রাহে আমল-১৪ || ইসলামে ব্যবসাবাণিজ্যের বিধান || মাপ ও ওজনে সতর্কতা || মজুদদারী মহাপাপ ||





ইসলামে ব্যবসা-বাণিজ্য কিরূপ হতে হবে

ইসলাম একটি শাশ্বত, সার্বজনীন ও পূর্ণাঙ্গ জীনব ব্যবস্থা। সৃষ্টি জগতে এমন কোন দিক ও বিভাগ নেই, যেখানে ইসলাম নিখুঁত ও স্বচ্ছ দিক-নির্দেশনা প্রদান করেনি। মহান আল্লাহ বলেন, مَا فَرَّطْنَا فِي الْكِتَابِ مِنْ شَيْءٍ ‘আমরা এ কিতাবে কোন কিছুই অবর্ণিত রাখিনি’ (মায়েদাহ ৫/৩৮)।

হালাল উপার্জন ইবাদত কবুলের আবশ্যিক পূর্বশর্ত। আর হালাল উপার্জনের অন্যতম প্রধান মাধ্যম হ’ল বৈধ পন্থায় ব্যবসা-বাণিজ্য করা। হালাল ব্যবসা-বাণিজ্য জীবিকা নির্বাহের সর্বোত্তম মাধ্যম হওয়ায় রাসূলুল্লাহ (ছাঃ), খুলাফায়ে রাশেদীন, আশারায়ে মুবাশশারা সহ অধিকাংশ ছাহাবী ব্যবসা-বাণিজ্যের মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহ করতেন। পক্ষান্তরে কারূণ, হামান, আবু জাহল, উতবা-শায়বা, উবাই ইবনে খালফ প্রমুখ কাফের মুশরিকরা ধোঁকা, প্রতারণামূলক সূদভিত্তিক হারাম ব্যবসা-বাণিজ্যের মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহ করত। বস্ততঃ ইসলামে ব্যবসায়-বাণিজ্য কেমন হবে এ সম্পর্কে আমাদের সম্যক জ্ঞান থাকা অত্যন্ত জরুরী। পবিত্র কুরআন ও হাদিসে ইসলামে ব্যবসা-বাণিজ্য কিরূপ হবে সে বিষয়ে বিস্তারিত বলা আছে। 

‘ইসলামে ব্যবসা-বাণিজ্য কেমন হবে’ এ পর্বের আলোচ্য বিষয়সমূহঃ

হাতের কাজ থেকে উপার্জিত অর্থ সর্বাধিক পবিত্র

عن رافع بن خديج قال قيل يا رسول الله أي الكسب أط؛ تالم الرجل بيده و بيع

হযরত রাফে বিন খাদীজ (রা) বর্ণনা করেন যে, রাসূলুল্লাহ (সা)কে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল, কোন্ উপার্জন সর্বাধিক পবিত্র? রাসূল (সা) বললেন, মানুষের নিজ হাতের কাজ এবং যে ব্যবসায় মিথ্যাচার বেঈমানী থেকে মুক্ত। (মেশকাত) 

ক্রয় বিক্রয়ে উদার আচরণ

قال رسول الل صلى الله علي وستم رحم الله رجلا ثا إذا باع وإذا اشتروا وإذا اقتضى. بخاري، جابر رض)

রাসূলুল্লাহ (সা) বলেছেন, আল্লাহ সেই ব্যক্তির ওপর অনুগ্রহ ও রহমত বর্ষণ করুন, যে ক্রয়-বিক্রয়ে ও নিজের দেয়া ঋণ আদায়ে নমনীয় ও উদার আচরণ করে। (বােখারী, জাবের (রা) থেকে বর্ণিত)। 

সৎ ব্যবসায়ীর উচ্চ মর্যাদা

قال رسول الله صلى الله عليوم التاجر الشوق الأمني مع الين واليقين والشهداء . ترمذي، أبو سعید خدري) |

রাসূলুল্লাহ (সা) বলেছেন সত্যবাদিতা ও সততার সাথে লেনদেনকারী আমানতদার ব্যবসায়ী কেয়ামতের দিন নবীগণ, সিদ্দীকগণ ও শহীদগণের সাথে থাকবে। (তিরমিযী, আবু সাঈদ খুদরী (রা) থেকে বর্ণিত) রাহে আমল ৬১১২

