আয়েশা (রাঃ) জান্নাতেও রাসুলুল্লাহ (সাঃ) -এর স্ত্রী হবেন






আয়েশা (রাঃ) -এর নাম ও বংশ পরিচয়

আয়েশা (রাঃ) -এর পুরো নাম হচ্ছে, আয়েশা বিনতে আবু বকর ইবনে আবু কুহাফা (প্রকৃত নাম উসমান) ইবনে আমের ইবনে আমর ইবনে ওহাব ইবনে সা'দ ইবনে তাইম ইবনে মুররাহ ইবনে কাব ইবনে লুয়াই । তার বংশের নাম ছিল বনী তাইম, যা কুরাইশ বংশেরই একটি শাখা। আর তার মায়ের নাম ছিল, উম্মে রুমান বিনতে আমের ইবনে উমায়ের ইবনে আবদে শামস ইবনে আবদে মানাফ ইবনে আযিল্লাহ ইবনে সুবাই' ইবনে হুহামান ইবনে হারেস ইবনে আবদ ইবনে মালেক ইবনে কিনান। আবার কেউ বলেন, উম্মে রুমানের অপর নাম হলো, যায়নাব।

কাসেম ইবনে মুহাম্মদ বলেন, উম্মে রুমান ছিলেন আবু বকর (রাঃ) -এর স্ত্রী এবং আয়েশা -এর মাতা। যখন তাকে কবরে নামানো হয় তখন রাসূল (সাঃ) বলেন, যে ব্যক্তি জান্নাতী কোনো হুরকে দেখে খুশী হতে চায়, সে যেন উম্মে রুমানকে দেখে নেয় । আয়েশা (রাঃ) জন্মগ্রহণ করেন রাসূল (সাঃ) -এর নবুওয়াত লাভের ৪ অথবা ৫ বছর পর ।

আয়েশা (রাঃ) -এর কুনিয়াত

ইবনে হিব্বান বর্ণনা করেন । আয়েশা (রাঃ) বলেন, যখন আবদুল্লাহ ইবনে যুবাইর জন্মগ্রহন করল তখন আমি তাকে নিয়ে রাসূল সা এর কাছে আসলাম । অতঃপর তিনি তাকে খেজুর চিবিয়ে তার রস মুখে দিলেন। অর্থাৎ তাহনীক করলেন । আর এটা ছিল তার প্রথম খাবার, যা তার পেটে প্রবেশ করে। অতঃপর তিনি বলেন, এ হচ্ছে আব্দুল্লাহ। আর তুমি হলে উম্মে আবদুল্লাহ বা আবদুল্লাহর মা । এরপর হতে আয়েশা (রাঃ) -এর কুনিয়াত হিসেবে উম্মে আব্দুল্লাহ হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন । যদিও তার কোনো সন্তান ছিল না।
       
আবু বকর ইবনে আবু খাইছামা আয়েশা (রাঃ) হতে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, আমি রাসূল (সাঃ) -কে বললাম, হে আল্লাহর রাসূল। আমার সকল সাথিদের কুনিয়াত রয়েছে। সুতরাং আমার কি কোনো কুনিয়াত নেই? তখন তিনি বললেন, তোমার কুনিয়াত হচ্ছে তোমার ছেলে আবদুল্লাহ ইবনে যুবাইরের নামে । এরপর হতে মৃত্যু পর্যন্ত তার কুনিয়াত হয়ে যায়, উম্মে আব্দুল্লাহ।

কেউ কেউ বলেন, তার গর্ভ হতে আব্দুল্লাহ নামে রাসূল (সাঃ) -এর একজন সন্তান জন্ম গ্রহণ করেছিল, যে শৈশবেই মৃত্যুবরণ করেন। ফলে তাকে উম্মে আব্দুল্লাহ বলে ডাকা হতো। তবে এ বক্তব্য সঠিক নয়, যা অসংখ্য দলিলের ভিত্তিতে প্রমাণিত । তাছাড়া এ কথাটি আয়েশা (রাঃ) -এর প্রথম বক্তব্যটির দ্বারাই বাতিল বলে গণ্য হয়।

