হস্তমৈথুন্যে কোন উপকার নাই || হস্তমৈথুন্যের মারাত্মক অপকারীতা || হস্তমৈথুন্য একটি জঘন্য পাপ কাজ ||


হস্তমৈথুন একটি মারাত্মক কবিরা গুনাহ


হস্তমৈথুন কি

হস্তমৈথুন বা স্বমেহন একরূপ যৌনক্রিয়া যাতে একজন ব্যক্তি কোনো সঙ্গী বা সঙ্গিনীর অংশগ্রহণ ব্যতিরেকেই যৌনসুখ অর্জনের চেষ্টা করে। আত্মমৈথুন ও স্বকাম এর সমার্থক শব্দ। এ যৌনক্রিয়ায় প্রধানত আঙ্গুল তথা হাতের সাহায্যে পুরুষ তার লিঙ্গ এবং নারী তার যোনী ঘর্ষণ করে বলে একে সচরাচর হস্তমৈথুন হিসেবে উল্লেখ করা হয়ে থাকে।

হস্তমৈথুন হচ্ছে একটি প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে মানুষ নিজের জননাঙ্গে যৌন উদ্দীপনা প্রদান করে যাতে যৌন উত্তেজনা তৈরি হয় এবং যৌন সুখ লাভ হয়। সাধারণত রাগমোচন লাভ পর্যন্তই এটি চালিয়ে যাওয়া হয়।

হস্তমৈথুন(Masturbation)বা স্বমেহন বর্তমানে একটি বড় সমস্যা। ইসলামের দৃষ্টিতে এটা একটি জঘন্য ও মারাত্মক কর্ম  যা হারাম এবং কবীরা গুনাহ। শরীয়ত অনুযায়ী যারা হস্তমৈথুন করে তারা সীমালংগনকারী।

বর্তমানে নেট জগতে লাখ লাখ আর্টিকেল ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে যেখানে বলা হচ্ছে হস্তমৈথুন মেডিক্যাল সাইন্স মতে উপকারী। এসব বক্তব্য কিছু বিকৃত মেস্তিষ্কের মিথ্যা অপলাপ ছাড়া কিছুই নয়। যারা এটাকে উপকারী বলছে তারা ইসলামের শত্রু, সমাজের শত্রু এবং মানব সভ্যতার শত্রু। সত্যিকার অর্থে হস্তমৈথুন করায় কোনই উপকার নেই, বরং হাজারো অপকার রয়েছে। যারা বলে হস্তমৈথুন করায় উপকার আছে তারা মূলত সমাজের ও সভ্যতার শত্রু। যারা উপকারের কথা বলে তারাই এদের চিকিৎসার জন্য চটকদার বিজ্ঞাপন দেয়, “ ....ছোট? .... দূর্ব ল? বিয়ে করতে ভয় পাচ্ছেন? গ্যারান্টি সহকারে চিকিৎসা করা হয়।”


হস্তমৈথুন্যের অপকারীতা

হস্তমৈথুনের কারণে দুই ধরনের সমস্যা হয়,  (১) শারীরিক সমস্যা ও (২) মানসিক সমস্যা।

হস্তমৈথুন্যের শারীরিক সমস্যা

পুরুষ হস্তমৈথুন করলে প্রধান যেসব সমস্যায় ভুগতে পারে তার মধ্যে একটি হল নপুংসকতা। অর্থাৎ ব্যক্তি যৌন সংগম স্থাপন করতে অক্ষম হয়ে যায়। পুরুষ হস্তমৈথুন করতে থাকলে সে ধীরে ধীরে নপুংসক হয়ে যায়।

আরেকটি সমস্যা হল অকাল বীর্যপাত । অর্থাৎ খুব অল্প সময়ে বীর্যপাত ঘটে। ফলে স্বামী তার স্ত্রীকে সন্তুষ্ট করতে অক্ষম হয়। বৈবাহিক সম্পর্ক বেশিদিন স্থায়ী হয় না।

আরো একটি সমস্যা হলে বীর্যে শুক্রাণুর সংখ্যা কমে যায়। তখন বীর্যে শুক্রাণুর সংখ্যা হয় ২০ মিলিয়নের কম। সন্তান জন্মদানে ব্যর্থতা দেখা দেয়। একজন পুরুষ যখন স্ত্রী গমন করেন তখন তার থেকে যে বীর্য বের হয় সে বীর্যে শুক্রাণুর সংখ্যা হয় ৪২ কোটির মত।

