ঘুম ও পানাহারের আদব সমূহ




ঘুম পানাহারের আদব সমূহ


প্রশ্ন: আমার এক নানু বললেন যে, কোল বালিশ নিয়ে ঘুমানো না কি ঠিক না-গুনাহ! বোতল দিয়ে পানি পান করা গুনাহ! কাপড় তিন বার ধোয়া, বিসমিল্লাহ বলা নাকি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সুন্নত? কথাগুলো কি সঠিক কথা?

 

 

উত্তর: কাপড় ধোয়ার শুরুতে বিসমিল্লাহ বলা সুন্নত-এটা ছাড়া আপনার নানুর অন্যান্য কথাগুলো কেবলই অনুমান নির্ভর। ইসলামী শরীয়তে সব কথার নূন্যতম কোন ভিত্তি নাই। যাহোক সঠিক কথা হল, কোল বালিশ নিয়ে ঘুমানো এবং বোতলে পানি খাওয়ায় কোন আপত্তি নাই। তবে ঘুম পানি পানের ইসলামী আদব রক্ষা করার চেষ্টা করতে হবে। সেগুলো সংক্ষেপে নিম্নরূপ:

 

ঘুমের আদব সমূহ:

 

) ঘুমের পূর্বে ওযু করা।

) বিছানায় শোয়ার পূর্বে লুঙ্গি বা পরিধেয় বস্ত্রের নিম্নাংশ অথবা অন্য কোন কাপড় দ্বারা বিছানা ঝেড়ে নেয়া।

) ঘুমের পূর্বে যে সকল আমল, জিকির তাসবীহ রয়েছে সেগুলো পড়া। তারপর ঘুমের দুআ পড়ে ঘুমানো।

) ডান দিকে কাঁথ হয়ে শোয়া সুন্নত। পেটের উপর ভর করে উপুড় হয়ে বা বাম দিকে কাঁথ হয়ে ঘুমানো ঠিক নয়। তবে উপুড় হয়ে শয়ন করা বেশি খারাপ বাম দিকে কাঁথ হয়ে শয়ন করার চেয়ে। কারণ, হাদিসে উপুড় হয়ে শয়ন করাকে জাহান্নামীদের শয়ন পদ্ধতি হিসেবে উল্লেখিত হয়েছে। তবে ইচ্ছে করলে কখনও কখনো চিৎ হয়ে শয়ন করা জায়েজ আছে।

 

 

পানাহারের আদব সমূহ:

) পানাহারের শুরুতে বিসমিল্লাহ পাঠ করা

) পানাহার করার প্রথমে বিসমিল্লাহ বলতে ভুলে গেলে মাঝখানে যখনই স্মরণ হবে তখনই বলবে, বিসমিল্লাহি আওওয়ালাহু ওয়া আখিরাহু।

) পানাহার করার পর আল হামদুলিল্লাহ অথবা খাওয়া শেষের দুআ পাঠ করা বলা সুন্নত।

) ডান হাতে পানাহার করা সুন্নত। বাম হাতে পানাহার করা হারাম এবং শয়তানের কাজ।

) পান করার জন্য গ্লাস বা বোতল যাই হোক না তিন ঢোকে পান করা ভালো। তবে প্রয়োজনবোধে এক বা দু ঢোকে পান করাও জায়েজ।

) পানি পান করার সময় গ্লাস বা পানপাত্রে নি:শ্বাস ফেলা ঠিক নয়।

) হেলান দিয়ে পানাহার করা ঠিক নয়।

) বসে পানাহার করা উত্তম। কিন্তু প্রয়োজনবোধে দাঁড়িয়ে বা পথ চলতে চলতে পানাহার করায় কোন আপত্তি নেই। ( বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা ইতোপূর্বে করা হয়েছে)

) খাবার নিচে পড়ে গেলে সম্ভব হলে তা পরিষ্কার করে খাওয়া।

১০) খাবার প্লেট আঙ্গুল পরিষ্কার করে খাওয়া।

১১) খাদ্য-পানীয় অপচয় না করা।

১২) এক প্লেটে কয়েকজন একসাথে বসে খাওয়া তৃপ্তি অর্জন বরকতের কারণ।

১৩) একসাথে খেতে বসলে নিজের দিক থেকে নিয়ে খাওয়া। হাত বাড়িয়ে অন্যের দিক থেকে তার অনুমতি ছাড়া খাওয়া ঠিক নয়।

১৩) বেশি গরম অবস্থায় খাওয়া বরকত চলে যাওয়ার কারণ।

১৪) স্বর্ণ-রৌপ্যের পাত্রে পান করা ঠিক নয়।

১৫) একসাথে একাধিক ব্যক্তি উপস্থিত থাকলে বড় সম্মানিত ব্যক্তির আগে খাওয়া শুরু না করা।

১৬) মেহমান হিসেবে খেতে গেলে খাওয়ার পর মেহমানের জন্য হাদিসে বর্ণিত দুআ পাঠ করা এবং খাওয়া শেষে যথাসম্ভব সেখানে দেরি না করা। অবশ্য মেজবানের পক্ষ থেকে থাকার সম্মতি থাকলে তাতে সমস্যা নেই ইত্যাদি।

 

 

কাপড় ধোয়ার শুরুতে বিসমিল্লাহ বলা:

*   কাপড় ধেয়ার পূর্বে তিনবার নয় বার বিসমিল্লাহ বলাই যথেষ্ট। কেবল কাপড় ধোয়া নয় বরং যে কোন কাজের শুরুতে একবার বিসমিল্লাহ বলা সুন্নত। এতে বান্দার প্রতি আল্লাহর রহমত বরকত নেমে আসে এবং তিনি তাকে সাহায্য করেন। আল্লাহু আলাম।

 

উত্তর প্রদানে:

আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল মাদানি

দাঈ, জুবাইল দাওয়াহ এন্ড গাইডেন্স সেন্টার, সৌদি আরব

 

 

 

****************************************

>>> Welcome, You are now on Mohammadia Foundation's Website. Please stay & Tune with us>>>

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

মোহাম্মদীয়া ফাউন্ডেশনের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url