মাসলা মাসায়েল- ২২ || উম্মী ব্যক্তির নামাজের পদ্ধতি || বৃদ্ধ, মূর্খ, স্মরণশক্তিহীন ব্যক্তির নামাজ ||





উম্মী ব্যক্তির নামাজের পদ্ধতি


প্রশ্নঃ ২২. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, মুহতারম,,আমার মা বৃদ্ধ ,সে কোন লেখাপড়া করেনি সে নামাজ পড়তে চায় কিন্তু নামাজের সূরা কেরাত দোয়া দরুদ কোন কিছুই বলতে পারেনা আমার প্রশ্ন হল আমার মা এখন কিভাবে নামাজ আদায় করবে আমার মায়ের জন্য কি নামাজ পড়ার কোন কিছু ছাড় আছে? জানালে খুবই উপকৃত হতাম।

বৃদ্ধ, মূর্খ, স্মরণশক্তিহীন ব্যক্তির নামাজ

উত্তর

و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم

সম্মানিত প্রশ্নকারী!
ইসলাম ধর্মকে আল্লাহ তায়ালা সহজ এবং স্বভাবজাত ধর্ম হিসেবে পাঠিয়েছেন। আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন-

وَمَا جَعَلَ عَلَیۡکُمۡ فِی الدِّیۡنِ مِنۡ حَرَجٍ

তিনি দীনের ব্যাপারে তোমাদের ওপর কোন কঠোরতা আরোপ করেননি।সুরা হজ:৭৮
দ্বিনের সহজতার ব্যাপারে হাদিস শরীফে রাসূলুল্লাহ সা. ইরশাদ করেন,

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِنَّ هَذَا الدِّينَ يُسْرٌ وَلَنْ يُشَادَّ الدِّينَ أَحَدٌ إِلَّا غَلَبَهُ فَسَدِّدُوا وَقَارِبُوا وَأَبْشِرُوا وَيَسِّرُوا وَاسْتَعِينُوا بِالْغَدْوَةِ وَالرَّوْحَةِ وَشَيْءٍ مِنْ الدَّلْجَةِ

আবু হুরায়রা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেনঃ এই দ্বীন সহজ, যে কেউ দ্বীনের ক্ষেত্রে কঠিন পন্থা অবলম্বন করবে, সে দ্বীন পালনে ব্যর্থ হয়ে যাবে। অতএব তোমরা সোজা পথে চল, পরিপূর্ণতার কাছাকাছি থাকতে চেষ্টা কর, সুসংবাদ দাও, সহজ পন্থা অবলম্বন কর, সকাল সন্ধ্যা এবং কিছু রাত পর্যন্ত ইবাদতে থেকে সাহায্য প্রার্থনা কর।
والإنسان إذا لم يكن يقرأ ولا يكتب ، فالواجب أن يتعلم ما يقوله في صلاته وكيفية الصلاة ، وكونه لا يقرأ ولا يكتب لا يمنع من ذلك ؛ لأن هذا أمر سهل والحمد لله ، فهؤلاء الصحابة رضوان الله عليهم أكثرهم لم يكن يقرأ ولا يكتب ، ومع ذلك كانوا يحسنون كيف يصلون .

কোনো মানুষ যদি কুরআন পড়তে বা লিখতে না পারে, (যাকে শরীয়তের ভাষায় উম্মি বলে) তবে তার জন্য আবশ্যক হলো, নামাজের পদ্ধতি এবং নামাজে পঠিত বিষয়গুলো দ্রুত শিখে নেওয়া। লেখাপড়া না জানা নামাজ শেখার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধক নয়। কেননা আলহামদুলিল্লাহ বিষটি অত্যন্ত সহজ। রাসূলুল্লাহ সা. এর অভিকাংশ সাহাবীই পড়া লেখা জানতেন না, এতদ্বসত্ত্বেও তারা কীভাবে সুন্দর ও উত্তমভাবে নামাজ আদায় করতেন?
أنه يصلي ، فإذا وصل إلى موضع القراءة فإنه يسبح الله ، ويحمده ، ويكبره ، ويهلله ، أي يقول : سبحان الله ، والحمد لله ، والله أكبر ولا إله إلا الله .

এজাতীয় মুসল্লিদের ক্ষেত্রে বিধান হলো, তিনি নামাজের নিয়ত বেঁধে নামাজ শুরু করবেন।তারপর কেরাতের স্থানে কেবল সুবহানাল্লাহ, আলহামদুল্লিহ, আল্লাহু আকবার, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু বলবে।

হাদিস শরিফে হজরত রিফাআ ইবনে রাফি (রাযিঃ) থেকে বর্ণনা যে আছে যে,একদিন রাসূল (ﷺ) মসজিদে বসা ছিলেন। আমরাও তাঁর সঙ্গে বসা ছিলাম.... তারপর তিনি বললেন, 

فإن كان معك قرآن فاقرأ وإلا فاحمد الله وكبره وهلله

.... কুরআনের কিছু যদি মুখস্থ থাকে তবে তা পড়বে। তা না থাকলে আলহামদুলিল্লাহ, আল্লাহু আকবার ও লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ পাঠ করবে।
সম্মানিত প্রশ্নকারী! তাই আপনাদের জন্য করণীয় হলো, আপনার মাকে যথাসম্ভব নামাজের জন্য যথেষ্ঠ হয় এই পরিমাণ কেরাত তাকে শিখিয়ে দিবেন। তার আগ পর্যন্ত তিনি উপরে বর্ণিত পদ্ধতিতেই নামাজ আদায় করবেন। ইনশাআল্লহ আল্লাহ তায়ালা তার নামাজ কবুল করে নিবেন।

والله اعلم بالصواب


উত্তর দিয়েছেনঃ মুফতি সাইদুজ্জামান কাসেমি
শিক্ষক, জামিয়া ইসলামিয়া ইবরাহিমিয়া দারুল উলুম মেরাজনগর, কদমতলী, ঢাকা।




****************************************
>>> Welcome, You are now on Mohammadia Foundation's Website. Please stay & Tune with us>>>

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

মোহাম্মদীয়া ফাউন্ডেশনের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url