মাসলা মাসায়েল- ২২ || ইসলামে গর্ভপাত || গর্ভপাত সম্পর্কে ইসলাম কি বলে ||





ইসলামে গর্ভপাত


প্রশ্নঃ ২২. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, বিয়ের পর স্ত্রী গর্ভধারণ করার পর স্বামী যদি তা নষ্ট করার জন্য বলে তখন কি করা উচিৎ? স্বামীকে বুঝানোর পরেও যদি তা শুনতে নারাজ থাকেন তখন কি গর্ভের ভ্রুন নষ্ট করা যাবে? এবং বিয়ের পর থেকে স্বামী তার স্ত্রীর দায়িত্বের বিষয়ে গাফেল থাকলে কি করা উচিৎ? জানিয়ে উপকৃত করবেন ইনশা আল্লাহ। অগ্রিম জাজাকাল্লাহ খইরন।

গর্ভপাত সম্পর্কে ইসলাম কি বলে?

উত্তর

و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم

গর্ভস্থ সন্তানের কারণে যদি গর্ভবতী মায়ের জীবন হুমকির মুখে পড়ে, বিষয়টি যদি নিরপেক্ষ ও অভিজ্ঞ ডাক্তারের মাধ্যমে নির্দেশিত হয়, তাহলে গর্ভস্থ সন্তানের বয়স চার মাস হওয়ার আগে গর্ভপাত বৈধ হবে। মেয়াদ চার মাসের অধিক হলে কোনোভাবেই গর্ভপাত বৈধ নয়।
কেননা, হাদিসের ভাষ্য থেকে জানা যায়, গর্ভস্থ সন্তানের বয়স চার মাস পূর্ণ হলে তার দেহে রূহ বা আত্মা ফুঁকে দেওয়া হয়। আবদুল্লাহ ইবন মাসউদ রাযি. থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ ﷺ বলেছেন,

إِنَّ أَحَدَكُمْ يُجْمَعُ خَلْقُهُ فِيْ بَطْنِ أُمِّهِ أَرْبَعِيْنَ يَوْمَاً نُطْفَةً، ثُمَّ يَكُوْنُ عَلَقَةً مِثْلَ ذَلِكَ،ثُمَّ يَكُوْنُ مُضْغَةً مِثْلَ ذَلِكَ،ثُمَّ يُرْسَلُ إِلَيْهِ المَلَكُ فَيَنفُخُ فِيْهِ الرٌّوْحَ،وَيَؤْمَرُ بِأَرْبَعِ كَلِمَاتٍ: بِكَتْبِ رِزْقِهِ وَأَجَلِهِ وَعَمَلِهِ وَشَقِيٌّ أَوْ سَعِيْدٌ
‘তোমাদের সকলের সৃষ্টি নিজের মায়ের পেটে চল্লিশ দিন যাবৎ শুক্ররূপে জমা হওয়ার মাধ্যমে শুরু হতে থাকে, পরবর্তী চল্লিশ দিন জমাট বাঁধা রক্তরূপে থাকে, পরবর্তী চল্লিশ দিন গোশতপিণ্ড রূপে থাকে, তারপর তার কাছে ফিরিশ্‌তা পাঠানো হয়। অতঃপর সে তার মধ্যে রূহ প্রবেশ করায় এবং তাকে চারটি বিষয় লিখে দেয়ার জন্য হুকুম দেয়া হয়- তার রুজি, বয়স, কাজ এবং সে কি সৌভাগ্যবান না দুর্ভাগ্যবান।’ (বুখারি ৩২০৮)

আল্লামা ইবনে তাইমিয়া রহ. বলেন, উম্মতে মুসলিমার সকল ফুকাহা এ ব্যাপারে একমত, রূহ আসার পর গর্ভপাত করা সম্পূর্ণ নাজায়েজ ও হারাম। কারণ এটা الوأد (সূক্ষ সমাহিত) এর অন্তর্ভুক্ত; যে ব্যপারে আল্লাহ তাআলা বলেন, وَإِذَا الْمَوْءُودَةُ سُئِلَتْ – بِأَيِّ ذَنْبٍ قُتِلَتْ ‘যখন (কেয়ামতের দিন) জীবন্ত প্রোথিত কন্যাকে জিজ্ঞেস করা হবে, কোন অপরাধে তাকে হত্যা করা হয়েছে…….।’ (তাকবীর ৮-৯) (ফাতাওয়া ইবনে তাইমিয়া ৪/২১৭ফাতাওয়া দারুল ইফতা; মিশর। তাং-১১ই ফেব্রুয়ারী ১৯৭৯ ইং)
সম্মানিত প্রশ্নকারী! গর্ভধারনে যদি আপনার স্বাস্থঝুঁকি না থাকে তাহলে গর্ভপাত ঘটানো জায়েজ নাই। আর যদি চারমাস পূর্ণ হয়ে যায় তাহলে স্বাস্থঝুঁকি থাকলেও গর্ভপাত ঘটানো যাবে না।কাজেই আপনার স্বামীকে বিষয়টি বোঝান প্রয়োজনে কোনো আলেমের মাধ্যমে তাকে কাউন্সিলিং করুন।

والله اعلم بالصواب


উত্তর দিয়েছেনঃ মুফতি সাইদুজ্জামান কাসেমি
শিক্ষক, জামিয়া ইসলামিয়া ইবরাহিমিয়া দারুল উলুম মেরাজনগর, কদমতলী, ঢাকা।




****************************************
>>> Welcome, You are now on Mohammadia Foundation's Website. Please stay & Tune with us>>>

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

মোহাম্মদীয়া ফাউন্ডেশনের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url