বিষয় ভিত্তিক আয়াত || কাফেরদেরকে বন্ধু বানানো সম্পর্কিত আয়াতসমূহ || (২য় পর্ব)

কাফিররা কখনও মুসলিমের বন্ধু হবে না



সূরাঃ আল-মায়েদা | Al-Ma'ida | سورة المائدة

 সূরাঃ আল-মায়েদা, আয়াত ৫১ 

৫১ یٰۤاَیُّهَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا لَا تَتَّخِذُوا الۡیَهُوۡدَ وَ النَّصٰرٰۤی اَوۡلِیَآءَ ۘؔ بَعۡضُهُمۡ اَوۡلِیَآءُ بَعۡضٍ ؕ وَ مَنۡ یَّتَوَلَّهُمۡ مِّنۡکُمۡ فَاِنَّهٗ مِنۡهُمۡ ؕ اِنَّ اللّٰهَ لَا یَهۡدِی الۡقَوۡمَ الظّٰلِمِیۡنَ 

 সূরাঃ আল-মায়েদা, আয়াত ৫১ এর অর্থ 

হে মুমিনগণ, ইয়াহূদী ও নাসারাদেরকে তোমরা বন্ধুরূপে গ্রহণ করো না। তারা একে অপরের বন্ধু। আর তোমাদের মধ্যে যে তাদের সাথে বন্ধুত্ব করবে, সে নিশ্চয় তাদেরই একজন। নিশ্চয় আল্লাহ যালিম কওমকে হিদায়াত দেন না।

O you who have believed, do not take the Jews and the Christians as allies. They are [in fact] allies of one another. And whoever is an ally to them among you - then indeed, he is [one] of them. Indeed, Allah guides not the wrongdoing people.

 সূরাঃ আল-মায়েদা, আয়াত ৫১ এর তাফসীর 

(৫১) হে বিশ্বাসীগণ! ইয়াহুদী ও খৃষ্টানদেরকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করো না।[1] তারা একে অপরের বন্ধু।[2] তোমাদের মধ্যে কেউ তাদেরকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করলে সে তাদেরই একজন গণ্য হবে। নিশ্চয় আল্লাহ অত্যাচারী সম্প্রদায়কে সৎপথে পরিচালিত করেন না। [3]

ইয়াহুদী ও খ্রিষ্টানদেরকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করা নিষেধ

[1] এখানে ইয়াহুদী ও খ্রিষ্টানদেরকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করতে নিষেধ করা হয়েছে। কেননা তারা ইসলাম ও মুসলমানের শত্রু। যারা তাদের সাথে বন্ধুত্ব রাখবে তাদের জন্য কঠিন শাস্তির কথাও ঘোষণা করা হয়েছে যে, তারা তদেরই দলভুক্ত বলে গণ্য হবে। (বিস্তারিত দেখুন, সূরা আলে-ইমরানের ২৮ ও ১১৮নং আয়াতের টীকা)

[2] প্রত্যেক মানুষ কুরআনে বর্ণিত এই প্রকৃতত্বকে লক্ষ্য করতে পারে যে, ইয়াহুদী ও খ্রিষ্টানরা তাদের পরষ্পরের মধ্যে আকীদাগত কঠিন মতভেদ এবং পরষ্পরের মধ্যে বিদ্বেষ ও শত্রুতা বিদ্যমান আছে; কিন্তু তা সত্ত্বেও ইসলাম ও মুসলিমদের বিরুদ্ধে তারা একে অপরের পৃষ্ঠপোষক ও সহায়ক।

[3] এই আয়াত অবতীর্ণ হওয়ার কারণ হিসাবে বলা হয় যে, উবাদা বিন স্বামেত আনসারী (রাঃ) এবং মুনাফিকদের সর্দার আব্দুল্লাহ ইবনে উবাই দু’জনেই জাহেলিয়াতের যুগ থেকে ইয়াহুদীদের সাথে মৈত্রীচুক্তিতে আবদ্ধ ছিল। বদরের যুদ্ধে যখন মুসলিমগণ বিজয়ী হলেন, তখন আব্দুল্লাহ ইবনে উবাই নিজেকে মুসলিম বলে প্রকাশ করল। এদিকে অল্প কিছু দিনের মধ্যেই বানু কাইনুকার ইয়াহুদীরা ফিতনার আগুন জ্বালিয়ে দিল এবং তা নির্বাপিত করা হল। এর ফলে উবাদা (রাঃ) ইয়াহুদীদের সাথে মৈত্রী-সম্পর্ক ছিন্ন করার কথা ঘোষণা করে দিলেন। কিন্তু আব্দুল্লাহ বিন উবাই বিপরীত পথ অবলম্বন করে ইয়াহুদীদেরকে বাঁচানোর জন্য সমস্ত রকম প্রচেষ্টা শুরু করে দিল। যার পরিপ্রেক্ষিতে এই আয়াত অবতীর্ণ হয়।

