তোমরা ইউসুফের সাথিদের ছোটরূপ || শায়েখ কেন কাঁদছে ||





শায়েখ কেন কাঁদছে

নবী করীম ((সাঃ) মিম্বরে বসে তাঁর সাহাবীদেরকে উপদেশ দিচ্ছিলেন। মনে হচ্ছিল এটি তাঁর বিদায়ী উপদেশ।

   

অশ্রুঝরা চোখে তিনি বললেন, আল্লাহ তাআ'লা এক ব্যক্তিকে দুনিয়া অথবা আল্লাহর নিকটে যা আছে, দু'টির একটি বেছে নিতে বললেন। তখন লোকটি আল্লাহর নিকটে যা আছে তা বেছে নিল। হযরত আবু বকর (রাঃ) এ কথা শুনার সাথে সাথে অশ্রুঝরা, কান্না স্বরে চিৎকার দিয়ে বললেন, আপনার জন্যে কোরবান হোক..........আমাদের পিতামাতা আপনার জন্যে কোরবান হোক......... আমাদের পিতামাতা আপনার জন্যে কোরবান হোক।

এতে উপস্থিত মানুষেরা খুবই আশ্চর্য হয়ে গেল। কেন এ শায়েখ কাঁদছে? কেনই বা তাঁর কণ্ঠ থেকে এত করুণ চিৎকার বের হয়ে আসল।......নবী করীম (সাঃ) তো কোনো এক ব্যক্তির কথা বললেন, সে আল্লাহর নিকট যা আছে তা বেছে নিল ....... এতে কান্নার কি আছে?

কিন্তু লোকেরা জানত যে, আবু বকর তাদের মধ্যে সবচেয়ে জ্ঞানী ও অভিজ্ঞ। আর রাসূল (সাঃ) যে ব্যক্তির কথা বলেছিলেন। সে ব্যক্তি স্বয়ং তিনি নিজেই। তিনি আল্লাহর প্রতিবেশী হওয়াকে বেছে নিয়েছেন এ কারণেই হযরত আবু বকর চিৎকার দিয়ে কাঁদলেন। এরপর বেশিদিন যায়নি এরই মধ্যে একদিন রাসূল (সাঃ) এ দুনিয়া ছেড়ে তাঁর প্রভুর কাছে চলে গেলেন ।

তোমরা ইউসুফের সাথিদের ছোটরূপ

রাসূল (সাঃ)-এর অসুস্থতা মারাত্মক আকার ধারণ করেছে এমনকি তিনি দাঁড়িয়ে নামায না পড়ে বসে পড়তে লাগলেন ।

হযরত আবু বকর (রাঃ) এসে আযান দিলেন....... রাসূল (সাঃ) নামাযের সময় হলে হযরত বিলাল (রাঃ)-কে ডেকে মাথা থেকে কাঁথা নামিয়ে ক্ষীণকণ্ঠে বললেন, মানুষকে নিয়ে নামায আদায় করতে আবু বকরকে নির্দেশ দাও।

   

হযরত আয়েশা (রাঃ) বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! আবু বকর তো খুব কোমল হৃদয়ের মানুষ। তিনি নামাযে দাঁড়ালে কান্না শুরু করবেন। আর অধিক কান্নার কারণে তাঁর কেরাত মানুষ শুনতে পাবে না। যদি আপনি ওমরকে নির্দেশ দিতেন। রাসূল তাঁর কথায় অনড় থেকে আবার বললেন, মানুষকে নিয়ে নামায আদায় করতে আবু বকরকে নির্দেশ দাও।

তখন হযরত আয়েশা (রাঃ) হযরত হাফসা (রাঃ)-কে লক্ষ্য করে বললেন, তুমি রাসূল (সাঃ)-কে বল, আবু বকর কোমল হৃদয়ের মানুষ। তিনি নামাযের ইমামতি করলে অধিক কান্নার কারণে মানুষ তাঁর কেরাত শুনতে পাবে না। যদি আপনি ওমরকে নির্দেশ দিতেন।

তখন রাসূল (সাঃ) রাগান্বিত হয়ে বললেন, নিশ্চয়ই তোমরা ইউসুফের সাথিদের ছোটরূপ, আবু বকরকে নির্দেশ দাও মানুষকে নিয়ে নামায আদায় করতে।

হযরত আবু বকর নামাযে গেলে রাসূল (সাঃ) নিজের শরীর হালকা অনুভব করতে লাগলেন। তাই তিনি দু'জন সাহাবীর ওপর ভর করে মসজিদে প্রবেশ করলেন। যখন আবু বকর রাসূল (সাঃ)-এর আগমন টের পেলেন তিনি তাঁর স্থান থেকে পিছনে চলে আসতে লাগলেন। রাসূল (সাঃ) তাঁকে তাঁর স্থানে থাকার নির্দেশ দিলেন, কিন্তু তিনি পিছনে এসে কাতারের সাথে শামিল হয়ে গেলেন। নামায শেষে রাসূল (সাঃ) জিজ্ঞেস করলেন- আবু বকর! আমি নির্দেশ দেওয়ার পরেও কেন তুমি নিজ স্থানে স্থির থাকলে না?

তখন আবু বকর খুব নম্রভাবে বললেন, রাসূল (সাঃ)-এর সামনে দাঁড়িয়ে নামায পড়া আবু কুহাফার ছেলের জন্যে শোভা পায় না।*

তথ্যসূত্রঃ * সহীহ বুখারী (৬৭৮, ৬৮৪, ৭১৩)

তোমরা ভালো করেছ

নামাযের সময় হয়েছে..........
অন্যদিকে রাসূল (সাঃ) অসুস্থতার কারণে ঘরে শুয়ে আছেন। তখন বিলাল বললেন, নামাযের সময় হয়েছে, কিন্তু রাসূল তো নেই। আপনি কি চান যে, আমি আযান ও ইকামত দিব আর আপনি মানুষকে নিয়ে নামায আদায় করবেন?

হযরত আবু বকর (রাঃ) বললেন, তোমার ইচ্ছে...।

হযরত বিলাল (রাঃ) আযান ও ইকামত দিলেন এবং হযরত আবু বকর (রাঃ)-কে নামাযের ইমামতি করার জন্যে এগিয়ে দিলেন।

   

নামাযের শেষ মুহূর্তে রাসূল (সাঃ) নিজের শরীর একটু হালকা অনুভব করলে মসজিদে আসেন। তিনি এসে দেখলেন নামায শেষ হয়ে গেছে।

তিনি সাহাবায়ে কেরামদের জিজ্ঞেস করলেন- তোমরা কি নামায পড়েছ?
তাঁরা বললেন, হ্যাঁ।
তিনি বললেন, তোমাদের নামাযের ইমামতি কে করেছে?
তাঁরা বললেন, আবু বকর।
তিনি বললেন, তোমরা ভালো করেছ, যাদের মাঝে আবু বকর আছে, তাদের ইমামতি অন্য কেউ করা উচিত নয়।




*******************************************
Thank you for visiting the site. If you like the article, share it on social media to invite other Vines to the path of truth and justice. Click on OUR ACTION PLAN button to know about activities, goals and objectives of Mohammadia Foundation and to participate in the service of religion and humanity. 
Almost all articles on this website are written in Bengali. But you can also read it in your language if you want. Click the “ভাষা বেছে নিন” button at the bottom of the website to read in your own language.



এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

মোহাম্মদীয়া ফাউন্ডেশনের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url