Mohammadia Foundation
https://www.mohammadiafoundationbd.com/2022/11/Rahe-Amal11_0972168698.html
রাহে আমল-১০ || যাকাত, ছদকায়ে ফেতের, ওশর || যাকাত আদায় না করার শাস্তি || ফেতরার দু'টো উদ্দেশ্য ||
যাকাত, ছদকায়ে ফেতের, ওশর
যাকাত দারিদ্র্য দূর করার কার্যকর উপায়
إن الله قد فرضَ عَلَيْهِمْ صَدَقَةٌ تُؤْخَذُ مِنْ أغنياء هم فترد على فقراءهم (متفق عليه)
রাসূলুল্লাহ (সা) বলেছেন: আল্লাহ তায়ালা ছদকা' ফরজ করেছেন। যা ধনীদের কাছ থেকে আদায় করে দরিদ্রদেরকে 'ফেরত দেয়া' হবে । (বোখারী, মুসলিম)
'ছদকা' শব্দটা যাকাত অর্থেও ব্যবহৃত হয়, যা প্রদান করা আইনগতভাবে বাধ্যতামূলক। এখানে এটি যাকাত অর্থেই ব্যবহৃত হয়েছে, এ ছাড়া মানুষ স্বেচ্ছায় যে সম্পদ আল্লাহর পথে ব্যয় করে তাকেও ছদকা বলে। এ হাদীসে 'ফেরত দেয়া হবে' শব্দটার প্রয়োগ থেকে স্পষ্ট বুঝা যায় যে, ধনীদের কাছ থেকে আদারকৃত যাকাত মূলত সমাজের দরিদ্রক্লিষ্ট ও অভাবী লোকদেরই প্রাপ্য, যা ধনীদের কাছে গচ্ছিত ছিল এবং তা তার আসল পাওনাদারদের কাছে ফেরত দেয়া হবে।
যাকাত আদায় না করার শাস্তি
قال رسول الله صلى الله عليه اللهُ مَالًا فَلَمْ يُوْدِ زَكَاتَهُ مُثْلَ لَهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ شُجَاعًا أقرع لَه زَبِيبَتَانِ بِطُوقَهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ ثُمَّ يَأْخُذُ بِلِهِنِ يعني شدقيه ثم يقول أنا مالك أنا كنزك، ثُمَّ
تلا ولا يَحْسَبَنَّ الَّذِينَ يَبْخَلُونَ الآية. (بخاري)
রাসূলুল্লাহ (সা) বলেছেন, যে ব্যক্তিকে আল্লাহ তায়ালা ধনসম্পদ দিয়েছেন কিন্তু সে সেই ধনসম্পদের যাকাত দেয়নি, তার এই ধনসম্পদ কেয়ামতের দিন বিষাক্ত সাপের রূপ ধারণ করবে। যার মাথার ওপর দুটো কালো তিল থাকবে। (যা ঐ সাপের চরম বিষধর হওয়ার লক্ষণ) অতঃপর ঐ সাপ তার গলায় শেকল হয়ে ঝুলতে থাকবে এবং তার উভয় চোয়ালকে জাপটে ধরে সে বলতে থাকবে, “আমি তোর ধনসম্পদ, আমি তোর পুঁজি।” অতঃপর রাসূলুল্লাহ (সা) কোরআনের এ আয়াত তেলাওয়াত করলেন : “যারা নিজেদের সম্পদ ব্যয়ে কার্পণ্য করে, তারা যেন মনে না করে যে, তাদের এ কার্পণ্য তাদের জন্য কল্যাণকর হবে। বরং তা হবে তাদের জন্য ক্ষতিকর। তাদের এ সম্পদ কেয়ামতের দিন তাদের গলার শিকলে পরিণত হবে। অর্থাৎ তাদের জন্য ভয়াবহ সর্বনাশের কারণ হয়ে দাঁড়াবে।” (বোখারী)
যাকাত না দিলে ধনসম্পদ ধ্বংস হয়ে যায়
عَنْ عَائِشَةَ قَالَتْ سَمِعْتُ رَسُولَ اللهِ صَلَّى الله عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ مَا خَالَطَتِ الزَّكُوةُ مَالًا قَطُّ إِلَّا
হযরত আয়েশা (রা) বর্ণনা করেন যে, রাসূল (সা)কে বলতে শুনেছি : যখন কোন ধনসম্পদের যাকাত আদায় করা হবে না এবং তা ধনসম্পদের সাথে মিলে থাকবে। তখন তা ধনসম্পদের বিনাশ না ঘটিয়ে ছাড়বে না । (মেশকাত)
