তাফসীরে ইবনে কাসীর - ২২ || সূরা বাকারা - ১২ || তাওহীদ আল উলুহিয়াহ || আল্লাহর অস্তিত্বের প্রমাণ || পাঁচটি বিষয়ের নসিহাত







 یٰۤاَیُّهَا النَّاسُ اعۡبُدُوۡا رَبَّکُمُ الَّذِیۡ خَلَقَکُمۡ وَ الَّذِیۡنَ مِنۡ قَبۡلِکُمۡ لَعَلَّکُمۡ تَتَّقُوۡنَ ﴿ۙ۲۱    الَّذِیۡ جَعَلَ لَکُمُ الۡاَرۡضَ فِرَاشًا وَّ السَّمَآءَ بِنَآءً ۪ وَّ اَنۡزَلَ مِنَ السَّمَآءِ مَآءً فَاَخۡرَجَ بِهٖ مِنَ الثَّمَرٰتِ رِزۡقًا لَّکُمۡ ۚ فَلَا تَجۡعَلُوۡا لِلّٰهِ اَنۡدَادًا وَّ اَنۡتُمۡ تَعۡلَمُوۡنَ ﴿۲۲

২১। হে মানববৃন্দ! তোমরা তোমাদের রবের ইবাদাত কর যিনি তোমাদেরকে এবং তোমাদের পূর্ববর্তীদেরকে সৃষ্টি করেছেন, যেন তোমরা ধর্মভীরু হও।  ২২। যিনি তোমাদের জন্য ভূতলকে শয্যা ও আকাশকে ছাদ স্বরূপ সৃষ্টি করেছেন এবং আকাশ হতে বারি বর্ষন করেন, অতঃপর তদ্বারা তোমাদের জন্য উপজীবিকা স্বরূপ ফলপুঞ্জ উৎপাদন করেন, অতএব তোমরা আল্লাহর সমকক্ষ স্থির করনা এবং তোমরা এটা অবগত আছ।

তাওহীদ আল উলুহিয়াহ

       
এখান থেকে আল্লাহ তা'আলার তাওহীদ বা একাত্মবাদ ও তাঁর উলুহিয়াতের বর্ণনা শুরু হচ্ছে। তিনি স্বীয় বান্দাগণকে অস্তিত্বহীনতা থেকে অস্তিত্বের দিকে টেনে এনেছেন, তিনিই প্রত্যেক প্রকাশ্য ও অপ্রকাশ্য নি'আমাত দান করেছেন, তিনিই যমীনকে বিছানা স্বরূপ বানিয়েছেন এবং আকাশকে ছাদ করেছেন। যেমন অন্য আয়াতে আছেঃ

 وَ جَعَلۡنَا السَّمَآءَ سَقۡفًا مَّحۡفُوۡظًا ۚۖ وَّ هُمۡ عَنۡ اٰیٰتِهَا مُعۡرِضُوۡنَ ﴿۳۲

এবং আকাশকে করেছি সুরক্ষিত ছাদ; কিন্তু তারা আকাশস্থিত নিদর্শনাবলী হতে মুখ ফিরিয়ে নেয়। (সূরা আম্বিয়া, ২১ : ৩২) আকাশ হতে বারিধারা বর্ষণ করার অর্থ হচ্ছে মেঘমালা হতে বৃষ্টি বর্ষণ করা এমন সময়ে যখন মানুষ ওর পূর্ণ মুখাপেক্ষী থাকে। অতঃপর ঐ পানি থেকে বিভিন্ন প্রকারের ফলমূল উৎপন্ন করা, যা থেকে মানুষ এবং জীবজন্তু উপকৃত হয়, যেমন কুরআন মাজীদের বিভিন্ন জায়গায় এর বর্ণনা এসেছে। এক স্থানে মহান আল্লাহ বলেনঃ

 اَللّٰهُ الَّذِیۡ جَعَلَ لَکُمُ الۡاَرۡضَ قَرَارًا وَّ السَّمَآءَ بِنَآءً وَّ صَوَّرَکُمۡ فَاَحۡسَنَ صُوَرَکُمۡ وَ رَزَقَکُمۡ مِّنَ الطَّیِّبٰتِ ؕ ذٰلِکُمُ اللّٰهُ رَبُّکُمۡ ۚۖ فَتَبٰرَکَ اللّٰهُ رَبُّ الۡعٰلَمِیۡنَ ﴿۶۴