স্বাস্থ্যবিজ্ঞান মতে কোন পুরুষের থেকে যদি ২০ কোটির কম শুক্রাণু বের হয় তাহলে সে পুরুষ থেকে কোন সন্তান হয় না। অতিরিক্ত হস্তমৈথুন পুরুষের যৌনাঙ্গকে দুর্বল করে দেয়।

হস্তমৈথুন্যের ফলে পুরুষ ও মহিলা ঊভয়েই যেসব মারাত্মক শরীরিক সমস্যায় আক্রান্ত হয়:

  • দ্রুত-বীর্জপাত
  • উত্থান জনিত সমস্যা
  • লিংগ ছোট হয়ে যাওয়া
  • লিংগের স্টামিনা কমে যাওয়া
  • শরীরে ও মস্তিষ্কে আবসাদ সৃষ্টি হওয়া
  • পড়লেখায় মনোযোগ হারানো
  • স্বাস্থ্য ভেঙ্গে যাওয়া
  • চেহারার সৌন্দর্য্য নষ্ট হওয়া
  • চুল পড়া
  • চোখে কম দেখা
  • ক্যালসিয়ামের সমস্যা ইত্যাদি

হস্তমৈথুন্যের মানসিক সমস্যা

হস্তমৈথুন্যের ফলে ব্যাক্তির জীবনে যৌন বিষয়ে মানসিক সমস্যা চরম আকার আকার ধারণ করতে পারে। 

  • হস্তমৈথুন্যের ফলে ব্যাক্তি বিয়ে করতে ভয় পায়
  • ব্যাক্তি স্বাভাবিক যৌনতাকে ভয় পায়
  • বিকৃত যৌন কর্মের প্রতি আগ্রহী হয়
  • সংসার কর্ম ও পরিবার জীবন থেকে দূরে সরে যেতে চায়
  • মানসিক শক্তি হারিয়ে ফেলে
  • সকল কর্মে হতাশায় ভোগে

হস্তমৈথুন্য ব্যাক্তির ঈমান-আমল নষ্ট হয়

হস্তমৈথুন্যের ফলে (Leakage of semen) অর্থাৎ সামান্য উত্তেজনায় যৌনাঙ্গ থেকে তরল পদার্থ বের হয়। ফলে অনেক মুসলিম ভাই নামায পড়তে পারেন না। মহান আল্লাহ্ তা'আলার স্মরণ থেকে মুসলিমদের দূরে রাখে হস্তমৈথুন। 

মন হচ্ছে ন্যায়-অন্যায় সংঘটিত হওয়ার একমাত্র উৎস। জেনা-ব্যভিচারের মতো অপরাধের ইচ্ছা, স্পৃহা, আশা এবং প্রতিজ্ঞাও মনেরই সৃষ্টি। সুতরাং যে ব্যক্তি নিজ মনকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে সে নিজ কুপ্রবৃত্তির উপর বিজয় লাভ করবে। আর যে ব্যক্তি নিজ মনকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে না নিশ্চিতভাবে সে কুপ্রবৃত্তির শিকার হবে। মনের এ পর্যায় খুবই কঠিন। কারণ, এর শেষ পরিণতি একেবারেই অনিবার্য ধ্বংস। হস্তমৈথুন্য যারা করেন তারা নিজের মনকে অস্থিরতার মধ্যে ছেড়ে দেন। হস্তমৈথুন্য করার সময় মন জেনার প্রতি আকৃষ্ট হয় এবং অনেক ক্ষেত্রেই বাস্তবিক অর্থে সে জেনার মধ্যেই হারিয়ে যায়। 

কখনও কখনও সামাজিক ও পারিপার্শ্বিক কারণে জেনা করতে না পারলেও শয়তান তাকে অন্যভাবে জেনার মত মারাত্মক গুনাহ করিয়েই ছাড়ে। যখন কেউ হস্তমৈথুন্য করে তখন সে কোন সুন্দর সুশ্রী মুখকে কল্পনা করতে থাকে। যাকে সে মনে মনে কামনা করে থাকে। অনেক ক্ষেত্রে সে এসব কুচিন্তা করতে গিয়ে জাতপাত এমন কি সম্পর্কের কথাও ভুলে যায়। হস্তমৈথুন্যরত ব্যাক্তি নিজের অজান্তেই সেই কল্পিত মানুষটির সাথে কল্পনায় যৌনকর্ম
 করে থাকে। এভাবে সব সময় কল্পনা করতে গিয়ে এক সময় তার মাথায় সেই কুচিন্তা ছাড়া আর কিছুই থাকে না। এক সময় আল্লাহর ঘর মসজিদে গিয়ে নামাজে দাঁড়ালেও শয়তান তাকে সেসব মনে করিয়ে দেয়। এভাবেই হস্তমৈথুন্য মানুষের ঈমান আমলকে ধ্বংস করে দেয়। অপর দিকে মনে মনে জেনা করার কবিরা গুনাহ সে কামিয়ে নেয়। বাস্তবিক জেনাকারীরা আল্লাহ চাইলে তওবাহ করে ক্ষমাও পেয়ে যেতে পারে কিন্তু এভাবে হাতের জেনা, চোখের জেনা ও মনের জেনাকারীরা কখনও নিজের এসব কৃতকর্মকে গুনাহও মনে করে না। ফলে তার তওবাহ করারও সুযোগ থাকে না। যারা এই জঘন্য পাপকর্মে নিমগ্ন আছেন আল্লাহ তাদের ভালভাবে বুঝার তৌফিক দান করুন।

