আল আকসার ইতিকথা-১ | জেরুজালেমের বিভিন্ন নাম | জেরুজালেমের গোড়ার কথা | জেরুজালেম শহরের গুরুত্ব

আল আকসা মসজিদের ইতিকথা শীর্ষক এই প্রবন্ধগুলো এ এন এম সিরাজুল ইসলামের লেখা “আল আকসা মসজিদের ইতিকথা” গ্রন্থ থেকে নেওয়া হয়েছে। সুন্দর তথ্যবহুল এই গ্রন্থটি বাংলাদেশ ইসলামিক সেন্টার, ঢাকা কর্তৃক প্রকাশিত।


জেরুজালেমের বিভিন্ন নাম


মুসলমানদের কাছে জেরুজালেম শহর 'আল-কুদ্‌স' নামে পরিচিত। এর অন্য নাম হচ্ছে বাইতুল মাকদিস। 'আল-কুদ্‌স' নামটাই সর্বাধিক পরিচিত।

যদিও কোনটার উপর কোনটার প্রাধান্যের বিশেষ কারণ নেই। মসজিদে আকসাকে কুস ও বলা হয় ।

'কুস' শব্দের অর্থ হচ্ছে পবিত্র। পক্ষান্তরে, 'বাইতুল মাকদিস' শব্দের অর্থ হচ্ছে, 'হাইকালে সুলাইমানী' বা সুলাইমান (আ)-এর তৈরি ইবাদাতগাহ। ' হিব্রু শব্দ Bethammiqdash থেকে 'মাকদিস' শব্দের উৎপত্তি। 'মাকদিস' শব্দের মূলেও 'কুস' শব্দ রয়েছে। মূলকথা হল, এটি পবিত্র শহর। এই শহরেই প্রখ্যাত আল আকসা মসজিদ রয়েছে।
এই শহরের অন্যান্য নামগুলো হচ্ছে, 'মাদীনাতুল হক' (সত্যের শহর), 'মাদীনাতুল্লাহ' (আল্লাহর শহর), 'আল মাদীনাহ্ আত-তাহিরাহ' (পবিত্র শহর) এবং ‘আল-মাদীনাহ আল-মুকাদ্দাসাহ' (পবিত্র শহর)। 'জেরুজালেম' শব্দের উৎপত্তি হয়েছে ‘ইউরোসালেম' শব্দ থেকে। রোমানরা জেরুজালেমকে এই নামেই অভিহিত করে। মু'জাম আল-বুলদানের লেখক ইয়াকুত হামাওয়ী এর আরেকটি নাম উল্লেখ করেছেন। সেটি হচ্ছে, 'আল-বালাত'। অর্থ হল, রাজপ্রাসাদ ।

ইউরোসালেম' একটি কেনানী শব্দ। আরব ইয়াসী গোত্রের ১ম শাসকের উপাধি ছিল 'সালেম'। সালেম অর্থ শান্তিপ্রিয়। তিনি শান্তিপ্রিয় ছিলেন বলে তাঁকে সবাই এই উপাধিতে ভূষিত করে। তাঁর আসল নাম ছিল মালিক সাদেক। তাঁর এই কেনানী নামানুসারে শহরের নামকরণ করা হয় ইউরোসালেম।` বর্তমান যুগে, এটাকেই জেরুজালেম বলা হয়। খৃস্টপূর্ব ৩ হাজার সালে আরবের ইয়াসী গোত্রের বসবাসের ভিত্তিতে এই শহরের প্রাচীন নাম হচ্ছে ‘ইয়াবুস’।

জেরুজালেমের ভৌগোলিক অবস্থান


জেরুজালেম ৩৪ ডিগ্রী অক্ষাংশ ও ৩১.৫২ ডিগ্রী দ্রাঘিমাংশের উত্তরে অবস্থিত। শহরটি একটি পাহাড়ী এলাকা অর্থাৎ অধিত্যকা। এর চারদিকে রয়েছে পাহাড়। উল্লেখযোগ্য পাহাড়গুলো হচ্ছে :

