মা’আরেফুল কোরআন - ৪৫ || সূরা আল-বাকারাহ, ১৩৭-১৩৮ || নবী ও রসূলের যে কোন রকম মনগড়া প্রকারভেদই পথভ্রষ্টতা






بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ
سورة البقرة

সূরা আল-বাকারাহ আয়াতঃ ১৩৭-১৩৮


فَاِنۡ اٰمَنُوۡا بِمِثۡلِ مَاۤ اٰمَنۡتُمۡ بِهٖ فَقَدِ اهۡتَدَوۡا ۚ وَ اِنۡ تَوَلَّوۡا فَاِنَّمَا هُمۡ فِیۡ شِقَاقٍ ۚ فَسَیَکۡفِیۡکَهُمُ اللّٰهُ ۚ وَ هُوَ السَّمِیۡعُ الۡعَلِیۡمُ ﴿۱۳۷   صِبۡغَۃَ اللّٰهِ ۚ وَ مَنۡ اَحۡسَنُ مِنَ اللّٰهِ صِبۡغَۃً ۫ وَّ نَحۡنُ لَهٗ عٰبِدُوۡنَ ﴿۱۳۸

সূরা আল-বাকারাহ ১৩৭-১৩৮ নং আয়াতের অর্থ

   
(১৩৭) অতএব তারা যদি ঈমান আনে তোমাদের ঈমান আনার মত, তবে তারা সুগৰ পাবে। আর যদি মুখ ফিরিয়ে নেয় তবে তারাই হঠকারিতার রয়েছে। সুতরাং তাদের বিরুদ্ধে আপনার জন্য আল্লাহই যথেষ্ট। তিনি শ্রবণকারী, মহাজ্ঞানী। (১৩৮) আমরা আল্লাহর রঙ গ্রহণ করেছি। আল্লাহর রঙ-এর চাইতে উত্তম রঙ আর কার হতে পারে? আমরা তাঁরই ইবাদত করি।

অভিধান ও অলংকার

অভিধান ও অলংকার اَلشِقَاقُ -বায়দাভী বলেন, এটা হলো বিরোধ ও শত্রুতা। সুতরাং সমস্ত বিরোধীই তাদের নিজ নিজ অবস্থানে বিদ্যমান। اَلصِّبْغَةُ - شق ‘সিবগুন’ থেকে উদ্ভূত। صبغ হলো - রঙের দরুন এক অবস্থা থেকে অন্য অবস্থায় প্রত্যাবর্তন।

সূরা আল-বাকারাহ ১৩৭-১৩৮ নং আয়াতের তাফসীরের সার-সংক্ষেপ

অতএব, (পূর্ববর্তী বর্ণনায় যখন সত্যধর্ম ইসলামেই সীমাবদ্ধ বলে প্রমাণিত হয়েছে, তখন) যদি তারাও (ইহুদী ও খৃস্টানরাও) তেমন ঈমান আনে, যেমন তোমরা (মুসলমানরা) ঈমান এনেছ, তবে তারাও সুপথ পাবে। আর যদি তারা (এ থেকে) মুখ ফিরিয়ে নেয়, তবে (তোমরা তাদের বিমুখতায় বিস্মিত হয়ো না। কারণ,) তারা (সর্বদাই) বিরুদ্ধাচরণে লিপ্ত রয়েছে। এখন (তাদের বিরুদ্ধাচরণের ফলে কোনরূপ বিপদাশঙ্কা থাকলে জেনে নিন,) আপনার পক্ষ থেকে আল্লাহ্ তা’আলাই যথেষ্ট। (আপনার ও তাদের কথাবার্তা) তিনি শ্রবণ করেন এবং (আপনার ও তাদের আচরণ) জানেন (আপনার চিন্তা-ভাবনা করতে হবে না)।
   
(হে মুসলমানগণ! বলে দাও যে, ইতিপূর্বে তোমাদের উত্তরে আমরা বলেছিলাম, ’আমরা ইবরাহীমের ধর্মে আছি’ এর স্বরূপ এই যে,) আমরা (ধর্মের) ঐ অবস্থায় থাকব, যাতে আল্লাহ্ আমাদের রাঙিয়ে দিয়েছেন (এবং তা রঙের মত আমাদের শিরা-উপশিরায় ভরে দিয়েছেন)। অন্য আর কে আছে, যার রাঙিয়ে দেওয়ার অবস্থা আল্লাহর (রাঙিয়ে দেওয়ার অবস্থার) চাইতে উত্তম হবে? (অন্য কেউ যখন এমন নেই, তখন আমরা অন্য কারও ধর্ম অবলম্বন করিনি এবং এ কারণেই) আমরা তাঁরই দাসত্ব অবলম্বন করেছি।

