Mohammadia Foundation
https://www.mohammadiafoundationbd.com/2021/12/Akash-prithibi-sristi.html
বিষয় ভিত্তিক আয়াত (পর্ব -৯) || আল কুরআনে আকাশ ও পৃথিবী সৃষ্টির রহস্য ||

এই বিশাল পৃথিবী, আকাশমন্ডলী, গ্রহ নক্ষত্র, ইহকাল-পরকাল ও মানব জীবনের সকল রহস্যই মহাগ্রন্থ পবিত্র আল কুরআনে লিপিবদ্ধ করে রেখেছেন। কোনটা সুস্পষ্টভাবে কোন অস্পষ্টভাবে। যারা অবিশ্বাসী তারা অস্পষ্ট বর্ণনা থেকে আল্লাহ পাকের বিধানকে বিতর্কিত করার প্রয়াস চালায়। আর জ্ঞানীরা এসব বর্ণনা থেকে আল্লাহর নির্দশাবলী তালাশ করেন। আল্লাহ পাক মহাগ্রন্থ পবিত্র কুরআনে মহাকাশ ও পৃথিবী সৃষ্টির রহস্য বর্ণনা করেছেন অনেক জায়গায়। আমরা সেসব নিয়ে এখানে ধারাবাহিক আলোচনা করছি। যা প্রকৃত জ্ঞানীদের মনে প্রভাব বিস্তার করবে ইন শা আল্লাহ।
সুরা আল- ইমরান, আয়াতঃ ১৯০
اِنَّ فِیۡ خَلۡقِ السَّمٰوٰتِ وَ الۡاَرۡضِ وَ اخۡتِلَافِ الَّیۡلِ وَ النَّهَارِ لَاٰیٰتٍ لِّاُولِی الۡاَلۡبَابِ ۱۹۰
নিশ্চয় আসমানসমূহ ও যমীনের সৃষ্টি এবং রাত ও দিনের বিবর্তনের মধ্যে রয়েছে বিবেকসম্পন্নদের জন্য বহু নির্দশন। আল-বায়ান
Indeed, in the creation of the heavens and the earth and the
alternation of the night and the day are signs for those of
understanding. Sahih International
১৯০. আসমানসমূহ ও যমীনের সৃষ্টিতে(১), রাত ও দিনের পরিবর্তনে(২) নিদর্শনাবলী রয়েছে(৩) বোধশক্তি সম্পন্ন লোকদের জন্য।
(১) অর্থাৎ আসমান এবং যমীন সৃষ্টির মধ্যে আল্লাহ্
তা'আলার এক বিরাট নিদর্শন বিদ্যমান। এ দুয়ের মধ্যে অবস্থিত আল্লাহ তা'আলার
অসংখ্য সৃষ্টিরাজিকেও এ আয়াত দ্বারা বুঝানো হয়েছে। এ বিরাট সৃষ্টজগতের
মধ্যে স্বকীয় বৈশিষ্ট্যমণ্ডিত প্রতিটি সৃষ্ট বস্তুই স্ব স্ব সৃষ্টিকর্তার
নিদর্শনরূপে দাঁড়িয়ে আছে।
(২) চিন্তা-ভাবনার দ্বিতীয় বিষয়টি হচ্ছে, দিন-রাত্রির আবর্তন। আয়াতে
উল্লেখিত اختلاف শব্দটি আরবী পরিভাষায়, ‘পরে আসা’ এর অর্থে ব্যবহৃত হয়ে
থাকে। সেমতে বাক্যের অর্থ হবে, রাত্রির গমন এবং দিবসের আগমন। আবার اختلاف
শব্দ দ্বারা কম-বেশীও বুঝায়। যেমন, শীতকালে রাত্রি হয় দীর্ঘ এবং দিন হয়
খাটো, গরমকালে দিন বড় এবং রাত্রি হয় ছোট। অনুরূপভাবে এক দেশ থেকে অন্য
দেশে দিবস এবং রাত্রির দৈর্ঘ্যেও তারতম্য হয়ে থাকে। যেমন, উত্তর মেরুর
সন্নিকটবর্তী দেশগুলোতে দিবাভাগ উত্তর মেরু থেকে দুরবর্তী দেশগুলোর তুলনায়
