রমজানের বিশেষ প্রবন্ধঃ রমজানের শেষ দশকে করণীয় চারটি বিশেষ আমল





রমজানের শেষ দশকের চারটি বিশেষ আমল


وَ لِتُکۡمِلُوا الۡعِدَّۃَ وَ لِتُکَبِّرُوا اللّٰهَ عَلٰی مَا هَدٰىکُمۡ وَ لَعَلَّکُمۡ تَشۡکُرُوۡنَ

এবং (তিনি চান) যাতে তোমরা রোজার সংখ্যা পূরণ করে নাও এবং আল্লাহ যে তোমাদেরকে পথ দেখিয়েছেন সেজন্য আল্লাহর তাকবির পাঠ করো আর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করো। [সুরা বাকারা: ১৮৫]

   

আলহামদুলিল্লাহ, আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের অশেষ দয়া ও অনুগ্রহে আমরা মোবারক মাস রমজান অতিবাহিত করছি। এখন রমজানের শেষ দশক চলছে। রমজানের এই শেষ দশক হলো পুরো রমজানের রহমত ও বরকতের নির্যাস। পুরো রমজান মাসেই যদিও আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে বান্দার ওপর রহমত ও করুণা বর্ষিত হতে থাকে; কিন্তু এই শেষ দশকে মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের বিশেষ অনুগ্রহদৃষ্টি বান্দাদের প্রতি নিবদ্ধ হয় এবং রহমত ও বরকতের ফল্গুধারা প্রবাহিত হতে থাকে । দোজাহানের সরদার নবীয়ে আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের এক হাদিসেও এই বিষয়টির নির্দেশনা পাওয়া যায়। নবীজি ইরশাদ করেছেন, কখনো কখনো বান্দাদের ওপর আল্লাহ তাআলার রহমতের বারিধারা প্রবাহিত হতে থাকে ।

নিঃসন্দেহে রমজানের এই শেষ দশকও আল্লাহ পাকের বিশেষ করুণাধারা প্রবাহিত হওয়ার মৌসুম। তাই চলমান সময়ের বরং প্রতিটি ক্ষণের খুব বেশি কদর করা উচিত এবং এ সময়ের করণীয় সম্বন্ধে জেনে তা অনুযায়ী আমল করা উচিত।

শেষ দশকে বেশি বেশি শোকর করা

পুরো রমজানে কোন কোন ইবাদত অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বেশি বেশি করার চেষ্টা করা উচিত, সে বিষয়ে আমরা ইতিপূর্বে আলোচনা করেছি। আজ আল্লাহ পাক তাওফিক দান করলে রমজানের এই শেষ দশকে বিশেষভাবে করণীয় কিছু ইবাদত সম্পর্কে আলোচনা করব।

রমজানের এই শেষ মুহূর্তগুলোতে সর্বপ্রথম বিশেষ করণীয় আমল হলো অধিক পরিমাণে আল্লাহর শোকর করা।

কীসের শোকর করব?! শোকর তো প্রথমে এ বিষয়ের করব যে, আল্লাহ আমাদের জীবনে অতিরিক্ত একটি রমজান দান করেছেন। আমাদের পরিচিত-অপরিচিত কত মানুষ গত রমজান আমাদের সঙ্গেই কাটিয়েছেন; কিন্তু এ রমজান তাদের জীবনে নসিব হয়নি। রমজান আগমনের পূর্বেই তারা দুনিয়া থেকে বিদায় নিয়েছেন। এ বছরের রমজান ও রোজা, তারাবি ও কিয়ামুল লাইল, তিলাওয়াত ও ইতিকাফ —–কিছুই তাদের ভাগ্যে জোটেনি। আল্লাহ পাক আপন দয়া ও অনুগ্রহে আমাদের বা হায়াত রেখেছেন; অবারিত রহমত ও বরকতে সিক্ত আরও একটি রমজান আমাদের দান করেছেন: এজন্য আমাদের কর্তব্য হলো মাহে রমজান প্রাপ্তির শোকর করা।

