রমজানের কাযা রোজা আদায়ের বিধান || রমজানের কাযা রোজা সম্পর্কিত ১৭টি সহীহ হাদিস ||






রমজানের কাযা রোজা আদায় ও এ সম্পর্কিত ১৭টি সহীহ হাদিস


রমজানের রোজা একটি ফরজ ও মৌলিক এবাদত। কিছু কিছু শরীয়ত সম্মত ও যৌক্তিক কারণে রমজানের রোজা তাৎক্ষণিকভাবে ছেড়ে দেওয়ার বিধান থাকলেও পরবর্তিতে সেগুলোর কাযা আদায় করা ওয়াজিব। আর শরীয়ত সম্মত কারণের বাইরে ইচ্ছাকৃতভাবে রোজা ছেড়ে দিলে তার জন্য কাফফারা আদায় করে আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইতে হবে। নতুবা কঠিন কবিরা গুনাহর শাস্তি ভোগ করতে হবে। আমরা এখানে রমজানের রোজার কাযা ও কাফফারা নিয়ে বিশদ আলোচনা করবো। সেই সাথে রমজানের রোজার কাযা আদায় সম্পর্কিত ছিয়া ছিত্তাহ হাদিসগ্রন্থ থেকে ১৭টি সহীহ হাদিসের রেফারেন্সসহ উদৃতি দিব। লেখাটি পুরোটা পড়লে আশাকরি সবাই উপকৃত হবেন। ভাল লাগলে অন্যদের জন্য লেখাটি সামাজিক মাধ্যমে শেয়ার করার জন্য বিনীত অনুরোধ থাকলো।

রমজানের কাযা রোজা আদায় বিষয়ের আলোচ্য সূচি:

কাযা রোজা আদায় করা ওয়াজিব 

বিভিন্ন অপারগতা কিংবা অজুহাতে (ওজর) রমজানের রোজা কাযা করা হয়। তবে এই কাযা রোজাগুলো পরবর্তীতে আদায় করে নিতে হবে। না হলে ফরজ আমল ত্যাগের গুনাহ হবে। প্রথমেই জেনে নেওয়া যাক যেসব ওজর ও অপারগতার কারণে রোজা কাযা করা যাবে। মনে রাখতে হবে, এসব রোজা মাফ নয়। তাই অপারগতা দূর হয়ে যাওয়ার পর সেটার কাযা আদায় করা ফরজ। অবশ্যই এক রমজানের রোজার কাযা পরবর্তী রমজানের আগেই পূরণ করতে হবে।

যে সব রোজার কাজা আদায় করতে হবে

যে সব রোজার শুধু কাজা আদায় করতে হবে- 
(১) মুসাফির অবস্থায় রোজা ছেড়ে দিলে, 
(২) রোগ-ব্যাধি বৃদ্ধির বেশি আশঙ্কায় রোজা ছেড়ে দিলে
(৩) মাতৃগর্ভে সন্তানের ক্ষতির আশঙ্কা থাকায় রোজা ছেড়ে দিলে
(৪) এমন ক্ষুধা বা তৃষ্ণা হয় যাতে মৃত্যুর আশঙ্কা থাকতে পারে, 
(৫) শক্তিহীন বৃদ্ধ হলে, 
(৬) কোনো রোজাদারকে সাপে দংশন করলে,
(৭) মহিলাদের মাসিক হায়েজ ও নেফাস চলা অবস্থায় রোজা ছেড়ে দিলে, (এ অবস্থায় রোজা ছেড়ে দিতে হবে।)
(৮) অনিচ্ছাকৃতভাবে বা মনের ভুলে এসব কারণ ঘটলে রোজা ভাঙ্গবে না। মনে আসা মাত্রই খাবার খাওয়া বন্ধ করে দিতে হবে। নাকে বা কানে ওষুধ দিলে যদি তা পেট পর্যন্ত পৌঁছে, মাথার ক্ষতস্থানে ওষুধ দেওয়ার পর তা যদি মস্তিষ্কে বা পেটে পৌছে ইত্যাদি কারণে রমজানের রোজার শুধু কাযা আদায় করতে হবে কাফফারা আদায় করতে হবে না।

রোজার কাজা ও কাফফারা উভয়টিই ওয়াজিব হয় কখন 

যে সব কারণে রোজার কাজা ও কাফফারা উভয়টি আবশ্যক হয়। এমন কিছু বিষয় নিচে উল্লেখ করা হলো- 
(১) রমজানের রোজা রেখে দিনের বেলা স্ত্রী সহবাস করলে বীর্যপাত না হলেও স্বামী-স্ত্রী উভয়ের ওপর সেই রোজার কাজা-কাফফারা ওয়াজিব হবে। (বোখারি : ৬৭০৯)। 
(২) রোজা রেখে স্বাভাবিক অবস্থায় ইচ্ছাকৃতভাবে পানাহার করলে কাজা ও কাফফারা উভয়টি জরুরি হবে। (আল বাহরুর রায়েক : ২/২৭৬)। 
(৩) ইচ্ছাকৃতভাবে বিড়ি-সিগারেট, হুক্কা পান করলেও রোজা ভেঙে যাবে। কাজা ও কাফফারা উভয়টি জরুরি হবে। (রদ্দুল মুহতার : ৩/৩৮৫)। 
(৪) সুবহে সাদিক হয়ে গেছে জানা সত্ত্বেও আজান শোনা যায়নি বা এখনও ভালোভাবে আলো ছাড়ায়নি, এ ধরনের ভিত্তিহীন অজুহাতে পানাহার করলে বা স্ত্রী সহবাসে লিপ্ত হলে কাজা ও কাফফারা দুটোই জরুরি হবে। (মাআরিফুল কোরআন : ১/৪৫৪-৪৫৫)।