অনেক বেশী দীর্ঘ হয়। এসব বিষয়ই আল্লাহ্ তা'আলার অপার কুদরাতের অতি
উজ্জ্বল নিদর্শন।
(৩) آية এর বহুবচন হল آيات। শব্দটি কয়েকটি অর্থেই ব্যবহৃত হয়। যথা-
মু'জিযাকে ‘আয়াত’ বলা হয়। অনুরূপভাবে, কুরআনের বাক্যকেও ‘আয়াত’ বলা হয়।
তৃতীয় অর্থে দলীল-প্রমাণ ও নিদর্শনাবলীকে বুঝানো হয়ে থাকে। এখানে তৃতীয়
অর্থেই শব্দটি ব্যবহৃত হয়েছে। অর্থাৎ এসব বিষয়ের মধ্যে আল্লাহ্ তা'আলার
বিরাট নিদর্শনাবলী রয়েছে।
তাফসীরে জাকারিয়া
সুরা আল- ইমরান, আয়াতঃ ১৯১
الَّذِیۡنَ یَذۡکُرُوۡنَ اللّٰهَ قِیٰمًا وَّ قُعُوۡدًا وَّ عَلٰی
جُنُوۡبِهِمۡ وَ یَتَفَکَّرُوۡنَ فِیۡ خَلۡقِ السَّمٰوٰتِ وَ الۡاَرۡضِ ۚ
رَبَّنَا مَا خَلَقۡتَ هٰذَا بَاطِلًا ۚ سُبۡحٰنَکَ فَقِنَا عَذَابَ
النَّارِ ﴿۱۹۱
যারা আল্লাহকে স্মরণ করে দাঁড়িয়ে, বসে ও কাত হয়ে এবং আসমানসমূহ ও
যমীনের সৃষ্টি সম্পর্কে চিন্তা করে। (বলে) ‘হে আমাদের রব, তুমি এসব অনর্থক
সৃষ্টি করনি। তুমি পবিত্র মহান। সুতরাং তুমি আমাদেরকে আগুনের আযাব থেকে
রক্ষা কর’। আল-বায়ান
Who remember Allah while standing or sitting or [lying] on
their sides and give thought to the creation of the heavens and the
earth, [saying], "Our Lord, You did not create this aimlessly; exalted
are You [above such a thing]; then protect us from the punishment of the
Fire. Sahih International
১৯১. যারা দাঁড়িয়ে, বসে ও
শুয়ে আল্লাহর স্মরণ করে এবং আসমানসমূহ ও যমীনের সৃষ্টি সম্বন্ধে চিন্তা
করে, আর বলে ‘হে আমাদের রব! আপনি এগুলো অনর্থক সৃষ্টি করেননি(১), আপনি
অত্যন্ত পবিত্র, অতএব আপনি আমাদেরকে আগুনের শাস্তি হতে রক্ষা করুন।
(১) সারকথা, আল্লাহ্ তা'আলার সৃষ্টি ও সৃষ্টজগতের উপর
চিন্তা-গবেষণা করে তার মাহাত্ম্য ও কুদরাত সম্পর্কে অবগত হওয়া একটি মহৎ ও
উচ্চ পর্যায়ের ইবাদাত। সেগুলোর মধ্যে গভীর মনোনিবেশ করে তা থেকে কোন
শিক্ষা গ্রহণ না করা একান্তই নির্বুদ্ধিতা। উল্লেখিত আয়াতের শেষ বাক্যে
আল্লাহর নিদর্শনসমূহে চিন্তা গবেষণা করার ফলাফল বাতলে দেয়া হয়েছে। বলা
হয়েছে (رَبَّنَا مَا خَلَقْتَ هَٰذَا بَاطِلًا)
অর্থাৎ আল্লাহ্ তা'আলার সীমাহীন সৃষ্টির উপর যে লোক চিন্তা-ভাবনা করে সে
লোক সহজেই বুঝে যে, এসব বস্তু-সামগ্রীকে আল্লাহ নিরর্থক সৃষ্টি করেননি; বরং
এসবের সৃষ্টির পেছনে হাজারো তাৎপর্য নিহিত রয়েছে।
সে সমস্তকে মানুষের সেবায় নিয়োজিত করে দিয়ে মানুষকে এ চিন্তা-ভাবনা