মোরিয়া পাহাড়

এই পাহাড়ের উপরই মসজিদে সাখরা ও মসজিদে আকসা অবস্থিত ।

যাইতুন পাহাড়

এর অপর নাম হচ্ছে তূর পাহাড়। এটি শহরের পূর্বদিকে সাগরের স্তর থেকে ৮২৬ মিটার উপরে অবস্থিত। হারামে কুদসের দেয়ালের পার্শ্বে দাঁড়ালে এই পাহাড়ের পাথরগুলো দৃষ্টিগোচর হয়। হারাম শরীফ ও পাহাড়ের মাঝখানে আছে 'কাদরুন' উপত্যকা। তালমুদে এই পাহাড়কে 'মাসেহ' বা 'তাতইজ' পাহাড় বলে উল্লেখ করা হয়েছে। তালমুদে আরো বর্ণিত আছে, ইহুদীরা এই পাহাড়ে লাল গাভী জ্বালিয়ে আল্লাহর নৈকট্য লাভের উদ্দেশ্যে এর ছাই সংগ্রহ করে তা হাইকালে সুলাইমানীতে ছিটিয়ে দিয়েছিল। অবশ্য কুরআনের তাফসীরকারগণ বলেছেন, গাভী লাল ছিল না বরং গাঢ় হলুদ রংএর ছিল। যাইতুন পাহাড়ের উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য হল, খৃস্টানদের ধারণা অনুযায়ী সেখানকার 'মুআসরাহ' কিংবা 'জাতসমানী' বাগানের কাছে ইয়াসু নামায পড়ে আল্লাহর সাথে সাক্ষাতের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। এ পাহাড়ে একটি গর্ত আছে, যেখানে দাঁড়িয়ে হযরত ঈসা (আ) কিছু শিক্ষা দান করেছিলেন, তাঁর হাওয়ারীদের সাথে সাক্ষাত করেছিলেন এবং জেরুজালেমের জন্য কেঁদেছিলেন ।

সাইউন পাহাড়

এই পাহাড়ের অপর নাম হচ্ছে দাউদ নবীর পাহাড়। এটি সাগরের স্তর থেকে ৭৭০ মিটার উপরে অবস্থিত ।

আকরা পাহাড়

এই পাহাড়ের উপর খৃস্টানদের ‘কিয়ামাহ' গীর্জা অবস্থিত । ৫. যাইতা পাহাড় : এটি বাব-আস-সাহেরার নিকটবর্তী একটি পাহাড় ।

গাওল পাহাড়

এটি জেরুজালেম শহরের উত্তর দিকে এবং সাগরের স্তর থেকে ৮৩৯ মিটার উপরে অবস্থিত। প্রাচীন যুগে এই পাহাড়ের উপরই কেনানীদের 'হাআহ' শহর প্রতিষ্ঠিত ছিল ।

সামউইল নবীর পাহাড়

এটি শহরের উত্তর পশ্চিম দিকে অবস্থিত। সাগরের স্তর থেকে এর উচ্চতা হচ্ছে ৮৮৫ মিটার
এছাড়াও শহরের চারপাশে আরো অনেক পাহাড় আছে। শহরটি সাগরের স্তর থেকে ৭৩৫ মিটার উপরে অবস্থান করছে। পাহাড়ী এলাকার কারণে তা কোন প্রধান বাণিজ্য এলাকার অন্তর্ভুক্ত নয় এবং শহরের মাঝে কোন নদীনালা ও নেই। অপরদিকে প্রাকৃতিক কারণে শহর সম্প্রসারণের বেশী সুযোগ নেই । জেরুজালেম শহর প্রাকৃতিকভাবে দুইভাগে বিভক্ত। পুরাতন জেরুজালেম ও নতুন জেরুজালেম। ১৯৪৮ সালে নতুন ও পুরাতন জেরুজালেমের মোট আয়তন ছিল ৪১ বর্গকিলোমিটার। শহর সম্প্রসারণের পর বর্তমান আয়তন হচ্ছে, ১১০ বর্গকিলোমিটার। পুরাতন জেরুজালেম শহর ৪ দিক থেকে দেয়ালঘেরা। দেয়ালের দৈর্ঘ্য হচ্ছে ৪ কিলোমিটার এবং উচ্চতা হচ্ছে ১২ মিটার। দেয়ালে মোট ৮টা গেট আছে। বিভিন্ন দিক থেকে লোকেরা এ সকল গেট দিয়ে তাতে প্রবেশ করে। প্রসিদ্ধ গেটগুলো হচ্ছে, উত্তরে বাবুল আ'মুদ, দক্ষিণে বাবুল মাগারিবা, পূর্বে সানস্টিফান ও পশ্চিমে বাবুল খলীল । পূর্বদিকে অবস্থিত বাবুজ্জাহাবী নামক ৮ম গেটটি বন্ধ থাকে। ১৫৩৬ খৃস্টাব্দে উসমানী সুলতান সুলাইমান ৫ বছরব্যাপী ঐ দেয়াল নির্মাণ করেন ।

