বিষয় ভিত্তিক আয়াত || আল্লাহকে ছাড়া কাউকে ডাকা সম্পর্কিত আয়াতসমূহ || আল্লাহ ছাড়া কারও কিছু করা ক্ষমতা নেই ||




তোমরা আল্লাহ ছাড়া অন্য কাউকে ডাকবে, যদি তোমরা সত্যবাদী হও


সূরাঃ আল-আন'আম | Al-An'am | سورة الأنعام

সূরাঃ আল-আন'আম, আয়াত ৩৯ 

৩৯ وَ الَّذِیۡنَ کَذَّبُوۡا بِاٰیٰتِنَا صُمٌّ وَّ بُکۡمٌ فِی الظُّلُمٰتِ ؕ مَنۡ یَّشَاِ اللّٰهُ یُضۡلِلۡهُ ؕ وَ مَنۡ یَّشَاۡ یَجۡعَلۡهُ عَلٰی صِرَاطٍ مُّسۡتَقِیۡمٍ

সূরাঃ আল-আন'আম, আয়াত ৩৯ এর অর্থ 

আর যারা আমার আয়াতসমূহকে অস্বীকার করেছে, তারা বোবা ও বধির, অন্ধকারে রয়েছে। আল্লাহ যাকে চান, তাকে পথভ্রষ্ট করেন এবং যাকে চান তাকে সরল পথে অটল রাখেন।

But those who deny Our verses are deaf and dumb within darknesses. Whomever Allah wills - He leaves astray; and whomever He wills - He puts him on a straight path.

সূরাঃ আল-আন'আম, আয়াত ৩৯ এর তাফসীর  

৩৯. আর যারা আমাদের আয়াতসমূহে মিথ্যারোপ করে, তারা বধির ও বোবা, অন্ধকারে রয়েছে।(১)। যাকে ইচ্ছে আল্লাহ বিপথগামী করেন এবং যাকে ইচ্ছে তিনি সরল পথে স্থাপন করেন।

(১) কাতাদা বলেন, এটি কাফেরদের জন্য দেয়া উদাহরণ, তারা অন্ধ ও বধির। তারা হেদায়াতের পথ দেখে না। হেদায়াত থেকে উপকৃত হতে পারে না। হক থেকে তারা বধির। এমন অন্ধকারে তারা অবস্থান করছে যে, সেখান থেকে বের হওয়ার কোন পথ খুঁজে পাচ্ছে না। [তাবারী]

সূরাঃ আল-আন'আম, আয়াত ৪০ 

৪০ قُلۡ اَرَءَیۡتَکُمۡ اِنۡ اَتٰىکُمۡ عَذَابُ اللّٰهِ اَوۡ اَتَتۡکُمُ السَّاعَۃُ اَغَیۡرَ اللّٰهِ تَدۡعُوۡنَ ۚ اِنۡ کُنۡتُمۡ صٰدِقِیۡنَ


সূরাঃ আল-আন'আম, আয়াত ৪০ এর অর্থ 

বল, ‘তোমরা কি বিবেচনা কর, যদি তোমাদের কাছে আল্লাহর আযাব এসে যায় অথবা কিয়ামত আগমন করে, তবে কি তোমরা আল্লাহ ছাড়া অন্য কাউকে ডাকবে, যদি তোমরা সত্যবাদী হও?

Say, "Have you considered: if there came to you the punishment of Allah or there came to you the Hour - is it other than Allah you would invoke, if you should be truthful?" 

সূরাঃ আল-আন'আম, আয়াত ৪০ এর তাফসীর 

৪০. বলুন, তোমরা আমাকে জানাও, যদি আল্লাহর শাস্তি তোমাদের উপর আপতিত হয় বা তোমাদের কাছে কিয়ামত উপস্থিত হয়, তবে কি তোমরা আল্লাহ ছাড়া অন্য কাউকেও ডাকবে, যদি তোমরা সত্যবাদী হও?

