আবু বকর! তুমি আমাদের উপকারে থাক || আবু বকর ও তাঁর ছেলে || রিদওয়ানে আকবার || আবু বকরের পরিবারের বরকত






আবু বকর! তুমি আমাদের উপকারে থাক

আবু বকর (রাঃ) -এর ছেলে মুশরিকদের দলে থেকে বের হয়ে সামনের দিকে এগিয়ে আসে। তখন সে পূর্ণ যুবক ও শক্তিশালী বীর ছিল এবং কাফেরদের পক্ষ হয়ে যুদ্ধ করতে এসেছিল।

সে মুসলমানদেরকে লক্ষ্য করে বলল, কোনো সম্মুখ যোদ্ধা আছ?

হযরত আবু বকর (রাঃ) তখন রাসূল (সাঃ) -এর পাশেই ছিলেন। এ আওয়াজ শুনার সাথে সাথে তিনি সিংহের ন্যায় আওয়াজের দিকে ছুটে যেতে লাগলেন ৷ কিন্তু রাসূল (সাঃ) তাঁকে আটকে দিলেন এবং তাঁকে থামিয়ে রাখতে গিয়ে বললেন, আবু বকর! তুমি আমাদের উপকারে থাক। "

তথ্যসূত্রঃ
আল হাকিম, ৩য় খণ্ড, ৪৭৩ পৃ. ৩০


আবু বকর ও তাঁর ছেলে


হযরত আবু বকর (রাঃ) -এর ছেলে আব্দুর রহমান বদরের যুদ্ধে মুশরিকদের পক্ষ হয়ে যুদ্ধ করেছিল। তিনি ইসলাম গ্রহণ করার পর তাঁর বাবার পাশে গিয়ে বসলেন।
       
তিনি তাঁর বাবাকে বললেনঃ আমি বদরের যুদ্ধে আপনাকে দেখেছি আর তখন আপনাকে হত্যা করা আমার জন্য খুবই সহজ ছিল, কিন্তু আমি আপনাকে হত্যা না করে অন্যদিকে ফিরে গিয়েছি।

হযরত আবু বকর (রাঃ) বললেনঃ কিন্তু আমি তোমাকে হত্যা করার সুযোগ পেলে ফিরে যেতাম না, অবশ্যই হত্যা করতাম। অর্থাৎ ইসলামের জন্যে তিনি নিজের ছেলেকে হত্যা করতে কোনো দ্বিধা করতেন না।

তথ্যসূত্রঃ
 তারিখে বুলাফা, ৬৪ পৃ.


রিদওয়ানে আকবার

আব্দুল কায়েস গোত্রের লোকেরা রাসূল (সাঃ) -এর সাথে সাক্ষাৎ করার জন্যে মদিনা আগমন করেছিল। তারা রাসূল (সাঃ) -এর পাশে গিয়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে বসল। তাদের মুখ থেকে জ্ঞানভরা বাণীর ফুল ঝরছিল। তাদের মধ্যে এক লোক কথায় অতিরঞ্জিত করল।
       
তখন রাসূল (সাঃ) হযরত আবু বকর (রাঃ) -এর দিকে আশ্চর্যান্বিতভাবে তাকিয়ে বললেনঃ হে আবু বকর! সে কি বলেছে তুমি কি শুনেছ এবং বুঝেছ?
আবু বকর (রাঃ) বললেনঃ হ্যাঁ।
রাসূল (সাঃ) বললেনঃ তাহলে তুমি এর উত্তর দাও ।

হযরত আবু বকর (রাঃ) ওই কথার যথোপযুক্ত জবাব দিলেন......... যা প্রতিপক্ষ লোকটিকে ঘায়েল করে দিল।

এতে রাসূল (সাঃ) খুব খুশি হলেন, যা তাঁর পবিত্র ঠোঁটের মৃদু হাসি দেখে বুঝা যাচ্ছিল। তিনি বললেনঃ আবু বকর! আল্লাহ তাআ'লা তোমাকে রিদওয়ানে আকবার দান করেছেন।

তখন এক লোক বললঃ হে আল্লাহর রাসূল! রিদওয়ানে আকবার কী?
রাসূল (সাঃ) বললেনঃ আল্লাহ তাআ'লা তাঁর সকল বান্দাকে সাধারণভাবে দীপ্তিময় সাক্ষাৎ প্রদান করবেন আর আবু বকরকে বিশেষভাবে প্রদান করবেন।

তথ্যসূত্রঃ
'মুসতাদরাক, ৪র্থ খণ্ড, ৭৮ পৃ.।


আল্লাহর শপথ। নিশ্চয়ই তিনি সত্যের ওপর প্রতিষ্ঠিত


হুদাইবিয়ার সন্ধির পর....
বায়তুল্লাহ জিয়ারত না করে মদিনা ফিরে যাওয়া ছিল সাহাবীদের জন্যে খুবই কষ্টকর ব্যাপার যা তাঁরা মেনে নিতে পারছিলেন না। হযরত ওমর (রাঃ) ভগ্ন হৃদয়ে, ব্যথিত মনে গিয়ে রাসূল (সাঃ) -এর সাথে কথা বললেন। এরপর তিনি আবু বকর (রাঃ) -এর কাছে গেলেন ।
       