সূরা আল-বাকারাহ ১৩৭-১৩৮ নং আয়াতের আনুষঙ্গিক জ্ঞাতব্য বিষয়

ঈমানের সংক্ষিপ্ত ও পূর্ণ ব্যাখ্যা

 فَإِنْ آمَنُوا بِمِثْلِ مَا آمَنْتُمْ بِهِ (যদি তারা তদ্রূপ ঈমান আনে, যেরূপ তোমরা ঈমান এনেছ) সূরা বাকারার প্রথম থেকে এ পর্যন্ত ঈমানের স্বরূপ কোথাও সংক্ষেপে এবং কোথাও বিস্তারিতভাবে বর্ণিত হয়েছে। এ আয়াতের বর্ণনা সংক্ষিপ্ত হলেও তাতে বিশদ বিবরণ ও ব্যাখ্যার প্রতি ইঙ্গিত নিহিত রয়েছে। কেননা, ’তোমরা ঈমান এনেছ’ বাক্যে রসূলুল্লাহ (সা) ও সাহাবায়ে কেরামকে সম্বোধন করা হয়েছে। আয়াতে তাঁদের ঈমানকে আদর্শ ঈমানের মাপকাঠি সাব্যস্ত করে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যে, আল্লাহর কাছে গ্রহণযোগ্য ও স্বীকৃত ঈমান হচ্ছে সে রকম ঈমান, যা রাসূলুল্লাহ্ (সা)-এর সাহাবায়ে কেরাম অবলম্বন করেছেন। যে ঈমান ও বিশ্বাস এ থেকে চুল পরিমাণও ভিন্ন; তা আল্লাহর কাছে গ্রহণযোগ্য নয়। এর ব্যাখ্যা এই যে, যে সব বিষয়ের উপর তাঁরা ঈমান এনেছেন তাতে হ্রাস-বৃদ্ধি হতে পারবে না। তাঁরা যেরূপ নিষ্ঠা ও আন্তরিকতার সাথে ঈমান এনেছেন, তাতেও প্রভেদ থাকতে পারবে না। নিষ্ঠায় পার্থক্য হলে তা ’নিফাক’ তথা কপট বিশ্বাসে পর্যবসিত হবে। আল্লাহর সত্তা, গুণাবলী, ফেরেশতা, নবী-রসূল, আল্লাহর কিতাব ও এ সবের শিক্ষা সম্বন্ধে যে ঈমান ও বিশ্বাস রসূলুল্লাহ (সা) অবলম্বন করেছেন, একমাত্র তাই আল্লাহর কাছে গ্রহণযোগ্য। এ সবের বিপরীত ব্যাখ্যা করা অথবা ভিন্ন অর্থ নেওয়া আল্লাহর কাছে গ্রহণযোগ্য নয়। রসূলুল্লাহ্ (সা)-এর উক্তি ও কর্মের মাধ্যমে ফেরেশতা ও নবী-রসূলগণের যে মর্তবা, মর্যাদা ও স্থান নির্ধারিত হয়েছে, তা হ্রাস করা অথবা বাড়িয়ে দেওয়াও ঈমানের পরিপন্থী।

এ ব্যাখ্যার ফলে কতিপয় ভ্রান্ত সম্প্রদায়ের ঈমানের ত্রুটি সুস্পষ্ট হয়ে উঠেছে। তারা ঈমানের দাবিদার; কিন্তু ঈমানের স্বরূপ সম্পর্কে সম্পূর্ণ অজ্ঞ। ঈমানের মৌখিক দাবি মূর্তিপূজক, মুশরিক, ইহুদী, খৃস্টানরাও করত এবং এর প্রতিটা যুগে ধর্মভ্রষ্ট বিপথগামীরাও করছে। যেহেতু আল্লাহ্, রসূল, ফেরেশতা, কিয়ামত-দিবস ইত্যাদির প্রতি তাদের ঈমান তেমন নয়, যেমন রসূলুল্লাহ (সা)-এর ঈমান, এ কারণে আল্লাহর কাছে ধিককৃত ও গ্রহণের অযোগ্য ।

ফেরেশতা ও রসূলের মহত্ত্ব এবং ভালবাসার ভারসাম্য বজায় রাখা কর্তব্য, বাড়াবাড়ি পথভ্রষ্টতা

