শাওয়াল মাসে করণীয় আমল ও কর্তব্যসমূহ সম্পর্কে জেনে নিন





শাওয়াল মাসের রোযা

যে ব্যক্তি রমযান মাসের রোযা পালনের পর শাওয়াল মাসে ৬টি রোযা রাখবে, সে যেন সারা বছরই রোযা রাখল।

প্রিয় নবী রাসূল্লাহ বলেছেনঃ 'যে ব্যক্তি রমযানের রোযা রাখার পর-পরেই শাওয়াল মাসে ৬টি রোযা রাখে, সে যেনো পূর্ণ এক বছর (৩৬০ দিন) রোযা রাখার সমান সওয়াব লাভ করে। (মুসলিম ১১৬৪, আবু দাউদ, তিরমিযী, নাসায়ী ও ইবনে মাজাহ।)

এই সওয়াব এই জন্য যে, উম্মতে মুহাম্মাদির যে কেউ একটি ভালো কাজ করলে আল্লাহর অনুগ্রহে সে তার ১০ গুণ সওয়াব পাবে। আল্লাহ্ তা'আলা বলেন, "কেউ কোনো ভালো কাজ করলে সে তার ১০ গুণ প্রতিদান পাবে। (সুরা আল-আন'আম, আয়াত ১৬০ )

   

অএব, এই ভিত্তিতে ৩০+৬ = ৩৬টি রোযা রাখলে ৩৬×১০ = ৩৬০ অর্থাৎ চন্দ্র মাস অনুযায়ী সারা বছর রোযা রাখার সমান সওয়াব পাওয়া যাবে।

আল্লামা ইবনে রজব রহ. বলেন, শাওয়াল মাসে রোযা রাখার তাৎপর্য অনেক। রমযানের পর শাওয়ালে রোযা রাখা রমযানের রোয়া কবুল হওয়ার আলামত স্বরূপ। কেননা আল্লাহ্ তা'আলা কোন বান্দার আমল কবুল করলে, তাকে পরেও অনুরূপ আমল করার তৌফিক দিয়ে থাকেন। নেক আমলের প্রতিদান বিভিন্নরূপ। তার মধ্যে একটি হলো পুনরায় নেক আমল করার সৌভাগ্য অর্জন করা। তাই নামাজ রোযা ও অন্যান্য ইবাদত বাকি এগার মাসেও চালু রাখা চাই। কেননা যিনি রমযানের রব, বাকি এগার মাসেরও তিনিই রব।

তিনি আরো বলেন, তবে ইবাদতের মোকাবেলায় গুনাহের কাজ করলে নেয়ামতের অকৃতজ্ঞতা প্রকাশ পায়। অতএব, কোন ব্যক্তি রমযানের পরপরই হারাম ও গর্হিত কাজে লিপ্ত হয়ে গেলে, তার সিয়াম স্বীয় মুখের উপর নিক্ষেপ করা হয়। এবং রহমতের দরজা তার জন্য বন্ধ হয়ে যায়।

গুনাহের পর ভাল কাজ করা কতইনা উৎকৃষ্ট আমল। কিন্তু তার চেয়ে আরো উৎকৃষ্ট আমল হলো নেক কাজের পর আরেকটি নেক কাজে মশগুল হওয়া। অতএব, আল্লাহর নিকট প্রার্থনা কর, যাতে তিনি মৃত্যু পর্যন্ত হকের উপর অটল থাকার তৌফিক দান করেন। সাথে সাথে অন্তর বিপথে যাওয়া থেকে পরিত্রাণ চাও। কেননা আনুগত্যের সম্মানের পর নাফরমানির বেইজ্জতি কতইনা নিকৃষ্ট।

সাওবান রাযি. থেকে বর্ণিত, রাসূল্লাহ (সাঃ) ইরশাদ করেন, রমযানের রোযা দশ মাসের রোযার সমতুল্য আর (শাওয়ালের) ছয় রোযা দু'মাসের রোযার সমান । সুতরাং এ হলো এক বছরের রোযা।

অপর রেওয়ায়েতে আছে, যে ব্যক্তি রমযানের রোযা শেষ করে শাওয়াল মাসে ছয় দিন রোযা রাখবে সেটা তার জন্য পুরো বছর রোযা রাখার সমতুল্য। (সূরা আন'আম আহমদ : ৫/20, দারেমি : ১৭৫৫)

আল্লাহ্ তা'আলা আমাদের সবাইকে শাউয়াল মাসের ৬ রোযা রেখে সারা বছর রোযা রাখার সমান সাওয়াব পাওয়ার তাওফীক দান করুন, আমীন।

শাওয়াল মাসে বিবাহ করা সুন্নত

বিবাহ একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত । এই সম্পর্কে রাসূল্লাহ ইরশাদ করেছেন, "বান্দা যখন বিবাহ করল তখন তার দ্বীনদারী অর্ধেক পূর্ণ হয়ে গেল। অবশিষ্ট অর্ধেকের ব্যাপারে সে যেন আল্লাহকে ভয় করতে থাকে।” (মিশকাত শরীফ ২৬৭)