ইবাদতের তাওফিক একমাত্র আল্লাহর দান

শোকরের দ্বিতীয় দিক হলো আল্লাহ পাক এ রমজান মাসে আমাদেরকে আপন আপন সামর্থ্য অনুযায়ী কিছু ইবাদত করার তাওফিক দিয়েছেন; রোজা রাখার, তারাবি পড়ার, কিছু নফল ইবাদত, জিকির-আজকার ও কুরআন তিলাওয়াতের তাওফিক দান করেছেন। আমাদের পরিচিত- অপরিচিত কত ব্যক্তি ও পরিবার এমন আছে যারা কল্যাণের মাস রমজান কবে এসেছে আর কীভাবে গত হয়ে গেছে—বলতেই পারবে না । রমজানের আগমন ও প্রস্থান, রহমত ও বরকতের ঘোষণা, মাগফিরাত ও নাজাতের পরোয়ানা তাদের হৃদয়জগতে কোনো আবেদন সৃষ্টি করেনি। আল্লাহ পাক যে আমাদেরকে তাদের অন্তর্ভুক্ত করেননি, রমজানের মহা ফজিলতপূর্ণ ইবাদত হতে মাহরূম করেননি, এটা আমাদের যোগ্যতাবলে উপার্জিত নয়; বরং দয়াময় আল্লাহর অনুগ্রহ দান। তাই এর জন্যও আল্লাহ তাআলার শোকর আদায় করা কর্তব্য। এক শোকর রমজান নসিব হওয়ায়, আরেক শোকর রমজানে কিছু ইবাদত করার তাওফিক হওয়ায়। আমাদের কর্তব্য অন্তরের অন্তস্তল হতে আল্লাহর শোকর করা এবং জবানেও শোকরের কালিমা উচ্চারণ করা।

   

“হে আল্লাহ, এই রমজান নসিব হয়েছে আপনারই দয়া ও অনুগ্রহে, যা কিছু ইবাদতের তাওফিক হয়েছে তাও আপনার ফজল ও করমে। হে আল্লাহ, আপনি তাওফিক না দিলে কিছুই সম্ভব হতো না। আপনি হুকুম না করলে তো গাছের পাতাও নড়ে না; আপনার রেজা থাকলে কেউ ঠেকাতে পারে না। তাই হৃদয়ের গভীর থেকে, অন্তরের অন্তস্তল থেকে আপনার প্রদত্ত তাওফিকের শোকর আদায় করছি। হে আল্লাহ, আপনার এই অসীম রহমতের শোকর আদায়ের সামর্থ্য আমাদের নেই; আপনার শান অনুযায়ী শোকরের ভাষাও আমাদের জানা নেই। আমাদের এই টুটাফাটা ও ত্রুটিযুক্ত শোকরকেই আপনি দয়া করে কবুল করে নিন।”

বন্দেগির হক আদায়

তবে ভাই, বাস্তব কথা হচ্ছে, যত ইবাদতই করা হোক, বান্দার পক্ষে ইবাদতের হক আদায় করা কখনোই সম্ভব নয়। এক শোকরের ইবাদতের কথাই চিন্তা করুন। শোকরের হক আদায় করা কী সম্ভব? প্রতি মুহূর্তে আমরা শ্বাস নিচ্ছি, নিশ্বাস ফেলছি। অর্থাৎ প্রতি মুহূর্তের শ্বাস গ্রহণ ও নিশ্বাস ত্যাগের মাঝেই দুটি নিয়ামত। শুধু যদি শ্বাসের নিয়ামতের শোকর আদায় করা শুরু করি, আমার জীবনের সবগুলো শ্বাস-নিশ্বাসের শোকর ও কৃতজ্ঞতা আদায় করা সম্ভব হবে? আরও কত লক্ষ-কোটি বরং অগণিত নিয়ামত আল্লাহ আমাদের দান করেছেন। সেগুলোর শোকর কখন কীভাবে আদায় করব?

আমাদের শোকর তো ‘প্রতীকী কৃতজ্ঞতা'

কাজেই শোকর তো বাস্তব অর্থে আদায় করা সম্ভব নয়। হ্যাঁ, আমরা আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের নিয়ামতের কৃতজ্ঞতা ও স্বীকৃতিস্বরূপ কিছু প্রতীকী কৃতজ্ঞতা পেশ করে থাকি। দুনিয়াতে আমরা দেখি, বড়দের সম্মাননায় ক্রেস্ট বা বিভিন্ন উপঢৌকন প্রদান করা হয়। এরপর বিনয়ের সঙ্গে বলা হয়, এ উপহার তো আপনার শান ও মর্যাদা হিসেবে কিছুই নয়; এ শুধু আমাদের পক্ষ হতে আপনার মর্যাদার স্বীকৃতিস্বরূপ প্রতীকী উপহার! ঠিক তেমনই আমাদের শোকরও আল্লাহর নিয়ামত ভোগের স্বীকৃতি হিসেবে প্রতীকী কৃতজ্ঞতা-মাত্র। অন্যথায় শোকরের ন্যায় গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত মহান আল্লাহ তাআলার শান অনুযায়ী কীভাবে আদায় করা সম্ভব?!

