মোবাইল ফোন ব্যবহারের ইসলামিক রীতিনীতি || মোবাইল ফোন ব্যবহারে কিছু জরুরি পরামর্শ






মোবাইল ফোন ব্যবহারে কিছু জরুরি পরামর্শ


১. চার্জ দেওয়ার পূর্বে মোবাইল বন্ধ করে নিন। এতে অল্প সময়ে বেশি চার্জ হবে এবং ব্যাটারীও ভালো সার্ভিস দিবে।

২. বারবার সিম পরিবর্তন করবেন না। একান্ত যদি পরিবর্তন করতেই হয় তাহলে আগে মোবাইল বন্ধ করুন। তারপর সিম পরিবর্তন করুন। অন্যথায় আপনার সেটের ক্ষতি হতে পারে ।

৩. নিয়মিত মোবাইলের যত্ন নিন। পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখুন এবং পরিচ্ছন্নতার অংশ হিসেবে মোবাইল কভার ব্যবহার করুন। এতে মোবাইল ধূলোবালি থেকে হেফাজতে থাকবে এবং দীর্ঘদিন এর বাহ্যিক সৌন্দর্য অবশিষ্ট থাকবে।

৪. কল বা ফ্লেক্সিলোড করার সময় অত্যন্ত সতর্কতার সাথে বাটন চাপুন। অন্যথায় আর্থিক ক্ষতির পাশাপাশি নানাবিধ পেরেশানির সম্মুখীন হতে পারেন ।

৫. পানি হলো মোবাইলের প্রধান শত্রু। তাই কোনোভাবেই যেন মোবাইলের ভিতর পানি না ঢুকে সেদিকে সতর্ক দৃষ্টি রাখুন ।

৬. নদীপথে ভ্রমনের সময় খুব খেয়াল রাখুন যাতে হাত থেকে মোবাইল সেট পানিতে পড়ে না যায় । 

৭. দীর্ঘ ও দূরের সফরে চার্জার নিতে ভুলবেন না। এর জন্য সফরের সামানার তালিকায় আজই চার্জারকে অন্তর্ভুক্ত করে নিন।

৮. প্রতিটি ঔষধের প্যাকেটে লিখা থাকে- সকল প্রকার ঔষধ শিশুদের নাগালের বাইরে রাখুন। আজ থেকে এই কথাটি একটু বাড়িয়ে মনে রাখুন- সকল প্রকার ঔষধ ও মোবাইল শিশুদের নাগালের বাইরে রাখুন।

৯. গেমস্ খেলার জন্যও বাচ্চাদের হাতে মোবাইল দিবেন না। কারণ গেমসের নেশা পেয়ে বসলে ওদের পড়াশুনার ক্ষতি হতে পারে। তাছাড়া ওদের উল্টা-পাল্টা চাপে একদিকে যেমন সেটিং উলট-পালট হয়ে যেতে পারে তেমনি মোবাইল লক হয়ে ভোগান্তিরও শিকার হতে পারেন। অনুরূপভাবে আপনি নিজেও গেমস খেলা থেকে বিরত থাকুন। কেননা গেম্‌স খেললে মোবাইলের ক্ষতি হয় এবং সময়েরও অপচয় হয়।

১০. মোবাইল অটো লক করে রাখুন। অন্যথায় যে কোনো সময় নিজের অজান্তে চাপ পড়ে আপনার ব্যালেন্স শূন্য হয়ে যেতে পারে। অথবা মাস শেষে মাত্রাতিরিক্ত বিল আসতে পারে যা আগের তুলনায় কয়েকগুণ বেশি ।

১১. আপনার মোবাইলে সেভ করা জরুরি নাম্বারগুলো টেলিফোন ইনডেক্স বা আলাদা কোনো ডাইরীতে তুলে রাখুন। যাতে কোনোভাবে মোবাইল হাতছাড়া হয়ে গেলে পেরেশান হতে না হয় ।

১২. আপনার মোবাইলের পাক কোড ও পিন কোড সযত্নে লিখে রাখুন। যাতে সিম ব্লক হয়ে গেলে বিপদে পড়তে না হয় ।

১৩. মোবাইলে কোনো সমস্যা হলে ভুলেও অপরিচিত মেকারের নিকট যাবেন না। যদি নিজের পরিচিত মেকার না থাকে তবে খোঁজ নিয়ে অন্তত নিকটাত্মীয়দের পরিচিত কোনো মেকারের কাছে যান। যদি তাও সম্ভব না হয় তাহলে মেকারের কাছে মোবাইলসহ নিজেই উপস্থিত হোন এবং কাজের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত খেয়াল রাখুন। যাতে আপনার কোনো দামী পার্স পরিবর্তন বা চুরি না হয় ।

১৪. মোবাইল ব্যবহারের পূর্বে জরুরি অপশনগুলো ভালোভাবে জেনে নিন। না জেনে কিংবা না বুঝে এলোপাতাড়ি টিপাটিপি করবেন না। অন্যথায় জটিল সমস্যায় নিপতিত হয়ে পেরেশান হতে পারেন । 

