সূরা আল-মুতাফফিফীন তেলাওয়াত, উচ্চারণ, অনুবাদ ও তাফসীর || কারী শেখ আব্দুল বাসিত || Surah Al-Mutaffifin ||

সূরা আল-মুতাফফিফীন তেলাওয়াত

কারী শেখ আব্দুল বাসিত

সূরা আল-মুতাফফিফীন কোরআন মাজিদের ৮৩ নম্বর সূরা। 
এই সূরার মোট আয়াত সংখ্যা ৩৬ টি। 
সূরা আল-মুতাফফিফীন এর বাংলা অর্থ- প্রতারণা। 
এই সূরা মক্কায় অবতীর্ণ হয়েছে। 

সূরা আল মুতাফফিফীন আরবী উচ্চারণ

Surah Al-Mutaffifin Arabi Uchcharon

১ وَیۡلٌ لِّلۡمُطَفِّفِیۡنَ
২ الَّذِیۡنَ اِذَا اکۡتَالُوۡا عَلَی النَّاسِ یَسۡتَوۡفُوۡنَ ۫
৩ وَ اِذَا کَالُوۡهُمۡ اَوۡ وَّزَنُوۡهُمۡ یُخۡسِرُوۡنَ 
৪ اَلَا یَظُنُّ اُولٰٓئِکَ اَنَّهُمۡ مَّبۡعُوۡثُوۡنَ ۙ
৫ لِیَوۡمٍ عَظِیۡمٍ
৬ یَّوۡمَ یَقُوۡمُ النَّاسُ لِرَبِّ الۡعٰلَمِیۡنَ
৭ کَلَّاۤ اِنَّ کِتٰبَ الۡفُجَّارِ لَفِیۡ سِجِّیۡنٍ ؕ
৮ وَ مَاۤ اَدۡرٰىکَ مَا سِجِّیۡنٌ
৯ کِتٰبٌ مَّرۡقُوۡمٌ ؕ
১০ وَیۡلٌ یَّوۡمَئِذٍ لِّلۡمُکَذِّبِیۡنَ 
১১ الَّذِیۡنَ یُکَذِّبُوۡنَ بِیَوۡمِ الدِّیۡنِ 
১২ وَ مَا یُکَذِّبُ بِهٖۤ اِلَّا کُلُّ مُعۡتَدٍ اَثِیۡمٍ
১৩ اِذَا تُتۡلٰی عَلَیۡهِ اٰیٰتُنَا قَالَ اَسَاطِیۡرُ الۡاَوَّلِیۡنَ
১৪ کَلَّا بَلۡ ٜ رَانَ عَلٰی قُلُوۡبِهِمۡ مَّا کَانُوۡا یَکۡسِبُوۡنَ
১৫ کَلَّاۤ اِنَّهُمۡ عَنۡ رَّبِّهِمۡ یَوۡمَئِذٍ لَّمَحۡجُوۡبُوۡنَ
১৬ ثُمَّ اِنَّهُمۡ لَصَالُوا الۡجَحِیۡمِ
১৭ ثُمَّ یُقَالُ هٰذَا الَّذِیۡ کُنۡتُمۡ بِهٖ تُکَذِّبُوۡنَ
১৮ کَلَّاۤ اِنَّ کِتٰبَ الۡاَبۡرَارِ لَفِیۡ عِلِّیِّیۡنَ
১৯ وَ مَاۤ اَدۡرٰىکَ مَا عِلِّیُّوۡنَ
২০ کِتٰبٌ مَّرۡقُوۡمٌ 
২১ یَّشۡهَدُهُ الۡمُقَرَّبُوۡنَ
২২ اِنَّ الۡاَبۡرَارَ لَفِیۡ نَعِیۡمٍ
২৩ عَلَی الۡاَرَآئِکِ یَنۡظُرُوۡنَ
২৪ تَعۡرِفُ فِیۡ وُجُوۡهِهِمۡ نَضۡرَۃَ النَّعِیۡمِ
২৫ یُسۡقَوۡنَ مِنۡ رَّحِیۡقٍ مَّخۡتُوۡمٍ
২৬ خِتٰمُهٗ مِسۡکٌ ؕ وَ فِیۡ ذٰلِکَ فَلۡیَتَنَافَسِ الۡمُتَنَافِسُوۡنَ
২৭ وَ مِزَاجُهٗ مِنۡ تَسۡنِیۡمٍ
২৮ عَیۡنًا یَّشۡرَبُ بِهَا الۡمُقَرَّبُوۡنَ
২৯ اِنَّ الَّذِیۡنَ اَجۡرَمُوۡا کَانُوۡا مِنَ الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا یَضۡحَکُوۡنَ
৩০ وَ اِذَا مَرُّوۡا بِهِمۡ یَتَغَامَزُوۡنَ
৩১ وَ اِذَا انۡقَلَبُوۡۤا اِلٰۤی اَهۡلِهِمُ انۡقَلَبُوۡا فَکِهِیۡنَ 
৩২ وَ اِذَا رَاَوۡهُمۡ قَالُوۡۤا اِنَّ هٰۤؤُلَآءِ لَضَآلُّوۡنَ 
৩৩ وَ مَاۤ اُرۡسِلُوۡا عَلَیۡهِمۡ حٰفِظِیۡنَ
৩৪ فَالۡیَوۡمَ الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا مِنَ الۡکُفَّارِ یَضۡحَکُوۡنَ 
৩৫ عَلَی الۡاَرَآئِکِ ۙ یَنۡظُرُوۡنَ
৩৬ هَلۡ ثُوِّبَ الۡکُفَّارُ مَا کَانُوۡا یَفۡعَلُوۡنَ