রমজানের রোজার কাজা কি 

শরিয়তে কঠোর নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও বিনা কারণে রোজা ভঙ্গ করলে অবশ্যই কাজা-কাফফারা উভয়ই আদায় করা ওয়াজিব। যতটি রোজা ভঙ্গ হবে, ততটি রোজা আদায় করতে হবে। কাজা রোজা একটির পরিবর্তে একটি, অর্থাৎ রোজার কাজা হিসেবে শুধু একটি রোজাই যথেষ্ট।

রমজানের রোজার কাফফারা কি 

কাফফারা আদায় করার তিনটি বিধান রয়েছে:
(১) একটি রোজা ভঙ্গের জন্য একাধারে ৬০টি রোজা রাখতে হবে। কাফফারা ধারাবাহিকভাবে ৬০টি রোজার মাঝে কোনো একটি ভঙ্গ হলে আবার নতুন করে শুরু করতে হবে। 
(২) যদি কারও জন্য ৬০টি রোজা পালন সম্ভব না হয়, তাহলে সে ৬০ জন মিসকিনকে দু’বেলা খাবার দেবে। অপরদিকে কেউ অসুস্থতাজনিত কারণে রোজা রাখার ক্ষমতা না থাকলে ৬০ জন ফকির, মিসকিন, গরিব বা অসহায়কে প্রতিদিন দু’বেলা করে পেটভরে খাবার খাওয়াতে হবে। 
(৩) গোলাম বা দাসী মুক্ত করতে হবে ইত্যাদি।

অতএব, রমজানের রোজা একটি ফরজ ইবাদত। এই রোজা পালনের যে সকল বিধি-বিধান রয়েছে, ইসলাম ধর্মে সেগুলো জেনে ও মেনে অত্যন্ত পবিত্রতার সাথে রোজা পালন করতে হবে। তাই রোজার কাযা আদায়ের সঠিক পদ্ধতি অনুযায়ী কাযা আদায় করতে হবে। আর যেসব ছোটখাটো কিছু ভুল থেকে শুরু করে বড় বড় কিছু কাজে রোজা মাকরুহ হয়ে যেতে পারে ও তার পবিত্রতাও নষ্ট হতে পারে। সেগুলো থেকে আমরা সর্বোচ্চ সচেতনার সহিত বিরত থাকার চেষ্টা করবো এবং আমাদের সিয়াম সাধনাকে পরিপূর্ণভাবে আদায় করবো, ইনশাআল্লাহ।

রমজানের রোজার কাযা আদায় সম্পর্কিত ১৭টি সহীহ হাদিস 

 ০১ 

রমযানের কাযা কখন আদায় করা হবে 


ইসলামিক ফাউন্ডেশন নাম্বারঃ ১৮২৬
আন্তর্জাতিক নাম্বারঃ ১৯৫০

باب مَتَى يُقْضَى قَضَاءُ رَمَضَانَ
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ يُونُسَ، حَدَّثَنَا زُهَيْرٌ، حَدَّثَنَا يَحْيَى، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ، قَالَ سَمِعْتُ عَائِشَةَ ـ رضى الله عنها ـ تَقُولُ كَانَ يَكُونُ عَلَىَّ الصَّوْمُ مِنْ رَمَضَانَ، فَمَا أَسْتَطِيعُ أَنْ أَقْضِيَ إِلاَّ فِي شَعْبَانَ‏.‏ قَالَ يَحْيَى الشُّغْلُ مِنَ النَّبِيِّ أَوْ بِالنَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم‏.‏

 ১৮২৬  আহমদ ইবনু ইউনুস (রহঃ) ... ‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমার উপর রমযানের যে কাযা থেকে যেত তা পরবর্তী শাবান ছাড়া আমি আদায় করতে পারতাম না। ইয়াহিয়া (রহঃ) বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর ব্যস্ততার কারণে কিংবা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে ব্যস্ততার কারণে।

وَقَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ لَا بَأْسَ أَنْ يُفَرَّقَ لِقَوْلِ اللَّهِ تَعَالَى فَعِدَّةٌ مِنْ أَيَّامٍ أُخَرَ وَقَالَ سَعِيدُ بْنُ الْمُسَيَّبِ فِي صَوْمِ الْعَشْرِ لَا يَصْلُحُ حَتَّى يَبْدَأَ بِرَمَضَانَ وَقَالَ إِبْرَاهِيمُ إِذَا فَرَّطَ حَتَّى جَاءَ رَمَضَانُ آخَرُ يَصُومُهُمَا وَلَمْ يَرَ عَلَيْهِ طَعَامًا وَيُذْكَرُ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ مُرْسَلًا وَابْنِ عَبَّاسٍ أَنَّهُ يُطْعِمُ وَلَمْ يَذْكُرْ اللَّهُ الْإِطْعَامَ إِنَّمَا قَالَ فَعِدَّةٌ مِنْ أَيَّامٍ أُخَرَ

