রাহে আমল-৭ || নামাযের গুরুত্ব || নামায দ্বারা গুনাহ মোচন হয় || লোক দেখানো এবাদত শিরকের শামিল ||





নামাযের গুরুত্ব

নামায দ্বারা গুনাহ মোচন হয়

 قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَرَأَيْتُمْ لَوْ أَنَّ نَهْرًا بِبَابِ أَحَدِكُمْ يَغْتَسِلُ فِيْهِ كُلَّ يَوْمٍ خَمْسًا هَلْ يَبْقَى مِنْ دَرَنِهِ شَيْ؟ قَالُوا لَا يَبْقَى مِنْ دَرَنِهِ شَيْ قَالَ فَذَلِكَ مَثَلُ الصَّلَوَاتِ الْخَمْسِ يَمْحُو اللَّهُ بِهِنَّ
الْخَطَايَا. (بخاري، مسلم، أبو هريرة رض)

রাসূলুল্লাহ (সা) বলেছেন তোমাদের কারো বাড়ীর সামনে যদি একটা নদী থাকে এবং তাতে সে প্রতিদিন পাঁচবার গোসল করে, তাহলে বলতো, তার শরীরে কি কিছুমাত্র ময়লা থাকতে পারে ? সাহাবায়ে কেরাম বললেন, “না, তার দেহে এক বিন্দুও ময়লা থাকতে পারে না। রাসূল (সা) বললেন, পাঁচ ওয়াক্ত নামাযের ব্যাপারটাও তদ্রূপ। আল্লাহ তায়ালা এই পাঁচ ওয়াক্ত নামায দ্বারা গুনাহগুলো মোচন করেন। (বোখারী, মুসলিম)

এ হাদীস দ্বারা নবী (সা) এ সত্য স্পষ্ট করে দিলেন যে, নামায মানুষের গুনাহ মাফ হবার মাধ্যম ও উপলক্ষ হয়ে থাকে। এ বিষয়টাকে তিনি একটা সহজ বোধ্য উদাহরণ দ্বারা বুঝিয়ে দিয়েছেন। নামায দ্বারা মানুষের মনে কৃতজ্ঞতার এমন অবস্থা ও ভাবধারার সৃষ্টি হয় যে, তার ফলে সে আল্লাহর আনুগত্যের পথে ক্রমাগতভাবে ও অব্যাহতভাবে অগ্রসর হতে থাকে এবং নাফরমানী থেকে তার মনমগঞ্জ দূরে সরে যায়। এমনকি তার দ্বারা যদি কখনো কোন ভুলত্রুটি হয়েও থাকে, তবে তা সে জেনে বুঝে করে না। ভুলত্রুটি সংঘটিত হওয়ার সাথে সাথেই সে আপন প্রতিপালকের সামনে লুটিয়ে পড়ে ও কেঁদে কেঁদে ক্ষমা চায়।


(الف) عَنِ ابْنِ مَسْعُودٍ (رض) قَالَ إِنَّ رَجُلًا أَصَابَ مِنِ امْرَأَةٍ قَبْلَةٌ فَأَتَى النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَاخَبَرَهُ فَأَنْزَلَ الله تَعَالَى وَأَقِمِ الصَّلوةِ طَرفَي النَّهَارِ وَالفَا مِنَ اللَّيْلِ إِنَّ الْحَسَنَاتِ يُذْهِبْنَ السَّيِّاتِ ، فَقَالَ
الرجل الي هذا ؟ قال لجميع أمني كلهم (بخاري، مسلم)

(ক) হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেছেন, এক ব্যক্তি জনৈকা অচেনা মহিলাকে চুমু খেল। অতঃপর সে রাসূল (সা)-এর কাছে উপস্থিত হলো এবং তাকে তার কৃত এই গুনাহর সংবাদ জানালো। তৎক্ষণাৎ এ আয়াত নাযিল হলো এবং রাসূল (সা), তা পড়ে শোনালেন ।

إنَّ الحَسَنَاتِ يُذْهِبْنَ السَّيِّئَاتِ .

