সুরা নাস তেলাওয়াতঃ শেখ আব্দুল বাছিত আব্দুস সামাদ

সাইটটি ভিজিট করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। আরও বেশি মানুষের কাছে ইসলামের জ্ঞান পৌঁছে দিতে শেয়ার ও কমেন্ট করুন।

 

 


হৃদয় মন পাগল করা তেলাওয়াত
সুরা নাস, শেখ আব্দুল বাছিত আব্দুস সামাদ
 Suratul Naas Sheikh Abdul Basit Abdus Samad
 

بِسْمِ اللّهِ الرَّحْمـَنِ الرَّحِيمِ
قُلۡ اَعُوۡذُ بِرَبِّ النَّاسِ ۙ﴿۱﴾ مَلِکِ النَّاسِ ۙ﴿۲﴾ اِلٰہِ النَّاسِ ۙ﴿۳﴾ مِنۡ شَرِّ الۡوَسۡوَاسِ ۬ۙ الۡخَنَّاسِ ۪ۙ﴿۴﴾ الَّذِیۡ یُوَسۡوِسُ فِیۡ صُدُوۡرِ النَّاسِ ۙ﴿۵﴾ مِنَ الۡجِنَّۃِ وَ النَّاسِ ٪﴿۶﴾

 
বাংলা উচ্চারণঃ
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
কুল আ'উযু বিরাব্বিন্নাসি। মালিকিন্নাসি। ইলা হিন্নাসি মিন শাররিল ওয়াস ওয়াসিল খান্নাসি। আল্লাযী ইউওয়াসওয়িসু ফী ছুদুরিন্নাসি। মিনাল জ্বিন্নাতি অন্নাস।

 
বাংলা অর্থঃ
শুরু করছি আল্লাহর নামে যিনি পরম করুণাময়, অতি দয়ালু।
বলুন, আশ্রয় চাই মানুষের রবের মানুষের মালিকের মানুষের ইলাহের তার অনিষ্ট হতে যে কুমন্ত্রণা প্রদান করে, আর যে মানুষের মনে কুমন্ত্রণা প্রদান করে, জিন হোক, আর মানুষ হোক।

 
তাফসীরঃ

আয়াতঃ ১, ২ ও ৩

সূরা ফালাক, বাইরের পৃথিবীর বিপদ বিপর্যয় থেকে নিজেকে নিরাপদ করার জন্য আল্লাহ্‌র সাহায্য প্রার্থনার প্রতি মনোযোগ আকর্ষণ করা হয়েছে। এই সূরাতে আভ্যন্তরীন বিপদ বিপর্যয় থেকে অর্থাৎ আত্মর বিপদ থেকে নিজেকে নিরাপদ রাখার জন্য আল্লাহ্‌র নিরাপত্তা প্রার্থনা করা হয়েছে। সূরা ফালাকে জাগতিক বিপদ থেকে আশ্রয় প্রার্থনার শিক্ষা রয়েছে, সূরা নাসে পারলৌকিক বিপদ আপদ ও মুসীবত থেকে আশ্রয় প্রার্থনার প্রতি গুরুত্ব দেয়া হয়েছে।

আল্লাহ্‌র সাথে মানুষের সম্পর্ক হচ্ছে স্রষ্টা ও সৃষ্টির। স্রষ্টা ও সৃষ্টির সম্পর্ক তিনটি গুরুত্বপূর্ণ ভিত্তির উপরে প্রতিষ্ঠিত।

১) আল্লাহ্‌ আমাদের প্রভু, সৃষ্টিকর্তা এবং প্রতিপালক। আল্লাহ্‌ মানুষকে প্রতিপালন করেন এবং অনুগ্রহ দান করেন। তিনি মানুষকে বিভিন্ন নেয়ামতে ধন্য করে থাকেন যার সাহায্যে সে ইহলৌকিক ও পারলৌকিক কল্যাণ সাধনে সক্ষম হয় এবং মন্দ থেকে নিজেকে রক্ষা করতে পারে।