ইবনু ‘আব্বাস রাঃ বলেন, পৃথক পৃথক রাখলে কোন ক্ষতি নেই। কেননা আল্লাহ বলেছেন, فَعِدَّةٌ مِنْ أَيَّامٍ أُخَرَ ‘অন্যদিনে এর সংখ্যা পূর্ণ করবে’ (আল-বাক্বারাঃ ২:১৮৪)। সা’ঈদ ইবনু মুসায়্যাব (রহঃ) বলেছেন, রমাযানের কাযা আদায় না করে যুলহাজ্জ মাসের প্রথম দশকে সওম পালন করা উচিত নয়। ইবরাহীম নাখ’ঈ (রহঃ) বলেন, অবহেলার কারণে যদি পরবর্তী রমযান এসে যায় তাহলে উভয় রমযানের সওম এক সাথে আদায় করবে। মিসকীন খাওয়াতে হবে বলে তিনি মনে করেন না। আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। একটি মুরসাল হাদীসে এবং ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, সে খাওয়াবে; অথচ আল্লাহ তা’আলা খাওয়ানোর কথাটি উল্লেখ করেননি। বরং তিনি বলেছেন, فَعِدَّةٌ مِنْ أَيَّامٍ أُخَرَ ‘অন্য দিনে এর সংখ্যা পূর্ণ করবে’ (আল-বাক্বরাহঃ ২:১৮৪)

 ০২ 

ঋতুবতী মহিলা সালাত ও সওম উভয়ই ত্যাগ করবে 


ইসলামিক ফাউন্ডেশন নাম্বারঃ ১৮২৭
আন্তর্জাতিক নাম্বারঃ ১৯৫১

باب الْحَائِضِ تَتْرُكُ الصَّوْمَ وَالصَّلاَةَ
حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي مَرْيَمَ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ، قَالَ حَدَّثَنِي زَيْدٌ، عَنْ عِيَاضٍ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ ـ رضى الله عنه ـ قَالَ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم ‏ "‏ أَلَيْسَ إِذَا حَاضَتْ لَمْ تُصَلِّ، وَلَمْ تَصُمْ فَذَلِكَ نُقْصَانُ دِينِهَا ‏"‏‏.‏

 ১৮২৭  ইবনু আবূ মারইয়াম (রহঃ) ... আবূ সাঈদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ এ কথা কি ঠিক নয় যে হায়য শুরু হলে মেয়েরা সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করে না এবং সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম)ও পালন করে না। এ হল তাদের দ্বীনেরই ত্রুটি।

وَقَالَ أَبُو الزِّنَادِ إِنَّ السُّنَنَ وَوُجُوهَ الْحَقِّ لَتَأْتِي كَثِيرًا عَلَى خِلاَفِ الرَّأْيِ، فَمَا يَجِدُ الْمُسْلِمُونَ بُدًّا مِنِ اتِّبَاعِهَا، مِنْ ذَلِكَ أَنَّ الْحَائِضَ تَقْضِي الصِّيَامَ وَلاَ تَقْضِي الصَّلاَةَ

আবুয-যিনাদ (রহঃ) বলেন, শরী’আতের হুকুম-আহকাম অনেক সময় কিয়াসের বিপরীতও হয়ে থাকে। মুসলিমের জন্য এর অনুসরণ ছাড়া কোন উপায় নেই। এর একটি উদাহরণ হল যে, ঋতুবতী মহিলা সওমের কাযা করবে কিন্তু স্বলাতের কাযা করবে না।

 ০৩ 

সাওমের কাযা যিম্মায় রেখে যদি মৃত্যু হয় 


ইসলামিক ফাউন্ডেশন নাম্বারঃ ১৮২৮
আন্তর্জাতিক নাম্বারঃ ১৯৫২

باب مَنْ مَاتَ وَعَلَيْهِ صَوْمٌ وَقَالَ الْحَسَنُ إِنْ صَامَ عَنْهُ ثَلاَثُونَ رَجُلاً يَوْمًا وَاحِدًا جَازَ
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ خَالِدٍ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ مُوسَى بْنِ أَعْيَنَ، حَدَّثَنَا أَبِي، عَنْ عَمْرِو بْنِ الْحَارِثِ، عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي جَعْفَرٍ، أَنَّ مُحَمَّدَ بْنَ جَعْفَرٍ، حَدَّثَهُ عَنْ عُرْوَةَ، عَنْ عَائِشَةَ ـ رضى الله عنها ـ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏ "‏ مَنْ مَاتَ وَعَلَيْهِ صِيَامٌ صَامَ عَنْهُ وَلِيُّهُ ‏"‏‏.‏ تَابَعَهُ ابْنُ وَهْبٍ عَنْ عَمْرٍو‏.‏ وَرَوَاهُ يَحْيَى بْنُ أَيُّوبَ عَنِ ابْنِ أَبِي جَعْفَرٍ‏.‏

 ১৮২৮  মুহাম্মদ ইবনু খালিদ (রহঃ) ... ‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) এর কাযা যিম্মায় রেখে যদি কোন ব্যাক্তি মারা যায় তাহলে তার অভিভাবক তার পক্ষ থেকে সাওম আদায় করবে।