সূরাঃ আল-আন'আম, আয়াত ৪১ 

৪১ بَلۡ اِیَّاهُ تَدۡعُوۡنَ فَیَکۡشِفُ مَا تَدۡعُوۡنَ اِلَیۡهِ اِنۡ شَآءَ وَ تَنۡسَوۡنَ مَا تُشۡرِکُوۡنَ

সূরাঃ আল-আন'আম, আয়াত ৪১ এর অর্থ 

বরং তাকেই তোমরা ডাকবে। অতঃপর যদি তিনি চান, যে জন্য তাকে ডাকছ, তা তিনি দূর করে দেবেন। আর তোমরা যা শরীক কর, তা তোমরা ভুলে যাবে। 

No, it is Him [alone] you would invoke, and He would remove that for which you invoked Him if He willed, and you would forget what you associate [with Him].

সূরাঃ আল-আন'আম, আয়াত ৪০ এর তাফসীর 

৪১. না, তোমরা শুধু তাকেই ডাকবে, তোমরা যে দুঃখের জন্য তাকে ডাকছ তিনি ইচ্ছে করলে তোমাদের সে দুঃখ দুর করবেন এবং যাকে তোমরা তার শরীক করতে তা তোমরা ভুলে যাবে।

সূরাঃ আল-আন'আম, আয়াত ৬৩ 

৬৩ قُلۡ مَنۡ یُّنَجِّیۡکُمۡ مِّنۡ ظُلُمٰتِ الۡبَرِّ وَ الۡبَحۡرِ تَدۡعُوۡنَهٗ تَضَرُّعًا وَّ خُفۡیَۃً ۚ لَئِنۡ اَنۡجٰىنَا مِنۡ هٰذِهٖ لَنَکُوۡنَنَّ مِنَ الشّٰکِرِیۡنَ

সূরাঃ আল-আন'আম, আয়াত ৬৩ এর অর্থ 

বল, ‘কে তোমাদেরকে নাজাত দেন স্থল ও সমুদ্রের যাবতীয় অন্ধকার থেকে? তোমরা তাকে ডাক অনুনয় বিনয় করে ও চুপিসারে যে, যদি তিনি আমাদেরকে এ থেকে নাজাত দেন, আমরা অবশ্যই কৃতজ্ঞদের অন্তর্ভুক্ত হব’।

Say, "Who rescues you from the darknesses of the land and sea [when] you call upon Him imploring [aloud] and privately, 'If He should save us from this [crisis], we will surely be among the thankful.' "

সূরাঃ আল-আন'আম, আয়াত ৬৩ এর তাফসীর 

৬৩. বলুন, কে তোমাদেরকে নাজাত দেন স্থলভাগের ও সাগরের অন্ধকার থেকে? যখন তোমরা কাতরভাবে এবং গোপনে তাকে ডাক যে, আমাদেরকে এ থেকে রক্ষা করলে আমরা অবশ্যই কৃতজ্ঞদের অন্তর্ভুক্ত হব।

সূরাঃ আল-আন'আম, আয়াত ৬৪ 

৬৪ قُلِ اللّٰهُ یُنَجِّیۡکُمۡ مِّنۡهَا وَ مِنۡ کُلِّ کَرۡبٍ ثُمَّ اَنۡتُمۡ تُشۡرِکُوۡنَ

সূরাঃ আল-আন'আম, আয়াত ৬৪ এর অর্থ 

বল, ‘আল্লাহ তা থেকে তোমাদেরকে নাজাত দেন এবং প্রত্যেক বিপদ থেকে। তারপর তোমরা শিরক কর’।

Say, "It is Allah who saves you from it and from every distress; then you [still] associate others with Him." 

সূরাঃ আল-আন'আম, আয়াত ৬৪ এর তাফসীর 

৬৪. বলুন, আল্লাহই তোমাদেরকে তা থেকে এবং সমস্ত দুঃখ-কষ্ট থেকে নাজাত দেন। এরপরও তোমরা শির্ক কর।(১)

