মাসলা মাসায়েল-০৪ || বদলী হজ্জ কি || মৃত ব্যক্তির জন্য বদলী হজ্জ || বদলী হজ্বের জরুরি মাসায়েল ||





জীবিত বা মৃত ব্যক্তির জন্য হজের সওয়াব পাঠানোর বিধান

প্রশ্নঃ
০৪.    আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, হজরত গন আমি কি উমরাহ হজ্জ জীবিত ও মৃত মানুষ উভয়ের জন্য করতে পারবো?


উত্তরঃ

و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته بسم الله الرحمن الرحيم

জীবিত ও মৃত উভয় ব্যক্তির জন্য নিজে আমল করে সওয়াব পাঠানো জায়েজ আছে। কোন ব্যক্তি যদি অন্য কোন জীবিত বা মৃত ব্যক্তির জন্য হজ করে ঈসালে সওয়াব করে, তাহলে সেটি তার জন্য বৈধ হবে। ঠিক তেমনি ভাবে যদি জীবিত বা মৃত কোন ব্যক্তির জন্য ওমরার নিয়ত করে, তার জন্য ওমরার ঈসালে সওয়াব করে, তাহলে সেটিও তার জন্য বৈধ হবে।

বদলী হজ্জের দলিল সমূহ

في البحر الرائق
من صام أو صلی أو تصدق وجعل ثوابہ لغیرہ من الأموات والأحیاء جاز ویصل ثوابہا إلیہم عند أہل السنة والجماعة
فتاوی دارالعلوم دیوبند
اگر حج کمیٹی کی دفعہ کی تشریح کے مطابق پانچ سال کے اندر کسی زندہ یا مرحوم کی طرف سے ایصال ثواب کے طور پر نفلی حج بدل کی اجازت ہو تو آدمی پانچ سال کے اندر اپنے کسی مرحوم رشتہ دار کی طرف سے بہ طور ایصال ثواب نفلی حج بدل کرسکتا ہے، جائز

فتاوی دارالعلوم دیوبند
ایصالِ ثواب کے طور پر زندہ اور مرحوم دونوں کی طرف سے عمرہ کرنا جائز ہے


মৃতব্যাক্তির পক্ষ থেকে বদলী হজ্জ

মৃতব্যাক্তির পক্ষ থেকে বদলী হজ্জ আদায় করা যায়। রাসুল সা.এর হাদিসে আছে-

عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، أَنَّ امْرَأَةً مِنْ جُهَيْنَةَ، جَاءَتْ إِلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَقَالَتْ: إِنَّ أُمِّي نَذَرَتْ أَنْ تَحُجَّ فَلَمْ تَحُجَّ حَتَّى مَاتَتْ، أَفَأَحُجُّ عَنْهَا؟ قَالَ: «نَعَمْ حُجِّي عَنْهَا، أَرَأَيْتِ لَوْ كَانَ عَلَى أُمِّكِ دَيْنٌ أَكُنْتِ قَاضِيَةً؟ اقْضُوا اللَّهَ فَاللَّهُ أَحَقُّ بِالوَفَاءِ
হযরত ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণিত। এক জুহাইনা এলাকার এক মহিলা রাসূল সা. এর কাছে এসে বললেন, আমার আম্মা হজ্ব করার মান্নত করেছিলেন, কিন্তু হজ্ব করার আগেই তিনি ইন্তেকাল করেছেন।

আমি কি এখন তার পক্ষ থেকে তা আদায় করবো? রাসূল সাঃ ইরশাদ করলেন, হ্যাঁ, তুমি তার পক্ষ থেকে আদায় কর। তোমার মায়ের যিম্মায় যদি ঋণ থাকতো, তাহলে কি তুমি তা আদায় করতে না?

তেমনি এটাও আদায় কর। কারণ আল্লাহ তাআলাই অধিক হক রাখেন যে, তার সাথে কৃত অঙ্গিকার পূর্ণ করা হবে। বুখারি-১৮৫২

হজরত রাসূলুল্লাহ সা. আরও বলেছেন, হজের বদলের বিনিময়ে তিন ব্যক্তি জান্নাতে যেতে পারবে- ১. যার পক্ষ থেকে হজে বদল করা হয় তিনি; ২. যিনি হজে বদল করেন তিনি এবং ৩. যিনি হজে বদল করান তিনি।