ইবনু ওয়াহব (রহঃ) ‘আমর (রহঃ) থেকে উক্ত হাদীসটি অনুরূপ বর্ণনা করেছেন। ইয়াহইয়া ইবনু আইয়ূব (রহঃ) ইবনু আবূ জা’ফর (রহঃ) থেকেও এ হাদীসটি বর্ণনা করেছেন।

 ০৪ 

সাওমের কাযা যিম্মায় রেখে কারও মৃত্যু হলে 


ইসলামিক ফাউন্ডেশন নাম্বারঃ ১৮২৯
আন্তর্জাতিক নাম্বারঃ ১৯৫৩

باب مَنْ مَاتَ وَعَلَيْهِ صَوْمٌ وَقَالَ الْحَسَنُ إِنْ صَامَ عَنْهُ ثَلاَثُونَ رَجُلاً يَوْمًا وَاحِدًا جَازَ
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ الرَّحِيمِ، حَدَّثَنَا مُعَاوِيَةُ بْنُ عَمْرٍو، حَدَّثَنَا زَائِدَةُ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ مُسْلِمٍ الْبَطِينِ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ ـ رضى الله عنهما ـ قَالَ جَاءَ رَجُلٌ إِلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنَّ أُمِّي مَاتَتْ، وَعَلَيْهَا صَوْمُ شَهْرٍ، أَفَأَقْضِيهِ عَنْهَا قَالَ ‏ "‏ نَعَمْ ـ قَالَ ـ فَدَيْنُ اللَّهِ أَحَقُّ أَنْ يُقْضَى ‏"‏‏.‏ قَالَ سُلَيْمَانُ فَقَالَ الْحَكَمُ وَسَلَمَةُ، وَنَحْنُ جَمِيعًا جُلُوسٌ حِينَ حَدَّثَ مُسْلِمٌ بِهَذَا الْحَدِيثِ ـ قَالاَ ـ سَمِعْنَا مُجَاهِدًا يَذْكُرُ هَذَا عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ‏.‏ وَيُذْكَرُ عَنْ أَبِي خَالِدٍ، حَدَّثَنَا الأَعْمَشُ، عَنِ الْحَكَمِ، وَمُسْلِمٍ الْبَطِينِ، وَسَلَمَةَ بْنِ كُهَيْلٍ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ، وَعَطَاءٍ، وَمُجَاهِدٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَتِ امْرَأَةٌ لِلنَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم إِنَّ أُخْتِي مَاتَتْ‏.‏ وَقَالَ يَحْيَى وَأَبُو مُعَاوِيَةَ حَدَّثَنَا الأَعْمَشُ عَنْ مُسْلِمٍ عَنْ سَعِيدٍ عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَتِ امْرَأَةٌ لِلنَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم إِنَّ أُمِّي مَاتَتْ‏.‏ وَقَالَ عُبَيْدُ اللَّهِ عَنْ زَيْدِ بْنِ أَبِي أُنَيْسَةَ عَنِ الْحَكَمِ عَنْ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَتِ امْرَأَةٌ لِلنَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم إِنَّ أُمِّي مَاتَتْ وَعَلَيْهَا صَوْمُ نَذْرٍ‏.‏ وَقَالَ أَبُو حَرِيزٍ حَدَّثَنَا عِكْرِمَةُ عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَتِ امْرَأَةٌ لِلنَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم مَاتَتْ أُمِّي وَعَلَيْهَا صَوْمُ خَمْسَةَ عَشَرَ يَوْمًا‏.‏

 ১৮২৯  মুহাম্মদ ইবনু ‘আবদুর রাহীম (রহঃ) ... ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট এক ব্যাক্তি এসে বলল, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমার মা এক মাসের সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) জিম্মায় রেখে মারা গেছেন, আমি কি তার পক্ষ থেকে সাওম কাযা করতে পারি? তিনি বলেনঃ হ্যাঁ, আল্লাহর ঋণ পরিশোধ করাই হল অধিক যোগ্য।

সুলায়মান (রহঃ) বলেন, হাকাম (রহঃ) এবং সালামা (রহঃ) বলেছেন, মুসলিম (রহঃ) এ হাদীস বর্ণনা করার সময় আমরা সকলেই একসাথে উপবিষ্ট ছিলাম তাঁরা উভয়েই বলেছেন যে, ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে মুজাহিদ (রহঃ)-কে এ হাদীস বর্ণনা করতে আমরা শুনেছি।

আবূ খালিদ আহমার (রহঃ) ... ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, একজন মহিলা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলল, আমার বোন মারা গেছে। ইয়াহইয়া (রহঃ) ও আবূ ম‘আবিয়া ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, এক মহিলা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলল, আমার মা মারা গেছেন। ‘উবায়দুল্লাহ (রহঃ) ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, এক মহিলা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলল, আমার মা মারা গেছে, অথচ তার যিম্মায় মানতের সাওম রয়েছে।

আবূ হারীয (রহঃ) ... ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, এক মহিলা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলল, আমার মা মারা গেছে, অথচ তার যিম্মায় পনের দিনের সাওম রয়ে গেছে।