সূরা আল মুতাফফিফীন বাংলা উচ্চারণ

Surah Al-Mutaffifin Bangla Uchcharon

১) ওয়াইলুলিললমুতাফফিফীন।
২) আল্লাযীনা ইয়াকতা-লূ‘আলান্না-ছি ইয়াছতাওফূন।
৩) ওয়া ইযা-কা-লূহুম আও ওয়াঝানূহুম ইউখছিরূন।
৪) আলা-ইয়াজু ননুউলাইকা আন্নাহুম মাব‘ঊছূন।
৫) লিয়াওমিন ‘আজীমি।
৬) ইয়াওমা ইয়াকূমুন্না-ছূলিরাব্বিল ‘আ-লামীন।
৭) কাল্লাইন্না কিতা-বাল ফুজ্জা-রি লাফী ছিজ্জীন।
৮) ওয়ামাআদরা-কা মা-ছিজ্জীন।
৯) কিতা-বুমমারকুম।
১০) ওয়াইলুইঁ ইয়াওমাইযিল লিলমুকাযযিবীন।
১১) আল্লাযীনা ইউকাযযিবূনা বিইয়াওমিদ্দীন।
১২) ওয়ামা-ইউকাযযিবুবিহীইল্লা-কুল্লুমু‘তাদিন আছীম।
১৩) ইযা-তুতলা-‘আলাইহি আ-য়া-তুনা-কা-লা আছা-তীরুল আওওয়ালীন।
১৪) কাল্লা-বাল রা-না ‘আলা-কুলূবিহিম মা-কা-নূইয়াকছিবূন।
১৫) কাল্লাইন্নাহুম ‘আর রাব্বিহিম ইয়াওমাইযিল লামাহজূবূন।
১৬) ছু ম্মা ইন্নাহুম লাসা-লুল জাহীম।
১৭) ছু ম্মা ইউকা-লূহা-যাল্লাযী কুনতুম বিহী তুকাযযিবূন।
১৮) কাল্লাইন্না কিতা-বাল আবরা-রি লাফী ‘ইলিলইঈন।
১৯) ওয়ামাআদরা-কা মা-‘ইলিলইয়ূন।
২০) কিতা-বুমমারকূম
২১) ইয়াশহাদুহুল মুকাররাবূন।
২২) ইন্নাল আবরা-রা লাফী না‘ঈম।
২৩) ‘আলাল আরাইকি ইয়ানজু রুন।
২৪) তা‘রিফুফী উজূহিহিম নাদরাতান্না‘ঈম।
২৫) ইউছকাওনা মির রাহীকিমমাখতূম।
২৬) খিতা-মুহূমিছকুওঁ ওয়া ফী যা-লিকা ফালইয়াতানা-ফাছিল মুতানা-ফিছূন।
২৭) ওয়া মিঝা-জুহূমিন তাছনীম।
২৮) ‘আইনাইঁ ইয়াশরাবুবিহাল মুকাররাবূন।
২৯) ইন্নাল্লাযীনা আজরামূকা-নূমিনাল্লাযীনা আ-মানূইয়াদহাকূন।
৩০) ওয়া ইযা-মাররূ বিহিম ইতাগা-মাঝূন।
৩১) ওয়া ইযানকালাবূ-ইলাআহলিহিমুনকালাবূফাকিহীন।
৩২) ওয়া ইযা-রাআওহুম কা-লূইন্না হাউলাই লাদাললূন।
৩৩) ওয়ামাউরছিলূ‘আলাইহিম হা-ফিজীন।
৩৪) ফালইয়াওমাল্লাযীনা আ-মানূমিনাল কুফফা-রি ইয়াদহাকূন।
৩৫) ‘আলাল আরাইকি ইয়ানজু রূন।
৩৬) হাল ছুওব্বিাল কুফফা-রু মা-কা-নূইয়াফ‘আলূন।

