তাফসীরে ইবনে কাসীর - ১৯ || সূরা বাকারা - ৯ || মুনাফিকদের ধূর্ততা || মানব ও জিন শাইতান || মুনাফিকদের ষড়যন্ত্রের শাস্তি ||






 وَ اِذَا قِیۡلَ لَهُمۡ اٰمِنُوۡا کَمَاۤ اٰمَنَ النَّاسُ قَالُوۡۤا اَنُؤۡمِنُ کَمَاۤ اٰمَنَ السُّفَهَآءُ ؕ اَلَاۤ اِنَّهُمۡ هُمُ السُّفَهَآءُ وَ لٰکِنۡ لَّا یَعۡلَمُوۡنَ ﴿۱۳
১৩। এবং যখন তাদেরকে বলা হয় লোকে যেরূপ বিশ্বাস করেছে তোমরাও তদ্রুপ বিশ্বাস স্থাপন কর, তখন তারা বলে নির্বোধেরা যেরূপ বিশ্বাস করেছে আমরাও কি সেইরূপ বিশ্বাস করব? সাবধান! নিশ্চয়ই তারাই নির্বোধ, কিন্তু তা তারা অবগত নয়।


ভাবার্থ এই যে, যখন এই মুনাফিকদেরকে সাহাবীগণের (রাঃ) মত আল্লাহর উপর, তাঁর মালাইকা/ ফেরেশতাগণের উপর, কিতাবসমূহের উপর এবং রাসূলগণের (আঃ) উপর ঈমান আনতে, মৃত্যুর পর পুনর্জীবন এবং জান্নাত ও জাহান্নামের সত্যতা স্বীকার করতে ও রাসূল সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লামের আনুগত্য বরণ করতে, ভাল কাজ করতে ও মন্দ কাজ হতে বিরত থাকতে বলা হয় তখন এই অভিশপ্ত দলটি এরূপ ঈমান আনাকে নির্বোধদের ঈমান আনা বলে আখ্যায়িত করে থাকে। (তাবারী ১/২৯৩) রাবী ইব্‌ন আনাস (রহঃ) এবং আবদুর রাহমান ইব্‌ন যায়িদ ইবন আসলামের (রহঃ) তাফসীরেও এ কথা বর্ণিত হয়েছে। (তাবারী ১/২৯৪) মুনাফিকরা বলত ঃ আমরা ও তারা একই মতাদর্শে রয়েছি এবং একই পথ অনুসরণ করছি তা কি করে হতে পারে, অথচ আমরাতো দেখছি যে, তারাতো নির্বোধের দল? এখানে নির্বোধ বলতে এ কথা বুঝানো হয়েছে যে, তারা অশিক্ষিত, সাধারণ মানের মানুষ যাদের ভাল-মন্দের জ্ঞান খুব কমই রয়েছে। অধিকাংশ বিজ্ঞজনের মতে, নির্বোধ বা বোকা বলতে আল্লাহ তা'আলা শিশু/বাচ্চাদের বুঝিয়েছেন, যেমন কুরআন মাজীদের এক জায়গায় আছেঃ
وَلَا تُؤْتُوا السُّفَهَاءَ أَمْوَلَكُمُ الَّتِي جَعَلَ اللَّهُ لَكُمْ قِينَما

আল্লাহ তোমাদের জন্য যে ধন-সম্পত্তি নির্ধারণ করেছেন তা অবোধদেরকে প্রদান করনা। (সূরা নিসা, ৪ : ৫) ঐ মুশরিকদের উপর এখানেও বিশ্বপ্রভু আল্লাহ জোর দিয়ে বলছেন যে, নির্বোধ তো এরাই, কিন্তু সাথে সাথে তারা এতই গণ্ডমূর্খ যে, নিজেদের নির্বুদ্ধিতার অনুভূতিও রাখেনা এবং মূর্খতা ও ভ্রষ্টতা অনুধাবনও করতে পারেনা। এর চেয়ে বেশি তাদের অন্ধত্ব, দৃষ্টিহীনতা এবং সুপথ থেকে দূরে সরে থাকা আর কি হতে পারে?


