তাফসীরে ইবনে কাসীর -১৮ || সূরা বাকারা - ৮ || অশান্তি বা বিপর্যয় সৃষ্টিকারী মুনাফিকদের শাস্তি || মুনাফিকদের বিপর্যয়ের ধরণ ||






فِیۡ قُلُوۡبِهِمۡ مَّرَضٌ ۙ فَزَادَهُمُ اللّٰهُ مَرَضًا ۚ وَ لَهُمۡ عَذَابٌ اَلِیۡمٌۢ ۬ۙ بِمَا کَانُوۡا یَکۡذِبُوۡنَ ﴿١٠
১০। তাদের অন্তরে পীড়া রয়েছে, পরন্ত আল্লাহ তাদের পীড়া আরও বাড়িয়ে দিয়েছেন এবং তাদের জন্য গুরুতর শান্তি রয়েছে যেহেতু তারা অসত্য বলত।

পীড়া শব্দের অর্থ

পীড়ার অর্থ এখানে সংশয় ও সন্দেহ। (তাবারী ১/২৮০) ইবন আব্বাস (রাঃ), ইব্‌ন মাসউদ (রাঃ) এবং অন্যান্য কয়েকজন সাহাবী (রাঃ) হতে এটাই বর্ণিত আছে। মুজাহিদ (রহঃ), ইকরিমাহ (রহঃ), হাসান বাসরী (রহঃ), আবুল আলীয়া (রহঃ), রাবী ইব্ন আনাস (রহঃ) এবং কাতাদাহরও (রহঃ) এটাই মত। (ইব্‌ন আবী হাতিম ১/৪৮) ইকরিমাহ (রহঃ) এবং তাউস (রহঃ) এর তাফসীর করেছেন 'রিয়া' বা কৃত্রিমতা এবং ইবন আব্বাস (রাঃ) হতে এর তাফসীর 'নিফাক' বা কপটভাও বর্ণিত হয়েছে। যায়িদ ইবন আসলাম (রহঃ) বলেন যে, এখানে উদ্দেশ্য হচ্ছে ধর্মীয় রোগ, শারীরিক রোগ নয়। ইসলাম সম্পর্কে তাদের সংশয় ও সন্দেহজনিত একটা বিশেষ রোগ ছিল, আল্লাহ তাদের সেই রোগ বাড়িয়ে দিলেন। (তাবারী ১/২৮০) যেমন কুরআন মাজীদে আছেঃ

فَأَمَّا الَّذِينَ ءَامَنُوا فَزَادَتْهُمْ إِيمَنًا وَهُمْ يَسْتَبْشِرُونَ، وَأَمَّا الَّذِينَ في قلوبهم مرضت فَزَادَهُمْ رِجْسًا إِلَى رِجْسِهِمْ

অবশ্যই যে সব লোক ঈমান এনেছে, এই সূরা তাদের ঈমানকে বর্ধিত করেছে এবং তারাই আনন্দ লাভ করছে। আর যাদের অন্তরসমূহে রোগ রয়েছে, এই সূরা তাদের মধ্যে তাদের কলুষতার সাথে আরও কলুষতা বর্ধিত করেছে। (সূরা তাওবাহ, ৯ : ১২৪-১২৫) অর্থাৎ তাদের পাপ ও ওমরাহী আরও বেড়ে যায় এবং এই প্রতিদান তাদের কাজের সঙ্গে সম্পূর্ণ সামঞ্জস্যপূর্ণ। এই তাফসীরই উত্তম। এই ফরমানও ঠিক এরই মতঃ
وَالَّذِينَ اهْتَدَوْا زَادَهُمْ هُدًى وَمَاتَنهُمْ تَقْوَنَهُمْ