সূরা আল মুতাফফিফীন বাংলা অনুবাদ

Surah Al-Mutaffifin Bangla Onuba

১. ধ্বংস যারা পরিমাপে কম দেয় তাদের জন্য।
২. যারা লোকদের কাছ থেকে মেপে নেয়ার সময় পূর্ণমাত্রায় গ্রহণ করে।
৩. আর যখন তাদেরকে মেপে দেয় অথবা ওজন করে দেয় তখন কম দেয়।
৪. তারা কি দৃঢ় বিশ্বাস করে না যে, নিশ্চয় তারা পুনরুত্থিত হবে,
৫. এক মহা দিবসে ?
৬. যেদিন মানুষ সৃষ্টিকুলের রবের জন্য দাঁড়াবে।
৭. কখনো নয়, নিশ্চয় পাপাচারীদের ‘আমলনামা সিজ্জীনে।* 
৮. কিসে তোমাকে জানাবে ‘সিজ্জীন’ কী? 
৯. লিখিত কিতাব।
১০. সেদিন ধ্বংস অস্বীকারকারীদের জন্য । 
১১. যারা প্রতিদান দিবসকে অস্বীকার করে।
১২. আর সকল সীমালঙ্ঘনকারী পাপাচারী ছাড়া কেউ তা অস্বীকার করে না।
১৩. যখন তার কাছে আমার আয়াতসমূহ তিলাওয়াত করা হয় তখন সে বলে, ‘পূর্ববর্তীদের রূপকথা।’
১৪. কখনো নয়, বরং তারা যা অর্জন করত তা-ই তাদের অন্তরসমূহকে ঢেকে দিয়েছে।
১৫. কখনো নয়, নিশ্চয় সেদিন তারা তাদের রব থেকে পর্দার আড়ালে থাকবে।
১৬. তারপর নিশ্চয় তারা প্রজ্জ্বলিত আগুনে প্রবেশ করবে।
১৭. তারপর বলা হবে, এটাই তা যা তোমরা অস্বীকার করতে।
১৮. কখনো নয়, নিশ্চয় নেককার লোকদের আমলনামা থাকবে ইল্লিয়্যীনে ।* 
১৯. কিসে তোমাকে জানাবে ‘ইল্লিয়্যীন’ কী?
২০. লিখিত কিতাব। 
২১. নৈকট্যপ্রাপ্তরাই তা অবলোকন করে। 
২২. নিশ্চয় নেককাররাই থাকবে সুখ-স্বাচ্ছন্দ্যের মধ্যে।
২৩. সুসজ্জিত আসনে বসে তারা দেখতে থাকবে।
২৪. তুমি তাদের চেহারাসমূহে সুখ-স্বাচ্ছন্দ্যের লাবণ্যতা দেখতে পাবে।
২৫. তাদেরকে সীলমোহর করা বিশুদ্ধ পানীয় থেকে পান করানো হবে। 
২৬. তার মোহর হবে মিসক। আর প্রতিযোগিতাকারীদের উচিৎ এ বিষয়ে প্রতিযোগিতা করা।
২৭. আর তার মিশ্রণ হবে তাসনীম থেকে।
২৮. তা এক প্রস্রবণ, যা থেকে নৈকট্যপ্রাপ্তরা পান করবে।
২৯. নিশ্চয় যারা অপরাধ করেছে তারা মুমিনদেরকে নিয়ে হাসত।
৩০. আর যখন তারা মুমিনদের পাশ দিয়ে যেত তখন তারা তাদেরকে নিয়ে চোখ টিপে বিদ্রূপ করত।
৩১. আর যখন তারা পরিবার-পরিজনের কাছে ফিরে আসত তখন তারা উৎফুল্ল হয়ে ফিরে আসত। 
৩২. আর যখন তারা মুমিনদেরকে দেখত তখন বলত, ‘নিশ্চয় এরা পথভ্রষ্ট’।
৩৩. আর তাদেরকে তো মুমিনদের হিফাযতকারী হিসেবে পাঠানো হয়নি।
৩৪. অতএব আজ মুমিনরাই কাফিরদেরকে নিয়ে হাসবে। 
৩৫. উচ্চ আসনে বসে তারা দেখতে থাকবে।
৩৬. কাফিরদেরকে তাদের কৃতকর্মের প্রতিদান দেয়া হল তো? 

