Tafsir ul Surah Lahab সুরা লাহাব - এর তাফসীর

সাইটটি ভিজিট করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। আরও বেশি মানুষের কাছে ইসলামের জ্ঞান পৌঁছে দিতে শেয়ার ও কমেন্ট করুন।

 

 

সূরা লাহাবের তাফসীর
নবীজীর সাথে আবু লাহাবের দুষমনি
মুফতি রাফি বিন মুনির
 Tafsir ul Surah Lahab, Mufti Rafi Bin Monir

 

সূরার নাম : লাহাব
শ্রেণী : মাক্কী সূরা (মক্কায় অবতীর্ণ)
অন্য নাম : 
আল মাসাদ 
নামের অর্থ : অগ্নিশিখা, স্ফুলিঙ্গ
সূরার ক্রম : ১১১
আয়াতের সংখ্যা :
রুকুর সংখ্যা :

পারার ক্রম : ৩০-তম পারা
শব্দ সংখ্যা : ২৩
বর্ণ সংখ্যা : ৭৭
 
 
بِسْمِ اللہِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِیْمِ
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম
পরম করুণাময় অসীম দয়ালু আল্ল­াহর নামে (শুরু করছি)
 
 
تَبَّتْ يَدَا أَبِي لَهَبٍ وَتَبَّ
তাব্বাত ইয়াদা আবী লাহাবিওঁ ওয়াতাব্বা
ধ্বংস হোক আবু লহবের উভয় হাত, আর সে-ও ধ্বংস হোক!


Read more at: https://islamiclantern.blogspot.com/2015/04/blog-post_2.html
Writer: quranic sikkah team
 Perish the two hands of Abû Lahab (an uncle of the Prophet), and perish he!
The power of Abu Lahab will perish, and he will perish

Read more at: https://islamiclantern.blogspot.com/2015/04/blog-post_2.html
Writer: quranic sikkah team


Read more at: https://islamiclantern.blogspot.com/2015/04/blog-post_2.html
Writer: quranic sikkah team
 
 
مَا أَغْنَى عَنْهُ مَالُهُ وَمَا كَسَبَ
মা আগনা আনহু মালুহু ওয়ামা কাছাব
তার ধন-সম্পদ ও যা সে অর্জন করেছে তা তার কোনো কাজে আসবে না। 
  His wealth and his children will not benefit him.
 
سَيَصْلَى نَارًا ذَاتَ لَهَبٍ
সাইয়াছলা না রান যা তালাহাবিওঁ
তাকে অচিরেই ঠেলে দেওয়া হবে লেলিহান আগুনে
 He will be burnt in a Fire of blazing flames!
 
وَامْرَأَتُهُ حَمَّالَةَ الْحَطَبِ
ওয়ামরাআতুহু, হাম্মা লাতাল হাত্বোয়াব
এবং তার স্ত্রীকেও; যে ইন্ধন বহনকারিণী।
And his wife too, who carries wood (thorns of Sadan which she used to put on the way of the Prophet (SAW) , or use to slander him)
 
فِي جِيدِهَا حَبْلٌ مِنْ مَسَدٍ
ফী-জী-দিহা হাবলুম মিম মাসাদ ।
তার গলায় থাকবে কড়াপাকের খেজুরের আঁশের রশি।
    In her neck is a twisted rope of Masad (palm fibre).

 

 

শানে নুযুল 
সহীহ বুখারীতে হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, নবী করিম (সঃ) বাতহা নামক স্থানে গিয়ে একটি পাহাড়ের উপর আরোহন করলেন এবং উচ্চস্বরে, ‘ইয়া সাবা’হা’হ ইয়া সাবা’হা’ ( অর্থাৎ হে ভোরের বিপদ, হে ভোরের বিপদ) বলে ডাক দিতে শুরু করলেন। অল্পক্ষণের মধ্যে সমস্ত কুরাইশ নেতা সমাবেত হলো। তখন রাসূল (সঃ) বললেন, ‘যদি আমি তোমাদেরকে বলি যে, সকালে অথবা সন্ধ্যাবেলায় শত্রুরা তোমাদের উপর আক্রমণ চালাবে তবে কি তোমরা আমার কথায় বিশ্বাস করবে?’

তখন সমস্বরে বলে উঠলো, ‘হাঁ হাঁ অবশ্যই বিশ্বাস করবো।’ তখন তিনি তাদেরকে বললেন, ‘শোনো, আমি তোমাদেরকে আল্লাহর ভয়াবহ শাস্তির আগমনের সংবাদ  দিচ্ছি।’ তখন আবু লাহাব একথা শুনে বললো, ‘তোমার সর্বনাশ হোক, এ কথা বলার জন্যই কি তুমি আমাদেরকে সমবেত করেছো?’