 ০৫ 

যে ব্যক্তি ওযরের কারণে রমযানের সিয়াম পালন করেনি 


সহীহ মুসলিম (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
হাদিস নং- ২৫২৮

باب جواز تأخير قضاء رمضان
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ يُونُسَ، حَدَّثَنَا زُهَيْرٌ، حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ، عَنْ أَبِي، سَلَمَةَ قَالَ سَمِعْتُ عَائِشَةَ، - رضى الله عنها - تَقُولُ كَانَ يَكُونُ عَلَىَّ الصَّوْمُ مِنْ رَمَضَانَ فَمَا أَسْتَطِيعُ أَنْ أَقْضِيَهُ إِلاَّ فِي شَعْبَانَ الشُّغُلُ مِنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَوْ بِرَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏.‏

 ২৫২৮  আহমদ ইবনু আবদুল্লাহ ইবনু ইউনূস (রহঃ) ... আবূ সালামা (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন আমি আয়িশা (রাঃ) কে বলতে শুনেছি যে, আমার উপর রমযানের সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) কাযা থেকে যেত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাজে ব্যস্ত থাকার কারণে শা'বান মাস ব্যতীত আমি তা আদায় করতে পারতাম না।

 ০৬ 
সহীহ মুসলিম (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
হাদিস নং- ২৫৬২

اب جواز تأخير قضاء رمضان
وَحَدَّثَنِي مُحَمَّدُ بْنُ أَبِي عُمَرَ الْمَكِّيُّ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْعَزِيزِ بْنُ مُحَمَّدٍ الدَّرَاوَرْدِيُّ، عَنْ يَزِيدَ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ الْهَادِ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ إِبْرَاهِيمَ، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، عَنْ عَائِشَةَ، - رضى الله عنها - أَنَّهَا قَالَتْ إِنْ كَانَتْ إِحْدَانَا لَتُفْطِرُ فِي زَمَانِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَمَا تَقْدِرُ عَلَى أَنْ تَقْضِيَهُ مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم حَتَّى يَأْتِيَ شَعْبَانُ ‏.

 ২৫৬২  মুহাম্মাদ ইবনু আবূ উমর মক্কী (রহঃ) ... আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমাদের মঝে এমন অনেকে আছেন যিনি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর যুগে রমযানের সিয়াম পালনে সক্ষম হতেন না। অতঃপর শা'বান না আসা পর্যন্ত রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর খিদমতে থাকার কারণে তার পক্ষে কাযা আদায় করাও সম্ভব হতো না।

 ০৭ 

মৃত ব্যক্তির পক্ষ হতে সাওমের কাযা আদায় 


সহীহ মুসলিম (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
হাদিস নং- ২৫৬২

باب قَضَاءِ الصِّيَامِ عَنِ الْمَيِّتِ
وَحَدَّثَنِي هَارُونُ بْنُ سَعِيدٍ الأَيْلِيُّ، وَأَحْمَدُ بْنُ عِيسَى، قَالاَ حَدَّثَنَا ابْنُ وَهْبٍ، أَخْبَرَنَا عَمْرُو بْنُ الْحَارِثِ، عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي جَعْفَرٍ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ جَعْفَرِ بْنِ الزُّبَيْرِ، عَنْ عُرْوَةَ، عَنْ عَائِشَةَ، - رضى الله عنها - أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏ "‏ مَنْ مَاتَ وَعَلَيْهِ صِيَامٌ صَامَ عَنْهُ وَلِيُّهُ ‏"‏ ‏.‏

 ২৫৬৩  হারুন ইবনু সাঈদ আয়লী ও আহমদ ইবনু ঈসা (রহঃ) ... আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ রমযানের কাযা দায়িত্বে থাকা অবস্থায় যদি কোন ব্যক্তি মৃত্যুবরণ করে, তার পক্ষ হতে তার অভিভাবকগণ সিয়াম পালন করবে।

 ০৮ 
সহীহ মুসলিম (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
হাদিস নং- ২৫৬৪

باب قَضَاءِ الصِّيَامِ عَنِ الْمَيِّتِ
وَحَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، أَخْبَرَنَا عِيسَى بْنُ يُونُسَ، حَدَّثَنَا الأَعْمَشُ، عَنْ مُسْلِمٍ، الْبَطِينِ عَنْ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، - رضى الله عنهما - أَنَّ امْرَأَةً، أَتَتْ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَتْ إِنَّ أُمِّي مَاتَتْ وَعَلَيْهَا صَوْمُ شَهْرٍ ‏.‏ فَقَالَ ‏"‏ أَرَأَيْتِ لَوْ كَانَ عَلَيْهَا دَيْنٌ أَكُنْتِ تَقْضِينَهُ ‏"‏ ‏.‏ قَالَتْ نَعَمْ ‏.‏ قَالَ ‏"‏ فَدَيْنُ اللَّهِ أَحَقُّ بِالْقَضَاءِ ‏"‏ ‏.‏

 ২৫৬৪  ইসহাক ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) ... ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, জনৈকা মহিলা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট এসে বললেন, আমার মা মৃত্যুবরণ করেছেন। তার এক মাসের সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) কাযা আছে। এ কথা শুনে তিনি বললেন, যদি তার উপর কোন ঝণ থাকত তাহলে তুমি কি তা পরিশোধ করতে? তিনি বললেন, হ্যাঁ, নিশ্চয়ই। তখন তিনি বললেন, আল্লাহর ঋণ পরিশোধ করা অধিক উপযুক্ত।