তো এ কথা আরজ করছিলাম যে, রমজানের এই শেষ দশকে আমাদের প্রথম কর্তব্য হলো রমজান নসিব হওয়ার এবং কিছু ইবাদতের তাওফিক হওয়ার কারণে বেশি বেশি আল্লাহ তাআলার শোকর আদায় করা।

ইবাদতের পরও তাওবা করা কর্তব্য

শোকরের পর এ সময়ের দ্বিতীয় বিশেষ কর্তব্য হচ্ছে অধিক পরিমাণে তাওবা ও ইসতেগফার করা।

তাওবা ও ইসতেগফার কেন করব?! তাওবা এজন্য করব যে, আমরা তো রমজানের হক ও দাবি রক্ষা করতে পারিনি। রোজা ও তারাবির যথাযথ হক আদায় করতে পারিনি। যে রোজার বিনিময়ে আল্লাহ তাআলা তাকওয়ার মহাসম্পদ প্রদানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, তেমন জানদার রোজা রাখতে পারিনি। যে তারাবির বদলায় গুনাহ মাফের খোশখবরি এসেছে, তেমন প্রাণবন্ত তারাবি আদায় করতে পারিনি। টুটাফাটা কিছু ইবাদত হয়তো করেছি; কিন্তু বন্দেগির শান আদায় করতে পারিনি। তাই, আল্লাহর দরবারে অনুনয়-বিনয় করে তাওবা-ইসতেগফার করতে হবে।

“হে আল্লাহ, আপনার দান করা এই মহা মূল্যবান মুহূর্তগুলোকে আমরা সঠিকভাবে কাজে লাগাতে পারিনি। আপনি যে নিয়ামত দান করেছিলেন, তার কদর করতে পারিনি। রোজার হক আদায় করতে পারিনি, রোজার আদাবের প্রতি যত্নবান হতে পারিনি। তারাবির হক আদায় করতে পারিনি, খুশু-খুজুর সঙ্গে আপনার মর্জিমতো তারাবি পড়তে পারিনি। কুরআন তিলাওয়াতের হক আদায় করতে পারিনি, আপনার কালামের যে শান; তা রক্ষা করে তিলাওয়াত করতে পারিনি।

جفْنَا بِبِضَاعَةٍ تُرْجَى فَأَوْفِ لَنَا الْكَيْلَ وَتَصَدَّقُ عَلَيْنَا )

আমরা সামান্য কিছু পুঁজি নিয়ে এসেছি। আপনি আমাদেরকে পরিপূর্ণ রসদ দান করুন এবং আমাদের প্রতি অনুগ্রহ করুন। (২৮) 

হে আল্লাহ, অতি সামান্য এই সামানা নিয়ে উপস্থিত হয়েছি আপনার দরবারে; আমাদের পুঁজি যদিও সীমিত, আপনার দয়ার ভান্ডার তো অফুরান! আমাদের তুচ্ছ এই সামানার প্রতি দৃষ্টিপাত না করে আপনার অফুরন্ত দয়ার প্রতি দৃষ্টি দিয়ে আমার প্রতি দয়ার আচরণ করুন। রোজা রাখার জন্য আপনি যে পুরস্কার ঘোষণা করেছেন, তারাবি আদায়ের যে ফজিলত আপনি নির্ধারিত করেছেন, মাহে রমজানের ইবাদতের জন্য আপনি যে বিশেষ দানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন; আয় আল্লাহ, তার সবকিছুই আমাদের প্রয়োজন। সবকিছু আপনি আমাদের দান করুন। আমরা তুচ্ছ পুঁজি নিয়ে এসেছি, আপনি আমাদের রসদ পূর্ণ মাত্রায় দিন এবং আমাদেরকে আরও দান করুন। হে আল্লাহ, আমরা আপনার প্রতিশ্রুত পুরস্কার লাভের হকদার ও উপযুক্ত তো নই; কিন্তু আপনার পুরস্কার লাভের মোহতাজ ও মুখাপেক্ষী তো অবশ্যই। আমাদের মাগফিরাত ও ক্ষমা প্রয়োজন, নাজাত ও মুক্তির পরোয়ানা প্রয়োজন; আমাদের প্রাপ্য ও উপযুক্ততার প্রতি দৃষ্টিপাত না করে আমাদের মুখাপেক্ষিতার প্রতি দৃষ্টি দিন। মাহে রমজানে যত রহমত ও বরকত আপনি রেখেছেন, যত পুরস্কার ও দানের ওয়াদা আপনি করেছেন, সব আমাদের দান করুন। 

আয় আল্লাহ, আপনি রমজান দান করেছেন তাকওয়া অর্জনের জন্য। আমাদের ত্রুটিপূর্ণ এই রোজার বিনিময়েই আমাদের তাকওয়ার দৌলত দান করুন। গুনাহ থেকে বেঁচে থাকার তাওফিক দান করুন।”

