ফিরআউনের স্ত্রী আসিয়ার ঈমান প্রকাশ হওয়ার পরে অত্যাচারের কাহিনী

ফিরআউন স্ত্রী আসিয়ার ঈমান

 

আসিয়ার পরিচয়ঃ

পুরো নাম আসিয়া বিনতে মুজাহিম তিনি তৎকালে সবচেয়ে পূণ্যবতি এবং ঈমানওয়ালা দৃঢ়চেতা নারী ছিলেন। তিনি বাদশা ফিরআউনের স্ত্রী অর্থাৎ রাণী ছিলেন। প্রখর বুদ্ধিমত্তা, আভিজাত্য অর্থ-সম্পদে তিনি ছিলেন অতুলনীয়া। ফেরাউনের রাজপ্রাসাদে আল্লাহর নবী মুসা (.)-এর লালন-পালনের ব্যবস্থার মূলে ছিলেন তিনি। পবিত্র কুরআনে এসেছে, ফেরাউনের স্ত্রী বলল, সে [মুসা (.)] আমার তোমার চক্ষুশীতলকারী হবে। তোমরা তাকে হত্যা কোরো না, হয়তো সে আমাদের উপকার করবে কিংবা আমরা তাকে সন্তান হিসেবে গ্রহণ করব, তারা তা অনুধাবন করতে পারেনি। (সুরা : কাসাস, আয়াত : )

 

আসিয়ার ঈমান প্রকাশঃ

হযরত মূসা (:) যখন যাদুকরদের মোকাবেলায় সফল হন এবং যাদুকররা মুসলমান হয়ে যায়, তখন বিবি আসিয়া তাঁর ঈমান প্রকাশ করেন এক আল্লাহর প্রতি ঈমান আনার কথা জানতে পেরে আসিয়ার প্রতি ফেরাউন ক্রোধান্বিত হয়। আল্লাহর প্রতি ঈমান আনায় ফেরাউন আসিয়ার সঙ্গীদের হত্যা করে। অতঃপর ঈমান প্রত্যাহার করতে আসিয়াকে নানাভাবে প্রলোভন দেখাতে থাকে। কিন্তু নিরাশ হয়ে বনি ইসরাঈলের মুমিনদের মতো নিজের জীবনসঙ্গী আসিয়াকেও কঠিন শাস্তি দেওয়া শুরু করে ফেরাউন। বরং আসিয়াকে অন্যদের চেয়ে কঠিন শাস্তি দেওয়া হয়।

 কিছু বর্ণনায় আছে, ফিরআউন তাঁর চার হাত পায়ে পেরেক মেরে বুকের উপর ভারী পাথর রেখে দিল। যাতে তিনি নড়া চড়া পর্যন্ত না করতে পারেন। অবস্থায় তিনি আল্লাহ তাআলার কাছে দোয়া করেনঃ হে আমার পালন কর্তা, আপনি নিজের সান্নিধ্যে জান্নাতে আমার জন্যে একটি গৃহ নির্মান করুণ।

কোন কোন বর্ণনায় আছে, ফিরআউন উপর থেকে একটি ভারী পাথর তাঁর মাথার উপর ফেলে দিতে মনস্থ করলেন। তখন তিনি মহান আল্লাহর দরবারে এই দোয়া করেন- হে আমার পালনকর্তা! আপনার সন্নিকটে জান্নাতে আমার জন্যে একটি গৃহ নির্মাণ করুন, আমাকে ফিরআউন তার দুষ্কর্ম থেকে উদ্ধার করুণ, এবং আমাকে জালিম সম্প্রদায় থেকে মুক্তি দিন। ফলে আল্লাহ তাআলা তাঁর জান কবজ করে নেন এবং পাথরটি নিস্প্রাণ দেহের উপর পতিত হয়। আল্লাহ তাআলা তাঁর দোয়া কবুল করেন এবং দুনিয়াতেই তাঁকে জান্নাতের গৃহ দেখিয়ে দেন। 

এই মহীয়সী নারীর জীবনের শেষ আকাঙ্ক্ষা আল্লাহ তা’আলার পছন্দ হয়। তাই আল্লাহ আসিয়ার আকাঙ্ক্ষার কথা পবিত্র কুরআনে উল্লেখ করেন।

ইরশাদ হয়েছে, আল্লাহ মুমিনদের জন্য ফেরাউনের স্ত্রীর উপমা পেশ করছেন, তিনি বলেন, হে আল্লাহ, আমার জন্য জান্নাতে আপনার কাছে একটি ঘর নির্মাণ করুন এবং আমাকে ফেরাউন তার কার্যাবলি থেকে রক্ষা করুন এবং আমাকে জালেম জনগোষ্ঠী থেকে রক্ষা করুন। (সুরা : তাহরিম, আয়াত : ১১)


এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

মোহাম্মদীয়া ফাউন্ডেশনের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url