যারা সৎ পথ অবলম্বন করে আল্লাহ তাদের সৎ পথে চলার শক্তি বৃদ্ধি করেন। এবং তাদেরকে মুত্তাকী হওয়ার শক্তি দান করেন। (সুরা মুহাম্মাদ, ৪৭ : ১৭) কারীগণ ইয়াকযিবূনকে ইউকাযযিবূনাও পড়েছেন। মুনাফিকদের মধ্যে এই বদ অভ্যাস ছিল যে, তারা মিথ্যা কথাও বলত এবং অবিশ্বাসও করত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম মুনাফিকদেরকে চেনা সত্ত্বেও তাদেরকে হত্যা করেননি। এর কারণ এই যে, সহীহ বুখারী ও মুসলিমের বর্ণনায় আছে যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম উমারকে (রাঃ) বলেনঃ 'মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর সঙ্গীগণকে হত্যা করে থাকেন এ চর্চা হওয়াটা আমি আদৌ পছন্দ করিনা।
চৌদ্দজন প্রধান ও কুখ্যাত লোকের 'নিফাক' রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিশ্চিত রূপেই জানতেন। এসব কলুষিত লোক তারাই ছিল যারা তাবুকের যুদ্ধে পরস্পরের সুপরিকল্পিত পরামর্শক্রমে এই সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছিল। যে, তারা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লামের সঙ্গে প্রতারণা করবেই। তারা তাঁকে হত্যা করার ঘৃণ্য ষড়যন্ত্র এঁটেছিল যে, রাতের দুর্ভেদ্য অন্ধকারে যখন তিনি অমুক খাদের নিকটবর্তী হবেন তখন তাঁর উস্ট্রিকে তারা তাড়া করবে। এর ফলে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম খাদের মধ্যে পড়ে যাবেন। আল্লাহ তা'আলা স্বীয় নবীকে ওহীর মাধ্যমে এই মারাত্মক জঘন্য কপটতার কথা জানিয়ে দেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম হুজাইফাকে (রাঃ) ডেকে এ ঘটনার সংবাদ দেন, এমন কি এক এক করে ঐ কপটদের নাম পর্যন্তও তিনি বলে দেন। তথাপি তিনি উপরোক্ত কারণে তাদেরকে হত্যা করার নির্দেশ জারী করলেননা। এরা ছাড়া অন্যান্য মুনাফিকদের নাম তাঁর জানা ছিলনা। আল্লাহ তা'আলা বলেনঃ

وَمِمَّنْ حَوْلَكُم مِّنَ الْأَعْرَابِ مُتَنفِقُونَ وَمِنْ أَهْلِ الْمَدِينَةِ مَرَدُوا عَلَى النِّفَاقِ لَا تَعْلَمُهُمْ نَحْنُ تَعْلَمُهُمْ

আর তোমাদের মরুবাসীদের মধ্য হতে কতিপয় লোক এবং মাদীনাবাসীদের মধ্য হতেও কতিপয় লোক এমন মুনাফিক রয়েছে যারা নিফাকের চরমে পৌঁছে গেছে। তুমি তাদেরকে জাননা, আমিই তাদেরকে জানি। (সূরা তাওবাহ, ৯ ১০১) অন্য এক জায়গায় তিনি বলেনঃ
 لَئِنۡ لَّمۡ یَنۡتَهِ الۡمُنٰفِقُوۡنَ وَ الَّذِیۡنَ فِیۡ قُلُوۡبِهِمۡ مَّرَضٌ وَّ الۡمُرۡجِفُوۡنَ فِی الۡمَدِیۡنَۃِ لَنُغۡرِیَنَّکَ بِهِمۡ ثُمَّ لَا یُجَاوِرُوۡنَکَ فِیۡهَاۤ اِلَّا قَلِیۡلًا ﴿ۖۛۚ۶۰  مَّلۡعُوۡنِیۡنَ ۚۛ اَیۡنَمَا ثُقِفُوۡۤا اُخِذُوۡا وَ قُتِّلُوۡا تَقۡتِیۡلًا ﴿۶۱