তোমাদের জন্য পৃথিবীকে করেছেন বাসোপযোগী এবং আকাশকে করেছেন ছাদ এবং তোমাদের আকৃতি করেছেন উৎকৃষ্ট এবং তোমাদেরকে দান করেছেন উৎকৃষ্ট রিক। এই তো আল্লাহ, তোমাদের রাব্ব। কত মহান জগতসমূহের রাব্ব আল্লাহ! (সূরা মু'মিন, ৪০: ৬৪) 
       
উপরোক্ত আয়াতের মর্ম হচ্ছে এই যে, আল্লাহই হলেন সবকিছুর স্রষ্টা, আহারদাতা, মালিক ও সংরক্ষণকারী; বর্তমানে, অতীতে এবং ভবিষ্যতেও। অতএব একমাত্র তিনিই ইবাদাত পাবার যোগ্য এবং তাঁর সাথে অন্য কেহকে কিংবা কোন কিছুকে শরীক করা যাবেনা। এ কারণেই আল্লাহ তা'আলা বর্ণনা করেন 'অতএব তোমরা আল্লাহর সমকক্ষ স্থির করনা"। এ জন্য আল্লাহ তা'আলা বলেনঃ

 ذٰلِکَ الۡکِتٰبُ لَا رَیۡبَ ۚۖۛ فِیۡهِ ۚۛ هُدًی لِّلۡمُتَّقِیۡنَ ۙ﴿۲

আল্লাহ তা'আলার জন্য অংশীদার স্থাপন করনা, তোমরা তো বিলক্ষণ জান ও বুঝ। (সূরা বাকারাহ, ২ : ২২)

সহীহ বুখারী ও মুসলিমে রয়েছে, ইবন মাসউদ (রাঃ) জিজ্ঞেস করেন : 'হে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম! সবচেয়ে বড় পাপ কোনটি?” তিনি উত্তরে বলেনঃ 'সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ তা'আলার সঙ্গে অংশীদার স্থাপন করা।' (ফাতহুল বারী ৮/৬৫০, মুসলিম ১/৯০) আর একটি হাদীসে আছে, গু'আগকে (রাঃ) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম জিজ্ঞেস করেন 'বান্দার উপরে আল্লাহর হক কি তা কি তুমি জান? (তা হচ্ছে এই যে,) তাঁর ইবাদাত করবে এবং তাঁর ইবাদাতে অন্য কেহকেও অংশীদার করবেনা। (ফাতহুল বারী ১৩/৩৫৯, মুসলিম ১/৫৯) অন্য একটি হাদীসে আছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ

'তোমাদের মধ্যে যেন কেহ এ কথা না বলে যে, যা আল্লাহ একা চান ও অমুক চায়।' বরং যেন এই কথা বলে যে, যা কিছু আল্লাহ একাই চান অতঃপর অমুক চায়। (আহমাদ ৫/৩৮৪, ৩৯৪, ৩৯৮)

পাঁচটি বিষয়ের নসিহাত

ইমাম আহমাদ (রহঃ) হারিশ আল আসআরী (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ
       
আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'আলা ইয়াহইয়া ইবনে যাকারিয়াকে (আঃ) পাঁচটি বিষয় বাস্তবায়িত করার আদেশ দেন এবং বনী ইসরাঈলকেও তা পালন করার জন্য তাগাদা দিতে আদেশ করেন। কিন্তু ইয়াহইয়া (আঃ) সেই আদেশ পালন করতে একটু দেরী করেন। ঈসা (আঃ) ইয়াহইয়াকে (আঃ) বলেনঃ আপনাকে এবং বনী ইসরাঈলকে পাঁচটি বিষয় পালন করার জন্য আল্লাহ আদেশ করেছিলেন, সুতরাং হয় আপনি তাদের আদেশ করুন, না হয় আমিই সেই আদেশ পালন করছি। ইয়াহইয়া (আঃ) বললেনঃ হে আমার ভাই! আপনি যদি আমার আগে তা পালন করেন তাহলে আমি আশংকা করছি যে, আল্লাহ আমাকে শাস্তি দিবেন অথবা আমার পায়ের নিচের মাটি ধ্বসে যাবে। অতঃপর ইয়াহইয়া (আঃ) বানী ইসরাঈলকে বাইতুল মুকাদ্দাসে একত্রিত করলেন, যতক্ষণ না মাসজিদ কানায় কানায় পূর্ণ হল। তিনি মাসজিদের বারান্দায় এসে আল্লাহর প্রশংসা করলেন এবং বললেনঃ আল্লাহ আমাকে পাঁচটি বিষয় বাস্তবায়নের আদেশ করেছেন এবং তোমাদেরকেও তা পালন করতে বলার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন। প্রথমটি হল একমাত্র আল্লাহর ইবাদাত করবে এবং তাঁর সাথে কেহকে শরীক করবেনা। এর উদাহরণ হল, যেমন কোন এক লোক তার নিজ উপার্জিত অর্থ দ্বারা একটি গোলাম ক্রয় করল, গোলামটি তার মালিকের জন্য কাজ করতে শুরু করল, কিন্তু পরিশ্রমের ফসল অন্য লোককে দিয়ে দিল। তোমাদের মধ্যে এমন কেহ আছে কি যে তার গোলামের এরূপ কাজকে সমর্থন করবে? আল্লাহ তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন এবং তিনিই তোমাদের আহার যোগান দিচ্ছেন। অতএব তাঁরই ইবাদাত কর এবং তাঁর সাথে কোন কিছুকে শরীক করনা। আর আমি তোমাদেরকে সালাত আদায় করার নির্দেশ দিচ্ছি, কারণ আল্লাহ তাঁর মুখমন্ডল তোমাদের মুখমন্ডলের দিকে ফিরিয়ে রেখেছেন, যতক্ষণ না তাঁর গোলাম/বান্দারা তাঁর থেকে মুখ ফিরিয়ে না নেয়। অতএব যখন তোমরা সালাত আদায় করবে তখন তোমরা এদিক ওদিক তাকাবেনা। আমি তোমাদেরকে আরও নির্দেশ দিচ্ছি সিয়াম পালন করার। এর উদাহরণ হল এমন যে, একদল লোকের মাঝে এক লোকের কাছে একটি কাপড়ের টুকরায় মৃগ- নাভীর সুগন্ধি লাগানো ছিল, ফলে ঐ দলের সবাই সুগন্ধির ঘ্রাণ পাচ্ছিল। অবশ্যই আল্লাহর কাছে সিয়াম পালনকারীর মুখের গন্ধ মৃগ-নাভীর সুগন্ধির চেয়ে উত্তম। আমি তোমাদেরকে আরও নির্দেশ দিচ্ছি যাকাত প্রদান করতে। এর উদাহরণ হল ঐ ব্যক্তির মত যে শত্রুর হাতে বন্দী হয়েছে, অতঃপর তার হাত দু'টি তার ঘাড়ের সাথে বেঁধে হত্যা করার জন্য নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। সে তাদেরকে বললঃ আমি কি তোমাদেরকে এর পরিবর্তে মুক্তিপণ দিতে পারি? সে তার মুক্তি-পণ বাবদ ছোট-বড় সবকিছু দিতে থাকল যতক্ষণ না তারা তাকে ছেড়ে দিল। আমি তোমাদেরকে আরও নির্দেশ দিচ্ছি যে, সব সময় আল্লাহকে স্মরণ করবে। এর ফায়দা হল ঐ ব্যক্তির ন্যায় যাকে তার শত্রু বিরামহীনভাবে পিছু ধাওয়া করছে, অবশেষে সে একটি পরিত্যক্ত দুর্গে আশ্রয় নিল। বান্দা যখন আল্লাহকে স্মরণে রাখে তখন সে সবচেয়ে উত্তম আশ্রয়প্রাপ্ত হয়।
       
অতঃপর হারিস (রাঃ) রাসূল সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে আরও বর্ণনা করেনঃ আমিও তোমাদেরকে পাঁচটি বিষয়ের নাসিহাত করছি। তোমরা সবাই মিলে জামা'আতবদ্ধ হয়ে থাকবে, তোমাদের নেতাদের কথা শুনবে এবং মান্য করবে, হিজরাত করবে এবং আল্লাহর উদ্দেশে জিহাদ করবে। যে এক হাত পরিমানও জামা'আত থেকে দূরে সরে যাবে সে যেন ইসলামী জামা'আতের বন্ধন থেকে সরে গেল, যতক্ষণ না সে জামা'আতের সাথে আবার মিলিত হল। যে জাহিলিয়াতের কোন বাক্য উচ্চারণ করল সে তাদের অন্তর্ভুক্ত হবে, যাদেরকে উপুড় করে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে। সাহাবীগণ (রাঃ) বললেন : হে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম! যদি তারা যাকাত প্রদান করে এবং সিয়াম পালন করে তবুও? তিনি বললেন : যদিও তারা সালাত কায়েম করে, সিয়াম পালন করে এবং নিজেদেরকে মুসলিম বলে দাবী করে। সুতরাং মুসলিমদেরকে তাদের নামে ডাকবে যেমনটি আল্লাহ বলেন : 'মুসলিম' আল্লাহয় বিশ্বাসী বান্দা। (আহমাদ ৪/১৩০ )