আর কোন নারী যখন স্বমেহন বা হস্তমৈথুন করে তখন তার Hymen (fold of mucous membrane partly closing the vagina in a virgin) break হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। অর্থাৎ তার কুমারীত্ব (Virginity) হারানোর সম্ভাবনা বেড়ে যায়। অনেকে স্বমেহন করতে গিয়ে কুমারীত্ব হারিয়ে ফেলে।

ফলে তার বিয়ে করতে সমস্যা হয়। বিয়ের পর স্বামী তার এ অবস্থা দেখে তাকে সন্দেহ করে তালাক দেয়। তাই হস্তমৈথুন নারীদের অনেক বড় সমস্যার সৃষ্টি করে।

হস্তমৈথুন্য সম্পর্কে কুরআন হাদিস কি বলে


হস্তমৈথুন্য সম্পর্কে কুরআনের নির্দেশনা

“আর যারা নিজেদের যৌনাঙ্গকে হেফাযত করে। নিজেদের স্ত্রী বা মালিকানাভুক্ত দাসীগণ ছাড়া; এক্ষেত্রে (স্ত্রী ও দাসীর ক্ষেত্রে) অবশ্যই তারা নিন্দিত নয়। যারা এর বাইরে কিছু কামনা করবে তারাই সীমালঙ্ঘনকারী। [সূরা মুমিনুন, আয়াত: ৫-৬]
ইবনে কাছির (রহঃ) বলেন: ইমাম শাফেয়ি এবং যারা তাঁর সাথে একমত পোষণ করেছেন তারা সবাই এ আয়াত দিয়ে হস্তমৈথুন হারাম হওয়ার পক্ষে দলিল দিয়েছেন। 


ইমাম শাফেয়ি নিকাহ অধ্যায়ে’ বলেন: “স্ত্রী বা দাসী ছাড়া অন্য সবার থেকে লজ্জাস্থান হেফাযত করা উল্লেখ করার মাধ্যমে স্ত্রী ও দাসী ছাড়া অন্য কেউ হারাম হওয়ার ব্যাপারে আয়াতটি সুস্পষ্ট। এরপরও আয়াতটিকে তাগিদ করতে গিয়ে আল্লাহ্ তাআলা বলেন “যারা এর বাইরে কিছু কামনা করবে তারাই সীমালঙ্ঘনকারী।” সুতরাং স্ত্রী বা দাসী ছাড়া অন্য কোন ক্ষেত্রে পুরুষাঙ্গ ব্যবহার করা বৈধ হবে না, হস্তমৈথুনও বৈধ হবে না। আল্লাহ্‌ই ভাল জানেন। [ইমাম শাফেয়ি রচিত কিতাবুল উম্ম]

কোন কোন আলেম এ আয়াত দিয়ে দলিল দেন: “যারা বিবাহে সক্ষম নয়, তারা যেন সংযম অবলম্বন করে যে পর্যন্ত না আল্লাহ নিজ অনুগ্রহে তাদেরকে অভাবমুক্ত করে দেন। [সূরা নূর, আয়াত: ৩৩] এ আয়াতে সংযমের নির্দেশ দেয়ার দাবী হচ্ছে– অন্য সবকিছু থেকে ধৈর্য ধারণ করা।

হস্তমৈথুন্য সম্পর্কে হাদিসের নির্দেশনা

আলেমগণ এ ব্যাপারে আব্দুল্লাহ্ বিন মাসউদ (রাঃ) এর হাদিস দিয়ে দলিল দেন যে, তিনি বলেন: নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সাথে আমরা এমন কিছু যুবকে ছিলাম যাদের কিছু ছিল না। তখন রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন: হে যুবকেরা! তোমাদের মধ্যকার যার باءة (বিয়ের খরচ বহন ও শারীরিক সামর্থ্য) রয়েছে সে যেন বিয়ে করে ফেলে। কেননা, তা তার দৃষ্টি নিম্নগামী রাখতে ও লজ্জাস্থানকে হেফাজত করায় সহায়ক হয়। আর যে বিবাহের সামর্থ্য রাখে না, সে যেন রোজা রাখে। কারণ তা যৌন উত্তেজনা প্রশমনকারী। [সহীহ বুখারী (৫০৬৬)]