এভাবে আমরা ইবাদতের তাওফিকের জন্য শোকরও করব, ইবাদতের ত্রুটি-বিচ্যুতির জন্য তাওবা-ইসতেগফারও করব। যদি শোকরও আদায় করি, তাওবা-ইসতেগফারও করি—তাহলে পরম করুণাময় সত্তা আল্লাহ এত কারিম ও দয়াময় যে, তিনি আমাদের মাহরুম করবেন না। অসীম দয়াময় আল্লাহ তাআলা অনুগ্রহ করে আমাদের সামান্য টুটাফাটা ইবাদতই কবুল করে নেবেন এবং অসামান্য আজর ও সাওয়াব দান করবেন।

আমাদের আমলের দৃষ্টান্ত

আমরা আল্লাহ তাআলার দরবারে যে সমস্ত আমল পেশ করি, প্রকৃতপক্ষে তার দৃষ্টান্ত ইতিহাসের সেই বেদুইনের কলসভরা পানি !

দূর মরুভূমিতে বসবাসকারী জনৈক বেদুইনের বহুদিনের শখ বাগদাদ যাবে খলিফার জিয়ারতে। অর্ধ জাহানের খলিফা! কী তোহফা নেওয়া যায় তার জন্য? আচ্ছা, মরূদ্যানের ওই মিঠা পানির কূপখানা, যার পানি নিয়ে প্রায়ই লেগে যায় হাতাহাতি-মারামারি, এক মশক পানি পাওয়া মানে বিশ্বজয় ! সেখান থেকে এক কলস পানি নিয়ে গেলে কেমন হয়? বাগদাদের খলিফা কোথায় পাবেন এই মিঠা পানি?!

খলিফার দরবারে হাজির হয়ে সালাম পেশ করে বেদুইন। তারপর কৃত্রিম বিনয়ের সুরেই যেন বলে, 'বাদশাহ নামদার, আমাদের গাঁয়ের কূপ থেকে আপনার জন্য নিয়ে এসেছি তোহফা! পান করে দেখুন, দিল ঠান্ডা হয়ে যাবে; যেমন শীতল, তেমন মিঠা ! এমন মিষ্টি পানি আপনি জীবনেও পান করেননি। কোথায় পাবেন এ পানি, আমাদের গাঁও ছাড়া!'

অর্ধ পৃথিবীর প্রতাপশালী শাসক পানির কলসের দিকে তাকান। এত দূরের পথ! ধূলোবালি পড়ে পড়ে ততদিনে পানি দুর্গন্ধ ছড়াতে শুরু করেছে! বিচক্ষণ খলিফা বুঝতে পারেন, গ্রাম্য এই প্রজার কাছে এই গাদলা- গান্দা পানিই অমূল্য সম্পদ। ঘোলা পানির মাঝেই প্রাজ্ঞ খলিফা খুঁজে পান এক নির্বোধ প্রজার নিখাদ ভালোবাসা !

খলিফা কৃত্রিম উচ্ছ্বাসে উচ্ছ্বসিত হয়ে ওঠেন। তোহফা কবুল করে উজিরকে নির্দেশ দেন, এই 'অমূল্য' পানিটুকু সযত্নে রেখে দাও আর এই কলসভরে একে দিয়ে দাও সোনা-চাঁদি!

খুশিতে বেদুইন তখন আটখানা! তার অমূল্য তোহফা খলিফাকে মুগ্ধ করেছে। যাক, সোনা-চাঁদি নিয়ে এবার ফেরা যাক দূর মরুভূমির গ্রামের পথে। বাদশাহর অনুচররা বেদুইনকে কিছুদূর এগিয়ে দেয়। কিছুটা ঘুর পথে নিয়ে যায় প্রবহমান দজলার পাশ দিয়ে। দজলা নদীর প্রবাহ দেখে বেদুইন তো হয়রান-পেরেশান! হায়! কলসভরা সোনা-চাঁদি কি কুয়ার পানির বদলা! এ যে কেবল মহান খলিফার মেহেরবানি।

দুনিয়ার এক মামুলি বাদশাহ যদি কদর করেন বেদুইনের ইখলাস ও মুহাব্বতের, নিষ্ঠা ও ভালোবাসার সকল বাদশাহর বাদশাহ যিনি, করুণার আধার যিনি, তিনি কি কবুল করবেন না আমাদের টুটাফাটা ইবাদত ও কান্নাভরা ফরিয়াদের তোহফা?!

আমরা তো ওই বেদুইনের চেয়েও নির্বোধ ! আমাদের আমল তো ওই গান্দা পানির চেয়েও দুর্গন্ধভরা! কী তোহফা আমরা পেশ করছি রাজাধিরাজের দরবারে?! আমাদের আমলের বদলা তো হওয়ার কথা কঠিন আজাব ও শাস্তি। কিন্তু দেখুন দয়াময়ের দয়া। আল্লাহ বলছেন, বান্দা যদ্দুর পেরেছে পচা-গান্দা আমল করেছে, কিন্তু ইখলাস ও মুহাব্বতের সঙ্গে করেছে; বিনয় ও নিষ্ঠার সঙ্গে করেছে। তাই আমি পচা গান্দা ইবাদতের এই মটকাই কবুল করে নিচ্ছি আর এর প্রতিদান আমি নিজে দিচ্ছি!