১৫. কোম্পানির কোনো ম্যাসেজ পেয়ে তা না বুঝেই তাদের দেওয়া কোনো নাম্বার টিপতে শুরু করবেন না। কারণ এতে আপনার অযথা বেশি পয়সা খরচ হয়ে যেতে পারে ।

১৬. রাস্তা পারাপারের সময় মোবাইলে কথা বলা থেকে বিরত থাকুন। অন্যথায় আল্লাহ না করুন, যে কোনো সময় দুর্ঘটনার সম্মুখীন হতে পারেন।

১৭. বৃষ্টির মৌসুমে বাসা থেকে বের হওয়ার সময় স্মরণ করে এক টুকরো পলিথিন সাথে নিয়ে বের হোন । যাতে বৃষ্টির পানি থেকে আপনার সেটটি রক্ষা পায় ।

১৮. ভ্রমণের সময় দামী সেট ব্যবহার না করাই ভালো। কারণ দামী সেট দেখলে ছিনতাইকারীদের লোভ বেড়ে যায় । যা আপনার জান ও মালের ক্ষতির কারণ হতে পারে।

১৯. বাজারে-বন্দরে তথা লোকদের ভীড়ের মাঝে মোবাইলে কথা বলে তা পকেটে রাখার পর মোবাইল সেটের প্রতি খুব খেয়াল রাখুন এবং যথেষ্ট সতর্ক থাকুন। কারণ এ সময় আপনার একটু অমনোযোগিতার ফলে আপনার প্রিয় সেটটি হাতছাড়া হয়ে যেতে পারে ।

২০. যদি কখনো আপনার মোবাইল চুরি কিংবা ছিনতাই হয়ে যায় তাহলে কাল বিলম্ব না করে সাথে সাথে আপনার আই.এম.ই.আই নাম্বারটি আপনার মোবাইল ফোনের সার্ভিস প্রোভাইডারকে জানিয়ে দিন। তখন সার্ভিস প্রোভাইডার আপনার হাতছাড়া হয়ে যাওয়া মোবাইল ফোন সেটটির আই,এম,ই,আই নাম্বারটি বদলে দিবে। ফলে এই সেটের কার্যক্রম একেবারে বন্ধ হয়ে যাবে। পরবর্তীতে একমাত্র ফ্যাক্টরী সেটিং ছাড়া উক্ত মোবাইল ফোন কোনোক্রমেই কার্যকর করা যাবে না। তখন মোবাইল চোর এই সেটটিকে শিশুদের খেলনা হিসেবে ব্যবহার করা ছাড়া আর কোনো কাজে লাগাতে পারবে না ।

সত্যি বলতে কি, যদি এই পদ্ধতি সবাই অবলম্বন করত তাহলে দেখা যেত, গোটা দেশে একটিও মোবাইল ছিনতাই বা চুরির ঘটনা ঘটছে না ।

উল্লেখ্য যে, উপরের পদ্ধতি অবলম্বন করার ক্ষেত্রে একটু সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে । কারণ ফোন সেটটি যদি পরবর্তীতে আপনার হাতে কোনোভাবে এসেও যায়- তখন আপনিও কিন্তু উক্ত অকার্যকর সেটটিকে আগের মতো কার্যক্ষম করতে পারবেন না।

সুতরাং আপনি যদি নিশ্চিত হয়ে থাকেন- আপনার মোবাইল সেটটি একেবারেই হারিয়ে গেছে এবং সেটা পাওয়ার আর কোনো সম্ভাবনা নেই তখনই আপনি উক্ত পদ্ধতি অবলম্বন করুন। অন্যথায় নয়।

আর হ্যাঁ, আপনার সেটের আই,এম,ই,আই নাম্বার জানার জন্য আপনাকে আপনার ফোন সেট থেকে চাপতে হবে- *#06#

২১. মোবাইলে কথা বলার সময় লাইন কেটে গেলে অনেকে সেটের উপর বিরক্ত হয়ে উহাকে দু'একটি চড়-থাপ্পড় লাগায়। কেউ কেউ আবার অধিক উত্তেজিত হয়ে মোবাইল সেট মাটিতে ছুড়ে মারে । অথচ তারা ভেবে দেখেন না যে, এই সমস্যা সেটের অভ্যন্তরীণ সমস্যার কারণে যেমন হতে পারে তেমনি অন্য কারণেও হতে পারে। আসলে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে নেটওয়ার্কজনিত সমস্যার কারণেই লাইন কেটে যায়। তাই সেটের উপর বিরক্ত হয়ে তার সাথে এমন আচরণ করা মোটেই ঠিক নয়। 

২২. অনেক ড্রাইভারকে গাড়ী চালানোর সময় মোবাইলে কথা বলতে দেখা যায়। এরূপ করা কখনোই উচিত নয়। কারণ মোবাইলে কথা বলতে গিয়ে সামান্য অন্যমনস্ক হলেই মারাত্মক দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। তাছাড়া মোবাইলে কথা বলার সময় একহাতে গাড়ী চালাতে হয়। যা যে কোনো সময় ভয়াবহ দুর্ঘটনার কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে ।