মানুষের অধিকাংশ গুনাহ্ দুটি কারণে সংঘটিত হয়। একটি হয় তার লজ্জা স্থানের চাহিদা পূরণের কারণে আর অন্যটি হল পেটের চাহিদা পূরণের কারণে । বিবাহের কারণে মানুষ প্রথমটি থেকে হেফাজতের রাস্তা পেয়ে যায়। সুতরাং তাকে কেবল রিযিকের ব্যাপারে চিন্তাবিত থাকতে হয়। যাতে করে সে জাহান্নাম থেকে বেঁচে থাকতে পারে। একজন লোক খুব বড় আবেদ, তাহাজ্জুদ-চাশত- আওয়াবীন ইত্যাদি নফল নামায় খুব পড়ে; কিন্তু সংসারের সাথে তার কোন সংশ্রব নেই। আরেকজন লোক ফরজ, ওয়াজিব, সুন্নাতে মুআক্কাদা আদায় করে এবং বিবি বাচ্চার হক আদায়ে উৎপন্ন থাকে ফলে তার বেশী বেশী নফল পড়ার কোন সময় হয় না। এতদসত্ত্বেও শরী'আত কিন্তু দ্বিতীয় ব্যক্তিকেই ইবাদাতগুজার হিসেবে মর্যাদা প্রদান করেছে। অর্থাৎ যে ব্যক্তি রাসূল্লা এর সুন্নাত মুতাবিক বিবাহ-শাদী করে পরিবারের দায়-দায়িত্ব কাঁধে নিয়ে হালাল রিযিকের ফিকির করছে, সে ঐ ব্যক্তি অপেক্ষা অধিক মর্যাদাশীল যে চব্বিশ ঘন্টা মসজিদে পড়ে থাকে বা বনে জঙ্গলে সন্ন্যাসীর মত জীবন যাপন করে আর সব রকমের সাংসারিক ঝামেলা থেকে মুক্ত থেকে তাসবীহ্ তাহলীলে মশগুল থাকে।

বিবাহের অন্যতম আরো একটি ফায়দা হচ্ছে এই যে, এর দ্বারা রাসূলে আকরাম (সাঃ) এর নির্দেশ পালন করা হয়। কেননা, তিনি ইরশাদ করেছেনঃ "বিবাহ করা আমার সুন্নাত।” আরেক হাদীসে এসেছেঃ তোমাদের মধ্যে যাদের সামর্থ্য আছে, তারা বিবাহ কর। কারণ, এর দ্বারা দৃষ্টি ও লজ্জা স্থানের হেফাজত হয়।” (মিশকাত শরীফ- ২৬৭ পৃঃ)

এছাড়াও বিবাহের দ্বারা মানুষ নিজেকে অনেক গুনাহের কাজ থেকে বাঁচাতে পারে। নেক আওলাদ হাসিল করতে পারে। আর নেক আওলাদ এমন এক সম্পদ যা মৃত্যুর পরে কঠিন অবস্থার উত্তরণে পরম সহযোগিতা করতে সক্ষম হয়। কারো যদি নেক সন্তান থাকে তাহলে তারা যত নেক আমল করবে, সেগুলো পিতা-মাতার আমলে যোগ করে দেয়া হবে। বিবাহ-শাদী যেহেতু শরীআতের দৃষ্টিতে অত্যন্ত মর্যাদাপূর্ণ একটি ইবাদত, সেহেতু এর মধ্যে কোনভাবে গুনাহ্ এবং আল্লাহ্ তা'আলার নাফরমানীর কোন সংমিশ্রণ না হয় সেদিকে বিশেষভাবে লক্ষ্য রাখতে হবে। তাছাড়া এতে বেপর্দা, নাচ-গান, অপব্যয়-অপচয়, ছবি তোলা, নাজায়িয দাবী-দাওয়া থেকে সম্পূর্ণরূপে দুরে থাকতে হবে। নতুবা মুবারক বিবাহের সমস্ত বরকতই নষ্ট হয়ে যাবে এবং স্বামী- স্ত্রী দাম্পত্য জীবনের সুখ-শান্তি সূচনাতেই ধ্বংস হয়ে যাবে। (মিশকাত শরীফ- (২৬)


বিবাহ সম্পর্কিত কিছু হাদীস

হযরত আবু হুরাইরা রা. থেকে বর্ণিত আছে, রাসূল্লাহ (সাঃ) বলেনঃ তিন ব্যক্তিকে সাহায্য করা আল্লাহ পাক আবশ্যক মনে করেন -
(১) ঐ মুকাতাব বা দাস যে নিজের মুক্তিপণ আদায় করতে চায়। 
(২) ঐ বিবাহকারী যে আপন চরিত্র রক্ষা করতে চায় এবং
(৩) ঐ মুজাহিদ যে আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করে। (তিরমিযী শরীফ, মিশকাত- ২৬৭)