«الصوم لي، وأنا أجزي به»

রোজা তো একমাত্র আমারই জন্য আর আমিই তার প্রতিদান দিয়ে থাকি । (২৯)

নিজ আমলের মুহাসাবাও করা চাই

রমজানের এই শেষ দশকে শোকর ও ইসতেগফারের পর আমাদের তৃতীয় করণীয় হচ্ছে মুহাসাবা। রমজান তো আল্লাহ তাআলা দান করেছিলেন তাকওয়ার দৌলত অর্জন করার জন্য। রমজান তো আগমন করেছিল রহমত, মাগফিরাত ও নাজাতের বার্তা নিয়ে। রমজানের গত হয়ে যাওয়া এই বিশ-বাইশ দিনে আমাদের হৃদয়-জগৎ কি তাকওয়ার নুরে নুরান্বিত হয়েছে? রমজানের পূর্বে দিল ও কলবের যে হালত ও কাইফিয়াত ছিল, তাতে কি কোনো ইনকিলাব এসেছে? আল্লাহ পাকের প্রতিটি বিধান নত শিরে মেনে নেওয়ার এবং গুনাহ থেকে বেঁচে থাকার স্পৃহা ও চেতনা কি আগের চেয়ে বৃদ্ধি পেয়েছে? আমাদের প্রত্যেকেরই কর্তব্য নিজেকে এ প্রশ্নগুলো করা এবং আপন আপন অবস্থার হিসাব নেওয়া।

এই তিনটি বিষয় আমলের পাশাপাশি চতুর্থ ও সর্বশেষ করণীয় বিষয় হচ্ছে রমজানের বাকি মুহূর্তগুলোর পূর্ণ ইহতেমাম। বাকি থাকা প্রতিটি মুহূর্তকে অমূল্য সম্পদ মনে করে ইবাদত-বন্দেগিতে কাটাতে হবে এবং বিশেষ করে তাওবার ইহতেমাম করতে হবে।

চলমান সংঘাত পরিস্থিতি আমাদের বদ আমলেরই পরিণতি

আজ আমাদের অবস্থা দেখুন। পরস্পর মারামারি-হানাহানি, একে অপরের ক্ষতি করার চেষ্টা; পুরো মুসলিম উম্মাহ আজ গৃহযুদ্ধ ও আত্মঘাতী হানাহানিতে লিপ্ত। মুসলমানের হাত রঞ্জিত হচ্ছে তার মুসলিম ভাইয়ের রক্তে! মুসলমানদের লাশের স্তুপ তৈরি হচ্ছে মুসলমানের অস্ত্রের আঘাতে! মিশর, লিবিয়া, সিরিয়া, আফগানিস্তান, পাকিস্তান – সকল মুসলিম রাষ্ট্রের একই অবস্থা! কেন? কেন এই পতন ও স্থবিরতা?!

আল্লাহ পাকের আজাব ও শাস্তির বিভিন্ন রূপ ও প্রকৃতি আছে। তেমনই একটি দিক হলো কুরআনের ভাষায়-

وَّ یُذِیۡقَ بَعۡضَکُمۡ بَاۡسَ بَعۡضٍ

এবং তিনি (আল্লাহ) এক দলকে অপর দলের শক্তির স্বাদ গ্রহণ করাবেন [সুরা আনআম: ৬৫] 

সুতরাং মুসলমানদের পারস্পরিক লড়াইও এক ধরনের আজাবে ইলাহি। আল্লাহ আমাদের হেফাজত করুন। মনে হচ্ছে, আজ পুরো উম্মত এই আজাবেরই শিকার!

অনেকে বলে থাকে, এসবের পেছনে তো মূল কারণ হচ্ছে ইসলাম ও মুসলমানদের শত্রুদের ষড়যন্ত্র। হ্যাঁ, ষড়যন্ত্র তো অবশ্যই আছে। এটি একেবারে সুস্পষ্ট বিষয়। আমেরিকা ও তার সহযোগী পশ্চিমা শক্তি কখনোই মুসলিম রাষ্ট্রগুলোতে শান্তিপূর্ণ পরিস্থিতি দেখতে চায় না। মুসলমানদের দুরবস্থা ও পারস্পরিক হানাহানিতেই তারা উল্লসিত হয়।

কিন্তু ভাই, কথা হচ্ছে শত্রুপক্ষ তো ষড়যন্ত্র করবেই। শত্রুর কাজই তো ক্ষতির চেষ্টা করা। এ বিষয়ে অভিযোগ করে কী লাভ? শত্রুর কাছে হৃদ্যতাপূর্ণ আচরণ লাভের আশা করাই তো নির্বুদ্ধিতা!