বিনাশ ঘটানোর অর্থ এ নয় যে, কেউ যাকাত না দিয়ে যাকাতের অর্থ নিজে খেয়ে নিলে তার সমস্ত ধনসম্পদ সর্বাবস্থায় অবশ্য অবশ্যই ধ্বংস হয়ে যাবে। বিনাশ ঘটার অর্থ এই যে, যে সম্পদ ভোগ করার কোন অধিকার তার ছিল না এবং যা গরীবদেরই প্রাপ্য ছিল, তা আত্মসাত করে সে নিজের দ্বীন ও ঈমানকে ধ্বংস করে। ইমাম আহমাদ বিন হাম্বল থেকে এই ব্যাখ্যাই বর্ণিত হয়েছে। তবে এমনও দেখা গেছে যে, যে ব্যক্তি যাকাতের অর্থ খেয়ে ফেলেছে, তার সমস্ত ধনসম্পদ আক্ষরিক অর্থেই মুহূর্তের মধ্যে ধ্বংস হয়ে গেছে।
ফেতরার দু'টো উদ্দেশ্য
فرض رسول الله صلى الله عليه وسلم زكوة الفطر
مهر الصِّيَامِ مِن اللغو و الرفث وطعمة للمساكين.
রাসূলুল্লাহ (সা) উম্মাতের ওপর ফেতরা ধার্য করেছেন এই উদ্দেশ্যে, যাতে রোযা রাখা অবস্থায় যেসব বেহুদা ও অশালীন কার্যকলাপ রোযাদারের দ্বারা সংঘটিত হয়, তার কাফ্ফারা হয়ে যায় এবং দরিদ্রদের খানাপিনার ব্যবস্থাও হয়ে যায়। (আবু দাউদ)
অর্থাৎ শরীয়তে যে ছদকায়ে ফেতের বা ফেতরা ওয়াজিব করা হয়েছে, তার দুটো উদ্দেশ্য রয়েছে। প্রথমতঃ রোযাদার যথাসাধ্য সতর্কতা অবলম্বন করা সত্ত্বেও তার দ্বারা যে সকল ত্রুটিবিচ্ছুতি রোযা রাখা অবস্থায় সংঘটিত হয়ে যায়। ফেতরা দ্বারা তার ক্ষতি পূরণ হয়ে যায়। দ্বিতীয়তঃ যেদিন সকল মুসলমান খুশীর ঈদ উদযাপন করে, সেদিন সমাজের দরিদ্র লোকেরা যেন অনাহারে না থাকে। বরং তাদের খাবার দাবারের কিছু ব্যবস্থা হয়ে যায়। সম্ভবত এ উদ্দেশ্যেই পরিবারের সকল সদস্যের ওপর ফেতরা ওয়াজিব করা হয়েছে এবং তা ঈদের নামাযের আগেই দেয়ার আদেশ দেয়া হয়েছে।
ওশর বা ফসলের যাকাত
٦٥- قال النبي صلى الله عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِيمَا سَقَتِ السَّمَاء وَالْعُيونُ أَوْ كَانَ عَشَرِيًّا الْعُشْرُ وَمَا سُقِيَ بِالنَّفْحِ نِصْفُ الْعُشْرِ. (بخاري)
রাসূলুল্লাহ (সা) বলেছেন : যে সব ভূমি বৃষ্টির পানি ও বহমান নদী বা খালের পানি দ্বারা সিঞ্চিত হয়, অথবা নদীর নিকটবর্তী হওয়ার কারণে সেচের প্রয়োজনই হয় না, তার উৎপন্ন ফসলের দশভাগের এক ভাগ এবং যে ভূমিতে শ্রমিক নিয়োগ করে সেচ দেয়া হয়, তার ফসলের বিশ ভাগের এক ভাগ যাকাত (ওশর) দিতে হবে। (বোখারী)
*******************************************
Thank you for visiting the site. If you like the article, share it on social media to invite other Vines to the path of truth and justice. Click on OUR ACTION PLAN button to know about activities, goals and objectives of Mohammadia Foundation and to participate in the service of religion and humanity.
Almost all articles on this website are written in Bengali. But you can also read it in your language if you want. Click the “ভাষা বেছে নিন” button at the bottom of the website to read in your own language.
0 Comments
দয়া করে নীতিমালা মেনে মন্তব্য করুন