রাসূল্লাহ (সাঃ) ইরশাদ করেছেনঃ যে ব্যক্তি কোন মহিলাকে তার আভিজাত্যের কারণে বিবাহ করবে আল্লাহ্ তা'আলা তার অপমান ও অপদস্থতা অধিক হারে বৃদ্ধি করবেন। আর যে ব্যক্তি তার ধন-সম্পদের কারণে তাকে বিবাহ করবে, আল্লাহ্ তা'আলা তার দারিদ্রতাকে (দিনে দিনে) বৃদ্ধি করে দেবেন। আর যে ব্যক্তি তাকে বিবাহ করবে তার বংশ কৌলীন্য দেখে, আল্লাহ্ তা'আলা তার তুচ্ছতা ও হেয়তা বাড়িয়ে দেবেন। আর যে ব্যক্তি কোন মহিলাকে শুধুমাত্র এই জন্য বিবাহ করে যে, সে তার চক্ষুকে অবনত রাখবে এবং লজ্জা স্থানকে হেফাজত করবে অথবা (আত্মীয়দের মধ্যে হলে) আত্মীয়তা রক্ষা করবে, তাহলে আল্লাহ্ তা'আলা সেই নারী-পুরুষ উভয়ের জীবনেই বরকত দান করবেন। (তাবারানী)

হযরত আবু হুরাইরা রা. থেকে বর্ণিত রাসূল্লাহ্ ইরশাদ করেছেনঃ নারীকে চার কারণে বিবাহ করা হয়। (১) তার ধন-সম্পদের কারণে (২) তার বংশ মর্যাদার কারণে (৩) তার সৌন্দর্যের কারণে এবং (৪) তার দ্বীনদারীর কারণে। সুতরাং তুমি দ্বীনদার বিবি লাভ করে কামিয়াব হও। তোমাদের হস্তদ্বয় ধ্বংস হোক অর্থাৎ তুমি ধ্বংস হও (যদি দ্বীনদার ব্যতীত অন্য নারী চাও)। (বুখারী- মুসলিম, মিশকাত-২৬৭)

হযরত আব্দুল্লাহ্ ইবনে আমর রা. থেকে বর্ণিত, রাসূল্লাহ ইরশাদ করেছেনঃ গোটা দুনিয়াই হলো সম্পদ, আর দুনিয়ার শ্রেষ্ঠ সম্পদ হল নেককার বিবি (মুসলিম শরীফ, মিশকাত- ২৬৭)।

হযরত আবু হুরাইরা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল্লাহ্ (সাঃ) ইরশাদ করেছেনঃ যখন তোমাদের নিকট এমন কোন লোক বিবাহের প্রস্তাব দেয় যার দ্বীনদারী ও আখলাক তোমরা পছন্দ কর, তখন বিবাহ দিয়ে দাও। (মাল সম্পদের প্রতি লক্ষ্য করো না) তা যদি না কর তাহলে দেশে ব্যাপকহারে ফেতনা ফাসাদ দেখা দিবে। (তিরমিযী, মিশকাত শরীফ- ২৬৭)।

হযরত আয়েশা রা. থেকে বর্ণিত আছে, নবীয়ে কারীম (সাঃ) ইরশাদ করেছেনঃ সর্বাপেক্ষা বরকতপূর্ণ বিবাহ হলো, যা সর্বাপেক্ষা কম খরচে সম্পাদিত হয়। (বাইহাকী, মিশকাত শরীফ-২৬)।


বিবাহের স্থান ও কাল

বিবাহের জন্য উত্তম হলো জুমু'আর দিন। পঞ্জিকায় যে শুভ অশুভ সময় লেখা আছে, সেটা হিন্দুদের তরীকা। শরীআতের দৃষ্টিতে যে কোন মাসে, যে কোন দিনে এবং যে কোন সময়ে বিবাহ বৈধ। তবে শাওয়াল মাসে এবং জুম'আর দিনে বিবাহ করা সুন্নাত। (ফাতাওয়া শামী-৩/৮)

প্রথমত্তঃ রাসূল্লাহ্ এর যুগে মুসলমানদের বিবাহ মসজিদেই সম্পন্ন হত। মসজিদে বিবাহ সম্পন্ন করা নবীজীর (সাঃ) সুন্নাত। শাওয়াল মাসে বিবাহ করা আরেকটি সুন্নাত। সুতরাং কারো পক্ষে যদি সম্ভব হয় তাহলে সে শাওয়াল মাসের জুমু'আর দিনে বিবাহ করবে। আর সম্ভব না হলে অন্য যে কোন সময়ে করতে পারে। তবে সম্ভব হলে মসজিদ ও জুমু'আ ঠিক রাখবে, এটাও সম্ভব না হলে দুটোর কোন একটা ঠিক রাখতে চেষ্টা করবে। তাহলে ইনশাআল্লাহ্ খায়ের ও বরকত থেকে মাহরুম হবে না।