জেরুজালেমের লোকবসতি


১৯৮০ খৃঃ এর পরিসংখ্যান অনুযায়ী, জেরুজালেমের লোকসংখ্যা হচ্ছে ৩ লাখ ৯২ হাজার ।o ১৯৬৭ খৃঃ থেকে ১৯৮০ খৃঃ পর্যন্ত বর্ধিত জনসংখ্যার ৫৮% ভাগ হচ্ছে বিভিন্ন দেশ থেকে জেরুজালেমে আগত ইহুদী সম্প্রদায়। জেরুজালেম শহরের বিভিন্ন অংশে ইহুদী বসতি গড়ে তোলা হয়েছে এবং সেখানে ইয়েমেন, ইথিওপিয়া ও সোভিয়েত ইউনিয়নসহ বিভিন্ন ইউরোপীয় দেশ থেকে ইহুদীদেরকে এনে পুনর্বাসিত করা হচ্ছে। ইসরাইল সরকার অধিকৃত ফিলিস্তিনের মুসলমানদেরকে তাড়িয়ে ইহুদীদেরকে পুনর্বাসন করছে। যাতে করে ইহুদীদের সংখ্যা বৃদ্ধি পায় এবং শহরের আরব ও ইসলামী বৈশিষ্ট্য পরিবর্তন করে ইহুদীকরণ করা সম্ভব হয়। ইসরাইল সরকার ১৯৬৭ সালের জুন যুদ্ধে, জর্দানের শাসন থেকে জেরুজালেম জবরদখল করার পর ২৫শে জুলাই এক আদমশুমারী পরিচালনা করে ও উপস্থিত আরব মুসলমানদেরকে ইসরাইলী পরিচয়পত্র গ্রহণ করার নির্দেশ দেয়। এতে করে যুদ্ধের ফলে পালিয়ে যাওয়া ১ লাখ ২০ হাজার ফিলিস্তিনীকে অনুপস্থিত ধরে তাদের নাগারিকত্ব বাতিল করে সেই স্থানে ইহুদীদের পুনর্বাসন করে। বর্তমান সময়ে (১৯৯১ খৃঃ) পুনর্বাসনের ফলে ইহুদী জনসংখ্যা অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে । বর্তমানে জেরুজালেমে ইহুদীদের সংখ্যা হচ্ছে ৪ লাখ। ১৯৯২ সালে জেরুজালেমের লোকসংখ্যা হচ্ছে, ৫ লাখ ৫৫ হাজার। এর মধ্যে পূর্ব জেরুজালেমে বাস করছে ১ লাখ ৪০ হাজার ইহুদী। পক্ষান্তরে, মুসলমানদের সংখ্যা ১ লাখ ৫৫ হাজার। ১৯৯৩ সালে ৫৫ হাজার আবাসিক ইউনিট নির্মান শেষ হয়েছে। এতে করে মুসলমানদের চাইতে ইহুদীদের সংখ্যা অনেক বেড়ে যাবে। 

জেরুজালেমের আবহাওয়া


জেরুজালেমের গড় তাপমাত্রা মাঝারি ধরনের। শীত ও গ্রীষ্ম ঋতু বাদ দিলে, অন্যান্য সময়ের তাপমাত্রা গড়ে ১৮ সেন্টিগ্রেড। সেখানকার ফসল, গাছপাদ্মা ও কৃষি ভূমধ্যসাগরের আবহাওয়ার আর্দ্রতা ভোগ করে। জানুয়ারী মাসে সর্বাধিক ঠাণ্ডা থাকে। তখন তাপমাত্রা থাকে ৯.৭ সেন্টিগ্রেড । পক্ষান্তরে আগস্ট মাসে সর্বাধিক গরম থাকে, তখন তাপমাত্রা থাকে ২৫ সেন্টিগ্রেড। তবে শীতকালে, সর্বনিম্ন তাপমাত্রা থাকে ৪ সেন্টিগ্রেড।