 ০৯ 
সহীহ মুসলিম (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
হাদিস নং- ২৫৬৪

باب قَضَاءِ الصِّيَامِ عَنِ الْمَيِّتِ
وَحَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ مَنْصُورٍ، وَابْنُ أَبِي خَلَفٍ، وَعَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، جَمِيعًا عَنْ زَكَرِيَّاءَ، بْنِ عَدِيٍّ - قَالَ عَبْدٌ حَدَّثَنِي زَكَرِيَّاءُ بْنُ عَدِيٍّ، - أَخْبَرَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ عَمْرٍو، عَنْ زَيْدِ، بْنِ أَبِي أُنَيْسَةَ حَدَّثَنَا الْحَكَمُ بْنُ عُتَيْبَةَ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، - رضى الله عنهما - قَالَ جَاءَتِ امْرَأَةٌ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَتْ يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنَّ أُمِّي مَاتَتْ وَعَلَيْهَا صَوْمُ نَذْرٍ أَفَأَصُومُ عَنْهَا قَالَ ‏"‏ أَرَأَيْتِ لَوْ كَانَ عَلَى أُمِّكِ دَيْنٌ فَقَضَيْتِيهِ أَكَانَ يُؤَدِّي ذَلِكِ عَنْهَا ‏"‏ ‏.‏ قَالَتْ نَعَمْ ‏.‏ قَالَ ‏"‏ فَصُومِي عَنْ أُمِّكِ ‏"‏ ‏.‏

 ২৫৬৭  ইসহাক ইবনু মানসূর, ইবনু আবূ খালফ ও আবদ ইবনু হুমায়দ (রহঃ) ... ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। বলেন, জনৈকা মহিলা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট এসে বললেন হে আল্লাহর রাসুল! আমার মা মৃত্যুবরণ করেছেন। তার উপর মান্নতের সাওমের কাযা রয়েছে। আমি তার পক্ষ হতে এ সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) আদায় করতে পারি কি? তখন তিনি বললেন যদি তোমার মায়ের উপর কোন ঋণ থাকত এবং তুমি তা পরিশোধ করে দিতে, তবে তা তার পক্ষ হতে আদায় হতো কি? সে বলল, হ্যাঁ। তিনি বললেনঃ তোমার মায়ের পক্ষ হতে তুমি সিয়াম পালন কর।

 ১০ 

রামাযানের রোযার কাযা আদায়ে বিলম্ব করা 


সূনান আবু দাউদ (ইসলামিক ফাউন্ডেশন) 
হাদিস নং-২৩৯১

حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مَسْلَمَةَ الْقَعْنَبِيُّ، عَنْ مَالِكٍ، عَنْ يَحْيَى بْنِ سَعِيدٍ، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، أَنَّهُ سَمِعَ عَائِشَةَ، - رضى الله عنها - تَقُولُ إِنْ كَانَ لَيَكُونُ عَلَىَّ الصَّوْمُ مِنْ رَمَضَانَ فَمَا أَسْتَطِيعُ أَنْ أَقْضِيَهُ حَتَّى يَأْتِيَ شَعْبَانُ ‏.‏

 ২৩৯১  আবদুল্লাহ্ ইবন মাসলামা আল্ কা‘নবী ...... আবূ সালামা ইবন আবদুর রহমান (রহঃ) আয়েশা (রাঃ)-কে বলতে শুনেছেন, যদি আমার উপর (হায়েযের কারণে রামাযানের) কোন রোযার কাযা আবশ্যক হতো, তবে শা‘বানের মাস আগমনের পূর্বে আমি উহার কাযা আদায় করতে সক্ষম হতাম না।

 ১১ 

রোযার কাযা বাকি থাকা অবস্থায় মৃত্যুবরণ করলে 


সূনান আবু দাউদ (ইসলামিক ফাউন্ডেশন) 
হাদিস নং-২৩৯২

حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ صَالِحٍ، حَدَّثَنَا ابْنُ وَهْبٍ، أَخْبَرَنِي عَمْرُو بْنُ الْحَارِثِ، عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي جَعْفَرٍ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ جَعْفَرِ بْنِ الزُّبَيْرِ، عَنْ عُرْوَةَ، عَنْ عَائِشَةَ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏ "‏ مَنْ مَاتَ وَعَلَيْهِ صِيَامٌ صَامَ عَنْهُ وَلِيُّهُ ‏"‏ ‏.‏
 ২৩৯২  আহমাদ ইবন সালি্হ ..... আয়েশা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেনঃ যে ব্যক্তি তার উপর কাযা রোযা থাকা অবস্থায় মারা যায় তার উত্তরাধিকারীগণ তার পক্ষ হতে তা আদায় করবে।

 ১২ 
সূনান আবু দাউদ (ইসলামিক ফাউন্ডেশন) 
হাদিস নং-২৩৯৩

حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ كَثِيرٍ، أَخْبَرَنَا سُفْيَانُ، عَنْ أَبِي حَصِينٍ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ إِذَا مَرِضَ الرَّجُلُ فِي رَمَضَانَ ثُمَّ مَاتَ وَلَمْ يَصُمْ أُطْعِمَ عَنْهُ وَلَمْ يَكُنْ عَلَيْهِ قَضَاءٌ وَإِنْ كَانَ عَلَيْهِ نَذْرٌ قَضَى عَنْهُ وَلِيُّهُ ‏.‏