মুশরিকদের কেউ কেউ ফেরেশতাদের অস্তিত্বকেই স্বীকার করে না, আবার কেউ কেউ তাদেরকে আল্লাহর কন্যা বলে মনে করে। بِمِثْلِ مَا آمَنْتُمْ বলে উপরোক্ত উভয় প্রকার বিশ্বাস খণ্ডন করা হয়েছে। ইহুদী ও খৃষ্টানদের কোন কোন দল পয়গম্বরদের অবাধ্যতা করেছে। এমনকি কোন কোন পয়গম্বরকে হত্যাও করেছে। পক্ষান্তরে কোন কোন দল পয়গম্বরদের সম্মান ও মহত্ত্ব বৃদ্ধি করতে গিয়ে তাঁদের ‘খোদা’ অথবা ’খোদার পুত্র’ অথবা খোদার সমপর্যায়ে নিয়ে স্থাপন করেছে। এ উভয় প্রকার ত্রুটি ও বাড়াবাড়িকেই পথভ্রষ্টতা বলে অভিহিত করা হয়েছে।
   
ইসলামী শরীয়তে রসূলের মহত্ত্ব ও ভালবাসা ফরয তথা অপরিহার্য কর্তব্য। এ ছাড়া ঈমানই শুদ্ধ হয় না। কিন্তু রসূলকে এলেম, কুদরত ইত্যাদি গুণে আল্লাহর সমতুল্য মনে করা পথভ্রষ্টতা ও শিরক। কোরআনে শিরকের স্বরূপ সেরূপই বর্ণিত হয়েছে। অর্থাৎ কোন সিফাত তথা গুণে বা বৈশিষ্ট্যের ক্ষেত্রে অন্যকে আল্লাহর সমতুল্য মনে করা শিরকের অন্তর্ভুক্ত। । نُسَوِّيكُمْ بِرَبِّ الْعَالَمِينَ অর্থও তাই। আজকাল কোন কোন মুসলমান রসূলুল্লাহ্ (সা)-কে  ‘আলেমুল-গায়েব’ ‘আল্লাহর মতই সর্বত্র বিরাজমান’ উপস্থিত ও দর্শক (হাযির ও নাযির) বলেও বিশ্বাস করে। তারা মনে করে যে, এভাবে তারা মহানবী (সা)-এর মহত্ত্ব ও মহব্বত ফুটিয়ে তুলছে। অথচ এটা স্বয়ং রসূলুল্লাহ (সা)-এর নির্দেশ ও আজীবন সাধনার প্রকাশ্য বিরোধিতা। আলোচ্য আয়াতে এসব মুসলমানের জন্যও শিক্ষা রয়েছে। আল্লাহর কাছে মহানবী (সা)-এর মহত্ত্ব ও মহব্বত এতটুকু কাম্য, যতটুকু সাহাবায়ে কেরামের অন্তরে তাঁর প্রতি ছিল। এতে ত্রুটি করাও অপরাধ এবং একে বাড়িয়ে দেওয়াও বাড়াবাড়ি ও পথভ্রষ্টতা।

নবী ও রসূলের যে কোন রকম মনগড়া প্রকারভেদই পথভ্রষ্টতা

এমনিভাবে কোন কোন সম্প্রদায় খতমে নবুয়ত অস্বীকার করে নতুন নবীর আগমনের পথ খুলে দিতে চেয়েছে। তারা কোরআনের সুস্পষ্ট বর্ণনা ’খাতামুন্নাবিয়্যীন’ (সর্বশেষ নবী)-কে উদ্দেশ্য সাধনের পথে প্রতিবন্ধক মনে করে নবী ও রসূলের অনেক মনগড়া প্রকার আবিষ্কার করে নিয়েছে। এসব প্রকারের নাম রেখেছে ’নবী যিল্লী’ (ছায়া-নবী) ’নবী বুরুযী’ (প্রকাশ্য নবী) ইত্যাদি। আলোচ্য আয়াতটি তাদের অবিমৃশ্যকারিতা ও পথভ্রষ্টতাকেও ফুটিয়ে তুলেছে। কারণ রসূলুল্লাহ (সা) রসূলগণের উপর যে ঈমান এনেছেন, তাতে ‘যিল্লী বুরুযী’ বলে কোন নামগন্ধও নেই। সুতরাং এটা পরিষ্কার ধর্মদ্রোহিতা।