وَ اِذَا لَقُوا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا قَالُوۡۤا اٰمَنَّا ۚۖ وَ اِذَا خَلَوۡا اِلٰی شَیٰطِیۡنِهِمۡ ۙ قَالُوۡۤا اِنَّا مَعَکُمۡ ۙ اِنَّمَا نَحۡنُ مُسۡتَهۡزِءُوۡنَ ﴿۱۴   اَللّٰهُ یَسۡتَهۡزِئُ بِهِمۡ وَ یَمُدُّهُمۡ فِیۡ طُغۡیَانِهِمۡ یَعۡمَهُوۡنَ ﴿۱۵
১৪ । এবং যখন তারা মু'মিনদের সাথে মিলিত হয় তখন তারা বলেঃ আমরা বিশ্বাস স্থাপন করেছি; এবং যখন তারা নিজেদের দলপতি ও দুষ্ট নেতাদের সাথে গোপনে মিলিত হয় তখন বলেঃ আমরা তোমাদের সঙ্গেই আছি, আমরা তো শুধু ঠাট্টা-বিদ্রূপ ও প্রহসন করে থাকি ।  ১৫। আল্লাহ তাদের সঙ্গে ঠাট্টা-বিদ্রুপ করছেন এবং তাদেরকে অবকাশ দিচ্ছেন। ফলে তারা নিজেদের অবাধ্যতার মধ্যে উদ্ভ্রান্ত হয়ে ফিরছে।


মুনাফিকদের ধূর্ততা

আল্লাহ তা'আলা বলেনঃ وَإِذَا لَقُوا الَّذِينَ آمَنُوا قَالُوا آمَنَّا وَإِذَا خَلَوْا  إِلَى شَيَاطِينِهِمْ قَالُوا إِنَّا مَعَكُمْ إِنَّمَا نَحْنُ مُسْتَهْزِؤُونَ এসব মুনাফিকরা মুসলিমদের নিকট এসে নিজেদের ঈমান, বন্ধুত্ব ও মঙ্গল কামনার কথা প্রকাশ করে তাদেরকে ধোঁকায় ফেলতে চায়, যাতে জান ও মালের নিরাপত্তা এসে যায় এবং যুদ্ধলব্ধ মালেও ভাগ পাওয়া যায়। আর যখন নিজেদের দলে থাকে তখন তাদের হয়েই কথা বলে।

মানব ও জিন শাইতান

ইমাম ইবন জারীর (রহঃ) বলেন যে, প্রত্যেক পথভ্রষ্টকারী ও অবাধ্যকে ১৯১৯ বলা হয়। তারা জিন বা দানব থেকেই হোক অথবা মানব থেকেই হোক। কুরআনুল হাকীমেও এসেছেঃ

وَكَذَلِكَ جَعَلْنَا لِكُلِّ نَيَ عَدُوًّا شَيَنطِينَ الْإِنسِ وَالْجِنِّ يُوحِي بَعْضُهُمْ إِلَىٰ بَعْضٍ زُخْرُفَ الْقَوْلِ غُرُورًا

আর এমনিভাবেই আমি প্রত্যেক নবীর জন্য বহু শাইতানকে শত্রুরূপে সৃষ্টি করেছি; তাদের কতক মানুষ শাইতানের মধ্য হতে এবং কতক জিন শাইতানের মধ্য হতে হয়ে থাকে, এরা একে অন্যকে কতকগুলি মনোমুগ্ধকর, ধোকাপূর্ণ ও প্রতারণাময় কথা দ্বারা প্ররোচিত করে থাকে। (সূরা আন'আম, ৬ : ১১২)
হাদীসে এসেছেঃ 'আমরা জিন ও মানুষের শাইতান হতে আল্লাহর নিকট আশ্রয় চাচ্ছি।

উপহাস/তামাসা

আবূ যার (রাঃ) জিজ্ঞেস করলেনঃ 'হে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম! মানুষের মধ্যে কি শাইতান আছে? তিনি উত্তরে বলেনঃ 'হ্যাঁ' যখন এই মুনাফিকরা মুসলিমদের সঙ্গে মিলিত হয় তখন বলেঃ 'আমরা তো তোমাদের সঙ্গেই আছি, অর্থাৎ যেমন তোমরা, তেমনই আমরা, আমরা তো তাদেরকে উপহাস করছিলাম।' (তাবারী ১/৩০০) ইবন আব্বাস (রাঃ)রাবী ইবন আনাস (রহঃ) এবং কাতাদাহর (রহঃ) তাফসীরও এটাই। (তাবারী ১/৩০০) মহান আল্লাহ শাইতানদেরকে উত্তর দিতে গিয়ে তাদের প্রতারণামূলক কাজের মুকাবিলায় বলেন যে, আল্লাহ তা'আলাও তাদেরকে উপহাস করবেন এবং অবাধ্যতার মধ্যে উদ্ভ্রান্ত হয়ে ফিরতে দিবেন। যেমন কুরআন মাজীদের এক জায়গায় আছেঃ