ঈমানের শক্তির সামনে সব শক্তিই অসহায়

প্রকৃত কথা হলো, যতক্ষণ আমরা নিজেরা সঠিক পথে থাকব, আল্লাহর দ্বীনের ওপর অটল-অবিচল থাকব, অন্যায় আচরণ হতে বিরত থাকব, ততক্ষণ তাদের সকল চেষ্টা ও প্রচেষ্টা, ষড়যন্ত্র ও কূটকৌশল মোটেও সফলকাম হবে না। যদি আমরা প্রকৃত অর্থে মুসলমান হতে পারি, আল্লাহর মুহাব্বত ও ভালোবাসার দাবিতে মুখলিস ও নিষ্ঠাবান হতে পারি; তাহলে কাফির ও অবিশ্বাসীরা যতই ষড়যন্ত্র করুক, তাদের সকল প্রচেষ্টা ব্যর্থ হবে।

আজ আমাদের মাঝে আছে ইসলামের দাবির প্রতিফলন? আছে আল্লাহর মুহাব্বতের কোনো নিদর্শন? আমাদের মাঝে তো নেই আল্লাহর প্রতি রুজু ও প্রত্যাবর্তন, আছে কেবল অন্যায় ও অসৎকর্মের প্রতি দুর্নিবার আকর্ষণ। সমাজের প্রতিটি ক্ষেত্রে ঘুষের রমরমা বাজার; অথচ ঘুষদাতা ও গ্রহীতা উভয়ের ব্যাপারে জাহান্নামে নিক্ষেপের সতর্কবাণী এসেছে। (৩০) 

সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে আজ সুদের অবাধ প্রচলন; অথচ সুদগ্রহীতা সম্পর্কে কুরআনের ঘোষণা হলো-

 فَاِنۡ لَّمۡ تَفۡعَلُوۡا فَاۡذَنُوۡا بِحَرۡبٍ مِّنَ اللّٰهِ وَ رَسُوۡلِهٖ

অতঃপর যদি তোমরা (সুদ) পরিত্যাগ না করো, তবে আল্লাহ ও তার রাসুলের সঙ্গে যুদ্ধ করতে প্রস্তুত হয়ে যাও। [সুরা বাকারা: ২৭৯] 

মিথ্যা, আমানতের খেয়ানত, ধোঁকাবাজি – সব অন্যায় আমাদের মাঝে আছে। কেউ চাইলেই দুই পয়সা দিয়ে আমাদের ঈমান-আমল, মেধা- মস্তিষ্ক, ভূখণ্ড—সবই ক্রয় করতে পারে। যতক্ষণ আমরা এসব অন্যায় হতে তাওবা ও ইসতেগফার না করব, কাফেররা আমাদের নিয়ে ষড়যন্ত্র করে সফলকাম হতেই থাকবে।

তাওবা আজাবকে অপসারণ করে

সুতরাং আমাদের কর্তব্য খালিস দিলে তাওবা করা। দরবারে ইলাহিতে হাজির হয়ে অনুতপ্ত চিত্তে বলা,
“হে আমাদের প্রতিপালক, আমরা নিজ সত্তার ওপর জুলুম করে ফেলেছি। আপনি যদি আমাদেরকে ক্ষমা না করেন এবং আমাদের প্রতি রহম না করেন, তবে আমরা অবশ্যই অকৃতকার্যদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাব । (৩১)

   

হে আল্লাহ, হে আমাদের প্রতিপালক, আমরা আপন নফস ও আত্মার ওপর জুলুম করেছি। আপনি যদি আমাদের ক্ষমা না করেন, আমাদের প্রতি দয়ার আচরণ না করেন, তাহলে তো নিঃসন্দেহে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে যাব। আমরা অতীতে কৃত সকল গুনাহের জন্য অনুতপ্ত হয়ে ইসতেগফার করছি, আপনার দরবারে ক্ষমা ভিক্ষা চাইছি। আমরা প্রতিজ্ঞা করছি—ভবিষ্যতে আর কখনো আপনার অবাধ্য হব না, ভবিষ্যতে আর কখনো গুনাহ করব না। আপনি দয়া করে আমাদের সকল গুনাহ ক্ষমা করে দিন। হে আল্লাহ, আমাদের ‘টুটাফাটা' রোজার বিনিময়েই আপনি আমাদের আপনার প্রতিশ্রুত ‘তাকওয়া' দান করুন। হে আল্লাহ, আপনি তাওফিক দিন তাওবার ওপর অটল থাকার এবং তাকওয়ার জীবন গড়ার।”

