বিষয় ভিত্তিক আয়াত || হেদায়াত সম্পর্কিত আয়াতসমূহ || আল্লাহ যাকে ইচ্ছা হেদায়াত করেন ||




আল্লাহ যাকে হিদায়াত করেন তার জন্য কোন পথভ্রষ্টকারী নেই


 সূরাঃ  আয-যুমার | Az-Zumar | سورة الزمر 

 সূরাঃ  আয-যুমার, আয়াত ৩৬ 

৩৬  اَلَیۡسَ اللّٰهُ بِکَافٍ عَبۡدَهٗ ؕ وَ یُخَوِّفُوۡنَکَ بِالَّذِیۡنَ مِنۡ دُوۡنِهٖ ؕ وَ مَنۡ یُّضۡلِلِ اللّٰهُ فَمَا لَهٗ مِنۡ هَادٍ 

 সূরাঃ  আয-যুমার, আয়াত ৩৬ এর অর্থ 

আল্লাহ কি তাঁর বান্দার জন্য যথেষ্ট নন? অথচ তারা তোমাকে আল্লাহর পরিবর্তে অন্যদের ভয় দেখায়। আর আল্লাহ যাকে পথভ্রষ্ট করেন, তার জন্য কোন হিদায়াতকারী নেই।

Is not Allah sufficient for His Servant [Prophet Muhammad]? And [yet], they threaten you with those [they worship] other than Him. And whoever Allah leaves astray - for him there is no guide.

 সূরাঃ  আয-যুমার, আয়াত ৩৬ এর তাফসীর 

(৩৬) আল্লাহ কি তাঁর দাসের জন্য যথেষ্ট নন?[1] অথচ তারা তোমাকে আল্লাহর পরিবর্তে অপরের ভয় দেখায়। আল্লাহ যাকে বিভ্রান্ত করেন, তার জন্য কোন পথপ্রদর্শক নেই। [2]

[1] এখানে ‘দাস’ বলতে নবী করীম (সাঃ)-কে বুঝানো হয়েছে। কারো কারো নিকট এটা সাধারণ। সমস্ত নবী এবং প্রত্যেক মু’মিন এতে শামিল। অর্থ হল, তোমাকে গায়রুল্লাহর ভয় দেখানো হয়, কিন্তু আল্লাহ যখন তোমার সমর্থক ও সাহায্যকারী, তখন তোমার কেউ কিছুই করতে পারবে না। তোমার পক্ষ হতে তাদের মোকাবেলার জন্য তিনিই যথেষ্ট।

[2] যে এই ভ্রষ্টতা থেকে বের করে হিদায়াতের রাস্তা ধরিয়ে দেবে।

তাফসীরে আহসানুল বায়ান

 সূরাঃ  আয-যুমার, আয়াত ৩৭ 

৩৭  وَ مَنۡ یَّهۡدِ اللّٰهُ فَمَا لَهٗ مِنۡ مُّضِلٍّ ؕ اَلَیۡسَ اللّٰهُ بِعَزِیۡزٍ ذِی انۡتِقَامٍ

 সূরাঃ  আয-যুমার, আয়াত ৩৭ এর অর্থ 

আর আল্লাহ যাকে হিদায়াত করেন, তার জন্য কোন পথভ্রষ্টকারী নেই। আল্লাহ কি মহাপরাক্রমশালী প্রতিশোধ গ্রহণকারী নন?

And whoever Allah guides - for him there is no misleader. Is not Allah Exalted in Might and Owner of Retribution? 

 সূরাঃ  আয-যুমার, আয়াত ৩৭ এর তাফসীর 

(৩৭) এবং যাকে আল্লাহ পথনির্দেশ করেন, তাকে কেউ পথভ্রষ্ট করতে পারে না,[1] আল্লাহ কি পরাক্রমশালী, প্রতিশোধগ্রহণকারী নন? [2]

[1] যে তাকে এই হিদায়াত থেকে বের করে ভ্রষ্টতার গর্তে নিক্ষেপ করবে। অর্থাৎ, হিদায়াত দান ও ভ্রষ্ট করা সবই আল্লাহর কাজ। তিনি যাকে চান ভ্রষ্ট করেন এবং যাকে চান হিদায়াত দানে ধন্য করেন।