 یَوۡمَ یَقُوۡلُ الۡمُنٰفِقُوۡنَ وَ الۡمُنٰفِقٰتُ لِلَّذِیۡنَ اٰمَنُوا انۡظُرُوۡنَا نَقۡتَبِسۡ مِنۡ نُّوۡرِکُمۡ ۚ قِیۡلَ ارۡجِعُوۡا وَرَآءَکُمۡ فَالۡتَمِسُوۡا نُوۡرًا ؕ فَضُرِبَ بَیۡنَهُمۡ بِسُوۡرٍ لَّهٗ بَابٌ ؕ بَاطِنُهٗ فِیۡهِ الرَّحۡمَۃُ وَ ظَاهِرُهٗ مِنۡ قِبَلِهِ الۡعَذَابُ ﴿ؕ۱۳

সেদিন (কিয়ামাতের দিন) মুনাফিক নর-নারী মু'মিনদের বলবেঃ তোমরা আমাদের জন্য একটু থাম, যাতে আমরা তোমাদের জ্যোতির কিছু গ্রহণ করতে পারি। বলা হবেঃ তোমরা তোমাদের পিছনে ফিরে যাও এবং আলোর সন্ধান কর। অতঃপর উভয়ের মাঝে স্থাপিত হবে একটি প্রাচীর যাতে একটি দরজা থাকবে, ওর অভ্যন্তরে থাকবে রাহমাত এবং বহির্ভাগে থাকবে শান্তি। (সূরা হাদীদ, ৫৭ : ১৩) অন্যত্র আল্লাহ তা'আলা ঘোষনা করেনঃ
وَلَا تَحْسَبَنَّ الَّذِينَ كَفَرُوا أَنَّمَا نُمْلِي لَهُمْ خَيْرٌ لأَنفُسِهِمْ إِنَّمَا نُمْلِي لَهُمْ لِيَزْدَادُوا إِنَّمَا

অবিশ্বাসীরা যেন এ ধারণা না করে যে, আমি তাদেরকে যে অবকাশ দিয়েছি তা তাদের জীবনের জন্য কল্যাণকর; তারা স্বীয় পাপ বর্ধিত করবে এ জন্যই আমি তাদেরকে অবসর প্রদান করি। (সূরা আলে ইমরান, ৩ : ১৭৮) অতঃপর তিনি বলেনঃ ইহা এবং এ ধরণের বিষয়ই আল্লাহ তা'আলা মুনাফিক এবং মুশরিকদের উপহাস বা হাসি-ঠাট্টাচ্ছলে উল্লেখ করেছেন। এরকমই আল্লাহ তা'আলার কথাঃ

وَمَكَرُوا وَمَكَرَ اللَّهُ وَاللَّهُ خَيْرُ الْمَنكِرِينَ

তারা (কাফিরেরা) যড়যন্ত্র করেছিল এবং আল্লাহও কৌশল করলেন, আর আল্লাহ শ্রেষ্ঠতম কৌশলী। (সূরা আলে ইমরান, ৩ : ৫৪ )

মুনাফিকদের ষড়যন্ত্রের শাস্তি

মহান আল্লাহর সত্ত্বা প্রতারণা ও উপহাস থেকে পবিত্র। আল্লাহ কাফিরদের প্রতারণা ও বিদ্রূপের উপযুক্ত প্রতিফল দিবেন। কাজেই বিনিময়ে পূর্বোক্ত আয়াতের ঐ শব্দগুলিই ব্যবহার করা হয়েছে। দু'টি শব্দের অর্থ দুই জায়গায় পৃথক পৃথক হবে। যেমন কুরআনুম মাজীদে আছেঃ
وَجَزَاؤُا سَيِّئَةٍ سَيِّئَةٌ مِثْلُهَا فَمَنْ عَفَا وَأَصْلَحَ فَأَجْرُهُ عَلَى اللَّهِ