(১) এখানে ৬৩ ও ৬৪ নং আয়াতদ্বয়ে আল্লাহ তা'আলা মুশরিকদেরকে হুশিয়ার ও তাদের ভ্রান্ত কর্ম সম্পর্কে সতর্ক করার জন্য রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে নির্দেশ দিয়ে বলছেন যে, আপনি তাদেরকে জিজ্ঞেস করুন, স্থল ও সামুদ্রিক ভ্রমণে যখনই বিপদের সম্মুখীন হও এবং সব আরাধ্য দেব-দেবীকে ভুলে গিয়ে একমাত্র আল্লাহকে আহবান কর, কখনো প্রকাশ্যে বিনীতভাবে এবং কখনো মনে মনে স্বীকার কর যে, এ বিপদ থেকে আল্লাহ ছাড়া কেউ উদ্ধার করতে পারবে না। এর সাথে সাথে তোমরা এরূপ ওয়াদাও কর যে, আল্লাহ তা'আলা যদি আমাদেরকে  এ বিপদ থেকে উদ্ধার করেন, তবে আমরা তার কৃতজ্ঞতা অবলম্বন করব, তাকেই কার্যনিবাহী মনে করব, তার সাথে কাউকে অংশীদার করব না।

কেননা বিপদেই যখন কাজে আসে না, তখন তাদের পূজাপাট আমরা কেন করবো? তাই আপনি জিজ্ঞেস করুন যে, এমতাবস্থায় কে তোমাদেরকে বিপদ ও ধ্বংসের কবল থেকে রক্ষা করে? উত্তর নির্দিষ্ট ও জানা। কেননা, তারা এ স্বতঃসিদ্ধতা অস্বীকার করতে পারে না যে, আল্লাহ ছাড়া কোন দেব-দেবী, পীর, ফকীর, ওলী প্রভৃতি এ অবস্থায় তাদের কাজে আসেনি। তাই পরবর্তী আয়াতে আল্লাহ্ তা'আলা স্বয়ং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে আদেশ দিয়েছেন যে, আপনিই বলে দিন, একমাত্র আল্লাহ্ তা'আলাই তোমাদেরকে এ বিপদ থেকে মুক্তি দেবেন, বরং অন্যান্য সব কষ্ট-বিপদ থেকে তিনি উদ্ধার করবেন। কিন্তু এসব সুস্পষ্ট নিদর্শন সত্বেও যখন তোমরা বিপদমুক্ত হয়ে যাও, তখন আবার শির্কে লিপ্ত হয়ে পড়। এটা কেমন বিশ্বাসঘাতকতা ও মূর্খতা!  

সারকথা, কুরআন বর্ণিত প্রতিকারের প্রতি মানুষের দৃষ্টিপাত করা দরকার যে, বিপদাপদ থেকে উদ্ধার পাওয়ার একমাত্র পথ হচ্ছে স্রষ্টার দিকে প্রত্যাবর্তন করা এবং বস্তুগত কলা-কৌশলকেও তার প্রদত্ত নেয়ামত হিসেবে ব্যবহার করা। এছাড়া নিরাপত্তার আর কোন বিকল্প পথ নেই। প্রত্যেক মানুষের বিপদাপদ একমাত্র তিনিই দূর করতে পারেন এবং বিপদের মুহুর্তে যে তাকে আহবান করে, সে তার সাহায্য স্বচক্ষে দেখতে পায়। কেননা, সমগ্র সৃষ্টিজগতের উপর তার শক্তি-সামর্থ্য পরিপূর্ণ এবং সৃষ্টির প্রতি তার দয়াও অসাধারণ। তিনি ছাড়া অন্য কারো এরূপ শক্তি-সামর্থ্য নেই এবং সমগ্র সৃষ্টির প্রতিও এরূপ দয়া-মমতা নেই।
তাফসীরে জাকারিয়া



*********************
সাইটটি ভিজিট করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। আর্টিকেলটি ভাল লাগলে সত্য ও ন্যয়ের পথে অন্য ভাইনদেরকে দাওয়াতের নিয়তে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করুন। মোহাম্মদীয়া ফাউন্ডেশনের কার্যক্রম, লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য সম্পর্কে জানতে এবং দীন ও মানবতার সেবায় অংশ নিতে OUR ACTION PLAN বাটনে ক্লিক করুন।



এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

মোহাম্মদীয়া ফাউন্ডেশনের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url