শরিয়ত প্রণেতা, বিয়ে করতে অক্ষম হলে কষ্ট হওয়া সত্ত্বেও রোযা রাখার পরামর্শ দিয়েছেন। হস্তমৈথুন করার পরামর্শ দেননি। যদিও হস্তমৈথুনের প্রতি আগ্রহ বেশি থাকে, হস্তমৈথুন করা রোযা রাখার চেয়ে সহজ। কিন্তু তদুপরি তিনি সে অনুমতি দেননি।

এ মাসয়ালায় আরও অনেক দলিল আছে। আমরা এ দলিলগুলো উল্লেখ করাই যথেষ্ট মনে করছি।

হস্তমৈথুন থেকে বাচার উপায়


১। এই অভ্যাস থেকে বাঁচার প্রেরণা যেন হয় আল্লাহ্‌র নির্দেশ পালন ও তাঁর অবাধ্যতা থেকে বিরত থাকা।

২। স্থায়ী সমাধান তথা বিয়ের মাধ্যমে এ অভ্যাসকে প্রতিরোধ করা। কারণ এটাই ছিল যুবকদের প্রতি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের উপদেশ।

৩। নানা রকম কু-চিন্তা ও খারাপ ভাবনা থেকে দূরে থাকা। দুনিয়া বা আখেরাতের কল্যাণকর চিন্তায় নিজেকে ব্যস্ত রাখা। কারণ কু-চিন্তাকে বাড়তে দিলে সেটা এক পর্যায়ে কর্মের দিকে নিয়ে যায়। চূড়ান্ত পর্যায়ে তা নিয়ন্ত্রয়ের বাইরে গিয়ে অভ্যাসে পরিণত হয়ে যায়। তখন তা থেকে মুক্ত হওয়া কঠিন হয়ে পড়ে।

৪। দৃষ্টিকে নত রাখা। কারণ কোন ব্যক্তি বা অশ্লীল ছবির দিকে দৃষ্টিপাত করা, সেটা জীবিত মানুষের হোক কিংবা আঁকা হোক, বাঁধহীন দৃষ্টি ব্যক্তিকে হারামের দিকে নিয়ে যায়। এ কারণে আল্লাহ্ তাআলা বলেছেন: মুমিনদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টি নত রাখে”[সূরা নূর, আয়াত: ৩০] নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন: তুমি দৃষ্টির পর দৃষ্টি দিবে ন।” [সুনানে তিরমিযি (২৭৭৭), আলবানী হাদিসটিকে  হাসান বলেছেন] তাই প্রথম দৃষ্টি, যে দৃষ্টি হঠাৎ করে পড়ে যায় সেটাতে গুনাহ না থাকলেও দ্বিতীয় দৃষ্টি হারাম। এছাড়া যে সব স্থানে যৌন উত্তেজনা জাগিয়ে তোলার উপকরণ বিদ্যমান থাকে সেসব স্থান থেকে দূরে থাকা বাঞ্ছনীয়।

৫। নানাবিধ ইবাদতে মশগুল থাকা। পাপকাজ সংঘটিত হওয়ার মত কোন অবসর সময় না রাখা।

৬। এ ধরণের কু-অভ্যাসের ফলে যেসব শারীরিক ক্ষতি ঘটে থাকে সেগুলো থেকে শিক্ষা গ্রহণ করা। যেমন- দৃষ্টিশক্তি ও স্নায়ুর দুর্বলতা, প্রজনন অঙ্গের দুর্বলতা, মেরুদণ্ডের ব্যথা ইত্যাদি যেসব ক্ষতির কথা চিকিৎসকরা উল্লেখ করে থাকেন। অনুরূপভাবে বিভিন্ন মানসিক ক্ষতি; যেমন- উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা, মানসিক পীড়া অনুভব করা। এর চেয়ে বড় ক্ষতি হচ্ছে- নামায নষ্ট করা। যেহেতু বারবার গোসল করা লাগে, যা করা কঠিন। বিশেষতঃ শীতের রাত্রিতে। অনুরূপভাবে রোযা নষ্ট করা।