তাফসীরে আহসানুল বায়ান

সূরাঃ আত-তাওবা | At-Tawba | سورة التوبة 

 সূরাঃ আত-তাওবা, আয়াত ২১ 

২১ یُبَشِّرُهُمۡ رَبُّهُمۡ بِرَحۡمَۃٍ مِّنۡهُ وَ رِضۡوَانٍ وَّ جَنّٰتٍ لَّهُمۡ فِیۡهَا نَعِیۡمٌ مُّقِیۡمٌ 

 সূরাঃ আত-তাওবা, আয়াত ২১ এর অর্থ 

তাদের প্রতিপালক তাদেরকে নিজের পক্ষ থেকে সুসংবাদ দিচ্ছেন রহমত ও সন্তুষ্টির এবং এমন জান্নাতসমূহের যাতে রয়েছে তাদের জন্য স্থায়ী নিআমত।

Their Lord gives them good tidings of mercy from Him and approval and of gardens for them wherein is enduring pleasure.

 সূরাঃ আত-তাওবা, আয়াত ২১  এর তাফসীর 

২১. তাদের রব তাদেরকে সুসংবাদ দিচ্ছেন, স্বীয় দয়া ও সন্তোষের(১) এবং এমন জান্নাতের যেখানে আছে তাদের জন্য স্থায়ী নেয়ামত।

(১) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যে কেউ জান্নাতে যাবে, সে শুধু নে'আমতই প্রাপ্ত হবে, কখনও নিরাশ হবে না, তার প্রতি কঠোরতা করা হবে না। তার কাপড় কখনও পুরান হবে না, তার যৌবনও কখনও শেষ হবে না। [মুসলিম: ২৮৩৬] অন্য হাদীসে এসেছে, যখন জান্নাতীরা জান্নাতে প্রবেশ করবে, তখন আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'আলা তাদেরকে বলবেন, আমি তোমাদেরকে এর চেয়েও শ্রেষ্ঠ জিনিস দেব। তারা বলবে, হে আমাদের রব! এর থেকেও শ্রেষ্ঠ জিনিস কি? তিনি বলবেন, আমার সন্তুষ্টি। [তাবারী]

তাফসীরে জাকারিয়া

 সূরাঃ আন-নিসা | An-Nisa | سورة النساء 

 সূরাঃ আন-নিসা, আয়াত ১৪৪ 

১৪৪ یٰۤاَیُّهَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا لَا تَتَّخِذُوا الۡکٰفِرِیۡنَ اَوۡلِیَآءَ مِنۡ دُوۡنِ الۡمُؤۡمِنِیۡنَؕ اَتُرِیۡدُوۡنَ اَنۡ تَجۡعَلُوۡا لِلّٰهِ عَلَیۡکُمۡ سُلۡطٰنًا مُّبِیۡنًا 

 সূরাঃ আন-নিসা, আয়াত ১৪৪ এর অর্থ 

হে মুমিনগণ, তোমরা মুমিনগণ ছাড়া কাফিরদেরকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করো না। তোমরা কি আল্লাহর জন্য তোমাদের বিপক্ষে কোন স্পষ্ট দলীল সাব্যস্ত করতে চাও? 

O you who have believed, do not take the disbelievers as allies instead of the believers. Do you wish to give Allah against yourselves a clear case?

 সূরাঃ আন-নিসা, আয়াত ১৪৪ এর তাফসীর 

(১৪৪) হে বিশ্বাসিগণ! তোমরা বিশ্বাসিগণের পরিবর্তে অবিশ্বাসীদেরকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করো না। তোমরা কি আল্লাহকে তোমাদের বিরুদ্ধে সুস্পষ্ট প্রমাণ দিতে চাও? [1]

[1] অর্থাৎ, মহান আল্লাহ তোমাদেরকে কাফেরদের সাথে বন্ধুত্ব করতে নিষেধ করেছেন। এখন যদি তোমরা তাদের সাথে বন্ধুত্ব স্থাপন কর, তাহলে তার অর্থ হবে তোমরা নিজেদের বিরুদ্ধে আল্লাহর দলীল কায়েম করছ; যাতে তিনি তোমাদেরকে শাস্তি দিতে পারেন। (অর্থাৎ, আল্লাহর অবাধ্যতা এবং তাঁর নির্দেশ অমান্য করার কারণে।)

তাফসীরে আহসানুল বায়ান


*******************
সাইটটি ভিজিট করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। আর্টিকেলটি ভাল লাগলে সত্য ও ন্যয়ের পথে অন্য ভাইনদেরকে দাওয়াতের নিয়তে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করুন। মোহাম্মদীয়া ফাউন্ডেশনের কার্যক্রম, লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য সম্পর্কে জানতে এবং দীন ও মানবতার সেবায় অংশ নিতে OUR ACTION PLAN বাটনে ক্লিক করুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

মোহাম্মদীয়া ফাউন্ডেশনের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url