হযরত আবু বকরের মায়ের ইসলাম গ্রহণ






হযরত আবু বকরের মায়ের ইসলাম গ্রহণ

রাসুলুল্লাহ (সাঃ) -এর সাহাবীদের জন্যে ঘরে থাকা মুশকিল হয়ে গেল। দুনিয়া তাদের জন্যে সংকীর্ণ হয়ে গেল। তাঁরা মাত্র তিরাশি জন লোক ছিলেন। তাদের মূলে ছিলেন হযরত আবু বকর । যিনি সর্বদা সত্য বাণী প্রচারের চিন্তায় মগ্ন থাকতেন। তিনি রাসূল -এর নিকটবর্তী হয়ে প্রকাশ্যে দাওয়াত দেওয়ার জন্যে বায়তুল্লাহর চত্বরে যেতে বার বার অনুরোধ করতে লাগলেন। রাসূল (সাঃ) বললেনঃ আবু বকর আমরা তো সংখ্যায় খুবই কম।

কিন্তু হযরত আবু বকর (রাঃ)-এর বার বার অনুরোধ করার কারণে রাসূল (সাঃ) প্রকাশ্যে দাওয়াত দেওয়ার জন্যে বের হলেন। মুসলমানগণ প্রকাশ্যে কা'বা শরীফের পাশে ঘুরাফেরা করতে লাগলেন। প্রত্যেকে তাদের আত্মীয়-স্বজনদের নিকটে গেল। হযরত আবু বকর (রাঃ) মানুষের সামনে দাঁড়িয়ে বক্তৃতা দেওয়া শুরু করলেন। আর রাসূল (সাঃ) তাঁর পাশেই বসা ছিলেন। হযরত আবু বকরকে বক্তৃতা দিতে দেখে মুশরিকদের মাথায় আগুন ধরে গেল। তারা রাসূল ও হযরত আবু বকরসহ সকল মুসলমানের ওপর হামলা করে বসে। তারা মুসলমানদেরকে আঘাতে আঘাতে মারাত্মক জখম করে দিল এবং তাদের হাত, পা দিয়ে আঘাত করে রাগের পূর্ণ বহিঃপ্রকাশ করল। এমনকি মুসলমানদের অনেকে মৃত্যুর দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গেল। এদের মধ্যে হযরত আবু বকর (রাঃ) মারাত্মকভাবে আহত হন।

       

বনু তাইম গোত্রের লোকেরা হযরত আবু বকর (রাঃ) -কে একটি কাপড় জড়িয়ে বাড়িতে নিয়ে গেল । তাঁর মৃত্যুর ব্যাপারে তাদের কোনো সন্দেহ ছিল না । এতে বনু তাইমের লোকেরা ক্ষিপ্ত হয়ে কা'বার প্রাঙ্গণে ছুটে এসে বলল, যদি আবু বকর মারা যায় আমরা অবশ্যই উতবা বিন রাবীআকে হত্যা করব ।

এরপর তারা হযরত আবু বকর -এর সাথে কথা বলতে চেষ্টা করল, কিন্তু হযরত আবু বকরের জ্ঞান তখনো ফিরেনি। তাঁর থেকে তারা কোনো সাড়া পেল না। দিনের শেষে তাঁর মুখ খোলে। এ করুণ অবস্থায় তাঁর প্রথম কথা ছিল- রাসূল (সাঃ) -এর কি অবস্থা?

তাঁর মুখে রাসূল (সাঃ) -এর কথা শুনে বনূ তাইম গোত্রের লোকেরা খুবই রাগান্বিত হলো।

তারা তাঁর মাকে এ বলে চলে যেতে লাগল........, দেখ তাকে কি কিছু খাওয়াবে না শুধু পান করাবে.....।
এরপর তারা আবু বকর (রাঃ) -এর এ কাজে আশ্চর্য হয়ে কপালে হাত রেখে ফিরে যেতে লাগল ।

       

কিন্তু হযরত আবু বকর (রাঃ) এ কথাই বার বার জিজ্ঞেস করতে লাগলেন । তখন তাঁর মা উম্মে জামিল বিনতে খাত্তাবের কাছে রাসূল (সাঃ) -এর খবর জানতে গেলেন।

পরে উম্মে জামিল এসে তাঁকে বললেন, তিনি ভালোই আছেন। এ কথা শুনে হযরত আবু বকর (রাঃ) -এর ঠোঁটে হাসি ফুটে উঠল এবং তাঁর চেহারা আনন্দে উজ্জ্বল হয়ে উঠল।

এরপর তিনি চিৎকার করে বললেনঃ কোথায় তিনি?
তাঁর মা বললেনঃ তিনি দারে ইবনে আবুল আরকামে আছেন।

এতে তাঁর চোখেমুখে খুশির ছাপ ফুটে উঠল। তিনি বলতে লাগলেনঃ আল্লাহর শপথ! রাসূল (সাঃ) -এর কাছে না যাওয়া পর্যন্ত আমি কোনো প্রকার খাদ্য-পানীয় গ্রহণ করব না ।

হযরত আবু বকর (রাঃ) রাসূল (সাঃ) -এর কাছে যাওয়ার জন্যে মাটিতে পা রাখলেন, কিন্তু প্রচণ্ড ব্যথার কারণে হাঁটতে পারছিলেন না। তাই তিনি তাঁর মায়ের ও উম্মে জামিলের কাঁধে ভর দিয়ে রাসূল (সাঃ) -এর কাছে গেলেন।

রাসূল (সাঃ) তাঁকে দেখে অধোমুখী হয়ে চুমু খেলেন। রাসূল (সাঃ) -এর সাথে থাকা অন্যান্য মুসলমানগণও তেমনি করলেন। তিনি তাঁর প্রতি খুবই সহানুভূতি প্রকাশ করলেন ।

           

তখন হযরত আবু বকর (রাঃ) বললেন, আমার পিতামাতা আপনার জন্যে কোরবান হোক! আমার কোনো সমস্যা হয়নি; বরং ফাসেকরা আমাকে মেরে নিজেরাই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে........। এ হচ্ছেন সন্তান দরদি আমার মা আর আপনি হচ্ছেন বরকতময় ৷ সুতরাং আপনি তাঁকে আল্লাহর দিকে আহ্বান করুন এবং তাঁর জন্যে আল্লাহর কাছে দোয়া করুন। হতে পারে আল্লাহ তাআ'লা আপনার দ্বারা তাঁকে জাহান্নাম থেকে বাঁচিয়ে দিবেন ।
রাসূল (সাঃ) আবু বকর (রাঃ) -এর মায়ের জন্যে দোয়া করলেন। রাসূল (সাঃ)-এর দোয়া আল্লাহ কবুল করেছেন এবং তাঁকে হেদায়েত দান করেছেন। তিনি ইসলাম গ্রহণ করেছেন।






**************************************
Thank you for visiting the site. If you like the article, share it on social media to invite other Vines to the path of truth and justice. Click on OUR ACTION PLAN button to know about activities, goals and objectives of Mohammadia Foundation and to participate in the service of religion and humanity. 
Almost all articles on this website are written in Bengali. But you can also read it in your language if you want. Click the “ভাষা বেছে নিন” button at the bottom of the website to read in your own language.




এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

মোহাম্মদীয়া ফাউন্ডেশনের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url