[2] কেন নন, অবশ্যই। এই জন্য যে, যদি এই লোকেরা কুফরী ও অবাধ্যতা থেকে ফিরে না আসে, তবে তিনি অবশ্যই তাঁর বন্ধুদের পক্ষ থেকে প্রতিশোধ গ্রহণ করবেন এবং তাদেরকে শিক্ষামূলক প্রতিফল ভোগ করাবেন।

তাফসীরে আহসানুল বায়ান

 সূরাঃ  আয-যুমার, আয়াত ৩৮ 

৩৮ وَ لَئِنۡ سَاَلۡتَهُمۡ مَّنۡ خَلَقَ السَّمٰوٰتِ وَ الۡاَرۡضَ لَیَقُوۡلُنَّ اللّٰهُ ؕ قُلۡ اَفَرَءَیۡتُمۡ مَّا تَدۡعُوۡنَ مِنۡ دُوۡنِ اللّٰهِ اِنۡ اَرَادَنِیَ اللّٰهُ بِضُرٍّ هَلۡ هُنَّ کٰشِفٰتُ ضُرِّهٖۤ اَوۡ اَرَادَنِیۡ بِرَحۡمَۃٍ هَلۡ هُنَّ مُمۡسِکٰتُ رَحۡمَتِهٖ ؕ قُلۡ حَسۡبِیَ اللّٰهُ ؕ عَلَیۡهِ یَتَوَکَّلُ الۡمُتَوَکِّلُوۡنَ

 সূরাঃ  আয-যুমার, আয়াত ৩৮ এর অর্থ 

আর তুমি যদি তাদেরকে জিজ্ঞাসা কর, কে আসমানসমূহ ও যমীন সৃষ্টি করেছে? তারা অবশ্যই বলবে ‘আল্লাহ’। বল, ‘তোমরা কি ভেবে দেখেছ- আল্লাহ আমার কোন ক্ষতি চাইলে তোমরা আল্লাহর পরিবর্তে যাদের ডাক তারা কি সেই ক্ষতি দূর করতে পারবে? অথবা তিনি আমাকে রহমত করতে চাইলে তারা সেই রহমত প্রতিরোধ করতে পারবে’? বল, ‘আমার জন্য আল্লাহই যথেষ্ট’। তাওয়াক্কুলকারীগণ তাঁর উপরই তাওয়াক্কুল করে। 

And if you asked them, "Who created the heavens and the earth?" they would surely say, "Allah." Say, "Then have you considered what you invoke besides Allah? If Allah intended me harm, are they removers of His harm; or if He intended me mercy, are they withholders of His mercy?" Say, "Sufficient for me is Allah; upon Him [alone] rely the [wise] reliers." 

 সূরাঃ  আয-যুমার, আয়াত ৩৭ এর তাফসীর 

(৩৮) তুমি যদি ওদেরকে জিজ্ঞাসা কর, ‘আকাশমন্ডলী ও পৃথিবী কে সৃষ্টি করেছেন?’ ওরা অবশ্যই বলবে, ‘আল্লাহ।’ বল, ‘তাহলে তোমরা ভেবে দেখেছ কি? আল্লাহ আমার অনিষ্ট চাইলে তোমরা তাঁকে ছাড়া যাদেরকে আহবান কর, তারা কি সেই অনিষ্ট দূর করতে পারবে? অথবা তিনি আমার প্রতি অনুগ্রহ করতে চাইলে তারা কি সেই অনুগ্রহকে রোধ করতে পারবে?’ বল, ‘আমার জন্য আল্লাহই যথেষ্ট।[1] নির্ভরকারীরা তাঁরই উপর নির্ভর করে থাকে।’[2]

[1] কেউ কেউ বলেন যে, যখন নবী (সাঃ) উল্লিখিত প্রশ্ন তাদের সামনে পেশ করলেন, তখন তারা বলল যে, সত্যিই তারা আল্লাহ কর্তৃক নির্ধারিত কোন জিনিসকে দূর করতে পারবে না, তবে তারা সুপারিশ করবে। এরই ভিত্তিতে এই অংশটুকু অবতীর্ণ হয়েছে যে, সমস্ত কার্যকলাপের ব্যাপারে আমার জন্য আল্লাহই যথেষ্ট।

[2] যখন সমস্ত কিছু তাঁরই এখতিয়ারে, তখন অন্যের উপর নির্ভর করায় লাভ কি? এই জন্য ঈমানদারেরা কেবল তাঁরই উপর নির্ভর করে থাকে। তিনি ব্যতীত অন্য কারো উপর তারা নির্ভর করে না, ভরসা ও আস্থা রাখে না।