জেরুজালেমের গোড়ার কথা


মসজিদে আকসা সম্পর্কে জানতে হলে, আগে জেরুজালেম সম্পর্কে জানতে হবে। খৃস্টপূর্ব ৩ হাজার সালে আরবের ইয়াবুসী গোত্রের শাসক মালিক সাদেক জেরুজালেম শহর প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা নেন এবং শহরটির ভিত্তি স্থাপন করেন। এটাই তাদের দেশের প্রধান কেন্দ্র ও রাজধানী হিসেবে ব্যবহৃত হয়। ইয়াবুসী গোত্রের লোকদেরকে কেনানী আরবও বলা হয়। ইয়াবুসী সম্প্রদায়ের লোকেরা শহরে বহু বাড়ী-ঘর নির্মাণ করে। তারা 'সাহ্ইউন' পাহাড়ের উপর শহরের প্রতিরক্ষার জন্য একটি দুর্গ তৈরি করে। দুর্গটি প্রধানত হিব্রু ও মিসরীয়সহ অন্যান্য অত্যাচারী এবং লুণ্ঠনকারীদের হাত থেকে নিজেদেরকে রক্ষার জন্য তৈরি করা হয়। তারা ১৫৫০ খৃস্টপূর্ব সালে হিব্রুদের আক্রমণ প্রতিহত করার জন্য মিসরের প্রথম ফেরআউন তাহতামেসের সাথে মৈত্রীচুক্তি করে। প্রায় ২ হাজার বছর পর্যন্ত তাদের হাতে শহরের নিয়ন্ত্রণ থাকে । খৃস্টপূর্ব ১১ সাল পর্যন্ত তারা শহরের উপর কর্তৃত্ব করে।

হযরত মূসা (আ) এর ইন্তিকালের পর বনি ইসরাইল হযরত ইউশা বিন নূনের নেতৃত্বে জেরুজালেমে প্রবেশ করে। ৩২২ খৃস্টপূর্ব সালে আলেকজান্ডার মাকদুনীর হাতে পরাজয় বরণ করার পর জেরুজালেমে বনি ইসরাইলের কর্তৃত্বের অবসান হয় ।

যাই হোক, ইয়াবুসী শাসনামলে জেরুজালেমসহ সিরিয়া ও ইরাকব্যাপী যে সভ্যতা বিরাজ করে তাকে আবিলা সভ্যতা বলা হয়। বিজ্ঞানীরা মাটি খনন করে সেই যুগের বহু আরবী লেখার নিদর্শন উদ্ধার করেন। ১৯২৯-৩১ খৃঃ, ফরাসী বিজ্ঞানীরা 'রাস-শামরা' নামক স্থানে খনন করে আরবী লেখা সমৃদ্ধ আবিলা সংস্কৃতির বহু পাথর উদ্ধার করেছেন ।
ইয়াসীরা আল্লাহর অস্তিত্বে বিশ্বাসী সংস্কৃতি চালু করে। তারা আল্লাহর নৈকট্যের জন্য রুটি পেশ করত। ঐ আমলে শহরে পানি সরবরাহের জন্য বিভিন্ন কূপ থেকে সরু খাল কেটে পানির ঝর্না প্রবাহিত করা হয়।

জেরুজালেম শহরের গুরুত্ব


এই শহরে মসজিদে আকসার মত পবিত্র স্থান রয়েছে। এটি আম্বিয়ায়ে কিরামের অবস্থান ও ইবাদতের স্থান এবং শত-সহস্র আল্লাহ-প্রেমিকের ভ্রমণকেন্দ্র। আসমানের কত অগণিত ফেরেশতা এখানে এসেছেন। এক হাদীস অনুযায়ী এখানেই ময়দানে হাশর ও নশর (উত্থান-বিস্তার) হবে। এই শহরের উপর দিয়ে মহানবী হযরত মুহাম্মাদের (সা) মে'রাজ হয়েছে। মসজিদে আকসার মধ্যে সুলাইমান (আ) এর আসন ও দাউদ (আ) এর মেহরাব রয়েছে। এই শহরে রয়েছে ‘আইনে সালওয়ান' বা সালওয়ান পানির নালা। এই নালার পানিকে হাউজে কাউসারের পানির মত মর্যাদাবান মনে করা হয়। এখানে রয়েছে মেহরাবে মরিয়ম জেরুজালেম শহর পৃথিবীর একটি সর্ববৃহৎ পর্যটনকেন্দ্র। এটাকে একটি বহুজাতিক শহরও বলা যায়। মুসলমান, খৃস্টান ও ইহুদীদের ধর্মীয় উপাসনালয়ের কারণে এখানে বহিরাগত বহু পর্যটক ও তীর্থযাত্রীর আগমন ঘটে। হযরত ঈসার জন্মস্থানও এই জেরুজালেম শহরে। এখানে মসজিদে আকসা ব্যতীত আরো ৩৫টি মসজিদ আছে।