করার আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে যে, সমগ্র পৃথিবী তাদের কল্যাণের জন্য তৈরী
করা হয়েছে এবং তাদের সৃষ্টি করা হয়েছে একমাত্র আল্লাহ তা'আলার ইবাদাতের
উদ্দেশ্যে। এটাই হল তাদের জীবনের লক্ষ্য। সুতরাং গোটা বিশ্ব-সৃষ্টি নিরর্থক
নয় বরং এগুলো সবই বিশ্বস্রষ্টা আল্লাহ রাব্বুল আলমীনের অসীম কুদরাত ও
হেকমতেরই প্রকৃষ্ট প্রমাণ।
উবাইদ ইবনে উমাইর বলেনঃ আমি আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহাকে বললাম, রাসূলের
সবচেয়ে আশ্চর্য কি কাজ আপনি দেখেছেন, তা আমাদেরকে জানান। আয়েশা
রাদিয়াল্লাহু আনহা বললেন, এক রাতে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম আমাকে বললেন, হে আয়েশা, আমাকে আমার রবের ইবাদাত করতে দাও। আমি
বললাম, হে রাসূল, আমি আপনার পাশে থাকতে ভালবাসি এবং যা আপনাকে খুশি করে তা
করতে ভালবাসি। তারপর আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা বললেন, রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ওযু করলেন এবং সালাত আদায়ে নিবিষ্ট হলেন ও
কাঁদতে থাকলেন।
আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল, আপনি কাঁদছেন অথচ আল্লাহ আপনার পূর্বাপর
সমস্ত গোনাহ ক্ষমা করে দিয়েছেন? উত্তরে তিনি বললেনঃ আমি কি কৃতজ্ঞ বান্দা
হব না? এ রাতে আমার উপর একটি আয়াত নাযিল হয়েছে, যে ব্যক্তি তা তেলাওয়াত
করল এবং চিন্তা-গবেষণা করল না, তার ধ্বংস অনিবার্য। তারপর তিনি এ আয়াতটি
তেলাওয়াত করলেন। সহীহ [ইবনে হিব্বানঃ ৬২০]
তাফসীরে জাকারিয়া
সুরা ইউনুস, আয়াতঃ ৫
هُوَ الَّذِیۡ جَعَلَ الشَّمۡسَ ضِیَآءً وَّ الۡقَمَرَ نُوۡرًا وَّ
قَدَّرَهٗ مَنَازِلَ لِتَعۡلَمُوۡا عَدَدَ السِّنِیۡنَ وَ الۡحِسَابَ ؕ
مَا خَلَقَ اللّٰهُ ذٰلِکَ اِلَّا بِالۡحَقِّ ۚ یُفَصِّلُ الۡاٰیٰتِ
لِقَوۡمٍ یَّعۡلَمُوۡنَ ﴿۵
তিনিই সূর্যকে করেছেন দীপ্তিময় এবং চাঁদকে আলোময় আর তার জন্য
নির্ধারণ করেছেন বিভিন্ন মনযিল, যাতে তোমরা জানতে পার বছরের গণনা এবং
(সময়ের) হিসাব। আল্লাহ এগুলো অবশ্যই যথার্থভাবে সৃষ্টি করেছেন। জ্ঞানী
সম্প্রদায়ের জন্য তিনি আয়াতসমূহ বিস্তারিতভাবে বর্ণনা করেন। আল-বায়ান
It is He who made the sun a shining light and the moon a
derived light and determined for it phases - that you may know the
number of years and account [of time]. Allah has not created this except