সূরা আল মুতাফফিফীন তাফসীর

Surah Al-Mutaffifin Tafseer

১. দুর্ভোগ তাদের জন্য যারা মাপে কম দেয়(১),
(১) تَطْفِيْفٌ এর অর্থ মাপে কম করা। যে এরূপ করে তাকে বলা হয় مُطَفَّف [কুরতুবী] কুরআনের এই আয়াত ও বিভিন্ন হাদীসে মাপ ও ওজনে কম করাকে হারাম করা হয়েছে এবং সঠিকভাবে ওজন ও পরিমাপ করার জন্য কড়া তাগিদ করা হয়েছে। যেমন বলা হয়েছেঃ “ইনসাফ সহকারে পুরো ওজন ও পরিমাপ করো। আমি কাউকে তার সামর্থের চাইতে বেশীর জন্য দায়িত্বশীল করি না।” [সূরা আল-আনআমঃ ১৫২] আরও বলা হয়েছেঃ “মাপার সময় পুরো মাপবে এবং সঠিক পাল্লা দিয়ে ওজন করবে।” [সূরা আল-ইসরা: ৩৫] অন্যত্র তাকীদ করা হয়েছেঃ “ওজনে বাড়াবাড়ি করো না, ঠিক ঠিকভাবে ইনসাফের সাথে ওজন করো এবং পাল্লায় কম করে দিয়ো না। [সূরা আর-রহমান: ৮–৯]। শু'আইব আলাইহিস সালামের সম্প্রদায়ের ওপর এ অপরাধের কারণে আযাব নাযিল হয় যে, তাদের মধ্যে ওজনে ও মাপে কম দেওয়ার রোগ সাধারণভাবে ছড়িয়ে পড়েছিল এবং শু'আইব আলাইহিস সালাম এর বারবার নসীহত করা সত্বেও এ সম্প্রদায়টি এ অপরাধমূলক কাজটি থেকে বিরত থাকেনি।

তবে আয়াতে উল্লেখিত تَطْفِيْفٌ শুধু মাপ ও ওজনের মধ্যেই সীমিত থাকবে না; বরং মাপ ও ওজনের মাধ্যমে হোক, গণনার মাধ্যমে হোক অথবা অন্য কোন পন্থায় প্রাপককে তার প্রাপ্য কম দিলে তা تَطْفِيْفٌ এর অন্তর্ভুক্ত হয়ে হারাম হবে। সুতরাং প্রত্যেক প্রাপকের প্রাপ্য পূর্ণমাত্রায় দেয়াই যে আয়াতের উদ্দেশ্য এ কথা বলাই বাহুল্য। উমর রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু জনৈক ব্যক্তিকে আসরের সালাতে না দেখে এ ব্যাপারে জিজ্ঞেস করলেন। সে একটি ওজর পেশ করল। তখন তিনি তাকে বললেন, طفَّفت অর্থাৎ “তুমি আল্লাহর প্রাপ্য আদায়ে কমতি করেছ।” এই উক্তি উদ্ধৃত করে ইমাম মালেক রাহেমাহুল্লাহ বলেন, ‘প্রত্যেক বস্তুর মধ্যে পূর্ণমাত্রায় দেয়া ও কম করা আছে। [মুয়াত্তা মালেক: ১/১২, নং ২২]। তাছাড়া ঝগড়া-বিবাদের সময় নিজের দলীল-প্রমাণাদি পেশ করার পর প্রতিপক্ষের দলীল-প্রমাণাদি পেশ করার সুযোগ দেয়াও এর অন্তর্ভুক্ত। [সা'দী]

২. যারা লোকদের কাছ থেকে মেপে নেয়ার সময় পূর্ণমাত্রায় গ্রহণ করে,
৩. আর যখন তাদেরকে মেপে দেয় তথবা ওজন করে দেয়, তখন কম দেয়।
৪. তারা কি বিশ্বাস করে না যে, তারা পুনরুত্থিত হবে।
৫. মহাদিনে?
৬. যেদিন দাঁড়াবে সমস্ত মানুষ সৃষ্টিকুলের রবের সামনে!(১)
(১) ইবনে উমর রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ যেদিন সমস্ত মানুষ জগতসমূহের রবের সামনে দাঁড়াবে। তাদের মধ্যে কেউ কেউ তাদের কানের মধ্যভাগ পর্যন্ত ঘামে ডুবে থাকবে। [বুখারী: ৬৫৩১, মুসলিম: ২৮৬২] অন্য হাদীসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ কিয়ামতের দিন সূর্যকে সৃষ্টির এত নিকটে আনা হবে যে, তাদের মধ্যে দুরত্ব হবে এক ‘মাইল’৷ বৰ্ণনাকারী বলেনঃ আমি জানি না এখানে মাইল বলে পরিচিত এক মাইল না সুরমাদানি (যা আরবিতে মাইল বলা হয় তা) বুঝানো হয়েছে। অতঃপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, “মানুষ তাদের স্বীয় আমল অনুযায়ী ঘামের মধ্যে নিমজ্জিত থাকবে। কারও ঘাম হবে গোড়ালি পর্যন্ত, কারও হবে হাঁটু পর্যন্ত। আবার কারও ঘাম হবে কোমর পর্যন্ত; কারও ঘাম মুখের লাগামের মত হবে। তারপর রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তার মুখের দিকে ইশারা করেন। [মুসলিম: ২৮৬৪]

৭. কখনো না, পাপাচারীদের আমলনামা তো সিজ্জীনে(১) আছে।
(১) سِجِّين শব্দটি سجن থেকে গৃহীত। سجن এর অর্থ সংকীর্ণ জায়গায় বন্দী করা। [ইবন কাসীর] আর سِجِّين এর অর্থ চিরস্থায়ী কয়েদ। [মুয়াস্‌সার] এটি একটি বিশেষ স্থানের নাম। যেখানে কাফেরদের রূহ অবস্থান করে। অথবা এখানেই তাদের আমলনামা থাকে। [জালালাইন]