ব্যবসায় দৃশ্যত একটা দুনিয়াদার সুলভ কাজ। কিন্তু এ কাজ যদি সততা ও সত্যবাদিতার সাথে করা হয়, তবে তা এবাদাতে পরিণত হয়। এই সদগুণাবলীর অধিকারী ব্যবসায়ী আল্লাহ তায়ালার পুণ্যবান বান্দা নবী, সিদ্দীক ও আল্লাহর পথে শাহাদাত বরণকারীদের সাহচর্য লাভ করবে। সিদ্দীক সেই মুমিনকে বলা হয় যার জীবন সততা ও সত্যবাদিতার মধ্য দিয়ে অতিবাহিত হয় এবং যে আল্লাহ তায়ালা ও রাসূলুল্লাহ (সা)-এর সাথে কৃত ওয়াদা ও অঙ্গীকার সমগ্র জীবন ব্যাপী পালন করে এবং যার জীবনে কথা ও কাজে অমিল ও বৈশাদৃশ্য পরিলক্ষিত হয় না।

সততা ব্যতীত ব্যবসায়ী পাপী গণ্য হবে

الاز ۹۹- قال رسول الله صلى الله عليو و يحشرون يوم القيامة تجارا إلا من ائئی
- وبتروصدق. (ترمذي، رفاعة رض)

রাসূলুল্লাহ (সা) বলেছেন, একমাত্র তাকওয়া ও সততা অবলম্বনকারী (অর্থাৎ আল্লাহর অবাধ্যতা পরিহারকারী ও মানুষের হক অর্থাৎ পাওনা পুরােপুরিভাবে প্রদানকারী) এবং সত্যবাদী ব্যতীত সফল ব্যবসায়ী। কেয়ামতের দিন পাপী ও বদকার হিসাবে উথিত হবে। (তিরমিযী) ।

বেশী কসম খেলে ব্যবসায়ের বরকত নষ্ট হয় 

ال رسول اللوى الله علي وتم إياكم وكثرة الكثير في البيع فإنه يثير ثم يم. (مسلم، أبو قتادة رض)

রাসূলুল্লাহ (সা) বলেছেন সাবধান, পণ্য বিক্রয়ে বেশী কসম খাওয়া থেকে বিরত থাক। এতে (সাময়িকভাবে) ব্যবসায়ে উন্নতি হয় বটে। তবে শেষ পর্যন্ত বরকত নষ্ট হয়ে যায়। (মুসলিম, আবু কাতাদা (রা) থেকে বর্ণিত) ব্যবসায়ী যদি ক্রেতাকে তার পণ্যের ব্যাপারে কসম খেয়ে খেয়ে বিশ্বাস করতে বাধ্য করে যে, পণ্যের এই মূল্যই সঠিক এবং পণ্যটি খুবই ভালাে, তা হলে সাময়িকভাবে ক্রেতা হয়তাে ধােকা খেয়ে যাবে। কিন্তু পরে যখন প্রকৃত ব্যাপার জানতে পারবে, তখন আর ঐ দোকানের ধারে কাছেও যাবে না। ফলে তার ব্যবসায়ে অচলাবস্থার সৃষ্টি হবে।

মিথ্যে শপথকারী ব্যবসায়ীর সাথে আল্লাহ কথা বলবেন না


قال رسول الله صلى الله عليه وسلم ثلاثة لايكلمهم الله يوم القيامة وينظر إليهم ويريهم ولهم عذاب أليم. قا بود؛ ابوا خسروا من هم
ت یارسول الله قال الشيل والمنان والتيق س بالكلي الكازب. (مسلم)
রাসূলুল্লাহ (সা) বলেছেন তিন ব্যক্তির সাথে আল্লাহ তায়ালা কেয়ামতের দিন কথা বলবেন না, তাদের দিকে তাকাবেন না এবং তাদেরকে পাক পবিত্র করে বেহেশতে প্রবেশ করাবেন না। উপরন্তু তাদেরকে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি দেবেন। আবু যর বললেন : হে রাসূলুল্লাহ এমন হতভাগা ব্যর্থকাম লােক কারা? তিনি বললেন : যে ব্যক্তি অহংকার ও দাম্ভিকতা বশত টাখনুর নীচে কাপড় পরিধান করে, যে ব্যক্তি কারাে উপকার করে খােটা দেয় এবং যে ব্যক্তি মিথ্যে কসম খেয়ে নিজের বাণিজ্যিক পণ্যের বিক্রি বৃদ্ধি করে। (মুসলিম, আবু যর গিফারী (রা) থেকে বর্ণিত) 
আল্লাহ তায়ালার কথা না বলা ও না তাকানাের অর্থ হলাে আল্লাহ তার ওপর রুষ্ট ও অসন্তুষ্ট হবেন এবং তার সাথে স্নেহ ও মমতার সাথে আচরণ করবেন না। একজন সাধারণ মানুষও যার ওপর অসন্তুষ্ট হয় তার দিকে তাকায় না এবং তার সাথে কথা বলে না। পরিধেয় পােশাককে টাখনুর নীচে ঝুলিয়ে রাখার বিরুদ্ধে উচ্চারিত এই হুমকি সেই ব্যক্তির ক্ষেত্রে প্রযােজ্য যে, অহংকার ও দাম্ভিকতার বশে এটা করে। যে ব্যক্তি টাখনুর নীচে পোশাক পরে বটে, তবে সে অহংকারী ও দাম্ভিক নয়, তার এ কাজও গুনাহ। কেননা রাসূল (সা) মুসলমানদেরকে টাখনুর নীচে পােশাক পরতে সর্বতােভাবে নিষেধ করেছেন। সুতরাং এ ব্যক্তিও গুনাহগার যদিও তার গুনাহ অহংকারীর তুলনায় কিছুটা হালকা। অবশ্য মুমিন কোন গুনাহকেই হালকা মনে করে না। একজন অনুগত গােলামের কাছে মনিবের সামান্যতম অসন্তোষও অত্যন্ত ভুয়ংকর মনে হয়।