in truth. He details the signs for a people who know Sahih International
(৫) তিনিই সেই সত্তা
যিনি সূর্যকে দীপ্তিমান ও চন্দ্রকে আলোকময় বানিয়েছেন[1] এবং ওর (গতির)
জন্যে কক্ষসমূহ নির্ধারিত করেছেন, যাতে তোমরা বছরসমূহের সংখ্যা ও (সময়ের)
হিসাব জানতে পার।[2] আল্লাহ এসব বস্তু অযথা সৃষ্টি করেননি, তিনি জ্ঞানবান
সম্প্রদায়ের জন্য এই সমস্ত নিদর্শন বিশদভাবে বর্ণনা করেন।
[1] ضِيَآءٌ , ضُوْءٌ সমার্থবোধক শব্দ। এখানে ‘মুযাফ’
(সম্বন্ধপদের প্রথমাংশ) উহ্য আছে; অর্থাৎ, ذات ضياء والقمر ذا نور
‘‘সূর্যকে দীপ্তিমান এবং চন্দ্রকে আলোময় বানিয়েছেন।’’ অথবা তাকে অতিশয়োক্তি
বলে ধরা হবে; অর্থাৎ ঠিক যেন তা নিজেই প্রদীপ্ত ও আলো। আকাশ ও পৃথিবীর
সৃষ্টি এবং তার পরিচালনার কথা বর্ণনার পর উদাহরণ স্বরূপ আরো কিছু বস্তুর
বর্ণনা করা হচ্ছে, যা বিশ্ব-পরিচালনার অন্তর্ভুক্ত। তার মধ্যে সূর্য ও
চন্দ্র অধিক গুরুতত্ত্বপূর্ণ। সূর্যের তাপ ও তার আলোর প্রয়োজনীয়তা
প্রত্যেকেই জানে। অনুরূপ চন্দ্রের মৃদু জ্যোৎস্নালোকের যে মধুরতা ও
উপকারিতা আছে, তাও বর্ণনার অপেক্ষা রাখে না। বৈজ্ঞানিকদের মতে সূর্যের
নিজস্ব আলো আছে আর চন্দ্রের নিজস্ব আলো নেই বরং সূর্যের আলো থেকে আলো গ্রহণ
করে থাকে। (ফাতহুল কাদীর) والله أعلم بالصواب
[2] অর্থাৎ আমি চন্দ্র পরিভ্রমণের কক্ষপথ নির্ধারণ করে দিয়েছি। কক্ষপথ
বলতে তার ঐ পরিভ্রমণপথকে বুঝায়, যা চাঁদ এক দিন ও এক রাত্রে তার বিশেষ
পরিক্রমণ দ্বারা অতিক্রম করে। উক্ত কক্ষ হল আটাশটি। প্রত্যেক রাত্রে একটি
কক্ষ সমাপ্ত করে, তাতে কখনো কোন ব্যতিক্রম হয় না। প্রথম কক্ষগুলিতে চাঁদকে
ছোট ও সরু দেখা যায়। তারপর ধীরে ধীরে বড় হতে থাকে এমন কি চৌদ্দ রাত্রি বা
চৌদ্দতম কক্ষে গিয়ে তা পূর্ণ (পূর্ণিমার) চন্দ্র রূপে প্রকাশ হয়। তার পর
পুনরায় ছোট ও সরু হতে আরম্ভ করে, এমনকি শেষে এক বা দুই রাত্রি লুক্কায়িত
থাকে এবং পরে প্রথম দিনের ক্ষীণচন্দ্র রূপে উদিত হয়। চন্দ্রের উপকারিতা এই
বর্ণনা করা হয়েছে যে, ‘‘যাতে তোমরা বছরের গণনা ও সময়ের হিসাব করতে পার।’’
অর্থাৎ চন্দ্রের সেই কক্ষপথ ও গতি দ্বারাই মাস ও বছর গণনা হয়, যার দ্বারা
তোমাদের সকল বস্তুর হিসাব রাখা সহজ হয়। অর্থাৎ বছর বার মাসের, মাস উনত্রিশ
বা ত্রিশ দিনের, দিবারাত্রি চবিবশ ঘণ্টার, সমান সমান দিন হলে বার ঘণ্টা করে
এবং শীত ও গ্রীষ্মকালে কমবেশি হয়ে থাকে। তাছাড়া পার্থিব উপকার ও
কাজ-কারবার শুধু সেই চন্দ্রের কক্ষপথের সাথে সম্পৃক্ত নয়; বরং তাতে দ্বীনী