দ্বিতীয়তঃ মসজিদের বিবাহে সুবিধা হলো, এতে কোন ফালতু খরচ হয় না। বিছানা-পত্র এবং খাওয়া-দাওয়ার ব্যাপারে কারো কোন দাবী-দাওয়ার সুযোগ থাকে না। কেননা, মসজিদ হচ্ছে ইবাদতের জায়গা, সেখানে মানুষ ইবাদত করতে আসে। আল্লাহর সন্তুষ্টির কাজ করতে আসে। কাজ শেষ হলেই চলে যায়। (মিশকাত শরীফ -২/২৭১, ফাতাওয়ায়ে মাহমুদিয়া-৩(২৬৫)।


বিবাহ-শাদীর প্রচলিত ভুলসমূহ

বিবাহ-শাদী মানব জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। যা মহান আল্লাহ্ তা'আলা তাঁর বান্দাদেরকে বিশেষ নে'আমত হিসাবে দান করেছেন। বাহ্যিক দৃষ্টিতে বিবাহ-শাদী দুনিয়াবী কাজ বা মুবাহ্ মনে হলেও যথা নিয়মে সুন্নাত তরীকায় যদি তা সম্পাদন করা হয় তাহলে সেটা বরকতপূর্ণ ইবাদত ও অনেক সওয়াবের কাজ হয়। এর মাধ্যমে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যকার দাম্পত্য জীবন সুখময় হয়। কিন্তু বর্তমান সমাজে বিবাহ-শাদী সুন্নত তরীকায় তো হয়ই না। উপরন্তু এটা বিভিন্ন ধরনের কুপ্রথা এবং বড় বড় অনেক গুনাহের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ফলে পারিবারিক জীবনে অশান্তির ঝড় বয়ে চলছে। এজন্য নিম্নে বিবাহ-শাদী সম্পর্কিত কিছু ভুল এবং কুপ্রথা ভুলে ধারা হল। যাতে এগুলো থেকে বাঁচা হয়।

বিবাহের পূর্বের ভুলসমূহ

১. বিবাহ শাদী যেহেতু ইবাদত, সুতরাং এখানে দীনদারীকে প্রাধান্য দিতে হবে । দুনিয়াদারগণ সৌন্দর্য, মাল, দৌলত ও খান্দানকে প্রাধান্য দিয়ে থাকে। এটা রাসূলের সুন্নাতের বিপরীত হওয়ায় শান্তি বয়ে আনে না।

২. কোন কোন জায়গায় অভিভাবক এবং সাক্ষী ছাড়া শুধু বর কনের পরস্পরে সন্তুষ্টিতেই বিবাহের প্রচলন আছে। অথচ এভাবে বিবাহ বিশুদ্ধ হয় না। বরং এটি যিনা-ব্যভিচার বলে গণ্য হবে। সাক্ষী থাকা সত্ত্বেও যদি মেয়ে পক্ষের অভিভাবকের সম্মতি না থাকে, আর ছেলে মেয়ের “কুফু” তথা দীনদারী, মালদারী ও পেশাগত দিক থেকে সামঞ্জস্যশীল না হয় তাহলে সে বিবাহ শুদ্ধ হয় না।

৩. কেউ কেউ ধারণা করে যে মাসিক চলাকালীন সময় বিবাহ শুদ্ধ হয় না । অথচ এ অবস্থায়ও বিবাহ শুদ্ধ হয়ে যায়। অবশ্য এ অবস্থায় সহবাস জায়িয নেই।

৪. কেউ কেউ ধারণা করে যে মুরীদনীর সাথে পীর সাহেবের বিবাহ জায়িজ নেই। অথচ রাসূল (সাঃ) -এর স্ত্রীগণ সকলেই তাঁর মুরীদনী ছিলেন।

৫. অনেকে অনেক বয়স হওয়ার পরও বিবাহ করে না কিংবা প্রথম স্ত্রীকে তালাক দেওয়ার পর বা সে মৃত্যু বরণ করার পর আর ২য় বিবাহ করে না। অথচ শারীরিক বিবেচনায় তার বিবাহ করা জরুরী ছিল। এ অবস্থায় থাকা মানে যিনা-ব্যভিচারে জড়িত হওয়ার রাস্তা খুলে দেয়া।

৬. অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় (উদাহরণ স্বরূপ) ৬০ বছরের বয়স্ক লোক অল্প বয়সী যুবতী মেয়েকে বিবাহ করে বসে। ফলে ঐ মেয়ে নিশ্চিত জুলুমের শিকার হয়।

৭. অনেকে স্ত্রীর খেদমতে অক্ষম হওয়া সত্ত্বেও দুর্বলতা লুকিয়ে লোক দেখানোর জন্য বিয়ে করে স্ত্রীর জীবনকে ধ্বংস করে দেয়। এটা মারাত্মক গুনাহের কাজ।

