মা’আরেফুল কোরআন - ৭৯ || সূরা আল-বাকারাহ, ২১৪ || আল্লাহর সাহায্য একান্তই নিকটবর্তী







بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ
سورة البقرة

সূরা আল-বাকারাহ আয়াতঃ ২১৪


 اَمۡ حَسِبۡتُمۡ اَنۡ تَدۡخُلُوا الۡجَنَّۃَ وَ لَمَّا یَاۡتِکُمۡ مَّثَلُ الَّذِیۡنَ خَلَوۡا مِنۡ قَبۡلِکُمۡ ؕ مَسَّتۡهُمُ الۡبَاۡسَآءُ وَ الضَّرَّآءُ وَ زُلۡزِلُوۡا حَتّٰی یَقُوۡلَ الرَّسُوۡلُ وَ الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا مَعَهٗ مَتٰی نَصۡرُ اللّٰهِ ؕ اَلَاۤ اِنَّ نَصۡرَ اللّٰهِ قَرِیۡبٌ ﴿۲۱۴

সূরা আল-বাকারাহ ২১৪ নং আয়াতের অর্থ

(২১৪) তোমাদের কি এই ধারণা যে; তোমরা জান্নাতে চলে যাবে, অথচ সে লোকদের অবস্থা অতিক্রম করনি, যারা তোমাদের পূর্বে অতীত হয়েছে। তাদের উপর এসেছে বিপদ ও কষ্ট। আর এমনিভাবে শিহরিত হতে হয়েছে যাতে নবী ও তাঁর প্রতি যারা ঈমান এনেছিল তাদেরকে পর্যন্ত একথা বলতে হয়েছে যে, কখন আসবে আল্লাহর সাহায্য ! তোমরা শুনে নাও, আল্লাহর সাহায্য একান্তই নিকটবর্তী।

   

সূরা আল-বাকারাহ ২১৪ নং আয়াতের পূর্বাপর যোগসূত্র

যোগসূত্রঃ পূর্ববর্তী আয়াতে নবী-রাসূল ও মু’মিনগণের সাথে কাফিরদের বিরুদ্ধাচরণের কথা আলোচনা করা হয়েছে। তাতে মুসলমানগণকে অনেকটা সান্ত্বনাও দেওয়া হয়েছে, যাদের মনে কাফিরদের উপহাসে কষ্ট হতো। বলা হয়েছে যে, এ বিরুদ্ধাচরণ তোমাদের সাথে নতুন নয়; সব সময়ই চলে আসছে। পরবর্তী আয়াতে কাফিরদের দ্বারা নবী-রাসূল ও মু’মিনগণকে কষ্ট দেওয়ার কাহিনী যেভাবে বর্ণনা করা হচ্ছে এতেও তেমনিভাবে মুসলমানগণকে সান্ত্বনা দেওয়া হয়েছে যে, কাফিররা তোমাদেরকে নানাভাবে উৎপীড়ন করবে, তাতে তোমরা ধৈর্য ধারণ কর। কেননা, পূর্ণ ও স্থায়ী শান্তি তো পরকালের জন্যই নির্ধারিত থাকবে।

সূরা আল-বাকারাহ ২১৪ নং আয়াতের তাফসীর


তাফসীরের সার-সংক্ষেপ
(দ্বিতীয় কথা হচ্ছে) তোমাদের কি এ ধারণা যে, (সাধ্য-সাধনা ছাড়াই) বেহেশতে প্রবেশ করতে পারবে? অথচ (এখন পর্যন্ত তো কোন সাধনাই করনি। কেননা) এখনও তোমরা সে সমস্ত (মুসলমান) লোকের মত সমস্যার সম্মুখীন হওনি, তোমাদের পূর্ববর্তী লোকগণ যে সমস্যার সম্মুখীন হয়েছিল। তাদের উপর (বিরুদ্ধাচারীদের দ্বারা) এমন সব সমস্যা ও বিপদ আপতিত হতো। (যে বিপদের কারণে) তারা এমনকি নবী-রাসূলগণ পর্যন্ত আতংকে কম্পমান হয়ে উঠতেন এবং বলাবলি করতেন যে, আল্লাহর সাহায্য কখন আসবে! (প্রতি উত্তরে তাদেরকে সান্ত্বনা দেওয়া হতো) নিশ্চয়ই আল্লাহর সাহায্য (অতি) নিকটে। 