এ হাদীসটি হাসান। এই আয়াতের মধ্যেও এটাই বর্ণিত আছে যে, আল্লাহ তা'আলা তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন, তিনিই তোমাদেরকে আহার্য দিচ্ছেন। সুতরাং তাঁরই ইবাদাত কর। তাঁর সঙ্গে কেহকেও অংশীদার করনা। এ আয়াত দ্বারা সাব্যস্ত হচ্ছে যে, ইবাদাতের মধ্যে আল্লাহ তা'আলার একাত্মবাদের পূর্ণ খেয়াল রাখা উচিত। সমগ্র ইবাদাতের যোগ্য একমাত্র তিনিই।

আল্লাহর অস্তিত্বের প্রমাণ

ইমাম রাযী (রহঃ) প্রভৃতি মনীষীগণ আল্লাহ তা'আলার অস্তিত্বের উপরেও এই আয়াত দ্বারা প্রমাণ গ্রহণ করেছেন এবং প্রকৃত পক্ষে এই আয়াতটি আল্লাহ তা'আলার অস্তিত্বের উপরে খুব বড় দলীল। আকাশ ও পৃথিবীর বিভিন্ন আকার, বিভিন্ন রং, বিভিন্ন স্বভাব এবং বিভিন্ন উপকারের প্রাণীসমূহ, ওদের সৃষ্টিকর্তার অস্তি ত্ব, তাঁর ব্যাপক ক্ষমতা ও নৈপুণ্য এবং তাঁর বিরাট সাম্রাজ্যের সাক্ষ্য বহন করছে।
        
কোন এক বেদুঈনকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল : 'আল্লাহ যে আছে তার প্রমাণ কি?' সে উত্তরে বলেছিল : 'সুবহানাল্লাহ! উটের বিষ্ঠা দেখে উট আছে এর প্রমাণ পাওয়া যায়, পায়ের চিহ্ন দেখে পথিকের পথ চলার প্রমাণ পাওয়া যায়; তাহলে এই যে বড় বড় নক্ষত্র বিশিষ্ট আকাশ, বহু পথ বিশিষ্ট যমীন, বড় বড় ঢেউ বিশিষ্ট সমুদ্র কি সেই মহাজ্ঞানী ও সূক্ষ্মদর্শী আল্লাহর অস্তিত্বের প্রমাণ দেয়না? (আর রাযী ২/৯১)

আবূ নুয়াস (রহঃ) এই জিজ্ঞাস্য বিষয় সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হয়ে বলেছিলেনঃ 'আকাশ হতে বৃষ্টি বর্ষিত হওয়া ও তা হতে বৃক্ষরাজি সৃষ্টি হওয়া এবং তরতাজা শাখার উপর সুস্বাদু ফলের অবস্থান আল্লাহ তা'আলার অস্তিত্ব এবং তাঁর একাত্মবাদের দলীল হওয়ার জন্য যথেষ্ট। ইব্‌ন মুআয (রহঃ) বলেন : 'আফসোস! আল্লাহ তা'আলার অবাধ্যতা এবং তাঁর সত্ত্বাকে অবিশ্বাস করার উপর মানুষ কি করে সাহসিকতা দেখাচ্ছে অথচ প্রত্যেক জিনিসই সেই বিশ্বরবের অস্তি ত্ব এবং তাঁর অংশীবিহীন হওয়ার উপর সাক্ষ্য প্রদান করছে!' অতএব যারা আকাশের দিকে তাকিয়ে উহার বিশালতা, প্রশস্ততা এবং বিভিন্ন গ্রহ-নক্ষত্রের ব্যাপারে চিন্তা-ভাবনা করে, যার কিছু স্থির এবং কিছু চলনশীল, যারা সমুদ্রের প্রতি লক্ষ্য করে যার উভয় দিক ভূমি দ্বারা পরিবেষ্টিত, যার পাহাড়সমূহ ভূমিকে স্থির রাখার জন্য মাটিতে প্রোথিত তাদের জন্য এতে রয়েছে উপদেশ। আল্লাহ তা'আলা বলেনঃ