অর্থাৎ দিনের দুই প্রাপ্ত ভাগে নামায পড় এবং রাতেরও কোন কোন অংশে । নিশ্চয়ই সৎকাজ মন্দ কাজকে মোচন করে। এ কথা শুনে লোকটা বললো : এটা কি শুধু আমার জন্য নির্দিষ্ট? তিনি বললেন : না, আমার উম্মাতের সকলের জন্য। (বোখারী, মুসলিম)

এ হাদীস দ্বারা উপরোক্ত হাদীসের অধিকতর ব্যাখ্যা পাওয়া যায়, যাতে বলা হয়েছে যে, নদীর পানির দ্বারা গোসল করলে যেমন শরীরের ময়লা ধুয়ে যায় । তেমনি নামায দ্বারা পাপ মোচন হয়। এ হাদীসটিতে যে ব্যক্তির উল্লেখ করা হয়েছে, সে একজন ঈমানদার লোক ছিল। সে সেচ্ছায় সচেতনভাবে ও জেনে বুঝে পাপ কাজ করতো না। কিন্তু মানবীয় দুর্বলতাবশত পথিমধ্যে আবেগের তাড়নায় সংযম হারিয়ে জনৈকা অচেনা মহিলাকে চুমু খেয়ে বসলো। এতে সে এত পেরেশান ও অনুতপ্ত হয় যে, সে রাসূল (সা)-এর কাছে এসে বলে যে, আমি একটা শান্তিযোগ্য অপরাধ করেছি। আমাকে শাস্তি দেয়া হোক। রাসূল (সা) সূরা হুদের শেষ রুকুর উপরোক্ত আয়াতটি তাকে শোনালেন, যাতে আল্লাহ মুমিনদেরকে দিনের ও রাতের বিভিন্ন সময়ে নামায পড়ার আদেশ দিয়েছেন। তারপর আয়াতে বলা হয়েছে ভা! "সৎকাজগুলো মন্দ কাজগুলোকে বিনষ্ট করে দেয় এবং মন্দ কাজগুলোর কাফ্ফারায় পরিণত হয় । এতে লোকটি আশ্বস্ত হলো ও তার অস্থিরতা দূরীভূত হলো। এ দ্বারা অনুমিত হয় যে, রাসূল (সা) স্বীয় সাহাবীগণকে কত উঁচুমানের প্রশিক্ষণ দিতেন।

নামায দ্বারা গুনাহ মোচনের শর্ত

(ب) قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ خَمْسٌ صَلَوَاتِ افْتَرَضَهُنَّ الله تَعَالَى، مَنْ أَحْسَنَ وَضُوءَ هُنَّ وَصَلَاهُنَّ لِوَقْتِهِنَّ وَأَتَمَّ رُكُوعَهُنَّ وَخُشُوعَهُنَّ كَانَ لَهُ عَلَى اللهِ عَهْدٌ أَنْ يَغْفِرَ لَهُ وَمَنْ لَّمْ يَفْعَلْ فَلَيْسَ لَهُ عَلَى اللهِ عَهْدٌ إِنْ شَاءَ غَفَرَلَهُ وَإِنْ شَاءَ عَذَّبَةٌ (أبوداؤد
عبادة بن الصامت رض)

(খ) রাসূলুল্লাহ (সা) বলেছেন: আল্লাহ তায়ালা তার বান্দাদের ওপর পাঁচ ওয়াক্ত নামায ফরয করেছেন। যে ব্যক্তি উত্তমরূপে ও যথাযথভাবে ওযু করে নির্ধারিত সময়ের ভেতরে নামায আদায় করে। রুকু ও সিজদা সঠিকভাবে করে এবং নামাযের মধ্যে আল্লাহর দিকে মন ঝুকিয়ে রাখে। আল্লাহ তায়ালা তার সমস্ত গুনাহ মাফ করে দেয়ার দায়িত্ব গ্রহণ করেন। যে ব্যক্তি এরূপ করে না তার জন্য আল্লাহ তায়ালা এ দায়িত্ব গ্রহণ করেন না। ইচ্ছা করলে তাকে ক্ষমা করে দেবেন, ইচ্ছা করলে তাকে শাস্তি দিবেন।

عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرِو بْنِ الْعَاصِ عَنِ النَّبِيِّ (صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ) أَنَّهُ ذَكَرَ الصَّلوةَ يَوْمًا - فَقَالَ منْ حَافَظَ عَلَيْهَا كَانَتْ لَهُ نُورًا وَبُرْهَانَا وَ نَجَاةً يوم لَمْ تَكُنْ لَهُ نُورًا الْقِيَامَةِ وَمَنْ لَّمْ يُحَافِظُ عَلَيْهَا وَلَا بُرْهَانَّا ونجاة


আবদুল্লাহ ইবনে আমর ইবনুল আস (রা) বর্ণনা করেন যে, একদিন রাসুল (সা) নামাযের আলোচনা প্রসংগে বললেন, যে ব্যক্তি সঠিকভাবে নিজের নামাযের তত্ত্বাবধান করবে, তার জন্য কেয়ামতের দিন নামায আলো ও দলীল প্রমাণে পরিণত হবে এবং যুক্তির কারণ হবে। আর যে ব্যক্তি নিজের নামাযগুলোর তত্ত্বাবধান করবে না, তার নামায তার জন্য আলোও হবে না। দলীল প্রমাণও হবে না এবং মুক্তির কারণ হবে না ।