৭। ভুল দৃষ্টিভঙ্গির প্রতি পরিতুষ্টি দূর করা। কারণ কিছু কিছু যুবক ব্যভিচার ও সমকামিতা থেকে নিজেকে রক্ষা করার ধুয়া তুলে এই কু-অভ্যাসকে জায়েয মনে করে। অথচ হতে পারে সে যুবক ব্যভিচার ও সমকামিতার নিকটবর্তী হওয়ার কোন সম্ভাবনা নাই।

৮। কঠিন ইচ্ছা ও শক্ত সিদ্ধান্ত দিয়ে নিজেকে সুরক্ষিত রাখা। শয়তানের কাছে হার না মানা। একাকী না থাকা; যেমন একাকী রাত কাটানো। হাদিসে এসেছে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কোন পুরুষকে একাকী রাত কাটাতে নিষেধ করেছেন।[মুসনাদে আহমাদ, হাদিসটি ‘সহিহুল জামে’ তে রয়েছে]

৯। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নির্দেশিত প্রতিকার পদ্ধতি গ্রহণ করা; সেটা হচ্ছে– রোযা রাখা। কেননা রোযা যৌন উত্তেজনাকে প্রশমিত করে এবং যৌন চাহিদাকে পরিশীলিত করে। এর সাথে উদ্ভট আচরণ থেকে সাবধান থাকা; যেমন- হস্তমৈথুন পুনরায় না করার ব্যাপারে শপথ করা কিংবা মানত করা। কারণ যদি কেউ পুনরায় করে ফেলে তাহলে সে ব্যক্তি পাকাপোক্ত-শপথ ভঙ্গকারী হিসেবে গণ্য হবে। অনুরূপভাবে যৌন উত্তেজনা নিরোধক ঔষধ সেবন না করা। কেননা এসব ঔষধ সেবনে শারীরিক ঝুঁকি আছে। তাছাড়া যৌন উত্তেজনা একেবারে নিঃশেষ করে ফেলে এমন কিছু সেবন করা থেকে হাদিসে নিষেধাজ্ঞা সাব্যস্ত হয়েছে।

১০। ঘুমানোর সময় ইসলামী আদবগুলো মেনে চলা। যেমন- ঘুমানোর দোয়াগুলো পড়া, ডান পার্শ্বে কাত হয়ে শোয়া, পেটের উপর ভর দিয়ে না-ঘুমানো; যেহেতু এ সম্পর্কে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নিষেধ আছে।

১১। ধৈর্য ও সংযমের গুণে নিজেকে ভূষিত করা। কারণ হারাম কাজ থেকে ধৈর্য রাখা আমাদের উপর ফরয; যদিও আমাদের মাঝে সেগুলো করার চাহিদা থাকে। আমাদের জানা উচিত, যদি আমরা নিজেকে সংযমী রাখার চেষ্টা করি তাহলে পরিশেষে সেটা ব্যক্তির অবিচ্ছেদ্য আখলাকে পরিণত হবে। যেহেতু নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: “যে ব্যক্তি সংযম অবলম্বন করে আল্লাহ্ তাকে সংযমী বানিয়ে দিবেন, যে ব্যক্তি অমুখাপেক্ষী থাকার চেষ্টা করবেন আল্লাহ্ তাকে অমুখাপেক্ষী বানিয়ে দিবেন, যে ব্যক্তি ধৈর্য রাখার চেষ্টা করবেন আল্লাহ্ তাকে ধৈর্যশীল বানিয়ে দিবেন। কোন মানুষকে ধৈর্যের চেয়ে প্রশস্ত ও কল্যাণকর আর কোন দান দেয়া হয়নি।”[সহিহ বুখারী (১৪৬৯)]

১২। কেউ যদি এই গুনাহটি করে ফেলে তাহলে তার উচিত অনতিবিলম্বে তওবা করা, ক্ষমা প্রার্থনা করা, নেকীর কাজ করা এবং ক্ষমাপ্রাপ্তির ব্যাপারে হতাশ না হওয়া। কেননা এ পাপটি একটি কবিরা গুনাহ।

১৩। সর্বশেষ, নিঃসন্দেহে আল্লাহ্‌র কাছে ধর্ণা দেয়া, দোয়ার মাধ্যমে তাঁর কাছে মিনতি করা, তাঁর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করা এই কু-অভ্যাস থেকে বাঁচার সবচেয়ে বড় উপায়। কেননা আল্লাহ্ তাআলা দোয়াকারীর ডাকে সাড়া দেন। আল্লাহ আমাদেরকে তৌফিক দান করুন।



****************************************
>>> Welcome, You are now on Mohammadia Foundation's Website. Please stay & Tune with us>>>

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

মোহাম্মদীয়া ফাউন্ডেশনের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url