 اَلَمۡ تَرَ اَنَّ اللّٰهَ اَنۡزَلَ مِنَ السَّمَآءِ مَآءً ۚ فَاَخۡرَجۡنَا بِهٖ ثَمَرٰتٍ مُّخۡتَلِفًا اَلۡوَانُهَا ؕ وَ مِنَ الۡجِبَالِ جُدَدٌۢ بِیۡضٌ وَّ حُمۡرٌ مُّخۡتَلِفٌ اَلۡوَانُهَا وَ غَرَابِیۡبُ سُوۡدٌ ﴿۲۷   وَ مِنَ النَّاسِ وَ الدَّوَآبِّ وَ الۡاَنۡعَامِ مُخۡتَلِفٌ اَلۡوَانُهٗ کَذٰلِکَ ؕ اِنَّمَا یَخۡشَی اللّٰهَ مِنۡ عِبَادِهِ الۡعُلَمٰٓؤُا ؕ اِنَّ اللّٰهَ عَزِیۡزٌ غَفُوۡرٌ ﴿۲۸

পাহাড়ের মধ্যে আছে বিচিত্র বর্ণের ফল - শুভ্র, লাল ও নিকষ কালো। এভাবে রং বেরংয়ের মানুষ, জানোয়ার ও চতুস্পদ জন্তু রয়েছে। আল্লাহর বান্দাদের মধ্যে যারা জ্ঞানী তারাই তাঁকে ভয় করে। (সূরা ফাতির, ৩৫ : ২৭-২৮)
       
অন্যান্য বিজ্ঞজনের বাক্য হচ্ছে: 'তোমরা আকাশের দিকে দৃষ্টিপাত কর, ওর উচ্চতা, প্রশস্ততা, ওর ছোট বড় উজ্জ্বল তারকারাজির প্রতি লক্ষ্য কর, ওগুলির ঔজ্জ্বল্য ও জাঁকজমক, ওদের আবর্তন ও স্থিরতা এবং ওদের প্রকাশ পাওয়া ও গোপন হওয়ার প্রতি দৃষ্টি নিক্ষেপ কর। অতঃপর সমুদ্রের দিকে চেয়ে দেখ যার ঢেউ খেলতে রয়েছে ও পৃথিবীকে ঘিরে আছে। তারপর উঁচু নীচু পাহাড়গুলির দিকে দেখ যা যমীনের বুকে প্রোথিত রয়েছে এবং ওকে নড়তে দেয়না, ওদের রং ও আকৃতি বিভিন্ন। বিভিন্ন প্রকারের সৃষ্ট বস্ত্রর প্রতি দৃষ্টি নিবদ্ধ কর, আবার ক্ষেত্র ও বাগানসমূহকে সবুজ সজীবকারী প্রবাহমান সুদৃশ্য নদীগুলির দিকে তাকাও, ক্ষেত্র ও বাগানের সবজীগুলি এবং ওদের নানা প্রকার ফল, ফুল এবং সুস্বাদু মেওয়াগুলির কথা চিন্তা কর যে, মাটিও এক এবং পানিও এক, কিন্তু আকৃতি, গন্ধ, রং, স্বাদ এবং উপকার দান পৃথক পৃথক। এসব কারিগরী কি তোমাদেরকে বলে দেয়না যে, ওদের একজন কারিগর আছেন? এসব আবিষ্কৃত জিনিস কি উচ্চরবে বলেনা যে, ওদের আবিষ্কারক কোন একজন আছেন? এ সমুদয় সৃষ্টজীব কি স্বীয় সৃষ্টিকর্তার অস্তিত্ব, তাঁর সত্ত্বা ও একাত্মবাদের সাক্ষ্য প্রদান করেনা? এ হচ্ছে দলীল যা মহা সম্মানিত ও মহা মর্যাদাবান আল্লাহ স্বীয় সত্ত্বাকে স্বীকার করার জন্য প্রত্যেক চক্ষুর সামনে রেখে দিয়েছেন যা তাঁর ব্যাপক ক্ষমতা, পূর্ণ নৈপুণ্য, অদ্বিতীয় রাহমাত, অতুলনীয় দান এবং অফুরন্ত অনুগ্রহের উপর সাক্ষ্য দান করার জন্য যথেষ্ট। আমরা স্বীকার করছি যে, তিনি ছাড়া অন্য কোন পালনকর্তা, সৃষ্টিকর্তা এবং রক্ষাকর্তা নেই। তিনি ছাড়া কোন সত্য উপাস্যও নেই এবং নিঃসন্দেহে তিনি ছাড়া সাজদাহর হকদারও আর কেহ নেই।





*************************************
Thank you for visiting the site. If you like the article, share it on social media to invite other Vines to the path of truth and justice. Click on OUR ACTION PLAN button to know about activities, goals and objectives of Mohammadia Foundation and to participate in the service of religion and humanity.
Almost all articles on this website are written in Bengali. But you can also read it in your language if you want. Click the “ভাষা বেছে নিন” button at the bottom of the website to read in your own language.



এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

মোহাম্মদীয়া ফাউন্ডেশনের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url