মন্দের প্রতিফল অনুরূপ মন্দ দ্বারা এবং যে ক্ষমা করে দেয় ও আপোষ- নিষ্পত্তি করে তার পুরস্কার আল্লাহর নিকট রয়েছে। (সূরা শূরা, ৪২৪৪০) অন্য স্থানে রয়েছেঃ

فَمَنِ اعْتَدَى عَلَيْكُمْ فَاعْتَدُوا عَلَيْهِ

অতঃপর যে কেহ তোমাদের প্রতি অত্যাচার করে, তাহলে সে তোমাদের প্রতি যেরূপ অত্যাচার করবে তোমরাও তার প্রতি সেরূপ অত্যাচার কর। (সূরা বাকারাহ, ২ : ১৯৪) এতে বুঝা গেল যে, প্রতিশোধ গ্রহণ করা অন্যায় নয়। বাড়াবাড়ির মুকাবিলায় প্রতিশোধ নেয়া বাড়াবাড়ি নয়। কিন্তু দুই স্থানে একই শব্দ আছে, অথচ প্রথম অন্যায় ও বাড়াবাড়ি হচ্ছে হুল্‌ম এবং দ্বিতীয় অন্যায় ও বাড়াবাড়ি হচ্ছে সুবিচার। আর একটি ভাবার্থ এই যে, মুনাফিকরা তাদের এই নাপাক নীতি দ্বারা মুসলিমদেরকে উপহাস ও বিদ্রূপ করত। মহান আল্লাহও তাদের সঙ্গে এইরূপই করলেন যে, দুনিয়ায় তাদেরকে তিনি নিরাপত্তা দান করলেন, তারা এতে আনন্দে আত্মহারা হয়ে গেল, অথচ এটা অস্থায়ী নিরাপত্তা। কিয়ামাতের দিন তাদের কোন নিরাপত্তা নেই। এখানে যদিও তাদের জান ও মাল রক্ষা পেল, কিন্তু আল্লাহর নিকট তারা বেদনাদায়ক শাস্তির শিকারে পরিণত হবে।

মুনাফিকদেরকে উদ্ভ্রান্তের মধ্যে ছেড়ে দেয়ার অর্থ কী


ইমাম ইবন জারীর (রহঃ) উপরোক্ত কথাটিকেই বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন। কেননা বিনা কারণে যে ধোঁকা ও বিদ্রূপ হয়, আল্লাহ তা থেকে সম্পূর্ণ পবিত্র। তবে প্রতিশোধ হিসাবে আল্লাহ সুবহানুর দিকে এসব শব্দের সম্বন্ধ লাগানোয় কোন দোষ নেই।
আবদুল্লাহ ইব্‌ন আব্বাসও (রাঃ) এ কথাই বলেন যে, এটা তাদের উপর প্রতিশোধ গ্রহণ ও শাস্তি।  يَمُدُّهُمْ - এর অর্থ 'ঢিল দেয়া (তাবারী ১/৩১১) এবং বাড়ানো' (ইব্‌ন আবী হাতিম ১/৫৭) বর্ণনা করা হয়েছে। যেমন আল্লাহ রাব্বুল আলামীন বলেনঃ

اَیَحۡسَبُوۡنَ اَنَّمَا نُمِدُّهُمۡ بِهٖ مِنۡ مَّالٍ وَّ بَنِیۡنَ ﴿ۙ۵۵   نُسَارِعُ لَهُمۡ فِی الۡخَیۡرٰتِ ؕ بَلۡ لَّا یَشۡعُرُوۡنَ ﴿۵۶

তারা কি মনে করে যে, আমি তাদেরকে সাহায্য স্বরূপ যে ধনৈশ্বর্য ও সন্তান- সন্ততি দান করি তদ্দারা তাদের জন্য সর্ব প্রকার মঙ্গল ত্বরান্বিত করছি? না, তারা বুঝেনা। (সূরা মু'মিনূন, ২৩:৫৫-৫৬) আল্লাহ রাব্বুল ইয়্যাত আরও বলেনঃ

