মসজিদের কিছু আদব || যে আদবগুলো না মানলে নিজের অজান্তেই গোনাহগার হবে ||






মসজিদে যাবেন ছোয়াবের আশায় ফিরবেন গোনাহ নিয়ে


মসজিদ একটি পবিত্র স্থান। মহান আল্লাহর ইবাদত করার জায়গা। মসজিদে প্রবেশ এবং বের হওয়ার অনেক সুন্নত ও আদব রয়েছে। মসজিদের ভেতরে অবস্থান করলেও বিশেষ বিশেষ আদবের প্রতি লক্ষ্য রাখতে হয়। নতুবা ছোয়াবের আশায় মসজিদে এসে নিজের অজান্তেই গোনাগ নিয়ে ফিরতে হয়।  নিম্নে মসজিদের সুন্নত ও আদবসমূহ তুলে ধরা হলো।

মসজিদে প্রবেশের সুন্নতসমূহ

১. বিসমিল্লাহ পড়া, ২. দরুদ শরিফ পড়া, ৩. অতঃপর এই দোয়া পড়া ‘আল্লাহুম মাফতাহলি আবওয়াবারাহ মাতিক’, ৪. মসজিদে ডান পা আগে রাখা, ৫. ইতেকাফের নিয়ত করে প্রবেশ করা। (ইবনে মাজাহ : ১/৫৬; মেশকাত : ১/৪৬; শামী : ২/৪৪৩)

মসজিদ থেকে বের হওয়ার সুন্নতসমূহ

১. বিসমিল্লাহ পড়া, ২. দরুদ শরিফ পড়া, ৩. অতঃপর এই দোয়া পড়া ‘আল্লাহুম্মা ইন্নি আস্আলুকা মিন্ফাদলিক’, ৪. মসজিদের বাইরে বাম পা আগে রাখা, ৫. অতঃপর প্রথমে ডান পায়ে জুতা পরা। তারপর বাম পায়ে পরা। (ইবনে মাজাহ : ১/৫৬; তিরমিজি : ১/৭১; ই’লাউস সুনান : ১/৩২৩; মেশকাত : ১/৪৬)

মসজিদে যেসব কাজ নিষিদ্ধ

মসজিদ মুসলমানদের কাছে ইবাদতের স্থান হিসেবে পরিচিত। এর পরও মসজিদে এমন কিছু কাজ হতে দেখা যায়, যা মসজিদের পবিত্রতাকে নষ্ট করে। অন্যের ইবাদতে বাধা হয়ে দাঁড়ায়। তাই মসজিদের পবিত্রতার জন্য নিষিদ্ধ বিষয়গুলোর প্রতি লক্ষ্য রাখতে হবে। পবিত্রতা নষ্ট হয় এমন কাজ থেকে মসজিদকে রক্ষা করতে হবে। মসজিদে নিষিদ্ধ বিষয়সমূহের মধ্যে অন্যতম

১. মসজিদে দ্বীনের কথা বা কাজ ব্যতীত অন্য কথা বা কাজ করা নিষেধ। (মুসলিম : ১২৮৮)
২. মসজিদে দুর্গন্ধময় কোনো জিনিস নিয়ে প্রবেশ নিষেধ। (মুসলিম : ১২৮০)
৩. মসজিদে ক্রয়-বিক্রয় করা যাবে না। (তিরমিজি : ৩২৩)
৪. মসজিদে উচ্চস্বরে কথা বলা যাবে না। (মেশকাত : ৬৮৯)
৫. মসজিদে অপরাধীর শাস্তি ও শাসন করা যাবে না (আবু দাউদ : ৪৪৯২)
৬. মসজিদে রাজনৈতিক মিটিং করা মসজিদের আদবের খেলাপ। (ফাতাওয়া রহিমিয়া : ৬/১০৫)
৭. মসজিদের ভেতরে প্রত্যেক ওয়াক্ত নামাজ একই স্থানে আদায় করার জন্য কেউ স্থান নির্দিষ্ট রাখতে পারবে না। যে যেখানে এসে প্রথমে স্থান নেবে, সে সেখানে নামাজ আদায় করবে। একে অন্যকে উঠিয়ে বসা যাবে না। (রদ্দুল মুহতার : ১/৬৩০)