ব্যবসায়ীদের দান-ছদকার মাধ্যমে ভুলত্রুটির কাফফারা দেয়া উচিত

عن تيس أبی قژتال کا نئی في عهد
تم رسول الله بنى الله عليه وتم الماس پاترول الوصلى الله علي وسلم فستانا باشم مو أحسن ث تقال یا مثشالیمار إن البيع حشرة الفو والحلف نشوبوه بالدقة
হযরত কায়েস বিন আবু গারযা (রা) বলেন : রাসূলুল্লাহ (সা)-এর আমলে আমাদেরকে সামাসিরা (দালাল বা ফড়িয়া) বলে আখ্যায়িত করা হতাে। রাসূলুল্লাহ (সা) একদিন আমাদের কাছে দিয়ে যাচ্ছিলেন। তখন তিনি আমাদেরকে আরাে ভালাে নামে আখ্যায়িত করলেন। তিনি বললেন : ওহে ব্যবসায়ীর দল, পণ্য বিক্রয়ের সময় অতিশয়ােক্তি করা ও মিথ্যা কসম খাওয়ার প্রবল সম্ভাবনা থাকে। সুতরাং তােমরা তোমাদের ব্যবসায়ে সদকার মিশ্রণ ঘটাও। (আবু দাউদ)
রাসূলুল্লাহ (সা)-এর এ উক্তির তাৎপর্য এই যে, ব্যবসায়ে অনেক সময় মানুষ নিজের অজান্তেই অনেক অর্থহীন কথাবার্তা বলে ফেলে, কখনাে বা মিথ্যে কসমও খেয়ে বসে। এ জন্য ব্যবসায়ীদের বিশেষভাবে আল্লাহর পথে দান সদকা করার নিয়ম চালু করা উচিত, যাতে তাদের ঐ সব ভুলত্রুটির কাফফারা হয়ে যায়। 

মাপ ও ওজনে সতর্কতা

قال رسول الل صلى الله عليو ومشاب الكيل والزاني إنكم قولیتم أمرين مكث فيها الأمم الشابة تبلكم. (ترمذي، ابن عباس رضي الله عنهما)
রাসূলুল্লাহ (সা) মাপ ও ওজনের মাধ্যমে ক্রয় বিক্রয়কারী ব্যবসায়ীদেরকে সম্বােধন করে বললেন, তােমরা এমন দুটো কাজের দায়িত্ব পেয়েছ, যার কারণে তােমাদের পূর্বে অতিবাহিত জাতিগুলাে ধ্বংস হয়ে গেছে। (তিরমিযী) 

মজুদদারী মহাপাপ

قال سول الله صلى الله عليه وسلم من احتكر هو خالی

রাসূলুল্লাহ (সা) বলেছেন ; যে ব্যক্তি মজুদদারী করে, সে পাপী। মূল আরবী শব্দ ইহতিকারের অর্থ হচ্ছে মজুদদারী।

