ঘুষ নেওয়া এবং দেওয়া জঘন্য অপরাধ




ঘুষ নেওয়া এবং দেওয়া জঘন্য অপরাধ


দুর্নীতি বা ঘুষের আদান-প্রদান একটি জঘন্য অন্যায়। দুর্নীতি সুশাসনের জন্য অন্তরায় সৃষ্টি করে। মানুষকে তার প্রাপ্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করে। ঘুষ লেনদেন সাধারণ মানুষের দুর্ভোগের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। ইসলামে ঘুষ লেনদেনের বিরুদ্ধে কঠোর হুঁশিয়ারি করা হয়েছে। ঘুষ হলো এমন একটি প্রক্রিয়া, যা অন্যায়ভাবে আদায় করা হয়। পবিত্র কোরআনের সূরা বাকারার ১৮৮ নম্বর আয়াতে ইরশাদ করা হয়েছে, 'তোমরা নিজেদের মধ্যে একে অন্যের সম্পদ অন্যায়ভাবে গ্রাস কর না এবং মানুষের ধনসম্পত্তির কিয়দংশ জেনেশুনে অন্যায়ভাবে গ্রাস করার উদ্দেশ্যে বিচারকদের কাছে পেশ কর না।'

তিরমিজি শরিফে হজরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) বর্ণিত হাদিসে বলা হয়েছে, রাসূল সাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঘুষদাতা ও ঘুষ গ্রহীতা উভয়কেই অভিসম্পাত করেছেন।

আবু দাউদ ও তিরমিজি শরিফের আরেক হাদিসে ঘুষদাতা ও ঘুষ গ্রহীতার মধ্যে মধ্যস্থতাকারীকেও অভিসম্পাতের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। অর্থাৎ কেউ ঘুষ নিলেই তিনি শুধু রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের অভিসম্পাত ভোগ করবেন তা নয়, যিনি ঘুষ দেবেন এমনকি যিনি মধ্যস্থতা করবেন তিনিও রেহাই পাবেন না।

আমাদের দেশে এমন কোনো সরকারি দফতর নেই যেখানে ঘুষ আদান-প্রদানের অভিযোগ নেই। এসব দফতরে যারা বিভিন্ন দায়িত্বে নিয়োজিত তারা তাদের শ্রমের জন্য বেতন পান। কিন্তু তার পরও তারা সাধারণ মানুষকে তাদের প্রাপ্য সেবা দিতে কার্পণ্য করেন। কোনো কাজে তাদের কাছে গেলে বাড়তি অর্থ দাবি করেন। এটি শুধু অন্যায় নয়, ধর্মীয় দৃষ্টিতে কবিরা গুনাহ। ভুক্তভোগীরা প্রায় সব ক্ষেত্রে বাধ্য হয়ে ঘুষ দেন। কিন্তু এই ঘুষদানের ফলে ঘুষখোররা মনে করে ঘুষ পাওয়া তাদের অধিকার। তারা ঘুষ ছাড়া কোনো কাজ করতে চায় না। যে কারণে কাউকে ঘুষ দেওয়া প্রকারান্তরে ঘুষখোরকে উৎসাহিত করার শামিল।

আমর ইবনুল আস (রা.) থেকে বর্ণিত- তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি, যে জাতির মধ্যে ব্যভিচার সাধারণভাবে ছড়িয়ে পড়ে তারা দুর্ভিক্ষে নিপতিত হয়, আর যে জাতির মধ্যে ঘুষের লেনদেন ব্যাপক আকার ধারণ করে তারা ভয়ভীতি ও সন্ত্রাসের শিকার হয় (মুসনাদে আহমাদ থেকে মিকাতে)। আল্লাহ আমাদের ঘুষ লেনদেনের গুনাহ থেকে দূরে থাকার তাওফিক দান করুন।



এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

মোহাম্মদীয়া ফাউন্ডেশনের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url