নামাজের কাতার সোজা করা

জামাআতের সাথে সালাত আদায় করতে মুসল্লীদেরকে তিনটি বিষয়ের প্রতি লক্ষ রাখতে বলা হয়েছে। এক : কাতার সোজা করে দাঁড়ানো। কোনো মুসল্লী যেন তার পার্শ্ববর্তী মুসল্লীর চেয়ে এগিয়ে না দাঁড়ায় এবং পিছিয়েও না দাঁড়ায়। দুই : এমনভাবে দাঁড়ানো, যাতে দুই মুসল্লীর মাঝখানে কোনো ফাঁক না থাকে। তথা পরস্পরের মাঝে ফাঁক না রেখে দাঁড়ানো। তিন : একটি কাতার থেকে অপর কাতারের মাঝখানে অস্বাভাবিক দূরত্ব না থাকা। এজন্য মক্কার মসজিদে হারাম ও মদিনার মসজিদে নববীর ইমামদের কণ্ঠে ইকামতের পর তাকবির বলার আগে নামাজে দাঁড়ানো, কাতার সোজা করা এবং কাতারের মাঝের ফাঁকা জায়গা পূরণ করে সুশৃঙ্খলভাবে দাঁড়ানোর উদ্দেশ্যে কিছু নির্দেশবাচক বাক্য শোনা যায়। এর অন্যতম হলো- ‘ইসতাউ’, অর্থাৎ আপনারা সোজা হোন, ‘তারাসসু’ অর্থাৎ একে অপরের সঙ্গে লেগে লেগে সুশৃঙ্খলাবদ্ধভাবে দাঁড়ান এবং ‘সাউঊ সুফুফাকুম’ অর্থাৎ কাতার সোজা করুন৷ তার মানে হচ্ছে, শুধু আমাদের দেশের ইমামগণই নামাজ শুরুর আগে কাতার সোজা করার নির্দেশ দেন না, সকল মুসলিম দেশেই এই রীতি পালন করা হয়। হাদিসে এসেছে  عَنْ عَائِشَةَ قَالَتْ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وَ سَلَّمَ مَنْ سَدّ فُرْجَةً فِى صَفٍّ رَفَعَهُ اللهُ بِهَا دَرَجَةً وَ بَنٰى لَهُ بَيْتًا فِي الْجَنّةِ. আয়েশা রা. হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি কাতারের মধ্যকার ফাঁক বন্ধ করবে, এর বিনিময়ে আল্লাহ তার একটি মর্যাদা বৃদ্ধি করে দেবেন এবং জান্নাতে তার জন্য একটি ঘর নির্মাণ করে দিবেন। -আলমু‘জামুল আওসাত, তবারানী, হাদীস ৫৭৯৫; মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবাহ, হাদীস ৩৮২৪ হাদীসটি উল্লেখ করার পর মুযাফফর বিন মুহসিন সাহেব লিখেছেন, সুধী পাঠক, মুরব্বীরা বলে থাকেন, পায়ের সাথে পা মিলালে সম্মান নষ্ট হয় আর রাসূল (সা:) বলছেন, আল্লাহ সম্মান বৃদ্ধি করে দেন। عَنْ عَائِشَةَ قَالَتْ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَى اللهُ عَلَيْهِ وَ سَلّمَ اِنّ اللهَ وَ مَلٰئِكَتَهُ يُصَلُّوْنَ عَلَى الذِيْنَ يَصِلُوْنَ الصُّفُوْفَ وَ مَنْ سَدّ فُرْجَةً رَفَعَهُ اللهُ بِهَا دَرَجَةً. আয়েশা রা. বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, নিশ্চয় আল্লাহ তাআলা এবং ফেরেশতাগণ তাদের প্রতি রহমত বর্ষণ করেন, যারা কাতারসমূহকে সংযুক্ত করে। আর যে ব্যক্তি ফাঁক বন্ধ করল, এর বিনিময়ে আল্লাহ তাআলা তার একটি মর্যাদা বৃদ্ধি করে দেন।  عَنِ الْبَرَاءِ بْنِ عَازِبٍ قَالَ كَانَ رَسُوْلُ اللهِ صَلّى الله عَلَيْهِ وَ سَلّمَ يَتَخَلّلُ الصّفّ مِنْ نَاحِيَةٍ إِلٰى نَاحِيَةٍ يَمْسَحُ صُدُوْرَنَا وَ مَنَاكِبَنَا وَ يَقُوْلُ لَاتَخْتَلِفُوْا فَتَخْتَلِفَ قُلُوْبُكُمْ وَ كَانَ يَقُوْلُ إِنّ اللهَ وَ مَلٰئِكَتَهُ يُصَلُّوْنَ عَلَى الصُّفُوْفِ الْاُوَلِ. বারা ইবনে আযেব রা. হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্ত পর্যন্ত কাতারে প্রবেশ করে আমাদের বুক এবং কাঁধ স্পর্শ করতেন এবং বলতেন ভিন্ন ভিন্ন হয়ো না। নতুবা তোমাদের অন্তরসমূহ ভিন্ন ভিন্ন হয়ে যাবে। তিনি আরও বলতেন, আল্লাহ তাআলা এবং ফেরেশতাগণ প্রথম দিকের কাতারসমূহের উপর রহমত নাযিল করেন। সুতরাং বুঝাই যাচ্ছে যে, কাতার সোজা না করা, গায়ের সাথে গা লাগিয়ে না দাড়াইলে গোনাহগার হতে হবে।

