রাহে আমল-১৩ || লেনদেন বা মোয়ামালাত || ইসলামে লেনদেনের বিধান || হারাম জীবিকার দোয়া কবুল হয় না ||

লেনদেন বা মোয়ামালাত


ইসলামে লেনদেনের স্বরূপ কিরূপ?

ইসলামে “লেনদেন” বা “মোয়ামালাত” এর স্বরূপ কিরূপ হবে? লেনেদেনে ইসলামের বাধ্যবতকা কিরূপ হবে তা পবিত্র কুরআন ও হাদিসে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে। “লেনদেন” বা “মোয়ামালাত” এর এই বিধান প্রতিটি মসলিম নরনারীর জন্য মেনে চলা অবশ্য কর্তব্য। আমরা এখানে “লেনদেন” বা “মোয়ামালাত” সম্পর্কে পবিত্র কুরআন ও হাদিসের আলোকে বিস্তারিত আলোচনা করবো।

ইসলামে লেনদেনের বিধান এর আলোচ্য বিষয়সমূহঃ

নিজের হাতে জীবিকা উপার্জনের ফযীলত

 قال رسول الله صلى الله عليه وسلم ماكل أحد
قاما ت خيرا ممن أن كل من عمل يديو. وأين نبي الله داود عليه الشم كان يأكل من عمل يدي. (بخاري)
রাসূলুল্লাহ (সা) বলেছেন নিজের হাতে উপার্জিত জীবিকার চেয়ে উত্তম জীবিকা কেউ কখনাে ভােগ করেনি আল্লাহর নবী হযরত দাউদ (আ) স্বহস্তে উপার্জিত সম্পদই ভােগ করতেন। (বোখারী) মুমিনদের ভিক্ষাবৃত্তি ও অপরের কাছে হাত পাতা থেকে বিরত রাখাই এ হাদীসের মূল উদ্দেশ্য। এতে শিক্ষা দেয়া হয়েছে যে, প্রত্যেকের নিজের জীবিকা নিজেই উপার্জন করা এবং কারাে ওপর বােঝা হয়ে জীবন অতিবাহিত না করাই উত্তম। 

হারাম জীবিকার দোয়া কবুল হয় না

قال رسول الله صلى الله لووتم إن الله طبيب يثب إلا طيبا، وإن الله أمر التموين بما ربه التي
تنتاك لايه الشل كلوا ممن الطبيبات واعملوا صالا، وقال تعالى لها البنين أمنوا كلوا من طيبات ما رزقناكم، ثم ذكر الرجل يطيل الشفراش أكتر يمد يديه إلى الماء يارب مم ة
جرام مشربه حرام به حرام مذي بالحرام فانی شتاب يذلك. (مسلم، أبو هريرة ره)
রাসূল (সা) বলেছেন : আল্লাহ তায়ালা পবিত্র। তিনি পবিত্র জিনিস ছাড়া অন্য কিছু কবুল করেন না। আর আল্লাহ তাঁর রাসূলদেরকে যে আদেশ দিয়েছেন মুমিনদেরকেও অবিকল সেই আদেশ দিয়েছেন। তাই তিনি বলেছেন “হে রাসূলগণ, তােমরা পবিত্র জীবিকা ভােগ কর ও সৎকাজ কর। আল্লাহ আরাে বলেছেন, হে মুমিনগণ তােমাদেরকে যে হালাল জীবিকা দিয়েছি তাই ভােগ কর। এরপর রাসূল (সা) এমন এক ব্যক্তির উল্লেখ করলেন, যে দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে পবিত্র স্থানে পৌঁছেছে। তার সমস্ত শরীর ধুলায় আচ্ছন্ন। সে দু’হাত আকাশে তুলে দোয়া করে অথচ তার খাদ্য হারাম পানীয় হারাম, পােশাক হারাম এবং হারাম জীবিকা দ্বারাই সে লালিত পালিত হয়েছে। এ ধরনের ব্যক্তির দোয়া কিভাবে কবুল হতে পারে।” (মুসলিম) 
এ হাদীসে প্রথম যে কথাটা বলা হয়েছে তা হলাে : আল্লাহ তায়ালা কেবল সেই ছদকাই কবুল করেন, যা পবিত্র ও বৈধ। আল্লাহ তায়ালার পথে হারাম সম্পদ ব্যয় করলে আল্লাহ তা গ্রহণ করেন না। দ্বিতীয় যে কথাটা বলা হয়েছে তা হলাে : যে ব্যক্তির উপার্জন হারাম ও অবৈধ তার দোয়া আল্লাহ কবুল করেন না।