৮. আর কিসে আপনাকে জানাবে সিজ্জীন কী?
৯. চিহ্নিত আমলনামা।(১)
(১) مَرْقُومٌ শব্দের কয়েকটি অর্থ আছে, লিখিত, চিহ্নিত এবং মোহরাঙ্কিত। [কুরতুবী] অর্থাৎ কিতাবটি লিখা শেষ হওয়ার পর তাতে মোহর মেরে দেয়া হয়েছে। ফলে তাতে হ্রাসবৃদ্ধি ঘটবে না। আর কিতাব বলতে, আমলনামা বোঝানো হয়েছে। ইবনে কাসীর বলেন, এটা সিজীনের তাফসীর নয়; বরং পূর্ববর্তী (كِتَابَ الْفُجَّارِ) এর বর্ণনা। অৰ্থ এই যে, কাফের ও পাপাচারীদের আমলনামা মোহর লাগিয়ে সংরক্ষিত করা হবে। ফলে এতে হ্রাস-বৃদ্ধি ও পরিবর্তনের সম্ভাবনা থাকবে না। এই সংরক্ষণের স্থান হবে সিজ্জীন৷ এর প্রমাণ আমরা বারা ইবনে আযিব রাদিয়াল্লাহু আনহু বৰ্ণিত হাদীসে দেখতে পাই। সেখানে বলা হয়েছে, মহান আল্লাহ্ কাফেরদের রূহ হরণ হওয়ার পর বলবেন, اكْتُبُوا كِتَابَهُ فِي سِجِّينٍ فِي الأَرْضِ السُّفْلَى “তার কিতাবকে সর্বনিম্ন যমীনে সিজ্জীনে লিখে রাখ”। [মুসনাদে আহমাদ ৪/২৮৭]
১০. সেদিন দুর্ভোগ হবে মিথ্যারোপকারীদের,
১১. যারা প্রতিদান দিবসে মিথ্যারোপ করে,
১২. আর শুধু প্ৰত্যেক পাপিষ্ঠ সীমালংঘনকারীই এতে মিথ্যারোপ করে;
১৩. যখন তার কাছে আমাদের আয়াতসমূহ তেলাওয়াত করা হয় তখন সে বলে, পূর্ববর্তীদের উপকথা।
১৪. কখনো নয়; বরং তারা যা অর্জন করেছে তা-ই তাদের হৃদয়ে জঙ ধরিয়েছে।(১)
(১) ران শব্দটি رين থেকে উদ্ভূত। অর্থ প্রাধান্য বিস্তার করা। [কুরতুবী] ঢেকে ফেলা। [তাতিম্মাতু আদওয়াইল বায়ান] যাজ্জাজ বলেন, মরিচা ও ময়লা। [কুরতুবী] অর্থাৎ শাস্তি ও পুরস্কারকে গল্প বা উপকথা গণ্য করার কোন যুক্তিসংগত কারণ নেই। কিন্তু যে কারণে তারা একে গল্প বলছে তা হচ্ছে এই যে, এরা যেসব গোনাহে লিপ্ত রয়েছে তাদের অন্তরে মরিচা ধরেছে। মরিচা যেমন লোহাকে খেয়ে মাটিতে পরিণত করে দেয়, তেমনি তাদের পাপের মরিচা তাদের অন্তরের যোগ্যতা নিঃশেষ করে দিয়েছে। ফলে তারা ভাল ও মন্দের পার্থক্য বোঝে না। ফলে পুরোপুরি যুক্তিসংগত কথাও এদের কাছে গল্প বলে মন হচ্ছে। [ইবন কাসীর] এই জঙ্‌ ও মরীচার ব্যাখ্যায় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ বান্দা যখন কোন গোনাহ করে, তার অন্তরে একটি কালো দাগ পড়ে যায়। সে তওবা করলে দাগটি উঠে যায়। কিন্তু যদি সে গোনাহ করে যেতেই থাকে তাহলে সমগ্র দিলের ওপর তা ছেয়ে যায়। [তিরমিযী: ৩৩৩৪ ইবনে মজাহঃ ৪২৪৪]