আয়েশা (রাঃ) -এর অন্য আরেকটি নাম

       
ইমাম তিরমিযী (রহ.) তার শামায়েল গ্রন্থে ইবনে আব্বাস হতে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, রাসূল (সাঃ) বলেন, আমার উম্মতের মধ্যে যার দুটি শিশু সন্তান মারা যাবে, আল্লাহ তাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন। তখন আয়েশা (রাঃ) বলেন, যদি আপনার উম্মতের মধ্যে কারো একটি সন্তান মারা যায়? তখন রাসূল (সাঃ) বলেন, হে মাওফিকা! একটি সন্তান মারা গেলেও আল্লাহ তাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন । অতঃপর আয়েশা (রাঃ) আবার জিজ্ঞেস করলেন, আর যদি কারো কোনো সন্তান মারা গিয়ে না থাকে? তখন রাসূল (সাঃ) -এর বললেন, নিশ্চয় আমি হলাম আমার উম্মতের মধ্যে একজন “ফারত" । আমার মতো আর হতে পারবে না ।
বিঃ দ্রঃ এখানে g; (ফারত) বলতে যার একটি শিশু সন্তান মৃত্যুবরণ করেছে। সুতরাং (ফারতান) বলতে যার দুটি সন্তান মৃত্যুবরণ করেছে তাকে বুঝানো হয়েছে ।

আয়েশা (রাঃ) -এর ফযীলত

ইবনে হিব্বান আয়েশা (রাঃ) হতে বর্ণনা করেন। একদা নবী ফাতেমা (রাঃ) সম্পর্কে আলোচনা করছিলেন । তখন আমি মাঝখানে কথা বলে ফেললাম । তখন রাসূল (সাঃ) আমাকে বললেনঃ তুমি দুনিয়াতে ও আখেরাতে আমার স্ত্রী হিসেবে থেকেও সন্তুষ্ট হবে না? ইবনে শাইবা মুসলিম ইবনে বুতাইন হতে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, রাসূল (সাঃ) বলেছেন, আয়েশা জান্নাতেও আমার স্ত্রী ।
       
ইমাম তিরমিযী একটি সহীহ সনদে আব্দুল্লাহ ইবনে যিয়াদ আল আসাদী হতে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, আমি আম্মার (রাঃ) হতে শুনেছি যে, তিনি বলেন,  তিনি (আয়েশা) হচ্ছেন দুনিয়া ও আখিরাতে রাসূল (সাঃ) -এর স্ত্রী।

ইবনে হিব্বান আয়েশা হতে আরো বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, আমি বললামঃ হে আল্লাহর রাসূল! জান্নাতে আপনার স্ত্রী হিসেবে কে থাকবে? তিনি বললেনঃ তুমি কি তাদের মধ্যে নও? আয়েশা (রাঃ) বলেন, অতঃপর আমার খেয়াল হলো যে, রাসূল (সাঃ) তো আমাকে ছাড়া কুমারী অবস্থায় আর কাউকে বিবাহ করেননি ।
আবুল হাসান আল খাইলী আয়েশা (রাঃ) হতে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, রাসূল (সাঃ) আমাকে বললেন, হে আয়েশা! নিশ্চয়ই তুমি মরণ পর্যন্ত অপেক্ষা করবে। কেননা, আমি তোমাকে জান্নাতেও আমার স্ত্রী হিসেবে দেখতে পাব ।






*************************************
Thank you for visiting the site. If you like the article, share it on social media to invite other Vines to the path of truth and justice. Click on OUR ACTION PLAN button to know about activities, goals and objectives of Mohammadia Foundation and to participate in the service of religion and humanity.
Almost all articles on this website are written in Bengali. But you can also read it in your language if you want. Click the “ভাষা বেছে নিন” button at the bottom of the website to read in your own language.



এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

মোহাম্মদীয়া ফাউন্ডেশনের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url