হালাল হারামের বাছবিচার

قال رسول الله صلى الله عليه وسلم يأتي على
ما لا يبالي المرء ما أ نه من الممل أم الاس من الكرام. (بخاري، أبو هريرة رض)
রাসূলুল্লাহ (সা) বলেছেন মানব জাতি একদিন এমন এক সময়ের সম্মুখীন হবে, যখন কেউ হালাল হারামের বাছবিচার করবে না। 

হারাম সম্পদ জাহান্নামের পাথেয়

হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা) বলেন যে, রাসূল (সা) বলেছেন: কোন বান্দা যদি হারাম সম্পদ উপার্জন করে এবং তা থেকে আল্লাহর পথে ছদকা করে তবে সে ছদকা তার পক্ষ থেকে গ্রহণ করা হবে না। আর তা যদি নিজের ওপর ও নিজের পরিবার পরিজনের ওপর ব্যয় করে তবে তাতে বরকত থাকবে না। আর যদি সে হারাম সম্পদ রেখে মারা যায় তবে তা তার জাহান্নামের সফরে পাথেয় হবে। আল্লাহ তায়ালা অন্যায়কে অন্যায় দ্বারা প্রতিহত করেন না। অন্যায়কে ন্যায় দ্বারা প্রতিহত করেন। খারাপ কাজ খারাপ কাজকে প্রতিহত করে না। (মেশকাত) 
এ হাদীস থেকে জানা গেল যে, ভালো কাজ বৈধ উপায়ে করা হলেই তাকে ভালো কাজ বিবেচনা করা হবে। ভালাে কাজের উদ্দেশ্য ও পদ্ধতি উভয়ই পবিত্র হওয়া চাই। নচেৎ তা দ্বারা আখেরাতের কল্যাণ ও সাফল্য লাভ করা যায় না।

চিত্র শিল্পীর আযাব অবধারিত

عن سعيد بن أبي الحسني قال كن يرثد ابن
إلا عباس إث جاه جلال ابن عباس إتي ميني مث مثير ييري وإتي أشته هذه الصاوير قال ابن باس أمم إمایش ثول
و مث مو الى
اللي وشتم شور؛ فإن الله معنيبة ٹی ثق فثو الروح وليس

نافخ فيها أبدا. قرب الرجل ربوة شيدة وجهه قال ويك إن أبيت إلا أن تتمتع
به و. (بخاري). عليك بهذا الشجر وكل ش ك
হযরত সাঈদ বিন আবিল হাসান বলেন আমি (একদিন) ইবনে আব্বাসের নিকটে ছিলাম। সহসা এক ব্যক্তি তার কাছে এল। সে বললাে: হে ইবনে আব্বাস! আমি এমন এক ব্যক্তি, যে নিজ হাতেই নিজের জীবিকা উপার্জন করি। আমি এই সব চিত্র তৈরী করে থাকি। ইবনে আব্বাস বললেন: আমি তােমাকে শুধু সেই কথাই বলছি, যা রাসূল (সা)-এর কাছ থেকে শুনেছি। আমি তাকে বলতে শুনেছি যে, যে ব্যক্তি কোন ছবি নির্মাণ করবে, সে যতক্ষণ তাতে প্রাণ সঞ্চার না করবে ততক্ষণ আল্লাহ তায়ালা তাকে শাস্তি দেবেন। অথচ সে কখনাে প্রাণ সঞ্চার করতে পারবে না। এ কথা শুনে লােকটির মুখমণ্ডল বিবর্ণ হয়ে গেল এবং সে জোরে জোরে ওপরের দিকে শ্বাস নিতে লাগলাে। ইবনে আব্বাস বললেন, তুমি যদি চিত্র শিল্পের কাজ করতেই চাও তবে গাছ ও যাবতীয় নিষ্প্রাণ বস্তুর ছবি নির্মাণ কর। (বােখারী) 
এই চিত্রশিল্পী নিজের উপার্জন সম্পর্কে সন্দিহান ছিল। তাই সে হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাসের নিকট এসে প্রশ্ন করেছিল। এই প্রশ্ন করাটা তার ঈমানদারীর আলামত। তার মনে যদি আল্লাহ ভীতি না থাকতে এবং হালাল হারাম বাছবিচারের চেতনা না থাকতাে তা হলে আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাসের কাছে যেতই না। আখেরাতে ধরপাকড়ের ভয় যার থাকে না, সে হালাল হারামের বাছবিচার করে না।



****************************************
>>> Welcome, You are now on Mohammadia Foundation's Website. Please stay & Tune with us>>>


এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

মোহাম্মদীয়া ফাউন্ডেশনের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url