৮. কোন কোন আধুনিক শিক্ষিত লোক আধুনিক শিক্ষা তথা ডাক্তারি প্রফেসারি ইত্যাদি ডিগ্রি দেখে মেয়ে বিয়ে করে। তাদের ভাবা উচিৎ বিয়ের দ্বারা উদ্দেশ্য কী? যদি তার স্ত্রীর দ্বারা টাকা কামানো উদ্দেশ্য হয় তাহলে এটা তো বড় লজ্জাজনক কথা যে, পুরুষ হয়ে মহিলাদের কামাইয়ের আশায় বসে থাকবে । মনে রাখতে হবে এ ধরণের পরিবারে শান্তি আসে না।

৯. কেউ কেউ পালক পুত্রের তালাক দেয়া স্ত্রী বিবাহ করাকে না জায়িয মনে করে। এটা জাহিলী যুগের বদ-রুসুম।

১০. কেউ কেউ বিধবা মহিলাদের বিবাহ করাকে অপছন্দ করে। অথচ রাসূল্লাহ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লামের অধিকাংশ স্ত্রী বিধবা ছিলেন। (বুখারী হাঃ নং ৫০৭৭)।


বিবাহের সময়ের ভুলসমূহ

বর পক্ষের ভুলসমূহ

১. বিবাহ শাদী যেহেতু ইবাদত, সুতরাং বিবাহকে বেন্দ্র করে কোন প্রকার গুনাহ না হয় সে দিকে খেয়াল রাখতে হবে। তাহলে খায়ের বরকত লাভ হবে। যদি বিবাহকে গুনাহ্ মুক্ত করা না যায় তাহলে সেখানে অশান্তি হওয়া নিশ্চিত। 

২ প্রথাগতভাবে অনেক লোকের বর যাত্রী হিসেবে যাওয়া। 

৩. দাওয়াতকৃত সংখ্যার অধিক লোক নিয়ে যাওয়া। 

৪. লোক দেখানোর উদ্দেশ্যে কন্যার জন্য যৌতুক পাঠানো এবং এটাকে জরুরী মনে করা। 

৫. গায়রে মাহরাম পুরুষ দ্বারা মেয়ের ইজন বা অনুমতি আনা। 

৬. বেগানা পুরুষদের কন্যার মুখ দেখা এবং দেখানো। 

৭. নাচ-গান, বাজনা ইত্যাদি করা। 

৮. সালামী গ্রহণ করা। 

৯. মোহরানা সম্পর্কে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত পূর্বেই না করা, বরং করাকে দোষ মনে করা। অতঃপর বিবাহ্নে সময় তর্ক-বিতর্ক করা। 

১০. লোক দেখানোর জন্য বা গর্বের সাথে ওলীমা করা। 

১১. মোহরানার বিষয়ে গুরুত্ব না দেয়া এবং মোহানা আদায়ে গাফলতী করা। 

১২. ইচ্ছাকৃত এমন কর্মকাণ্ড করা যে কারণে কোন পক্ষের অদূরদর্শিতা প্রমাণিত হয় অথবা তাদের অস্থিতার কারণ হয়। আর নিজেদের সুনাম প্রকাশ পায়। 

১৩. বিবাহ অনুষ্ঠানের কারণে ফরয ওয়াজিবসহ শরীআতের বিধানের ব্যাপারে উদাসীনতা এবং অনীহা প্রকাশ করা।

কন্যা পক্ষের ভুলসমূহ

১. বর যাত্রার চাহিদা। 

২. ছেলের জন্য উপঢৌকন যৌতুক প্রকাশ্যে পাঠানো, পাঠানোকে পছন্দ করা এবং জরুরী মনে করা। 

৩. আত্মীয়-স্বজন মহল্লাবাসীদের জন্য প্রথাগত দাওয়াত এবং খাওয়া-দাওয়ার ব্যবস্থা করা। 

৪. বিবাহের সরঞ্জাম, অলংকারাদী প্রকাশ্যে দেখা এবং অন্যদেরকে দেখানো। 

৫. বিবাহের পর রুসূম হিসাবে জামাতাকে শরবত পান করানো। 

৬. বেগানা মহিলারা জামাতার সামনে আসা। 

৭. সালামী গ্রহণ করা। এটাকে জরুরী মনে করা এবং নেয়া দেয়া। 

৮. যাতে মল্লায় খুব প্রসিদ্ধ হয় সে জন্যে ইচ্ছাকৃত কোন কিছু করা। 

৯. ফরয-ওয়াজিব ইত্যাদি বিষয়ে উদাসীন হওয়া। এছাড়াও বিবাহ উপলক্ষে অনেক বেপর্দা, যুবক যুবতীদের অবাধ মেলা-মেশা, অপব্যয়, ছবি এবং ভিডিও ইত্যাদি করা হয়, যাতে বিবাহের সকল খায়ের বরকত নষ্ট হয়ে যায়।

বিবাহের কিছু প্রথা

১. মেয়ের ইজন আনার জন্য ছেলেপক্ষ স্বাক্ষী পাঠিয়ে থাকে, শরীআতের দৃষ্টিতে এর কোন প্রয়োজন নেই।

২. বিবাহের সময় অনেকে বর-কনের দ্বারা তিনবার করে ইজাব কবূল পাঠ করিয়ে থাকে এবং পরে তাদের দ্বারা আমীন বলানো হয়। শরীআতে এর কোন ভিত্তি নেই।

