যে ছবিটি দেখে সবাই ভুল করে || ‘বঙ্গবন্ধু ও শেখ হাসিনা’ ভুল ক্যাপশনে ছবিটি ভাইরাল হয়েছে বহুবার ||





বাবা কমরেড তকীয়ূল্লাহ'র কোলে কবি-সাংবাদিক শান্তা মারিয়া, ১৯৭২ সাল



ছবিটি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নয়


ছবিটি অনেকেই জেনে কিংবা না জেনে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কোলে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উল্লেখ করে বহুবার ভুল তথ্য ভাইরাল করেছেন ! ভুল পরিচয়ে, ভুল ক্যাপশনে, ভুলভাবে বহুবার ভাইরাল হওয়া ছবিটি আসলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কোলে তাঁর কন্যা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নন।

ভুল তথ্য আমাদের কারও কাম্য নয়।

ছবিটির সঠিক পরিচয় এবং তথ্য আমি ২০২০ সালেই নিশ্চিত করেছি। অনুগ্রহ করে আর কেউ ভুল তথ্য ছড়াবেন না।

ছবিটির সঠিক তথ্য : বাবা কমরেড তকীয়ূল্লাহ'র কোলে কবি-সাংবাদিক শান্তা মারিয়া, ১৯৭২ সাল।

কমরেড তকীয়ূল্লাহ কে ছিলেন?

ভাষা আন্দোলনকে যারা সংগঠিত করেছেন এবং এই আন্দোলনের জন্য ত্যাগ স্বীকার করেছেন মুহম্মদ তকীয়ূল্লাহ তাদের অন্যতম। ১৯৪৮ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এম এ এবং এল এল বি পড়ার সময় তিনি এদেশের প্রগতিশীল রাজনৈতিক আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত হন। ১৯৪৮ সালে পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে কমিশন অফিসার হিসেবে নিয়োগের জন্য ইন্টার সার্ভিস সিলেকশন বোর্ড (আই এস এস বি)কর্তৃক তিনি বাঙালি হিসেবে প্রথম নির্বাচিত হয়েও ভাষা আন্দোলনের কর্মী হিসেবে জড়িয়ে পড়ায় সেনাবাহিনীতে যোগ দেননি।

১৯৪৯ সালে রাজনৈতিক কর্মতৎপরতার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিস্কৃত হন এবং তার নামে হুলিয়া বের হওয়ায় আন্ডার গ্রাউন্ডে চলে যান।১৯৫০ সালে পাকিস্তান সরকার তাকে গ্রেপ্তারের জন্য পাঁচ হাজার টাকা পুরস্কার ঘোষণা করে।

আমাদের ভাষা ও অন্যান্য গণতান্ত্রিক অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে প্রগতিশীল ছাত্র ও যুব সমাজকে সংগঠিত করার জন্য ১৯৫১ সালে যুবলীগ প্রতিষ্ঠায় তার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল। তিনি তখন কমিউনিস্ট পার্টির ঢাকা জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। ১৯৫৬-৫৮ সালে যুবলীগ কার্য নির্বাহী কমিটির অন্যতম সদস্য ছিলেন মুহম্মদ তকীয়ূল্লাহ। ১৯৫১-৫৫ সাল পর্যন্ত ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে রাজবন্দী ছিলেন। ১৯৬২ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি স্বৈরাচার বিরোধী গণ-আন্দোলনের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে আবার গ্রেপ্তার হন এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া, তাজউদ্দিন আহমেদ প্রমুখের সঙ্গে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে ২৬ নম্বর সেলে বন্দী ছিলেন। পরবর্তিতে সক্রিয় রাজনীতি থেকে সরে এসে বিভিন্ন ধরনের গবেষণায় আত্মনিয়োগ করেন।

ড.মুহম্মদ শহীদুল্লাহ সূচিত ও বাংলা একাডেমি প্রবর্তিত বাংলা বর্ষপঞ্জির ব্যাপক সংস্কার করেছেন মুহম্মদ তকীয়ূল্লাহ। বাংলাদেশ সরকার অনুমোদিত এই বর্ষপঞ্জি বর্তমানে বাংলাদেশে প্রচলিত আছে। তকীয়ূল্লাহ প্রস্তাবিত পদ্ধতিতেই ১৪০২ বঙ্গাব্দ থেকে বাংলা সনের বর্ষপঞ্জির দিন তারিখ গণনা করা হচ্ছে। তিনি চার হাজার বছরের বাংলা, ইংরেজি ও হিজরি ক্যালেন্ডারও তৈরি করেছেন। তিনি ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহর জীবনী লিখেছেন সেই সঙ্গে আমাদের জাতীয় মুক্তি আন্দোলনের বিকাশ সম্পর্কে লেখালেখি করেছেন। ড.মুহম্মদ শহীদুল্লাহর প্রকাশিত ও অপ্রকাশিত রচনার প্রথম তালিকাটি তাঁরই করা।১৯৪৮ সালের ভাষা আন্দোলনের যে চারটি মাত্র আলোকচিত্র পাওয়া যায় তা মুহম্মদ তকীয়ূল্লাহর তোলা।




**********************************
সাইটটি ভিজিট করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। আর্টিকেলটি ভাল লাগলে সত্য ও ন্যয়ের পথে অন্য ভাইনদেরকে দাওয়াতের নিয়তে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করুন। মোহাম্মদীয়া ফাউন্ডেশনের কার্যক্রম, লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য সম্পর্কে জানতে এবং দীন ও মানবতার সেবায় অংশ নিতে OUR ACTION PLAN বাটনে ক্লিক করুন।


এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

মোহাম্মদীয়া ফাউন্ডেশনের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url