এসব সুন্নতগুলো আমরা যদি ঠিকমত মেনে চলি তাহলেই মসজিদে ঢোকা এবং নামাজের সাধারণ আদবগুলো মেনে চলা আমাদের পক্ষ্যে সহজ হয়ে যায়। কিন্তু তারপরও আমরা সবসবময় মারাত্মক কিছু ভুল করে ফেলি। যার ফলে আমার ছোয়াবের আশায় মসজিদে গিয়েও বাসায় ফিরি গোনাহ নিয়ে। আসুন সেরকম কিছু বিষয় নিয়ে আলোচনা করি।

মসজিদকে নোংড়া করি নিজের অজান্তেই

আমরা মসজিদে ঢুকার সময় জুতা পায়ে দিয়িই মসজিদের সিঁড়িতে উঠে পড়ি। এরপর জুতা খুলে হাতে নিয়ে মসজিদে প্রবেশ করি। অন্য একজন আপনার চেয়ে মসজিদের পবিত্রতার প্রতি একটু বেশি সচেতন। তিনি জুতা খুলে হাতে নিয়ে মসজিদের সিঁড়িতে পা রাখলেন। দেখা গেল আপনার পায়ের জুতার ময়লা ঐ সচেতন লোকের পায়ের মাধ্যমে মসজিদে প্রবেশ করলো। মসজিদ নোংড়া হল। ঐ একজনের বা তার মাধ্যমে আরও অনেকের নামাজ নষ্ট হল, তার জন্য নিজের অজান্তেই গোনাহগার হবেন আপনি। সেজন্য আমাদের যা করতে হবে তা হল-
১. মসজিদে প্রবেশের সময় জুতা খুলে হাতে নিয়ে সিঁড়িতে পা রাখবেন।
২. জুতা হাতে নিয়ে প্রবেশের সময় খেয়াল রাখবেন জুতার ময়লা পানি মসজিদের সিঁড়ি ও মেঝেতে পরছে কি না। সেরকম সম্ভাবনা থাকলে পকেটে একটা পলি রাখুন। পা থেকে জুতা খুলে পলির ভিতরে নিয়ে মসজিদে ঢুকুন।
৩. জুতা নির্দিষ্ট বক্সে রাখুন। উপরে উঠার সিঁড়ি, মসজিদের মেঝেতে, জানালার গ্রিলে বা মসজিদের অন্য কোন জায়গায় জুতা রাখবেন না। এবিষয়ে অন্যদেরকেও সচেতন করুন।

পরে এসে পেছন থেকে ডিঙ্গিয়ে সামনে যাওয়া

একবার আল্লাহর রাসুল (সা.) জুমার খুতবা দিচ্ছিলেন। এক লোক সবার ঘাড় ডিঙিয়ে সামনে আসছিল। আল্লাহর রাসুল (সা.) বললেন, ‘বসো! তুমি মানুষকে কষ্ট দিলে। ’ (আবু দাউদ, হাদিস : ১১১৮)। ঘাড়ের ওপর দিয়ে আসার দ্বারা কি শারীরিক কষ্ট হয়? না, তবে এর দ্বারা মানুষের অন্তরে বিরক্তির সৃষ্টি হয়। এ কারণেই রাসুল (সা.) এমনটি করতে নিষেধ করেছেন। এর পরেও জেনে শুনে কেউ এটা করলে গুনাহগার হবেন। মসজিদে যাবেন ছোয়াবের জন্য, ফিরবেন গোনাহ নিয়ে।