এ হাদীসে 'মোহাফাযাত' শব্দটা ব্যবহৃত হয়েছে, যার অর্থ তদারকী, তত্ত্বাবধান, লক্ষ্য রাখা ও দেখাশুনা করা। এর মর্মার্থ এই যে, একজন নামাযীর সর্বক্ষণ লক্ষ্য রাখা কর্তব্য যে, সে সঠিকভাবে ওযু করেছে কিনা, নামাযের নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নামায পড়ছে কিনা, রুকু সিজদা যথাযথ করছে কিনা এবং সর্বোপরি নামাযের মধ্যে তার মনের অবস্থা কেমন ছিল। মন কি আল্লাহর দিকে ছিল, না দুনিয়াবী কাজ কারবার ও চিন্তাভাবনার মধ্যে নিমজ্জিত ও ঘূর্ণায়মান ছিল। বলার অপেক্ষা রাখে না যে, যে ব্যক্তি এভাবে নিবিড় তদারকীর মধ্য দিয়ে নামায পড়েছে এবং তার মন নামাযে সর্বক্ষণ আল্লাহর দিকে নিবিষ্ট থেকেছে, সে জীবনের অন্যান্য কাজ কর্মেও আল্লাহর অনুগত বান্দা হবার চেষ্টা করবে এবং এরই ফলে আখেরাতে সফল হবে।

মুনাফিকের নামায

قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ تِلْكَ صَلوةٌ الْمُنَافِقِ يَجْلِسُ يَرْقَبُ الشَّمْسَ حَتَّى إِذَا أَصْفَرَّتْ وَكَانَتْ بَيْنَ قَرْنَيِ الشَّيْطَانِ قَامَ فَنَقَرَ أَرْبَعًا لَا يَذْكُرُ الله

রাসূলুল্লাহ (সা) বলেছেন: মোনাফেকের নামায এরকম হয়ে থাকে যে, সে বসে বসে সূর্যের গতিবিধি দেখতে থাকে। অবশেষে যখন সূর্য হলুদ বর্ণ ধারণ করে এবং মোশরেকদের সূর্যপূজার সময় সমাগত হয়। তখন সে ধড়মড় করে ওঠে এবং পড়িমরি করে চার রাকায়াতের বারটা ঠোকর মারে। (ঠিক যেমন মুরগী মাটিতে চঞ্চু দিয়ে ঠোকর মারে এবং তৎক্ষণাত চঞ্চ তুলে আনে) নামাযে আল্লাহকে মোটেই স্মরণ করে না। (মুসলিম)

এ হাদীস দ্বারা মোমেন ও মোনাফেকের নামাযের পার্থক্য বিশ্লেষণ করা হয়েছে। মোমেন সময়মত নামায পড়ে, রুকু সিজদা ঠিকমত করে এবং তার মন আল্লাহর প্রতি নিবিষ্ট থাকে। পক্ষান্তরে মোনাফেক যথাসময়ে নামায পড়ে না। রুকু সিজদা যথাযথভাবে করে না এবং তার মন আল্লাহর প্রতি নিবিষ্ট থাকে না । সাধারণভাবে সব নামাযই গুরুত্বপূর্ণ। তবে ফজর ও আসরের গুরুত্ব একটু বেশী। আসরের সময়টা অবহেলা ও উদাসিনতার সময়। মানুষ কায়কারবারে ব্যস্ত থাকে। রাত হওয়ার আগে কেনা বেচা শেষ করে নিতে এবং ছড়িয়ে থাকা কাজগুলোকে গুটিয়ে আনতে চায়। এ জন্য মুমিনের মন সতর্ক ও সচেতন না হলে আসরের নামায বিপন্ন তথা কাযা হওয়ার ঝুঁকির সম্মুখীন হতে পারে। ফজরের নামাযের গুরুত্বের কারণ এই যে, ওটা ঘুমের সময়। রাতের শেষ ভাগের ঘুম কত গভীর হয় ও কত মিষ্টি লাগে তা সবাই জানে। মানুষের অন্তরে যদি জীবন্ত ঈমান না থাকে, তাহলে অমন মজার ও প্রিয় ঘুম ছেড়ে সে আল্লাহর স্মরণের জন্য উঠতে পারে না।