এভাবে নিজের জন্য ও পুরো মুসলিম উম্মাহর জন্য তাওবা-ইসতেগফার করতে হবে। আর আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের সুন্নাত হলো, যদি সকলে মিলে অনুতপ্ত হয়ে সমবেতভাবে আল্লাহর কাছে ক্ষমাপ্রার্থনা করা হয়, তাহলে তিনি আসন্ন আজাব ও শাস্তি প্রত্যাহার করে নেন। ইজতেমায়ি তাওবা ও রোনাজারির কারণে আজাব-গজব ফিরিয়ে নেওয়া সুন্নাতে ইলাহি ও রাব্বে কারিমের শাশ্বত নীতি। পবিত্র কুরআন মাজিদে আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন-

فَلَوْلَا إِذْ جَاءَهُمْ بَأْسُنَا تَضَرَّعُوا

অতঃপর যখন তাদের কাছে আমার (পক্ষ হতে) আজাব এলো, তখন তারা কেন অনুনয়-বিনয় করল না? [সুরা আনআম: ৪৩]

অন্য এক আয়াতে হজরত ইউনুস আলাইহিস সালামের কওমের বিবরণে এসেছে-

 فَلَوۡ لَا کَانَتۡ قَرۡیَۃٌ اٰمَنَتۡ فَنَفَعَهَاۤ اِیۡمَانُهَاۤ اِلَّا قَوۡمَ یُوۡنُسَ ؕ لَمَّاۤ اٰمَنُوۡا کَشَفۡنَا عَنۡهُمۡ عَذَابَ الۡخِزۡیِ فِی الۡحَیٰوۃِ الدُّنۡیَا وَ مَتَّعۡنٰهُمۡ اِلٰی حِیۡنٍ ﴿۹۸

তবে কোনো জনপদ কেন এমন হলো না যে, তারা এমন এক সময় ঈমান আনত, যখন ঈমান তাদের উপকার করতে পারত? অবশ্য ইউনুসের কওম এ রকম ছিল। তারা যখন ঈমান আনল, তখন আমি পার্থিব জীবনে লাঞ্ছনাকর শাস্তি তাদের থেকে তুলে নিলাম এবং তাদেরকে কিছুকাল পর্যন্ত জীবন ভোগ করতে দিলাম। [সুরা ইউনুস: ৯৮]

তো ভাই, মাহে রমজানের আরও কয়েকটি দিন বাকি আছে, রহমত ও বরকতের অমূল্য কিছু মুহূর্ত এখনও কাজে লাগানোর সুযোগ আছে, কদরের রাত এখনও বাকি আছে। সামনের যেকোনো রাতই শবে কদর হতে পারে। এজন্য প্রতিটি মুহূর্তের সর্বোচ্চ কদর করা উচিত। শবে কদরের তালাশ করা উচিত। আর শবে কদর না পেলাম তো কী হয়েছে! জনৈক অন্তজ্ঞানীর ভাষায় -

ہر شب شب قدر است اگر قدر بدانی

মুমিনের জন্য প্রতিটি রজনী-ই শবে কদর, যদি কদর ও গুরুত্ব অনুধাবন করতে পারে ।

আলোচনার শুরুতে আমি আপনাদের সামনে সুরা বাকারার একটি আয়াত তিলাওয়াত করেছিলাম। আয়াতের মধ্যে রমজানের সমাপ্তি ও ঈদুল ফিতরের আলোচনা করা হয়েছে। দেখুন, কী আশ্চর্য বর্ণনাভঙ্গি! আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন-

وَلِتُكْمِلُوا الْعِدَّةَ وَلِتُكَبِّرُوا الله عَلى مَا هَدَيكُمْ وَلَعَلَّكُمْ تَشْكُرُونَ 

এবং (তিনি চান) যাতে তোমরা রোজার গণনা পূর্ণ করে নাও এবং আল্লাহ যে তোমাদেরকে পথ দেখিয়েছেন সেজন্য আল্লাহর তাকবির পাঠ করো এবং কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করো। [সুরা বাকারা: ১৮৫] 