তখন আল্লাহ তায়ালা এ সূরাটি নাযিল করেন।

 

পটভুমি
কুরআনে মাত্র এ একটি জায়গাতেই ইসলামের শত্রুদের কারো নাম নিয়ে তার নিন্দা করা হয়েছে। অথচ মক্কায় এবং হিজরাতের পরে মদীনায়ও এমন অনেক লোক ছিল যারা ইসলাম ও মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের শত্রুতার ক্ষেত্রে আবু লাহাবের চাইতে কোন অংশে কম ছিল না। 

প্রশ্ন হচ্ছে, এ ব্যক্তিটির এমনকি বিশেষত্ব ছিল যে কারণে তার নাম নিয়ে নিন্দা করা হয়েছে? একথা বুঝার জন্য সমকালীন আরবের সামাজিক অবস্থা অনুধাবন এবং সেখানে আবু লাহাবের ভূমিকা পর্যালোচনা করা প্রয়োজন।

প্রাচীন যুগে যেহেতু সারা আরব দেশের সব জাযগায় অশান্তি, বিশৃংখলা, লুটতরাজ ও রাজনৈতিক অরাজকতা বিরাজ করছিল এবং শত শত বছর থেকে এমন অবস্থা চলছিল যার ফলে কোন ব্যক্তির জন্য তার নিজের বংশ ও রক্তসম্পর্কের আত্মীয়- পরিজনের সহায়তা ছাড়া নিজের ধন প্রাণ ও ইজ্জত- আবরুর হেফাজত করা কোনক্রমেই সম্ভবপর ছিল না। এ জন্য আরবীয় সমাজের নৈতিক মূল্যবোধের মধ্যে আত্মীয়-স্বজনদের সাথে সদ্ব্যবহার ছিল অত্যন্ত গুরুত্বের অধিকারী। আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করাকে মহাপাপ মনে করা হতো। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন ইসলামের দাওয়াত নিয়ে এগিয়ে এলেন তখন আরবের ঐ প্রাচীন ঐতিহ্যের প্রভাবে কুরাইশ গোত্রের অন্যান্য পরিবার ও তাদের সরদাররা তাঁর কঠোর বিরোধিতা করলেও বনী হাশেম ও বনী মুত্তালিব (হাশেমের ভাই মুত্তালিবের সন্তানরা) কেবল তাঁর বিরোধিতা থেকে বিরত থাকেনি বরং প্রকাশ্যে তাঁকে সমর্থন দিয়ে এসেছে। অথচ তাদের অধিকাংশই তাঁর নবুওয়াতের প্রতি ঈমান আনেনি। কুরাইশের অন্যান্য পরিবারের লোকেরাও রসূলুল্লাহর (সা:) রক্ত সম্পর্কের আত্মীয়-স্বজনদের এ সমর্থন - সহযোগিতাকে আরবের নৈতিক ঐতিহ্যের যথার্থ অনুসারী মনে করতো। তাই তারা কখনো বনী হাশেম ও বনী মুত্তালিবকে এই বলে ধিক্কার দেয়নি যে, তোমরা একটি ভিন্ন ধর্মের আহবায়কের প্রতি সমর্থন দিয়ে নিজেদের পৈতৃক ধর্ম থেকে বিচ্যুত হয়ে গেছো। তারা একথা জানতো এবং স্বীকারও করতো যে, নিজেদের পরিবারের একজন সদ্যস্যকে তারা কোনক্রমেই শক্রর হাতে তুলে দিতে পারে না। কুরাইশ তথা সমগ্র আরবের অধিবাসীরাই নিজেদের আত্মীয়ের সাথে সহযোগিতা করাকে একটি সম্পূর্ণ স্বাভাবিক বিষয় বলে মনে করতো।

জাহেলী যুগেও আরবের লোকেরা এ নৈতিক আদর্শকে অত্যন্ত মর্যাদার চোখে দেখতো। অথচ শুধু মাত্র একজন লোক ইসলামের প্রতি বিদ্বেষ ও শত্রুতায় অন্ধ হয়ে এ আদর্শ ও মূলনীতি লংঘন করে। সে ছিল আবু লাহাব ইবনে আবদুল মুত্তালিব। যিনি ছিলেন রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের চাচা। রসূলের (সা:) পিতা এবং এ আবু লাহাব ছিল একই পিতার সন্তান। আরবে চাচাকে বাপের মতই মনে করা হতো। বিশেষ করে যখন ভাতিজার বাবার ইন্তিকাল হয়ে গিয়েছিল তখন আরবীয় সমাজের রীতি অনুযায়ী চাচার কাছে আশা করা হয়েছিল, সে ভাতিজাকে নিজের ছেলের মতো ভালোবাসবে। কিন্তু এ ব্যক্তি ইসলাম বৈরিতা ও কুফরী প্রেমে আকণ্ঠ ডুবে গিয়ে এ সমস্ত আরবীয় ঐতিহ্যকে পদদলিত করেছিল।

 

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

মোহাম্মদীয়া ফাউন্ডেশনের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url