মা’আরেফুল কোরআন - ৪৬ || সূরা আল-বাকারাহ, ১৩৯-১৪১ || ইখলাসের তাৎপর্য






بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ
سورة البقرة

সূরা আল-বাকারাহ আয়াতঃ ১৩৯-১৪১


 قُلۡ اَتُحَآجُّوۡنَنَا فِی اللّٰهِ وَ هُوَ رَبُّنَا وَ رَبُّکُمۡ ۚ وَ لَنَاۤ اَعۡمَالُنَا وَ لَکُمۡ اَعۡمَالُکُمۡ ۚ وَ نَحۡنُ لَهٗ مُخۡلِصُوۡنَ ﴿۱۳۹   اَمۡ تَقُوۡلُوۡنَ اِنَّ اِبۡرٰهٖمَ وَ اِسۡمٰعِیۡلَ وَ اِسۡحٰقَ وَ یَعۡقُوۡبَ وَ الۡاَسۡبَاطَ کَانُوۡا هُوۡدًا اَوۡ نَصٰرٰی ؕ قُلۡ ءَاَنۡتُمۡ اَعۡلَمُ اَمِ اللّٰهُ ؕ وَ مَنۡ اَظۡلَمُ مِمَّنۡ کَتَمَ شَهَادَۃً عِنۡدَهٗ مِنَ اللّٰهِ ؕ وَ مَا اللّٰهُ بِغَافِلٍ عَمَّا تَعۡمَلُوۡنَ ﴿۱۴۰  تِلۡکَ اُمَّۃٌ قَدۡ خَلَتۡ ۚ لَهَا مَا کَسَبَتۡ وَ لَکُمۡ مَّا کَسَبۡتُمۡ ۚ وَ لَا تُسۡـَٔلُوۡنَ عَمَّا کَانُوۡا یَعۡمَلُوۡنَ ﴿۱۴۱

সূরা আল-বাকারাহ ১৩৯-১৪১ নং আয়াতের অর্থ

(১৩৯) আপনি বলে দিন, তোমরা কি আমাদের সাথে আল্লাহ সম্পর্কে তর্ক করছ? অথচ তিনিই আমাদের পালনকর্তা এবং তোমাদেরও পালনকর্তা। আমাদের জন্য আমাদের কর্ম, তোমাদের জন্য তোমাদের কর্ম। এবং আমরা তাঁরই প্রতি একনিষ্ঠ। (১৪০) অথবা তোমরা কি বলছ যে, নিশ্চয়ই ইবরাহীম, ইসমাঈল, ইসহাক, ইয়াকুব (আঃ) ও তাদের সন্তানগণ ইহুদী অথবা খৃস্টান ছিলেন। আপনি বলে দিন, তোমরা বেশি জান, না আল্লাহ বেশি জানেন? (১৪১) তার চাইতে অত্যাচারী কে, যে আল্লাহর পক্ষ থেকে তার কাছে প্রমাণিত সাক্ষ্যকে গোপন করে? আল্লাহ্ তোমাদের কর্ম সম্পর্কে বেখবর নন। সে সম্প্রদায় অতীত হয়ে গেছে। তারা যা করেছে, তা তাদের জন্য একং তোমরা যা করছ তা তোমাদের জন্য। তাদের কর্ম সম্পর্কে তোমাদের জিজ্ঞেস করা হবে না।