আখেরাতের উপর ঈমান সম্পর্কে কোন অপব্যাখ্যা গ্রহণযোগ্য নয়

কিছুসংখ্যক লোকের মস্তিষ্ক ও চিন্তা-ভাবনা শুধু বস্তু ও বস্তুবাচক বিষয়াদির মধ্যেই নিমজ্জিত। অদৃশ্যজগৎ ও পরজগতের বিষয়াদি তাদের মতে অবান্তর ও অযৌক্তিক। তারা এসব ব্যাপারে নিজ থেকে নানাবিধ ব্যাখ্যা করতে প্রবৃত্ত হয় এবং একে দীনের খেদমত বলে মনে করে। তারা এসব জটিল বিষয়কে বোধগম্য করে দিয়েছে বলে মনে করে গর্বও করে। কিন্তু এসব ব্যাখ্যা بِمِثْلِ مَا آمَنْتُمْ بِهِ উক্তির পরিপন্থী হওয়ার কারণে বাতিল ও অগ্রহণযোগ্য। আখেরাতের অবস্থা ও ঘটনাবলী কোরআন ও হাদীসে যেভাবে বর্ণিত হয়েছে, বিনা দ্বিধায় ও বিনা ব্যাখ্যায় তা বিশ্বাস করাই প্রকৃতপক্ষে ঈমান। হাশরের পুনরুত্থানের পরিবর্তে আত্মিক পুনরুত্থান স্বীকার করা এবং আযাব, সওয়াব, আমল, ওজন ইত্যাদি বিষয়ে নিজের পক্ষ থেকে ব্যাখ্যা বর্ণনা করা সবই গোমরাহী ও পথভ্রষ্টতার কারণ।

রসূলুল্লাহ (সা)-এর হেফাযজ্ঞের দায়িত্ব স্বয়ং আল্লাহ্ তা'আলা গ্রহণ করেছেন

فَسَيَكْفِيكَهُمُ اللَّهُ বাক্যে বলা হয়েছে যে, আপনি বিরুদ্ধাচরণকারীদের ব্যাপারে মোটেও চিন্তা করবেন না । আমি স্বয়ং তাদের বুঝে নেব। এ বিষয়টি وَاللَّهُ يَعْصِمُكَ مِنَ النَّاسِ (আল্লাহ্ আপনাকে শত্রুদের কবল থেকে রক্ষা করছেন)- আয়াতে আরও পরিষ্কারভাবে বলে দেওয়া হয়েছে। এতে বলা হয়েছে যে, আল্লাহ্ নিজেই তাদের হাত থেকে আপনাকে হেফাযত করবেন।

দীন ও ঈমানের এক সুগভীর নমুনা রয়েছে, যা মানুষের আকার-অবয়বে বিধৃত হওয়া প্রয়োজন


صِبْغَةَ اللَّهِ পূর্ববর্তী আয়াত مِلَّةَ أَبِيكُمْ إِبْرَاهِيمَ বলে ইসলামকেই ইবরাহীমের ধর্ম বলা হয়েছিল। এ আয়াতে ইসলামকে সরাসরি আল্লাহর ধর্ম আখ্যায়িত করে বলা হয়েছে যে, আল্লাহর ধর্মই প্রকৃতপক্ষে ধর্ম। তবে রূপক অর্থে কোন পয়গম্বরের দিকে সম্বন্ধ করে একে সে পয়গম্বরের ধর্ম বলা হয়। এখানে ধর্মকে صِبْغَةَ (রঙ) বা নমুনা শব্দ দ্বারা ব্যক্ত করে দু’টি বিষয়ের প্রতি ইঙ্গিত প্রদান করা হয়েছে। এতে প্রথমত খৃস্টানদের একটি কুসংস্কারের খণ্ডন করা হয়েছে। কোন সন্তান জন্মগ্রহণ করলে তারা সপ্তম দিনে তাকে রঙীন পানিতে গোসল করাত এবং খতনার পরিবর্তে একেই সন্তানের পবিত্রতা এবং খৃষ্টধর্মের গভীর রঙে রাঙানো বলে মনে করত। আয়াতে বলা হয়েছে যে, পানির এ রঙ ধোয়ার পরেই শেষ হয়ে যায়। খতনা না করার ফলে দেহে যে ময়লা ও অপবিত্রতা থাকে, এ গোসল দ্বারা তা থেকে মুক্ত হওয়া যায় না। কাজেই ধর্ম ও ঈমানের রঙই প্রকৃত রঙ। এ রঙ বাহ্যিক ও আত্মিক পবিত্রতার নিশ্চয়তা দেয় এবং স্থায়ীও থাকে।
   
দ্বিতীয়ত ধর্ম ও ঈমানকে নমুনা বা রঙ বলে ইঙ্গিত করা হয়েছে যে, রঙ বা নমুনা যেমন চোখে দেখা যায়, মু’মিনের ঈমানের লক্ষণও তেমনি আকার-অবয়বে ওঠা-বসায়, চলাফেরায়, কাজে-কর্মে ও অভ্যাস-আচরণে ফুটে ওঠা প্রয়োজন।





*********************************************
Thank you for visiting the site. If you like the article, share it on social media to invite other Vines to the path of truth and justice. Click on OUR ACTION PLAN button to know about activities, goals and objectives of Mohammadia Foundation and to participate in the service of religion and humanity. 
Almost all articles on this website are written in Bengali. But you can also read it in your language if you want. Click the “ভাষা বেছে নিন” button at the bottom of the website to read in your own language.



এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

মোহাম্মদীয়া ফাউন্ডেশনের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url