তাফসীরে উসমানী, শায়খুল ইসলাম হযরত মওলানা শাব্বির আহমদ ওসমানী

তাফসীরে ওসমানী

‘‘তাফসীরে উসমানী” (উর্দু: تفسیر عثمانی‎‎) হল মাহমুদ হাসান দেওবন্দী (১৮৫১ - ১৯২০) ও শাব্বির আহমেদ ওসমানী (১৮৮৬ - ১৯৪৯) কর্তৃক উর্দু ভাষায় লিখিত কুরআনের একটি নির্ভরযোগ্য তাফসীর বা ব্যাখ্যা গ্রন্থ। মাহমুদ হাসান দেওবন্দী ১ম মনজিল রচনার পর মৃত্যুবরণ করলে ওনার ছাত্র শাব্বির আহমেদ ওসমানী বাকি ৬ মনজিল রচনা করেন।
শায়খুল হিন্দ মাহমুদুল হাসান দেওবন্দী উর্দু ভাষায় কুুুুুুরআনের একটি অনুবাদের কাজ শুরু করেন। অনুবাদ শেষ হওয়ার পর এর পাশে সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যা লিখে দিতে শুরু করেন। কুরআনের ৭ মনজিলের মধ্যে ১ মনজিল এভাবে লেখার পর তিনি মৃত্যুবরণ করেন। তার এই অসমাপ্ত কাজ সমাপ্ত করেন তাঁর প্রিয় ছাত্র শাব্বির আহমেদ ওসমানী। বিস্তারিত তাফসির লিখার ইচ্ছা ছিল না কারো। কিন্তু এই সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যাগুলো একত্রিত করলে একটি বড় তাফসীর গ্রন্থের রূপ নেয়। পরবর্তীতে শাব্বির আহমেদ ওসমানীর নামানুসারে এটি তাফসীরে উসমানী নামে প্রসিদ্ধি লাভ করে।

শাব্বির আহমদ ওসমানী’র সংক্ষিপ্ত জীবনী

পাক ভারত বাংলাদেশ এই উপমহাদেশে বিখ্যাত তাফসীরকারকদের তালিকায় শায়খুল ইসলাম হযরত মওলানা শাব্বীর আহমদ ওসমানী যেমন একজন শীর্ষস্থানীয় মোফাসসের, তেমনি তার রচিত 'তাফসীরে ওসমানী'-ও একটি শীর্ষস্থানীয় তাফসীর।

শায়খুল ইসলাম হযরত মওলানা শাব্বির আহমদ ওসমানী জন্মসূত্রে তৃতীয় খলিফা হযরত ওসমানের বংশধর। জন্মগত নাম মোহাম্মদ ফজলুল্লাহ। দশই মোহাররম তথা 'আশুরা' দিবসে জন্ম গ্রহণ করেছেন বলে আপনজনরা নাম রাখলো 'শাব্বীর', আস্তে আস্তে মূল নামের বদলে এটাই হয়ে গেলো আসল।

জন্মস্থান বেজনুরেই তিনি প্রথম জীবনের পড়া শুরু করেন। এরপর দেশের সেরা কয়টি দ্বীনি মাদ্রাসায় পড়াশোনা শেষ করে এলমে হাদীসের চূড়ান্ত ডিগ্রীর জন্যে তদানিন্তন ভারতের দ্বীনী এলেমের কেন্দ্র ভূমি দেওবন্দে চলে আসেন। এখানে এসে তিনি ভারতের শীর্ষস্থানীয় আলেম ও মোহাদ্দেসদের সান্নিদ্ধে আসেন। বিশেষ করে মওলানা গোলাম রসূল ও শায়খুল হিন্দ মওলানা মাহমুদুল হাসান এর সরাসরি সোহবতে আসার তিনি সুযোগ পান। ১৩২৫ হিজরীতে তিনি দেওবন্দ মাদ্রাসা থেকেই এলমে হাদীসে প্রথম বিভাগে কামিয়াব হন, ১৩২৮ হিজরীতে দারুল উলুম দেওবন্দের 'মজলিসে শুরার' অনুরোধে তিনি পুনরায় দেওবন্দে হাদীস পড়াতে শুরু করেন।