সূরা আল-বাকারাহ ১৩৯-১৪১ নং আয়াতের তাফসীর

তফসীরের সার-সংক্ষেপ
আপনি (ইহুদী ও খৃস্টানদের) বলে দিন, তোমরা কি (এখনও) আমাদের সাথে আল্লাহ্ তা’আলার কাজ সম্পর্কে বিতর্ক করছ ? যে, তিনি আমাদের ক্ষমা করবেন না। অথচ তিনি আমাদের এবং তোমাদের ( সকলেরই) পালনকর্তা (ও মালিক। সুতরাং এ ব্যাপারে তোমাদের সাথে কোন বিশেষ সম্পর্ক নেই; যদিও তোমরা نَحْنُ أَبْنَاءُ اللَّهِ [আমরা আল্লাহর সন্তান] বলে বিশেষ সম্পর্ক দাবি করছ।) আমরা আমাদের কৃতকর্মের ফল পাব, তোমরা তোমাদের কৃতকর্মের ফল পাবে। (এ পর্যন্ত যেসব বিষয় বলা হলো, তা তো তোমাদের কাছেও স্বীকৃত।) আর (আল্লাহর শোকর যে,) আমরা একমাত্র আল্লাহ্ তা’আলারই (সন্তুষ্টির) জন্য নিজ (ধর্ম)-কে (শিরক ইত্যাদি থেকে) নির্ভেজাল রেখেছি। (তোমাদের বর্তমান অবস্থা এর বিপরীত। তোমাদের ধর্ম একে তো রহিত, তার উপর শিরক মিশ্রিত। ‘উযায়ের আল্লাহর পুত্র,’ ’ঈসা আল্লাহর পুত্র’-এসব উক্তি থেকে তা জানা যায়। এ ব্যাপারে আল্লাহ্ আমাদের অগ্রগণ্যতা দান করেছেন। কাজেই আমাদের মুক্তি না পাওয়ার কোন কারণ নেই।) অথবা (এখনও নিজেদেরকে সত্যপন্থী বলে প্রমাণিত করার জন্য) তোমরা (এ কথাই) বলছ যে, ইবরাহীম, ইসমাঈল, ইসহাক, ইয়াকুব এবং তাদের সন্তানদের (মধ্যে যারা পয়গম্বর ছিলেন, তাঁরা) সবাই ইহুদী অথবা খৃস্টান ছিলেন। এতদ্বারা তাদেরকেও তোমাদের স্বধর্মী সাব্যস্ত করার মাধ্যমে নিজেদের সত্যপন্থী হওয়া প্রমাণ করছ। (এর উত্তরে বলা হলো,) হে মুহাম্মদ! (এতটুকু তাদের) বলে দিন, (আচ্ছা বল দেখি-) তোমরা বেশি জান, না আল্লাহ্ তা’আলা বেশি জানেন? (একথা বলাই বাহুল্য যে, আল্লাহ্ তা’আলা বেশি জানেন। তিনি এসব পয়গম্বর [আ]-এর ইসলাম ধর্মাবলম্বী হওয়ার বিষয়টি পূর্বেই প্রমাণ করেছেন। কাফিররাও একথা জানে, কিন্তু গোপন করে। সুতরাং) তার চাইতে বড় অত্যাচারী আর কে, যে এমন সাক্ষ্যকে গোপন করে, যা আল্লাহর পক্ষ থেকে তার কাছে এসে পৌঁছেছে ? (হে আহলে-কিতাবগণ!) আল্লাহ্ তোমাদের কর্ম সম্পর্কে বে-খবর নন। (সুতরাং উপরোক্ত পয়গম্বরগণ) যখন ইহুদী কিংবা খৃস্টান ছিলেন না, তখন ধর্মের ক্ষেত্রে তোমরা তাঁদের অনুরূপ কি করে হলে? (অতএব তোমাদের সত্যপন্থী হওয়া সাব্যস্ত হয় না। এরা ছিলেন কৃতীপুরুষদের) সে সম্প্রদায় (যাঁরা) অতীত হয়ে গেছেন। তাঁদের কর্ম তাঁদের উপকারে আসবে এবং তোমাদের কর্ম তোমাদের উপকারে আসবে। তাঁদের কর্ম সম্পর্কে তোমাদের জিজ্ঞাসা করা হবে না। (যখন আলোচনাও হবে না তখন তদ্দ্বারা তোমাদের কোন উপকারও হবে না)।

ইখলাসের তাৎপর্য

وَنَحْنُ لَهُ مُخْلِصُونَ বাক্যটিতে মুসলিম সম্প্রদায়ের বৈশিষ্ট্য বর্ণনা করা হয়েছে যে, তারা আল্লাহর ব্যাপারে নিষ্ঠাবান। নিষ্ঠা বা ইখলাসের অর্থ হযরত সাঈদ ইবনে জুবায়র (রা)-এর বর্ণনা মতে ধর্মে নিষ্ঠাবান হওয়া। অর্থাৎ আল্লাহর সাথে কাউকে অংশীদার না করা এবং একমাত্র আল্লাহর জন্য সৎকর্ম করা, মানুষকে দেখানোর জন্য অথবা মানুষের প্রশংসা অর্জনের জন্য নয়।

কোন কোন বুযুর্গ বলেছেন, ইখলাস বা নিষ্ঠা হলো এমন একটি আমল, যা ফেরেশতাও জানে না, শয়তানও না। এটা আল্লাহ্ তা’আলা ও বান্দার মধ্যকার একটি গোপন রহস্য।






*****************************************
Thank you for visiting the site. If you like the article, share it on social media to invite other Vines to the path of truth and justice. Click on OUR ACTION PLAN button to know about activities, goals and objectives of Mohammadia Foundation and to participate in the service of religion and humanity.
Almost all articles on this website are written in Bengali. But you can also read it in your language if you want. Click the “ভাষা বেছে নিন” button at the bottom of the website to read in your own language.



এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

মোহাম্মদীয়া ফাউন্ডেশনের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url