১৫. কখনো নয়; নিশ্চয় সেদিন তারা তাদের রব হতে অন্তরিত থাকবে(১);
(১) অর্থাৎ কেয়ামতের দিন এই কাফেররা তাদের রবের দীদার বা দর্শন ও যেয়ারত থেকে বঞ্চিত থাকবে এবং পর্দার আড়ালে অবস্থান করবে। এই আয়াত থেকে জানা যায় যে, সেদিন মুমিনগণ আল্লাহ্ তা'আলার দীদার ও যেয়ারত লাভে ধন্য হবে। নতুবা কাফেরদেরকে পর্দার অন্তরালে রাখার কোন উপকারিতা নেই। [ইবন কাসীর]
১৬. তারপর নিশ্চয় তারা জাহান্নামে দগ্ধ হবে;
১৭. তারপর বলা হবে, এটাই তা যাতে তোমরা মিথ্যারোপ করতে।
১৮. কখনো নয়, নিশ্চয় পূণ্যবানদের আমলনামা ইল্লিয়্যীনে(১),
(১) কারও কারও মতে عِلِّيِّينَ শব্দটি علوّ এর বহুবচন। উদ্দেশ্য উচ্চতা। [ইবন কাসীর] আবার কেউ কেউ বলেন, এটা জায়গার নাম- বহুবচন নয়। [কুরতুবী; ইবন কাসীর] বারা ইবনে আযেব রাদিয়াল্লাহু আনহু-এর হাদীসে এসেছে যে, ফেরশেতাগণ রূহ নিয়ে উঠতেই থাকবেন حَتّٰى يُنْتَهٰى بِهِ إِلَى السَّمَاءَ السَّابِعَةِ فَيَقُوْلُ اللهُ عزَّ وَجَلَّ اكْتُبُوا كِتَابَ عَبْدِي فِي عِلِّيِّينَ “শেষ পর্যন্ত সপ্তম আসমানে উঠবেন তখন মহান আল্লাহ বলবেন, আমার বান্দার কিতাব ইল্লিয়্যীনে লিখে নাও।” [মুসনাদে আহমাদ: ৪/২৮৭]। এ থেকে প্রমাণ পাওয়া যায় যে, ইল্লিয়্যীন সপ্তম আকাশে আরশের কাছে এক স্থানের নাম। এতে মুমিনদের রূহ ও আমলনামা রাখা হয়। [ইবন কাসীর ইবন আব্বাস থেকে]

১৯. আর কিসে আপনাকে জানাবে ইল্লিয়্যীন কী?
২০. চিহ্নিত আমলনামা।(১)
(১) এখানেও এটাই সঠিক যে, এটা ‘ইল্লীয়্যীন’ এর কোন বিশেষণ নয়, বরং পূর্বে উল্লেখিত (كِتَابَ الْأَبْرَارِ) এর বিশেষণ। [দেখুন: কুরতুবী; ইবন কাসীর] এর প্রমাণ উপরোক্ত বারা ইবনে আযেব রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণিত হাদীসে এসেছে, فَيَقُوْلُ اللهُ عزَّ وَجَلَّ اكْتُبُوا كِتَابَ عَبْدِي فِي عِلِّيِّينَ “অতঃপর মহান আল্লাহ্ বলবেন, আমার বান্দার আমলনামা ইল্লিয়্যীনে লিখে রাখ”। সুতরাং ইল্লিয়্যীন কিতাব নয় বরং আমলনামা বা কিতাব কপি করে রাখার স্থান।

২১. (আল্লাহর) সান্নিধ্যপ্রাপ্তরাই তা অবলোকন করে।(১)
(১) يشهد শব্দটি شهود থেকে উদ্ভূত। شهود এর এক অর্থ প্রত্যক্ষ করা, তত্ত্বাবধান করা। তখন আয়াতের উদ্দেশ্য হবে এই যে, সৎকর্মশীলদের আমলনামার প্রতি আসমানের নৈকট্যশীল ফেরেশতাগণ দেখবে অর্থাৎ তত্ত্বাবধান ও হেফাযত করবে। [ইবন কাসীর] তাছাড়া شهود এর আরেক অর্থ উপস্থিত হওয়া। [উসাইমীন, তাফসীরুল কুরআনিল আযীম]। তখন يشهده এর সর্বনাম দ্বারা ইল্লিয়্যীন বোঝানো হবে। আর এর অর্থ হবে, প্রতি আসমানের নৈকট্যপ্রাপ্তগণ সেখানে হাজির হবেন এবং সেটাকে হেফাযত করবেন; কেননা এটা নেক আমলকারীর জন্য জাহান্নাম থেকে নিরাপত্তা পত্র এবং জান্নাতে যাওয়ার সফলতার গ্যারান্টি। [আইসারুত তাফসীর]

এটা ঐ সময়ই হবে, যখন ইল্লিয়্যীন দ্বারা আমলনামা বোঝানো হবে। আর যদি ইল্লিয়্যীন দ্বারা নৈকট্যপ্রাপ্তদের রূহের স্থান ধরা হয়, তখন আয়াতের অর্থ হবে, নৈকট্যশীলগণের রূহ এই ইল্লিয়্যীন নামক স্থানে উপস্থিত হবে। সে হিসেবে ইল্লিয়্যীন ঈমানদারদের রুহের আবাসস্থল; যেমন সিজ্জীন কাফেরদের রূহের আবাসস্থল। এর স্বপক্ষে একটি হাদীস থেকে ধারণা পাওয়া যায়, আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বৰ্ণিত একটি হাদীসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, “শহীদগণের রূহ আল্লাহর সান্নিধ্যে সবুজ পাখিদের মধ্যে থাকবে এবং জান্নাতের বাগ-বাগিচা ও নহরসমূহে ভ্রমণ করবে। তাদের বাসস্থানে আরশের নিচে ঝুলন্ত প্ৰদীপ থাকবে।” [মুসলিম: ১৮৮৭]