দেখুন, আল্লাহ তাআলা বলতে পারতেন, তোমরা তোমাদের রোজা পূর্ণ করে নাও, তারাবি ও কিয়ামুল লাইল পূর্ণ করে নাও। কিন্তু তা না বলে আল্লাহ বললেন, 'তোমরা তোমাদের রোজার গণনা পূর্ণ করে নাও।' কেন?! আল্লাহু আকবার! কী প্রজ্ঞাপূর্ণ বাণী! উদ্দেশ্য হলো আমাদেরকে সান্ত্বনা দেওয়া। অর্থাৎ বান্দা! তুমি রোজা-তারাবি কী পূর্ণ করবে?! রোজা ও তারাবির কী হক তুমি আর আদায় করবে?! বন্দেগির কী কারনামা তুমি পেশ করবে?! তুমি তো দুর্বল! তুমি তো নির্বোধ ! আচ্ছা, নামকাওয়াস্তে সংখ্যা ও গণনাই পূর্ণ করে নাও! আমার সন্তুষ্টির জন্য যদি গণনাও পূর্ণ করো, তাহলে হক আদায় না হওয়া সত্ত্বেও আমি তা কবুল করে নেব। আল্লাহ তো রহিম ও রহমান! আল্লাহর দয়া ও অনুগ্রহ তো অসীম, অফুরান! বান্দা যখন আপন ইবাদতের ভুল-ত্রুটি স্বীকার করে তাওবা করে, আল্লাহ তার ত্রুটি-বিচ্যুতি ক্ষমা করে দেন এবং তার ত্রুটিপূর্ণ ইবাদতের পরিবর্তেই পূর্ণাঙ্গ ইবাদতের সাওয়াব প্রদান করেন।

এরপর আল্লাহ তাআলা বলেছেন, 'আল্লাহ যেভাবে তোমাদের হিদায়াত করেছেন, সেভাবে তার তাকবির পাঠ করো'। অর্থাৎ আল্লাহর বড়ত্ব বর্ণনা করো। রমজান মাসে অন্য মাসের তুলনায় আল্লাহর বড়ত্ব অধিক বর্ণনা করা হয়। অন্যান্য দিনের চেয়ে অতিরিক্ত বিশ রাকাত নামাজ। আল্লাহু আকবার ধ্বনির মাধ্যমে বিশ রাকাতে একশ বারের অধিক আল্লাহর বড়ত্বের কথা ঘোষণা করা হয়। আবার ঈদের নামাজের উদ্দেশে ঈদগাহে যাওয়ার সময়ও আল্লাহর বড়ত্ব ঘোষণা করে তাকবিরে তাশরিক পাঠ করা হয়। ঈদের নামাজে অতিরিক্ত ছয় তাকবিরের মাধ্যমে আল্লাহর বড়ত্বের স্বীকৃতি প্রদান করা হয়। মাকসাদ হলো পুরো রমজানে অসংখ্যবার আল্লাহর বড়ত্বের মৌখিক স্বীকৃতি প্রদানের মাধ্যমে বান্দার মনে যেন আল্লাহর বড়ত্বের বিশ্বাস সুদৃঢ় হয়ে যায়। এই অনুভূতি যেন তার অন্তরজগতে বদ্ধমূল হয়ে যায় যে, ইতাআত ও আনুগত করব তার, যিনি সবচেয়ে বড়; ইবাদত ও বন্দেগি করব তার, যিনি সবচেয়ে মহান; মুহাব্বত ও ভালোবাসা হবে তার জন্য, যিনি আমার রব।

( وَلَهُ الْكِبْرِيَاء فِي السَّمَوتِ وَالْأَرْضِ وَهُوَ الْعَزِيزُ الْحَكِيمُ)

এবং সমস্ত গৌরব তারই, আকাশমণ্ডলিতেও এবং পৃথিবীতেও। আর তিনিই পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়। [সুরা জাছিয়া: ৩৭] 

তাই আসুন, মাহে রমজানের এই শেষ দশকের কদর করি। বেশি বেশি শোকর ও ইসতেগফার করি, মুহাসাবা ও মুরাকাবা করি; তাসবিহ- তাকবির, জিকির-আজকার ইত্যাদির মাধ্যমে বাকি সময়গুলোকেও কাজে লাগাতে সচেষ্ট হই। আল্লাহ পাক আমাদেরকে কবুল করুন। আমাদের অন্তরে তাকওয়ার নুর দান করুন। আল্লাহর কিবরিয়া ও বড়ত্বের বিশ্বাস আমাদের অন্তরে বদ্ধমূল করে দিন। রমজানের পরও যেন আমাদের অন্তরে থাকে খওফে ইলাহি ও আল্লাহভীতি এবং কিবরিয়ায়ে ইলাহি ও আল্লাহর মহত্ত্বের অনুভূতি। আমিন।

তথ্যসূত্রঃ
২৮.  সুরা ইউসুফ: ৮৮
২৯. ইমাম মুসলিম, সহিহ মুসলিম, হাদিস নং ১১৫১।
৩০.  হজরত আবদুল্লাহ বিন আমর রাযি. বলেন, নবীজি ঘুষদাতা ও ঘুষগ্রহীতার ওপর অভিসম্পাত করেছেন। (সুনানে তিরমিজি, হাদিস নং ১৩৪০
৩১. সুরা আ'রাফ: ২৩।





****************************************
>>> Welcome, You are now on Mohammadia Foundation's Website. Please stay & Tune with us>>>

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

মোহাম্মদীয়া ফাউন্ডেশনের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url