২৩. কখনো মোবাইল সেটে পানি ঢুকে গেলে সাথে সাথে মোবাইল অফ করে পানি বের করে নিন। অন্যথায় শর্ট সার্কিট হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। যদি বেশি পানি ঢুকে যায় তাহলে নিজে নিজে যতটুকু সম্ভব পানি বের করে খুব দ্রুত পরিচিত কোনো মেকারের কাছে নিয়ে যান। যাতে সে ফ্যানারের সাহায্যে তাপ দিয়ে ভিতরের পানি শুকিয়ে ফেলতে পারে। আর হ্যাঁ, পানি বের না করা পর্যন্ত মোবাইল সেট অবশ্যই অন করবেন না। 

২৪. এক কোম্পানির মোবাইল সেটে কখনোই অন্য কোম্পানির যন্ত্রাংশ ব্যবহার করবেন না। বিশেষ করে চার্জার ও ব্যাটারী ব্যবহারের ক্ষেত্রে এই বিষয়টি মেনে চলা একান্ত প্রয়োজন। অন্যথায় আপনার সেটটি চিরদিনের জন্য অকার্যকর হয়ে যেতে পারে।

২৫. আকাশে ঘন ঘন বিদ্যুৎ চমকাচ্ছে এমন দুর্যোগপূর্ণ সময়ে মোবাইল ব্যবহার করা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। সুতরাং নিতান্ত প্রয়োজন না হলে এই সময় কল করা কিংবা কল রিসিভ করার কাজটি এড়িয়ে যাওয়াই ভালো ।

২৬. রিফুয়েলিং স্টেশনে প্রবেশের পর আপনার মোবাইল বন্ধ করে নিন। বিশেষ করে যখন গাড়িতে রিফুয়েলিং হয় সেই সময় তার কাছাকাছি অবস্থান করে ফোন রিসিভ করা বা বার্তা প্রেরণ করা উচিত নয়। এতে আপনার হ্যাণ্ডসেটের সার্কিটে জ্বালানী তেলের বাষ্প প্রবেশ করে সেটাকে সাময়িক বা একেবারে অকার্যকর করে ফেলতে পারে।

২৭. প্রচণ্ড উত্তাপযুক্ত এলাকায় (বয়লার, ইটের ভাটা ইত্যাদিতে) মোবাইল ফোন ব্যবহার করবেন না। সর্বদা লক্ষ্য রাখবেন, আপনার মোবাইল সেটে যেন কোনোপ্রকার উত্তাপ না লাগে। কারণ, বেশিরভাগ জায়গা প্লাস্টিকের আবরণে মোড়া আপনার মোবাইল সেটটিতে আগুনের স্পর্শ লাগলে সেটা অকার্যকর হয়ে যেতে পারে।

২৮. রাস্তায় চলতে চলতে ফোন রিসিভ করলে ছিনতাইকারীদের থেকে খুব সতর্ক থাকতে হবে। কেননা ছিনতাইকারীরা আপনার অসতর্কতার সুযোগে ফোন সেটটি ছিনিয়ে নিতে পারে।

২৯. ফোন সেট কোনো কারণে ক্ষতিগ্রস্থ হলে কোনো অবস্থাতেই নিজে নিজে খোলার চেষ্টা করবেন না। বরং একজন ভালো ও পরিচিত সার্ভিস ইঞ্জিনিয়ারের শরণাপন্ন হবেন ।

৩০. মোবাইল সেট কখনও বামদিকের বুক পকেটে রাখবেন না। কারণ এতে আপনার হার্ট ক্ষতিগ্রস্থ হতে পারে। আমেরিকার মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীদের এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, দীর্ঘদিন এভাবে ফোন ব্যবহার করার ফলে হার্ট ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার সম্ভাবনা শতকরা ৩০ ভাগ বা ক্ষেত্রবিশেষে তার চেয়েও বেশি। 

৩১. ফোন রিসিভ করার সময় মোবাইল সেটকে কানের কাছে ঠেসে ধরবেন না। বরং মোবাইলের এয়ার ফোন অংশটিকে কান থেকে কিছুটা দূরে রাখার চেষ্টা করবেন। যদি কথা পরিস্কার শুনতে না পান তাহলে সেটার বিভিন্ন কারণ থাকতে পারে। এই অবস্থায় প্রয়োজনে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে উক্ত কারণটি অনুসন্ধান করুন । অতঃপর তা ঠিক করে আবার ফোন করুন ।

৩২. হাসপাতাল বা ক্লিনিকে প্রবেশের সময় অবশ্যই আপনার মোবাইল বন্ধ করে নিন। কারণ, মোবাইলের তীক্ষ্ণ রিং মুমূর্ষু রোগীদের ক্ষতির কারণ হতে পারে।



*******************************************
>>> Welcome, You are now on Mohammadia Foundation's Website. Please stay & Tune with us>>>


এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

মোহাম্মদীয়া ফাউন্ডেশনের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url