ফজর ও আসরের নামাযের জামায়াতে ফেরেশতাদের অংশগ্রহণ

 قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَتَعَاقَبُونَ م مَلَائِكَة بالليلِ وَمَلَائِكَة بِالنَّهارِ وَيَجْتَمِعُونَ فِي صَلوةِ الْفَجْرِ وَصَلوةِ الْعَصْرِ، ثُمَّ يَعْرُجُ الَّذِين باتوا فِيكُمْ فَيَسْأَلَهُمْ رَبَّهُمْ وَهُوَ أَعْلَمُ بِهِمْ كَيْفَ تَرَكْتُمُ عِبَادِي؟ فَيَقُولُونَ تَرَكْنَاهُمْ وَهُمْ يُصَلُّونَ وَأَتَيْنَاهُمْ وَهُمْ يُصَلُّونَ (بخاري. مسلم، أبو هريرة رض)

রাসূলুল্লাহ (সা) বলেছেন: রাত ও দিনের যে সব ফেরেশতা পৃথিবীর ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব পালনে নিয়োজিত থাকে, তারা নিজেদের দায়িত্বের পালা বদলের জন্য ফজর ও আসরের নামাযে একত্রিত হয়। যে সকল ফেরেশতা তোমাদের মধ্যে কর্মরত ছিল, তারা যখন আপন প্রতিপালকের নিকট চলে যায়, তখন তিনি তাদেরকে জিজ্ঞেস করেন, তোমরা আমার বান্দাকে কি অবস্থায় রেখে এসেছ? তারা বলে : যখন আমরা তাদের কাছে পৌঁছেছিলাম, তখনও তাদেরকে নামাযরত অবস্থায় পেয়েছিলাম। আর যখন তাদের কাছ থেকে বিদায় নিয়েছি তখনও তাদেরকে নামাযরত অবস্থায় দেখে এসেছি। (বোখারী, মুসলিম)
এ হাদীস ফজর ও আসরের গুরুত্ব খুব ভালোভাবে বিশ্লেষণ করে। ফজরের নামাযে রাতের ফেরশতারাও যোগদান করে। আর যে ফেরেশতারা দিনের বেলায় দায়িত্ব পালন করবে, তারাও যোগদান করে। অনুরূপভাবে আসরের নামাযেও বিদায়ী ও নবাগত উভয় শ্রেণীর ফেরেশতারা যোগদান করে। মুমিনের জন্য এর চেয়ে বড় সৌভাগ্যের ব্যাপার আর কি হতে পারে যে, তারা ফেরেশতাদের সাথে নামায আদায় করার সুযোগ পায় ।

নামাযের হেফাযত ছাড়া দ্বীনের হেফাযত অসম্ভব

الخَطَّابِ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ أَنَّهُ كَتَبَ إِلَى عن عمربن عُمَّالِهِ أَنَّ أَهَمَّ أُمُورِكُمْ عِنْدِي الصَّلوةَ، فَمَنْ حَفِظَهَا وَحَافَظَ عَلَيْهَا حَفِظَ دِيْنَةٌ وَمَنْ ضَيْعَهَا فَهُوَلِمَا

হযরত ওমর ইবনুল খাত্তাব (রা) তার সকল প্রাদেশিক গভর্নরদেরকে লিখেছিলেন যে, তোমাদের যাবতীয় কাজের মধ্যে আমার কাছে সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ কাজ হচ্ছে নামায। যে ব্যক্তি নিজের নামাযের রক্ষণাবেক্ষণ করবে এবং তার ওপর দৃষ্টি রাখবে, সে তার গোটা দ্বীনের রক্ষণাবেক্ষণ করতে পারবে। আর যে ব্যক্তি নামাযের রক্ষণাবেক্ষণ করতে ব্যর্থ হবে। সে নামায ছাড়া অন্যান্য দ্বীনি কাজের রক্ষণাবেক্ষণে আরো বেশী ব্যর্থ হবে । (মেশকাত)

