কাদিয়ানী ফিতনা বিষয়ে মুসলিম উম্মাহর অবস্থান এক ও অভিন্ন (পর্ব - ৫)
%20-%E0%A6%8F%E0%A6%B0%20%E0%A6%9A%E0%A6%BE%E0%A6%87%E0%A6%A4%E0%A7%87%20%E0%A6%85%E0%A6%A7%E0%A6%BF%E0%A6%95%20%E0%A6%AE%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%BE%E0%A6%A6%E0%A6%BE%E0%A6%B0%20%E0%A6%85%E0%A6%A7%E0%A6%BF%E0%A6%95%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A7%80%20%E0%A6%B9%E0%A6%A4%E0%A7%87%20%E0%A6%AA%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A7%87.jpg)
যে কোন লোক নবী করীম (সাঃ)-এর চাইতে অধিক মর্যাদার অধিকারী হতে পারে
আহমদীদের ভ্রান্ত আক্বীদা এ পর্যন্তই সীমিত নয়। বরং তারা বিভ্রান্তিতে আরো অগ্রসর হয়ে গেছে। তারা বিশ্বাস করে শুধু মির্জা গোলাম আহমদ নয়, বরং প্রত্যেক ব্যক্তি তার আত্মিক স্তরে উন্নতি করতে করতে হযরত মুহাম্মদ (সঃ) হতে আগে বেড়ে যেতে পারে। এ মর্মে কাদিয়ানীদের দ্বিতীয় খলীফা গোলাম আহমদ তনয় মির্জা বশীরুদ্দীন মাহমুদ লিখেছে-
“এটা সম্পূর্ণ সত্য কথা যে, প্রত্যেক লোকই উন্নতি করতে পারে এবং বড় হতে বড় স্তরে উপনীত হতে পারে। এমনকি নবী করীম (সাঃ) হতেও এগিয়ে যেতে পারে"। (আল ফজল কানিয়ান, ১০ম খণ্ড. এম স ১৭ জুলাই, ১৯২২, ৯ পৃষ্ঠা, শিরোনাম খলীফায়ে মসীহ কি ডায়রী)
কাদিয়ানীরা মাঝে মাঝে সরল প্রাণ মুসলমানদের সহানুভূতি লাভ করার জন্যে বলে থাকে যে, তারা নবী করীম (সঃ)-কে 'খাতামুন নাবীঈন' মানে কিন্তু তাদের এ কথা কতটুকু সত্য, তা উপরের আলোচনা থেকেই সুস্পষ্টভাবে ফুটে উঠেছে। কাদিয়ানীরা তাহলে খাতামুন নাবীঈন বলে কি বুঝায়? তার উত্তর পাওয়া যায় মির্জা গোলাম আহমদের বক্তব্যে। সে লিখেছে-
আল্লাহ তাআলা নবী করীম (সঃ)-কে খাতামের অধিকারী বানিয়েছেন। অর্থাৎ তাঁকে পূর্ণ ফয়েজের মোহর প্রদান করেছেন যা আর কোন নবীকে কখনো দেয়া হয়নি। তাই তাঁকে খাতামুন নাবীঈন বলা হয়। অর্থাৎ, তাঁর অনুসরণে নববী কামালাত হাসিল হয়ে থাকে। সেই সাথে তাঁর তাওয়াজ্জুহ রুহানীভাবে নবী সৃষ্টি করে। এই পবিত্র শক্তি আর কোন নবীকে দেয়া হয়নি। হাকীকাল অরা ৯৭ পৃষ্ঠার টীকা) এই হলো জিল্লী ও বুরুযী খাতামুন নাবীঈন-এর নতুন নবুওয়তের অসুদ আকীদার পাশাপাশি ব্যাখ্যা। নবী করীম (সাঃ)-কে পূর্ণ ফয়েজের মোহর প্রদান