সূরা আল-বাকারাহ ২১৪ নং আয়াতের বিষয় বস্তু

এ আয়াতে কয়েকটি বিষয় প্রণিধানযোগ্য। প্রথমত পরিশ্রম ও মেহনত ব্যতীত এবং বিপদ-আপদে পতিত হওয়া ছাড়া কেউই বেহেশত লাভ করতে পারবে না। অথচ কোরআন ও হাদীসের বর্ণনায় প্রমাণ রয়েছে যে, অনেক পাপী ব্যক্তিও আল্লাহর দয়া ও ক্ষমার দৌলতে জান্নাত লাভ করবে; এতে কোন কষ্ট সহ্যের প্রয়োজনই হবে না। কারণ, কষ্ট ও পরিশ্রমের স্তর বিভিন্ন। নিম্নস্তরের পরিশ্রম ও কষ্ট হচ্ছে স্বীয় জৈবিক কামনা-বাসনা ও শয়তানের তাড়না থেকে নিজেকে রক্ষা করে কিংবা সত্য ধর্মের বিরুদ্ধবাদীদের বিরুদ্ধাচরণ করে নিজের বিশ্বাস ও আকীদাকে ঠিক করা। এ স্তর প্রত্যেক মু’মিনেরই অর্জন করতে হয়। অতঃপর মধ্যম ও উচ্চ স্তরের বর্ণনা—যে পরিমাণ কষ্ট ও পরিশ্রম হবে, সে স্তরেরই জান্নাত লাভ হবে। এভাবে কষ্ট ও পরিশ্রম হতে কেউই রেহাই পায়নি। এক হাদীসে রসূল (সা) ইরশাদ করেছেনঃ

أشدُّ الناس بلاء: الأنبياء، ثم الأمْثَلُ فالأمثلُ، 

অর্থাৎ- সবচাইতে অধিক বালা-মুসিবতে পতিত হয়েছেন নবী-রাসূলগণ। তারপর তাঁদের নিকটতম ব্যক্তিবর্গ

দ্বিতীয় কথা হচ্ছে, নবীগণ ও তাঁদের সাথীগণের প্রার্থনা যে, “আল্লাহর সাহায্য কখন আসবে" তা কোন সন্দেহের কারণে নয় যা তাঁদের শানের বিরুদ্ধ। বরং এ প্রশ্নের উদ্দেশ্য ছিল এই যে, যদিও আল্লাহ্ তা’আলা সাহায্যের ওয়াদা করেছেন, এর সময় ও স্থান নির্ধারণ করেননি। অতএব এ অশান্ত অবস্থায় এ ধরনের প্রার্থনার অর্থ ছিল এই যে, সাহায্য তাড়াতাড়ি অবতীর্ণ হোক। এমন প্রার্থনা আল্লাহর প্রতি ভরসা ও শানে নবুয়তের খেলাফ নয়। বরং আল্লাহ্ তা’আলা স্বীয় বান্দাদের সবিনয় প্রার্থনাকে পছন্দ করেন। বস্তুত নবী এবং সালেহীনগণই এরূপ প্রার্থনার অধিক উপযুক্ত।





********************************************
Thank you for visiting the site. If you like the article, share it on social media to invite other Vines to the path of truth and justice. Click on OUR ACTION PLAN button to know about activities, goals and objectives of Mohammadia Foundation and to participate in the service of religion and humanity. 
Almost all articles on this website are written in Bengali. But you can also read it in your language if you want. Click the “ভাষা বেছে নিন” button at the bottom of the website to read in your own language.



এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

মোহাম্মদীয়া ফাউন্ডেশনের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url