মসজিদে আকসার দেয়ালের বাইরে পূর্বদিকে “বাবুর রাহমাহ' সংলগ্ন রয়েছে দুইটি প্রখ্যাত মুসলিম গোরস্তান। এই গোরস্তানে শায়িত আছেন দুইজন প্রখ্যাত সাহাবী। তাঁরা হলেন, উবাদাহ ইবন সামেত বদরী। তিনি ৬৫৩ খৃস্টাব্দে ইন্তিকাল করেন। অন্যজন হচ্ছেন, শাদ্দাদ বিন আউস- আনসারী। তিনি ৬৭৭ খৃস্টাব্দে ইন্তিকাল করেন।
পবিত্র কুরআনে জেরুজালেম শহরকে বরকতময় ও পবিত্র ঘোষণা দিয়ে আল্লাহ বলেন- ভয় ভাসা
অর্থাৎ, আমরা মসজিদে আকসার আশপাশকে বরকতপূর্ণ করে দিয়েছি। এখানে মসজিদে আকসার 'আশপাশ' বলতে জেরুজালেম শহরকেই বুঝানো হয়েছে।

এখন প্রশ্ন হচ্ছে, জেরুজালেম শহরের সেই বরকতপূর্ণ জিনিসগুলো কি কি?

এই প্রশ্নের উত্তরে বলা যায়, জেরুজালেম শহরের নদীনালা, মিষ্টি পানি ও ফল- ফলাদি হচ্ছে সেই বরকতময় জিনিস। এছাড়াও যুগ যুগ ধরে ইতিহাসের সিঁড়ি বেয়ে যেখানে বহু নবী-রাসূল ও আউলিয়া শায়িত আছেন, তাদের মত নেককার লোকদের জীবন-মৃত্যুর স্থান অবশ্যই বরকতময়।

অন্য এক আয়াতে ঐ বরকতের প্রতি ইঙ্গিত দিয়ে আল্লাহ বলেছেন,

وَاذْ قُلْنَا ادْخُلُوا هذه القَرْيَةِ فَكُلُوا مِنْهَا حَيْثُ شِئْتُمْ رَغَدًا

‘আমরা যখন তাদেরকে আদেশ দিলাম, এই জনপদে প্রবেশ কর এবং সেখানকার যেখানে ইচ্ছা সেখানে পর্যাপ্ত খাও'। এই আয়াতে জেরুজালেম শহরে পর্যাপ্ত খাওয়া-পরার নির্দেশ থেকে বুঝা যায়, তা আল্লাহর অফুরন্ত নেয়ামতে বরকতপূর্ণ ।

মানুষের জীবন ধারণের জন্য খাদ্য ও পানীয় বেশী প্রয়োজন। জেরুজালেম শহরের অনুকূল আবহাওয়া কৃষিকাজের উপযোগী। এছাড়াও পর্যাপ্ত মিষ্টি পানি

তথ্যসূত্রঃ
১. আল-মো'জাম আল-ওয়াসীত-২য় খণ্ড, মাজমাউল লুগাহ আল-আরাবিয়াহ, কায়রো থেকে প্রকাশিত ।
২. আল-আকসা ওয়াল কুদস, আল ফাতাহ মুক্তি সংস্থার পুস্তিকা, সৌদী আরব, ১৩৯৬ হিজরী। 
৩. আল আকসা ওয়াল কুদ্‌স; সৌদী আরব, ১৩৯৬ হিঃ।
৪. আত্-তাতাউর আল-উমরানী লি মদীনাতিল কুদ্‌স-ডঃ আঃ আলীম অবদুর রহমান খোদার, ১৯৮১ খৃঃ।
৫. আত্-তাতাউর আল-উমরানী লি মদীনাতিল কুদ্‌স; ডঃ আবদুল আলীম আব্দুর রহমান খোদার-প্রকাশ-১৯৮১ খৃঃ (৬) ঐ ।
৬. Deliberate deceptions facing the facts about the U.S.-Israel relationship, Paul Pandly, U. S.
৭. আত্ তাতাউর আল উমরানী লি মাদীনাতিল কুদ্‌স, ডঃ আবদুল আলীম আবদুর রহমান খোদার, ১৯৮১ খৃঃ।
৮. আল-আকসা ওয়াল-কুদস, আল-ফাতাহ মুক্তি সংস্থার পুস্তিকা।
৯. আল-আকসা ওয়াল কুদস, আল-ফাতাহ মুক্তি সংস্থার পুস্তিকা, ১৩৯৬ হিঃ। ১০. আত-তাতাউর আল-উমরানী লি-মাদীনাতিল কুদস, ডঃ আবদুল আলীম আবদুর রহমান খোদার।
থাকায় খাদ্যসামগ্রীর অভাবের কোন প্রশ্নই ওঠে না। খাদ্য ও পানীয়ের পর্যাপ্ততার জন্য এই শহরটি বরকতময় হয়েছে।

*******************************************

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

মোহাম্মদীয়া ফাউন্ডেশনের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url