২) আল্লাহ্‌ হচ্ছেন বিশ্বভূবনের অধিপতি, সুতারাং মানুষেরও অধিপতি ও শাসক। পৃথিবীর যে কোন অধিপতি থেকে তিনি প্রচন্ড শক্তিশালী। আল্লাহ্‌ মানুষকে সঠিক পথে পরিচালনার ক্ষমতা রাখেন -যে পথে মানুষের জন্য কল্যাণ নিহিত আছে। তিনি মানুষকে জীবনধারণের জন্য বিধান দান করেছেন।

৩) “মানুষের ইলাহ্‌ ” অর্থাৎ মানুষের একমাত্র উপাস্য, পৃথিবীর কর্মজগত শেষ করে প্রতিটি মানুষকে আল্লাহ্‌র নিকট ফিরে যেতে হবে কর্ম জীবনের জবাবদিহিতার জন্য।

সে বিচার সভায় আল্লাহ্‌-ই হবেন একমাত্র বিচারক। পরলোকের জীবনে আল্লাহ্‌র সান্নিধ্য লাভই হচ্ছে মানুষের ইহ জীবনের একমাত্র লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য। আল্লাহ্‌-ই মানুষের একমাত্র উপাস্য বা ইলাহ্‌। এ সব দৃষ্টিকোণ থেকে বিচার করেই মানুষ শুধুমাত্র আল্লাহ্‌র নিকট তার ইহলৌকিক ও পারলৌকিক সর্ব নিরাপত্তার জন্য প্রার্থনা করবে।

আয়াতঃ ৪ ও ৫
মানুষকে আল্লাহ্‌ স্বাধীন ইচ্ছাশক্তি দান করেছেন। তার ফলে মানুষের স্বাধীনতা আছে ভালো বা মন্দকে গ্রহণ করার। এই স্বাধীনতার সুযোগ গ্রহণ করে থাকে শয়তান। সে মানুষের হৃদয়ের মাঝে আত্মগোপন করে থাকে এবং মনের ভিতর থেকে কৌশলে পরোক্ষ ভাবে প্রতারণাপূর্ণ কুমন্ত্রণা দান করে, যেনো মানুষ তার স্বাধীন ইচ্ছাশক্তির অপব্যবহার করে। মানুষকে মন্দ পথে চালিত করার এই শক্তি হচ্ছে শয়তানের শক্তি অথবা মানুষ রূপে বিরাজিত শয়তান রূপ মানুষ অথবা জ্বিন যারা ভবিষ্যতের রঙ্গীন স্বপ্ন দ্বারা মানুষকে প্রতারিত করে বিপথে চালিত করে। এরা মানুষের অন্তরে কুমন্ত্রণা দেয় গোপনে এবং মানুষকে প্রলুব্ধ করে সরে দাঁড়ায় – এর ফলে তাদের আমন্ত্রণ মানুষের নিকট আরও মনোহর মনে হয়।

আয়াতঃ ৬
এই আয়াতটির দ্বারা কুমন্ত্রণার উৎপত্তি স্থলকে আরও বিশদ ভাবে বর্ণনা করা হয়েছে। এই কুমন্ত্রণা দাতা হতে পারে মনুষ্যরূপ শয়তান যাদের চর্মচক্ষুতে দেখা যায় অথবা অদৃশ্য অশুভ শক্তি যেমন জ্বিন যারা অন্তরের ভিতর থেকে কুমন্ত্রণা দান করে। দেখুন শেষের টিকা। আল্লাহ্‌ আমাদের অবগতির জন্য বলেছেন যে, যতক্ষণ পর্যন্ত আমরা আল্লাহ্‌র নিরাপত্তা প্রার্থনা করবো, পৃথিবীর কোন অশুভ শক্তি তা বাহ্যিকই হোক দৃশ্যতঃ হোক বা অদৃশ্যই হোক, আমাদের কোন ক্ষতি করতে সক্ষম হবে না।
 
 

 

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

মোহাম্মদীয়া ফাউন্ডেশনের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url