লাভও অর্জন হয়। নতুন চাঁদ দ্বারা হজ্জ, রমযানের রোযা, নিষিদ্ধ মাস এবং
অন্যান্য ইবাদতের সময়কাল নির্দিষ্ট করা হয়, প্রত্যেক মু’মিন তার গুরুতত্ত্ব
দিয়ে থাকে।
তাফসীরে আহসানুল বায়ান
সুরা ইউনুস, আয়াতঃ ৬
اِنَّ فِی اخۡتِلَافِ الَّیۡلِ وَ النَّهَارِ وَ مَا خَلَقَ اللّٰهُ فِی
السَّمٰوٰتِ وَ الۡاَرۡضِ لَاٰیٰتٍ لِّقَوۡمٍ یَّتَّقُوۡنَ ﴿۶
নিশ্চয় রাত ও দিবসের বিবর্তনে এবং আসমানসমূহ ও যমীনে যা আল্লাহ
সৃষ্টি করেছেন, তাতে বহু নিদর্শন রয়েছে এমন কওমের জন্য, যারা তাকওয়া
অবলম্বন করে। আল-বায়ান
Indeed, in the alternation of the night and the day and [in]
what Allah has created in the heavens and the earth are signs for a
people who fear Allah Sahih International
৬. নিশ্চয় দিন ও রাতের
পরিবর্তনে এবং আল্লাহ আসমানসমূহ ও যমীনে যা সৃষ্টি করেছেন(১) তাতে নিদর্শন
রয়েছে এমন সম্প্রদায়ের জন্য যারা তাকওয়া অবলম্বন করে।
(১) আসমান ও যমীনে আল্লাহ্ তা'আলা যা সৃষ্টি করেছেন তাতে
চিন্তা করলে দেখা যাবে যে, সেগুলো আল্লাহরই মহিমা ও শ্রেষ্ঠত্ব ঘোষণা
করছে। কুরআনের অন্যান্য আয়াতেও আল্লাহ্ তা'আলা এ বিষয়টির দিকে ইঙ্গিত
করেছেন। যেমন, সূরা ইউসুফঃ ১০৫, সূরা ইউনুসঃ ১০১, সূরা সাবাঃ ৯, সূরা আলে
ইমরানঃ ১৯০। এগুলোর পরিবর্তনের অর্থ, একটির পর অপরটি এমনভাবে আসা তাদের
সুনির্দিষ্ট নিয়মের কোন ব্যঘাত ঘটে না। [ইবন কাসীর] এ ব্যাপারে সূরা
আল-আরাফ এর ৫৪, সূরা ইয়াসীন এর ৪০ নং এবং সূরা আল-আন’আমের ৯৬ নং আয়াতেও
চাঁদ ও সূর্যের নিয়মানুবর্তিতার কথা বর্ণিত হয়েছে। [ইবন কাসীর]
তাফসীরে জাকারিয়া
সুরা আন-নাহল, আয়াতঃ ৪৮
اَوَ لَمۡ یَرَوۡا اِلٰی مَا خَلَقَ اللّٰهُ مِنۡ شَیۡءٍ
یَّتَفَیَّؤُا ظِلٰلُهٗ عَنِ الۡیَمِیۡنِ وَ الشَّمَآئِلِ سُجَّدًا
لِّلّٰهِ وَ هُمۡ دٰخِرُوۡنَ ﴿۴۸
আল্লাহ যে সকল বস্তু সৃষ্টি করেছেন, তারা কি সে দিকে তাকায়নি,
যার ছায়াসমূহ ডানে ও বামে হেলে পড়ে আল্লাহর জন্য সিজাদারত অবস্থায়, আর তারা
একান্ত বিনীত? আল-বায়ান
Have they not considered what things Allah has created? Their
shadows incline to the right and to the left, prostrating to Allah,
while they are humble. Sahih International
৪৮. তারা কি লক্ষ্য করে
না আল্লাহর সৃষ্ট বস্তুর প্রতি, যার ছায়া(১) ডানে ও বামে ঢলে পড়ে একান্ত
অনুগত হয়ে আল্লাহর প্রতি সিজদাবনত হয়?