 ২৩৯৩  মুহাম্মদ ইবন কাসীর ..... ইবন আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, যদি কোন ব্যক্তি রামাযান মাসে রোগাক্রান্ত হয় এবং সে ঐ অসুখ হতে সুস্থ না হয়ে মৃত্যুবরণ করে তবে তার পক্ষ হতে (ফিদিয়া প্রদান করত) মিসকীনদের খাওয়াতে হবে তবে তার উপর এর কাযা থাকবে না। আর যদি মৃত ব্যক্তি কোন মানত করে থাকে, তবে তা তার উত্তরাধিকারীগণ তার পক্ষ হতে পূর্ণ করবে।

 ১৩ 

রামাযানের সিয়ামের কাযা পালন ক্ষেত্রে বিলম্ব করা 


সূনান তিরমিজী (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
হাদিস নং-৭৮১

باب مَا جَاءَ فِي تَأْخِيرِ قَضَاءِ رَمَضَانَ
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا أَبُو عَوَانَةَ، عَنْ إِسْمَاعِيلَ السُّدِّيِّ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ الْبَهِيِّ، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ مَا كُنْتُ أَقْضِي مَا يَكُونُ عَلَىَّ مِنْ رَمَضَانَ إِلاَّ فِي شَعْبَانَ حَتَّى تُوُفِّيَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏.‏ قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ ‏.‏ قَالَ وَقَدْ رَوَى يَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ الأَنْصَارِيُّ عَنْ أَبِي سَلَمَةَ عَنْ عَائِشَةَ نَحْوَ هَذَا ‏.‏

 ৭৮১  কুতায়বা (রহঃ) ..... আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, এমন কি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর ইন্তেকাল পর্যন্ত রামাযানের যে সব সিয়াম আমার কাযা হত সেগুলো শাবান ছাড়া আদায় করতে পারতাম না। - ইরওয়া ৯৪৪, রাওযুন নাযীর ৭৬৩, সহিহ আবু দাউদ ২০৭৬, তামামুল মিন্নাহ, বুখারি, মুসলিম, তিরমিজী হাদিস নম্বরঃ ৭৮৩ [আল মাদানী প্রকাশনী]

ইমাম আবূ ঈসা (রাঃ) বলেন, এই হাদিস হাসান-সহীহ্। ইয়াহইয়া ইবনু সাঈদ আনসারী (রহঃ) হাদিসটিকে আবূ সালামা-আয়িশা (রাঃ) সূত্রে অনুরূপ বর্ণনা করেছেন।

 ১৪ 

ঋতুবতী মহিলার কাযা সিয়াম


সূনান তিরমিজী (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
হাদিস নং-৭৮৫

باب مَا جَاءَ فِي قَضَاءِ الْحَائِضِ الصِّيَامَ دُونَ الصَّلاَةِ
حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ حُجْرٍ، أَخْبَرَنَا عَلِيُّ بْنُ مُسْهِرٍ، عَنْ عُبَيْدَةَ، عَنْ إِبْرَاهِيمَ، عَنِ الأَسْوَدِ، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ كُنَّا نَحِيضُ عَلَى عَهْدِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ثُمَّ نَطْهُرُ فَيَأْمُرُنَا بِقَضَاءِ الصِّيَامِ وَلاَ يَأْمُرُنَا بِقَضَاءِ الصَّلاَةِ ‏.‏ قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ ‏.‏ وَقَدْ رُوِيَ عَنْ مُعَاذَةَ عَنْ عَائِشَةَ أَيْضًا ‏.‏ وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا عِنْدَ أَهْلِ الْعِلْمِ لاَ نَعْلَمُ بَيْنَهُمُ اخْتِلاَفًا أَنَّ الْحَائِضَ تَقْضِي الصِّيَامَ وَلاَ تَقْضِي الصَّلاَةَ ‏.‏ قَالَ أَبُو عِيسَى وَعُبَيْدَةُ هُوَ ابْنُ مُعَتِّبٍ الضَّبِّيُّ الْكُوفِيُّ يُكْنَى أَبَا عَبْدِ الْكَرِيمِ ‏.‏

 ৭৮৫  আলী ইবনু হুজর (রহঃ) .... আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর যুগে আমরা হায়য এর পর যখন পবিত্র হতাম তখন তিনি আমাদের সিয়াম কাযা পালন করতে নির্দেশ দিতেন। সালাত (নামায/নামাজ) কাযা করতে বলতেন না। - ইবনু মাজাহ ৬৩১, মুসলিম, বুখারিতে নামাযের কথা উল্লেখ নেই, তিরমিজী হাদিস নম্বরঃ ৭৮৭ [আল মাদানী প্রকাশনী]