করা হয়েছে এর দ্বারা তিনি অন্যকে নবী বানাতে পারেন। আর সে নবী তাঁর সমমানের বরং তার চাইতেও শ্রেষ্ঠ ও উত্তম গুণাবলীর ধারক হয়। খাতামুন নবীয়ান শব্দটি কুরআনে- হাদীসে আরবী ভাষায় যে অর্থ প্রকাশ করে তার ধারে কাছেও না গিয়ে এমনি অদ্ভুদ এক অপব্যাখ্যা প্রদান করার কাজটি নির্বিবাদে করে গেছে মির্জা গোলাম আহমদ। মির্জা গোলাম আহমদের ব্যাখ্যা অনুযায়ী নবী করীম (সাঃ) তার তাওয়াজ্জুহ দ্বারা নবী বানাতে পারেন। তাহলে অনেক লোকই নবী হতে পারতো কিন্তু তা শুধু এক জনই লাভ করতে পারলো, আর সে হল মির্জা গোলাম আহমদ। তার এ অপব্যাখ্যা শুনে কেউ এ কথাও বলতে পারে, তাহলে আল্লাহ তাআলার একক মানু হওয়ার অর্থ হবে বিশ্বজগতে তিনিই একমাত্র উপাস্য-সত্তা যার পবিত্র শক্তি খোদাসৃষ্টি করে। তাই খোদার ক্ষমতা প্রয়োগে তার সমমানের বা তার চাইতেও শ্রেষ্ঠ খোদা সৃষ্টি হয়। যদি কুরআন-হাদীসের মূল বক্তব্য ও আরবী ভাষার সাথে এই ধরনের বিদ্রুপাত্মক আচরণ করার পরও কোন লোক ইসলামের গভীতেই বহাল থাকে তাহলে বলতে হবে বিশ্বব্রহ্মান্ডে কোন লোকই অনুসলমান নেই ।
মির্জা গোলাম আহমদ আরো লিখেছে এই প্রচুর পরিমান ওহী ও গায়েবী বিষয় জানার নেয়ামত এ উম্মতের মাঝে একমাত্র আমাকেই প্রদান করা হয়েছে। আমার পূর্বে যত অলী-আওলিয়া, গাউছ কুতুব এসেছেন তাদের কাউকে এই পরিমান নেয়ামত দেয়া হয় নাই। তাই নবী নাম পাওয়ার উপযুক্ত একমাত্র আমিই আর কেউ নয়। -(হাকীকাতুল তরী, ৩৯১ পৃষ্ঠা)
এ আলোচনা করার সময় হয়তো মির্জা গোলাম আহমদের এ কথাটাও খেয়াল হয়নি যে, নাবীঈন বহু বচনের শব্দ। তাই, তার ব্যাখ্যামাফিক নবী বানানো হলে অন্ততপক্ষে তিনকে নবী বানাতে হবে। কেননা, আরবী ভাষায় বহুবচনে কমপক্ষে তিন জনকে বুঝায়।
কাদিয়ানীদের অমুসলিম হওয়া সাধারণ জ্ঞান-বুদ্ধির দাবী
মির্জা গোলাম আহমদ কাদিয়ানীর নবী দাবী করা পিছনের আলোচনায় স্পষ্ট ধরা পড়েছে। সেই সাথে কুরআন, হাদীস, ইজমা এবং ইসলামের ইতিহাসের আলোকে এ কথাও প্রমাণিত হয়েছে যে, যে কোন লোক নবী করীম (সঃ)-এর অন্তর্ধানের পর নবী দাবী করে সে এবং তার অনুসারীরা কাফের এবং ইসলামের গন্ডী বহির্ভূত।