তাফসীরে আহসানুল বায়ান

 সূরাঃ আল-জাসিয়া | Al-Jathiya | سورة الجاثية 

 সূরাঃ আল-জাসিয়া, আয়াত ২২ 

২২ وَ خَلَقَ اللّٰهُ السَّمٰوٰتِ وَ الۡاَرۡضَ بِالۡحَقِّ وَ لِتُجۡزٰی کُلُّ نَفۡسٍۭ بِمَا کَسَبَتۡ وَ هُمۡ لَا یُظۡلَمُوۡنَ

 সূরাঃ আল-জাসিয়া, আয়াত ২২ এর অর্থ 

আর আল্লাহ আসমানসমূহ ও যমীনকে যথার্থভাবে সৃষ্টি করেছেন এবং যাতে প্রত্যেক ব্যক্তি সে যা উপার্জন করেছে তদনুযায়ী প্রতিদানপ্রাপ্ত হয়, আর তারা সামান্যতমও যুলমের শিকার না হয়। 

And Allah created the heavens and earth in truth and so that every soul may be recompensed for what it has earned, and they will not be wronged. 

 সূরাঃ আল-জাসিয়া, আয়াত ২২ এর তাফসীর 

(২২) আল্লাহ যথাযথভাবে আকাশমন্ডলী ও পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন; যাতে প্রত্যেক ব্যক্তিকে তার কর্মানুযায়ী ফল দেওয়া যেতে পারে। আর তাদের প্রতি যুলুম করা হবে না। [1]

[1] আর এটাই সুবিচার যে, কিয়ামতের দিন কোন পক্ষপাতিত্ব ছাড়াই ফায়সালা হবে এবং প্রত্যেক ব্যক্তিকে তার আমল অনুযায়ী ভাল অথবা মন্দ প্রতিদান দেওয়া হবে। এ রকম হবে না যে, তিনি সৎ ও অসৎ উভয়ের সাথে একই ধরনের আচরণ করবেন; যেমন কাফেরদের ভ্রান্ত ধারণা। তাদের এই ধারণার খন্ডন পূর্বের আয়াতেও করা হয়েছে। কেননা, উভয়কে সমান সমান অবস্থায় রাখা যুলুম; অর্থাৎ, সুবিচারের বিপরীত এবং স্বতঃসিদ্ধ ও সর্বস্বীকৃত বিষয় তথা বাস্তব-বিরোধীও বটে। তাই যেমন নিমগাছ লাগিয়ে আঙ্গুর ফল অর্জন করা যায় না, অনুরূপ অন্যায় কাজ সম্পাদন করে সেই মর্যাদা লাভ করা যাবে না, যা আল্লাহ ঈমানদারদের জন্য প্রস্তুত রেখেছেন।

তাফসীরে আহসানুল বায়ান

 সূরাঃ আল-জাসিয়া, আয়াত ২৩ 

২৩  اَفَرَءَیۡتَ مَنِ اتَّخَذَ اِلٰـهَهٗ هَوٰىهُ وَ اَضَلَّهُ اللّٰهُ عَلٰی عِلۡمٍ وَّ خَتَمَ عَلٰی سَمۡعِهٖ وَ قَلۡبِهٖ وَ جَعَلَ عَلٰی بَصَرِهٖ غِشٰوَۃً ؕ فَمَنۡ یَّهۡدِیۡهِ مِنۡۢ بَعۡدِ اللّٰهِ ؕ اَفَلَا تَذَکَّرُوۡنَ

 সূরাঃ আল-জাসিয়া, আয়াত ২৩ এর অর্থ 

তবে তুমি কি তাকে লক্ষ্য করেছ, যে তার প্রবৃত্তিকে আপন ইলাহ বানিয়ে নিয়েছে? তার কাছে জ্ঞান আসার পর আল্লাহ তাকে পথভ্রষ্ট করেছেন এবং তিনি তার কান ও অন্তরে মোহর মেরে দিয়েছেন। আর তার চোখের উপর স্থাপন করেছেন আবরণ। অতএব আল্লাহর পর কে তাকে হিদায়াত করবে? তারপরও কি তোমরা উপদেশ গ্রহণ করবে না?

Have you seen he who has taken as his god his [own] desire, and Allah has sent him astray due to knowledge and has set a seal upon his hearing and his heart and put over his vision a veil? So who will guide him after Allah? Then will you not be reminded?