কেয়ামতের দিন আল্লাহর ছায়ায় আশ্রয় পাবে যারা

قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ سَبْعَة تَظِلُّهُمُ اللَّهُ فِي ظِلِهِ يَوْمَ لَا ظِلَّ إِلَّا ظِلَّهُ، إِمَامٌ عَادِلٌ
وَشَابٌ نَشَأَ فِي عِبَادَةِ اللهِ، وَرَجُلٌ قَلْبَهُ مُعَلَّقٌ بِالْمَسْجِدِ إِذَا خَرَجَ مِنْهُ حَتَّى يَعُودَ إِلَيْهِ وَرَجُلَانِ تَحَانَّا فِي اللَّهِ إِجْتَمَعَا عَلَيْهِ وَتَفَرَّقَا عَلَيْهِ وَرَجُلٌ ذَكَرَ اللهَ خَالِيًّا فَفَاضَتْ عَيْنَاهُ، وَرَجُلٌ دَعَتْهُ امْرَأَةٌ ذَاتُ حَسَبٍ وَجَمَالٍ فَقَالَ إِنِّي أَخَافُ اللَّهَ وَرَجُلٌ تَصَدَّقَ بِصَدَقَةٍ فَأَخْفَاهَا حَتَّى لَا تَعْلَمَ شِمَالُهُ مَا تُنْفِقُ يَمِينَهُ.
(متفق عليه، أبو هريرة رض)

রাসূলুল্লাহ (সা) বলেছেন যেদিন আল্লাহর ছায়া ছাড়া আর কোন ছায়া থাকবে না, সেদিন আল্লাহ তায়ালা সাত ধরনের মানুষকে নিজের ছায়ার নীচে স্থান দেবেন। (১) ন্যায় বিচারক নেতা ও শাসক। (২) যে যুবকের যৌবনকাল আল্লাহর এবাদত ও হুকুম পালনে অতিবাহিত হয়। (৩) যে ব্যক্তির মন মসজিদের সাথে ঝুলন্ত থাকে। একবার মসজিদ থেকে বের হলে আবার মসজিদে প্রবেশ করার সময়ের অপেক্ষায় থাকে। (৪) যে দুই ব্যক্তি একমাত্র আল্লাহ ও আল্লাহর দ্বীনের ভিত্তিতে বন্ধুত্ব করে, এই প্রেরণা নিয়েই একত্রিত হয় এবং এই প্রেরণা নিয়েই পরস্পর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়। (৫) যে ব্যক্তি নির্জনে আল্লাহকে স্মরণ করে এবং অশ্রু বিসর্জন করে। (৬) যে ব্যক্তিকে কোন সম্ভ্রান্ত পরিবারের পরমা সুন্দরী মহিলা ব্যভিচারের আহ্বান জানায় এবং সে শুধু আল্লাহর ভয়ে সেই আহ্বানকে প্রত্যাখ্যান করে। (৭) যে ব্যক্তি এত গোপনে দান করে যে, তার বাম হাতও জানেনা ডান হাত কি দান করছে। (বোখারী ও মুসলিম)

লোক দেখানো এবাদত শিরকের শামিল

 عَنْ شَدَّادِ بْنِ أَوْسٍ قَالَ سَمِعْتُ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ مَنْ صَلَّى يَرَاوِي فَقَدْ أَشْرَكَ وَمَنْ
صَامَ يُرَادِي فَقَدْ أَشْرَكَ وَمَنْ تَصَدَّقَ يُرَادِي فَقَدْ أَشْرَكَ .

হযরত শাদ্দাদ বিন আওস (রা) বলেন : আমি রাসূলুল্লাহ (সা)কে বলতে শুনেছি, যে ব্যক্তি লোক দেখানোর উদ্দেশ্যে নামায পড়ে সে শিরকে লিপ্ত হয়। যে ব্যক্তি লোক দেখানোর উদ্দেশ্যে রোযা রাখে সে শিরক করে এবং যে ব্যক্তি লোক দেখানোর উদ্দেশ্যে দান করে সে শিরক করে। (মুসনাদ আহমাদ)

এ উক্তি দ্বারা রাসূল (সা) বলতে চান, যে কোন সৎকাজই করা হোক, তা একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যেই করা উচিত। নিয়ত শুধু এই হবে যে, এটা আমার প্রতিপালকের নির্দেশ। আমি শুধু তার সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যেই এ নির্দেশ পালন করছি। অন্যদের চোখে পুণ্যবান বলে খ্যাত হওয়া এবং অন্যদেরকে সন্তুষ্ট করার উদ্দেশ্যে যে সৎকাজ করা হবে তার কোন মূল্য নেই। মূল্য আছে শুধু সেই কাজের, আল্লাহকে সন্তুষ্ট করার উদ্দেশ্যে করা হবে।





*******************************************
Thank you for visiting the site. If you like the article, share it on social media to invite other Vines to the path of truth and justice. Click on OUR ACTION PLAN button to know about activities, goals and objectives of Mohammadia Foundation and to participate in the service of religion and humanity. 

Almost all articles on this website are written in Bengali. But you can also read it in your language if you want. Click the “ভাষা বেছে নিন” button at the bottom of the website to read in your own language.



Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url