৩. ইজাব কবূলের মাধ্যমে আকদ সম্পাদন হওয়ার পর মজলিসে উপস্থিত সকলকে লক্ষ্য করে সামনে দাঁড়িয়ে হাত উঠিয়ে বর যে সালাম করে থাকে তারও কোন ভিত্তি নেই।

৪. ঝগড়া-ফাসাদের আশংকা থাকা সত্ত্বেও খেজুর ছিটানোকে জরুরী মনে করা হয়। অথচ এ সম্পর্কিত হাদীসকে মুহাদ্দিসীনে কেরাম যঈফ বলেছেন।

বিবাহ শাদীর কতিপয় কুসংস্কার

১. অনেক জায়গায় বিবাহ রওয়ানা হওয়ার আগে এলাকার প্রসিদ্ধ মাযার যিয়ারত করে তারপর রওয়ানা হয়। শরীআতে এর কোন ভিত্তি নেই।

২. বরের নিকট কনে পক্ষের লোকেরা হাত ধোয়ানোর টাকা, পান পাত্রের পানের সাথে টাকা দিয়ে তার থেকে কয়েকগুণ বেশী টাকা জোর যবরদস্তী করে আদায় করে থাকে। এটা না জায়িয।

৩. অনেক জায়গায় গেইট সাজিয়ে সেখানে বরকে আটকে দেয়া হয় এবং টাকা না দেয়া পর্যন্ত ভেতরে প্রবেশ করতে দেয়া হয় না। এটাও একটা গর্হিত কাজ।

৪. খাওয়া দাওয়া শেষে কনে পক্ষের লোকেরা বরের হাত ধোয়ায়। পরে হাত ধোয়ানো বাবদ টাকা দাবী করে। অনেক জায়গায় এ নিয়ে অপ্রীতিকর ঘটনাও ঘটতে দেখা যায়। এটা একেবারেই অনুচিত। মূলতঃ এসব হিন্দুয়ানী প্রথা। দীর্ঘ দিন যাবত হিন্দুদের সাথে কাবাস করার কারণে আমাদের মধ্যে এই কুসংস্কারগুলি অনুপ্রবেশ করেছে।

৫. বিবাহ পড়ানোর আগে বা পরে যৌতুকের বিভিন্ন জিনিস-পত্র প্রকাশ্য মজলিসে সকলের সামনে উন্মুক্ত করে দেয়া হয়। এটাও অন্যায় ও নির্লজ্জতার কাজ।

৬. বিবাহের পরে নারী-পুরুষ সকলের সামনে কনের পিতা বা মাতা জামাই- মেয়ের হাত একসাথে করে তাদেরকে দু'আ দেয়। কনের পিতা জামাইকে বলে "আমার মেয়েকে তোমার হাতে সঁপে দিলাম, তুমি একে দেখে শুনে রেখ” এর কোন ভিত্তি শরীআতে নেই ।

৭. বিবাহ করে আনার পর শ্বশুর বাড়ীতে নববধূকে বিভিন্ন কায়দায় বরণ করা হয়। কোথাও ধান, দুবলা ঘাস, দুধের স্বর ইত্যাদি দিয়ে বরণ করা হয় এবং নববধূর চেহারা সকলকে দেখানো হয়; এসবই হিন্দুয়ানী প্রথা। কোন মুসলমানের জন্য এসব করা জায়িয নেই।

৮. অনেক জায়গায় মেয়ের বিয়ের আগের দিন আর কোথাও মেয়ে শ্বশুর বাড়ী যাওয়ার পরের দিন মেয়ের বাড়ী থেকে ছেলের বাড়ীতে মাছ-মিষ্টি ইত্যাদি পাঠানো হয়ে থাকে। কোথাও এটাকে চৌধি বলা হয়। এটাও বিজাতীয় নাজায়িয প্রথা।

৯. বর বা কনেকে কোলে করে গাড়ী বা পালকী থেকে নামিয়ে ঘরে তোলাও চরম অভদ্রতা বৈই কিছু নয়।

১০. ঈদের সময় বা অন্য কোন মৌসুমে মেয়ের শ্বশুর বাড়িতে চাল, আটা, ময়দা, পিঠা ইত্যাদি পাঠানো এবং এ প্রচলনকে জরুরী মনে করার প্রথা অনেক জায়গায় চালু আছে। আবার অনেক জায়গায় আনুষ্ঠানিকভাবে জামাইকে এবং তার ভাই-বোনদেরকে কাপড়-চোপড় দেয়ার প্রথা আছে। এমনকি এটাকে এতটাই জরুরী মনে করা হয় যে, ঋণ করে হলেও তা দিতে হয়। এটা শরীআতের সীমালঙ্ঘন ছাড়া আর কিছু নয়।

