবাদ পৌঁছিয়ে দিবে যে, যে ব্যক্তি নিজ দাড়ি না আঁচড়িয়ে তাতে গিরা ফেলে দেয়, নিজ গলায় ধনুকের সুতা ঝুলায় অথবা কোন পশুর মল কিংবা হাড় দিয়ে ইস্তিঞ্জা করে তা হলে আমি মুহাম্মাদের সাথে তার কোন সম্পর্ক থাকবে না’’।[1]
[1] (আবু দাউদ, হাদীস ৩৬)
শরীয়ত বাস্তবায়নে কঠোরতা অবলম্বন করা
শরীয়ত বাস্তবায়নে কঠোরতা অবলম্বন করা কিংবা এমনভাবে কোন গুনাহ্গার ব্যক্তিকে আল্লাহ্ তা’আলার আযাব ও জাহান্নামের ভয় দেখানো যাতে করে সে আল্লাহ্ তা’আলার ক্ষমা থেকে একেবারেই নিরাশ হয়ে যায়
আবু মূসা (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: নবী (সা.) একদা আমাকে ও মু’আয (রা.) কে ইয়েমেনের দিকে পাঠিয়ে বলেন:
يَسِّرَا وَلاَ تُعَسِّرَا ، وَبَشِّرَا وَلاَ تُنَفِّرَا ، وَتَطَاوَعَا وَلاَ تَخْتَلِفَا
‘‘তোমরা মানুষের মাঝে শরীয়ত বাস্তবায়নে সহজতা অবলম্বন করবে ; কঠোরতা নয়। পাপীদেরকে ভয় মিশ্রিত আশার বাণী শুনাবে ; নিরাশার বাণী নয়। একে অপরকে মেনে চলবে ; দ্বন্দ্ব করবে না’’।[1]
আব্দুল্লাহ্ বিন্ মাস্’ঊদ্ (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: রাসূল (সা.) ইরশাদ করেন:
هَلَكَ الْـمُتَنَطِّعُوْنَ ثَلاَثًا
‘‘ধ্বংস হোক কট্টরপন্থীরা। রাসূল (সা.) উক্ত কথাটি তিন বার বলেছেন’’।[2]
[1] (বুখারী, হাদীস ৩০৩৮ মুসলিম, হাদীস ১৭৩৩)
[2] (মুসলিম, হাদীস ২৬৭০)
একজন মুসলিম হিসেবে যে কাজগুলো আপনার জন্য নিষেধ- এর সকল পর্ব এখান থেকে পড়ুনঃ
১ম পর্ব ২য় পর্ব ৩য় পর্ব ৪র্থ পর্ব ৫ম পর্ব ৬ষ্ট পর্ব ৭ম পর্ব ৮ম পর্ব ৯ম পর্ব ১০ম পর্ব ১১তম পর্ব ১২তম পর্ব ১৩তম পর্ব ১৪তম পর্ব ১৫তম পর্ব ১৬তম পর্ব ১৭তম পর্ব ১৮তম পর্ব ১৯তম পর্ব ২০ম পর্ব ২১তম পর্ব ২২তম পর্ব ২৩তম পর্ব ২৪তম পর্ব ২৫তম পর্ব ২৬তম পর্ব ২৭তম পর্ব ২৮তম পর্ব ২৯তম পর্ব ৩০ম পর্ব ৩১তম পর্ব ৩২তম পর্ব ৩৩তম পর্ব ৩৪ম পর্ব
***************************************
সাইটটি ভিজিট করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। আর্টিকেলটি ভাল লাগলে সত্য ও ন্যয়ের পথে অন্য ভাইনদেরকে দাওয়াতের নিয়তে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করুন। মোহাম্মদীয়া ফাউন্ডেশনের কার্যক্রম, লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য সম্পর্কে জানতে এবং দীন ও মানবতার সেবায় অংশ নিতে OUR ACTION PLAN বাটনে ক্লিক করুন।
মোহাম্মদীয়া ফাউন্ডেশনের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url