এ থেকে বোঝা গেল যে, শহীদগণের রূহ আরশের নিচে থাকবে এবং জান্নাতে ভ্ৰমণ করতে পারবে। তাছাড়া পবিত্র কুরআনের অন্য আয়াতে বলা হয়েছে, (عِندَ سِدْرَةِ الْمُنتَهَىٰ عِندَهَا جَنَّةُ الْمَأْوَىٰ) এ থেকে পরিষ্কার জানা যায় যে, জান্নাত সিদরাতুল মুনতাহার সন্নিকটে। সিদরাতুল মুনতাহা যে সপ্তম আকাশে, এ কথা হাদীস দ্বারা প্রমাণিত। তাই আত্মার স্থান ইল্লিয়্যীন জান্নাতের সংলগ্ন এবং আত্মাসমূহ জান্নাতের বাগিচায় ভ্ৰমণ করে। অতএব, আত্মার স্থান জান্নাতও বলা যায়। তাই কোন কোন মুফাস্‌সির ইল্লিয়্যীন এর ব্যাখ্যা করেছেন জান্নাত। [সা'দী]
২২. নিশ্চয় পুণ্যবানগণ থাকবে পরম স্বাচ্ছন্দ্যে,
২৩. সুসজ্জিত আসনে বসে তারা দেখতে থাকবে।
২৪. আপনি তাদের মুখমণ্ডলে স্বাচ্ছন্দ্যের দীপ্তি দেখতে পাবেন,
২৫. তাদেরকে মোহর করা বিশুদ্ধ পানীয় হতে পান করানো হবে;
২৬. যার মোহর হবে মিসকের(১), আর এ বিষয়ে প্রতিযোগীরা প্ৰতিযোগিতা করুক।(২)
(১) মূলে “খিতামুহু মিস্‌ক” বলা হয়েছে। এর একটি অর্থ হচ্ছে, যেসব পাত্রে এই শরাব রাখা হবে তার ওপর মাটি বা মোমের পরিবর্তে মিশকের মোহর লাগানো থাকবে। এ অর্থের দিক দিয়ে আয়াতের অর্থ হয়; এটি হবে উন্নত পৰ্যায়ের পরিচ্ছন্ন শরাব। এর দ্বিতীয় অর্থ হতে পারে: এই শরাব যখন পানকারীদের গলা থেকে নামবে তখন শেষের দিকে তারা মিশকের খুশবু পাবে। [ফাতহুল কাদীর] এই অবস্থাটি দুনিয়ার শরাবের সম্পূর্ণ বিপরীত। এখানে শরাবের বোতল খোলার সাথে সাথেই একটি বোটকা গন্ধ নাকে লাগে। পান করার সময়ও এর দুৰ্গন্ধ অনুভূত হতে থাকে এবং গলা দিয়ে নামবার সময় মস্তিষ্কের অভ্যন্তরেও পচা গন্ধ পৌছে যায়। এর ফলে শরাবীর চেহারায় বিস্বাদের একটা ভাব জেগে ওঠে।

(২) কোন বিশেষ পছন্দনীয় জিনিস অর্জন করার জন্যে কয়েকজনের ধাবিত হওয়া ও দৌড়া, যাতে অপরের আগে সে তা অর্জন করতে সক্ষম হয়। এর নাম تنافس এখানে জন্নাতের নেয়ামতরাজি উল্লেখ করার পর আল্লাহ্ তা'আলা গাফেল মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেছেন, আজ তোমরা যেসব বস্তুকে প্রিয় ও কাম্য মনে করে সেগুলো অর্জন করার জন্যে অগ্ৰে চলে যাওয়ার চেষ্টায় রত আছ, সেগুলো অসম্পূর্ণ ও ধ্বংসশীল নেয়ামত। এসব নেয়ামত প্রতিযোগিতার যোগ্য নয়। এসব ক্ষণস্থায়ী সুখের সামগ্ৰী হাতছাড়া হয়ে গেলেও তেমন দুঃখের কারণ নয়। হ্যাঁ, জান্নাতের নেয়ামতরাজির জন্যই প্রতিযোগিতা করা উচিত। এগুলো সব দিক দিয়ে সম্পূর্ণ চিরস্থায়ী।
২৭. আর তার মিশ্রণ হবে তাসনীমের(১),
(১) তাসনীম মানে উন্নত ও উঁচু। [ফাতহুল কাদীর] কোন কোন মুফাসসির বলেন, কোন ঝরণাকে তাসনীম বলার মানে হচ্ছে এই যে, তা উঁচু থেকে প্রবাহিত হয়ে নীচের দিকে আসে। [ফাতহুল কাদীর]