মুনাফিকরা এবং যাদের অন্তরে ব্যাধি আছে এবং যারা নগরে গুজব রটনা করে, তারা বিরত না হলে আমি নিশ্চয়ই তাদের বিরুদ্ধে তোমাকে প্রবল করব; এরপর এই নগরীতে তোমার প্রতিবেশী রূপে তারা স্বল্প সময়ই থাকবে অভিশপ্ত হয়ে, তাদেরকে যেখানেই পাওয়া যাবে সেখানেই ধরা হবে এবং নির্দয়ভাবে হত্যা করা হবে। (সূরা আহযাব, ৩৩ : ৬০-৬১)

এই আয়াতগুলি থেকে জানা গেল যে, ঐ মুনাফিকরা কে কে ছিল, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম তা জানতেন না। তবে তাদের নিন্দনীয় স্বভাবের যে বর্ণনা দেয়া হয়েছিল তা যাদের মধ্যে পাওয়া যেত, তাদের উপর নিফাক প্রযোজ্য হত। যেমন এক জায়গায় আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'আলা স্পষ্টভাবেই বলেনঃ
وَلَوْ نَشَاءُ لَأَرَيْنَكَهُمْ فَلَعَرَفْتَهُم بِسِيمَهُمْ وَلَتَعْرِ فَتُهُمْ فِي لَحْنِ الْقَوْلِ

আমি ইচ্ছা করলে তোমাকে তাদের পরিচয় দিতাম। ফলে তুমি তাদের লক্ষণ দেখে তাদেরকে চিনতে পারবে, তুমি অবশ্যই কথার ভঙ্গিতে তাদেরকে চিনতে পারতে। (সূরা মুহাম্মাদ, ৪৭:৩০ )

এই কপটাচারী মুনাফিকদের মধ্যে সবচেয়ে প্রসিদ্ধ ছিল আবদুল্লাহ ইবন উবাই ইব্‌ন সালুল। যায়িদ ইন আরকাম (রাঃ) তার কপটতাপূর্ণ স্বভাব সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লামের সামনে সাক্ষ্য দানও করেছিলেন, যা মুনাফিকদের বৈশিষ্ট্য প্রসঙ্গে বিবৃত হয়েছে। এ সত্ত্বেও আমরা দেখতে পাই যখন সে মারা যায় তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম তার জানাযার সালাত আদায় করেছেন। অন্যান্য মুসলিম সাহাবীগণের (রাঃ) মত তিনিও তার দাফন কাজে অংশগ্রহণ করেছেন। এমন কি উমার (রাঃ) যখন একটু জোর দিয়ে তার কপটতার কথা স্মরণ করিয়ে দিচ্ছেন, তখন তিনি বলছেনঃ
'আরবের লোক সমালোচনা করবে যে, মুহাম্মাদ তাঁর সহচরগণকে হত্যা করে থাকেন, এ আমি চাইনা।' (বুখারী ৪৯০৫, মুসলিম ২৫৮৪) সহীহ হাদীসের বর্ণনায় আছে যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ 'আমাকে তার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করার বা না করার স্বাধীনতা দেয়া হয়েছে।" কিন্তু আমি ক্ষমা প্রার্থনা করাকেই পছন্দ করেছি।' অন্য একটি বর্ণনায় আছে যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ

'আমি যদি জানতাম যে সত্তর বারের অধিক ক্ষমা প্রার্থনা করলে তাকে মার্জনা করা হবে তাহলে আমি অবশ্যই তার অধিকই করতাম। (ফাতহুল বারী ৮/১৮৪, মুসলিম ৪/২১৪১ )



وَ اِذَا قِیۡلَ لَهُمۡ لَا تُفۡسِدُوۡا فِی الۡاَرۡضِ ۙ قَالُوۡۤا اِنَّمَا نَحۡنُ مُصۡلِحُوۡنَ ﴿۱۱   اَلَاۤ اِنَّهُمۡ هُمُ الۡمُفۡسِدُوۡنَ وَ لٰکِنۡ لَّا یَشۡعُرُوۡنَ ﴿۱۲
১১। এবং যখন তাদেরকে বলা হয়ঃ তোমরা পৃথিবীতে অশান্তি সৃষ্টি করনা তখন তারা বলেঃ আমরা তো শুধুই মিমাংশা স্থাপনকারী।  ১২। সাবধান! নিশ্চয়ই তারাই অশান্তি সৃষ্টিকারী, কিন্তু তারা বুঝেনা।