১৩৫২ হিজরীতে শায়খুল হাদীস হযরত মওলানা আনোয়ার শাহ কাশমিরীর ইন্তেকালের পর দেওবন্দে তিনি শায়খুল হাদীস মনোনীত হন। ১৩৫৪ হিজরীতে দারুল উলুম দেওবন্দের কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত মোতাবেক তিনি এই ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠানের মোহতামেম (অধ্যক্ষ) নিযুক্ত হন।

এলমে হাদীস ও এলমে তাফসীরের বিপুল খেদমতের পাশাপাশি তার ওস্তাদের মতো তিনিও ছিলেন একজন সংগ্রামী মোজাহেদ। গোটা ভারতে বৃটিশ খেদা আন্দোলনে তিনি হামেশাই ছিলেন অগ্রগামী। মওলানা ওবায়েদুল্লা সিন্ধীর 'জমিয়াতুল আনসার', 'খেলাফত আন্দোলন', 'ভারতীয় কংগ্রেস'-এর সব কয়টি জায়গায়ই তিনি ছিলেন পুরোভাগে। ১৩৬৬ হিজরী সনে তিনি 'জমিয়াতুল ওলামায়ে হিন্দ'-এ যোগদান করেন।

এদিকে কংগ্রেস ও জমিয়াতুল ওলামায়ে হিন্দের সাথে মুসলিম লীগের স্বাধীনতা আন্দোলনের কর্মধারা নিয়ে মতবিরোধ দেখা দিলে তিনি মুসলিম জাগরণের অগ্রদূত আল্লামা ইকবাল ও কায়েদে আযম মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর নেতৃত্বে মুসলিম লীগে যোগদান করেন। মুসলিম লীগে যোগদানের পর তিনি উত্তর পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশ ও পূর্ব বাংলার সিলেট সহ বিভিন্ন এলাকার 'রেফারেন্ডামে পাকিস্তানের পক্ষে জনমত সংগ্রহ করার কাজে ঝাঁপিয়ে পড়েন। তারই প্রচেষ্টার ফলে এসব অঞ্চল 'রেফারেন্ডামে'র মাধ্যমে পাকিস্তানে যোগদান করে ।

পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পর এই নব গঠিত দেশটিকে ইসলামের ওপর প্রতিষ্ঠিত রাখার জন্যে তিনি সংগ্রাম শুরু করেন। এই মহান সংগ্রামী মোজাহেদের অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলেই পাকিস্তান গণ-পরিষদ ১৯৪৯ খৃষ্টাব্দে আদর্শ প্রস্তাব পাশ করে পাকিস্তানকে নিয়মাতান্ত্রিকভাবে ইসলামী প্রজাতন্ত্র ঘোষণা করে।

১৩৬৫ হিজরীতে ভাওয়ালপুরের প্রধানমন্ত্রীর আমন্ত্রণে ভাওয়ালপুর ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করার জন্যে তিনি সেখানে গমন করেন। পথেই তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। একই সালের ২১শে সফর তারিখে তিনি ৬৪ বছর বয়সে ইন্তেকাল করেন। কিন্তু শারীরিক ভাবে অর্ন্তধান হলেও শায়খুল ইসলাম হযরত মওলানা শাব্বীর আহমদ ওসমানী ‘তাফসীরে ওসমানী’ এর মাধ্যমে অনাগত দিন ধরে কোটি কোটি মুসলমানের হৃদয়ে বেঁচে থাকবেন।

তাফসীরে ওসমানী পড়ুন এবং ডাউনলোড করুন





তাফসীরে উসমানী (প্রথম খন্ড)

লেখকঃ শাব্বির আহমদ উসমানি


















তাফসীরে উসমানী (দ্বিতীয় খন্ড)

লেখকঃ শাব্বির আহমদ উসমানি













তাফসীরে উসমানী (সপ্তম খন্ড)

লেখকঃ শাব্বির আহমদ উসমানি















>>> Welcome, You are now on Mohammadia Foundation's Website. Please stay & Tune with us>>>

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

মোহাম্মদীয়া ফাউন্ডেশনের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url