এটা শুধু ইসলামী শরীয়তের কথা নয়, সাধারণ জ্ঞান-বুদ্ধির কথাও। বিশ্বের ধর্মীয় ইতিহাসে জ্ঞানী মাত্রই জানেন যে, যখনই কোন লোক কোন ধর্মের প্রচার করতে নেমেছেন, তখন উপস্থিত লোকসমাজ দুটি পরস্পর বিরোধী দলে বিভক্ত হয়ে গেছে। একদল তাকে ধর্মীয় নেতা মেনে নেয়, অপর দল তাকে প্রত্যাখ্যান করে। এটি সকল ধর্মপ্রচারকের বেলায় যেমন ঘটেছে, তেমনি সকল নবীর বেলায়ও ঘটেছে। একদল নবীকে সত্যবাদী বলে বিশ্বাস করে তাঁর আনীত ধর্ম-শরীয়তকে মেনে নেয়। অপর দল তাকে মিথ্যাবাদী বলে উপহাস করে, তাঁর সকল কথা ও কাজকে প্রত্যাখ্যান করে, এমন কি মু'জেযাও তারা মানতে রাজী থাকেনা।
আমরা সবাই জানি, এমন পরিস্থিতিতে পরস্পর বিপরীত দুটি দলকে এক নামে পরিচয় দেওয়া হয় না, উভয়কে সত্যপন্থীও বলা হয় না। অবশ্যই এক দলকে সত্যপন্থী ও অপর দলকে বাতিলপন্থী বলে আখ্যায়িত করা হয় এবং এ উভয় দলের পৃথক পৃথক পরিচিতি থাকে। নমুনা হিসেবে আমরা কিছু ঘটনার উল্লেখ করতে পারি।
হযরত ঈসা(আঃ) নবী হিসাবে বনী ইসরাঈলের মাঝে কাজ শুরু করার পূর্ব পর্যন্ত তারা এক দলের অন্তর্ভূক্ত ছিল। কিন্তু তিনি আসার পর তাদের মাঝে পরস্পর বিরোধী দুটি দলের উদ্ভব হয়। একদলকে ঈসায়ী বলা হয় যারা তাকে নবী হিসাবে মেনে নিয়েছে, অপর দল ইহুদী যারা তাঁকে প্রত্যাখ্যান করে। এ দুটো দলের কেউ অপর দলকে নিজ দলভূক্ত ভাবেনি। তেমনিভাবে নবী করীম (সঃ) যখন দাওয়াতের কাজ শুরু করেন, তখন একদল তাঁকে নবী হিসাবে মেনে নেন, তাদের বলা হয় মুসলমান। অপর যে দলটি তাঁকে মানতে রাজী হয়নি তাদের কখনো মুসলমান বলা হয়নি, ইহুদী, খৃষ্টান বা মুশরিক নামে তাদের পরিচয় ছিল। নবী করীম (সঃ)-এর সময় ও পরে নবী দাবী করে বেশ কয়েকজন। অন্যধ্যে অধিকতর প্রভাবশালী ছিল মুসায়লামা। মুসলমানগণ তাকে এবং তার অনুসারীদের ইসলামের গন্ডী থেকে বহিস্কৃত জেনে তাদের বিরুদ্ধে জিহাদে নামেন, তেমনি তারাও নিজেদের বিপরীত দল হিসাবে সাহাবাদের সাথে যুদ্ধ করতে নামে। তখন কোন দলের লোকই উভয় দলকে সত্যপন্থী এবং মুসলমান মনে করেনি। এমনিভাবে যখনই কোন দুরাচার নিজেকে নবী বলে দাবী করেছে, তখনই তাকে মুসলিম সমাজ ধর্মচ্যুত হিসাবে কাফের বলে আখ্যায়িত করেছে। এভাবেই আমাদের আলোচিত নীচাশয় মির্জা গোলাম আহমদ কাদিয়ানী এবং তার অনুসারীদের বেলায়ও ঐ একই কথা প্রযোজ্য ও কার্যকর হবে।