বদলী হজ্বের জরুরি মাসায়েল

মাসআলা-০১: যার উপর হজ্ব ফরয হয়েছে এবং হজ্ব আদায়ের শারীরিক সক্ষমতাও আছে তার নিজে হজ্ব করা জরুরি। এক্ষেত্রে অন্যকে দিয়ে বদলী হজ্ব করানো জায়েয নয়। বদলী করালে এর দ্বারা তার ফরয হজ্ব আদায় হবে না।-হিদায়া ১/২৯৬; আলবাহরুল আমীক ৪/২২৩৯; বাদায়েউস সানায়ে ২/৪৫৪
মাসআলা-০২: যার উপর হজ্ব ফরয হয়েছে এবং হজ্ব আদায়ের সক্ষমতাও ছিল, কিন্তু শক্তি-সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও হজ্ব করেনি। অতপর হজ্ব আদায়ের সক্ষমতা হারিয়ে মাজুর হয়ে পড়েছে এমন ব্যক্তির উপর ফরয নিজের পক্ষ থেকে বদলী হজ্ব করানো অথবা মৃত্যুর সময় তার পক্ষ থেকে বদলী হজ্ব করানোর অসিয়ত করে যাওয়া।

মাসআলা-০৩: কারো উপর হজ্ব ফরয হয়েছে এবং সে হজ্বের উদ্দেশ্যে মক্কা শরীফে পৌঁছেছে, কিন্তু হজ্বের মূল সময়ের আগেই তার মৃত্যু এসে গেছে-এই ব্যক্তির জন্য মৃত্যুর সময় তার পক্ষ থেকে বদলী হজ্বের অসিয়ত করার প্রয়োজন নেই। এক্ষেত্রে তার উপর থেকে হজ্ব রহিত হয়ে যায়। কেননা, সে হজ্ব আদায়ের সুযোগ পায়নি।-ফাতহুল কাদীর ২/৩২৭; আদ্দুররুল মুখতার ২/৬০৪; গুনইয়াতুন নাসিক ৩৩

নিজে হজ্ব আদায়ে অক্ষম কারা

১. ফরয হওয়ার পর আদায়ের সুযোগ পাওয়ার আগেই মৃত্যু এসে গেলে। এ ক্ষেত্রে ঐ ব্যক্তি থেকে হজ্ব রহিত হয়ে যায়। সুতরাং তার জন্য মৃত্যুর সময় হজ্বের অসিয়ত করে যাওয়ার প্রয়োজন নেই।
২. কেউ জোরপূর্বক আটকে রাখলে বা হজ্বের সফরে যেতে না দিলে।

৩. এমন কোনো রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়লে, যা থেকে সুস্থতা লাভের আশা নেই। যেমন পক্ষাঘাতগ্রস্ত হলে, অন্ধ বা খোড়া হয়ে গেলে কিংবা বার্ধক্যজনিত দুর্বলতা এত বেশি হলে যে, নিজে বাহনের উপর আরোহন করতে পারে না।

৪. রাস্তা অনিরাপদ হলে। অর্থাৎ সফর করতে গেলে যদি জান-মালের ক্ষতির আশঙ্কা থাকে।

৫. নারী তার হজ্বের সফরে স্বামী বা উপযুক্ত মাহরাম পুরুষ সঙ্গী না পেলে।

এসব কারণে ঐ ব্যক্তিকে মাজুর বা অক্ষম গণ্য করা হবে এবং সে নিজের পক্ষ থেকে বদলী হজ্ব করাতে পারবে।-মানাসিক, মোল্লা আলী কারী ৪৩৫; গুনইয়াতুন নাসিক ৩২১

মাসআলা-০৪: যার পক্ষ থেকে বদলী হজ্ব করা হবে বদলী করানোর সময় তার উপর হজ্ব ফরয হতে হবে। হজ্ব ফরয না হওয়া অবস্থায় নিজের পক্ষ থেকে বদলী হজ্ব করালে তা নফল হজ্ব বলে গণ্য হবে এবং এর দ্বারা ফরয হজ্ব আদায় হবে না। সুতরাং পরবর্তীতে হজ্বের সামর্থ্য হলে তাকে নিজের ফরয হজ্ব আদায় করতে হবে। আর নিজে আদায় করতে না পারলে পুনরায় অন্যকে দিয়ে বদলী করাতে হবে।-মানাসিক, ৪৩৫।

والله اعلم بالصواب



উত্তর প্রদানে: মুফতী সিরাজুল ইসলাম
খতীব, বাইতুল মামুর জামে মসজিদ, মিরাশপাড়া গাজীপুর



****************************************
>>> Welcome, You are now on Mohammadia Foundation's Website. Please stay & Tune with us>>>

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

মোহাম্মদীয়া ফাউন্ডেশনের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url