মসজিদে জায়নামাজ বিছিয়ে জায়গা দখলে রাখা

মসজিদ যেহেতু আল্লাহর ঘর, এখানে ধনী-গরিব, রাজা-প্রজা সবাই সমান। সবাই আল্লাহর গোলাম। এখানে কারো জন্য মুসল্লা বিছিয়ে জায়গা দখল করা, অন্য কেউ সেখানে বসতে চাইলে তাকে বাধা দেওয়া মারাত্মক অন্যায়। মসজিদে যে যত আগে আসতে পারবে, সে তত সামনে বসার অধিকার রাখবে (আল বাহরুর রায়েক : ২-৩৬)। কেউ জায়গা দখল করতে চাইলে সেটা হবে রাসুলের (সা:) বিধানের স্পষ্ট লঙ্ঘন। তেমনিভাবে মসজিদের ভেতরে প্রত্যেক ওয়াক্ত নামাজ একই স্থানে আদায় করার জন্য কেউ স্থান নির্দিষ্ট করে রাখতে পারবেন না। যে যেখানে এসে প্রথমে স্থান নেবে, সে সেখানে নামাজ আদায় করবে। একে অন্যকে উঠিয়ে বসা যাবে না। (রদ্দুল মুহতার : ১/৬৩০)। এসব কাজ থেকে আমাদেরকে বিরত থাকতে হবে। নইলে মনে রাখবেন, মসজিদে যাবেন ছোয়াবের আশায় আর বেড়িয়ে যাবেন গোনাহ সাথে নিয়ে।

সামানের কাতার পুরা না করা

সামনের কাতারে দাঁড়ানোর মত খালি জায়গা রেখে পিছনের কাতারে দাঁড়ানো মাকরুহ্। যারা সামনের কাতার পুরা না করে পিছনের কাতারে দাঁড়ায়, তাদের নামায মাকরূহে তাহরীমী হবে। যদি কোন আগন্তুক মুসল্লী এরূপ কাতার দেখে, তাহলে তার উচিত- পিছনের কাতার ভেদ করে সামনের খালি জায়গা পূর্ণ করা। তাই কোনো ব্যক্তি মসজিদে প্রবেশ করে যদি সামনের কাতার খালি দেখতে পায় তার জন্য জরুরি হলো সামনের কাতার পুরা করে দাঁড়ানো। ফাতাওয়া মাহমুদিয়া, ২:২৪২; ফাতাওয়া দারুল উলূম ৩:৩৩৫, ৩৪৫; ফাতওয়া আলমগীরী, ১:৮৮ । 
আমরা প্রায়ই দেখি, নামাজের আকামত শুরু হওয়ার পরে কিছু লোক সামনে থেকে তার সামনের কাতারে চলে যাচ্ছে এবং কিছু লোক তাদের সামনের কাতারগুলো পুরা করছেন না বা গড়িমসি করছেন। জেনে শুনে এরূপ করা গুনাহের কাজ। সামনের কাতারে জায়গা খালি থাকা সত্বেও কেউ পিছিয়ে থাকলে, তাকে আল্লাহ তা‘আলা শাস্তি দেন। সে যেহেতু পিছিয়ে থাকতে চায়, তাই আল্লাহও তাকে পিছিয়ে দেন। নাউজুবিল্লাহ।

নামাজী ব্যাক্তির সামনে দিয়ে যাওয়া

নামাজী ব্যাক্তির সামনে দিয়ে অতিক্রমের ব্যাপারে হাদিসে কঠোর নিষেধাজ্ঞা এসেছে। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসুল (সা.) বলেন, ‘যে ব্যাক্তি কোনো নামাজির সামনে দিয়ে অতিক্রম করে, সে যদি জানত (এর গুনাহ কিংবা শাস্তি কতটা ভয়াবহ)- তাহলে নামাজরত ব্যাক্তির সামনে দিয়ে এ পদক্ষেপের তুলনায় তার কাছে একশত বছর দাঁড়িয়ে থাকা উত্তম মনে হতো।’ (সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস : ৯৪৬; কানজুল উম্মাল ফি সুনানিল আকওয়াল ওয়াল আফআল, হাদিস : ১৯২৫২)।