 সূরাঃ আল-জাসিয়া, আয়াত ২৩ এর তাফসীর 

(২৩) তুমি কি লক্ষ্য করেছ তাকে, যে তার খেয়াল-খুশীকে নিজের উপাস্য করে নিয়েছে?[1] আল্লাহ জেনেশুনেই ওকে বিভ্রান্ত করেছেন[2] এবং ওর কর্ণ ও হৃদয় মোহর করে দিয়েছেন[3] এবং ওর চোখের ওপর রেখেছেন পর্দা।[4] অতএব, আল্লাহ মানুষকে বিভ্রান্ত করার পর কে তাকে পথনির্দেশ করবে?[5] তবুও কি তোমরা উপদেশ গ্রহণ করবে না? [6]

[1] তাই সেটাকেই সে ভাল মনে করে, যেটাকে তার প্রবৃত্তি ভাল মনে করে এবং সেটাকেই সে মন্দ মনে করে, যেটাকে তার প্রবৃত্তি মন্দ মনে করে। অর্থাৎ, আল্লাহ ও তাঁর রসূলের যাবতীয় বিধি-বিধানের উপর স্বীয় প্রবৃত্তির চাহিদাকে প্রাধান্য এবং তার জ্ঞান-বুদ্ধিকে বেশী গুরুত্ব দেয়। অথচ জ্ঞান-বুদ্ধিও পরিবেশ দ্বারা প্রভাবিত হয়ে অথবা স্বার্থপরতার শিকার হয়ে প্রবৃত্তির মত ভুল ফায়সালাও করতে পারে। একটি অর্থ এর এই করা হয়েছে; যে ব্যক্তি আল্লাহর পক্ষ হতে অবতীর্ণকৃত পথনির্দেশ ও দলীল ছাড়াই স্বীয় মনমর্জির দ্বীন অবলম্বন করে। আর কেউ কেউ বলেছেন, এ থেকে এমন ব্যক্তিকে বুঝানো হয়েছে, যে পাথর পূজা করত। যখন তুলনামূলক কোন সুন্দর পাথর পেয়ে যেত, তখন সে পূর্বের পাথরকে ফেলে দিয়ে দ্বিতীয় পাথরটিকে উপাস্য বানিয়ে নিত। (ফাতহুল ক্বাদীর)

[2] অর্থাৎ, তিনি জানেন যে, সে এই ভ্রষ্টতার উপযুক্ত। অথবা অর্থ এই যে, জ্ঞান এসে যাওয়া এবং হুজ্জত কায়েম হয়ে যাওয়ার পরও (জেনেশুনে) সে ভ্রষ্টতার পথ অবলম্বন করে। যেমন, নিজেকে বড় জ্ঞানী মনে করে এমন বহু অহংকারী ভ্রষ্ট আলেমদের অবস্থা; তারা ভ্রষ্ট হয়। মতামত তাদের ভিত্তিহীন হয়, কিন্তু ‘আমার মত বড় পন্ডিত কেউ নেই’ মনে করার এই অহমিকায় তারা নিজেদের দলীলাদিকে এমন মনে করে, যেন তা আসমান থেকে পেড়ে আনা তারকা। এ­ইভাবে জেনেশুনে তারা কেবল নিজেরাই ভ্রষ্ট হয় না, বরং অন্যদেরকেও ভ্রষ্ট করে গর্ববোধ করে। نَعُوْذُ بِاللهِ مِنْ هَذَا الْعِلْمِ الضَّالِّ وَالْفَهْمِ السَّقِيْمِ وَالْعَقْلِ الزَّائِغِ।

[3] যার কারণে ভালো কথা শোনা থেকে তার কান এবং হিদায়াত গ্রহণ করা হতে তার অন্তর বঞ্চিত হয়ে গেছে।

[4] তাই সে সত্য দেখতেও পায় না।

[5] যেমন বলেছেন, ﴿مَنْ يُّضْلِلِ اللهُ فَلاَ هَادِيَ لَهُ وَيَذَرُهُمْ فِي طُغْيَانِهِمْ يَعْمَهُوْنَ﴾ (الأعراف: ১৮৬)

[6] অর্থাৎ, চিন্তা-ভাবনা করবে না? যাতে প্রকৃত ব্যাপার তোমাদের কাছে স্পষ্ট ও পরিষ্কার হয়ে যায়।