(১) অর্থাৎ দেহ বিশিষ্ট সমস্ত জিনিসের ছায়া থেকে এ
আলামতই জাহির হচ্ছে যে, পাহাড়-পর্বত, গাছ-পালা, জন্তু-জানোয়ার বা মানুষ
সবাই একটি বিশ্বজনীন আইনের শৃংখলে আষ্টেপৃষ্ঠে বাঁধা। আল্লাহর সার্বভৌম
ক্ষমতার ক্ষেত্রে কারোর সামান্যতম অংশও নেই। কোন জিনিসের ছায়া থাকলে বুঝতে
হবে, সেটি একটি জড় বস্তু। আর জড় বস্তু হওয়ার অর্থ হলো, সেটি একটি
সৃষ্টি এবং সৃষ্টিকর্তার অনুগত গোলাম। এ ব্যাপারে কোন সন্দেহ থাকতে পারে
না। ছায়ার সিজদা সংক্রান্ত আলোচনা এর পূর্বে সূরা আর-রাদের ১৫ নং আয়াতে
করা হয়েছে।
তাফসীরে জাকারিয়া
সুরা আন-নাহল, আয়াতঃ ৪৯
وَ لِلّٰهِ یَسۡجُدُ مَا فِی السَّمٰوٰتِ وَ مَا فِی الۡاَرۡضِ مِنۡ
دَآبَّۃٍ وَّ الۡمَلٰٓئِکَۃُ وَ هُمۡ لَا یَسۡتَکۡبِرُوۡنَ ﴿۴۹
আর আল্লাহকেই সিজদা করে আসমানসমূহে যা আছে এবং যমীনে যে প্রাণী আছে, আর ফেরেশতারা এবং তারা অহঙ্কার করে না। আল-বায়ান
And to Allah prostrates whatever is in the heavens and
whatever is on the earth of creatures, and the angels [as well], and
they are not arrogant. Sahih International
সুরা আন-নাহল, আয়াতঃ ৫০
یَخَافُوۡنَ رَبَّهُمۡ مِّنۡ فَوۡقِهِمۡ وَ یَفۡعَلُوۡنَ مَا یُؤۡمَرُوۡنَ ﴿ٛ۵۰
তারা তাদের উপরস্থ রবকে ভয় করে এবং তাদেরকে যা নির্দেশ দেয়া হয়, তারা তা করে।[সাজদাহ] আল-বায়ান
They fear their Lord above them, and they do what they are commanded. Sahih International
৫০. তারা ভয় করে তাদের উপরস্থ(১) তাদের রবকে এবং তাদেরকে যা আদেশ করা হয় তারা তা করে।
(১) এ আয়াত এবং এ ধরণের অসংখ্য আয়াত ও হাদীস থেকে
প্রমাণিত হয় যে, আল্লাহ তা'আলা উপরে সুউচ্চে অবস্থান করছেন। তিনি তার
আরশের উপর আছেন। এটাই আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআতের আকীদা। এর বাইরের
যাবতীয় আকীদা বিভ্রান্তি ও ভ্রষ্টতা।
তাফসীরে জাকারিয়া
******************************************
Thank you for visiting the site. If you like the article, share it on social media to invite other Vines to the path of truth and justice. Click on OUR ACTION PLAN button to know about activities, goals and objectives of Mohammadia Foundation and to participate in the service of religion and humanity.
Almost all articles on this website are written in Bengali. But you can also read it in your language if you want. Click the “ভাষা বেছে নিন” button at the bottom of the website to read in your own language.
0 Comments
দয়া করে নীতিমালা মেনে মন্তব্য করুন