অন্য হাদিসে রাসুল (সা.) ইরশাদ করেন, ‘নামাজির সামনে দিয়ে অতিক্রমকারী যদি জানত, এতে তার জন্য কী অপেক্ষা করছে, তাহলে চল্লিশ পর্যন্ত ঠায় দাঁড়িয়ে থাকাও ভালো মনে করতো।’ আবুন নাজর বলেন, আমার জানা নেই— হাদিসে চল্লিশের কী অর্থ। চল্লিশ দিন, চল্লিশ মাস, নাকি চল্লিশ বছর? (আবু দাউদ, হাদিস : ৭০১; সুনানে তিরমিজি, হাদিস : ৩৩৬; সুনানে দারেমি, হাদিস : ১৪১৭)।

নামাজি থেকে কতটুকু দূরত্ব রেখে সামনে দিয়ে চলাচল করা যাবে বিষয়টি নিয়ে বেশ মতভেদ রয়েছে। তবে, আমাদের মনে রাখতে হবে আল্লাহ বান্দার উপর এমন কিছু চাঁপিয়ে দেন না, যা মানা তার জন্য কষ্টকর। একজন নামাজির দৃষ্টি থাকবে সিজদার জায়গার সোজাসুজি। সে হিসাবে সিজদার জায়াগার বাইরে দিয়ে প্রয়োজনে যাতায়াত করা যেতে পারে। তবে উত্তম হল নামাজির সামনে কোন ছুত্রা রেখে তার বাইরে দিয়ে যাতায়াত করা। 

অনেকেই ফরজ নামাজ শেষ করেই, এমনকি সুন্নত নামাজ আদায় না করেই মসজিদ থেকে বের হয়ে যাওয়ার জন্য প্রতিযোগিতা শুরু করেন। তখন তার পিছনে যে নামাজি আছে এটাও দেখতে চান না। এরূপ করা খুবই খারাপ। এরূপ করলে মসজিদ থেকে গুনাহ নিয়েই আপনাকে বের হতে হবে।

অনাকাঙ্খিত শব্দ করে অন্যে নামাজে ব্যাঘাত সৃষ্টি করা

অনেকেই আছেন মসজিদে জোরে কথা বলেন, অযথা আলোচনা বা তর্কে জড়িয়ে পাশের নামাজির ব্যাঘাত সৃষ্টি করেন, অনেকেই আছেন হাঁচি বা কাশি আসলেও সেটা যতটা সম্ভব চাঁপানোর চেষ্টা না করে বরং প্রচন্ড শব্দ সৃষ্টি করে হাঁচি বা কাশি দিয়ে থাকেন। এরূপ করাটাও মসজিদের আদবের খেলাপ। এর জন্যও আপনাকে গোনাহাগার হতে হবে।

মোবাইলের এই যুগে মসজিদে প্রবেশের সময় মোবাইলটা সাইল্যান্স করে মসজিদে ঢোকা উচিৎ। নামাজ শুরু হওয়ার পর মোবাইল বেজে উঠলে চরম বিরক্তির সৃষ্টি হয়। এতে করে নামাজের ধ্যান-খেয়াল নষ্ট হয়ে যায়। এজন্য কত বড় মারাত্মক গোনাহ আপনি করলেন তা কি কল্পনা করতে পারছেন? কত লোকের নামাজ নষ্ট করার জন্য আপনাকে দায়ী করা হবে তা কি ভাবতে পারছেন?

মসজিদে ঢুকে জাগতিক কাজ করা হারাম

মসজিদে ঢুকে ব্যাক্তিগত বা ব্যবসায়িক আলাপ আলোচনা করা যাবে না। অনেকে তো মসজিদে ঢুকে ফেইসবুক পর্যন্ত চালায়, মোবাইলে কথা বলে। মনে রাখতে হবে, আপনি যতক্ষণ মসজিদে আছেন ততক্ষণ চুপচাপ বসে থাকলেও আপনি এবাদতে আছেন। এসব কাজ কঠিনভাবে বন্ধ করতে হবে। নইলে ছোয়াবের আশায় মসজিদে গিয়ে আপনি বিশাল গুনাহ নিয়ে বাসায় ফিরবেন।



****************************************
>>> Welcome, You are now on Mohammadia Foundation's Website. Please stay & Tune with us>>>

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

মোহাম্মদীয়া ফাউন্ডেশনের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url