১১. আজকাল বিবাহ অনুষ্ঠানে বেগানা মহিলাদের সাজ-সজ্জা করে নিজেকে বিকশিত করে একত্রিত হতে দেখা যায় এবং যুবক যুবতীদের অবাধ মেলা-মেশা করতেও দেখা যায়। এধরনের বেপর্দা আর বেহায়াপনার কারণে উক্ত মজলিসে উপস্থিত নারী পুরুষ সকলেই গুনাহগার হবে।

১২. বিবাহ উপলক্ষে গান-বাজনা, ভিডিও, ভিসিআর ইত্যাদি মহামারী আকার ধারণ করেছে। আর কোন কোন এলাকায় তো যুবতী তরুণী মেয়েরা একত্রিত হয়ে নাচ গানও করে থাকে। শরীআতের দৃষ্টিতে এসব হারাম ও নাজায়িয।

১৩. আজকাল বিবাহ অনুষ্ঠান মানেই গুনাহের ছড়াছড়ি। এমন এমন গুনাহ্ সেখানে সংঘটিত হয় যা ভাষায় বর্ণনা করা যায় না। তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে ছবি তোলা ও ভিডিও করা। শরীআতের দৃষ্টিতে কোন প্রাণীর ছবি তোলা চাই ক্যামেরার মাধ্যমে হোক কিংবা ভিডিও এর মাধ্যমে হোক বা অংকন করা হোক সবই হারাম।

১৪. বিবাহের পরে মেয়েকে উঠিয়ে দেয়ার আগ মুহূর্তে মেয়ের বাড়ীতে পাড়া- প্রতিবেশী মেয়েরা একত্রিত হয়, আর বরকে অন্দর মহলে এনে সকলে মিলে হৈ হুল্লা করে তার মুখ দর্শন করে। মেয়েরা হাসি মজা করে বিভিন্ন উপায়ে নতুন দুলাকে বোকা বানানোর চেষ্টা করে। আর নির্লজ হাসি তামাশায় মেতে উঠে। এধরনের বেপর্দেগী শরীআতের দৃষ্টিতে সম্পূর্ণ হারাম।

১৫. অনেক জায়গায় প্রথা চালু আছে যে, নববধূকে বা নিজে বা তার ভগ্নীপতি অথবা তার ছোট ভাই পালকী বা গাড়ী থেকে নামিয়ে কোলে করে ঘরে নেয়। তারপর উপস্থিত মহল্লাবাসীর সামনে নববধূর মুখ খুলে দেখানো হয়। এ সকল কাজ হারাম এবং নাজায়েয বিবাহের ব্যাপারে বিস্তারিত জানতে পড়ুন হযরত মুফতী মনসূরুল হক সাহেবের দা.বা. - ইসলামী বিবাহ” কিতাবটি ।

বি.দ্র. কেউ যদি শাওয়াল মাসের নিকটবর্তী সময়ে বিবাহ করার জন্য তৈরী থাকে তবে তার জন্য পারমর্শ হলো সে যেন শাওয়াল মাসের অপেক্ষা করে কিন্তু কারো বিবাহ যদি ২/৩ মাস আগে বা পরে ঠিক হয় তবে তার জন্য শাওয়াল মাস অপেক্ষা না করে তাৎক্ষনিক বিবাহ করা উচিত ।

শাওয়াল মাসে হজ্জের প্রস্তুতি

এই মাসের আরেকটি আমল বা কাজ হলো হজ্জের প্রস্তুতি নেয়া। হজ্জের জন্য যারা নিয়ত করেছে তাদের কাজ হলো তারা যেন হজ্জের যাবতীয় মাসআলা মাসাইল শিক্ষা করে।

হজ্জের ব্যাপারে বিস্তারিত জানতে পড়ুন হযরত মুফতী মনসূরুল হক সাহেবের দা.বা. "কিতাবুল হাজ্জ্ব” কিতাবটি, নিজের কাছে রাখতে পারেন।

শাওয়াল মাসে বড় আলেম হওয়ার প্রস্তুতি

যারা বড় হাফেয-আলেম হতে চায়, বড় মুফতী, শাইখুল হাদীস, মাওলানা মুহাদ্দিস হতে চায়, বড় আল্লাহওয়ালা শায়েখ হতে চায়, কুরআন-হাদীসে পারদর্শী হতে চায় তাদের সকলের ইলমী সবকের শুরু হয় এই শাউয়াল মাসে। সারা পৃথিবীর সমস্ত কউমী মাদরাসাগুলোতে এই মাসে সবক শুরু হয়। কুরআন নাযিল হয়েছে রমযান মাসে আর তার পরের মাসেই অর্থাৎ এই শাউয়াল মাসে সবক শুরু।

শাওয়াল মাসের শিক্ষাঃ সুহবাত

শাউয়াল মাসের শিক্ষা হলো সুহবাত। রমযান মাসের সুহবাতের কারণে শা'বান মাস এবং এই শাওয়াল মাস এতো দামী হয়েছে। সুহবাতের কারণে এই মাসকে “শাউওয়ালুল মুকাররম” বলা হয়। ঠিক তেমনি নেক লোকের সুহবাতের কারণেই মানুষও দামী হয়। পবিত্র কুরআনে আল্লাহ্ তা'আলা এরশাদ করেছেন-

 یٰۤاَیُّهَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوا اتَّقُوا اللّٰهَ وَ کُوۡنُوۡا مَعَ الصّٰدِقِیۡنَ ﴿۱۱۹

হে ঈমানদারগণ ! আল্লাহকে ভয় কর এবং সত্যবাদী লোকদের সংসর্গে থাকো । (সূরা তওবা, আয়াত ১১৯, পারা ১১ )

হযরত হানযালা রাযি. (একটি দীর্ঘ হাদীসে) বর্ণনা করেন, আমরা যখন আপনার (রাসূল্লাহ সাঃ) পবিত্র খেদমত হতে চলে আসি, তখন পরিবার- পরিজন, কাজ-কারবার ও সম্পত্তির মধ্যে ডুবে যাই এবং অনেক বিষয়ের খেয়ালও থাকে না। রাসূল্লাহ বললেনঃ সেই সত্ত্বার কসম! যাঁর হাতে আমার প্রাণ। যে অবস্থায় তোমরা আমার নিকট থাকো, যদি এই অবস্থা বা যিকিরে নিমগ্নতা স্থায়ী হয়, তবে ফেরেশতাগণ তোমাদের সাথে তোমাদের বিছানায় এবং পথে মুসাফাহা করতে থাকবে। কিন্তু হে হানযালা! কেমন একেকটি মুহূর্ত! কেমন একেকটি মুহূর্ত। তিনি এই কথাটি তিনবার বললেন।' (মুসলিম-৭১৪২ ও তিরমিঘী)

সাহাবায়ে কেরাম সকলেই আলম ছিলেন না, কিন্তু (সাধারন সাহাবীর মর্যাদাও সর্বোচ্চ শ্রেনীর মুহাদ্দিস, ফকীহ এবং বড় বড় ওলী-কুতুবের উপর স্বীকৃত। এই মর্যাদা নির্ভর করে একমাত্র নবীজীর সাহচর্য ও সান্নিধ্যের উপর) তাঁরা যা কিছু লাভ করেছেন, তা শুধু মহানবী -এর সংসর্গের মাধ্যমেই পেয়েছেন। আল্লাহওয়ালাগণ সদা-সর্বদা সুহবত বা সাহচর্যকে অবশ্য করণীয় কৰ্ত্তব্য মনে করেছেন। তাঁরা ইলমের প্রতি এতো মনোযোগ দেননি যতটুকু মনোযোগ দিয়েছেন সংসর্গের প্রতি।

অনেক ইলমওয়ালা লোক, কোন বড় আল্লাহর ওলীর সুহবাতে যায়নি, তিনিও গোমরাহ্ হয়েছেন বা দ্বীনের খেদমতে তেমন আঞ্জাম দিতে পারেন নি। অপরদিকে সাধারন লোক বড় আল্লাহর ওলীর সুহবাতে গিয়ে এমন দামী হয়েছেন যে পরবর্তীতে বড় বড় আলেম উনার সুহবাতে থাকতে পারা সৌভাগ্য মনে করেছেন। যেমন বর্তমানে (১৪৩৭ হিঃ) পাকিস্তানের সবচেয়ে বড় আলেম মুফতী তাকী উসমানী দা.বা. এবং পাকিস্তানের সবচেয়ে প্রসিদ্ধ মাদ্রসা দারুল উলুম করাচীর মুহতামিম সাহেব মুফতী রাফী উসমানী দা.বা., উভয়েই যার সুহবাতকে সৌভাগ্যের আলামত ভেবেছেন তিনি ছিলেন একজন সাধারন লোক নাম, ডাঃ আব্দুল হাই আরেফী। এই ডাঃ আব্দুল হাই আরেফী, গত শতাব্দীর মুজাদ্দিদ হযরত মাওলানা আশরাফ আলী থানভী রহ. এর সুবাতে থেকে নিজেকে এত দামী বানিয়েছিলেন। সারা দুনিয়ার সমস্ত আলেম উনাকে ডাঃ আব্দুল হাই আরেফী হিসেবে জানেন। সুহবাতের বরকতে তিনি আরিফ বিল্লাহ হিসেবে খ্যাত। এমন বহু মানুষ সুহবাতের মাধমে দামী হয়েছেন এবং হচ্ছেন। হযরত শামসুল হক ফরিদপুরী রহ. বলেন, “সঙ্গগুণে রঙ্গ আসে।” তাই আমাদের জন্য জরুরী হলো নেক লোকের সুহবাতকে গণিমত মনে করে তাদের সাথে উঠাবসা করা।

আল্লাহ্ তা'আলা আমাদের সবাইকে নূরে আমল করার তৌফিক দান করুন । আমীন ।



****************************************
>>> Welcome, You are now on Mohammadia Foundation's Website. Please stay & Tune with us>>>

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

মোহাম্মদীয়া ফাউন্ডেশনের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url