পবিত্রতা অর্জন সম্পর্কে প্রশ্ন ও উত্তর - ২





পবিত্রতা অর্জনের নানান দিক

অমুসলিমদের ব্যবহৃত পাত্র ব্যবহার

অমুসলিম এমন অনেক খাদ্য ভক্ষন করে, যা ইসলামে হারাম। সুতরাং তাঁদের পাত্র ব্যবহার করা কি বৈধ?

অমুসলিমদের পাত্রে তাঁদের (দোকানে এ হোটেলে) খাওয়া বৈধ নয়। তবে তাঁদের পাত্র (দোকানে বা হোটেলে) ছাড়া যদি মুসলিমদের কোন পাত্র (দোকান বা হোটেলে) না পাওয়া যায়, তাহলে নিরুপায় অবস্থায় তাঁদের সেই পাত্র (ধোয়ার পর তাঁদের দোকান বা হোটেলে)খাওয়ার অনুমতি আছে। ১২৪ (বুখারী, মুসলিম ১৯৩০ নং প্রমুখ)
একদা এক সাহাবী রাসুলুল্লাহ(সঃ) কে জিজ্ঞাসা করলেন, “ আমরা আহলে কিতাবদের পাশাপাশি বাস করি। আর তাঁরা তাঁদের পাত্রে শূকর রান্না করে এবং মোদ পান করে।(এখন আমরা কি তাঁদের পাত্রে পানাহার করতে পারি?) উত্তরে আল্লাহ্‌র রাসুল (সঃ) বললেন, “ যদি তোমরা তা ছাড়া অন্য পাত্র পাও, তাহলে তাতেই পানাহার কর। আর যদি তা ছাড়া অন্য পাত্র না পাও, তাহলে তা ধুয়ে নাও এবং তাতে পানাহার কর।” ১২৪ (আবূ দাঊদ ৩৮৩৯ নং)

বাথরুমে প্রবেশের পূর্বে “বিসমিল্লাহ”

বাথরুমে প্রবেশ করার পূর্বে “বিসমিল্লাহ” কি সশব্দে পড়তে হবে?

হাদীসে এসেছে, প্রস্রাবাগার বা পায়খানা ঘরে বা স্থানে প্রবেশ হওয়ার পূর্বে “বিসমিল্লাহ” পড়লে আল্লাহ্‌র হুকুমে জ্বিনদের চোখে পর্দা পড়ে যায়। ১২৬(তিরমিযী ৬০৬, ইবনে মাজাহ ২৯৭ নং)কিন্তু সশব্দে বলার নির্দেশ নেই। সুতরাং নিঃশব্দেই বলা বিধেয়। ১২৭(আলবানী)

ক্বিবলামুখী হয়ে প্রস্রাব-পায়খানা

বাথরুমের ভিতরে ক্বিবলামুখী হয়ে প্রস্রাব-পায়খানা করা বৈধ?

সঠিক মতে বৈধ নয়। রুমের ভিতরে যদি ক্বিবলার দিকে থুথু ফেলা নিষিদ্ধ হয়, তাহলে ক্বিবলার দিকে মুখ বা পিঠ করে করে প্রস্রাব-পায়খানা অধিকরূপে নিষিদ্ধ হওয়ার কথা। ১২৮ (আলবানী)

শৌচকর্মে ঢিলা ও পানি

শৌচকর্মের সময় ঢিলা ও পানি উভয়ই ব্যবহার করা বিধেয়?

এ ব্যপারে কোন সহীহ দলীল নেই। সুতরাং পানির পূর্বে ঢিল ব্যবহার করাটা অতিরঞ্জনের পর্যায়ভুক্ত। যেহেতু মহানবী (সঃ) এর কর্ম হল, দুটির মধ্যে একটি ব্যবহার করা। আর তাঁর আদর্শই হল, সর্বশ্রেষ্ঠ আদর্শ। ১২৯ (আলবানী)

দাঁড়িয়ে প্রস্রাব

দাঁড়িয়ে প্রস্রাব করা কি বৈধ?