তাফসীরে আহসানুল বায়ান

 সূরাঃ আল-জাসিয়া, আয়াত ২৪ 

২৪ وَ قَالُوۡا مَا هِیَ اِلَّا حَیَاتُنَا الدُّنۡیَا نَمُوۡتُ وَ نَحۡیَا وَ مَا یُهۡلِکُنَاۤ اِلَّا الدَّهۡرُ ۚ وَ مَا لَهُمۡ بِذٰلِکَ مِنۡ عِلۡمٍ ۚ اِنۡ هُمۡ اِلَّا یَظُنُّوۡنَ

 সূরাঃ আল-জাসিয়া, আয়াত ২৪ এর অর্থ 

আর তারা বলে, ‘দুনিয়ার জীবনই আমাদের একমাত্র জীবন। আমরা মরি ও বাঁচি এখানেই। আর কাল-ই কেবল আমাদেরকে ধ্বংস করে।’ বস্তুত এ বিষয়ে তাদের কোন জ্ঞান নেই। তারা শুধু ধারণাই করে।

And they say, "There is not but our worldly life; we die and live, and nothing destroys us except time." And they have of that no knowledge; they are only assuming.

 সূরাঃ আল-জাসিয়া, আয়াত ২৪ এর তাফসীর 

২৪. আর তারা বলে, একমাত্র দুনিয়ার জীবনই আমাদের জীবন, আমরা মরি ও বাঁচি, আর কাল-ই কেবল আমাদেরকে ধ্বংস করে(১)। বস্তুত এ ব্যাপারে তাদের কোন জ্ঞান নেই, তারা তো শুধু ধারণাই করে।

(১) دهر শব্দের অর্থ আসলে মহাকাল, অর্থাৎ জগতের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সময়ের সমষ্টি। কখনও দীর্ঘ সময়কালকেও دهر বলা হয়। কাফেররা বলেছে যে, আল্লাহর আদেশ ও ইচ্ছার সাথে জীবন ও মৃত্যুর কোন সম্পর্ক নেই, বরং এগুলো প্রাকৃতিক কারণের অধীন। মৃত্যু সম্পর্কে তো সকলেই প্রত্যক্ষ করে যে, মানুষের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ও শক্তি-সমর্থ্য ব্যবহারের কারণে ক্ষয়প্রাপ্ত হতে থাকে এবং দীর্ঘকাল অতিবাহিত হওয়ার পর সম্পূর্ণ নিস্ক্রিয় হয়ে পড়ে। এরই নাম মৃত্যু। জীবনও তদ্রূপ, কোন ইলাহী আদেশে নয়, বরং উপকরণের প্রাকৃতিক গতিশীলতার মাধ্যমেই তা অর্জিত হয়। মূলত: কাফের ও মুশরিকরা মহাকালের চক্রকেই সৃষ্টিজগত ও তার সমস্ত অবস্থার কারণ সাব্যস্ত করত এবং সবকিছুকে তারই কর্ম বলে অভিহিত করত।

অথচ এগুলো সব প্রকৃতপক্ষে সর্বশক্তিমান আল্লাহর কুদরত ও ইচ্ছায় সম্পন্ন হয়ে থাকে। তাই সহীহ হাদীসসমূহে দাহর তথা মহাকালকে মন্দ বলতে নিষেধ করা হয়েছে। কেননা, কাফেররা যে শক্তিকে দাহর শব্দ দ্বারা ব্যক্ত করে, প্রকৃতপক্ষে সেই কুদরত ও শক্তি আল্লাহ তা'আলারই। তাই দাহরকে মন্দ বলার ফল প্রকৃতপক্ষে আল্লাহ পর্যন্ত পৌঁছে। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, বনী আদম ‘দাহর’ তথা মহাকালকে গালি দেয়, অথচ, আল্লাহ বলেন, আমিই প্রকৃতপক্ষে মহাকাল, আমিই রাত-দিনের পরিবর্তন ঘটাই৷ [বুখারী: ৫৭১৩]
তাফসীরে জাকারিয়া



*********************
সাইটটি ভিজিট করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। আর্টিকেলটি ভাল লাগলে সত্য ও ন্যয়ের পথে অন্য ভাইনদেরকে দাওয়াতের নিয়তে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করুন। মোহাম্মদীয়া ফাউন্ডেশনের কার্যক্রম, লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য সম্পর্কে জানতে এবং দীন ও মানবতার সেবায় অংশ নিতে OUR ACTION PLAN বাটনে ক্লিক করুন।



এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

মোহাম্মদীয়া ফাউন্ডেশনের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url