অশান্তি বা বিপর্যয় সৃষ্টি করা কী

আবদুল্লাহ ইবন আব্বাস (রাঃ)আবদুল্লাহ ইবন মাসউদ (রাঃ) এবং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লামের আরও কয়েকজন সাহাবী (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, এ আয়াতেও মুনাফিকদের বর্ণনা রয়েছে এবং এই ধূলির ধরণীতে তাদের বিবাদ বিপর্যয় সৃষ্টি, কৃষ্ণর এবং অবাধ্যতা সম্পর্কে মুসলিমদেরকে হুঁশিয়ার ও সতর্ক করা হচ্ছে। এ দুনিয়ায় আল্লাহর অবাধ্য হওয়া এবং অপরকে নাফরমান ও অবাধ্য হওয়ার আদেশ করাই হচ্ছে দুনিয়ার বুকে বিবাদ সৃষ্টি করা। আর যমীন ও আসমানের শান্তি রয়েছে আল্লাহর আনুগত্যের মধ্যে। মুজাহিদ (রহঃ) বলেন যে, যখন তাদেরকে আল্লাহর অবাধ্যতা হতে বিরত থাকতে বলা হয় তখন তারা বলে 'আমরা তো সঠিক সনাতন পথের উপরেই প্রতিষ্ঠিত রয়েছি।'

মুনাফিকদের বিপর্যয়ের ধরণ

ইমাম ইবন জারীর (রহঃ) বলেন যে, ঐ মুনাফিকদের বিবাদ ও গণ্ডগোল সৃষ্টি করার অর্থ হচ্ছে তারা ঐসব কাজ করত যা করতে আল্লাহ তা'আলা নিষেধ করেছিলেন এবং তাঁর ফারমগুলিও তারা হেলা করে নষ্ট করত। শুধু তাই নয়, আল্লাহ তা'আলার সত্য ধর্মের প্রতি তারা সন্দেহ পোষণ করত এবং তাঁর সভ্যতার উপর পূর্ণ বিশ্বাস রাখতনা। মু'মিনদের কাছে এলে তাদের ঈমানের কথা তারা প্রচার করত, অথচ তাদের অন্তর আল্লাহ ও তাঁর রাসূল সম্বন্ধে সন্দেহে পরিপূর্ণ ছিল। তারা সুযোগ সুবিধা পেলেই আল্লাহর শত্রুদের সাহায্য ও সহায়তা করত এবং তাঁর সৎ বান্দাদের বিরুদ্ধাচরণ করত। আর এতসব করা সত্ত্বেও নিজেদেরকে সঠিক আমলকারী মনে করত। (তাবারী ১/২৮৯) কাফিরদের সাথে বন্ধুত্ব স্থাপন করাকেও কুরআন মাজীদে ফাসাদ বলা হয়েছে। যেমন আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'আলা বলেনঃ

وَالَّذِينَ كَفَرُوا بَعْضُهُمْ أَوْلِيَاءُ بَعْضٍ إِلَّا تَفْعَلُوهُ تَكُن فِتْنَةٌ فِي الْأَرْضِ وَفَسَادٌ كَبِيرٌ

যারা কুফরী করছে তারা পরস্পর পরস্পরের বন্ধু, তোমরা যদি (উপরোক্ত) বিধান কার্যকর না কর তাহলে ভূ-পৃষ্ঠে ফিতনা ও মহা বিপর্যয় দেখা দিবে। (সূরা আনফাল, ৮ : ৭৩) এই আয়াতটি মুসলিম ও কাফিরের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ছিন্ন করে দিল। আল্লাহ তা'আলা অন্যত্র বলেনঃ
 یٰۤاَیُّهَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا لَا تَتَّخِذُوا الۡکٰفِرِیۡنَ اَوۡلِیَآءَ مِنۡ دُوۡنِ الۡمُؤۡمِنِیۡنَؕ اَتُرِیۡدُوۡنَ اَنۡ تَجۡعَلُوۡا لِلّٰهِ عَلَیۡکُمۡ سُلۡطٰنًا مُّبِیۡنًا ﴿۱۴۴