প্রস্রাবের ছিটা লাগার ভয় না থাকলে দাঁড়িয়ে প্রস্রাব করা বৈধ। এর বৈধতা ও অবৈধতার বিষয়ে উভয় প্রকার দলীল রয়েছে। ১৩০ (আলবানী)

 আবূ হুরাইরা (রঃ) বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ (সঃ) কে বলতে শুনেছি যে, “নিশ্চয় আমরা উম্মতকে কিয়ামতের দিন এমন অবস্থায় ডাকা হবে, যে সময় তাঁদের উযূর অঙ্গগুলো চমকাতে থাকবে। সুতরাং তোমাদের মধ্যে যে তাঁর চমক বাড়াতে চায়, সে যেন তা করে।” (অর্থাৎ সে যেন তাঁর উযূর সীমার অতিরিক্ত অংশও ধুয়ে ফেলে।) ১৩১(বুখারী, মুসলিম) উলামাগণ বলেছেন, “সুতরাং তোমাদের মধ্যে যে তাঁর চমক বাড়াতে চায়, সে যেন তা করে।”---এই বাক্যটি নবী (সঃ) এর নয়, বরং তা আবূ হুরাইরার। আর আবূ হুরাইরা নিজেও উযূতে হাত ধোয়ার সময় বগল পর্যন্ত ধুতেন। অতঃএব আমাদের কি তা করা বৈধ?
অনেকের মতে তা বৈধ। যেহেতু হাদীসের বক্তব্য থেকে আবূ হুরাইরা তাই বুঝেছিলেন এবং সাহাবাদের বুঝে আমাদের হাদীস বুঝা দরকার। কিন্তু সঠিক এই যে, তা কেবল আবূ হুরাইরা বুঝ। যেহেতু “গুরাহ” বলে চেহারার ঔজ্জ্বল্যকে। আর তা বৃদ্ধি করার উপায় নেই। সুতরাং কুরআনে নির্ধারিত সীমা পর্যন্ত (অর্থাৎ, কনুই ও গাঁট) পর্যন্ত ধোয়াই বিধেয়। ১৩২ (আলবানী)

যৌন উত্তেজনার সময় বের হওয়া তরল পদার্থ  কি নাপাক

যৌন উত্তেজনার সময় পানির মতো আঠালো যে তরল পদার্থ বের হয়, তা কি নাপাক?

একে “মাযী” বলে। আর তা নাপাক। তা বের হলে উযূ নষ্ট হয়ে যায়। শরমগাহ ধুতে হয় এবং কাপড়ে লাগলে পরিষ্কার করতে হবে। অবশ্য খুলে না ধুলেও চলে। কেবল এক লোটা পানি নিয়ে তাঁর উপর ছিটিয়ে দিলেই হয়। ১৩৩ (আবূ দাঊদ ২১০, তিরমিযী ১১৫, ইবনে মাজাহ ৫০৬নং)যেহেতু তা এমন তা এমন এক অপবিত্র পদার্থ, যা থেকে বাঁচা অনেক দুষ্কর। তাই তাঁর ব্যাপারে পবিত্রতার এই হালকা বিধান।

হায়েয নাকি ইস্তিহাযা

গর্ভাবস্থায় নিয়মিত খুন দেখা গেলে, তা হায়েয, নাকি ইস্তিহাযা?

সঠিক মতে তা হায়েয বা মাসিকের খুন। যদি মহিলার পূর্বেকার অভ্যাস অনুযায়ী তা এসে থাকে। যেহেতু কিতাব ও সুন্নাহতে এমন দলীল নেই, যাতে বুঝা যায় যে, গর্ভকালের খুন মাসিক নয়। ১৩৪ (ইবনে উষাইমীন)




****************************************
>>> Welcome, You are now on Mohammadia Foundation's Website. Please stay & Tune with us>>>

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

মোহাম্মদীয়া ফাউন্ডেশনের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url