তিনি বললেনঃ হে আবু বকর! তিনি কি আল্লাহর নবী নন?
আবু বকর (রাঃ) বললেনঃ অবশ্যই।

তিনি বললেনঃ আমরা কি সত্যপন্থী নই আর আমাদের শত্রুরা কি ভ্রান্ত নয়? আবু বকর বললেনঃ অবশ্যই ।

তিনি বললেনঃ তাহলে কেন আমরা আমাদের ধর্মকে হীন করব?
আবু বকর (রাঃ) তখন দৃঢ় ঈমান ও আল্লাহর ওপর পূর্ণ বিশ্বাস রেখে বললেনঃ ওমর! নিশ্চয়ই তিনি আল্লাহর রাসূল, তিনি তাঁর প্রভুর অবাধ্য হন না। আর তাঁর প্রভূ তাঁর সহযোগী। সুতরাং তুমি মরণ পর্যন্ত তাঁকে শক্তভাবে ধর। আল্লাহর শপথ! নিশ্চয় তিনি সত্যের উপর প্রতিষ্ঠিত।


আবু বকরের পরিবারের বরকত

হযরত আয়েশা (রাঃ) রাসূল (সাঃ) -এর সাথে কোনো এক সফরসঙ্গী হয়ে রওনা দিলেন। 

তাঁরা বায়দা নামক স্থান অতিক্রম করার সময়ে হযরত আয়েশা (রাঃ) -এর হার হারিয়ে গেল। রাসূল (সাঃ) হারটি খোঁজার জন্যে সেখানে অবস্থান নিলেন। সাহাবায়ে কেরামও রাসূল এর সাথে অবস্থান নিলেন, কিন্তু সেখানে অবস্থান করে থাকার মতো পানি তাঁদের কাছে ছিল না। 
       
তখন এক লোক আবু বকর (রাঃ) কে বললঃ তুমি কি দেখ না, আয়শা কি করেছে? সে রাসুল (সাঃ) কে নিয়ে এখানে অবস্থান নিয়েছে, অথচ নিকটে কোথাও পানি নেই আবার লোকদের কাছেও নেই।

হযরত আবু বকর (রাঃ) রাগান্বিত হয়ে হযরত আয়েশার নিকটে আসলেন। রাগের ভাব
তাঁর চোখে মুখে দেখা যাচ্ছিল। তিনি এসে দেখলেন রাসূল (সাঃ) হযরত আয়েশা (রাঃ)-এর কোলে মাথা রেখে শুয়ে আছেন। তিনি গভীর ঘুমে নিমগ্ন ছিলেন।


তিনি হযরত আয়েশা (রাঃ) এর কাছে গিয়ে তাঁর কোমরে প্রহার করতে লাগলেন আর তাঁকে তিরস্কার করে বলতে লাগলেন, তুমি রাসূল (রাঃ) -এর যাত্রা আটকে দিলে এখন মানুষ পানিবিহীন স্থানে আর তাদের কাছেও জমা করা পানি নেই ৷

হযরত আবু বকর (রাঃ) তাঁকে এ বলে ধমকাতে লাগলেন ।
হযরত আয়েশা (রাঃ) বলেনঃ রাসূল (রাঃ) আমার কোলে মাথা রেখে ঘুমানোর কারণে আমি আঘাতের পরেও নড়াচড়া করতে পারিনি।

সকালে রাসূল (রাঃ) ঘুম থেকে উঠলেন, কিন্তু কাফেলায় কোন পানি ছিল না। আর তখন আল্লাহ তা’য়ালা তায়াম্মুমের আয়াত নাযিল করলেন।

আয়াত নাযিল হওয়ার পরে হযরত উসাইদ বিন হুদাইর বললেনঃ আবু বকর! এটাই তোমার পরিবারের প্রথম বরকত নয়!

অন্যদিকে হযরত আয়েশা (রাঃ) -এর বহনকারী উটটি উঠে দাঁড়ালে সেখানে হারটি পাওয়া যায়।”



*************************************
Thank you for visiting the site. If you like the article, share it on social media to invite other Vines to the path of truth and justice. Click on OUR ACTION PLAN button to know about activities, goals and objectives of Mohammadia Foundation and to participate in the service of religion and humanity. 
Almost all articles on this website are written in Bengali. But you can also read it in your language if you want. Click the “ভাষা বেছে নিন” button at the bottom of the website to read in your own language.



এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

মোহাম্মদীয়া ফাউন্ডেশনের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url