হে মুমিনগণ! তোমরা মু'মিনদেরকে ছেড়ে কাফিরদেরকে বন্ধু রূপে গ্রহণ করনা, তোমরা কি আল্লাহর জন্য তোমাদের বিরুদ্ধে স্পষ্ট প্রমাণ দিতে চাও? (সূরা নিসা, ৪ : ১৪৪) অর্থাৎ তোমাদের মুক্তির সনদ কেটে যাক এই কি তোমরা চাও? অতঃপর তিনি আরও বলেনঃ

إِنَّ الْتَنفِقِينَ فِي الدَّرْكِ الْأَسْفَلِ مِنَ النَّارِ وَلَن تَجِدَ لَهُمْ نَصِيرًا
 
নিশ্চয়ই মুনাফিকরা জাহান্নামের নিম্নতম স্তরে অবস্থান করবে এবং তুমি কখনও তাদের জন্য সাহায্যকারী পাবেনা। (সূরা নিসা, ৪:১৪৫ )
মুনাফিকদের বাহ্যিক আচরণ ভাল ছিল বলে মুসলিমদের নিকট তাদের প্রকৃত অবস্থা গোপন থেকে যায়। তারা মু'মিনগণকে মুখমিষ্টি অথচ অবাস্তব কথা দিয়ে ধোঁকা দেয় এবং তাদের মিথ্যা দাবী ও কাফিরদের সাথে তাদের গোপন বন্ধুত্বের ফলে মুসলিমগণকে ভয়াবহ বিপদের সম্মুখীন হতে হয়। সুতরাং বিবাদ ও হাঙ্গামা সৃষ্টিকারী এই মুনাফিকরাই। অতএব যদি এরা কুফরের উপরেই কায়েম থাকত তাহলে তাদের ভয়াবহ ষড়যন্ত্র ও গভীর চতুরতা কখনও মুসলিমদের জন্য এত ক্ষতিকর হতনা। আর যদি তারা পূর্ণ মুসলিম হয়ে যেত এবং ভিতর ও বাহির তাদের এক হত তাহলে তারা এই নশ্বর দুনিয়ার নিরাপত্তা লাভের সাথে সাথে আখিরাতের মুক্তি ও সফলতার অধিকারী হয়ে যেত। এত ভয়াবহ পন্থা অবলম্বন করা সত্ত্বেও যখন তাদেরকে শান্তি প্রতিষ্ঠার উপদেশ দেয়া হয়, তখন তারা মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে বলে আমরা তো শান্তি স্থাপনকারী, আমরা কারও সাথে বিবাদ করতে চাইনা। আমরা মু'মিন ও কাফির এই দুই দলের মধ্যে সন্ধির প্রস্ত বি নিয়ে ঐক্য বজায় রাখতে চাই।' (ইবন আবী হাতিম ১/৫২) আবদুল্লাহ ইব্‌ন আব্বাস (রাঃ) বলেন যে, তারা বলত : 'আমরা দুই দল অর্থাৎ মুসলিম ও আহলে কিতাবের মধ্যে সন্ধি স্থাপনকারী।' কিন্তু আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'আলা বলেন যে, এ শুধু তাদের মূর্খতা। যাকে তারা সন্ধি বলছে ওটাই তো প্রকৃত বিবাদ। কিন্তু তাদের বোধশক্তি নেই।



**************************************
Thank you for visiting the site. If you like the article, share it on social media to invite other Vines to the path of truth and justice. Click on OUR ACTION PLAN button to know about activities, goals and objectives of Mohammadia Foundation and to participate in the service of religion and humanity.
Almost all articles on this website are written in Bengali. But you can also read it in your language if you want. Click the “ভাষা বেছে নিন” button at the bottom of the website to read in your own language.



এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

মোহাম্মদীয়া ফাউন্ডেশনের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url