মা’আরেফুল কোরআন - ৪৪ || সূরা আল-বাকারাহ, ১৩৫-১৩৬ || ঈমানের সাক্ষ্য ও তাৎপর্যের ব্যাখ্যা







بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ
سورة البقرة

সূরা আল-বাকারাহ আয়াতঃ ১৩৫-১৩৬


 وَ قَالُوۡا کُوۡنُوۡا هُوۡدًا اَوۡ نَصٰرٰی تَهۡتَدُوۡا ؕ قُلۡ بَلۡ مِلَّۃَ اِبۡرٰهٖمَ حَنِیۡفًا ؕ وَ مَا کَانَ مِنَ الۡمُشۡرِکِیۡنَ ﴿۱۳۵   قُوۡلُوۡۤا اٰمَنَّا بِاللّٰهِ وَ مَاۤ اُنۡزِلَ اِلَیۡنَا وَ مَاۤ اُنۡزِلَ اِلٰۤی اِبۡرٰهٖمَ وَ اِسۡمٰعِیۡلَ وَ اِسۡحٰقَ وَ یَعۡقُوۡبَ وَ الۡاَسۡبَاطِ وَ مَاۤ اُوۡتِیَ مُوۡسٰی وَ عِیۡسٰی وَ مَاۤ اُوۡتِیَ النَّبِیُّوۡنَ مِنۡ رَّبِّهِمۡ ۚ لَا نُفَرِّقُ بَیۡنَ اَحَدٍ مِّنۡهُمۡ ۫ۖ وَ نَحۡنُ لَهٗ مُسۡلِمُوۡنَ ﴿۱۳۶

সূরা আল-বাকারাহ ১৩৫-১৩৬ নং আয়াতের অর্থ

   
(১৩৫) তারা বলে, তোমরা ইহুদী অথবা খৃস্টান হয়ে যাও, তবেই সুপথ পাবে। আপনি বলুন, কখনই নয়; বরং আমরা ইবরাহীমের ধর্মে আছি, যাতে বক্রতা নেই। সে মুশরিকদের অন্তর্ভুক্ত ছিল না। (১৩৬) তোমরা বল, 'আমরা ঈমান এনেছি আল্লাহর উপর এবং যা অবতীর্ণ হয়েছে আমাদের প্রতি এবং যা অবতীর্ণ হয়েছে ইবরাহীম, ইসমাঈল, ইসহাক, ইয়াকুব এবং তদীয় বংশধরের প্রতি এবং মুসা, ঈসা ও অন্যান্য নবীকে পালনকর্তার পক্ষ থেকে যা দান করা হয়েছে, তৎসমুদয়ের উপর ঈমান এনেছি। আমরা তাদের মধ্যে পার্থক্য করি না। আমরা তাঁরই আনুগত্যকারী।'

ঈমানের সাক্ষ্য ও তাৎপর্যের ব্যাখ্যা

   