একদল গোলাম আহমদ কাদিয়ানীকে নবী বলে মেনে নিয়েছে আর একদল মানেনি, বরং তাকে মিথ্যুক ও ধোঁকাবাজ বলে প্রত্যাখ্যান করেছে। এ অবস্থায় এ উভয় দলকে যেমন হকপন্থী বলা ঠিক হবে না, তেমনি উভয় দলকে মুসলমান এবং উভয়ের ধর্মকে ইসলাম বলাও সঠিক নয়। এ কথা তাদের লাহোরী দলের নেতার বক্তব্যেও সুস্পষ্ট। লাহোরী দলের নেতা মুহাম্মদ আলী লাহোরী বলে “ইসলামের সাথে আহমদী মতবাদের ঠিক সেই সম্পর্ক, ইহুদী ধর্মমতের সাথে খৃষ্টধর্মের যে সম্পর্ক।" আর একথা তো সুস্পষ্ট যে, ইহুদী ধর্মমত ও খৃষ্টধর্মকে কেউ এক বলবেনা। অতএব, আমরা কুরআন হাদীসের উদ্ধৃতি
ব্যতিরেকে কেবল স্বাভাবিক জ্ঞান-বুদ্ধি নিয়েই এ ফয়সালা করতে পারি যে, আহমদী মতবাদের সাথে ইসলামের বৈপরীত্যে ভিন্ন অন্য কোন সম্পর্ক নেই। এ অবস্থায় তারা নিজেদের মুসলমান দাবী করা স্বাভাবিক জ্ঞান-বুদ্ধির বিপরীত নয় কি?
কাদিয়ানীরা নিজেদেরকে ভিন্ন ও স্বতন্ত্র এক আলাদা মিল্লাত বলেই বিশ্বাস করে
কাদিয়ানীদের এ অবস্থান তারা নিজেরাই মেনে নিয়েছে যে, বিশ্বের একশত কোটির বেশী মুসলমান থেকে তারা ভিন্নও স্বতন্ত্র- এবং তাদের ধর্ম এক নয় বরং তারা অসংখ্য লেখা ও বিবৃতি ভাষণে এ কথা প্রকাশ্যভাবে ঘোষণা করেছে যে, যারা গোলাম আহমদ কাদিয়ানীকে নবী বলে স্বীকার করেনা তারা ইসলামের গন্ডী বহির্ভূত কাফের। তারা এবং কাদিয়ানীরা কখনও এক জাতি নয়।
নিচে তাদের ধর্মীয় বই পুস্তক থেকে এ সম্পর্কিত সুস্পষ্ট বর্ণনা উপস্থাপন করা হলো
মির্জা গোলাম আহমদ কাদিয়ানীর বক্তব্য
মির্জা গোলাম আহমদ কাদিয়ানী তার 'খুতবায়ে ইলহামিয়া' নামক গ্রন্থে (যে বই সম্পর্কে তার দাবী, “বইটির সকল শব্দ ও বাক্য ওহী ও ইলহাম হিসাবে এসেছে)", লিখেছে- “আমাদের নবী শ্রেষ্ঠ রাসূল হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) -এর রুহানিয়্যাত তাঁর প্রকাশের পূর্ণতার জন্য এবং তাঁর নূরের বিজয়ী হওয়ার উদ্দেশ্যে নিজ উম্মত থেকে একজনকে প্রকাশস্থল বা প্রকাশকারী হিসাবে গ্রহণ করেছে। তার এই মর্মে খোদা তা'আলা সুস্পষ্ট বর্ণনাকারী কিতাব' (অর্থাৎ কুরআন পাকে) ওয়াদা ব্যক্ত করেছেন। আমিই সেই ওয়াদাকৃত প্রকাশস্থল এবং সেই প্রতিশ্রুত নূর। তাই ঈমান আনো, কাফেরদের অন্তর্ভূক্ত হয়ো না। আর ইচ্ছা হলে খোদা তাআ’লার এই বাণী পড়ে নাও। ( অনুবাদযুক্ত, ১৬৭ ও ২৮ এবং "হাকীকাতুল ওহী" নামক গ্রন্থে লিখেছে- “কাফের শব্দটি মুমিনের বিপরীতে ব্যবহৃত হয়। কুফরী দুই প্রকার -
