তাফসীরে ইবনে কাসীর - ৩২ || সূরা বাকারা - ২২ || আদম (আঃ) অনুতপ্ত হৃদয়ে আল্লাহর কাছে ক্ষমা চান ||





সূরা আল বাকারা ৩৭নং আয়াতের অর্থ ও তাফসীর


فَتَلَقّٰۤی اٰدَمُ مِنۡ رَّبِّهٖ کَلِمٰتٍ فَتَابَ عَلَیۡهِ ؕ اِنَّهٗ هُوَ التَّوَّابُ الرَّحِیۡمُ ﴿۳۷

সূরা আল বাকারা ৩৭নং আয়াতের অর্থ

৩৭। অতঃপর আদম স্বীয় রাব্ব হতে কতিপয় বাণী - শিক্ষা লাভ করল, আল্লাহ তখন তার প্রতি কৃপা দৃষ্টি দিলেন; নিশ্চয়ই তিনি ক্ষমাশীল, করুণাময়!

   

সূরা আল বাকারা ৩৭নং আয়াতের তাফসীর

আদম (আঃ) অনুতপ্ত হৃদয়ে আল্লাহর কাছে ক্ষমা চান 

যে কথাগুলি আদম (আঃ) শিখেছিলেন তা কুরআন মাজীদের মধ্যে বিদ্যমান রয়েছে। তা হচ্ছেঃ

 قَالَا رَبَّنَا ظَلَمۡنَاۤ اَنۡفُسَنَا ٜ وَ اِنۡ لَّمۡ تَغۡفِرۡ لَنَا وَ تَرۡحَمۡنَا لَنَکُوۡنَنَّ مِنَ الۡخٰسِرِیۡنَ ﴿۲۳

তারা বললঃ হে আমাদের রাব্ব! আমরা নিজেদের প্রতি অন্যায় করেছি, আপনি যদি আমাদেরকে ক্ষমা না করেন তাহলে আমরা ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে পড়ব। (সূরা আ'রাফ, ৭:২৩ ) অধিকাংশ লোকের এটাই অভিমত।

মুজাহিদ (রহঃ), সাঈদ ইব্‌ন যুবাইর (রহঃ), আবুল আলীয়া (রহঃ), রাবী ইব্‌ন আনাস (রহঃ), হাসান বাসরী (রহঃ), কাতাদাহ (রহঃ), মুহাম্মাদ ইব্‌ন কাব আল কারাজী (রহঃ), খালিদ ইব্‌ন মাদান (রহঃ), 'আতা আল খুরাসানী (রহঃ) এবং আবদুর রাহমান ইবন যায়িদ ইবন আসলামও (রহঃ) অনুরূপ বর্ণনা করেছেন। (ইবন আবী হাতিম ১/১৩৬, তাবারী ১/৫৪৩, ৫৪৬ )

   

ইমাম সুদ্দী (রহঃ) ইবন আব্বাস (রাঃ) হতে বলেন, আদম (আঃ) বললেনঃ হে আমার রাব্ব! আপনিই কি আমাকে নিজ হাতে সৃষ্টি করেননি? আল্লাহ বলেনঃ হ্যাঁ। তিনি বললেনঃ আপনি কি আমার ভিতর রূহ ফুঁকে দেননি? তিনি উত্তর দিলেনঃ হ্যাঁ। তিনি (আদম (আঃ)) বললেনঃ যখন আমি হাঁচি দিই তখন কি আপনি বলেননি যে, তোমার আল্লাহ তোমার প্রতি সদয় হউন? আপনার রাহমাত কি আপনার ক্রোধের উপর অগ্রগামী নয়? উত্তরে আল্লাহ বলেনঃ হ্যাঁ। আদম (আঃ) বললেনঃ এবং আপনি আমার ভাগ্যে এরূপ খারাপ কাজ লিপিবদ্ধ করেছিলেন? বলা হলঃ হ্যাঁ। তিনি বললেনঃ যদি আমি অনুতপ্ত হই তাহলে আপনি কি আমাকে জান্নাতে ফেরত নিবেন? আল্লাহ বললেনঃ হ্যাঁ। (তাবারী ১/৫৪৩) আল আউফী (রহঃ), সাঈদ ইব্‌ন যুবাইর (রহঃ), সাঈদ ইব্‌ন মা'বাদ (রহঃ) এবং ইব্‌ন আব্বাসও (রাঃ) অনুরূপ বর্ণনা করেছেন। (তাবারী ১/৫৪২) ইবন যুবাইর (রহঃ) ইবন আব্বাস (রাঃ) হতে এবং ইবন যুবাইর (রহঃ) হতে হাকিম (রহঃ) তার মুস্তাদরাক গ্রন্থে লিপিবদ্ধ করেছেন। (হাদীস নং ২/৫৪৫) হাকিম (রহঃ) বলেন যে, এর বর্ণনাধারা সহীহ। আল্লাহ তা'আলা বলেনঃ

اِنَّهٗ هُوَ التَّوَّابُ الرَّحِیْمُ

যে অনুতপ্ত হৃদয়ে মহান আল্লাহর কাছে ক্ষমা চায়, মহান আল্লাহ তাকে ক্ষমা করে দেন। মহান আল্লাহ ইরশাদ করেনঃ

اَلَمْ یَعْلَمُوْۤا اَنَّ اللّٰهَ هُوَ یَقْبَلُ التَّوْبَةَ عَنْ عِبَادِهٖ

তারা কি এটা অবগত নয় যে, মহান আল্লাহই নিজ বান্দাদের তাওবাহ কবূল করেন? (৯ নং সূরাহ্ তাওবাহ, আয়াত নং ১০৪) অন্যত্র মহান আল্লাহ বলেনঃ

وَ مَنْ یَّعْمَلْ سُوْٓءًا اَوْ یَظْلِمْ نَفْسَهٗ

যে কেউ দুস্কর্ম করে অথবা স্বীয় জীবনের প্রতি অত্যাচার করে। (৪ নং সূরাহ্ নিসা, আয়াত নং ১১০)

অন্যত্র মহান আল্লাহ আরো বলেনঃ

وَ مَنْ تَابَ وَ عَمِلَ صَالِحًا

যে ব্যক্তি তাওবাহ করে ও সৎ কাজ করে। (২৫ নং সূরাহ্ ফুরকান, আয়াত নং ৭১) এসব আয়াতে বর্ণিত আল্লাহ তা‘আলা স্বীয় বান্দাদের তাওবাহ কবূল করে থাকেন। ঐ রকমই এখানেও রয়েছে যে, সেই মহান আল্লাহ তাওবাহকারীদের তাওবাহ কবূলকারী এবং অত্যন্ত দয়ালু। আল্লাহ তা‘আলার করুণা ও দয়া এতো সাধারণ ও ব্যাপক যে, তিনি তাঁর পাপী বান্দাদেরকেও স্বীয় রহমতের দরজা হতে ফিরিয়ে দেননা। সত্যিই তিনি ছাড়া কোন মা‘বূদ নেই, তিনি বান্দাদের অনুতাপ গ্রহণকারী এবং পরম দয়ালু।






******************************************
Thank you for visiting the site. If you like the article, share it on social media to invite other Vines to the path of truth and justice. Click on OUR ACTION PLAN button to know about activities, goals and objectives of Mohammadia Foundation and to participate in the service of religion and humanity.
Almost all articles on this website are written in Bengali. But you can also read it in your language if you want. Click the “ভাষা বেছে নিন” button at the bottom of the website to read in your own language.




এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

মোহাম্মদীয়া ফাউন্ডেশনের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url