২৮. এটা এক প্রস্রবণ, যা থেকে সান্নিধ্যপ্রাপ্তরা পান করে।
২৯. নিশ্চয় যারা অপরাধ করেছে তারা মুমিনদেরকে উপহাস করত(১),
(১) অর্থাৎ একথা ভাবতে ভাবতে ঘরের দিকে ফিরতো: আজ তো বড়ই মজা। ওমুক মুসলিমকে বিদ্রুপ করে, তাকে চোখা চোখা বাক্যবাণে বিদ্ধ করে বড়ই মজা পাওয়া গেছে এবং সাধারণ মানুষের সামনে তাকে চরমভাবে অপদস্থ করা গেছে। মোটকথাঃ তারা মুমিনদের নিয়ে অপমানজনক কথা-বার্তা, আচার আচরণ, ইশারা-ইঙ্গিত করত আর মজা লাভ করত। [ফাতহুল কাদীর]

৩০. আর যখন তারা মুমিনদের কাছ দিয়ে যেত তখন তারা চোখ টিপে বিদ্রূপ করত।
৩১. আর যখন তাদের আপনজনের কাছে ফিরে আসত তখন তারা ফিরত উৎফুল্ল হয়ে,
৩২. আর যখন মুমিনদেরকে দেখত তখন বলত, নিশ্চয় এরা পথভ্ৰষ্ট।(১)
(১) অর্থাৎ এরা বুদ্ধিভ্রষ্ট হয়ে গেছে। মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এদেরকে জান্নাত ও জাহান্নামের চক্করে ফেলে দিয়েছেন। ফলে এরা নিজেরা নিজেদেরকে দুনিয়ার লাভ, স্বাৰ্থ ও ভোগ-বিলাসিতা থেকে বঞ্চিত করে রেখেছে এবং সব রকমের আশংকা ও বিপদ আপদের মুখোমুখি হয়েছে। [ফাতহুল কাদীর] যা কিছু এদের সামনে উপস্থিত আছে তা কেবল এ অনিশ্চিত আশায় ত্যাগ করছে যে, এদের সাথে মৃত্যুর পরে কি এক জান্নাত দেবার ওয়াদা করা হয়েছে, আর পরবর্তী জগতে নাকি কোন জাহান্নাম হবে, এদেরকে তার আযাবের ভয় দেখানো হয়েছে এবং তার ফলেই এরা আজ এ দুনিয়ায় সবকিছু কষ্ট বরদাশত করে যাচ্ছে। এভাবে যুগে যুগে মুমিনদেরকে অপমানজনক কথা সহ্য করতে হয়েছে। বর্তমানেও কেউ দ্বীনদার হলে তার সম্পর্কে বিরূপ মন্তব্য করতে শোনা যায়। [উসাইমীন, তাফসীরুল কুরআনিল আযীম]

৩৩. অথচ তাদেরকে মুমিনদের তত্ত্বাবধায়ক করে পাঠানো হয়নি।(১)
(১) এই ছোট বাক্যটিতে বিদ্রূপকারীদের জন্য বড়ই শিক্ষাপ্রদ হুঁশিয়ারী উচ্চারণ করা হয়েছে অর্থাৎ ধরে নেয়া যাক মুসলিমরা যা কিছুর প্রতি ঈমান এনেছে সবকিছুই ভুল। কিন্তু তাতে তারা তোমাদের তো কোন ক্ষতি করছে না। যে জিনিসকে তারা সত্য মনে করছে সেই অনুযায়ী তারা নিজেরাই আমল করছে। তোমরা তাদের সমালোচনা করছ কেন? আল্লাহ কি তোমাদেরকে এই দায়িত্ব দিয়ে পাঠিয়েছেন? মুমিনদের কর্মকাণ্ড হেফাযত করার দায়িত্ব তো তোমাদেরকে দেয়া হয়নি। তাহলে সেটা করতে যাবে কেন? এটাকেই তোমাদের উদ্দেশ্য বানিয়েছ কেন? [দেখুন: ইবন কাসীর]

৩৪. অতএব আজ মুমিনগণ উপহাস করবে কাফিরদেরকে,
৩৫. সুসজ্জিত আসনে বসে তারা দেখতে থাকবে।
৩৬. কাফিররা তাদের কৃতকর্মের ফল পেল তো?


********************
সাইটটি ভিজিট করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। মোহাম্মদীয়া ফাউন্ডেশনের কার্যক্রম, লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য সম্পর্কে জানতে এবং দীন ও মানবতার সেবায় অংশ নিতে OUR ACTION PLAN বাটনে ক্লিক করুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

মোহাম্মদীয়া ফাউন্ডেশনের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url