(১) প্রথম প্রকার কুফর হলো, কোন লেক ইসলাম ধর্মকেই অস্বীকার করে এবং হয়রত মুহাম্মদ (সঃ)-কে রসূল বলে স্বীকার করে না।
(২) দ্বিতীয় প্রকার কুফর, যেমন সে মসীহ মাওউদকে স্বীকার করে না আর দ প্রমাণ দ্বারা পুরোপুরিভাবে প্রমাণিত হওয়ার পরও তাকে মিথ্যাবাদী বলে; অথচ তাকে নবী হিসাবে মানতে এবং সত্যবাদী হিসাবে জানতে খোদা তাআলা ও নবী করীম (সঃ) স্বয়ং তাকীদ করেছেন এবং প্রাচীন ধর্মগ্রন্থগুলোতেও এর তাকীদ মিলে। যেহেতু সে খোদা এবং রাসূলের নির্দেশ অমান্য করেছে, তাই সে কাফের যদি গভীর মনোযোগের সাথে লক্ষ্য করা হয়, তাহলে এ উভয় প্রকার কুফরী মূলতঃ একই প্রকারে অন্তর্ভূক্ত বলে প্রতীয়মান হবে। কেননা, যে ব্যক্তি পূর্ণ পরিচয় লাভ করার পরও খোদা ও রাসুলের নির্দেশ অমান্য করে, সে তো সুস্পষ্ট আয়াত ও হাদীস থাকার পরও খোদা এবং রাসুলকেই অমান্য করে, অস্বীকার করে (হানী এই ১৭৯ ১৮০ পৃঃ)।
এ বই-এর অন্য এক স্থানে সে লিখেছে- “টো বড়ই আশ্চর্যের কথা যে, যারা আপনাকে কাফের বলে এবং রাসূল হিসাবে স্বীকার করেনা আপনি তাদের দু ধরনের লোক বলেন, অথচ খোদার নিকট তারা এক ধরনেরই। কেননা যে লোক আমাকে মান্য করেন। সে এ কারণেই মান্য করেনা যে, সে আমাকে মিথ্যুক মনে করে।"
একটু পর সে আরো লিখেছে- "এ ছাড়া যে আমাকে মানেনা সে খোদা এবং রাসুলকেও মানেনা, কেননা, আমার সর্ম্পকে খোদা এবং রসূলের ভবিষ্যবাণী বিদ্যমান রয়েছে।”
আরো লিখেছে- “খোদা তাআলা আমার সত্যবাদিতার সাক্ষ্য হিসাবে তিন লাখেরও অধিক আসমানী নিদর্শন প্রকাশ করেছেন। আকাশে সূর্য গ্রহন ও চন্দ্র গ্রহন রমজান মাসে অনুষ্ঠিত হয়েছে, যে লোক খোদা এবং রাসূলের বর্ণনাকে অমান্য করে, কুরঅনকে অস্বীকার করে, ইচ্ছাকৃতভাবে খোদা তাআ’লার নিদর্শন প্রত্যাখ্যান করে এবং শত শত নিদর্শন থাকা সত্ত্বেও আমাকে মিথ্যাবাদী বলে, সে কিভাবে মুমিন হতে পারে? আর সে যদি মুমিন হয় তাহলে মিথ্যা কথা বলার জন্য আমিই কাফের। (পুর্বোক্ত, ১৬০৩ ১৬৪ পৃঃ)
ডাঃ আঃ হাকীম খানের কাছে লেখা চিঠিতে গোলাম আহমদ লিখেছে- “খোদা তাআলা আমার নিকট এ কথা প্রকাশ করেছেন যে, যার নিকট আমার দাওয়াত পৌঁছেছে, কিন্তু সে আমাকে নবী বলে স্বীকার করে নাই, সে মুসলমান নয়।" (হাকীকাতুল ওহী, ১৬৩ পৃঃ)