 فَذَرۡنِیۡ وَ مَنۡ یُّکَذِّبُ بِهٰذَا الۡحَدِیۡثِ ؕ سَنَسۡتَدۡرِجُهُمۡ مِّنۡ حَیۡثُ لَا یَعۡلَمُوۡنَ ﴿ۙ۴۴

যারা আমাকে এবং এই বাণীকে প্রত্যাখ্যান করে তাদেরকে ছেড়ে দাও আমার হাতে, আমি তাদেরকে এমনভাবে ক্রমে ক্রমে ধরব যে, তারা জানতে পারবেনা । (সূরা কলম, ৬৮ : ৪৪ )

 وَ نُقَلِّبُ اَفۡـِٕدَتَهُمۡ وَ اَبۡصَارَهُمۡ کَمَا لَمۡ یُؤۡمِنُوۡا بِهٖۤ اَوَّلَ مَرَّۃٍ وَّ نَذَرُهُمۡ فِیۡ طُغۡیَانِهِمۡ یَعۡمَهُوۡنَ ﴿۱۱۰

আর যেহেতু তারা প্রথমবার ঈমান আনেনি, এর ফলে তাদের মনোভাবের ও দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন করে দিব এবং তাদেরকে তাদের অবাধ্যতার মধ্যেই বিভ্রান্ত থাকতে দিব। (সূরা আন'আম ৬:১১০) (তাবারী ১/৩০৭) ‘তুণিয়ান' শব্দটি এ আয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে সীমা লংঘন করা হিসাবে, যেমন আল্লাহ তা'আলা নিম্নের আয়াতে উল্লেখ করেনঃ

إِنَّا لَمَّا طَعَا الْمَاءُ حَمَلْتَكُمْ فِي الْجَارِيَةِ

যখন প্লাবন হয়েছিল তখন আমি তোমাদেরকে (মানব জাতিকে) আরোহণ করিয়েছিলাম নৌযানে। (সূরা হাক্কাহ, ৬৯৪ ১১)
ইবন জারীর (রহঃ) বলেন যে, এ আয়াতে 'আমাহ' শব্দটি প্রয়োগ করার অর্থ হচ্ছে পথচ্যুত হওয়া বা সরে যাওয়া। তিনি আরও বলেন যে, 'ভুগইয়ানিহীম ইয়া মাহুন' হল তাদেরকে অবিশ্বাস এবং বিপথগামীতা ঘিরে রেখেছে যার ফলে তারা সন্দেহের ঘোরে নিপতিত রয়েছে এবং তা থেকে বের হয়ে আসার সঠিক পথ খুঁজে পাচ্ছেনা। কারণ আল্লাহ তাদের অন্তরে মোহর এঁটে দিয়েছেন এবং দৃষ্টিশক্তিকে রুদ্ধ করে দিয়েছেন। ফলে তারা হিদায়াতের পথ খুঁজে পাচ্ছেনা এবং তাদের পথচ্যুতি থেকেও বেরিয়ে আসতে পারছেনা। (তাবারী ১/৩০৯)
তাহলে ভাবার্থ দাঁড়াল এই যে, এদিকে এরা পাপ করছে আর ওদিকে তাদের দুনিয়ার সুখ-সম্পদ ও ধনৈশ্বর্য উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে, কাজেই এরা সুখী হচ্ছে, অথচ প্রকৃতপক্ষে এটা একটা শান্তিই বটে। যেমন আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'আলা বলেনঃ

إِنَّا لَمَّا طَعَا الْمَاءُ حَمَلْتَكُمْ فِي الجَارِيَةِ
যখন প্লাবন হয়েছিল তখন আমি তোমাদেরকে (মানব জাতিকে) আরোহণ করিয়েছিলাম নৌযানে। (সূরা হাক্কাহ, ৬৯ ৪ ১১) পথভ্রষ্টতাকে عمه বলা হয় । 




*************************************
Thank you for visiting the site. If you like the article, share it on social media to invite other Vines to the path of truth and justice. Click on OUR ACTION PLAN button to know about activities, goals and objectives of Mohammadia Foundation and to participate in the service of religion and humanity.
Almost all articles on this website are written in Bengali. But you can also read it in your language if you want. Click the “ভাষা বেছে নিন” button at the bottom of the website to read in your own language.




এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

মোহাম্মদীয়া ফাউন্ডেশনের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url