ইমাম আবূ ঈসা (রহঃ) বলেন, এই হাদিস হাসান। এটি মুআযা আয়িশা (রাঃ) সূত্রেও বর্ণিত আছে। আলিমগণ এই হাদিস অনুসারে আমল করেছেন। তাঁদের মাঝে এই বিষয়ে কোন মতিবিরোধ আছে বলে আমরা জানি না যে, হায়েয বিশিষ্ট মহিলা কাযা পালন করবে; সালাত (নামায/নামাজ) কাযা করবে না। ইমাম আবূ ঈসা (রহঃ) বলেন, রাবী উবায়দা হলেন, ইবনু মুআততির আয-যাববী আল- কুফী। তাঁর উপনাম হল আবূ আব্দুল করীম।

  ১৫ 

সিয়াম কাযা করা


মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
হাদিস নং- ২০৩০-(১)

بَابُ الْقَضَاءِ
عَنْ عَائِشَةَ قَالَتْ: كَانَ يَكُونُ عَلَيَّ الصَّوْمُ مِنْ رَمَضَانَ فَمَا أَسْتَطِيعُ أَنْ أَقْضِيَ إِلَّا فِي شَعْبَانَ. قَالَ يَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ: تَعْنِي الشّغل من النَّبِي أَو بِالنَّبِيِّ صلى الله عَلَيْهِ وَسلم

 ২০৩০-(১)  ‘আয়িশাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রমাযান (রমজান) মাসের সওমের কাযা আমি শুধু শা‘বান মাসেই করতে পারি। ইয়াহ্ইয়া ইবনু সা‘ঈদ বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর খিদমাতে ব্যস্ত থাকায় অথবা বলেছেন যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর খিদমাতের ব্যস্ততা ‘আয়িশাহকে (শা‘বান মাস ছাড়া অন্য কোন মাসে) কাযা সওম আদায়ের সুযোগ দিত না। (বুখারী, মুসলিম)[১]

[১] সহীহ : বুখারী ১৯৫০, মুসলিম ১১৪৬, আবূ দাঊদ ২৩৯৯, সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ৮২১০।

 ১৬ 
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
হাদিস নং- ২০৩১-(২)

وَعَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «لَا يَحِلُّ لِلْمَرْأَةِ أَنْ تَصُومَ وَزَوْجُهَا شَاهِدٌ إِلَّا بِإِذْنِهِ وَلَا تَأْذَنَ فِي بَيْتِهِ إِلَّا بِإِذْنِهِ» . رَوَاهُ مُسلم

 ২০৩১ -(২)  আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কোন নারীর উচিত নয় স্বামীর উপস্থিতিতে তার অনুমতি ছাড়া নফল সওম পালন করা। ঠিক তেমনই কোন নারীর জন্য স্বামীর অনুমতি ছাড়া কাউকে ঘরে প্রবেশ করার অনুমতি দেয়াও অনুচিত। (মুসলিম)[১]

[১] সহীহ : বুখারী ৫১৯৫, মুসলিম ১০২৬, সহীহ ইবনু হিব্বান ৪১৭০, ইরওয়া ২০০৪, সহীহ আত্ তারগীব ১৯৪২, সহীহ আল জামি‘ ৭৬৪৭।

 ১৭ 
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
হাদিস নং- ২০৩২-(৩)

بَابُ الْقَضَاءِ
وَعَنْ مُعَاذَةَ الْعَدَوِيَّةِ أَنَّهَا قَالَتْ لِعَائِشَةَ: مَا بَالُ الْحَائِضِ تَقْضِي الصَّوْمَ وَلَا تَقْضِي الصَّلَاةَ؟ قَالَتْ عَائِشَةُ: كَانَ يُصِيبُنَا ذَلِكَ فَنُؤْمَرُ بِقَضَاءِ الصَّوْمِ وَلَا نُؤْمَرُ بِقَضَاءِ الصَّلَاةِ. رَوَاهُ مُسْلِمٌ

 ২০৩২-(৩)  মু‘আযাহ্ আল ‘আদাবিয়্যাহ্ (রহঃ) (কুনিয়াত উম্মুস্ সুহবা) থেকে বর্ণিত। তিনি উম্মুল মু’মিনীনাহ্ ‘আয়িশাহ্ (রাঃ)-কে জিজ্ঞেস করলেন, ঋতুবতী মহিলাদের সওম কাযা করতে হয়, অথচ সালাত কাযা করতে হয় না, কারণ কী? ‘আয়িশাহ্ (রাঃ) বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর জীবদ্দশায় আমাদের যখন মাসিক হত, তখন সওম কাযা করার হুকুম দেয়া হত। কিন্তু সালাত কাযা করার হুকুম দেয়া হত না। (মুসলিম)[১]

[১] সহীহ : মুসলিম ৩৩৫, আবূ দাঊদ ২৬৩, মুসান্নাফ ‘আবদুর রাযযাক্ব ১২৭৭, সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ৮১১২, ইরওয়া ২০০।



****************************************
>>> Welcome, You are now on Mohammadia Foundation's Website. Please stay & Tune with us>>>


এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
1 জন কমেন্ট করেছেন ইতোমধ্যে
  • sTr_SHAAD
    sTr_SHAAD ১৭ মে, ২০২২ এ ২:৪০ AM

    রমজানের কাযা রোজা সম্পর্কে একটি মূল্যবান আর্টিকেল। ধন্যবাদ।

মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

মোহাম্মদীয়া ফাউন্ডেশনের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url