"মিয়ারুল আখয়ার "নামক গ্রন্থে মির্জা গোলাম আহমদ তার এক ইলহামের বিবরণ এভাবে দিয়েছে “যে লোক তোমার অনুসরণ করবেনা এবং তোমার হাতে বাইয়াত করবেনা, তোমার বিরোধিতায় লিপ্ত থাকবে সে খোদা এবং রাসুলের আদেশ অমান্যকারী ও জাহান্নামী।" - (হাকীকাতুল ওহী, ১৬৩ পৃঃ ৮)
নুযুলুল মসীহ" গ্রন্থে লিখেছে- "যে আমার বিরোধী ছিল, তার নাম খৃষ্টান, ইহুদী এবং মুশরেক রাখা হয়েছে (পৃঃ ৪)। অপর একটি গ্রন্থ “আল হুদা”তে তাকে অস্বীকার করাকে নবী করীম (সঃ)-কে অস্বীকার করার নামান্তর বলে উল্লেখ করে লিখেছে- "বাস্তবিক পক্ষে দু ব্যক্তি বড়ই হতভাগা, মানুষ ও জিনজাতির মধ্যে এদের মত দূর্ভাগা আর কেউ নাই। এক, যে খাতামুল আম্বিয়া নবী করীম (সঃ)-কে নবী বলে স্বীকার করেনা এবং দুই, যে ব্যক্তি খাতামুল খোলাফা (অর্থাৎ তার ধারণা মতে সে নিজে) এর উপর ঈমান রাখেনা। ( হাকীকাতুল ওহী, ১৬৩ পৃঃ ৫)
"আঞ্জামে আথম" গ্রন্থে লিখেছে-"এখন এটা প্রকাশ্য যে, এ সকল ইলহামে আমার সর্ম্পকে বারবার এ কথাই বলা হয়েছে যে, এ ব্যক্তি খোদার পক্ষ হতে প্রেরিত খোদার পক্ষ হতে দায়িত্ব প্রাপ্ত, খোদার পক্ষ হতে আমানতদার এবং খোদার পক্ষ হতে আগত। সে যা কিছু বলে তাতে ঈমান রাখো। তার শত্রু হবে জাহান্নামী।" - (প্রাগুক্ত, পৃ: ৬২)
বদর নামক পত্রিকার ২৪ মে, ১৯০৮ সংখ্যায় লেখা হয়েছে- "এক ব্যক্তি মসীহ মাওউদের নিকট এসে প্রশ্ন করলো, যারা আপনাকে কাফের বলেনা, তাদের পিছনে নামাজ পড়ায় কি অসুবিধা?” মির্জা গোলাম আহমদ এর দীর্ঘ উত্তর দানের শেষ পর্যায়ে লিখে “তাদের উচিৎ এ সকল মৌলভীদের সম্পর্কে এক লম্বা লিফলেট ছাপিয়ে প্রচার করা। তাতে লেখা থাকবে, এরা সবাই কাফের কেননা, তারা এক মুসলমানকে কাফের বলে আখ্যায়িত করেছে। তাহলে আমি তাদের (অর্থাৎ লিফলেট প্রচারকারীদের) মুসলমান বলে বুঝবো একটি শর্ত সাপেক্ষে। তাহলো, তাদের মধ্যে মুনাফেকীর কোন চিহ্নও থাকবেনা এবং খোদা তাআলার প্রকাশ্য মুজেযাগুলোকে অস্বীকার করবেনা। নয়তো তাদের সম্পর্কে খোদা তাআলার এরশাদ রয়েছে- অর্থাৎ মুনাফেকদের জাহান্নামের নিম্নস্তরে নিক্ষেপ করা হবে।" - (মজদুরা ফতোয়ায়ে আহমদীয়া, ১১ ৭৩, ৩০৭ পূঃ থেকে সংকলিত)
****************************************
>>> Welcome, You are now on Mohammadia Foundation's Website. Please stay & Tune with us>>>
মোহাম্মদীয়া ফাউন্ডেশনের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url