অর্থাৎ জনগণের প্রয়ােজনীয় জিনিস আটকে রাখা, বাজারে না আনা, কবে অনেক দাম বাড়বে তার অপেক্ষা করা, দাম বেড়ে যাওয়া মাত্রই পণ্য বাজারজাত করা এবং প্রচুর পরিমাণে মুনাফা অর্জন করা। ব্যবসায়ীদের মধ্যে সচরাচর এই মানসিকতা দেখা যায়। তাই রাসূল (সা) এই মানসিকতা প্রতিহত করেছেন। কেননা এ মানসিকতা মানুষকে নির্দয় ও পাষাণ হৃদয়ে পরিণত করে। অথচ ইসলাম মানুষের সাথে সদয় আচরণ করার শিক্ষা দেয়। কিছু সংখ্যক আলেমের মত এই যে, যে মজুদদারীকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে, তা শুধু খাদ্য শস্যের ক্ষেত্রে প্রযােজ্য। ব্যবসায়ীরা খাদ্যশস্য ছাড়া অন্যান্য জিনিস আটকে রাখলে ও বাজারে আনলে তারা এই হুমকির আওতাভুক্ত হবে না। পক্ষান্তরে অন্যান্য আলেমদের মত হলাে, এটা শুধু খাদ্যশস্যের জন্য নির্দিষ্ট নয় বরং যে কোন প্রয়োজনীয় দ্রব্য অতিমাত্রায় মুনাফা অর্জনের উদ্দেশ্যে আটক রাখলে সে এই হুশিয়ারীর আওতাভুক্ত হবে। আমার মতে শেষােক্ত দলের মতটি অধিকতর যুক্তিগ্রাহ্য। তবে প্রকৃত ব্যাপার আল্লাহই ভালাে জানেন। 

মজুদদার অভিশপ্ত

قال رسول الله صلى الله عليو وسم الجالب مرزوق والحتكر ملعون
রাসূলুল্লাহ (সা) বলেছেন : যে ব্যক্তি প্রয়ােজনীয় দ্রব্যাদি যথা সময়ে বাজারে সরবরাহ করে সে আল্লাহর রহমত ও অধিকতর জীবিকা লাভের যােগ্য। আর যে ব্যক্তি মজুদদারীতে লিপ্ত, সে অভিশপ্ত। (ইবনে মাজা)

মজুদদার আল্লাহর নিকৃষ্ট বান্দা

من معاني قال سمعت رسول اللولي الله
لو لم يول بث العد التتكر إن أم الله الأسعار حزن وإن أغلاها فرح. (مشكوة)

হযরত মুয়ায থেকে বর্ণিত। রাসূল (সা) বলেছেন : মজুদদার হচ্ছে নিকৃষ্ট বান্দা। আল্লাহ যদি জিনিসপত্র সস্তা করে দেন তবে সে মনােকষ্টে। ভােগে। আর যদি দাম বাড়ে তবে সে খুশী হয়। (মেশকাত)

পণ্যের ত্রুটি ক্রেতাকে জানাতে হবে

قال رسول الل صلى الله علو وتم بحث
و يكم أحد أن يبيع شين إبن مایو و ذلك إلا بينه. (منتقى، واثلة رضا
রাসূলুল্লাহ (সা) বলেছেন : কোন জিনিসের ভেতরে যে ত্রুটি রয়েছে তা জানিয়ে দেয়া ব্যতীত বিক্রি করা বৈধ নয়। আর যে ব্যক্তি উক্ত দোষত্রুটির কথা জানে তার পক্ষে তা খােলাখুলিভাবে বর্ণনা না করে নীরবতা অবলম্বন করা বৈধ নয়। (মুনতাকা, ওয়াসেলা (রা) থেকে বর্ণিত) 

এ হাদীসে প্রথমে বিক্রেতাকে আদেশ দেয়া হয়েছে যে, সে যেন তার পণ্য বিক্রির সময় পণ্যের দোষ ক্রেতাকে জানিয়ে দেয়। অতঃপর বিক্রেতার নিকটে যদি এমন কেউ থাকে যে, ঐ পণ্যের দোষত্রুটির কথা জানে, তবে সেই ব্যক্তিকে আদেশ দেয়া হয়েছে যে, সে যেন ক্রেতাকে দোষত্রুটির কথা জানিয়ে দেয়। (বিক্রেতা যদি দোষ গােপন করে তবে ক্রেতাকে ক্ষতি থেকে বাঁচানাের জন্য এটি সর্বশেষ ব্যবস্থা। - অনুবাদক) 

একবার রাসূল (সা) জনৈক বিক্রেতার কাছ দিয়ে যাচ্ছিলেন সে খাদ্য শস্য বিক্রি করছিল। তিনি ঐ খাদ্য শস্যের ভেতরে হাত ঢুকিয়ে দিলেন। ভেতরের অংশটা ভিজে ছিল। তিনি জিজ্ঞেস করলেন, এ কি? সে বললাে, ইয়া রাসূলুল্লাহ, বৃষ্টিতে ভিজে গেছে। তিনি বললেন : তাহলে এটিকে ওপরে রাখনি কেন? তারপর তিনি বলেন, যে ব্যক্তি আমাদেরকে (সমাজকে) ধােকা দেয়, সে আমাদের দলভুক্ত নয়।




****************************************
>>> Welcome, You are now on Mohammadia Foundation's Website. Please stay & Tune with us>>>

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

মোহাম্মদীয়া ফাউন্ডেশনের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url