সূরা আল-বাকারাহ ১৩৫-১৩৬ নং আয়াতের তফসীরের সার-সংক্ষেপ

তারা (ইহুদী ও খৃস্টানরা মুসলমানদের) বলেঃ তোমরা ইহুদী হয়ে যাও (এটা ইহুদীদের কথা) অথবা খৃষ্টান হয়ে যাও (এটা খৃস্টানদের উক্তি), তবে তোমরাও সুপথ পাবে। (হে. মুহাম্মদ,) আপনি (উত্তরে) বলে দিনঃ আমরা (ইহুদী অথবা খৃস্টান কখনও হব না) বরং ইবরাহীমের ধর্মে (অর্থাৎ ইসলামে) থাকব—যাতে নামমাত্রও বক্রতা নেই। (এর বিপরীতে ইহুদীবাদ ও খৃষ্টবাদে তা রহিত হয়ে যাওয়ার কারণে বক্রতা রয়েছে।) ইবরাহীম (আ) মুশরিকও ছিলেন না। (মুসলমানগণ, ইহুদী ও খৃস্টানদের উত্তরে তোমরা যে সংক্ষেপে বলেছ যে, ইবরাহীমের ধর্মেই থাকবে, এখন এ ধর্মের বিবরণ দান প্রসঙ্গে) তোমরা বলঃ (এ ধর্মে থাকার তাৎপর্য এই যে,) আমরা ঈমান এনেছি আল্লাহর উপর এবং (ঐ নির্দেশের উপরও) যা আমাদের প্রতি (রসূলের মাধ্যমে) অবতীর্ণ হয়েছে এবং (ঐ নির্দেশ ও মো'জেযার উপরও) যা হযরত ইবরাহীম, ইসমাঈল, ইসহাক, ইয়াকুব (আঃ) ও তদীয় বংশধরদের মধ্যে যারা পরগম্বর ছিলেন, তাদের) প্রতি অবতীর্ণ হয়েছে এবং (ঐ নির্দেশ ও মো'জেযার উপরও) যা হযরত মূসা ও ঈসা (আ)- কে প্রদান করা হয়েছে এবং (ঐ নির্দেশের উপরও) যা অন্যান্য নবীকে পালনকর্তার পক্ষ থেকে দান করা হয়েছে। (আমরা তৎসমুদয়ের উপরই ঈমান রাখি। ঈমানও এমনভাবে যে,) আমরা তাঁদের মধ্যে (কোন একজনের প্রতি ঈমান আনার ব্যাপারে অন্যজন থেকে পার্থক্য করি না (যে 'একজনের প্রতি ঈমান আনব, আরেকজনের প্রতি আনব না।) আমরা আল্লাহ্ তা'আলারই আনুগত্যশীল (তিনি 'ধর্ম' বলে দিয়েছেন, আমরা গ্রহণ করেছি। আমরা যে ধর্মে আছি, তার সারমর্ম তা-ই। কারও পক্ষে একে অস্বীকার করার অবকাশ নেই)।

সূরা আল-বাকারাহ ১৩৫-১৩৬ নং আয়াতের আনুষঙ্গিক জ্ঞাতব্য বিষয়

 কোরআন ইয়াকুব (আ)-এর বংশধরকে اسباط শব্দ দ্বারা ব্যক্ত করেছে। এটা سبط এর বহুবচন। এর অর্থ গোত্র ও দল। তাদের سبط বলার কারণ এই যে, হযরত ইয়াকুব (আ)-এর ঔরসজাত পুরুষের সংখ্যা ছিল বার জন। পরে প্রত্যেক পুত্রের সন্তানরা এক-একটি গোত্রে পরিণত হয়। আল্লাহ্ তা’আলা তাঁর বংশে বিশেষ বরকত দান করেছিলেন। তিনি যখন হযরত ইউসুফ (আ)-এর কাছে মিসরে যান, তখন তাঁরা ছিলেন বার ভাই। পরে ফেরআউনের সাথে মুকাবিলার পর মূসা (আ) যখন মিসর থেকে বনী ইসরাঈলকে নিয়ে বের হলেন, তখন তাঁর সাথে ইয়াকুব (আ)-এর সন্তানদের মধ্য থেকে প্রত্যেক ভাইয়ের সন্তান হাজার হাজার সদস্যের সমন্বয়ে একটি গোত্র ছিল। তাঁর বংশে আল্লাহ্ তা’আলা আরও একটি বরকত দান করেছেন এই যে, দশজন নবী ছাড়া সব নবী ও রসূল ইয়াকুব (আ)-এর বংশধরের মধ্যেই পয়দা হয়েছেন। বনী ইসরাঈল ছাড়া অবশিষ্ট পয়গম্বরগণ হলেন আদম (আ)-এর পর হযরত নূহ (আ), শোয়াইব (আ), হুদ (আ), সালেহ (আ), লুত (আ), ইবরাহীম (আ), ইসহাক (আ), ইয়াকুব (আ), ইসমাঈল (আ) ও মুহাম্মদ মুস্তফা সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম ।






*****************************************
Thank you for visiting the site. If you like the article, share it on social media to invite other Vines to the path of truth and justice. Click on OUR ACTION PLAN button to know about activities, goals and objectives of Mohammadia Foundation and to participate in the service of religion and humanity. 
Almost all articles on this website are written in Bengali. But you can also read it in your language if you want. Click the “ভাষা বেছে নিন” button at the bottom of the website to read in your own language.




এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

মোহাম্মদীয়া ফাউন্ডেশনের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url